নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিন্তাশীল মানুষ হওয়ার চেষ্টায় আছি

সাড়ে চুয়াত্তর

আমার লেখার মাঝে আমার পরিচয় পাবেন

সাড়ে চুয়াত্তর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধূসর অর্থনৈতিক খাত বা গ্রে ইকোনমিক সেক্টর এবং বাংলাদেশের জিডিপিতে উহার প্রভাব

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:৫৭


আমাদের দেশে বর্তমানে মাথা পিছু (পার ক্যাপিটা) জিডিপি হল প্রায় ২,৭৩৪ ইউ এস ডলার। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত গ্রে ইকোনমিক বা শ্যাডো ইকোনমিক খাতের কারণে আমাদের মাথা পিছু জিডিপি অনেক কম দেখায়। গ্রে ইকোনমিক খাত বলতে বুঝায় যে আয়গুলি অবৈধ অথবা যার উপর কর দেয়া হয়নি অথবা যে আয় কোন কারণে সরকারের হিসাবে আসেনি। অবৈধ আয় বলতে বুঝায় চোরাকারবারি, দুর্নীতি, ঘুষ, চুরি, ডাকাতি, পতিতাবৃত্তি, মানব পাচার, মাদক ব্যবসা, জুয়া, অবৈধ কমিশন, টেন্ডার কারসাজি, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ না করা, অর্থ পাচার ইত্যাদি। সরকারের হিসাবে না আসা আয়ের উদাহরণ হল ঘরের উঠানে বা ছাদে শাক সবজি বা ফলমুলের চাষ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর আয় (যেমন ফুটপাতের হকার), কিছু স্ব-নিয়োজিত পেশাজীবীর আয়, বাসার কাজের বুয়ার আয় ইত্যাদি। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশের গ্রে ইকোনমি আমাদের জিডিপির ৬২.৫০% থেকে ৮০% পর্যন্ত হতে পারে। তথ্যের অভাবে বা অবৈধ হওয়ার কারণে এই খাতের আয় আমাদের জিডিপিতে আসে না। অর্থাৎ এই গ্রে ইকোনমিক সেক্টরগুলির আয় হিসাবে নিলে আমাদের মাথা পিছু জিডিপি হত ৪,৯২১ ইউ এস ডলার।

পার ক্যাপিটা জিডিপি নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। এটা কোন আদর্শ সূচক না। তারপরও সরকারের বিভিন্ন অর্থনৈতিক নীতি এবং নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে জিডিপির সঠিক হিসাব খুব গুরুত্বপূর্ণ।

গ্রে ইকোনমি কেন সৃষ্টি হয়?

গ্রে ইকোনমি সৃষ্টি হওয়ার পিছনে বিভিন্ন কারণ আছে। দুর্নীতি, নৈতিক অবক্ষয়, অপরাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, অতিরিক্ত কর বা শুল্ক আরোপ, অতিরিক্ত বাণিজ্যিক নিয়ম কানুন প্রয়োগ যেগুলি মানতে জনগণ হিমশিম খায়, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণের এবং নথিভুক্তকরনের ক্ষেত্রে অদক্ষতা এবং উদাসীনতা, জনগণের কর ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা, প্রান্তিক পর্যায়ের আয়গুলি লিপিবদ্ধ করার কোন পদ্ধতি না থাকা, আয়ের অসম বণ্টন, হিসাব পদ্ধতির দুর্বলতা, নিম্ন মানের নিরীক্ষা, আইনের ফাঁক এবং অসঙ্গতি, ঘন ঘন আইনের পরিবর্তন, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দুর্বলতা ইত্যাদি কারণে গ্রে ইকোনমির আকৃতি বৃদ্ধি পায়। এরকম আরও অনেক কারণ আছে।

গ্রে ইকোনমির আকার বড় হওয়ার সুফল এবং কুফলঃ

কুফলঃ
১। অর্থনৈতিক নীতি প্রনয়নের ক্ষেত্রে ভুল হতে পারে। কারণ প্রকৃত অর্থনৈতিক চিত্র না জানা গেলে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ভুল হতে পারে। দেশের দারিদ্র্য এবং বেকারত্ব সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায় না। ফলে সঠিক প্রতিকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় না।

