নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এক ভাবুক, ক্লান্ত পথিক।হেটে যাচ্ছি অজানা অচেনা পৃথিবীর পথে। এই জগতের বাইরেও সবারই আলাদা আরেকটা জগৎ থাকে; যে জগতের একমাত্র প্রান সে নিজেই,যেখানে বিস্বাদ বিষণ্ণবদনের সাথে সে একাই ক্রমাগত

মো: শাহিন

ক্লান্ত পথিক

মো: শাহিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রিয়াকে নিয়ে

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৩০

২রুমের একটা ফ্ল্যাটে রাফি একাই থাকে।
ঘরের দুটো ঘরিতেই আজ সকাল ৮টার এলার্ম দেয়া। কারন টা রিয়ার বাবা, আজ রিয়ার বাবার সাথে দেখা করার কথা। যদিও এলার্ম ছারাই আজ ঘুম ভেজ্ঞেছে তার। সারারাতের চোখভেজা আবেগি সপ্ন আর জেগে জেগে আবোল তাবোল ভাবনায় রাত শেষ হয়ে গেল কখন সে নিজেই জানে না।
রিয়ার ও নিশ্চই একই অবস্থা হয়ত।!?
তারা দুজনেই একই ইউনিভাররসিটির একই ডিপার্টমেন্ট এ পরছে। পরিচয় টা হয়েছিল অনেকটা ছিনেমাটিক ভাবেই।
ভার্সিটির সেই প্রথম দিকের কাহিনি ; কোন এক সকালে রাফি এডমিশন শেষে এডমিনিস্ট্রেটরের রুম থেকে বেরিয়ে নিচে নামার জন্য সিরি ভাংছে, হথাতই কোন এক অর্ধোবয়োসি আংকেল এর পিছন পিছন চুল নারতে নারতে উপরে ঊঠছিল মেয়েটি। নিলার সাথে ব্রেকাপের পর এই দুবছরে কাওকে ভাল লাগেনি রাফির। রাফি কেমন বাধ্য বাচ্চা ছেলের মত সিরির কোনে দারিয়ে রয়েছে, রিয়া কিজানি কি মনে করে একটু তাকিয়ে হাসল।
এরপর অরিয়েন্টেশন থেকে শুরু করে বেশ কিছুদিন আশেপাশে খুঁজাখুঁজির পর জানতে পারল মেয়েটে তার ডিপার্টমেন্টই পরছে। কেমন যেন একটু সস্তি ফেল্ল।
ঃরাফির তেমন ভাল কোন ফ্রেন্ড ও নেই যে হেল্প পাবে অবশ্য নেই বললেও ভুল হবে রাফি নিজেই ফ্রেন্ড দের থেকে বিচ্ছুত, কারনটা তার প্রথম প্রেমে দাগা খাওয়ার পর থেকে;অনেকটা একা একাই থাকে।এখানে এসে প্রয়োজন অপ্রয়োজনে একটু আধটু কথা হতো কেবল ফারদিনের সাথে। তাও যে ভাল বন্ধু তা নয়।
