![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এদিক নেপথ্যে ট্রাম্প মাস্ককে “অস্থির প্রকৃতির” বলে মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার তিনি তার টিমকে জানান, এবার প্রকাশ্যে আসার বা “গ্লাভস খোলার” সময় হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার যখন হোয়াইট হাউসে শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন — তখনও বোঝা যায়নি যে তিনি অচিরেই তাঁর মিত্র ইলন মাস্কের সঙ্গে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়বেন। অথচ বিলিয়নিয়ার মাস্কই ছিলেন এমন এক ধনকুবের—যিনি ট্রাম্পকে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী করতে সাহায্য করেছেন।
হোয়াইট হাউসের দুই কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, ওই বৈঠকে ট্রাম্প মাস্কের সমালোচনায় বিরক্তি প্রকাশ করলেও নিজেকে সংযত রাখেন। কারণ তিনি ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনকে সামনে রেখে মাস্কের রাজনৈতিক ও আর্থিক সমর্থন ধরে রাখতে চাইছিলেন।
কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ ট্রাম্পের মেজাজ একেবারে পাল্টে যায়। মাস্কের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'এক্স'-এ প্রকাশিত এক "অত্যন্ত অশালীন ও অসংলগ্ন" বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হন ট্রাম্প, যেটিকে ট্রাম্পের একজন হোয়াইট হাউস সহকারী "সম্পূর্ণ পাগলামি" বলে অভিহিত করেন।
শুক্রবার হোয়াইট হাউস জানায়, ট্রাম্প মাস্কের সঙ্গে আর কোনও কথা বলতে চান না, এবং সেদিন তাদের মধ্যে কোনো ফোনালাপও হবে না।
মাস্ক ট্রাম্পের ট্যাক্স ও ব্যয়বহুল বাজেট বিলকে "আর্থিকভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন" ও "ঘৃণাজনক বিকৃতি" বলে আক্রমণ করেন এবং ঘোষণা দেন, যেসব রিপাবলিকান এই বিলকে সমর্থন করবেন, তিনি তাঁদের বিরুদ্ধে প্রচার চালাবেন।
মার্কিন কংগ্রেসের বাজেট অফিস জানিয়েছে, এই বিল প্রায় ২.৪ ট্রিলিয়ন ডলার যুক্তরাষ্ট্রের মোট জাতীয় ঋণে যুক্ত করবে, যা ইতিমধ্যেই ৩৬.২ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে গেছে।
এদিক নেপথ্যে ট্রাম্প মাস্ককে "অস্থির প্রকৃতির" বলে মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার তিনি তার টিমকে জানান, এবার প্রকাশ্যে আসার বা "গ্লাভস খোলার" সময় হয়েছে।
এদিন হোয়াইট হাউসে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেৎর্সের সঙ্গে ট্রাম্প বৈঠক করেছেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তিনি মাস্কের আচরণে "খুবই হতাশ।" মাস্ক এর সঙ্গেসঙ্গে সামাজিক মাধ্যমে ওই পাল্টা জবাব দেন এবং তাদের দ্বন্দ্ব দ্রুতই তীব্র হতে থাকে।
ট্রাম্প তার নিজের প্ল্যাটফর্ম 'ট্রুথ সোশ্যাল'-এ লেখেন, "আমাদের বাজেট থেকে হাজার হাজার কোটি ডলার সাশ্রয়ের সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে— ইলনের সরকারি ভর্তুকি ও চুক্তি বাতিল করা।" এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই মাস্ক এক্স-এ লেখেন, নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের সময় এসেছে, এবং তিনি ডানপন্থী অ্যাক্টিভিস্ট ইয়ান মাইলস চিওং-এর ট্রাম্পকে অভিশংসনের আহ্বানের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন।
বন্ধুত্বের উচ্চতা থেকে তিক্ততার খাদে
হোয়াইট হাউসে মাস্কের প্রবেশাধিকার ও প্রভাব ছিল নজিরবিহীন। তিনি ট্রাম্পের প্রশাসনে নীতিনির্ধারণে ভূমিকা রাখতেন, 'ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি' নামে নিজের মতো করে সরকারি ব্যয় কমানোর কাজ চালাতেন, এবং সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্পের বিভিন্ন রাজনৈতিক এজেন্ডাকে জোরদার করতেন।