২। অনেকে নিয়ম মেনে কর দেয়ার বা ব্যবসা করার চেষ্টা করে কিন্তু নিয়ম ভঙ্গকারীদের সাথে এরা অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয়। ফলে সমাজে বৈষম্য তৈরি হয়। সৎ লোক পিছিয়ে পরে আর অসৎ লোক এগিয়ে যায়।

৩। সরকারের রাজস্ব কমে যায়। ফলে সরকারকে অনেক সময় ঋণ করতে হয় এবং জনগণের কল্যাণে অবদান রাখা কষ্টকর হয়ে যায় (তবে আমাদের দেশে প্রায়শই জনগণের করের টাকা বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের খরচ বারবার বৃদ্ধির মাধ্যমে এবং কমিশন নেয়ার মাধ্যমে শাসক এবং আমলা মহল নিজেরাই সুবিধাভোগী হিসাবে গ্রে ইকোনমি সৃষ্টি করে থাকে)।

৪। সমাজে অপরাধ বেড়ে যায়। কারণ অনেক গ্রে ইকোনমিক কর্মকাণ্ডের সাথে বিভিন্ন ধরণের ভয়ংকর অপরাধ জড়িত। যেমন নারী, শিশু এবং মানব পাচার, জুয়া, পতিতাবৃত্তি, টেন্ডার নিয়ে হত্যা বা হানাহানি, আর্থিক প্রতারনা ইত্যাদি।

৫। অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং সামশ্তিক অর্থনীতির সূচকগুলি সঠিক তথ্য দেয় না ফলে মুদ্রা এবং আর্থিক নীতি প্রণয়ন ত্রুটিপূর্ণ হয়। সমাজে বৈষম্য তৈরি হয়। সামাজিক সাম্য থাকে না।

৬। সরকার কর বাড়ানোর জন্য সৎ লোকের উপর হামলে পড়ে কিন্তু ফাঁকিবাজদের ব্যাপারে উদাসীন থাকে।

৭। জমি, ফ্লাট ইত্যাদির মূল্য অস্বাভাবিক রকম বেড়ে যায় অবৈধ অর্থের কারণে। অবৈধ আয় করা লোকেরা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে। কারণ এরা বাজারে বা মার্কেটে গিয়ে দামাদামি করে না।

৮। শেয়ার মার্কেটকে অবৈধ অর্থের সাহায্যে নিজেদের খুশি মত নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ফলে জনগণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শেয়ার বাজার সঠিকভাবে কাজ না করলে প্রাইভেট সেক্টরে বিনিয়োগ এবং শিল্পায়ন সঠিকভাবে হয় না। উদ্যোক্তারা শেয়ার বাজারের সুফল গ্রহণ করতে না পারার জন্য ব্যাংকমুখী হয়। এতে ব্যাংকের লাভ হয় এবং সৎ উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ পেতে বেশী অর্থ খরচ করতে হয়। শেয়ার মার্কেট সঠিকভাবে কাজ করলে কম খরচে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ পেতেন।

গ্রে ইকোনমির সুফলঃ
১। অনেক লোকের কর্মসংস্থান হয়। বিশেষ করে বড় অর্থনৈতিক সংকটের সময় গ্রে ইকোনমি কর্মসংস্থানে ভুমিকা রাখে।

২। গ্রে সেক্টরে পণ্য বা সেবার উৎপাদন খরচ কম হয়। জনগণ এতে উপকৃত হয়।

তবে গ্রে ইকোনমির আকার বড় হওয়া সার্বিকভাবে কোন দেশের জন্য ভালো না। উন্নত বিশ্বে গ্রে ইকোনমির আকৃতি ৭% থেকে ১৫% হতে পারে। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি গ্রে ইকোনমির আকৃতি অনেক বড় হয়। এটা দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সমাজ জীবনে খারাপ প্রভাব ফেলে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা যায় না। পরিণামে সাধারণ জনগণ নিপীড়িত এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেশের উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত হয়।

বাংলাদেশের অবৈধ আয়ের বড় অংশ কোথায় আছে?