রিয়ার সাথে রাফির এখন পর্যন্ত কোন কথা আলাপচারীতা কিছুই হয়নি। শুধু দুজনের চুখে চুখে নিঃশব্দে কথা বলা আর দেখা ছাড়া। রিয়াকে নিয়ে যে ভাবে না রাফি এমন একটা দিন খুজে পাওয়া ভার। এমনকি শুক্রুবার ও রেহাই নেই তার ভাবনা থেকে। রিয়ার চাহনি, হাসি দেখে এটাও নিশ্চিত যে; রিয়া ও রাফিকে পছন্দ করে।
এসবের মধ্যে ৪সেমিস্টার পেরিয়ে কদিন হল ৫সেমিস্টার এ পা রাখলো। এদ্দিন হয়ে গেল অথচ কিছু একটা বলে বসবে রাফি কিন্তু কিছুই না। তাকে যে পছন্দ নয় ভালবাসে না সেটাও নয় আসলে "ভালবাসি" কথাটা বলতে রাফির খুব ভয় হয়।
যদি নিলার মত কিছু একটা হয়ে যায় আবার তার সাথে।?
এতদিন অপেক্ষার পর আজ নিলা ভাবছে কালকেই বলে দিবে কিছু একটা সে নিজেই।
না কাল না এখনই বলবে আজ রাতেই বলবে সে।
কোম একরকম ভাবে রাফির নাম্বার যোগার করে লজ্জা আর অপেক্ষার ঘোমটা সরিয়ে রিয়া নিজেই ফোন দিল রাফিকে।
-.-.-.--.-
আসসালামু আলাইকুম!
জি কে?
+কোন কথা নেই ওপাশ থেকে। রিয়া শুধু কাছুমাছুইই করে যাচ্ছে চুপচাপ।
জি কে বলছেন?? কিহল? কথা না বললে রাখছি আমি...!
- জি আমি রিয়া! !
......... এবারে আর কোন কথাই যেন আর বেরোচ্ছে না রাফির মুখ থেকে।ইচ্ছে করছে অনেক কিছু বলতে কিন্তু পারছে না। কিছুক্ষন দুজনের নিরবতা পালনের পর রিয়াই মুখ খুলল,!
++কি হল আপনি আবার চুপ কেন??
--জি বলুন!
++শুনুন আমি আসলে আপনাকে কিছু বলতে চাই।
--জি বলুন;
++আপনার অপেক্ষা আর লালন করতে পারছিনা।
আমি আপনাকে পছন্দ করি,খুব সম্ভবত ভাল ও বেসে ফেলেছি খুব।।
রাফির বিশ্বাস হচ্ছেনা কথা গুলা, যেন মনে হচ্ছে প্রতিদিনকার সপ্নই কথা বলছে তার সাথে।
রিয়ার বুকফাটা আওয়াজে ঘুর কাটল রাফির।।
++কি হল কিছু বলছেন না যে??
--আ, রিয়া? সত্যি বলতে আমিও আপনাকে পছন্দ করি সেই প্রথম দেখার পর থেকেই। কিন্তু.. কিন্তু ভালবাসা টা বোধহয় আমার জন্য নয়।।
আর কিছু বলার আগেই ফোন কেটে দিল। মেয়েটা অনেকটা পাগলি বটে।
ঃসারারাত ঘুম হয়নি রাফির শুধু এপাশ ওপাশ করছিল, কি বলতে যেয়ে কি বললাম শুধু এই ভাবছিল

