![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নাজিয়া হাসান ছিলেন আশির দশকের তুমুল জনপ্রিয় ক্ষণজন্মা একজন পাকিস্থানী পপ শিল্পী, আইনজীবী এবং সমাজকর্মী। তার সফল সঙ্গীত জীবনের শুরু হয় মাত্র দশ বছর বয়সে শিশু শিল্পী হিসেবে পিটিভি তে পারফর্মেন্সের মাধ্যমে । পরবর্তিতে নাজিয়া হাসান উপমহাদেশের একজন কিংবদন্তি শিল্পী হিসেবে মর্যাদা লাভ করেন এবং দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় সেলিব্রেটিদের একজন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
পাকিস্থানের করাচিতে জন্ম হলেও তার শৈশব কেটেছে ব্রিটেনে। আর সেখানে তার সাথে ভারতীয় বংশোদ্ভূত লন্ডন বেজড জনপ্রিয় সংগীত কম্পোজার Biddu Appaiah সাথে পরিচয় । যার সূত্র ধরে ভারতীয় চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক ফিরোজ খানের ১৯৮০ সালের চলচিত্র “কুরবানী” র বিখ্যত সেই গান “আপ জেয়ছা কৈ মেরে জিন্দিগি মে আয়ে তো বাত বান যায়ে” প্লেব্যাক করা এবং যা তাকে ভারত, পাকিস্থান ও বাংলাদেশে ব্যপক পরিচিতি প্রদান করে।
এই গান নাজিয়াকে মাত্র ১৫ বছর বয়সে প্রথম পাকিস্থানী হিসাবে Filmfare Award for Best Female Playback Singer এর পুরষ্কার এনে দেয়। এই পুরষ্কার এখন পর্যন্ত সর্বকনিষ্ঠ Filmfare Award বিজয়ীর রেকর্ড হিসেবে অক্ষুন্ন রয়েছে।
১৯৮১ সালে তার প্রথম এলব্যাম Disco Deewane বের হয় যা সেই সময় বিশ্বব্যাপী চৌদ্দ দেশে বেস্ট সেলিং এশিয়ান পপ এলব্যামের স্বীকৃতি অর্জন করে এবং ভারত, পাকিস্থান, বাংলাদেশের বাহিরে বিশেষ করে দক্ষিন আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ল্যটিন আমেরিকা, ব্রাজিল, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়াতে ব্যপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। যা তাকে রাতারাতি ইন্টারন্যাশনাল তারকায় পরিনত করে। এই এলব্যামে তার সহশিল্পী ছিলেন তার ভাই জোহেব হাসান এবং মিউজিক কম্পোজার ছিলেন Biddu Appaiah। মুম্বাই এ রিলিজের প্রথম দিনেই এই এলব্যাম বিক্রি ১০০,০০০ কপি ছাড়িয়ে যায় এবং বিশ্বব্যাপী ১৪ মিলিয়ন পিস বিক্রি হয়েছিল সেই সময়। এই এলব্যামের সাফল্যে তিনি The Queen of Pop মিউজিক এর খেতাব অর্জন করেন।
পরবর্তিতে Biddu Appaiah মিউজিক ডিরেকশনে নাজিয়া এবং তার ভাই জোহেব হাসানের আরও কয়েকটি জনপ্রিয় এলব্যাম বের হয় যার মধ্যে Boom Boom (1982), Young Tarang (1984), Hotline(1987), Camera Camera(1992) উল্লেখযোগ্য।
তার গাওয়া প্রতিটি গান এখনো শুনলে মনেই হয় না যে এই গানগুলি আজ থেকে চল্লিশ বছর আগের গাওয়া। তার সময়ের চেয়ে সে সর্বদাই এগিয়ে ছিল। তার গায়কী, তার পোশাক-পরিচ্ছদ, তার উপস্থাপন ভঙ্গী সবই ছিল ইউনিক । এক মায়বী ইনোসেন্স ছিল তার অভিব্যক্তিতে।