১। বিদেশের ব্যাঙ্কে বা বিদেশে সম্পদ কেনার মাধ্যমে।
২। শেয়ার মার্কেটে আছে
৩। জমি এবং ফ্লাট আকারে আছে।
৪। ব্যাঙ্ক হিসাবে বা এফ ডি আর ইত্যাদিতে কিছু অবৈধ রাখা হয়। তবে এটার পরিমান খুব কম।
৫। নগদ, স্বর্ণ এবং অলঙ্কার হিসাবে আছে।

সব দিক বিবেচনা করলে গ্রে ইকোনমির আকৃতি বড় হওয়া একটা দেশের জন্য ক্ষতিকর। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলিতে গ্রে ইকোনমির আকৃতি খুব ছোট। আমাদেরকে উন্নত দেশ হতে হলে আমাদের গ্রে ইকোনমির আকৃতি ১০% এর নীচে নিয়ে আসতে হবে। যদি আমরা সফল হই তাহলে সমাজে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বৈষম্য কমবে, সুশাসন বিরাজ করবে, মানবাধিকার নিশ্চিত হবে, রাজনীতিতে সচ্ছতা আসবে, গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।

সুত্রঃ
mof.portal.gov.bd/sites/default/files/files/mof.portal.gov.bd/page/17643e1a_542c_47c8_a833_91a90d156ac7/chapter1 (1).pdf

investopedia.com/articles/markets-economy/062216/how-underground-economy-affects-gdp.asp

en.wikipedia.org/wiki/Economy_of_Bangladesh

jbepnet.com/journals/Vol_3_No_1_March_2016/2.pdf

ছবিঃ ফাইনানন্সিয়াল এক্সপ্রেস

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৯

অপু তানভীর বলেছেন: পার কেপিটা ইনকাম আমাদের মত দেশের জন্য অর্থনৈতিক সূচকের নির্ভুল বিশ্লেষন করতে সক্ষম নয় । কারণ আমাদের দেশে ইনকাম ইনইকুয়ালিটির পরিমান অনেক অনেক বেশি । এই পরিমানটা যত বেশি হবে পার কেপিটার হিসাব ততভুল । মাত্র ৫% মানুষ দেশের ৭০% সম্পদের মালিক ।
বর্তমানে আমাদের দেশে গ্রে ইকোনমির পরিমানটা এতো এতো বৃদ্ধি পেয়েছে সেটা বুঝতে খুব বেশি অর্থনৈতিক বোদ্ধা হওয়ার দরকার নেই । এটার সুফল অনেকেই পাচ্ছে অবশ্য ।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: পোস্টে বলেছি যে মাথাপিছু জিডিপি কোন আদর্শ সূচক না। বৈষম্য বোঝা না গেলেও একটা দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে একটা প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়। যখন বলা হয় যে যুক্তরাষ্ট্রের মাথা পিছু জি ডি পি হোল ৭০,০০০ আর বাংলাদেশের ২৭৩৪ ডলার তখন বোঝা যায় যে ইউ এস এ বাংলাদেশের চেয়ে অনেক ধনী একটা দেশ। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে আয়ের বৈষম্য বাংলাদেশের চেয়ে বেশী।

বৈষম্য মাপার সূচকের নাম গিনি ইনডেক্স। বাংলাদেশের চেয়ে অ্যামেরিকার আয়ের বৈষম্য বেশী। বাংলাদেশের গিনি ইনডেক্স হল ৩২% আর যুক্তরাষ্ট্রের ৪১%। গিনি ইনডেক্স যত বেশী হবে তত বেশী ধনী আর গরীবের ব্যবধান বুঝাবে। আয়ের বৈষম্য কম ইউরোপিয়ান দেশগুলিতে। আয়ের বৈষম্য কম এমন দেশের উদাহরণ হল স্লোভেনিয়া, চেক রিপাবলিক, স্লোভাকিয়া, আর্মেনিয়া, ইউক্রেন, মলদোভা, ইউ এ ই, আইসল্যান্ড, বেলজিয়াম, আলজেরিয়া, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, কাজাখাস্তান ইত্যাদি। আর আয়ের বৈষম্য বেশী এমন দেশগুলির উদাহরণ আফ্রিকার কিছু দেশ। যুক্তরাজ্যের গিনি ইনডেক্স বাংলাদেশের চেয়ে বেশী (৩৫%)।

২| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: অর্থনীতিতে একটা শব্দ আছে- হেলিকাপ্টার ম্যানি।
আমাদের দেশে এখন 'হেলিকাপ্টার ম্যানি' ব্যবহার করতে হবে।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: টাকা ছাপিয়ে মানুষের মধ্যে বিলি করে দিলে মূল্যস্ফীতি হবে। এক বস্তা টাকা নিয়ে ছোট এক ব্যাগ বাজার করতে হবে। অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি এখনও কম। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পৃথিবীর সব দেশের উপর কম বেশী পড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি কম হচ্ছে কারণ তারা সারা বিশ্বে ডলার সরবরাহ করে। ডলারের চাহিদা এখন ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী।

৩| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪৮

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:



অর্থনীতিবিদগণের অর্থনৈতিক অবস্থা কি সবসময় ভালো পজিশনে থাকে?

