নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিন্তাশীল মানুষ হওয়ার চেষ্টায় আছি

সাড়ে চুয়াত্তর

আমার লেখার মাঝে আমার পরিচয় পাবেন

সাড়ে চুয়াত্তর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘরের মেঝো ছেলে বা মেয়ের মনোজগৎ

০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৩২


মেঝো সন্তান যারা তারা একটু অবহেলিত হয় সাধারণত। পরিবারে মেঝো সন্তান একাধিকও হতে পারে যদি ভাই বোন বেশী থাকে। ভালো প্যারেন্টস হতে চাইলে এই অবহেলার বিষয়টা মাথায় থাকা উচিত। পরিবারের বড় সন্তান এবং সবচেয়ে ছোট সন্তান বাবা মায়ের বিশেষ স্নেহ ভালাবাসা এবং মনোযোগ বেশী পায় মাঝখানে জন্মানো সন্তানদের চেয়ে। এই কথাটা চিরন্তন সত্য না হলেও বহুলাংশে সত্য বলে মনে হয়। এই না পাওয়া কি মেঝো ছেলে/ মেয়ের ব্যক্তিত্ব বিকাশে প্রভাব ফেলে? অনেক মনোবিজ্ঞানী এই বিষয়ের পক্ষে বলেছেন আবার অনেকে বিপক্ষে বলেছেন। তবে আমার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে আমার কাছে মনে হয়েছে যে এই বিষয়টার মধ্যে কিছুটা সত্যতা আছে।

আমার বড় বোনকে আমার বাবা মা তুই করে সম্বোধন করতেন আজীবন কিন্তু বাকি ৩ ভাইকে তুমি করে সম্বোধন করতেন। আমি এই ব্যাপারে একবার আমার মাকে বলেছিলাম যে তোমরা তো আপাকে বেশী ভালোবাসা এবং এটা তো বোঝাই যায় কারণ তোমরা তাকে তুই করে ডাক আর আমাদের তুমি বলে ডাক। এই কথার কোন সদুত্তর আমার মা দিতে পারেননি। কিছুটা বিব্রত হয়েছিলেন বটে।

আবার আমার তিন ভাইয়ের মধ্যে বড় ভাই ছোটবেলা থেকে সব কিছুতে অগ্রাধিকার পেয়ে এসেছে। কারণ সে বড় ছেলে। ছেলেদের জন্য যে কোন আকর্ষণীয় জিনিসের ক্ষেত্রে আমার বড় ভাইকে সবার আগে দেয়া হত। যেমন প্রথম আলাদা আলমারি, প্রথম আলাদা কক্ষ, প্রথম সাইকেল, প্রথম পড়ার টেবিল, ক্যাসেট প্লেয়ারের নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি আরও অনেক কিছু। আবার আমার ছোট ভাই মানুষ হয়েছে ছোট বাবু হিসাবে। সবার ছোট বলে তার সাত খুন মাফ। আমার সাথে কোন কারণে ঝগড়া হলে সবাই ছোট ভাইয়ের পক্ষ নিত। ওর বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ শুনলে বাবা মা চাচা ফুফুরা হেসে উড়িয়ে দিত। আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করতো। যেটা ছিল আমার জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক।

অনেক মনোবিজ্ঞানী মনে করেন যে মেঝ সন্তানরা বড় বা ছোটদের চেয়ে একটু আলাদা হয়। তাদের মতে সাধারণত মাঝখানের সন্তান/ সন্তানদের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকে মাঝেখানে থাকার কারণে। যদিও এটা স্বতঃসিদ্ধ না। বড় বা ছোট সন্তানেরও এই বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে। তবে সাধারণত ভাইবোনের মাঝখানে থাকার কারণে মেঝোদের এই প্রবণতা বা বৈশিষ্ট্য বেশী থাকে।

