নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তাইওয়ান অনেক দিক দিয়ে পৃথিবীতে অগ্রসরমান একটি দেশ । সেমি কন্ডাক্টর উৎপাদনে সবচে এগিয়ে দেশটি । আমার পেশাগত দিক এগুলো না হলেও এসবের প্রতি নজর রাখি সবসময় । এবার চীন -তাইওয়ান দন্ধের সময় ডেইলি স্টারে এই প্রতিবেদন লিখেছেন আহমেদ বিন কাদের অনি । খুব গুছিয়ে ছোট করে লেখার জন্য আমি অনির লেখা এখানে ছাপিয়ে দিলাম । ছবিগুলোও স্টার থেকে নেওয়া। আমার স্থির বিশ্বাস এই ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্পে বাংলাদেশ ভাল করবে । আমেরিকাতে বসবাসরত আমার জুনিয়র বন্ধু নিজেই সেমি কন্ডাক্টর তৈরির কারখানা দিয়েছে । ও সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিঙে পি এইচ ডি । ৩০ বছরের চাকুরির প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা নিয়ে একাই মাঠে নেমেছে । ও সফল ।
তাইওয়ান দেশটির টেক ইন্ডাস্ট্রি আইসিটি (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি) পণ্য উৎপাদনের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নির্মাতাদের মধ্যে অন্যতম। গত ৩ দশকে তাইওয়ান হার্ডওয়্যার সফ্টওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে একটি শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলেছে। বেশ অনেককাল ধরেই তাইওয়ানের উৎপাদন অর্থনীতি এর আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির ওপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল। বিশ্বব্যাপী মহামারি সংকটের সময় দূরবর্তী যোগাযোগ ব্যবস্থার সরঞ্জামের চাহিদার কারণে তাইওয়ানের আইসিটি-প্রধান অর্থনীতি আরও উপকৃত হয়েছে।
আমরা যদি আমাদের নিত্য ব্যবহৃত আইসিটি সংশ্লিষ্ট পন্যগুলোর দিকে লক্ষ্য করি, দেখা যাবে কোনো না কোনো পণ্য তাইওয়ানের তৈরি। আমাদের অতি পরিচিত এমন কিছু ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে—আসুস, এসার, এইচটিসি, ডি-লিংক, মিডিয়াটেক, গিগাবাইট টেকনোলজি, রিয়্যালটেক সহ অসংখ্য ব্র্যান্ড।
বর্তমানে সেমি-কন্ডাকটর, সফটওয়্যার, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স শিল্পে বিশ্বে অন্যতম স্থান অধিকার করে আছে তাইওয়ান। তাইওয়ানের বর্তমান অবস্থানের পেছনে রয়েছে তাদের টেক সংশ্লিষ্ট পরিণত ইকোসিস্টেম, যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাইওয়ান সরকারের প্রতিভাবান জনবল এবং বাইরের বিনিয়োগকারীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়।
প্রতিবছর তাইওয়ানে তৈরি সবচেয়ে সেরা পণ্যগুলো চিহ্নিত করে দেশটিতে উদযাপন করা হয় 'তাইওয়ান এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড'। ইন্ডাস্ট্রির লোকেরা এই অ্যাওয়ার্ডকে 'তাইওয়ানের অস্কার' বলেও অভিহিত করেন। এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় তাইওয়ানের তৈরি পণ্যগুলোর সর্বোচ্চ গুণমান এবং নকশাকে উৎসাহিত করতে।
থমসন রয়টার্স করপোরেশনের তালিকায় 'তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি (টিএসএমসি)' বিশ্বের শীর্ষ ১০টি নেতৃস্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানির মধ্যে স্থান পেয়েছে। তাদের তৈরি 'ফক্সকন' বিশ্বের বৃহত্তম মাল্টিন্যাশনাল ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনকারী কোম্পানি, যা অ্যাপল এবং গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানের জন্য চিপ তৈরি করে। এখানে রয়েছে, বিশ্বের বৃহত্তম নোটবুক কম্পিউটার নির্মাতা কোয়ান্টা কম্পিউটার। রয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সহযোগী রোবট অর্থাৎ 'কোবটস' উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং 'টেকমেন রোবট'সহ আরও অসংখ্য নামকরা প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আইসিটি এক্সপো, 'কম্পিউটেক্স'ও অনুষ্ঠিত হয় তাইওয়ানে।জেনে নেওয়া যাক তাইওয়ানের টেক ইন্ডাস্ট্রির বিভিন্ন খাত সম্পর্কে:
সেমি-কন্ডাকটর
সেমি-কন্ডাক্টর উৎপাদনের জন্য তাইওয়ান বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। তাদের তৈরি সেমিকন্ডাক্টর চিপগুলো অটোমোবাইল, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সামরিক এবং অন্যান্য উচ্চ প্রযুক্তি পণ্যগুলিতেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
