নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইদুল ইসলাম

শাহেদ সাইদ

এখনও বেঁচে আছি

শাহেদ সাইদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মায়ের হাত ও ম্যানেজার

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:১৮

ছেলেটি একটি ম্যানেজারিয়েল পোষ্টের জন্যে ইন্টারভিঊ দিচ্ছিল। ইন্টারভিঊ খুব ভালো হলোনা। শেষের দিকে বসের চোখ পড়লো তার ট্রান্সকিপ্টে। ভালো কলেজে লেখা পড়া, রেজাল্টও ভালো কথা বার্তায় খুব সপ্রতিভ নয়। বস ভাবলেন আর একটু ঝালিয়ে দেখা যাক।

- খুব ভাল কলেজে পড়াশুনা করেছেন, খরুচে কলেজ

- জী স্যার

- খরচ কে দিতেন, বাবা ?

- আমার বাবা নেই স্যার, মা।

- উনি কি করেন?

- উনি অন্যদের কাপড় ধুয়ে দেন আমাদের বাসায় এনে।

- হুম, আপনার মাকে কাপড় ধোয়ায় সাহায্য করেছেন কখনো? আপনার হাতটা দেখি

- মা বলেন আমার চেয়ে উনি অনেক দ্রুত কাজ করতে পারেন, তাই আমার উচিত লেখাপড়াটা ঠিক মত করা।

বস ছেলেটার হাতটি নেড়ে চেড়ে দেখলেন। কোমল হাত। তারপর বললেন আজ বাসায় গিয়ে আপনার মায়ের হাতটি একবার ধিয়ে দেবেন। কাল আবার দেখা হবে আমাদের।



ছেলেটি বাসায় ফিরে দেখলো মা জায়নামাজ থেকে উঠছেন। ছেলেকে দেখে বললেন ‘তোর মুখটা শুকনো লাগছে কেন বাবা?’

ছেলে সে কথার উত্তর না দিয়ে বললো ‘মা তোমার হাত টা একটু দেবে?’ ‘আমার এখন অনেক কাজ বলে মা বাইরে গেলেন কাপড় তুলতে। রাতের খাবারের পর ছেলে বললো ‘ মা আজ তোমার হাতটা আমি ধুইয়ে দেই!’ ছেলের জোরাজুরিতে হার মানতে হলো মাকে। তাঁর হাতটি ধরে অবাক হয়ে গেল ছেলেটি। শীর্ণ দুটি হাত, চামড়া সর্বস্ব। হাতের তালু দেখে চোখ দুটি জলে ভরে গেল তার। অসংখ্য দাগ, কাটাকুটি, চামড়া ছড়ে যাওয়া হাত। ছেলেটির মনে হলো প্রতিটি দাগ বা ক্ষত থেকে এক একটি পরীক্ষায় ভাল ফল হয়েছে তার। হাত ধোয়াবার সময় এক আধবার ব্যথায় কাতরেও ঊঠলেন মা। সেই রাতে মাকে কোন কাজ করতে দিলো না ছেলেটি। রান্না ঘর গোছানো থেকে শুরু করে সব কাজই সে করলো। অনেকদিন পর রাত জেগে মায়ের সাথে গল্প করলো। বিছানায় গিয়েও ঠিক মত ঘুম হলো না। একটু পরপর জলে ভরে যেতে লাগলো চোখ। পর দিন আবার ইন্টারভিঊ। বসের কোন প্রশ্নের ঠিক মত উত্তর দিতে পারলোনা। কান্নায় বন্ধ হয়ে আসতে থাকলো গলা। বস বললেন মায়ের হাতটি কি ধুইয়ে দিতে পেরেছিলেন? এবার আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না ছেলেটি। হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বললো, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ স্যার। আমার চাকরি হোক আর না হোক আমার মায়ের হাত ধোয়াতে গিয়ে আমি অনেক কিছু শিখেছি’। বস বললেন ম্যানেজার হতে গেলে দু’টি জিনিষ দরকার এক, যাদের জন্যে আপনার এই অবস্থান তাঁকে মনে রাখা। আর দুই যাদের আপনি ম্যানেজার তাঁদের কষ্ট অনুভব করা। আপনাকে স্বাগতম।



কৃতজ্ঞতাঃ জামাল মাহামুদ চৌধুরী যিনি ক’দিন আগে আমাকে এধরণের একটি ইংরেজি মেইল পাঠিয়েছেন।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:০৩

খেয়া ঘাট বলেছেন: খুবই চমৎকার গল্পটা।
মেইলটা পড়েছিলাম।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৫৯

শাহেদ সাইদ বলেছেন: আমি শুধু নিজের মত করে অনুবাদ করেছি

২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:২১

জাহিদ ২০১০ বলেছেন: মন ছুয়ে যাওয়া এক অসাধারন একটি গল্প।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:০১

শাহেদ সাইদ বলেছেন: মায়েরা যেমন হন। অসাধারণ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.