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: গরীব অর্থনীতিবিদ আছে বলে মনে হয় না। অর্থনীতিবিদ নিজে গরীব থাকলে তার পরামর্শ কেউ শুনবে না।

অনেক অর্থনীতিবিদের কথা হল ফাঁকা বুলি। যেভাবে বলতে বলে সেভাবে বলে। তবে ভালো অর্থনীতিবিদের কথা শোনা দরকার। অমর্ত্য সেন একজন ভালো অর্থনীতিবিদ।

৪| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:২০

জুল ভার্ন বলেছেন: অর্থনীতিতে বর্তমান বিশ্বের সব চাইতে সংকটময় একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন- যেজন্য ধন্যবাদ। অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে এই বিষয়টা আমাকে অনেক বেশী বিচলিত করে.....

বিশ্বব্যাপী টেকসই অর্থনীতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে ব্লু- ইকোনমি। ২০১৯ সাল থেকে দুই বছরেরও অধিক সময় করোনা অতিমারী গোটা বিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছিল। তার উপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, যাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিশ্বের অনেক দেশ জড়িত। ফলে জ্বালানি এবং গম সহ অনেক জরুরি পণ্যের উৎপাদন এবং রফতানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও হচ্ছে; অনেক দেশের সামনেই খাদ্যসঙ্কটের পরিস্থিতি। গোটা বিশ্ব কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতির মুখোমুখি; মূলত উৎপাদন কমে যাওয়া, সরবরাহ চেইন ভেঙে পড়া ও তথাকথিত আন্তর্জাতিক মুদ্রা- ডলারের কারসাজির কারণে এটি হচ্ছে।

বিশ্বের এই বেসামাল অর্থনৈতিক দুরবস্থা শিগগিরই কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই; বরং আরো বেশি যুদ্ধবিগ্রহ, মহামারী ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসছে। ফলে, অর্থনৈতিক দুরবস্থা আরো বাড়তে পারে, এমনকি দীর্ঘমেয়াদে দুর্ভিক্ষও মোকাবেলা করতে হতে পারে। বর্তমান বিশ্বে এখনই প্রায় ৩৫ কোটি মানুষের খাদ্যের ঘাটতি রয়েছে। বিশ্বের স্থলসম্পদ ব্যবহার করে এই ঘাটতি মোকাবেলা অসম্ভব প্রায়। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর খাবার জোগান দিতে সমুদ্রসম্পদ হতে পারে অন্যতম সহযোগী। এমতাবস্থায় প্রস্তুতি নেয়ার এখনই সময় ও এর জন্য অন্যান্য সেক্টরের সাথে উল্লেখ করার মতো সহযোগী হতে পারে ব্লু-ইকোনমি।
বাংলাদেশে ব্লু-ইকোনোমি রাইজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে, কিন্তু আমরা তা কাজে লাগাতে পারছি না। সঠিকভাবে মৎস্যসম্পদ, গ্যাসসম্পদ, খনিজসম্পদ ও স্কুবা ট্যুরিজম যদি কাজে লাগানো যায়, তাহলে বাংলাদেশের প্রতি অর্থবছরে যে বাজেট হয়, তা ব্লু-ইকোনোমি দিয়েই জোগান দেয়া সম্ভব।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:০৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার সাথে একমত যে বিশ্বের অর্থনৈতিক দুরবস্থা শিগগির পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না। একটা কারণ হল কিছু দেশ সম্ভবত এটা থেকে ফায়দা লোটার ধান্ধায় আছে। ডলারের চাহিদা সারা বিশ্বে বেড়ে গেছে। আমদানি নির্ভর দেশ হওয়ার জন্য আমাদের দেশে ডলারের দাম ৩০% থেকে ৩৫% বেড়ে গেছে। ৮-৯ টা ব্যাংকের এম ডি কে সতর্ক করা হয়েছে ডলার কেনা বেচায় অনিয়ম করে বেশী লাভ করার জন্য। কয়েকটা ব্যাংক ৬ মাসেই প্রায় সারা বছরের টার্গেট অর্জন করে ফেলেছে। এই সব কারণে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে গেছে।

