নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিন্তাশীল মানুষ হওয়ার চেষ্টায় আছি

সাড়ে চুয়াত্তর

আমার লেখার মাঝে আমার পরিচয় পাবেন

সাড়ে চুয়াত্তর › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেহের রক্তনালীতে বাতাসের বুদবুদ প্রবেশ করলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে

১০ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:৪৮


শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে দেহের ভিতরে বাতাস প্রবেশ করে আবার বের হয়ে যায়। এই বাতাস ফুসফুসে যায় এবং ফুসফুসের নিকটবর্তী সূক্ষ্ম রক্তনালীগুলি সেই বাতাস থেকে অম্লজান গ্যাস (অক্সিজেন) সংগ্রহ করে। এই অম্লজান রক্তের সাথে মিশে যায়। অম্লজান সমৃদ্ধ রক্ত প্রতিটি কোষে পৌছায়। আবার কোষ থেকে নির্গত অঙ্গার দ্বি অম্লজান গ্যাস (কার্বন ডাই অক্সাইড) রক্তের সাথে মিশে যায়। সেই কার্বন ডাই অক্সাইড মিশ্রিত রক্ত ফুসফুসে আসে এবং নিশ্বাসের সাথে দেহ থেকে বের হয়ে যায়।

তাহলে দেখা যাচ্ছে যে প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের দেহের ভিতরে বাতাস থাকে। কিন্তু এই বাতাস যদি বুদবুদ আকারে কোনভাবে রক্তনালীতে ঢুকে যায় তাহলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই ধরণের ঘটনাকে এয়ার এমবোলিসম (Air Embolism) বলে। এয়ার এমবোলিসমের ফলে বাতাসের বুদবুদ হৃদপিণ্ড, ব্রেন কিংবা ফুসফুসে প্রবেশ করতে পারে। পরিনামে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হতে পারে কিংবা শ্বসনতন্ত্র অকেজ হয়ে যেতে পারে যা কিনা মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে। কয়েকভাবে অসাবধানতাবশত রক্তনালীতে বাতাসের বুদবুদ প্রবেশ করতে পারে।

১। ইঞ্জেকশন দেয়ার সময় সিরিঞ্জের মাধ্যমে। এই কারণে খেয়াল করবেন যে নার্স বা ডাক্তার ইঞ্জেকশন পুশ করার আগে সিরিঞ্জের ভিতরের কিছুটা মেডিসিন সুইয়ের মাথা দিয়ে বের করে দেয়। এটা করা হয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য যেন সিরিঞ্জে কোন বাতাস না থাকে। কোন কারণে সিরিঞ্জের ভিতরে বাতাস থাকলে এবং সেটা যদি রক্তনালীতে পুশ করা হয় তাহলে বাতাসের বুদবুদ রক্তনালীতে ঢুকে যাবে।

২। রক্তনালীতে ব্যবহৃত ক্যাথেটারের মাধ্যমে। অনেক সময় রক্তনালীতে ব্যবহৃত ক্যাথেটার থেকে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

৩। অস্ত্রোপচারের সময়। বিশেষ করে মগজের কোন অস্ত্রোপচারের সময়। শল্য চিকিৎসকরা জানেন কিভাবে এই বুদবুদকে সরিয়ে ফেলতে হয়। অস্ত্রোপচারের সময় কোন কারণে বাতাসের বুদবুদ রক্তনালীতে প্রবেশ করলে সেটা সরিয়ে ফেলার কৌশল শল্য চিকিৎসকরা জানেন।

৪। ক্ষতিগ্রস্ত ফুসফুসে ভেন্টিলেটর ব্যবহারের সময়। ভেন্টিলেটর ক্ষতিগ্রস্ত ফুসফুসে অস্বাভাবিক চাপ প্রয়োগ করে বাতাসের বুদবুদ প্রবেশ করাতে পারে।

৫। স্কুবা ডাইভিং করার সময়। স্কুবা ডাইভাররা যদি বেশী সময় পানির নীচে থাকে তাহলে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বেশীক্ষণ দম আটকে রাখলে ঝুকি বেশী। তার ফলে ফুসফুসের উপর চাপ পরে। এই চাপের কারণে ফুসফুসের সূক্ষ্ম এলভিওলি ফেটে যেতে পারে। পরিনামে বাতাসের বুদবুদ রক্তনালীতে প্রবেশ করতে পারে। সাধারণত দীর্ঘ সময় দম বন্ধ রাখলে বা অতি দ্রুত পানি থেকে উপরে উঠলে এই ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

৬। বোমা বা ঐ জাতীয় কোন বিস্ফোরণের কারণে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হলে। যুদ্ধক্ষেত্রের সৈন্যরা অনেক সময় এই ধরণের দুর্ঘটনায় পতিত হয়।