মাত্র এক সপ্তাহ আগেই ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে মাস্কের বিদায় অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, "ইলন আসলে বিদায় নিচ্ছেন না।" অথচ এক সপ্তাহের মাথায় তিনি পরিণত হলেন মাস্কের এক নম্বর সমালোচকে।
বৃহস্পতিবার মাস্ক-ট্রাম্প দ্বন্দ্বের পর মাস্কের কোম্পানি টেসলার শেয়ারমূল্য ১৪ শতাংশ কমে যায়। এই ঘটনা কংগ্রেসে ট্রাম্পের বাজেট পাস প্রক্রিয়া ও তাঁর সমর্থকদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করে। তবে শুক্রবার কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়।
এই ভাঙন উভয় পক্ষের ভবিষ্যৎ প্রভাবিত করতে পারে। ট্রাম্পের জন্য মাস্কের সমর্থন হারানো মানে প্রযুক্তি উদ্যোক্তা, তরুণ ভোটার এবং সোশ্যাল মিডিয়া অনুসারীদের কাছে পৌঁছাতে সমস্যায় পড়া, যা আগামী নির্বাচনে অর্থ সংগ্রহেও বাধা হতে পারে।
মাস্কের জন্য ঝুঁকি আরও বড়—সরকারি চুক্তি হারানোর পাশাপাশি ব্যবসা নিয়ে তদন্ত বা নিয়ন্ত্রক চাপের মুখে পড়তে পারেন তিনি।
একজন হোয়াইট হাউস কর্মকর্তা জানান, এই সম্পর্ক ভাঙনের সূচনা হয়েছিল জ্যারেড আইজাকম্যানকে নাসার প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ না দেওয়া নিয়ে।
তিনি মাস্কের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং বেসরকারি মহাকাশ প্রকল্পে অগ্রগামী। ট্রাম্প এই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর আইজাকম্যান এক্স-এ লেখেন, "আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও সিনেটের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।"
হোয়াইট হাউসের ভেতরে এটিকে মাস্কের জন্য একটি রাজনৈতিক চপেটাঘাত হিসেবে দেখা হয় এবং এতে তার প্রভাব কমে যাওয়ার ইঙ্গিত ছিল।
এই ঘটনার আগে থেকেই হোয়াইট হাউস মাস্কের ক্ষমতা সীমিত করতে শুরু করেছিল—তাঁর কর্মী নিয়োগ ও বাজেট সংক্রান্ত প্রভাব বন্ধ করা হয়। মার্চে ট্রাম্প মন্ত্রিসভাকে জানান, বিভাগীয় সচিবরাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন, মাস্ক নয়।
মাস্ক তখনই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, হয়তো সরকারে তাঁর ভূমিকা শেষের পথে। তিনি বাজেট কাটছাঁট নিয়ে হতাশা প্রকাশ করতেন এবং পরে তার কণ্ঠ আরও চড়া হতে থাকে।
তবে একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, "আমরা আত্মবিশ্বাসী। মাস্কের মন্তব্যের কারণে কেউ মত পাল্টায়নি।" তবুও হোয়াইট হাউসে কর্মচারীদের মধ্যে এটাই বিস্ময়কর ছিল যে, মাত্র এক সপ্তাহ আগে যার সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক উদযাপন করা হচ্ছিল, তিনিই কিনা এখন ট্রাম্পের প্রধানতম সমালোচকে পরিণত হয়েছেন।
আর ট্রাম্প-মাস্কের এই সম্পর্ক আবার জোড়া লাগবে কি না—তা হয়তো সময়ই বলে দেবে।
২| ০৭ ই জুন, ২০২৫ রাত ৯:৫৯
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: সম্পর্কের ভাঙ্গা-গড়া অতি সাধারণ বিষয়।
৩| ০৭ ই জুন, ২০২৫ রাত ১০:০৯
ফেনিক্স বলেছেন:
ইলান যেদিন DOGE যোগদান করে, কয়েক'শ সরকারী কর্মচারীর চাকুরী খেয়েছিলো, সেদিন আমি পোষ্ট দিয়েছিলাম যে, ট্রাম্প অল্প সময়ের মাঝে ইলানকে লাথি মারবে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই জুন, ২০২৫ রাত ৯:৩৮
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ইলন মাস্ক নতুন রাজনৈতিক দল করেছেন। বাংলাদেশের মতো অবস্থা।