১। একটু বিদ্রোহী প্রকৃতির হয়।
২। পরিবারমুখীতা কম থাকে
৩। পারফেকশন খোঁজে না
৪। দুই পক্ষকে আপোষ করাতে এরা দক্ষ হয়
৫। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার প্রবণতা থাকে
৬। ঝুকি নিতে ভয় পায় না
৭। খোলা মনের হয়
৮। কাউকে কোন কিছুতে উৎসাহিত করা বা অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা থাকে
৯। সহানুভূতিশীল হয়
১০। অনেকে নিজেদের শৈশবকাল সম্পর্কে নেগেটিভ ধারণা পোষণ করে।
১১। অন্যায় কিছু না হলে আপস করার মনোভাব রাখে।
১২। এরা ইজি গোয়িং হয়ে থাকে
১৩। এদের উদ্ভাবনী শক্তি অপেক্ষাকৃত বেশী থাকে
১৪। এরা স্বাবলম্বী হয়

নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য কি কি আছে? আমার মনে হয় নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলি হল;

১। অনেকে হীনমন্যতায় ভোগে।
২। আবেগ প্রবণ বেশী হয়
৩। উদাসীন হয়

আশা করি ব্লগাররা পরিবারে ভাইবোনদের মধ্যে নিজেদের অবস্থান থেকে এই বিষয়ের পক্ষে বা বিপক্ষে কিছু বলবেন। এটা হতে পারে অনেকটা অন্ধের হাতি দেখার মত। হাতিকে যে যেভাবে অনুভব করেছে সেই ভাবেই বর্ণনা করেছে। উপরের বর্ণনা সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাও হতে পারে।

সুত্রঃ
en.wikipedia.org/wiki/Middle_child_syndrome
webmd.com/mental-health/what-to-know-middle-child-syndrome
rd.com/list/middle-child-traits/

ছবি - ইডি টাইমস

মন্তব্য ২৩ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:২৯

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:

১০ নং পয়েন্ট ভোগায় বেশি মনে হয়।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৫৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমাকে অবশ্য ভোগায় না। অনেক মনোবিদ এই কথা বলেছেন। অনেকের ক্ষেত্রে হয়তো এই কথা সত্যি। পোস্টে যে বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করেছি সেগুলি সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাও হতে পারে।

২| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ২:৩০

অনল চৌধুরী বলেছেন: বিষয়গুলি কি সবার জন্যই প্রযোজ্য ??
আমি বড় তাই আমিই রাজা, মহারাজা এবং সম্রাট।


**-পত্রিকায় প্রকাশিত একটা লেখা নিয়ে হুলস্থুল হয়ে গেছে।
ফোনে বিস্তারিত বলবো।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৮:৩৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: না সবার জন্য প্রযোজ্য না। অনেকগুলি বিবেচ্য বিষয় থাকতে পারে। যেমন পিতা মাতার বাচ্চা মানুষ করার দক্ষতা বা জ্ঞান, পরিবারের আর্থ সামাজিক অবস্থা বা অবস্থান, মাঝের বাচ্চার/ বাচ্চাদের মানসিক কাঠামো, জিনগত বিশিষ্টের প্রভাব, বড় সন্তানের ছোটদের প্রতি মন মানসিকতা ইত্যাদি।

বড়দের মধ্যে এই ভাবটা অনেক সময় আসে যে 'আমি বড় তাই আমিই রাজা, মহারাজা এবং সম্রাট'। এই অনুভূতিটা মাঝের সন্তানেরা পায় না অবস্থানের কারণে।

বড় ভাই বা বড় বোনরা অনেক সময় অন্যায়ভাবে প্রভাব খাটাতে চায় ছোটদের উপর। এটার প্রভাব পরে যারা ছোট/ মেঝো থাকে তাদের উপর।

আমি যখন ৩য় শ্রেণীতে পড়ি তখন আমার বড় ভাই পরে ৭ম শ্রেণীতে। তখন সে কয়েকদিন পর্যন্ত আমাকে বাধ্য করে একটা বড় ফুটবল মাঠে অনেকের সাথে (সে সহ) একটানা প্রায় ৮-১০ চক্কর দেয়ার জন্য (প্রায় ৪০ মিনিট বা তার চেয়ে বেশী সময়)। এই পরিশ্রম ঐ বয়সে আমার জন্য বেশ কষ্টকর ছিল। কিন্তু আমার বড় ভাইয়ের চোখ রাঙ্গানিতে আমি করতে বাধ্য হই। যদিও সে যুক্তি দেখাচ্ছিল যে এটা শরীরের জন্য ভালো। কিন্তু সে নিজেই তো কিশোর তাই ভালো মন্দ পার্থক্য করতে অনেক সময় সেও ভুল করতে পারে এটা তার মাথায় ছিল না। আমি যখন ক্লাস ওয়ানে পড়ি তখন আমার বোন পরে নাইনে। সে আমাকে ঢাকা- ময়মনসিংহ হাইওয়ে ধরে বাসা থেকে প্রায় এক কিলো দূরে একটা দোকানে পাঠায় তার জন্য বিস্কুট কিনে আনার জন্য। আমি ভয়ে ভয়ে সেখানে যাই। পাশ দিয়ে বড় বড় ট্রাক, বাস চলে যাচ্ছে। আমি বিস্কুট নিয়ে আসি। কিন্তু আনার পরে আমার বোন আমাকে একটা বিস্কুটও দিল না। সব নিজে খেল। একবার আমাকে সাধলও না। এই স্মৃতি আমার এখনও মনে আছে।