৭। এই কারণটা কিছুটা অশ্লীল এবং হাস্যকর মনে হলেও চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন। সেটা হোল যদি কোন নারীর যোনিতে কোন পুরুষ মুখ দিয়ে প্রচণ্ড বেগে ফু দিতে থাকে। সেই ক্ষেত্রে প্রচণ্ড চাপের কারণে বাতাস রক্তনালীতে ঢুকে যেতে পারে। কারণ যোনির কাছাকাছি অনেক সূক্ষ্ম রক্তনালী থাকে। যোনিতে কোন কারণে ইঞ্জুরি হলে বা ছিঁড়ে গেলে এই ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ঝুকি আরও বেশী। তাই যোনিকে বাচ্চাদের খেলার বেলুন ভেবে ফুলাতে চেষ্টা করাটা হবে কোন পুরুষের জন্য চরম বোকামি।

এয়ার এমবোলিসমের লক্ষণঃ
১। শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
২। বুকে ব্যথা কিংবা হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা কমে যাওয়া
৩। পেশি বা গিরায় ব্যথা
৪। ব্রেন স্ট্রোক
৫। রক্তচাপ কমে যাওয়া
৬। চামড়া নীল হয়ে যাওয়া

সনাক্ত করার পদ্ধতিঃ
১। সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে
২। আলট্রা সাউন্ডের মাধ্যমে

চিকিৎসাঃ
১। উচ্চচাপের ১০০% অক্সিজেন পূর্ণ কক্ষে রেখে চিকিৎসা। এই পদ্ধতিতে বুদবুদ ধীরে ধীরে ছোট হয়ে যায় এবং রক্তে মিশে যায়।
২। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। বুদবুদের নির্দিষ্ট স্থান সনাক্ত করা গেলে অস্ত্রোপচারের সাহায্যে চিকিৎসা করা হয়।
৩। রোগীকে আনুভূমিক না রেখে বসিয়ে রাখা যেন দেহের উপরের অংশে সহজে বাতাসের বুদবুদ না যেতে পারে।
৪। হৃদপিণ্ডের গতি স্বাভাবিক রাখার জন্য ওষুধ প্রয়োগ।

তবে আশার কথা হোল সামান্য পরিমান বাতাস প্রবেশ করলে অনেক সময় নিজে থেকেই সেটা রক্তে মিশে যায়।

সুত্রঃ healthline.com/health/air-embolism
ছবি- study.com/academy/lesson/what-is-an-air-embolism.html

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:১৩

কামাল৮০ বলেছেন: আল্লাহ যে ভাবে মৃত্যু লিখে রেখেছে সে ভাবেই হবে।

১০ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:৩১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আজরাইল (আঃ) আল্লাহকে জিজ্ঞেস করলেন আল্লাহ আমি সবার জান কবচ করি, সবাই তো আমাকে ঘৃণা করবে এবং দোষ দেবে। আমি তো শুধু আপনার হুকুমে জান কবচ করে থাকি এখানে আমার কোন ক্ষমতা বা ইচ্ছা বলে কিছু নেই।

আল্লাহতায়ালা বললেন যে চিন্তা কর না আজরাইল। আমি রোগ, ব্যাধি, দুর্ঘটনা, বার্ধক্য, হত্যা ইত্যাদিকে মৃত্যুর কারণ বানিয়ে দেব। তাই কেউ তোমাকে দোষারোপ করবে না। ( হাদিসের ভাবার্থ বললাম)

আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন, মালাকুল মউত মূসা (আঃ)-এর নিকট আসেন তাঁর জান কবয করার জন্য। তখন তিনি তাকে থাপ্পড় মারেন। ফলে তার চোখ নষ্ট হয়ে যায়। তখন মালাকুল মউত তার প্রতিপালকের নিকট ফিরে যান এবং বলেন, আপনি আমাকে এমন এক বান্দার নিকট পাঠিয়েছেন, যিনি মরতে চান না। আল্লাহ তার চোখ ফিরিয়ে দেন এবং বলেন, তুমি পুনরায় যাও এবং তাকে বল, আপনি কতদিন বাঁচতে চান? অতঃপর তুমি একটি ষাঁড়ের দেহে হাত রেখে বলবে, এর মধ্যে যত লোম আছে ততদিন আপনার হায়াত বৃদ্ধি করা হবে। তিনি বললেন, অতঃপর কি হবে? তিনি বললেন, আপনি মৃত্যুবরণ করবেন। তখন মূসা বললেন, তাহ’লে এখুনি হৌক। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে বায়তুল মুক্বাদ্দাস থেকে একটি ঢিল ছোঁড়ার দূরত্বে নিয়ে যাও। রাসূল (ছাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! যদি আমি সেখানে থাকতাম, তাহ’লে আমি তোমাদেরকে রাস্তার ধারে সেই লাল ঢিবির স্থানটি দেখিয়ে দিতাম’ (বুখারী হা/৩৪০৭; মুসলিম হা/২৩৭২; মিশকাত হা/৫৭১৩)।

২| ১০ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:৩৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
১ আর ৫টা শুধু জানা ছিলো।

১০ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:৪৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ৫ টা নতুন জিনিস জানলেন তাহলে। এই ৫ টা থেকেও সাবধান থাকতে হবে।

৩| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১২:৪৩

শায়মা বলেছেন: রক্তনালীতেও বাতাসের বুদবুদ!

