![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যুক্তি ও বিজ্ঞানই পারে মানুষ , রাষ্ট্র ও সমাজকে পরিবর্তন করতে
গত ২০ শে জুলাই ২০১৪, রোববার শিক্ষামন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ স্বয়ং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর পরিদর্শনে গিয়ে উপস্থিত সেবাপ্রত্যাশীদের সাথে কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রীকে পেয়ে সেবা প্রত্যাশীরা তাদের ক্ষোভের কথা, দুর্দশার কথা শিক্ষামন্ত্রীকে বলেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে প্রশিক্ষণ শাখার পরিচালক আবদুল কুদ্দুস শিকদারকে বদলীর আদেশ করেন। মন্ত্রীর এই তাৎক্ষণিক আদেশে উপস্থিত সেবাপ্রত্যাশীরা যেমন খুশি তেমনি খুশি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাথে যাদের যোগাযোগ আছে এবং যারা জনাব কুদ্দুস সাহেবের সাথে কোন দাপ্তরিক কাজে অন্তত একবারও সাক্ষাত করেছেন তারাও। মন্ত্রীর এই কাজের জন্য তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। মন্ত্রীর এই পদক্ষেপ অবশ্যই ধন্যবাদযোগ্য। কারণ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকা দীর্ঘদিন ধরে আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। কিন্তু শত অভিযোগ নিয়ে, কোন খুঁটির জোড়ে, এমন একজন কর্মকর্তা দীর্ঘদিন এই অধিদপ্তরে বহাল থাকতে পেরেছিলেন তা সত্যিই এক বিস্ময়। তবে সুখের বিষয় হল, অবশেষে মন্ত্রী সেই খুঁটি ভাঙ্গতে পেরেছেন। তাই মন্ত্রীকে ধন্যবাদ।
কিন্তু, প্রিয় পাঠক, শিরোনাম দেখে বিভ্রান্ত হবেন না; শিরোনামে মন্ত্রীকে ছোট্ট ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। এর কারণ কি?
এর কৈফিয়ত দেয়ার আগে প্রথমেই বলে রাখা ভাল, অন্য অনেক মন্ত্রণালয়ের চেয়ে শিক্ষামন্ত্রণায়ের পরিধি-ব্যাপকতা অনেক অনেক বেশি। এর সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত দেশের প্রায় সকল মানুষ। সেই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আমাদের শিক্ষামন্ত্রী। এই মন্ত্রণালয়ের অন্যতম বড় অধিদপ্তর শিক্ষা অধিদপ্তর। এই অধিদপ্তরের সাথে সংযুক্ত দেশের লক্ষ কোটি মানুষ। কিন্তু এই অধিদপ্তরটি দীর্ঘদিন ধরে অদক্ষ, দুর্নীতিপরায়ন লোকেদের দিয়ে পরিচালিত হওয়ায় এই প্রতিষ্ঠানটি ক্রমেই দুর্নীতিবাজদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। সেই দুর্নীতির আখড়া থেকে বর্তমান মহাপরিচালক এটিকে কিছুটা উন্নততর অবস্থায় ফিরে আনার চেষ্টা করে চলেছেন। বর্তমান মহাপরিচালক যোগদানের পরপরই শিক্ষা অধিদপ্তরের দুর্নীতির সিন্ডিকেট খ্যাত বেশ কিছু গংকে অধিদপ্তর থেকে বদলী করা হয়। উপরোক্ত কর্মকর্তাও সেই গংদেরই একজন ছিলেন বলেই কথিত। দুর্নীতির সেই সিন্ডিকেট চক্রের বড় অংশ এখন শিক্ষা অধিদপ্তরে না থাকলেও এর আশে পাশেই রয়েছে এবং তা সম্ভব হয়েছে মন্ত্রণালয়ের বদৌলতেই। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে তাড়িত হয়ে এদের কেউ রয়েছে ঢাকা বোর্ডে, কেউ অন্য কোন সরকারি কর্মক্ষেত্রে, কেউবা আবার ঢাকার খ্যাতনামা কোন কলেজে। আর শিক্ষা অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ কর্মচারীরাতো এখনো বহাল তবিয়তে এই অধিদপ্তরে দাপটের সাথে চাকুরি করে যাচ্ছে।
মন্ত্রী অভিযুক্ত কর্মকর্তাকেও একইভাবে বদলী করেছেন। আগেরগুলোর সাথে এবারের পার্থক্য হল এবারে বদলী করা হয়েছে ঢাকার বাইরে। মাদারীপুরের সরকারি নাজিম উদ্দিন কলেজে। এই কলেজটি দেশের একটি বড় কলেজ হিসেবেই পরিচিত। এই কলেজে পদায়ন পাওয়াও অনেকের জন্য ভাগ্যের বিষয়। অথচ এই অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে বদলী করা হল একটি খ্যাতনামা কলেজে। ভাবখানা এই যে ঢাকার বাইরে হলেই বিশাল এক শাস্তি। এই পদায়নে শাস্তির যে ভাব রয়েছে সেই ভাবখানা সম্পূর্ণ অনুচিত। কারণ এতে করে ঢাকার বাইরে পদায়ন পাওয়া, দীর্ঘদিন ধরে অবস্থানরত হাজার হাজার শিক্ষক কর্মকর্তা নিজেদের অপমানিত বোধ করতে পারেন।
শিক্ষামন্ত্রী অধিদপ্তরের বিভিন্ন শাখার সেবাপ্রত্যাশীদের সাথে কথা বলেন। যারা শিক্ষা অধিদপ্তর সম্পর্কে মোটামুটি খোঁজ খবর নেন তারা সবাই জানেন এই অধিদপ্তরের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দুটি শাখা হল এমপিও শাখা ও মাদ্রাসা শাখা। দুর্নীতিপরায়ন কর্মকর্তারা এই দুই শাখায় পদায়ন পেতে চান। এই দুই শাখায় যত বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকবে দেশের শিক্ষা ও শিক্ষকদের সেবার দুর্দশাও তত বেশি বাড়বে। মন্ত্রী এমপিও শাখার সেবাপ্রত্যাশীদের দুঃখ-দূর্দশার কথা শুনলেন, কিন্তু কিছুই করতে পারলেন না।
