নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুহাম্মদ শফিউল আলম

যুগ্মপরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক

মুহাম্মদ শফিউল আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

Dream to be a Central Banker in Bangladesh!

২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১:১৬

[বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে ২০১৪ সালে নিয়োগপ্রাপ্তদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেয়ার জন্য কয়েকটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম মার্চ, ২০১৪ তে। এখনও মাঝে মাঝেই একই প্রশ্নগুলির জবাব দিতে হয়। তাই নোট আকারে লিখে রাখলাম ]


আমি ঢাবি ফিন্যান্স ৪র্থ ব্যাচের ছাত্র। জানতে পারলাম আমার বিভাগের ১৪তম ব্যাচের ০৯ জন বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে যোগদানের সুযোগ পেতে যাচ্ছেন।

ফিন্যান্সসহ অন্যান্য বিষয়ের অনেকেই বলছেন - বাংলাদেশ ব্যাংক এ চান্স পেয়েছেন, কিন্তু জয়েন করা উচিত কিনা বুঝতে পারছেন না। এই দ্বিধার মূল কারণ আপনি বতর্মানে অন্য একটি চাকুরী করছেন যেখানে এখুনি প্রায় ৪০-৫০ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছেন। অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকুরীতে বেতন খুব কম বলে মনে করছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন উপ পরিচালক হিসেবে আপনাদের সাফল্যে সবাইকে অভিনন্দন। কিন্তু সবাইকে স্বাগত জানাতে পারছিনা। যাদের এটিই প্রথম চাকুরী তাদেরকে অবশ্যই স্বাগতম। যারা এখনও প্রথম শ্রেনীর কোন চাকুরী করার সুযোগ পান নি তাদেরকেও স্বাগতম। তবে বেতনের বিষয়টি খেয়াল রাখবেন যদি অর্থ আপনার কাছে খুব জরুরী বিষয় হয়।

অর্থ যদি আপনার নিকট খুব গুরুত্ত্বপূর্ণ হয় তাহলে এখানে যোগদান করা আপনার জন্য একসময় চরম ভুল বলে প্রমাণিত হবে। আসলেই এই চাকুরীতে বেতন খুব কম।

বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দিয়েছি ০৯ (নয়) বছর। আজকে পহেলা মার্চ। ১০ম বৎসরের প্রথম দিন। ২০০৫ ব্যাচে আমার সহকর্মীদের সবাইকে শুভেচ্ছা।
নিজের জন্য প্রায় অপ্রয়োজনীয় একটি বিষয়ে স্ট্যাটাস লিখছি। স্ট্যাটাসটি দেয়ার উদ্দেশ্য কাউকে উৎসাহিত বা নিরুৎসাহিত করা নয়। বরং যারা দ্বিধায় আছেন তাদের কিছু প্রশ্নের উত্তর দেয়া। নুতন যারা চাকুরীটি পেতে যাচ্ছেন তাদের মনের অবস্থা বিবেচনা করা আমার মনে হয় অন্য কারও পক্ষে সম্ভব না। আমার পক্ষেও না।

যাই হোক গুরুত্ত্বপূর্ণ অন্য একটি প্রসঙ্গে আসি -

পোস্টিং/পদায়নঃ
১) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির গ্র্যাজুয়েশনের বিষয়টি খুব একটা আমলে নেয়া হয় না। তবে কোন বিভাগ থেকে বিশেষ কোন সাবজেক্টের লোক চাওয়া হলে এ ধরনের লোককে খুঁজে পদায়ন করা হয়।
২) পদায়নের ক্ষেত্রে মেয়েদের সাধারণতঃ ঢাকায় রাখা হয়।
৩) কারও পছন্দের বিষয় সাধারণতঃ বিবেচনা করা হয় না; তবে কারও কারও (!) আবদার রক্ষা করা হয়।
৪) আবারো আমার ঢাবি ফিন্যান্স থেকে গত ব্যাচে জয়েন করা এক ছোট ভাইয়ের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। তাকে খুলনাতে পোস্টিং দেয়া হয়েছে। বর্তমানে সে ঐ অফিসের জড় সামগ্রী শাখায় কর্মরত আছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকুরীর বিষয়ে আমার স্ট্যাটাসে আমার অনেক সহকর্মীই তাদের মূল্যবান মতামত ব্যক্ত করছেন। অনেকেই বলছেন টাকা কোন বিষয় না, সম্মানটাই আসল। আমিও তাদের সাথে একমত। তবে সম্মানের বিষয়টা পদের সাথে জড়িত। সহকারী পরিচালক হিসেবে কতটুকু সম্মান আমরা পাই সেটা বিস্তারিত কেউ যদি ব্যাখ্যা করতেন খুশি হতাম।
সত্যিকারের সম্মান হয়তো বাড়বে পদোন্নতির সাথে সাথে। তবে বিষয়টি নতুনদের জন্য সহজে হবে বলে মনে হয় না।