৩| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৪:৪১

হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: আমার মেজো ভাইয়ের ক্ষেত্রে অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য মিলে যায়।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৮:৪০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মেলার সম্ভবনা বেশী কারণ মেঝোরা সাধারণত মাঝখানে হওয়ার কারণে কিছু ব্যাপার বিশেষভাবে অনুভব করে যেটা তার বাবা মা, ভাই বোনের আচরণের কারণে হয়। তবে ব্যাপারটা সার্বজনীন না এবং প্রায়শই বড় হওয়ার পরে অনেকের ব্যক্তিত্বে তেমন প্রভাব ফেলে না।

৪| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:২৮

জুল ভার্ন বলেছেন: আমার যেহেতু আপন ভাই বোন নাই- তাই আমি বড়ো-মেঝো-ছোটোর গুরুত্ব পরিবার থেকে কখনো বুঝতে পারিনি। আমার দুই ছেলে আমার কাছে দুই নয়ন। কারোর প্রতি পক্ষপাতিত্ব নাই। তবে দুই ছেলের জীবনচারিতায় বুঝতে পারি- বড়ো ছেলে জীবন সম্পর্কে যথেষ্ট বাস্তব জ্ঞান রাখে, যা ছোট ছেলের মধ্যে নাই। সম্বোধনে আমাদের বৃহত্তর পরিবারে সবাইকেই 'তুমি' সম্বোধন করায় অভ্যস্থ। অভ্যসগত কারণে এই 'তুমি' সম্বোধন নিয়ে বাইরেও মাঝেমধ্যে বিব্রত হতে হয়।

আমার বাবা-চাচাদের মধ্যে আমার বাবা ছিলেন মেঝো। তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্টের মধ্যে আপনার পোস্টে উল্লেখিত মেঝো সন্তানের বৈশিষ্টের সাথে তেমন একটা মিল নাই।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সবার ক্ষেত্রে এই ধরণের বৈশিষ্ট্য না পাওয়া যেতে পারে। কারণ মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আরও অনেক কিছুর উপরে নির্ভর করে। বাবা মা কিভাবে সন্তানকে মানুষ করেছে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জিনের দ্বারা কিছু বৈশিষ্ট্য মানুষ পায়। এই কারণে মিল না পাওয়া যেতে পারে।

৫| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: আমি মেজো।
আমরা চার ভাই। আপনার পোষ্টের সাথে আমার বেশ মিল খুঁজে পেলাম।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এই মিল সবাই হয়তো খুঁজে পাবে না। প্রত্যেকটা পরিবারের পরিবেশ ভিন্ন। আপনি কিছু মিল অন্তত পেয়েছেন।

৬| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:৫৩

সোহানী বলেছেন: আরে দারুন বিষয় নিয়ে লিখেছেনতো...। আমরা যারা মাঝে তারা অলওয়েজ মাইনকার চিপায় থাকি..............হাহাহাহা

১০০% সহমত ;)

১২ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: যারা মেঝো ভাই বা বোন তারা এই লেখার মর্ম বুঝতে পারবে। আপনি আমার মতই মেঝো তাই সহমত প্রকাশ করেছেন। :)

