![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘুরে বেড়াতে ভালবাসি। সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাই, সুন্দরের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই।
ঘুরতে আমরা কে না ভালবাসি? শহুরে এই যান্ত্রিক জীবনে কাজ করতে করতে আমরা যখন ক্লান্ত, তখনই হয়তো আমাদের ইচ্ছে করে একটু সময় শুধুই নিজের জন্য ব্যায় করতে। কিছুটা সময় প্রকৃতির সান্নিধে কাটিয়ে নিজেকে আবার নতুন উদ্দামে ফিরে পেতে। এজন্য চাই সময়, সুযোগ আর সামান্য একটু পরিকল্পনা। কিন্তু অনেক সময়ই এই সময়, সুযোগ ও পরিকল্পনা নামক বিষয়গুলো একই সুতোয় গাঁথা আর হয়ে ওঠে না। এই মানুষগুলোকে ছলে, বোলে, কৌশলে প্রায় বিনা পরিশ্রমে প্রকৃতির কোল হতে এক পলক ঘুরিয়ে আনার চেষ্টা ছিল ভ্রমণ বাংলাদেশের কয়েকজন তরুণ ফটোগ্রাফারের।
ঘোরাঘুরির সঙ্গে ফটোগ্রাফির সম্পর্ক অবিছেদ্দ্য। অনেকটা মা ও সন্তানের মতো। আর তাই বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে আমরা ক্যামেরাবন্দি করেছি এদেশের অপরুপ সৌন্দর্যকে। ঘুরতে ঘুরতে কখনো মনে হয়েছে আমরা বুঝি চলে এসেছি স্বর্গের খুব কাছে। একটু এগুলেই হয়তো দেখা মিলবে স্বর্গের! এইতো মাত্র ক’দিন আগেই আমাদেরই দুই বন্ধু স্বর্গের দেখা পেয়েই হয়তো আর ফিরে এলো না আমাদের মাঝে। তারা আজ ঘুমিয়ে আছে থাঞ্ছির কোন এক পাহাড়ের কোলে সবুজের চাদর গায়ে জড়িয়ে। মুগ্ধ ও সুজন। তাদেরকে উৎসর্গ করেই আমাদের এই প্রদর্শনী।
সব আয়োজন সম্পন্ন করে বেশ ঘটা করেই শুরু হয়ে গেল আমাদের তিন দিন ব্যাপী প্রদর্শনীটি। দেশের স্বনামধন্য আলোকচিত্র শিল্পী নাসির আলী মামুন এটি উদ্বোধন করলেন যথা সময়ে। দিনটি ছিল পহেলা ফাল্গুন। চারদিকে বেশ উৎসব উৎসব ভাব। বসন্তের প্রথম দিনটিকে বরন করে নিতে যেন নিজেদের নানা রঙে সাজিয়েছে এদেশের মানুষ। দুপুর নাগাদ শাহ্বাগের চারুকলা ইনস্টিটিউটের বিপরীতে অবস্থিত ছবির হাট যেন ভরে গেল জনসমুদ্রে। প্রদর্শনীতে স্থান প্রাপ্ত মাত্র ৩৪ টি ছবিকে ঘিরে সকলের আগ্রহ দেখে আমরা মুগ্ধ। অনেকেই বিভিন্ন ছবি নিয়ে প্রশ্ন করছে। কেউ কেউ তো বিশ্বাসই করতে চাইছে না যে বাংলাদেশ এতো সুন্দর হতে পারে। অনেকেই আবার ফটোগ্রাফারদের সাথে কথা বলতে চাইছে। দু’তিন জন তো মাসুদ ভাইয়ের তোলা ‘হাইওয়ে টু হেভেন’ ছবিটি দেখে অটোগ্রাফও চেয়ে বসলেন! আমরা দূর থেকে ঈর্ষার দৃষ্টিতে চেয়ে রইলাম মাসুদ ভাইয়ের দিকে! দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতেই ভিড় এতো বেড়ে গেল যে, আমাদের দশ-বার জন ভোলানটিয়ার তা সামলাতে হিমশিম খেয়ে গেলেন। আজ সন্ধ্যার পর পরই আমরা সেদিনের মতো প্রদর্শনী বন্ধ করে দিলাম।
আজ ১৪ই ফেব্রুয়ারী। আমাদের প্রদর্শনীর দ্বিতীয় দিন এবং বিশ্ব ভালবাসা দিবস। ঠিক সকাল ১০ টায় আমাদের আয়োজন চালু হয়ে গেল। আজকে মানুষের পোশাক-আশাক অবশ্য গত দিনের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তবে একতা বিষয় অভিন্ন। সেটা হল মানুষের ভিড় ও আগ্রহ। আমার ধারনা ছিল আজ মানুষের ভিড় তেমন একটা হবে না। ভালবাসা দিবসে সবাই ব্যাস্ত থাকবে শুধুমাত্র ভালবাসার মানুষটিকে নিয়ে। কিন্তু আমার এই ধারনাটি যে সম্পূর্ণ ভুল তার প্রমান পেলাম কিছুক্ষণের মধ্যেই। আজ হতে ঠিক এক মাস আগে আমরা যে বন্ধু দুজনকে হারালাম