![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজেকে একজন কর্মঠ ছেলে হিসেবে পরিচয় দিতেই আমি গৌরববোধ করি। যদিও কি কর্ম করি তা নিয়েই এখনো আমি পাজলড। অবশ্য তাতে কিছু যায় আসে না, কারণ আমি মনে করি চিন্তাই সাফল্যের প্রথম সোপান। তাই আপাতত চিন্তার মাঝেই আছি।
আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ আমাদের অহংকার। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি সেইসব শহীদদের, যাদের রক্তের ফসল এই স্বাধীনতা। আর এ স্বাধীনতা যুদ্ধের গৌরবময় অধ্যায়ের সাথে মিশে আছে ভিনদেশী কিছু মানুষের নাম। একাত্তরের মুক্তিসংগ্রামে কোটি মুক্তিকামী বাঙালির পাশাপাশি তাঁরা লড়েছেন, নিছক সহযোগিতা বা কর্তব্যের খাতিরে নয়, তাঁরা লড়েছেন মানবতার জন্য। এদেশের লাখো অসহায় দুঃস্থ মানুষের নৃশংস মৃত্যু তাঁদের বিবেককে তীব্রভাবে নাড়া দিয়েছিল। আর তাই তাঁদের কেউবা যুদ্ধ করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সম্মুখ সমরে, কেউবা দিয়েছেন আহত যোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা, কারো কলমের কালিতে ফুটে উঠেছিল এদেশের করুণ দশা; গান, কবিতা কিংবা পত্রিকার কলামে। আর এভাবেই এদের প্রত্যেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বিশ্বসমর্থন যুগিয়েছেন দারুণভাবে।
আর সেইসব ভিনদেশী বীরদের অবদান স্মরণে ধারাবাহিক এই আয়োজন -
উইলিয়াম এ. এস. ওডারল্যান্ড
জন্মঃ ৬ ডিসেম্বর, ১৯১৭
মৃত্যুঃ ১৮ মে, ২০০১
বাংলাদেশের স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রামে অবদান রাখা বিদেশীদের মধ্যে অন্যতম ব্যতিক্রম ব্যক্তি হলেন উইলিয়াম এ. এস. ওডারল্যান্ড। সামনা-সামনি যুদ্ধক্ষেত্রে সাহসী ভূমিকা রাখবার জন্য তাকে বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব বীর প্রতীক প্রদান করেন। তিনি এই খেতাব-প্রাপ্ত একমাত্র বিদেশী। ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে বাটা সু কোম্পানিতে চাকরির সুবাধে বাংলাদেশের যে কোন স্থানে তাঁর ছিল অবাধ যাতায়াত। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২২ বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল সুলতানের সাথে প্রথমে এবং এরপর একে একে সেনাবাহিনীর আরো কয়েকজনের সাথে সখ্য জমিয়ে ফেলেন তিনি। এ সুযোগে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সব ধরনের নিরাপত্তা পাস পেয়ে যান। অবাধ মেলামেশার সুযোগে সব ধরনের তথ্য, সেনাবাহিনীর তৎপরতা ও পরিকল্পনা গোপনে পাঠাতে থাকেন ২ নম্বর সেক্টর হেডকোয়ার্টারে। একই সঙ্গে টঙ্গীর বাটা সু কোম্পানির কারখানা প্রাঙ্গনে স্থাপন করেন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য গোপন ক্যাম্প। মুক্তিযোদ্ধারা তাঁর কারখানায় আশ্রয় নিয়ে আশেপাশে গেরিলা অপারেশন চালাতে থাকে। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সংগ্রহ, চিকিৎসা সামগ্রী, আর্থিক ও প্রশিক্ষণ সাহায্য দিয়েও সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাবেক এই অস্ট্রেলিয়ান যোদ্ধা।
আরউইন অ্যালেন গিন্সবার্গ
জন্মঃ ৩ জুন, ১৯২৬
মৃত্যুঃ ৫ এপ্রিল, ১৯৯৭
"কাদামাটি মাখা মানুষের দল
গাদাগাদি হয়ে আকাশটা দেখে
আকাশে বসত মরা ঈশ্বর
নালিশ জানাবে ওরা বলো কাকে"
- কন্ঠশিল্পী মৌসুমী ভৌমিকের গান ‘যশোর রোড’ থেকে গৃহীত, যা কবি আরউইন অ্যালেন গিন্সবার্গের অমর কাব্য ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ এর বঙ্গানুবাদ।