৭| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:২০

দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: দারুন একটি বিষয় লিখেছেন কিন্তু আমি বলতে চাই পরিবারের ছোট সন্তান হিসেবে আমার উপর দাপট চলে সবচেয়ে বেশি। :) এক কথায় বলা যায় অতি আদর এবং হুকুমতের আজ্ঞাধিন হওয়ায় নিজেকে এখন এইটুকুনি মনে হয় :) ফলে মূল্যবান মত প্রকাশন নিছক মূল্যহীন হয়ে যায়। অবশ্য ব্লগে এ সকল মূল্যবান দৃষ্টিভঙ্গির বেশ কদর পাচ্ছি :)

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:০৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: একদম ছোট সন্তান আদর যেমন বেশী পায় ফাইফরমাশ আর শাসনও তাকে একটু বেশী করা হয় বড়দের দ্বারা। তবে আদরের কারণে সেটা পুষিয়ে যাওয়ার কথা। :) আমি মেঝো হওয়াতে আদর তেমন পাইনি। আমার ছোট ভাইয়ের প্রতি আদর দেখে আমার ঈর্ষা হত। :)

ছোট ভাই বা বোন বড় হলেও ছোট ছোট ভাব থাকে। এটা ঠিক। তখন ছোট ছেলে/ মেয়ের ভালো কথাও বড়রা শুনতে চায় না। ব্লগেও আপনি ছোটদের গ্রুপেই পড়েন সম্ভবত। আপনার প্রতি তাই বড় ব্লগারদের একটা স্নেহ আছে। কিন্তু ব্লগে আপনার মন্তব্যকে গুরুত্ব সহকারেই বিবেচনা করেন বড়রা। :)

ছোট বলে তার দৃষ্টিভঙ্গি বড় হবে না এমন কোন কথা নেই।

৮| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:০৫

মিরোরডডল বলেছেন:




মেঝোদের কথা লিখেছে, সেজোদের কথা কে বলবে #:-S
নাকি তাদের অবস্থাও একই ?

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:২৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সেঝোরা সাধারণত গান ভালোবাসে, রান্না করতে ভালোবাসে, রান্না করে মানুষকে খাওয়াতে ভালোবাসে (খাবার হোক কিংবা অখাদ্য হোক যাই হোক না কেন), ফান ভালোবাসে, ঘুরতে ভালোবাসে, জোকস ভালোবাসে। :)

এই পোস্টের দ্বিতীয় লাইনে বুঝাতে চেয়েছি যে মেঝো বলতে সেঝো, ন, ফুল, ছোট, বাবু, সোনা সবাইকে বুঝায়। :) এদের সবার অবস্থাই অনেকটা একই বলে মনে হয়।

৯| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:২৪

মিরোরডডল বলেছেন:




পোস্ট পড়ে মনে হলো বিষয়টা রাশিচক্রের মতো।
সব রাশিতেই কিছু না কিছু মিল পাওয়া যায়, যে পড়বে মনে হবে তার কথা লিখেছে।

১। একটু না, অনেকখানি বিদ্রোহী প্রকৃতির
২। এটা উল্টো হয়েছে, ভীষণ পরিবার ঘনিষ্ঠ
৩। খুঁজিতো, মাঝে মাঝে

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:০০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মেঝো বা সেঝো হিসাবে আমি আমার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকেই অনেক কিছু অনভব করেছি। এই জন্য আমাকে মনোবিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। আমি মেঝো হিসাবে অনেক ক্ষেত্রে নিজেকে বঞ্চিত মনে করেছি। কারণ যাই হোক না কেন। তবে অনেক কিছু নির্ভর করে পিতা মাতার প্যারেন্টিং জ্ঞান, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, জিনগত বৈশিষ্ট্য, পরিবারের আর্থিক অবস্থা ইত্যাদির উপরে। তাই কোন মনোবিজ্ঞানী গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারবে না যে এগুলি সবার ক্ষেত্রেই ঘটবে।

