নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের অনেক জেলায় নিজের জায়গা বাঁচানোর জন্য মসজিদ নির্মাণের কথা শোনা যায়। অনেক সময় সরকার রাষ্ট্রের প্রয়োজনে জমি অধিগ্রহণ করে। আগে জমি অধিগ্রহণ করলে জমির মালিককে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন টাকা দেয়া হত না। সরকারের এই জমি অধিগ্রহণ ঠেকানোর জন্য অনেকে সেই জায়গায় মসজিদ নির্মাণ করে ফেলতেন। মানুষের ধর্মীয় অনুভুতির কারণে সরকার মসজিদটা টিকিয়ে রাখতে বাধ্য হত।
বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ মসজিদ ঢাকার বাইতুল মোকাররম মসজিদও নির্মাণ করা হয়েছিল এর নিকটবর্তী জমিকে সরকারের অধিগ্রহণ থেকে রক্ষা করার জন্য। এই কাহিনী প্রথম শুনেছিলাম প্রায় ৩০ বছর আগে আমার বাবার কাছে। এখন ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখি এটি সত্য ঘটনা ছিল নিঃসন্দেহে। ১৯৫০/৬০ এর দশকে ঢাকার অভিজাত লোকেরা বাস করতেন পল্টন এবং সেগুন বাগিচা এলাকায়। তখনকার ঢাকা শহর উন্নয়নের পরিকল্পনা অনুসারে সদর ঘাট থেকে আসা রাস্তাটা নবাবপুর হয়ে সোজা উত্তর দিকে গুলিস্থান এলাকা হয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দিকে আরও উত্তরে চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন এই রাস্তাটা মসজিদের দিকে না গিয়ে মসজিদের কাছে এসে পশ্চিম দিকে বাঁক নিয়ে জিপিওর সামনে দিয়ে জিরো পয়েন্টে মিশেছে। ফলে বাইতুল মোকাররম মসজিদ এবং এর আশে পাশের মার্কেট এলাকা সরকারী অধিগ্রহণ থেকে রক্ষা পেয়েছে। তাছাড়া মসজিদ না হয়ে রাস্তা হলে উত্তর দিকে পল্টন এলাকার অভিজাত লোকের মালিকানাধীন আরও কিছু বাড়িঘর রাস্তার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হত।
১৯৫৯ সালে ঐ এলাকার কিছু অবাঙ্গালী ব্যবসায়ী (লতিফ বাওয়ানি অন্যতম ছিলেন) দ্রুততম সময়ে নিজেদের জায়গা জমি এবং স্বার্থ রক্ষার জন্য তৎকালীন শাসক আয়ুব খানের নিকটে একটা মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব দেন। তারা যুক্তি দেখান যে নতুন এবং পুরাতন ঢাকার এই সংযোগ স্থলে মসজিদ নির্মাণ করলে ঢাকার উভয় অংশের মানুষ উপকৃত হবে। আয়ুব খানের প্রশাসন এই প্রস্তাব মেনে নেয় কিন্তু ব্যবসায়ীদেরকে এই মসজিদ নির্মাণের খরচ বহন করতে বলেন।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ বাওয়ানি (তখন অবাঙ্গালী ব্যবসায়ীদের মধ্যে ইস্পাহানী, আদমজি, বাওয়ানি প্রমুখ প্রসিদ্ধ ছিলেন) এই মসজিদ নির্মাণের সকল খরচ বহন করার দায়িত্ব নেন। যে স্থানে বর্তমানে মসজিদটি অবস্থিত সেখানে ঐ সময় একটা বড় পুকুর ছিল। ঐ পুকুরের নাম ছিল ‘পল্টন পুকুর’। সারা শহরের ময়লা এই পুকুরে এবং তার আশেপাশে ফেলা হত। ফলে এটা প্রায় পানি শূন্য ছিল তখন। বিখ্যাত নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘আব্দুল হোসেন এম থারিয়ান এন্ড কোম্পানিকে’ মসজিদ নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয়। এই প্রতিষ্ঠান ঢাকা নিউ মার্কেট, শাহবাগ হোটেল (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় বা পিজি হাসপাতাল ), ‘আদমজি কোর্ট বিল্ডিং’, ডিআইটি বিল্ডিং (বর্তমানে রাজউক ভবন) নির্মাণ করে সুনাম অর্জন করে।
এই মসজিদটি ৮ তলা। প্রায় ৪০,০০০ মুসুল্লি নামাজ পড়তে পারে। ১৯৬০ সালে আয়ুব খান নির্মাণ শুরুর উদ্বোধন করে। ১৯৬৩ সালে আংশিক নির্মাণের পরে নামাজ পড়া শুরু হয় এবং ১৯৬৮ সালে পুরো মসজিদের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়। এই মসজিদের সাথে রয়েছে মোগল স্টাইলের বাগান।
১৯৬৪ সালে বায়তুল মোকাররম মার্কেট চালু হয়। এই মার্কেটের দোকান বিক্রি করে লতিফ বাওয়ানি সাহেব প্রচুর টাকা আয় করেন যার ফলে মসজিদ নির্মাণের খরচ অনেকাংশে উঠে যায়।
মসজিদ নির্মাণ করলে তার সওয়াব মানুষের মৃত্যুর পরেও যোগ হতে থাকে যতদিন মসজিদ টিকে থাকে। এই ধরণের বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তৈরি মসজিদের সওয়াব কি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লতিফ বাওয়ানি সাহেব এখনও কবরে শুয়ে পাচ্ছেন? আমরা জানি ছলচাতুরী এবং লোক দেখানো এবাদত হিসাবে আসবে না। ইমাম বুখারির প্রথম দিকের হাদিসে আছে, আমাদের নবীজি (সা) বলেছেন;
"নিশ্চয়ই মানুষের কর্ম নিয়তের উপর নির্ভরশীল, এবং প্রত্যেকের কর্মফল হবে তার নিয়তের উপর। "
সূত্র এবং ছবি - ডেইলি বাংলাদেশ ডট কম
গো নিউজ ২৪ ডট কম
ইতিহাসনামা
প্রথম আলো
উইকিপিডিয়া
১২ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৮:৫৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এই ধরণের কৌশলকে সমর্থন করা যায় না। আল্লাহর নামে সাথ খুন মাফ হয় না আসলে।
২| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ ভোর ৫:০১
অনল চৌধুরী বলেছেন: পল্টন এলাকায় প্রচুর বোম্বাইয়া, বিহারী ও অবাঙ্গালী থাকতো।
আমাদের শান্তিনগরে বিরাট বোম্বাইয়া কলোনী ছিলো, যেটা ২০০৩ এ উঠে গিয়ে এখন রুপায়ণ ভবন হয়েছে।
এতো বোম্বাবাইয়া গেলো কই সেটা এক রহস্য !!!