অনেক দেশ আছে যাদের কোন সমুদ্র তীর নেই। ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য তাদেরকে শুধু সড়কপথ বা বিমানপথের উপর নির্ভর করতে হয়। এছাড়া সমুদ্রের তীরের কাছে অনেক কিলোমিটার পর্যন্ত সমুদ্র এলাকা ঐ দেশের নিয়ন্ত্রণে থাকে। সমুদ্রের নীচে অনেক সম্পদ আছে যেগুলির ব্যাপারে আমাদের এখনও অনেক কিছু জানার বাকি আছে। এছাড়া আপনি উল্লেখ করেছেন যে সমুদ্রের মাধ্যমে মৎস্য, খনিজ সম্পদ এবং পর্যটন খাতে প্রচুর আয় করার সুযোগ আছে। তাই বাংলাদেশের জন্য ব্লু ইকোনমি একটা বিরাট বড় সম্ভবনা। কিন্তু আমরা এটার গুরুত্ব বুঝতে পাড়ছি বলে মনে হয় না। আমাদের নদীগুলি যে কত বড় সম্পদ সেটাও আমরা বুঝতে পারিনি।

৫| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:১৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:

পার ক্যাপিটা জিডিপি, পার ক্যাপিটা ইনকাম মনে হয় ডিফারেন্ট আছে।

জিডিপি হচ্ছে উৎপাদন, ইনকাম হল কামাই।

বাংলাদেশের সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে ট্যাক্স নিবন্ধনের আওতায় না আনা পর্যন্ত গ্রে ইকোনমি থাকবেই।

আমি সবাইকে ট্যাক্স দিতে বলছি না। নিবন্ধন করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ নিবন্ধিত থাকলে তার সম্পদ তার অর্থ উপার্জন বোঝা যাবে, দারিদ্র দূর করতে সরকার বয়স্ক ভাতা বিধবা ভাতা পঙ্গু ভাতা ইত্যাদিতে একলাখ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করে কিন্তু বেশিরভাগই অবস্থাপন্ বয়স্ক ইত্যাদিতে অপাত্রে চলে যায়। নিবন্ধিত থাকলে প্রকৃত গরিবরা এইসব সাহায্য পেতে পারতো।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৩৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: জিডিপি ৩ পদ্ধতিতে হিসাব করা যায়। সঠিকভাবে হিসাব করলে একই ফল আসার কথা। তিনটা পদ্ধতি হল আয় পদ্ধতি, ব্যয় পদ্ধতি এবং উৎপাদন পদ্ধতি। তাই পার ক্যাপিটা জিডিপি মাথা পিছু আয় নির্ণয়ের একটা সূচক। মাথা পিছু আয় নির্ণয়ের আরেকটা পদ্ধতি হল দেশের মোট জাতীয় আয়কে (জিএনআই) দেশের জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে মাথা পিছু আয় নির্ণয় করা। এই জিডিপি আর জিএনআই ( গ্রস ন্যাশনাল ইনকাম) অনেকটা কাছাকাছি। জিডিপির ক্ষেত্রে ভৌগলিক সীমারেখা গুরুত্বপূর্ণ। যেমন বাংলাদেশের উদাহরণ দিলে জিডিপিতে প্রবাসী আয় যোগ হয় না। কারণ এই আয় অন্য ভৌগলিক এলাকা থেকে এসেছে। কিন্তু প্রবাসীর আয় জিএনআই এ যোগ হয়। জি এন আই এর ক্ষেত্রে নাগরিকত্ব মূল বিষয়। সহজে বললে জিডিপির সাথে বিদেশ থেকে প্রাপ্ত আয় এবং বিদেশী এইড এবং ক্যাপিটাল ইনফ্লো যোগ করতে হয় আর দেশে অবস্থিত বিদেশী ফার্মের আয় বাদ দিতে হয় ( জিডিপির ক্ষেত্রে বাদ দিতে হয় না)। অনেক দেশের জন্য জিডিপি আর জি এন আই অনেকটা কাছাকাছি। কিন্তু যে সব দেশে প্রবাসী আয় বেশী, বিদেশী এইড বেশী এবং বিদেশী ফার্ম বেশী তাদের ক্ষেত্রে জিডিপি এবং জি এন আইয়ের মধ্যে বড় পার্থক্য হতে পারে।