আগেই বলেছি দেশের অন্য অনেক মন্ত্রণালয়ের চেয়ে শিক্ষামন্ত্রণায়ের পরিধি-ব্যাপকতা অনেক অনেক বেশি; এর সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত দেশের প্রায় সকল মানুষ। মন্ত্রী কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তাকে বদলী করবেন বা আরো বড় কোন শাস্তি দেবেন এটা স্বাভাবিক। তবে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মন্ত্রণালয় নামক প্রতিষ্ঠানটি ঠিক করা। কারণ মন্ত্রী একজন ব্যক্তিমাত্র নন, মন্ত্রী একটি প্রতিষ্ঠান। মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত সকল অধিদপ্তর, দপ্তর, বিভাগ, উপবিভাগ, কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে গড়ে তোলা, সাজিয়ে তোলা, কার্যক্ষম, উন্নত করা মন্ত্রীর দায়িত্ব। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্লোগান নিয়ে আশা বর্তমান সরকারের শিক্ষামন্ত্রী দেশের সবচাইতে দীর্ঘ সময়ের শিক্ষামন্ত্রী। এমন মন্ত্রীর জন্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত সকল প্রতিষ্ঠানকে গড়ে তোলার ব্যর্থতার দায়িত্ব থেকে নিজেকে বাঁচানোর কোন অযুহাতই এখন আর গ্রহণযোগ্য হবে না । তাই মাননীয় মন্ত্রী যে ছোট্ট কাজটি করেছেন তার জন্য ছোট্ট ধন্যবাদ। বড় ধন্যবাদ বড় কোন কাজের জন্য। ইতোপূর্বে শিক্ষামন্ত্রী উদ্দ্যোগে মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর পর্যন্ত বিনামূল্যে বই প্রদান নিশ্চিত করা হয়েছে। এটি একটি ভালো কাজ, মহৎ কাজ। এর জন্য শিক্ষামন্ত্রী ধন্যবাদ পাবার যোগ্য। অবশ্যই বড় ধন্যবাদ।
কিন্তু দেশের বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে সংঘটিত ধারাবাহিক সন্ত্রাস, সরকারি দলের অঙ্গসংগঠনের সদস্যদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চাঁদাবাজি ও ভর্তি বাণিজ্য, বিভিন্ন স্তরের বদলী ও পদায়ন বাণিজ্য, বিভিন্ন উচ্চ ও নি¤œ স্তরে নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য, এমপিও বাণিজ্য, বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন বাণিজ্য, ইংলিশ মিডিয়ামের নৈরাজ্য, এমন কি শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের বঞ্ছনা ও অপ্রাপ্তির দায় কার?
তাই মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, আপনার চারপাশের তৈলবাজদের কথা না শুনে, যাদের জন্য আপনার এই মন্ত্রণালয়, শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক, মাঝে মাঝে একটু তাদের কথা শুনুন। তাদের দুঃখ দুর্দশা, হতাশার কথা শুনুন; তাদের অপ্রাপ্তির কথা শুনুন এবং সম্ভব কিছু করুন। তবে ভবিষ্যতে হয়তো বড় ধন্যবাদ পাবেন। নতুবা বড় বড় অপরাধে ছোট ছোট ভাল কাজগুলো হারিয়ে যেতে বাধ্য।
২| ২১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:১৭
হাসিনুল ইসলাম বলেছেন: ভাল খবর। খবরটি দেখেছি, তবে একটি বিষয় ঠিক বুঝিনি- প্রশিক্ষণ শাখার কর্মকর্তার সাথে এমপিও-র কাজের সম্পর্ক কোথায়।
৩| ২১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:১৭
সফিক৭১ বলেছেন: মন্ত্রী প্রশিক্ষণ শাখার অনিয়মের জন্য কুদ্দুস শিকদারকে বদলী করেছে বলে জেনেছি।
শিক্ষা অধিদপ্তরের সবচেয়ে দুর্ীতিপ্রবণ শাখা হল এমপিও শাখা। এর সাথে প্রশিক্ষণ শাখার কোন সম্পর্ নেই। এই শাখার সেবা প্রত্যাশীরা মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ দিয়েছিল। কিন্তু এই শাখার কোন কর্মকর্তার কোন শাস্তিও হয়নি। একই অবস্থা মাদ্রাসা শাখারও। ধন্যবাদ।
৪| ২২ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১:৩২
ঢাকাবাসী বলেছেন: মন্ত্রীরা ঘুষের ভাগ পায় নাকি?
২৩ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ২:২৮
সফিক৭১ বলেছেন: মন্ত্রীরা ঘুষের টাকার ভাগ পাক আর না পাক নিজ নিজ অধীনস্তদের ঘুষ বন্ধ না করার অপরাধে তারা ঘুষখোরের মতোই সমান অপরাধী।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:০৪
ঢাকাবাসী বলেছেন: সরকারী দপ্তরগুলোতে টাকা লুঠের, ঘুষ খাবার, আর মহা দুর্ণীতির এক মচ্ছব চলছে! সবাই যেভাবে পারে লুটছে!