আমার প্রথেম বিদ্যালয় ছিলো লিটল জুয়েলস। তখন অনেক অবাঙ্গালী সহপাঠী ও শিক্ষিকা ছিলো।
এখনো এখানে কিছু অবাঙ্গালী আছে যাদের কারণে ২টা শিয়া উপসনালয় আছে।
খানা বাসমতি দোকানটাও তাদের।
আমি ছোটোবেলায় এক বহুজাতিক ঢাকা দেখেছি, যেটা নিয়ে পরে বিস্তারিত লিখবো।
১২ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:২২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: খুলনা এবং চট্টগ্রামেও অনেক অবাঙ্গালী ব্যবসায়ী ছিল। আগাখানিও ছিল। আলফা ইন্সিউরেন্সে চাকরী করতেন বঙ্গবন্ধু এক সময়। তাজউদ্দীন আহমেদকেও বঙ্গবন্ধু আলফা ইন্সিউরেন্সে চাকরীর ব্যবস্থা করে দেন। আলফা টোব্যাকো এখনও আছে বাংলাদেশে এরবা গ্রপের অধীনে। আলফার মালিক ছিলেন আগা ইউসুফ ( এ ম আগা ইউসুফ) নামে একজন পাকিস্তানি ব্যবসায়ী। বিহারি বেশী ছিল সৈয়দপুর, খুলনা, চট্টগ্রামে। ঢাকার মোহাম্মাদপুর, মিরপুরে এখনও অনেক বিহারী আছে। এই এলাকাগুলিতে এখনও উর্দু শোনা যায়। এরা বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের খেলার সময়ে পাকিস্তানকে সমর্থন করে।
মোহাম্মাদপুরে একটা শিয়া মসজিদ আছে। ওখানে সুন্নিদের কখনও যেতে দেখিনি।
আপনি ঢাকার ছেলে। ঢাকা নিয়ে পোস্ট দিলে অনেক কিছু জানা যাবে আপনার কাছ থেকে।
৩| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৮:২২
মৌন পাঠক বলেছেন: প্র্যাক্টিস্টা এখন ও আছে, তবে, সেটা সরকারী জমি ও পরের জমি দখলের জন্য।
১২ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:২৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এই ধরণের কাজকে সমর্থন করা যায় না।
৪| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৮:৩৯
দারাশিকো বলেছেন: চমৎকার এক পোস্ট লিখেছেন। এই বিষয়ে কিছুই জানা ছিল না। পোস্টে প্লাস!
অন্যায়ভাবে কারও জমি দখল না করে সরকারের অধিগ্রহণ থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যে মসজিদ নির্মাণ করলে সমস্যার কিছু দেখি না। বরং, এখানে সরকারের ব্যর্থতা প্রচন্ড। মসজিদ তৈরির প্রস্তাবে সরকার তার নিজের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে - এটা এক ধরণের ভন্ডামি। সে সময় সরকারের কিছু লোক যে সুবিধা নিয়েছিল, সেটা বোঝা যায়। কে না জানে - মসজিদ তৈরির মাধ্যমে অনেকেই নিজের কুকীর্তি ঢাকতে চায়। হয়তো আইয়ুব খানের সরকারও তাই চেয়েছিল।
তবে ভাই, বাওয়ানি শান্তিতে আছে নাকি নাই, এই গায়েব যেহেতু জানার উপায় নাই, তার উদ্দেশ্যও কতটুকু ভালো ছিল সেটাও জানা নাই, ওই অংশ নিয়া চিন্তা না করাই বেটার। শাস্তি-পুরস্কারের বিষয়টা আল্লাহর উপরেই থাকুক।
১২ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:২৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমার কাছে কাজটাকে ভালো লাগেনি। কারণ মুলত নিজেদের সম্পদ বাঁচানোর জন্য সরকারকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে মসজিদের সাহায্যে। সরকারের সংশ্লিষ্ট লোকেরা সুবিধা নিয়েছে কি না জানি না। তবে মসজিদের বিরুদ্ধে গেলে সরকার সমালোচনার মধ্যে পড়তো। যার কারণে হয়তো প্রস্তাবটা মেনে নেয়া হয়েছিল।
আমাদের নবীজি (সা) একবার একটা মসজিদ ফেঙ্গে দিয়েছিলেন। এটা তৈরি করেছিল কিছু মুনাফেক। তাদের উদ্দেশ্য ছিল মোনাফেকি করা।
পরকালে কার কি অবস্থা আমরা জানি না। আল্লাহ ভালো জানেন। অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
৫| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:০০
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
একেবারেই জানা ছিল না।
চমৎকার পোস্ট পেলাম। ++