বাংলাদেশের ট্যাক্স জি ডি পি অনুপাত আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। ট্যাক্স নেট আগের চেয়ে বেড়েছে। সামনেও বাড়ছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই করদাতারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন কর বিভাগের লোকেদের দ্বারা। সামান্য একটা ছোট দোকানের ট্রেড লাইসেন্স করতেও আয়কর নিবন্ধনের প্রয়োজন পড়ছে।

উন্নত দেশেও গ্রে ইকনমি আছে কিন্তু আকৃতি ছোট।

৬| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৫৪

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- খুবই কঠিন বিষয়!

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৪১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সহজে বলতে গেলে অবৈধ আয় সরকারের নজরে না আসা আয় অনেক আছে। এগুলিই গ্রে ইকনমি তৈরি করে। তৃতীয় বিশ্বে হিসাব নিকাশ দুর্বল, দুর্নীতি বেশী, সরকারের লোক জন অদক্ষ তাই গ্রে ইকনমির আকৃতি বড় হয়। সরকারের হিসাবের খাতায় সব কিছু না আসলে সরকারের নীতি প্রনয়নে ভুল হতে পারে। উন্নত দেশ হতে হলে সুশাসন এবং সচ্ছতা থাকতে সরকারের এবং নাগরিকদের মধ্যে।

৭| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৩:১৯

নূর আলম হিরণ বলেছেন: হাসান কাবৈশাখী সুন্দর মন্তব্য করেছেন।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:২৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: উনি উন্নত দেশে থাকলেও দেশ নিয়ে ভাবেন এবং দেশের অনেক খবর রাখেন। এটা ওনার একটা গুণ।

সোনাগাজি সাহেবকে ব্লগ টিম কতবার ব্যান করেছে যৌক্তিক কারণে। তাই ওনার বোঝা উচিত উনি কি ধরণের ব্লগিং করছেন। কিন্তু উনি শুধরানোর লোক না। একই কারণে অনেক ব্লগার ওনাকে ব্লক করে। ব্লক করা নিন্দনীয় কিছু না। কারণ ব্লগ কর্তৃপক্ষ এই অপশন দিয়েছেন ব্লগারদের।

৮| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:১৫

গেঁয়ো ভূত বলেছেন: গ্রে ইকোনোমির সাইজ দিনকে দিন শুধু বড় থেকে আরো বড়ই হচ্ছে । অথচ সঠিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই বিশাল সাইজের অর্থকে দেশে রেখে কাজে লাগাতে পারলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শুধু গতিশীলই হবেনা, যা দেশের অর্থিনীতেকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে উন্নীত করবে বলে মনে করি।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:২৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার কথার সাথে একমত। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি এই সমস্যা থেকে বের হতে পাড়ছে না। এই গ্রে ইকনমিতে তৈরি হওয়া টাকার একটা বড় অংশ বিদেশে চলে যাচ্ছে। এই দেশে থাকলে সেটা অর্থনীতিতে আবর্তিত হয়ে কিছু কাজে লাগতো।

৯| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৪৯

রেজাউল৮৮ বলেছেন: ঘাসফুল লতাপাতা নদী-নালা নিয়ে লিখুন। মুভি রিভিউ লিখুন। ছোটবেলার কাহিনী লিখুন। কিন্তু অনুগ্রহ করে ধর্ম , শিল্প সাহিত্য, রাজনীতি , অর্থনীতি এইসব বিষয়ে লিখবেন না। এইসব বিষয়ে লেখার জন্য ব্লগে একমাত্র লাইসেন্স প্রাপ্ত ব্লগার হইলেন শমসের বলদস্টাইন।

৮ নম্বর পয়েন্টে যা লিখেছেন তার পুরাটাই ভুল। কি ভুল তা আমি আর বললাম না, বলদস্টাইন স্যার এ বিষয়ে বই লিখবেন, সেখান থেকে পড়ে নিয়েন।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:০৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: উনি এত বেশী জানলে এই বিষয়ে পোস্ট দিক না কেন। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.