নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি শাহ্ ফখরুল ইসলাম আলোক। পেশায় আই্নজীবী, থাকি মৌলভীবাজারে।

শাহ্‌ ফখরুল ইসলাম আলোক

একদিন চলে যাবো অনন্তের পথে ......।

শাহ্‌ ফখরুল ইসলাম আলোক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাইতুল্লাহর পথে (পর্ব-০৫)

১৫ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১০:৪১

সম্ভবত জিলহজ মাসের প্রথম দিনে, অর্থাৎ গত ২৮শে মে কাবার সম্মানিত ইমাম ড. আব্দুর রহমান আস সুদাইসের ইমামতিতে ইশার সালাত আদায় করলাম আমরা। ইশার সালাতের পরে জিলহজ মাসকে স্বাগত জানিয়ে তিনি খুতবা দিলেন। আরবী ভাষা তো জানি না, কিন্তু খুতবা শুনে ধারণা করতে পারলাম যে, জিলহজ মাস সম্পর্কে খুতবা দিচ্ছেন। প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্ব বিখ্যাত এই ক্বারীর কুরআন তেলাওয়াত আগেই শুনেছি, কুরআন তেলাওয়াত সরাসরি শুনবো- অনেকদিন ধরে তেমন এক ইচ্ছে ছিলো। সেদিনের ইশার সালাতের মাধ্যমে সেই লালিত স্বপ্নও বাস্তবায়িত হলো। ড. সুদাইস যখন কুরআন তেলাওয়াত করেন, তা এতই শ্রুতিমধুর যে, কেবলই শুনতে ইচ্ছে হয়। তা'ছাড়াও মসজিদুল হারামে মাহের আল মুআইকলি, ইয়াসির আল দো'সারি প্রমুখের ইমামতিতে সালাত আদায়ের সৌভাগ্য হয়েছে আমার। সবার কন্ঠেই পবিত্র কুরআনের মাধুর্য্য ফুটে উঠে। আফসোস আমাদের দেশের খুব কম মসজিদেই এত ধীরে স্থিরে, তারতিলের সাথে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত হয়। কোন কোন মসজিদে ইমাম যদি ধীরে স্থিরে কুরআন তেলাওয়াত করেন, তাহলে মুসল্লীরা রীতিমত বিরক্ত হয়ে ইমামকে কটূবাক্য বর্ষণ করেন- তা আমাদের দেশে অতি স্বাভাবিক এক ঘটনা!

মসজিদুল হারামের মুসল্লী


মসজিদুল হারাম পৃথিবীর সবচাইতে বড় মসজিদ, যার ধারণ ক্ষমতা ৪০ লক্ষ। অন্যান্য মসজিদের মত আজান শুনে এই মসজিদে সালাত আদায়ের জন্যে যাওয়ার চেষ্টা করে কোন লাভ নেই, মসজিদে জায়গা মিলবে না; তাই আমরাও যে ক'দিন মক্কায় ছিলাম- আজানের অন্তত ১৫/২০ মিনিট আগে মসজিদে যাবার জন্যে চেষ্টা করতাম। জুমার সালাতের জন্যে আমি সকাল ৮টায় গিয়ে অনেক কষ্টে মসজিদুল হারামে স্থান পেয়েছি। সব হাজীরই উদ্দেশ্য মসজিদুল হারামের মুসল্লী হওয়া, স্বভাবতই সেখানে ভিড়ও বেশি হবে। এবছরের হাজীর সংখ্যা ১৬,৭৩,২৩০ জন, এর মাঝে বাংলাদেশের ৮৭,১৫৭ জন ছিলেন। সবাই ধীরে ধীরে মক্কা অভিমুখে আসতে শুরু করেছেন, মক্কায় তখন ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। সেকারণে কয়েকদিন মসজিদুল হারামের মূল প্রাঙ্গনে প্রবেশ করতে পারিনি, কোন দিন কবুতর চত্বর, কোন দিন মসজিদুল হারাম সংলগ্ন ফাঁকা জায়গায় সালাত আদায় করতে হয়েছে।


মসজিদুল হারামের আনাচে কানাচে অসংখ্য কুরআন মজিদ রাখা আছে, অনেক মুসল্লী সেখানে নিয়মিত কুরআন পাঠ করে থাকেন। মুসল্লীরা যেহেতু নিয়মিত কুরআন পাঠ করেন, তাই কয়েকটি কুরআন মজিদ মসজিদুল হারামে দিয়ে আসবো- এই ভেবে স্থানীয় দোকান থেকে কয়েকটি কুরআন মজিদ কিনলাম। একটি ব্যাগে করে সবগুলো কুরআন সাথে নিয়ে মসজিদে প্রবেশের সাথে সাথেই বাধা এলো- ভুলেই গিয়েছিলাম যে, মসজিদুল হারাম কিংবা মসজিদে নববীতে কোন বড় ব্যাগ সাথে করে নিয়ে যাওয়া নিষেধ। তখন ইংরেজী ভাষী একজন সেবক এগিয়ে এলেন, তিনি আমার সমস্যার কথা শুনে নিজে সবগুলো কুরআন নিয়ে পৃষ্ঠা উল্টিয়ে দেখলেন, অনেক প্রশংসাবাক্যে ভূষিত করে সবগুলো কুরআন মসজিদে রেখে দিবেন বলে নিয়ে নিলেন; কিন্তু সাথের ব্যাগ যত বিপত্তি বাঁধালো। কোনভাবেই মসজিদে প্রবেশের অনুমতি পাইনি সেদিন। বাধ্য হয়ে সেদিনই প্রথম মসজিদুল হারামের বাইরের রাস্তায় ইশার সালাত আদায় করতে হলো।

সৌদী আরবের হজ ও উমরাহ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া এবার কেউই হজ করতে পারেননি। এ ব্যাপারে সৌদী আরবের প্রশাসন খুবই কঠোর ছিলেন। হাজীরা আল্লাহর মেহমান, সেই মেহমানদের যথাযথ সম্মান ও আপ্যায়ন করতে সৌদী আরবের প্রশাসন ও স্থানীয় লোকজন যেমন তৎপর ছিলেন, তেমনি পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যেরাও হাজীদেরকে যথেষ্ট সম্মান করেছেন। মসজিদুল হারামে সেনাবাহিনীর এক সদস্য আমাকে গাওয়া (আরবের স্থানীয় কফি) দিয়ে আপ্যায়নও করেছেন। এই ভদ্রতা আসলেই মনে রাখার মত। আর হাজীদের নিরাপত্তার জন্যে মক্কা নগরী এবং আশেপাশের এলাকা জুড়ে হেলিকপ্টারে টইল, AI (Artificial Intelligence) এর ব্যবহার এবং পুলিশ, সেনাবাহিনী ও সেবকদের দায়িত্ব- প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রশাসনের তৎপরতা নজর কেড়েছে।

[চলবে]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.