নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মেট্রোরেল

১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৭




ঢাকার মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-১ নির্মাণের একটি প্যাকেজে জাপানের বাইরে ঠিকাদার থাকবে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, প্রকল্পের একটি অংশের (প্যাকেজ-৮) দরপত্রে অংশ নেওয়া চীনা ঠিকাদারকে অযৌক্তিক শর্ত দিয়ে বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এতে প্রতিযোগিতা সীমিত হয়ে ব্যয় বেড়ে যেতে পারে।

ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্ব ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল)। নতুন করে আরও দুটি মেট্রো রেললাইন নির্মাণের দরপত্র প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে—এমআরটি লাইন-১, যা কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর এবং কুড়িল থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত। অন্যটি এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট), যা সাভারের হেমায়েতপুর থেকে গাবতলী, মিরপুর ও গুলশান হয়ে ভাটারায় যাবে।

এই দুটি প্রকল্পের দরপত্রপ্রক্রিয়া চলাকালে ডিএমটিসএল মূল্যায়ন করে দেখেছে, শুরুতে তারা যে প্রাক্কলন করেছিল, ঠিকাদার নিয়োগের পর তা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে। এই দুটি প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকা।ডিএমটিসিএল সূত্র বলছে, এমআরটি লাইন-১-এর কাজ ১২টি ভাগে (প্যাকেজে) বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে আটটি প্যাকেজে ঠিকাদার বাছাইয়ে প্রাক্‌যোগ্যতা যাচাই করা হয়। সব কটিতেই ঘুরেফিরে জাপানের ছয়টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। একটি প্যাকেজে জাপানি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি চীন-বাংলাদেশ এবং ভারত-জাপানের যৌথ উদ্যোগের ঠিকাদার অংশ নেয়, যা প্যাকেজ-৮ নামে অভিহিত। এই প্যাকেজটিতেই ঠিকাদার নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ বলেন, তাঁরা প্যাকেজ-৮ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন। তবে কারও প্রতি অন্যায় করা হবে না।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্যাকেজ-৮-এর প্রাক্‌যোগ্যতা যাচাইয়ে জাপানের ছয়টি, চীন ও ভারতের একটি করে ঠিকাদার যোগ্য হয়। এ থেকে চূড়ান্ত দরপত্র দাখিল করে জাপানের কাজিমা করপোরেশন ও তাইসি করপোরেশন। এর মধ্যে কাজিমার সহযোগী বাংলাদেশের স্পেক্ট্রা কনস্ট্রাকশন। তাইসির সহযোগী দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং। চূড়ান্ত দরপত্র জমা দেওয়া অন্য ঠিকাদার হচ্ছে চীনের চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি)। তাদের সহযোগী বাংলাদেশের আবদুল মোনেম ও চীনের চায়না রেলওয়ে ব্রিজ কনস্ট্রাকশন ব্যুরো।
ডিএমটিসিএল সূত্র বলছে, গত এপ্রিলে তিন ঠিকাদার একসঙ্গে কারিগরি ও আর্থিক দরপ্রস্তাব জমা দেয়। এখন কারিগরি মূল্যায়ন চলছে। এরপর তিন প্রতিষ্ঠানের দরপ্রস্তাব খোলা হবে। সর্বনিম্ন দরদাতা কাজ পাওয়ার কথা।

অভিযোগ উঠেছে, আর্থিক প্রস্তাব খোলার আগেই চীনা ঠিকাদারকে কারিগরিভাবে অযোগ্য ঘোষণার চেষ্টা চলছে। যাতে আর্থিক প্রস্তাব জাপানি দুই ঠিকাদারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। এতে নির্মাণকাজের ব্যয় অনেক বেড়ে যেতে পারে। কারণ, ইতিমধ্যে এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের ১২টির মধ্যে মূল কাজের চারটি প্যাকেজের ঠিকাদার নিয়োগপ্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে। এতে দেখা গেছে, সব কটিতেই জাপানের দুই বা তিনটি ঠিকাদার দরপ্রস্তাব করেছে। আর তাদের প্রস্তাব করা দর প্রাক্কলনের চেয়ে ১২৫ শতাংশ বা ১৯ হাজার কোটি টাকা বেশি। জাপানের ঋণচুক্তি, চুক্তির শর্ত ও ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাড়তি ব্যয় দেখতে পেয়ে ঠিকাদার নিয়োগপ্রক্রিয়া আটকে রেখেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএমটিসিএলের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, একমাত্র প্যাকেজ-৮-এর দরপত্রে চীনের ঠিকাদার অংশ নিয়েছে। জাপানের সঙ্গে চীনের কোম্পানির দর পাওয়া গেলে বোঝা যেত আসলেই জাপানি ঠিকাদার বাড়তি ব্যয় প্রস্তাব করছে কি না। দরপত্র দলিল তৈরি ও মূল্যায়নে মূল ভূমিকায় জাপানি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিপ্পন কোই।সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঋণের শর্তের কারণে জাপানি ঠিকাদার ও পরামর্শকেরা প্রতিযোগিতায় এগিয়ে। এর বাইরে দরপত্র দলিলে কাজের এমন পদ্ধতি ও প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা জাপানি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যদের পূরণ করা প্রায় অসম্ভব। যেমন টানেল বা পাতালপথ নির্মাণ ‘ওয়ান পাস জয়েন্ট’ পদ্ধতিতে করতে হবে বলে এমআরটি-১ প্রকল্পের দরপত্র দলিলে উল্লেখ করা হয়েছে, যা জাপানি ঠিকাদারের জন্য সুবিধাজনক।