১২ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:২৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমি প্রায় ৩০ বছর আগে আমার বাবার কাছে এই কাহিনী শুনেছিলাম। এখন অন্তরজাল ঘেঁটে আরও নিশ্চিত হলাম। ধন্যবাদ প্লাস দেয়ার জন্য।
৬| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:১১
বিটপি বলেছেন: চমৎকার পোস্ট এবং দারাশিকোর মন্তব্যও চমৎকার। শুরুতেই এক বুড়া ছাগলের ম্যাতকার না থাকলে এই পোস্টটা খুবই উপভোগ্য পোস্ট হত।
সাড়ে চুয়াত্তর এবং দারাশিকো ভাইকে অনেক ধন্যবাদ।
১২ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:১০
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
মরার পরের অবস্থা আল্লাহ ভালো জানেন। আমাদের পক্ষে আগাম কিছু বলা হয়তো ঠিক হবে না।
৭| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:৩১
অপু তানভীর বলেছেন: আমাদের দেশের সব থেকে বড় মসজিদ নির্মানের ইতিহাস এমন ছিল সেটা জানা ছিল না ।
এই ব্যাপারটা আসলে নতুন না । মসজিদ নির্মান করে অনেকেই বিশেষ করে প্রভাবশালীরা নিজেদের দখল কৃত জমি জায়েজ করে নেন । আমি যখন বিশবিদ্যালয়ে পড়ি তখন বিশ্ববিদ্যালের কাছাকাছি একটা ঘটনা এই রকম ঘটেছিলো । সরকারের কাছ থেকে ২৫ বছরের জন্য লিজ নেওয়া একটা জমির উপরে রাতারাতি মসজিদ নির্মান হয়ে গেল যাতে লিজ শেষে সরকার সেটা নিয়ে নিতে না পরে । পুলিশ সেখানে গিয়ে উচ্ছেদ করতে গেলে ধর্মের তক্মা লাগিয়ে পুরো ব্যাপারটাই অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয় ।
১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:০৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এই ধরণের আরও ঘটনা আমি শুনেছি আপনার মতই। পার্থিব স্বার্থের কারণে মসজিদ নির্মাণ করা ঠিক না। রসূল (সা) একটা মসজিদ ভেঙ্গে দিয়েছিলেন যেটার মূল উদ্দেশ্য ছিল ষড়যন্ত্র।
৮| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:৪২
জু েয়ল বলেছেন: গাবতলী থেকে বাবু বাজার পর্যন্ত বেড়ীবাঁধ এর দুই পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে এমন অনেক মসজিদ গড়ে উঠেছে, দখলদারদের উচ্ছেদ করার আগে পরে।
১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:০৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার কাছ থেকে নতুন তথ্য পেলাম। আমার ব্যাপারটা জানা ছিল না। ধন্যবাদ।
৯| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:৫০
জুল ভার্ন বলেছেন: এই ইতিহাস আগেও পড়েছি। তবে আপনি অনেক সুন্দর ও সহজবোধ্য করে লিখেছেন। একটা ভালো পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:০৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমি প্রথমে আমার বাবার কাছে শুনেছিলাম বেশ আগে। ওনাদের চোখের সামনেই এই মসজিদ হয়েছে তাই ওনারা ব্যাপারটা জানতেন ঐ যুগেই। আপনাকেও ধন্যবাদ।
১০| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:৪৭
রানার ব্লগ বলেছেন: মসজিদ বা মন্দির নির্মান করে মানুষের জায়গা দখল করার একটা রেওয়াজ আছে । এলাকায় যারা প্রভাবশালী তারা অন্যের জায়গা দখল করতে না পারলে নিজের জেদ মেটাতে লোকজন নিয়ে অন্যের জায়গায় মসজিদ নির্মান করে ।
১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:১২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ধর্ম নিয়ে এই দেশে রাজনীতি এবং বাণিজ্য হয় যেটা কখনই হওয়া উচিত না।
১১| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:৫৩
শায়মা বলেছেন: মনে হচ্ছে শান্তিতে নাই।
দুনিয়ার জমির জন্য যার এত লিপ্সা তার কি আর বেহেস্তে গিয়েও শান্তি হবে!!!