মাত্র ২ কোটি ৩ লাখ জনসংখ্যার এই দেশটি বিশ্বের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (আইসি) তৈরি করে। এখানে রয়েছে 'তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি', যা বিশ্বের বৃহত্তম চুক্তিভিত্তিক চিপমেকার৷ ২০২০ সালে এই কোম্পানি বিশ্বব্যাপী একাই ৫০ শতাংশ সেমিকন্ডাকটর বিক্রি করে। ২০১৮ সালে তাইওয়ানের আইসি শিল্পের উৎপাদনমূল্য ৮২ বিলিয়ন ইউএস ডলার পর্যন্ত ছুঁয়েছিল।
সফটওয়্যার
২০১৭ সালে তাইওয়ান তার অর্থনীতি 'দক্ষতা-চালিত' থেকে 'উদ্ভাবন-চালিত' পর্যায়ে স্থানান্তর করার উদ্যোগ নেয়, যা তাইওয়ানের সফ্টওয়্যার শিল্পের বিকাশকে আরও সামনে এগুতে সহায়তা করে। তাছাড়া ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তাইওয়ানের সাইবারসিকিউরিটি পরিবেশের উন্নতির জন্য প্রতি বছর ৪৬ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার বাজেট প্রণয়ন করা হয়।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
তাইওয়ানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যাপকভাবে ইন্টেলিজেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং, ই-কমার্স এবং ভার্চুয়াল রিয়ালিটিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে তা একটি বিশেষ শিল্পে পরিণত হয়েছে। এছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংশ্লিষ্ট মেধাবীদের প্রশিক্ষণের জন্য তাইওয়ান সরকারের রয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি। ২০১৮ সালে তাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে 'পার্ভেসিভ এআই রিসার্চ' চালু করা হয়েছিল, যা মানুষের জীবন, কাজ এবং অবসরে সবচেয়ে মানবিক উপায়ে এআই প্রযুক্তিকে যুক্ত করার চেষ্টা করে।
গুগল তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংশ্লিষ্ট প্রতিভাধরদের বিকাশের জন্য 'ইন্টেলিজেন্ট তাইওয়ান' প্রোগ্রাম চালু করে। অন্যদিকেন মাইক্রোসফটও তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবসা বাড়ানোর জন্য তাইওয়ানকে বেছে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
পরিশেষে
কয়েক বছর আগে চীনকে তাইওয়ানের আইসিটি ফার্মগুলোর একটি সম্ভাব্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে মূল উপাদান আমদানিতে বাইরের দেশের উপর নির্ভরতা হ্রাস করার ব্যাপারে চীনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ২০২১ সালের জুলাই মাসে চীনের একটি রাষ্ট্র-সমর্থিত সেমিকন্ডাক্টর প্রস্তুতকারক সংস্থা সিংহুয়া ইউনিগ্রুপ দেউলিয়া হয়ে পড়ে। চীনা চিপ ইন্ডাস্ট্রি বিশ্বব্যাপী মোট সেমিকন্ডাক্টর বিক্রয়ের মাত্র ৭ দশমিক ৬ শতাংশ অর্জন করতে পেরেছে। কারণ উৎপাদনের জন্য দেশটির সরঞ্জাম ও উপকরণ এখনও পুরানো প্রযুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারও উৎপাদনের ক্ষেত্রে মূল উপাদান বিদেশ থেকে আমদানি কমিয়ে দেশের মধ্যেই সেগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য জোর দিচ্ছে। তা সত্ত্বেও শ্রমের উচ্চ মূল্য এবং সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে যোগ্য কর্মীর অভাব তাইওয়ানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরতা কমিয়ে আনার বিষয়টিকে কঠিন করে তুলেছে।
সব মিলিয়ে তাইওয়ানের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের নির্ভরতা আরও বাড়াতে পারে।
তথ্যসূত্র: মিডিয়াম, বিবিসি, তাইওয়ান ইনসাইট
০৭ ই আগস্ট, ২০২২ ভোর ৪:৩৫
শাহ আজিজ বলেছেন: আপনি কোন প্রসঙ্গে এই কথা তুললেন বুঝতে পারিনি , প্লিজ।
২| ০৬ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:৪২
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
ঢাকার চেয়ে মানুষ কম,কোয়ালিটিতে বিশ্বসেরা। মনে হয়,চীনের হাত কাঁপবে তাইওয়ানকে এট্যাক করতে।
০৭ ই আগস্ট, ২০২২ ভোর ৪:৩৭
শাহ আজিজ বলেছেন: তাইওয়ানে মার্কিনীদের প্রচুর বিনিয়োগ আছে । সেদিক ভেবেই এগুতে হবে চীনকে ।
৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:৩০
খাঁজা বাবা বলেছেন: আমরা যা উৎপাদন করি তার উপর কেউ নির্ভরশীল নয়।
০৭ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৫:০৪
শাহ আজিজ বলেছেন: পোশাক শিল্প আর মানবসম্পদ ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:৩৭
মৌফড়িং বলেছেন: যুদ্ধ লগলে এগুলো কেউ বিবেচনা করে না ৷ কি থেকে কি হবে সেসব মনে রাখে না।