মিউজিকের পাশাপশি পড়াশুনাতে সে তার দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছিল । তিনি ব্যবসা প্রশাসন ও অর্থনীতি বিষয়ে The Richmond American University, London থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি লাভ করার পাশাপাশি ইউনির্ভাসিটি অব লন্ডন হতে এলএলবি ডিগ্রি অর্জনও করে ছিলেন। ১৯৯১ সালে তিনি জাতিসংঘ হেডকোর্য়াটার নিউ ইয়র্ক এ যোগদান করেন এবং পরবর্তি দুই বছর United Nations Security Council এ চাকরী করেন। তৃতীয় বছরে তিনি UNICEF এ চাকরীর অফার লাভ করেন। সেই সাথে Columbia University’s Leadership Program এ scholarship অর্জন করেন। কিন্তু উক্ত অফার সমূহ তিনি গ্রহন করতে পারেননি কেননা ততদিনে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে পরেন।
কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠার পর, ৩০শে মার্চ, ১৯৯৫ সালে তিনি পাকিস্থানী ব্যবসায়ী র্মিজা ইসতিয়াক বেগের সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের ২ বছরের মাথায় তাদের একমাত্র পুত্র আরেজ খান এর জন্ম হয় ৭ই এপ্রিল, ১৯৯৭। আনফরচুনেটলি এই বিবাহ নাজিয়া হাসানের মৃত্যুর মাত্র দশ দিন পূর্বে ডিভোর্সের মাধ্যমে পরিসমাপ্তি ঘটে।
ক্যান্সারের সাথে দীর্ঘ যুদ্ধ শেষে ১৩ আগস্ট ২০০০ সালে মাত্র পয়ত্রিশ বছর বয়সে নর্থ লন্ডন হসপিসে তিনি এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। Golders Green Crematorium এ নামাজে জানাজা শেষে তাকে লন্ডনের Hendon Cemetery (Muslim Section) এ সমাহিত করা হয়।
তিনি অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন। ভারতীয় ফিল্মফেয়ার পুরস্কার ছাড়াও তিনি পাকিস্তানের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার প্রাইড অফ পারফরম্যান্স বিজয়ী ।
আলিশার বিখ্যাত গান ‘Made in India’ আসলে নাজিয়া হাসানের কথা মাথায় রেখেই Biddu Appaiah কম্পোজ করেছিলেন, কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার কথা ভেবে তিনি এই গান গাওয়া হতে নিজেকে বিরত রেখেছিলেন।
আরও কিছু গান
Dum Dum Dee Dee
Aao Na Pyar Karain
Teri Meri Aisi Dosti
Lekin Mera Dil
Ajnabi
Sun Mere Mehboob Sun
Tere Kadmon Ko
Dil Mera Yeh Kehta Hai
Teri Yaad
Live Dubai Show (1989)
আগামী ৩রা এপ্রিল তার ৫৬তম জন্মদিন। জন্মদিনের প্রাককালে এই ক্ষণজন্মা শিল্পীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ।
২| ২৭ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৩৯
রেজওয়ান ইসলাম বলেছেন: আমার অত্যন্ত প্রিয় শিল্পী। ন্যাশনাল আর্কাইভ থেকে তার মৃত্যুকালীন সংবাদটি সংগ্রহ করেছিলাম।ই্উটিউবে তার সমাহিত স্থানের ভিডিও আছে।যতবার দেখি মন খারাপ হয়।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে মার্চ, ২০২১ ভোর ৫:৪৫
মিরোরডডল বলেছেন:
নাজিয়া হাসান ওয়ান এন্ড অনলি । অসাধারণ গায়কি, কণ্ঠ, তার একটা নিজস্ব স্টাইল ছিলো ।
প্রিয় মানুষটি খুব অল্প বয়সে এভাবে চলে গেলেন !!!
থ্যাংকস অদ্ভুত আমি প্রিয় শিল্পীকে নিয়ে লেখা আর এতোগুলো পছন্দের গান শেয়ার করার জন্য ।
ভাইবোনের কণ্ঠে আরও একটি চমৎকার গান ।