১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:১৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: খুব ভালো বলেছেন। তবে আল্লাহই জানেন প্রকৃত অবস্থা।
১২| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:৪১
অক্পটে বলেছেন: ব্লগ পড়ার এখানেই মজা। সুন্দর একটি সত্য জানলাম আপনার মাধ্যমে। তবে ভালোই হয়েছে। বড়লোকেরা তো সব সময়ই হেরফের করে। তার এই হেরফেরের কারণে ঐতিহাসিক বায়তুল মোকাররাম নির্মাণ হয়ে গেছে। বাংলাদেশের সেন্ট্রাল মসজিদ।
১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:১৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বাংলাদেশের বেশীরভাগ মসজিদের দান বাক্সে হারাম টাকার ছড়াছড়ি। মসজিদ কমিটির অনেক সদস্য দুর্নীতি করে কিংবা মানুষ ঠকিয়ে সম্পদশালী হয়েছে। তারা আশা আছে যে মসজিদের অসিলায় আল্লাহ মাফ করে দিবেন। কিন্তু আল্লাহ বান্দার হক নষ্ট করলে ক্ষমা করেন না যদি না সেই বান্দা ক্ষমা করে। ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
১৩| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:০৯
জ্যাকেল বলেছেন: বাংলাদেশে ধর্মের ছদ্মবেশে কিছু লোক পলিটিক্স করে। আবার কতিপয় লোক শুধু ব্যবসা করে (ওয়াজ), আপনার থেকে জানা গেল ধর্মের ছলে কিভাবে সম্পদ সংরক্ষণ করতে হয়।
১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:১৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমাদের দেশে ধর্ম একটা বড় ব্যবসা এবং রাজনৈতিক হাতিয়ার। এই উপমহাদেশে ধর্মের কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গেছে এক সময়। এখনও যাচ্ছে। ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
১৪| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৪
ভুয়া মফিজ বলেছেন: কতোকিছুই যে জানি না...........আপনে পোষ্টটা না দিলে এই উপলব্ধিটাই আসতো না। আচ্ছা, আপনের সাথে বাংলাদেশে এমন কারো সাথে পরিচয় আছে, যে সব জানে? নিদেনপক্ষে আম্রিকায়? পরিচয় থাকলে জানায়েন। আমার জ্ঞানের ভান্ডারটাকে বেশ খানিকটা সমৃদ্ধ করতাম!!
১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:২৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: একজন আম্রিকা প্রবাসীকে চিনি যিনি মোটামুটি সবজান্তা। উনি ফ্রি জ্ঞান বিলান। কিন্তু শর্ত হোল তার শাগরেদ হতে হবে আর জি হুজুর জি হুজুর করতে হবে। এই শর্ত না মানলে আপনাকে প্রশ্ন ফাঁস জেনারেশন বানিয়ে দেবে। ওনার একটা গ্যাং আছে। এরা এই ওস্তাদকে মাথায় তুলে নিয়ে নাচে। কিন্তু আপনার মাথায় মনে হয় উঠতে চাবে না। কারণ যদি আছাড় দিয়ে ফেলে দেন।
১৫| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৫:১০
রেজাউল৬২ বলেছেন: আমার জানা মতে বসুন্ধরা গ্রুপ পনি উন্নয়ন বোর্ডের জাগা দখল করে বসুন্ধরা মার্কেট বানায়েছে। জিপিওর পাশে মাইক্রোবাস ভারা দেয়ার লোকজন সরকারি জায়গায় মসজিদ বানায়েছে।
যশোরের নোয়াপারার এক জায়গায় দেখলাম তিন রাস্তার মোরে সরকারি জায়গায় মসজিদ বানায়েছে। এমন জায়গায় বানায়েছে যে রাস্তাুয় যারা গারি চালায় তাদের ভিউ ব্লক হয়ে গেছে। এখন একসিডেন্ট বারবে।
১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:৩১
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে এই কাজ নস্যি মাত্র। এরা আরও ভয়ংকর ভয়ঙ্কর কাজ করে থাকে। এদের সাথে শুধু ওয়ান ইলেভেনের সময় আর্মিরা পেড়েছিল।
মসজিদ নিয়ে এই ধরণের কারসাজি বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গাতে হয়ে থাকে। আপনার উদাহরণ থেকে আরও তথ্য পেলাম। ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন।
১৬| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৫:১৫
রেজাউল৬২ বলেছেন: সরকারি জাগায় মসজিদ বানালে তাও সাধারণ লোক জায়গাটা ব্যাবহার কর্তে পারে। দখল করে অফিস বানালে দখলকারি ছারা কারো লাব নাই।
আপনার লেখা পরে যা বুঝলাম তাতে মনে হয় সরকারের সাথে নেগোছিয়েশনের মাধ্যমে বায়তুল মোকাররম বানানো হয়। মাস্টার পল্যানে এরকম থাকলে খারাপ কিছু না।
দারাশিকোর সাথে পরকালের বিষয়ে একমত।
গালিগালাজ না করে আগুন মিয়া জদি লিখতে পারে তবে খ্রাপ না।
১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:৩৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সরকারী জায়গায় করলে জনগণ উপকৃত হয় এটা ঠিক।
সরকারের সাথে আলাপ করেই করেছে।
পরকালের ব্যাপারটা আল্লাহর উপর ছেড়ে দিলাম। আমরা যেহেতু নিশ্চিত করে জানি না তাই কোন কিছু না বলাই ভালো।
১৭| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪৪
ঢাবিয়ান বলেছেন: জানা ছিল না বাইতুল মোকাররম মসজিদ এর এই ইতিহাস।
অতীতে সেগুন বাগিচা, পল্টন , উয়ারী এসব ছিল অভিজাত এলাকা আর এখনকার বনানী, গুলশান ছিল ধানক্ষেত।
১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:৪৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ঐ মসজিদের জায়গায় পুকুর ছিল এটাও আগে জানতাম না।
সেগুন বাগিচা সত্যি বাগিচার মত ছিল। পল্টন নাম হয়েছে কারণ ব্রিটিশ আমলে ওখানে ব্রিটিশরা সেনানিবাস করেছিল। প্লাটুন থেকে পল্টন হয়েছে। তোপখানা রোডে সত্যি সত্যি তোপ (কামান) ছিল। এলিফেনট রোডে সত্যি সত্যি হাতি যাতায়াত করতো মোগলদের সময়ে। পিলখানা মানে হাতিখানা। এখানে হাতি থাকতো সত্যি সত্যি। ধানমণ্ডিতে ধান খেত ছিল এটা আমার বাবার কাছে শুনেছি। ওনারা দেখেছেন। ঢাকায় অনেক কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিল এক সময়। বেশী দিন আগের কথা না রেলস্টেশন ছিল ফুলবাড়িয়ায়। পরে কমলাপুরে হয়েছে।
১৯৫০ সাল পর্যন্ত নয়া পল্টনের নাম ছিল 'রামকৃষ্ণপুর'। প্রথমে ঠিক হয়েছিল নাম দেয়া হবে আল্লাহ-রসূলপুর। পরে নয়া পল্টন রাখা হয়। এখন যেটা শিশু পার্ক এবং সোহরাওয়ারদি উদ্যান এটার নাম পাকিস্তান আমলে ছিল রেসকোর্স ময়দান। স্বাধীনতার আগে নিয়মিত ঘোড়ার রেস হতো এখানে।
১৮| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫১
নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: তখন যদি উড়াল সেতুর প্রচলন থাকতো তবে সরকারের আর ঝামেলা হতো না , তবে যাইহোক জাতীয় মসজিদ বলে কথা এত কথা বলে আর কী লাভ ? বাওয়ানি সাহেবের জন্য দেশের বিরোধীদলগুলোর দোয়া করা উচিত , উনি মসজিদটা করছিলেন বলেই তো জুমা পইড়া রাস্তায় নামতে পারেন , নাহলে যে কী হত !!