মার্কিন এই বিখ্যাত কবি ও গীতিকার ১৯৭১ এর ভয়াবহতা দেখেন ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশী শরণার্থী শিবিরগুলো ঘুরে দেখবার সময়। বন্ধুত্বের খাতিরে সদ্যপ্রয়াত পশ্চিম বাংলার জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কলকাতার বাসায় ওঠেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ দিককার সময়ে। আরো অনেকের মতোই শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে যাবার পরিকল্পনা করেন তাঁরা-তবে সড়কপথে না গিয়ে, বেছে নেন পানিপথ। নৌকায় করে বনগাঁ পেরিয়ে বাংলাদেশের যশোর সীমান্তে পৌছে যান। বিট্রিশ রাজ্যের সময় পূর্ব বাংলা ও পশ্চিমবঙ্গের সংযোগকারী সড়ক ছিল এটি। আশে পাশের শরণার্থী শিবিরগুলোর সীমাহীন দুর্দশা দেখার অভিজ্ঞতা থেকে লেখেন সেই অসাধারণ কবিতাটি - 'সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড'। যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গিয়ে বন্ধু গায়ক বব ডিলান ও অন্যদের সহায়তায় সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’কে গানে রূপ দেন তিনি। কনসার্টে এই গানটি গেয়ে তারা বাংলাদেশি শরণার্থীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন।
অ্যান্থনি মাসকারেনহাস
জন্মঃ ১০ জুলাই, ১৯২৮
মৃত্যুঃ ৩ ডিসেম্বর, ১৯৮৬
১৩ জুন, ১৯৭১। লন্ডনের সানডে টাইমস পত্রিকাতে পূর্ব পাকিস্তানের গণহত্যা নিয়ে 'Genocide' শিরোনামে প্রকাশিত একটি বিশদ সংবাদ হৈ-চৈ ফেলে দেয়। আন্তর্জাতিক বোদ্ধারা নড়েচড়ে বসেন, কারণ রিপোর্টার যে একজন গোয়ানিজ পশ্চিম পাকিস্তানি। হ্যা, তিনিই অ্যান্থনি মাসকারেনহাস, মায়ের নির্দেশমত সর্বদা যিনি সত্যকে সবার উপরে স্থান দিয়েছিলেন। অবশ্য রিপোর্টার অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের পরিবারকে আত্মগোপন করতে হয় ইতিহাস বদলকারী এই ঘটনার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াতে। পুরো বিশ্ব এরপর বাংলাদেশকে সমর্থন জানাতে দ্বিধা করেনি। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সানডে টাইমস এর সম্পাদক হ্যারল্ড ইভান্স কে জানান, আর্টিকেলটি তাকে এতটাই প্রভাবিত করেছিল যে তিনি স্ব-উদ্যোগে ইউরোপ ও মস্কোকে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সাথে যুক্ত হবার প্রস্তুতি নিতে প্রচারণা চালিয়েছিলেন। এছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সংঘাত, গণহত্যা ও অন্যান্য ঘটনা নিয়ে বই লিখে [The Rape of Bangladesh (1972), Bangladesh: A Legacy of Blood (1986)] অ্যান্থনি মাসকারেনহাস প্রকৃত ঘটনা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন।
. . . .(চলবে)
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:০৮
সেভেরাস স্নেইপ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৪১
বয়ানবাজ বলেছেন: ভালো লাগলো। চলতে থাক।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫১
সেভেরাস স্নেইপ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২০
হাসান মাহবুব বলেছেন: ইনাদের সম্পর্কে আগেই জানি। আরো বেশি লেখালেখি হওয়া দরকার। আরো বেশি মানুষের জানা দরকার। চালিয়ে যান।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৬
সেভেরাস স্নেইপ বলেছেন: প্রথম পর্বে পরিচিত কিছু মুখ আনার চেষ্টা ছিল, তবে আগামী পর্বগুলোতে চেষ্টা করবো কম আলোচিত ক'জন বিদেশী বীর সম্পর্কে জানানোর। ধন্যবাদ হাসান মাহবুব ভাই।
৪| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪৮
ফাহীম দেওয়ান বলেছেন: কিছু জানি। আরো জানতে চাই। চালিয়ে যান। সবাই জানুক।
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৩
সেভেরাস স্নেইপ বলেছেন: দ্রুত প্রকাশের চেষ্টা থাকবে। ধন্যবাদ আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৪
নিয়েল ( হিমু ) বলেছেন: চলুক
++++++++++++