রিয়ার ও সারারাত কেটেছে কান্নাকাটিতে আর ড্রেসিং টেবিল- বেল্কনি, বেল্কনি আর ড্রেসিন টেবিল করে ।
এই প্রথমবার কাউকে ভালোলাগা আর বলা অথচ তার কোনপ্রকার মাধুর্যই রইল না।? সে কি দেখতে এতটাই খারাপ? নানান আজেবাজে চিন্তাভাবনায় মাথার চুল ছিড়তে ইচ্ছে করছে তার।

ঃরাফি অসস্তিতে ফোন করে বলেছিল ফারদিন কে আসতে । এইনিয়ে সারারাত কথোপকথনের পর রাফির ভাবনা আর ফারদিনের বলাতে ঃ যা চলে গেছে তা তো গেছেই।
সবকিছু মিলিয়ে রিয়াকে তার এপিটাফ বলে তার ভালোবাসার কথা জানবে।
সেদিন ফারদিনকে একটু আগে আগে ভার্সিটি যাওয়ার কারন ছিল এটাই। কিন্তু ১১পর্যন্ত অপেক্ষা করেও দেখা মেলেনি রিয়ার। বড্ড টেনশান হচ্ছে এখন তার।
দুর! বোকার মত কাজটা কালকে ন। করলেই হতো।
পরদিন ও আসেনি রিয়া, এইনিয়ে ৫দিন হয়ে গেল রিয়া আসছে না।
রাফির অবস্থা সুচনিয়। ঘুম খাওয়া দাওয়া পরালেখা সবকিছু চাজ্ঞে।
সব কিছুতে রিয়া আর রিয়া।
এরই মধ্যে সবারই নজর তাদের উপর। অনেকের অনেক কিছু বলাবলি ও করছে।
বলবেই না, বা কেন? অমন ভাল নিয়মিত দুজন স্টুডেন্ট হঠাত একজনের পাত্তাই নেই আরেকজন ভার্সিটি আসছে অথচ ক্লাসে আসছে না!!
বৃহঃপতি বার দিন , রাফি কেন্টিনে বসে কি যেন কি আঁকিবুঁকি করছিল কিন্তু প্রতিদিনের মত তার হতাস নজর ভার্সিটির গেটের দিকেই।
আচমকা রিয়াকে দেখে অবাক হয়ে ঊঠে দারাল। রাফি আগেপিছে কিছু না ভেবেই দৌড়ে গেল রিয়ার পাশে,
কিন্তু রিয়া বেকে বসেছে-রাফির ডাকে সারা দেবে তো দুরের কথা, তাকে কেও ডাকছে মনেই হচ্ছে না তার কাছে । চুপচাপ সোজা গিয়ে৫০৩ নাম্বার ক্লাস রুমের এককোনে বসে রইল। কারো সাথে কোন কথা নয়।
ঃ রাফির চোখ দুটো আগ্নেয়গিরির লাভার মত উত্তপ্ত দেখাচ্ছে। রুমের সাম্নেই দারিয়ে নিরবতা পালন করছে সে।
হঠাত করেই কি যেন ভেবে রিয়ার সামনে গিয়ে দারাল।
ভয় পেয়ে রিয়াও ঊঠে দারাল ---
রাফি কাদু কাদু কন্ঠে বলেই ফেল্ল--
পরে কষ্ট দেবে না তো? ছেড়ে যাবে নাতো??
রিয়া কিছু না বলে রাফির বুকে লুটিয়ে পরল ভাজ্ঞা কান্নায়।
রাফি টা ও কেমন বাচ্চা ছেলের মত রিয়াকে জরিয়ে ধরে কাঁদছে।
ক্লাসের সবাই এতক্ষন দেখছিল সব ;এবারে হৈ হৈ করে তালি বাজাচ্ছে সবকটা।

এর পর থেকে সময় গুলা খারাপ যায় নি আর কারোরই।
তাদের অনেকগুলা কমন ফ্রেন্ড হল - পুরো ক্যাম্পাস মাতিয়ে রাখতো দুজনেই।
এসবের ফাঁকেফাঁকে কখন এতগুলা দিন পেরিয়ে গেল কে জানে? এখন তারা ১১ সেমিস্টার এ। বরাবরের মত দুজনের সিজিপিএ ই ভাল।
সময়টাও খুব ভালই যাচ্ছে। হথাত কাল রাতে রিয়ার বাবার ফোন -- তাকে বলেছে আজ একবার দেখা করার কথা।
অহ! এর মধ্যে আবার রিয়ার বাবা সবকিছু শুনে সায় জানিয়েছে মেয়ের ভাললাগায় । জানাবেইনা বা কেন একটামাত্র মেয়ে।

নানান কিছু ভাবতে ভাবতে ঘুমটা আর হল না। চুখ দুটো লাল হয়ে আছে।
রাফি গোছগাছ করে নিজেকে রেডি করছে
আর যাই হোক রিয়ার বাবা বলে কথা। রিয়া অবশ্য এর মধ্যে অনেকবার কল দিয়েছে কিন্তু কথা হয়নি; আজ যেন রিয়ার থেকে বেশি প্রায়োরিটি রিয়ার বাবার।।।
রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হল- রিয়ার বাসার উদ্দেশ্যে, হঠাত করেই তার মনে হচ্ছে আজকের সকাল টা ভিষন সুন্দর ।
অমন সুন্দর সকাল সে আর কখনো দেখেছে বলে মনে হচ্ছেনা!!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.