১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:৫৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভালো বলেছেন। বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট প্রায়ই জুম্মার পরে উত্তপ্ত হয়ে যায়।
বায়তুল মোকাররম মসজিদের পাঠাগারে এখন থেকে প্রায় ২০/২২ বছর আগে আমি নিয়মিত প্রায় ৬ মাস গিয়েছি। বিশাল পাঠাগার। প্রচুর ইসলামি বইয়ের সমাহার ছিল। এখনও আছে। এই মার্কেটে প্রথম কোন বন্দুকের দোকান দেখেছি।
১৯| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৯:০৪
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- চমৎকার লিখেছেন, আগ্রহ নিয়ে পড়লাম ইতিহাসের এই অংশ।
১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৯:০৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মন্তব্য এবং প্রতি মন্তব্যে আরও কিছু তথ্য আছে সেগুলিও আপনার কাছে ভালো লাগতে পারে। ধন্যবাদ আপনাকে।
২০| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৯:২৯
নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: এই লাইব্রেরির জন্য হলেও তো বাওয়ানি সাব'রে মাফ করে দেয়া যায় !! মসজিদের সাথে লাইব্রেরির একটা সম্পর্ক আছে , ইসলামের স্বর্ণযুগে এর প্রচলন ছিল !!
১২ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৯:৩৪
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ঠিক আছে যান বাওয়ানি সাহেবরে মাফ কইরা দিলাম পাঠাগারের জন্য।
মসজিদের সাথে পাঠাগার থাকা দরকার। আমাদের কলেজের মসজিদে খুব ছোট একটা পাঠাগার ছিল। কিশোর/ তরুণদের উপযোগী বেশী কিছু ভালো বই ছিল।
২১| ১৩ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ১২:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: বহুদিন পর একটা ভালো পোষ্ট দিয়েছেন।
আমি তো ভেবেছিলাম এই পোষ্ট সেরজা তপন দিয়েছেন।
সরকারী জায়াগা গুলোতে প্রথমে মসজিদ করা হয়। কারন মসজিদ আল্লাহর ঘর কেউ ভাঙ্গবে না। সরকার তালাস করলে এখলে এখনও বহু জায়গা বের করতে পারে। সবচেয়ে বেশী দখল হয়েছে রেলের জায়গা।
১৩ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৩:১৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি ধর্মের নিন্দা করেন আর আমি ধার্মিকের নিন্দা করি। ধর্ম ঠিক আছে সমস্যা হোল ধার্মিককে নিয়ে।
আপনি এতো তাড়াতাড়ি ছাড়া পাবেন এটা আমার কল্পনায়ও ছিল না। আপনি ব্লগ কর্তৃপক্ষকে কোন উৎকোচ দিয়েছেন বলে আমার মনে হচ্ছে। আপনার আর আপনার গুরুর উচিত নিয়মিত নগদ চাঁদা দিয়ে ব্লগিং করা। তাহলে ব্লগের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে যাবে।
২২| ১৩ ই মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৫
হাফিজ রাহমান বলেছেন: তথ্যটিকে সত্য প্রমাণিত ভাবার জন্য কয়েকটি প্রশ্নের সমাধান প্রয়োজন।
১। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ‘পাকিস্তানের বিশিষ্ট শিল্পপতি লতিফ বাওয়ানি ও তার ভাতিজা ইয়াহিয়া বাওয়ানির উদ্যোগে এই মসজিদ নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়।’ এখন প্রশ্ন হলো, পল্টন বা সেগুন বাগিচায় বাওয়ানি সাহেবদের কোনো দালান কোঠা ছিলো কিনা?
২। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ‘বায়তুল মোকাররম মসজিদটি যেস্থানে নির্মিত হয়েছে সে স্থানটিতে একটি বড় পুকুর ছিল এবং পুকুরটির নাম ছিল ‘পল্টন পুকুর’। এছাড়া পুকুরটির পার্শ্ববর্তী খোলা জায়গাটি মূল শহরের সীমানার বাইরে ছিল বিধায় (তখনও নতুন শহর গড়ে ওঠা শুরু হয়নি) পুরাতন শহরের সকল ময়লা আবর্জনা এখানে ফেলা (Dumping Place) হতো। কালের আবর্তে ময়লা ফেলতে ফেলতে পুকুরটিও প্রায় ভরাট হয়ে গিয়েছিল।’
তার মানে বাইতুল মুকাররম মসজিদটি বর্তমানে যেখানে আছে সে জায়গাটি ততকালীন ঢাকা সিটির শেষ সীমান্তে অবস্থিত ছিলো। সদরঘাট থেকে আগত রাস্তাটি বাঁক নেয়ার এটিও একটি কারণ হতে পারে যে, মূল সড়কটি ঢাকা সিটির সীমান্ত ঘেষে না গিয়ে একটু ভিতর দিয়ে যাক। যাতে নাগরিক সুবিধা পরিপূর্ণতা পায়।
৩। বাওয়ানী সাহেব মসজিদ নির্মাণে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছেন তা দ্বারা কি তিনি তার ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া বিল্ডিং তৈরি করতে পারতেন?