এমআরটি লাইন-১-এর কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ এবং ১৪টি স্টেশন নির্মাণ হবে এই পাতালপথে। এ পর্যন্ত পাতালপথের সব কটি দরপত্রে শুধু জাপানি ঠিকাদারই অংশ নিয়েছে। কুড়িল থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত সোয়া ১১ কিলোমিটার পথ ও সাতটি স্টেশন নির্মাণ হবে উড়ালপথে। এই কাজ দুটি প্যাকেজের আওতায় বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে প্যাকেজ-৮-এর ঠিকাদার নিয়োগপ্রক্রিয়া চলছে। অন্যটি এখনো শুরু হয়নি।

প্যাকেজ-৮-এর আওতায় পূর্বাচলের বালু নদী থেকে পিতলগঞ্জ ডিপো পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার উড়ালপথ ও চারটি স্টেশন নির্মাণ করার কথা। এ ছাড়া বালু নদীর ওপর একটি স্টিলের সেতু নির্মাণ হবে, যার দৈর্ঘ্য ১৭২ মিটার।

ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা গেছে, এই প্যাকেজের দরপত্রে শর্ত দেওয়া হয়েছে—বালু নদীর সেতুটি নির্মাণে অবশ্যই বিশেষ ধরনের জাপানি স্টিল ব্যবহার করতে হবে, যা জাপানের তিনটি কোম্পানি উৎপাদন করে। অন্য দেশের একই মানের স্টিল ব্যবহার করতে হলে ঠিকাদারকে অবশ্যই জাপানি রোড অ্যাসোসিয়েশন থেকে অনুমোদন নিতে হবে।সূত্র আরও জানায়, এ ধরনের স্টিল নির্মাণকারী অন্যতম প্রতিষ্ঠান জাপানের কোবে স্টিল মিল। তাদের সরবরাহকারী জাপানি শিনচো করপোরেশনের সনদ জমা দেয় চীনা ঠিকাদার সিসিইসিসি। কিন্তু দরপত্র কারিগরি মূল্যায়নের সময় নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কোবে স্টিলের সনদ আনতে সিসিইসিসিকে শর্ত দেওয়া হয়। অথচ দরপত্র দলিলে শুধু সরবরাহকারীর সনদ থাকলেই চলবে বলে উল্লেখ করা হয়।

ডিএমটিসিএলের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, স্টিলের সেতুটি প্যাকেজ-৮-এর কাজের মাত্র ১০ শতাংশ। এ ছাড়া এটি কোনো জটিল কাজও নয়। মাঝপথে দরপত্র দলিলের বাইরে বাড়তি শর্তারোপের পেছনে জাপানি কোম্পানি ছাড়া অন্যদের কাজ না দেওয়ার চিন্তা থাকতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে গত ৩১ জুলাই প্রকল্প পরিচালক, ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), সড়ক বিভাগের সচিবসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছে চীনা কোম্পানি সিসিইসিসি।

এমআরটি লাইন-১-এর প্রকল্প পরিচালক আবুল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি চীনা কোম্পানির অভিযোগ পেয়ে সরকারের সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট ইউনিটের (সিপিটিউ) মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। কারও প্রতি অবিচার করা হবে না। প্রতিযোগিতা ঠিক রাখার চেষ্টা করা হবে।ঢাকায় ছয়টি মেট্রোরেলের লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। এর মধ্যে ঢাকার প্রথম মেট্রোলাইন-৬-এর উত্তরা থেকে মতিঝিল অংশ চালু হয়েছে। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশের কাজ চলছে। এই মেট্রোরেল লাইন নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারে দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে উড়ালপথে এই ধরনের মেট্রোরেল নির্মাণে প্রতি কিলোমিটার ব্যয় হয়েছে ১৫০ কোটি টাকার মতো। ওই দেশে পাতালপথে প্রতি কিলোমিটার ব্যয় সর্বোচ্চ সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা। এশিয়ার অন্যান্য দেশেও মেট্রোরেল নির্মাণ ব্যয় বাংলাদেশের চেয়ে কম।

ঢাকার পরবর্তী দুটি মেট্রোরেল লাইন-১ ও লাইন-৫ (উত্তরপথ)-এর বিভিন্ন প্যাকেজে ঠিকাদারের দেওয়া দর পাওয়ার পর সম্ভাব্য ব্যয় নিয়ে বিশ্লেষণ করে ডিএমটিসিএল। এতে দেখা যায়, পরবর্তী দুটি লাইন নির্মাণে কিলোমিটার প্রতি মোট ব্যয় তিন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ঋণের শর্ত শিথিল, ব্যয় কমানোর বিষয়ে জাইকার সঙ্গে দর-কষাকষি করছে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ বিকাল ৫:১৬

প্রামানিক বলেছেন: মোট কত কিলোমিটার মেট্রোরেল হবে ভাই।

১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৮

শাহ আজিজ বলেছেন: আমিও খুজলাম মাগার পাইলাম না ।





এটা হলে ঢাকাবাসীর জীবনে শান্তি নেমে আসবে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.