![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সপ্নটা অনেক বড় , কিন্তু দিনকে দিন সপ্ন গুলো ফিকে হয়ে যাচ্ছে ।
যারা নিজেকে সবসময় অসুখী মনে করেন তাদের
অনেকেই মানসিক ডাক্তার ও মনস্তত্ত্ববিদের
কাছে যান সাহায্যের জন্য৷ এই
প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন করা হয়েছিল,
কারা তাদের কাছে আসেন এবং তাদের
সমস্যা কি?
ড্যুসেলডর্ফের মনস্তত্ত্ববিদ আন্ড্রেয়াস সোলইয়ানের
কাছে এমন সব মানুষই আসেন যারা কোনো কিছু
হারানোর যন্ত্রণা ভোগ করছেন৷ ‘‘যেমন কোনো সম্পর্ক
ভেঙে গেলে, বিবাহ বিচ্ছেদ বা মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে৷’’
<>সুখের প্রাচুর্যও অসুখী করে তোলে!=
আশ্চর্যের ব্যাপার হলো সুখের প্রাচুর্যও
অনেককে অসুখী করে তোলে৷ অল্প সময়ের
মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ অনেক কিছু ঘটে গেলে মানসিক
দিক দিয়ে অনেকে তাল সামলাতে পারে না৷ ভাল
একটি কাজ পাওয়া, নতুন জীবনসঙ্গী পাওয়া,
বিয়ে হওয়া, সুলভ মূল্যে একটি বাড়ি কেনার সুযোগ
হওয়া – এসব স্বল্প সময়ের মধ্যে ঘটে গেলে বিহ্বল
হয়ে যেতে পারে মানুষ,
জেগে উঠতে পারে একটা মনমরাভাব৷
ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মনস্তাত্ত্বিক
সোলইয়ান চিত্তাকর্ষক দুটি দৃষ্টান্তের কথা উল্লেখ
করেন৷ দুই জনের দুই রকম ভাগ্যলিপি৷ একজন,
বিনা দোষে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় আহত
পক্ষাঘাতে আক্রান্ত এক তরুণ৷ এই তরুণ হাসিমুখেই
থেরাপিস্টের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন৷ পরে সুখ
সম্পর্কে তাঁর অনুভূতির কথা জিজ্ঞেস করা হয়৷ প্রশ্ন
করা হয় একদম অসুখী থেকে বেশ সুখী, অর্থাৎ ০ থেকে ৬
পর্যন্ত সুখের স্কেলে নিজেকে তিনি কোথায় দেখেন৷
তাঁর উত্তর ছিল ৪.১৷ অন্যদিকে দ্বিতীয়জন
লটারিতে পাঁচ লাখ ইউরো পেয়েও তাঁর উত্তর ছিল ৪.২৷
এতে বোঝা যায় একেক জনের সুখ ও দুঃখের
অনুভূতি একেক রকম৷
<>কারণের ওপর মানুষের হাত নেই=
মনোরোগ চিকিৎসক রোলান্ড উরবান মনে করেন, দুঃখের
অনুভূতির ব্যাপারে একটা মিল দেখা যায় সব ক্ষেত্রে৷
আর সেটা হলো এর কারণটার ওপর মানুষের হাত নেই৷
মানুষ এটিকে প্রভাবিত করতে পারে না৷ যেমন অসুস্থতা,
আপনজনের মৃত্যু কিংবা অন্য কোনো ক্ষতি হওয়া৷
তবে মানুষের ভেতরের একটা নিরাময়
ক্ষমতা দুঃখবোধকে কমিয়ে দিতে পারে৷
ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক
সাক্ষাৎকারে এই চিকিত্সক বলেন,
ভুক্তভোগী যদি এমন কিছু খুঁজে পান
যা তার জীবনে একটা পরিবর্তন
আনতে পারে, তাহলে দুঃখবোধটাও
অনেক কমে যায়৷ এই
প্রসঙ্গে একটি উদাহরণ দেন তিনি৷
এক মহিলা তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পর
শোকাভিভূত হয়ে পড়েন৷ কিন্তু যখন
থেকে তিনি পাশের বাড়ির এক
অসহায় মহিলাকে সাহায্য করতে শুরু
করেন, তখন থেকে নিজের দুঃখবোধও
অনেকটা কমে যায়৷ সামাজিক
কাজকর্ম, অন্যের প্রতি ভালবাসা,
দায়িত্ববোধ এসব
মনটাকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়৷
নিজের ক্ষতিকে ঘিরে থাকে না আর৷
<>মানসিক অসুস্থতা নয় =
এই মনস্তাত্ত্বিক সতর্ক করে বলেন,
দুঃখবোধকে মানসিক বৈকল্য
বা অসুস্থতার সঙ্গে তুলনা করা উচিত
নয়৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘অসুখী বোধ
করা একটি গভীর যন্ত্রণাদায়ক
অনুভূতি৷ এটা কোনো অসুস্থতা নয়৷
অনেককে বলতে শোনা যায়
তারা অসুখী এবং ডিপ্রেশনে ভুগছেন৷
শোক অনুভব করা সুস্থ মানুষের
নিতান্তই স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া৷''
মিউনিখের সাইকোথেরাপিস্ট ও কোচ
স্টেফান লেরমার মনে করেন শোক ও
‘অসুখ' মানুষের জীবনেরই অঙ্গ৷
আলো ও ছায়ার মতো৷ সুখ
খুঁজতে হলে প্রয়োজন আত্মআবিষ্কার৷
‘‘মানুষের নিজের চাহিদাটা জানতে হবে৷
জানতে হবে আমি কী চাই? আমার কাছে কী গুরুত্বপূর্ণ?
ভোগ মানুষকে সুখী করতে পারে না৷ এটা বলা যায়,
অন্যের সঙ্গে তুলনা করা সুখকে ধ্বংস করতে পারে৷
অন্যকে সুখী করতে পারলে নিজেও সুখ পাওয়া যায়৷''
মনস্তত্ত্ববিদ লেরমার বলেন, আগে অনেকে পরকালে সুখ
পাওয়ার আশা করতেন৷ আজ এই মনোভাব পালটে গেছে৷
সুখ হলো বেতার তরঙ্গের মতো৷ এটা সবসময় থাকে৷
একে শুধু বের করে আনতে হয়৷ বলেন শ্টেফান লেরমার৷
©somewhere in net ltd.