৪। আপনার দেয়া তথ্য মতে বাইতুল মুকাররম মার্কেটের দোকান বিক্রি করে লতিফ বাওয়ানি সাহেব প্রচুর আয় করেন, যার ফলে মসজিদ নির্মাণের খরচ অনেকাংশে উঠে যায়। তিনি এ কাজটি কী করে করলেন? ওই জায়গাটা কি তার নিজের ছিলো? ইতিহাসের তথ্য মতে মসজিদটির জন্য ৮.৩০ একর জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়। এ থেকে বোঝা যায়, এ জমি তার নিজের ছিলো না। তাহলে সে কী করে দোকান বিক্রির অধিকার লাভ করলেন?
৫। ইতিহাস বলছে, ‘বাওয়ানী জুট মিলস গ্রুপের মালিক হাজী আবদুল লতিফ বাওয়ানী পূর্ব পাকিস্তান সামরিক শাসক মেজর জেনারেল ওমরাও খানের নিকট বায়তুল মোকাররম মসজিদ নির্মাণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ওমরাও খান মসজিদ নির্মাণের ব্যাপারে কোনো প্রকার অনীহা প্রকাশ না করে সরকারের সক্রিয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন। ১৯৫৯ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকায় আব্দুল লতিফ বাওয়ানীর বাড়িতে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুল মোকাররম মসজিদ নির্মাণের এ সভায় উপস্থিত ছিলেন শিল্পপতি জি.এ.মাদানী, হাজী আব্দুল লতিফ বাওয়ানী, এম.এইচ.আদমজী, এস.সাত্তার, মুহাম্মদ সাদিক,এ জেড.এন. রেজাউল করিম, ইয়াহিয়া আহমদ বাওয়ানী ও মেজর জেনারেল ওমরাও খান। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে মসজিদ নির্মাণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।’
সরকার জমি অধিগ্রহণ করবে। সব কাগজপত্র রেডি। জমি অধিগ্রহণকারী যে সরকারকে বাধা দিতে মসজিদের পরিকল্পনা সে সরকারই স্বতস্ফূর্তভাবে স্বার্থান্বেষী মহলের কথায় অধিগ্রহণ থেকে ফিরে এলো! বিষম বেখাপ্পা বেখাপ্পা মনে হচ্ছে। এমন বিস্ময়কর ব্যাপারও কি তবে ঘটতে পারে? আয়ুবখান কি এতোটা মসজিদ বান্ধব ধার্মিক মানুষ ছিলেন? তার ক্ষেত্রে এমন সরল কর্মকাণ্ড কল্পনা করা যায়?
৬। যে তথ্যের আলোকে বলা হচ্ছে, বাসা বাড়ি রক্ষার্থে বাইতুল মুকাররম নির্মিত হয়েছে সে তথ্যে আসলে কী বলা আছে এবং সে তথ্যের সূত্রটা কী?
৭। ‘এই ধরনের বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তৈরি মসজিদের সাওয়াব কি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লতিফ বাওয়ানি সাহেব এখন ও কবরে শুয়ে পাচ্ছেন?’ এ প্রশ্নটা মূলত বাওয়ানি সাহেবের মসজিদ নির্মাণকেন্দ্রিক ইচ্ছার প্রকৃতিটা প্রমাণিত হবার পরেই আসতে পারে।
পুনশ্চ, বাইতুল মোকাররম মসজিদ নির্মাণের উদ্দেশ্য ও জায়গা বিষয়ে বিবিসি প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে,
১। বিবিসি প্রতিবেদনের শিরোনাম : বায়তুল মোকাররম: পারিবারিক উদ্যোগে তৈরি হয়ে যেভাবে বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ হয়ে উঠলো
২। বায়তুল মোকাররম নির্মাণের উদ্যোগ
পাকিস্তান আমলে ঢাকায় বড় শিল্প উদ্যোক্তা বাওয়ানি পরিবারের পক্ষ থেকে এই মসজিদ নির্মাণ করা হয়।বাওয়ানি জুট মিলসের মালিক উর্দূভাষী আব্দুল লতিফ বাওয়ানি এবং তার ভাতিজা ইয়াহিয়া বাওয়ানি 'বায়তুল মুকাররম মসজিদ সোসাইটি' গঠন করে মসজিদটি নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছিলেন ১৯৫৯ সালে।ইতিহাসবিদ শরীফ উদ্দিন আহমেদ সম্পাদিত ঢাকা কোষ-এ বলা হয়েছে, ১৯৬০ সালের ২৭শে জানুয়ারি আব্দুল লতিফ বাওয়ানি মসজিদ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