তাদের স্মরণে এই প্রদর্শনীর আয়োজন ছিল বলে এটির নাম ছিল ‘বন্ধুর জন্য ভালবাসা’। প্রয়াত বন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা, ভালবাসা জানাতে আজ উপস্থিত হয়েছিলেন দেশের বিভিন্ন ট্রাভেল ক্লাবগুলোর অসংখ্য সদস্য। তাদের পদ চারনায় ছবির হাট যেন পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল এক অকৃত্রিম ভালবাসার মূর্ছনায়। রাত ৮ টা পর্যন্ত প্রদর্শনী চলার কথা থাকলেও দর্শকদের আগ্রহের কারণে তা ১০ টা পর্যন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। কিন্তু ১০,৩০ মিনিটের পরও যখন দর্শক যাচ্ছিলোনা তখন বাধ্য হয়েই আমরা লাইটগুলো নিভিয়ে দিলাম। কিন্তু কি আশ্চর্য! মানুষ মোবাইলের টর্চ লাইট দিয়েও প্রদর্শনীটি জীবন্ত করে রাখল প্রায় ১১ টা পর্যন্ত।
আজ রাতে আমরা সবাই মিলে তাঁবু গেঁড়ে থাকবো। ঢাকার ব্যাস্ত শাহবাগে তাঁবুতে থাকার কথা এই যুগে হয়তো এখন আর কেউ কল্পনাও করে না।
১৫ ই ফেব্রুয়ারী। আজ প্রদর্শনীর শেষ দিন। যথা সময়ে প্রদর্শনী শুরু হয়ে গেল সেদিনও। আজ অবশ্য তেমন ভির নেই। তবে দর্শনার্থী নেহায়েত কমও নয়। আমরা সবাই মোটামুটি অলস সময় কাটাচ্ছি। হঠাৎ একটি গার্লস স্কুলের এক ঝাক ছাত্রী তাদের তিন ম্যাডাম সহ উপস্থিত হল আমাদের প্রদর্শনীতে। কিছুটা অবাক হলাম। পরে স্কুলের ম্যাডামের সাথে কথা বলে জানলাম তারা নিজ উদ্যোগে শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে এসেছে এই প্রদর্শনী দেখতে। একটি মেয়ে এসে আমাকে বলল ‘ভাইয়া আজ বাংলাদেশকে নতুন করে চিনলাম, আপনাদের ধন্যবাদ’। একজন ফটোগ্রাফার হিসেবে এরচে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে? বিকালে ভিড় কিছুটা বাড়ল। এক সময় সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হল। প্রায় ন’টার দিকে আমরা প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করলাম। খোলা আকাশের তারাগুলোর দিকে তাকিয়ে মনে হল মুগ্ধ ও সুজন আমাদের দিকে তাকিয়ে হাসছে। মনে মনে বললাম ,’আমরা তোমাদের ভুলিনি বন্ধু, তোমরা ছিলে, আছো, রবে—আমাদের মনের এই ছোট্ট কুটিরে’।
২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১:১৬
তাহসিন মামা বলেছেন: উৎসাহিত করার জন্য ধন্যবাদ। আমি তাদের আজও ভুলিনি।
৩| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪৬
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: বন্ধুর জন্য মনের আকুতি মেশানো লিখাটা সত্যিই অসাধারণ, তাহসিন ভাই, চালিয়ে যান।
২৪ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২২
তাহসিন মামা বলেছেন: ধন্যবাদ সাদা মনের মানুষ। দোয়া করবেন।
৪| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:৫০
সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: আমরা তোমাদের ভুলিনি বন্ধু, তোমরা ছিলে, আছো, রবে — সব খানে!
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৩৮
তাহসিন মামা বলেছেন: ঠিক।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০২
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: 'আমরা তোমাদের ভুলিনি বন্ধু, তোমরা ছিলে, আছো, রবে—আমাদের মনের এই ছোট্ট কুটিরে'।
পোস্টে +++
সামুর ভুবনে স্বাগতম।
মামার কাছ থেকে ভাগ্নেরা আরও ভালো ভালো লেখা পাবে এই আশা রইল।