![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাত পোহালেই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ। এ লক্ষ্যে সমাবেশস্থলের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে দলটি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এখন জনসমুদ্রের অপেক্ষায়। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে দলে দলে আসতে শুরু করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। মাঠের চারপাশে টানানো হয়েছে ব্যানার–ফেস্টুন, মঞ্চের সামনে সাজানো সারি সারি চেয়ার, টয়লেট, পানির কল, জায়ান্ট স্ক্রিন—সবই প্রস্তুত।দলটির আশা, শনিবারের জাতীয় সমাবেশে অন্তত ১০ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে। আর এ সমাবেশকে কেন্দ্র করেই ‘ইতিহাস রচনার’ প্রত্যয় ঘোষণা করেছে জামায়াত।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।সরেজমিনে দেখা গেছে, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিকে ঘিরে সমাবেশস্থলে পুরো বিকেল ছিল কর্মব্যস্ততায় মুখর। দীর্ঘদিন পর রাজধানীতে এমন রাজনৈতিক সমাবেশের আয়োজনকে ঘিরে দলটির নেতাকর্মী, স্বেচ্ছাসেবক এবং প্রশাসনিক সমন্বয়কারীদের মধ্যে চোখে পড়ার মতো তৎপরতা দেখা গেছে। ভ্যাপসা গরমের মধ্যে কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক বালু ছিটানো, চেয়ার বসানো, টয়লেট ও পানির কল স্থাপন, জায়ান্ট স্ক্রিনের তার সংযোগসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠজুড়ে পানি অপসারণের জন্য ফেলা হয়েছে বালু ও কংক্রিট, ছিটানো হয়েছে ব্লিচিং পাউডার।জানতে চাইলে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমরা আশা করছি আজ সন্ধ্যার মধ্যেই মাঠের প্রস্তুতি চূড়ান্তভাবে শেষ করতে পেরেছি, আলহামদুলিল্লাহ। প্রায় এক মাস ধরেই আমরা মনিটরিং করছি। আবহাওয়া কিছুটা দুর্যোগপূর্ণ হওয়ায় মাঝে মধ্যেই পানি নিষ্কাশন, ইট ফেলা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রচুর শ্রম দিতে হয়েছে।
তৈরি করা হয়েছে ৫ শতাধিক অস্থায়ী টয়লেট
দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সমাবেশে অংশ নিতে ঢাকা ও এর বাইরের জেলা থেকে কয়েক লাখ মানুষ আসবেন। তাই সমাবেশস্থল ও আশপাশের এলাকাজুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। উদ্যানের বিভিন্ন প্রান্তে বসানো হয়েছে ৫০০ এর বেশি অস্থায়ী টয়লেট এবং অজুর জন্য এক হাজার পানির কল।
প্রস্তুতি প্রসঙ্গে শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া হলেও যেন সমাবেশে অংশগ্রহণকারী মানুষের কষ্ট না হয়, সে জন্য আমাদের কর্মীরা আগে থেকেই সব ব্যবস্থা নিচ্ছে। নিরাপত্তা, সেবাপ্রদান ও শৃঙ্খলার বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক।
জামায়াত নেতারা জানিয়েছেন, মঞ্চের দুই পাশে থাকছে দুটি বড় জায়ান্ট স্ক্রিন এবং সমাবেশের আশেপাশে গুরুত্বপূর্ণ ৫০টিরও বেশি পয়েন্টে বসানো হয়েছে এলইডি স্ক্রিন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাজুড়ে ৪০০টির বেশি মাইক বসানো হয়েছে। অতিথি ও নেতাদের বসার জন্য মঞ্চের সামনের দুই পাশে রাখা হয়েছে ৬০০ চেয়ার।নিরাপত্তা ও মনিটরিং
মাঠের ভেতরে ও বাইরে আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে স্থাপন করা হয়েছে একাধিক মনিটরিং সেল। দলে ৬ হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবক আটটি বিভাগের আওতায় কাজ করবেন বলে জানানো হয়েছে। যাতায়াত ব্যবস্থাপনায় ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছে জামায়াত নেতারা। ঢাকার বাইরের বাসগুলোর ড্রপিং পয়েন্ট নিয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশনা তৈরি হয়েছে।
দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আল্লাহর ওপর ভরসা করেই আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান শেষ করতে চাই। রাজধানীবাসীর কাছে আগাম দুঃখপ্রকাশ করছি, যানজট হলে কষ্ট হবে—কিন্তু আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি যেন ভোগান্তি কম হয়। গতকালও সংবাদ সম্মেলনে আমরা ক্ষমা চেয়েছি, আজও সেই অনুরোধ করছি।সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে দলটির নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আল-হামদুলিল্লাহ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। আপনারা সংবাদকর্মীরা আমাদের খবর দেশ-বিদেশে পৌঁছে দিচ্ছেন, এজন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমরা চাই, সাংবাদিকরাও যেন এই ঐতিহাসিক আয়োজনে সহযোগিতা করে চলেন।
এর আগে বিকেলে জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়ন পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন— সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ডা. হামিদুর রহমান আযাদ, অ্যাডভোকেট মোয়াযযম হোসাইন হেলাল, ডা. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, মো. সেলিম উদ্দিন, নূরুল ইসলাম বুলবুল, ডা. ফখরুদ্দিন মানিকসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা।
জানানো হয়েছে, সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি এই সমাবেশে একটি ‘ঐক্যের ডাক’ দেবেন এবং কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাবেন।
প্রসঙ্গত, সমাবেশ সফল করার জন্য মাঠজুড়ে চলে টানা এক মাসের প্রস্তুতি। যানজট ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া নিয়েও দলটির নেতারা সতর্ক। সবার দোয়া ও সহযোগিতা কামনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে উদ্যান পরিদর্শন। এখন শুধু অপেক্ষা— জাতীয় সমাবেশের দিনভোর ইতিহাস রচনার।
টিআই/এমএন
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:৩৩
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সরকারি দল বলে কথা ।