আমার নিজের ক্ষেত্রেও আমি অনেকগুলি পয়েন্টে মিল পাইনি। আমার ক্ষেত্রে বিচার করলে;
১। বিদ্রোহী প্রকৃতির - আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করার চেষ্টা করি। কর্মক্ষেত্রে এই কারণে অনেক সমস্যায় পড়েছি। তবে পরিবারের ক্ষেত্রে বিদ্রোহী ছিলাম না। আমি যা পেতাম সেটাই মেনে নিতাম। বেশী কিছুর জন্য বিদ্রোহ করতাম না। বরং আমার বড় বা ছোটরা অনেক কিছুর বায়না ধরত। আমি কখনও কিছুতে বায়না ধরতাম না।
২। পরিবারমুখিতা কম থাকে - আমার সাথে মেলে না। আমি পরিবারমুখী সব সময় ছিলাম।
৩। পারফেকশন খোঁজে না - আমি পারফেকশন খুজি না। এটাতে মিল আছে।
৪। দুই পক্ষকে আপোষ করাতে এরা দক্ষ - আমি আপোষকামি মানুষ ( তবে অন্যায়ের সাথে না)। ঝগড়াঝাঁটি হলে মিটিয়ে ফেলতে ভালোবাসি। না মেটানো পর্যন্ত ভালো লাগে না। আমার বাবা মার ঝগড়ার মধ্যে আমি অনেক সময় মধ্যস্থতা করেছি। তবে তাদের মধ্যে বড় সমস্যা ছিল তাই আপোষের ক্ষেত্রে কোন বিশেষজ্ঞও সফল হতো না। তবে আমি অনেক ক্ষেত্রে চেষ্টা করেছি। উভয় পক্ষের কথা নিরপেক্ষভাবে বোঝার চেষ্টা করেছি।
৫। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার প্রবণতা থাকে - বেশী ঝুকি না থাকলে আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করি। কে কি ভাবল এটা ভাবি না। প্রতিবাদ করার মানসিকতা থাকার কারণে অনেক সমস্যায় পড়ি।
৬। ঝুকি নিতে ভয় পায় না - কোন গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য কাজে ঝুকি নিতে ভয় পাই না। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে বুঝে শুনে ঝুকি নেই। আমি যখন গাড়ি চালাই কখনও ঝুকি নেই না। ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ঝুকি নিয়ে কয়েকবার ধরা খেয়েছি।
৭। খোলা মনের হয় - আমি নিজেকে খোলা মনের মনে করি। কতটা খোলা এটা অবশ্য অন্যরা বলতে পারবে।
৮। কাউকে কোন কিছুতে উৎসাহিত বা অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা থাকে - খুব বেশী আছে বলে মনে হয় না। কারণ মাঝে মাঝে নিজেই উৎসাহ হারিয়ে ফেলি। তবে দুই এক জন বলেছে আমার অনুপ্রেরণায় তারা একটা ছেড়ে দেয়া পড়াশুনা আবার নতুন করে শুরু করেছে। আরেকজন মেয়ে কলিগ আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে উৎসাহিত করার জন্য। তাকে আমি চাকরীর পাশাপাশি একটা ব্যবসায় জড়ানোর ক্ষেত্রে উৎসাহ দিয়েছিলাম। কিভাবে সমস্যা মোকাবেলা করবে সে ব্যাপারেও বলেছিলাম। এখন সে চাকরী ছেড়ে ঐ ব্যবসায় খুব ভালো করছে।
৯। সহানুভূতিশীল হয় - আমি সহানুভূতিশীল সম্ভবত। মানুষ ভালো বলতে পারবে আমার সম্পর্কে। আমার বস আমাকে টিটকারি মেরে ' মহা দয়ালু দানবীর' বলে। অধিনস্থ অনেকের ব্যাপারে সহানুভূতি দেখালে বসরা ভালো চোখে দেখে না। তারা অন্যায়ভাবে টাইট দিতে চায়। যেটা আমি পারি না।
১০। অনেকে নিজেদের শৈশব নিয়ে নেগেটিভ ধারণা পোষণ করে - আমি অনেক ক্ষেত্রে বঞ্চিত হলেও নিজের অতীত নিয়ে কোন আফসোস নেই। কোন নেগেটিভ ধারণা আমি পোষণ করি না।
১১। অন্যায় কিছু না হলে আপোষ করার মনোভাব রাখে - আমার সাথে মিলে যায়। আমি ঝগড়াঝাটি মিটিয়ে ফেলি। প্রয়োজনে সরি বলি।
১২। এরা ইজি গোয়িং হয় - আমি সম্ভবত ইজি গোয়িং - সহজভাবে মানুষের সাথে মিশতে পারি। আমার বাবার গুণ কিছু পেয়েছি মনে হয়। আমার অধিনস্থ লোকেরা আমাকে পছন্দ করে কিন্তু কোন সমস্যা শেয়ার করতে ভয় পায় না। আমি শিক্ষিত, অশিক্ষিত, ধনী, গরীব সব ধরণের মানুষের সাথে একইভাবে মিশতে পারি বলে মনে করি।
১৩। এদের উদ্ভাবনী শক্তি অপেক্ষাকৃত বেশী - আমি মনে হয় এই ব্যাপারে মাঝামাঝি অবস্থানে আছি।
১৪। এরা স্বাবলম্বী হয় - অন্যের উপর নির্ভর করাকে অপছন্দ করি। মানুষের কাছ থেকে কখনও কিছু ধার করিনি। তবে অনেককে ধার দিয়েছি ( টাকা বাঁ অন্য কিছু)