পদোন্নতিঃখুব স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়ায় আমাদের পদোন্নতি হয় । সাধারণতঃ খুব বড় কোন ভুল/দোষ না করলে সময় মতই প্রমোশন হবে (শুন্য পদ থাকা সাপেক্ষে); তবে সেই সময়টা কখন তা বলতে পারছি না। সাম্প্রতিক সময়ে মোটামুটি অল্প সময়েই প্রথম প্রমোশনটি হয়ে যাচ্ছে। তবে পরবর্তী পদোন্নতির ক্ষেত্রে কতটা সময় লাগবে তা বলা যাচ্ছে না !

একটা উদাহরণ দেই - মনে করুন আপনি ২৬১ জনের মধ্যে ২০০তম। বিশেষ কিছু না ঘটলে ১৯৯ জনের আগে আপনার প্রমোশন হবার সম্ভাবনা নাই। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সবচেয়ে উপরের পোস্ট হলো নির্বাহী পরিচালক যার সংখ্যা ১৭, জিএম সংখ্যা প্রায় ৬৩ টি, ধরে নেই ডিজিএম ১৫০; অর্থাৎ আপনাকে ডিজিএম হতে হলে আপনার আগের কতজনকে রিটায়ার করতে হবে হিসাব করে দেখতে পারেন।

আমি এইচআরডির কেউ নই। তাই এ বিষয়ে আমার ব্যাখ্যা সম্পূর্ণ সঠিক নাও হতে পারে। তবে বিষয়টা ভাবা উচিত কিনা ভেবে দেখুন।
আশার কথা এই যে, নতুন নতুন শাখা/বিভাগ খোলার পাশাপাশি পদসংখ্যা ভবিষ্যতে হয়তো আরও বাড়বে।

ফেসবুকের কল্যাণে আজকাল কারও কাছেই কোন তথ্য গোপন থাকে না। তবুও তথ্য প্রকাশ পেলেই আমরা শংকিত হই। কথা বেশী হয়ে যাচ্ছে হয়তো। তাই স্ট্যাটাসটি শেষ করবো।
২০০৫ সালে কোন বাধাঁই আমাকে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদান থেকে বিরত রাখতে পারেনি। শিক্ষকতার মতো একটি পেশা ছেড়ে এই চাকুরীতে এসেছি মাত্র এক তৃতীয়াংশ বেতনে। ০৯ বছর পরও নিজের মাঝে শিক্ষক চরিত্রটির প্রভাব রয়ে গেছে। সেই রেশ কখনও কাটবে কিনা জানি না। নানা রকমের আক্ষেপ হয়তো আছে, থাকবেই। কারণ - ”নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস, ঐ পাড়েতে আছে সুখ আমার বিশ্বাস।।”

”প্রেষণা” বলে একটা শব্দ আছে যার ইংরেজী হলো Motivation. প্রেষণা কর্মীর উদ্দীপনা বাড়ায়। সম্ভবতঃ উদ্দীপনার ইংরেজী Courage. অর্থ আমাদের চাকুরীর পুরস্কার হলেও এটিই একমাত্র প্রেষণার উৎস নয়।

মানুষের অর্থকষ্ট একসময় দূর হয়ে যায়। কিন্তু সমাজের উচ্চ একটি আসনে জায়গা করে নেয়ার সুযোগ হয়তো জীবনে বারবার আসে না।

সবশেষে বলবো - যদি পৃথক বেতন কাঠামো হয়েই যায় তাহলে এই চাকুরীটি বাংলাদেশের অন্যতম আকর্ষনীয় একটি চাকুরী হয়ে যেতে পারে। যারা কম বেতনের ঝুঁকি নিতে চান না, তারা হয়তো এই চাকুরীটির জন্য ভবিষ্যতে আফসোস করবেন। তবে এটি অনেকটা লটারির মতো। ৫০:৫০ চান্স।

খেলবেন নাকি জুয়া - জীবনটাকে নিয়ে !

(পুনশ্চঃ এরকম একটি বিষয়ে স্ট্যাটাস দেয়ার ইচ্ছে ছিলোনা কখনই। বিষয় নির্বাচনে হয়তো ভুল করেছিলাম। আমার বক্তব্যের কোন অংশ কাউকে বিব্রত করে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী। নবীনদের জন্য আবারো শুভ কামনা।)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১:৩৫

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: উপকারী পোস্ট ৷

২| ২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১:৪৫

মুহাম্মদ শফিউল আলম বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.