৩। যে কারণে পল্টনে এই মসজিদ
বায়তুল মোকাররম মসজিদ নির্মিত হয়েছে পুরোনো ঢাকা এবং নতুন ঢাকার মিলনস্থলে।
ইসলাম নিয়ে লেখক ওসমান গণি বলেছেন, এই মসজিদ নির্মাণের অনেক আগে থেকেই নতুন ঢাকার সীমানা বাড়তে থাকে। ফলে পুরোনো ও নতুন- দুই ঢাকার মানুষের কথা এই জায়গা নির্বাচনের ক্ষেত্রে বড় বিবেচনার বিষয় ছিল বলে তিনি মনে করেন।
ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বায়তুল মোকাররমের ঐ জায়গাটিকে তখন নগরীর কেন্দ্রস্থল হিসাবেও বিবেচনা করা হয়েছিল। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা এমন ধারণা করেন।
https://www.bbc.com/bengali/news-56736871
বিবিসর করা প্রতিবেদনে আপনার তথ্যটি অনুপস্থিত।
আপনার দেয়া তথ্যসূত্র ইতিহাসনামার লেখাটা ও পড়লাম। তাতে ‘কথিত আছে’ যোগে আলোচনাটি শুরু করা হয়েছে।
এবার বাইতুল মুকাররম মসজিদ নির্মাণের আরেকটি প্রেক্ষাপট পড়ে নেয়া যাক।
বায়তুল মুকাররম মসজিদ নির্মাণের প্রেক্ষাপট/ইতিহাস।
শামসুল হক ফরিদপুরী রঃ এর হাতে গড়ে উঠেছিলেন বায়তুল মুকাররাম মসজিদ
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম যে জায়গায় অবস্থিত উক্ত জায়গাটি পশ্চিম পাকিস্তানের কয়েকজন
ব্যবসায়ীর মালিকানায় ছিল।তারা সেখানে একটি সর্বাধুনিক মার্কেট নির্মাণের চিন্তা ভাবনায় ছিলেন।হঠাৎ সরকার ঐ জায়গা একোয়ার নোটিশ জারী করেন। কোটি কোটি টাকার বিশাল জায়গা হাত ছাড়া হয়ে যাচ্ছে বুঝতে পেরে ব্যবসায়ীরা চিন্তাগ্রস্ত হয়ে নানা তদবীরে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে দোয়ার জন্য মোজাহেদে আযম এর দারস্থ হলেন। হুজুর তাদেরকে অনেক শক্ত কথা শুনিয়ে দেন এবং বলেন, তোমরা কত শত মিল কল- কারখানা
বার্মা ও অন্যান্য দেশে করেছিলে, সব ফেলে এসেছো, এদেশেও যা কিছু বড় বড় কল-কারখানা করেছো অল্পদিনের মধ্যে তাও ফেলে পালাতে হবে! কারণ তোমরা আল্লাহ্র জন্য, দ্বীনের জন্য কিছুই করো নাই। এজন্য এদেশের মাতুব্বরীও ছেড়ে তোমাদের পালাতে হবে। এখন আমার কাছে কেন এসেছো? ব্যবসায়ীগণ কাকুতি-মিনতি করে পরামর্শ চাইলে হুযুর বললেন, আমি তোমাদের পরামর্শ দিতে পারি, যদি শোন তবে! তোমাদের জমিতো নষ্ট হবেই না অধিকন্তু কেয়ামত পর্যন্ত লাভবান হতে পারবে!তারা সবাই হুযুরের কথা মান্য করার অঙ্গীকার করলে হুযুর বললেন, “তোমরা উক্ত জায়গায় বিরাট আকারের এমন একটি মসজিদ তৈরি কর, যা স্মরণীয় মসজিদে পরিণত হয়! এবং উক্ত জায়গার বাকী সমস্ত অংশে আদর্শ মার্কেট তৈরি কর, যার সমুদয় উপার্জনে মসজিদের সমস্ত খরচাদি চলবে। তাহলে কেয়ামত পর্যন্ত তোমরা লাভবান হতে পারবে! ব্যবসায়ীরা বললো, হুযুর ঐ জায়গার কাছে যাওয়া বে’আইনী, কিভাবে মসজিদ করবো? মোজাহেদে আযম বললেন, সরকারের নিকট খবর হওয়ার আগেই তোমরা রাতারাতি ঐ জায়গাটি টিন দিয়ে ঘেরাও করে কিছু সিমেন্ট বালি দিয়ে একটা ভিত্তি স্থাপন করে মসজিদের একটা সাইনবোর্ড লাগিয়ে দাও! এরপর দায়িত্ব আমার, সাইনবোর্ড লাগানোর পরে সরকার যদি ভাঙ্গতে আসে সেটা আমি ঠেকাবো-ইনশাআল্লাহ্! তোমাদের দায়িত্ব শুধু ভিত্তি করে মসজিদের সাইনবোর্ড টাঙ্গানো, বাকী সব দায়িত্ব আমার, দেখবো সরকার কিভাবে মসজিদে হস্তক্ষেপ করে!