নেতিবাচক -
১। হীনমন্যতা - অনেক সময়ভুগি - আমার ভাঙ্গা গাড়ি নিয়ে মাঝে মাঝে হীনমন্যতায় ভুগি।
২। আবেগ প্রবণ বেশী হয় - আমি আবেগ প্রবণ।
৩। উদাসীন হয় - আমি অনেকটাই উদাসীন বৈষয়িক ব্যাপারে। তবে কাজের ক্ষেত্রে না।

১০| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:২৫

মিরোরডডল বলেছেন:




পোস্ট পড়ে মনে হলো বিষয়টা রাশিচক্রের মতো
সব রাশিতেই কিছু না কিছু মিল পাওয়া যায়, যে পড়বে মনে হবে তার কথা লিখেছে .

১। একটু না, অনেকখানি বিদ্রোহী প্রকৃতির
২। এটা উল্টো হয়েছে, ভীষণ পরিবার ঘনিষ্ঠ
৩। খুঁজিতো, মাঝে মাঝে :)
৪। একদম সঠিক
৫। ১০০%
৬। ঝুঁকিতেই চ্যালেঞ্জ
৭। এটা লোকেই ভালো বলতে পারবে
৮। সঠিক
৯। মনে হয়
১০। নো আইডিয়া
১১। যুদ্ধ নয়, শান্তি
১২। ইয়েস বস
১৩। হয়তোবা
১৪। মোর দেন ১০০%



১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:০৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ৭। মিরোরডডল খোলা মনের কি না - আমার তো মনে হয় খোলা মনের। তবে কতটুকু খোলে সেটা তো দূর থেকে বোঝা যায় না।
৯। সহানুভূতিশীল - উত্তর সমর্থন করলাম।
১৩। একটা রম্য লিখেছিল। এটা পড়ার পরে মনে হল উদ্ভাবনী শক্তি ভালোই আছে। :)

১১| ১৯ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ৮:৪৩

মুদ্‌দাকির বলেছেন: জীবনের অজানা অংশ গুলো ব্যাক্তিত্য গড়ে দিয়ে যায়............।

২০ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:২৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: শৈশবের অনেক ঘটনা আমাদের ব্যক্তিত্ব গঠনে ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

১২| ২০ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:৫৭

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ইন্টারেস্টিং !!!
হাহাহাহা সব পরিবারে মনে হয় এসব নিয়ে অভিযোগ করার কেউ থাকে। নেটফ্লিক্স এ একটা কোরিয়ান সিরিজ দেখলাম - বাসার তিন বাচ্চা বড় মেয়ে , মেঝ মেয়ে আর ছোট ছেলে। শীতের সময় হিটিং সিস্টেম এর সমস্যায় সামথিং গ্যাস ঘুমের মধ্যেই ছড়িয়ে পরে বাসায়, বাচ্চারা ঘুমের মাঝেই প্রায় সেন্সলেস হয়ে যাচ্ছিল। বাবা মা জেগে বড় মেয়ে কে বাবা আর ছেলে কে মা কাঁধে নিয়ে দৌড়ে বাইরে চলে আসেন। মিনিট খানেক দম নেয়ার পর মনে হয় আরেক মেয়ের কথা, হতাশ হয়ে ভেবেই নেয় মেয়ে আর বেঁচে নেই। প্রথম বাচ্চার সবকিছুই প্রথম, বাবা মায়ের জন্যে আনন্দময় অভিজ্ঞতা আর বাসার ছোট সার জীবন ছোট আদরের দুলাল দুলালী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.