বাপরে জীবনে ভাবিও নি। :(

১১ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১:০৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এরকম অনেক সময় হয়। কোনভাবে যদি রক্তনালীতে বাতাস ঢুকে যায় তাহলে মৃত্যুর সম্ভবনা আছে।

সিরিঞ্জের সাহায্যে যদি শুধু বাতাস কারও রক্তনালীতে দেয়া হয় তাহলে তার মৃত্যু হতে পারে। :)

৪| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১২:৪৯

একলব্য২১ বলেছেন: আমি ব্যাপারটা জানতাম। এইভাবে শরীরের ভিতর বাতাস ঢুকিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে বলে পত্রিকায় পড়েছি।

তবে ১নং কারণটা আজ পরিষ্কার হল।

১১ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১:০৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমি রক্তনালীতে বাতাস প্রবেশের এতগুলো কারণ জানতাম না। শুধু ইঞ্জেকশনের কথা জানতাম। পোস্ট তৈরি করতে গিয়ে বাকিটা জানলাম।

৫| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ৭:০৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
শুধু রক্ত নালীতে নয়,
পায়ু পথে বাতাস প্রবেশ
করালেও মানুষের মৃত্যু
হতে পারে।

১১ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমাদের দেশে এই ধরণের ঘটনা কয়েক বছর আগে ঘটেছিল। মানুষ মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলছে দিন দিন।

৬| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ৭:৩৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: রক্তনালীতে বুদ্বুদ প্রবেশের বিচিত্র কারণগুলো জানা হলো। কিছু কারণ ভয়ের উদ্রেক করলো, কিছু হাসির!

১১ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমি দুই একটা কারণ জানতাম। বাকিগুলি পোস্ট তৈরি করার সময় জেনেছি।

৭| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৩৯

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: রক্তনালীতে বুদবুদ প্রবেশ ভংঙ্কর বিষয়।

১১ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমি এটা সম্পর্কে জানতাম। কিন্তু পোস্ট করতে গিয়ে আরও ভালো ভাবে জেনেছি।

৮| ১১ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:০৫

জুল ভার্ন বলেছেন: রক্তনালীতে বুদ্বুদ প্রবেশের বিষয় আমরা ছেলে বেলায় সিভিল ডিফেন্সের প্রাথমিক প্রশিক্ষণে ধারণা পেয়েছিলাম। সেখানে ইনজেকশন পুশ করার নিয়ম শেখানো হয়েছিলো। যাতে ইনজেকশনে সিরিঞ্জ থেকে বাতাস ভালো করে বের করে ইনজেকশন পুশ করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিলো।

১১ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি সম্ভবত ক্যাডেট কলেজে থাকার সময় শিখেছিলেন। ওখানে এই ধরণের ট্রেনিং আছে আমার জানা ছিল না।

৯| ১৮ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:২১

জুন বলেছেন: আমি শুনেছি এই ভাবেই সিরিঞ্জে বাতাস ঢুকিয়ে পুশ করে একের পর এক পথ কুকুরদের মেরে ফেলা হয় সাড়ে চুয়াত্তর। কি মর্মান্তিক। কিন্ত পথ কুকুররাও অনেক সময় মানুষের জন্য ভয়াবহ।

১৮ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:১৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বাংলাদেশে এভাবে কুকুর হত্যা করে কি না আমি জানি না। বিদেশের কথাও জানি না।

ঢাকাতে অনেক আগে রাস্তার বিপদজনক কুকুরগুলিকে সাড়াশি বা বল্লম জাতীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে সিটি কর্পোরেশনের ট্রাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হতো জলাতঙ্ক রোগের প্রকোপ কমানোর জন্য।

আমার মেয়ে বছরখানেক আগে বাসার সামনে সাইকেল চালাতে ভয় পেত এই সব পথ কুকুরদের উপদ্রবের কারণে। এক সাথে কয়েকটা কুকুর পিছন পিছন দৌড়াতো আর ঘেউ ঘেউ করে ভয় দেখাতো। এখন সমস্যাটা নাই অবশ্য।

ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.