ব্যবসায়ীগণ হুযুরের কথামত ঘেরাও দিয়ে রাতের মধ্যে মসজিদের ভিত্তি করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিল! সরকারি দায়িত্বশীল দফতর অবস্থা জেনে খবরাখবর নিয়ে জানতে পারলো শামছুল হক ফরিদপুরী সাহেবের পরামর্শে মসজিদের ভিত্তি করা হয়েছে। কাজেই উঁচু মহলে অনেক কানাঘুষা হলো কিন্তু হুযুরের ভয়ে কেউ মসজিদে হস্তক্ষেপ করতে সাহস করলো না! ব্যবসায়ীরা হুযুরের নির্দেশানুযায়ী প্রশংসনীয় এ কাজটি করেছিল। যা আজ আমাদের গর্বের বিষয়।
( সংগৃহীত Usama Amin )
https://ourkantha24.com/শামসুল-হক-ফরিদপুরী-রঃ-এর-হ/
সবশেষে আপনার সুচিন্তিত মতামত কামনা করছি। ধন্যবাদ।
১৩ ই মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বাওয়ানি সাহেবদের পল্টন বা সেগুন বাগিচায় বাড়ি ছিল কি না জানি না। তবে থাকার সম্ভবনা আছে কারণ এই এলাকায় অনেক ধনী লোকের বসবাস ছিল। এখন যেমন বিশাল বড়লোকদের গুলশানে বাড়ি বা জমি আছে। পল্টন একটা অভিজাত এলাকা ছিল সেই সময়।
হুজুরের যে কাহিনী লিখেছেন সেই অনুযায়ী বোঝা যাচ্ছে ঐ জায়গা তাদের ছিল এবং সেখানে তারা বড় মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিল। প্রথমে মসজিদ নির্মাণের কোন ইচ্ছা তাদের ছিল না। যখন সরকার জায়গা অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেয় তখন তারা বাণিজ্যিক স্বার্থে এটা থামানোর চেষ্টা করেন। পরে হুজুরের পরামর্শে মসজিদ নির্মাণ করে দেন। এই কাহিনী কতটা সত্য জানি না। এই বিষয়ে ভালো কোন ঐতিহাসিক বর্ণনা পাওয়া যায় না। তাই তাদের নিয়ত আসলে কি ছিল এটা পরিষ্কার না। তবে মুলত শুরুতে নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থেই তারা তদবির শুরু করেন। তবে ঐ সময় প্রচলিত ছিল যে ঐ মার্কেটের জায়গা রক্ষার জন্য মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল।
এই ধরণের তদবির বা উদ্যোগ তো গোপনে করা হয়ে থাকে। তাই প্রকৃত তথ্য প্রকাশ্যে বেশী আসে নাই। তবে এটা বলা যায় যে মসজিদ নির্মাণ করার প্রাথমিক নিয়ত ওনাদের ছিল না। পরিস্থিতির কারণে তারা করতে বাধ্য হন। এই বিষয়ে বিস্তারিত আর কোন তথ্য আমি অন্তত পাই নাই।
২৩| ১৭ ই মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:২৭
সোনালি কাবিন বলেছেন: নতুন কিছু জানা হলো।
১৮ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৮:১৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
২৪| ১৭ ই মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৮
করুণাধারা বলেছেন: পোস্ট এবং কিছু মন্তব্য পড়ে অনেক কিছু জানা হলো। পোস্ট আগেই পড়েছি, ভালো লেগেছে, কিন্তু আগে মন্তব্য করতে গিয়ে ভুলে গিয়েছিলাম।
জায়গা বাঁচাতে বাইতুল মোকাররম মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু আমি অনেক মসজিদ জানি যা জায়গা দখল করতে নির্মাণ করা হয়েছিল। জায়গা দখল করার পর সেখানে একটা মসজিদ বানিয়ে দিলে দখল খেতে জায়গাটার অধিকার পেতে আর কোন অসুবিধা হয় না। মসজিদের নামে জায়গা দখল করলে কোন পাপ হয় কিনা আল্লাহ ভালো জানেন। ঢাকা শহরের অনেক মসজিদ আমি দেখেছি ফুটপাতের কিছুটা দখল করতে এবং সিঁড়ি অবশ্যই ফুটপাতের উপর থেকে শুরু হয়, এটাও দখল। সোবহানবাগ মসজিদ রাস্তার অর্ধেকটা দখল করে নির্মিত হয়েছিল, যার জন্য ওই এলাকায় পিক আওয়ারে যানজট লেগেই থাকে। মসজিদটা যখন ভেঙে ফেলে নতুন করে নির্মাণ কাজ শুরু হলো, ভেবেছিলাম রাস্তা ছেড়ে দিয়ে মসজিদ হবে। কিন্তু না, নবনির্মিত মসজিদেও রাস্তা দখলেই রইল।
আমাদের দেশের মসজিদ নির্মাতাদের সম্পর্কে বলা এই কথাগুলো তিক্ত হলেও সত্যি!
১৮ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৮:২২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার কথা ঠিক। আমাদের দেশে জায়গা দখল করার জন্যও অনেক মসজিদ নির্মাণ করে থাকে। মসজিদের নামে অন্যের জায়গা দখল করলে অবশ্যই পাপ হবে। মসজিদ তৈরি করতে হয় এমন জায়গায় যে জায়গাটা জনকল্যাণের জন্য দান করে দেয়া হয়েছে।
সোবহানবাগ মসজিদের বাড়তি অংশটা আসলেই একটা সমস্যা। এটার সমাধান করা সম্ভব।
আমাদের দেশের অনেক মসজিদ কমিটিতে অসৎ লোক আছে। এরা দান খয়রাত করে আল্লাহর কাছে ভালো হতে চায়। কিন্তু অন্যের হক নষ্ট করলে আল্লাহও ক্ষমা করেন না। দুর্নীতিবাজ লোক অনেক দান খয়রাত করে থাকে। কিন্তু এগুলি দিয়ে তাদের অসৎ আয়ের গুনাহ মাফ হবে না।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই মার্চ, ২০২৩ ভোর ৪:২৮
কামাল১৮ বলেছেন: বক্তব্যে যুক্তি আছে সত্যতাও আছে।এমন ঘটনা আগেও ঘটছে বর্তমানেও ঘটছে।আল্লার নামে সাতখুন মাফ।