![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যুক্তি ও বিজ্ঞানই পারে মানুষ , রাষ্ট্র ও সমাজকে পরিবর্তন করতে
টেলিভিশনের ব্রেকিং নিউজে যখন দেখলাম ব্লগার নিলয়কে খুন করা হয়েছে-এক অজানা আতঙ্কে গা শিউরে উঠল। ব্লগার নিয়ল নেই!
আমার এক স্নেহভাজন ছোটভাই আছে। নাম নিলয় । ছাত্র ফ্রন্ট করত। খুবই মেধাবী ছাত্র। ও-ই আমার ব্লগ একাউন্টটা খুলে দিয়েছিল। বলা চলে ওই আমার ব্লগের গুরু। ব্লগার নিয়ল মারা গিয়েছে-এই খবর শোনার সাথে সাথেই মনের মধ্যে খচ কেরে উঠল। সেই নিলয় এই নিলয় নয় তো?
কনফারম হওয়ার জন্য গণসংহতির বন্ধু ফিরোজ আহমেদ কে ফোন করলাম। ফোন বন্ধ। টেনশন আরো বেড়ে গিয়েছে। এদিকে নিলয়ের মোবাইলে ফোন করে ফোন বন্ধ পেয়ে টেনশন পুরোমাত্রায় রূপ নিয়েছে।
বিকেলে নারায়নগঞ্জ গিয়েছিলাম লক্ষ্যাপারের ক্লাসিকাল মিউজিকের বর্ষাকালীন সন্ধা আসরের অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠান থেকেই আবার ফিরোজ আহমেদ কে ফোন করলাম। ফিরোজ ভাই জানাল সেই নিলয় জার্মানিতে গেছে উচ্চতর শিক্ষার জন্য। যেন হাফছেড়ে বাঁচলাম। একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লাম।
আমার এই স্বস্তির নিঃশাসের শব্দটা মোবাইল ফোনের অপর পারে থাকা ফিরোজ আহমেদর দৃষ্টি এড়াইনি। সাথে সাথে ধরিয়ে দিল। বলল, ‘স্বস্তি পেলাম, আমার প্রিয় মানুষটি মারা যায় নি বলে।’
ফিরোজ আহমেদের এই ধরিয়ে দেওয়ায় মনের মধ্যে কেমন যেন খচ মেরে গেলে।
মনের মধ্যে একটা পরাজয় ভাব নিয়ে লক্ষাপারের বর্ষাকালীন রাগ সঙ্গীত উপভোগ করতে বসে রইলাম। কিন্তু মনের মধ্যে তোলপাড় চলছিল তবলার সমান তালেই। সঙ্গী ছিল জগলুল আসাদ।
তাকে শেয়ার করলাম। এই স্বস্তি কি অপরাধের?
জগলুল আশ্বস্ত করল। বলল, ‘না, এটাই মানুষের বৈশিষ্ট্য।’
ভাবলাম হবে হয়তো। এই মুহূর্তে অনেক মানুষ পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। অনেকের অপমৃত্যু হয়েছে। এই মুহূর্তে আফ্রিকায়, কিংবা ইয়েমেনে, কিংবা আফগানিস্তানে কিংবা পৃথিবীর আরো নানা জায়গায় কত মানুষের অপমৃত্যু হয়েছে। যে বয়সে তাদের মারা যাওয়ার কথা ছিল না। যার অনেকের খবর আমরা জানি না। আমরা কি সবার মৃত্যুতে বেদনাহত হই? যাদের খবর জানিনা, যাদেরকে চিনিনা তাদের মৃত্যুর জন্য আমার মনে কোনো বেদনাবোধ জাগ্রত হয় না। কারো মনেই কি বেদনাবোধ জন্মে?
পরদিন বিকেলে ঘরের ছাদে উঠে যখন এই কথা ভাবছিলাম তখন দেখলাম ইলেক্ট্রিক তারে একটি কাক শক খেয়ে মারা পড়ল। একটা শব্দ হলো। এই শব্দে পাশের কাকগুলো কা কা করে চিৎকার করে উঠল। মারা যাওয়া কাকটির জন্য তারই স্বগোত্রীয়রা চিৎকার করছে। এমন ঘটনা অনেক আগেও দেখেছি। রাস্তার পাশে একটি কুকুরকে পাশের গ্রামের অন্য একটি কুকুর যখন ধাওয়া করে তখন কুকুরগুলো সংঘবদ্ধ হয়ে ধাওয়া করে।পাশের গ্রামের কুকুরটিও একটি কুকুর। পার্থক্য একটা- সেটা অপরিচিত।
পরিচিতজনের দুঃখে, কষ্টে আমরাও দুঃখিত হই, কষ্ট পাই। অপরিচিত জনদের জন্য দুঃখ কষ্ট ততটা নিজেকে স্পর্শ করে না। এটাই প্রাণির বৈশিষ্ট্য। মানুষওতো প্রাণিই। মানুষও কুকুরের মতো, শিয়ালের মতো, কাকেদের মতো।
তাহলে মানুষের সাথে কুকুর, বেড়াল আর অন্য পশুর পার্থক্য রইল কোথায়?
নিলয় চট্টপাধ্যয়কে হত্যা করা হল। নিলয় চট্টপাধ্যয়ও ছিল কারো আপনজন, কারো প্রিয়জন, কারো নিকটাত্মীয়। তারা কষ্ট পাচ্ছে, তারা কাদছে প্রিয় জনের মৃত্যুর জন্য। আর আমরা সবাই এমন ভাব নিয়ে বসে আছি যেন আমারতো কিছুই হয় নি। আমিতো বেঁচে আছি ঠিকভাবে।
মানুষ, সরকার, রাষ্ট্র সকলেই নির্বিকার।
যে পুলিশের দায়িত্ব মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দেওয়ার তারাই বলছে হয় দেশ ছেড়ে চলে যান, নইলে লেখা বন্ধ করে দিন।
নিলয়ের নিকটাত্মীয়দের মনের ব্যাথাটা বুঝতে চেষ্টা করি হারিয়ে যাওয়া আপনজনদের দুঃখ থেকে।
২| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:০৫
সফিক৭১ বলেছেন: মানুষ বড়ই আজব জীব, তাই তার বৈশিষ্ট্যও বড়িই আজব।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৭:৪১
মোঃ ইমরান কবির রুপম বলেছেন: এটাও মানুষের একটা বৈশিষ্ট্য