নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্যদের সেভাবেই দেখি, নিজেকে যেভাবে দেখতে চাই। যারা জীবনকে উপভোগ করতে চান, আমি তাঁদের একজন। সহজ-সরল চিন্তা-ভাবনা করার চেষ্টা করি। আর, খুব ভালো আইডিয়া দিতে পারি।

সত্যপথিক শাইয়্যান

আমি লেখালিখি করি, মনের মাধুরী মিশিয়ে

সত্যপথিক শাইয়্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

দূর্বল পরিকল্পনা ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনাই শ্রমিকদের বেতন না দিতে পারার কারণ

১০ ই এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:২৭



গতকাল ০৯ এপ্রিল ২০২৪ তারিখ দৈনিক বনিক বার্তায় চমকে উঠার মতো একটি খবর প্রকাশ হয়েছে। খবরটির শিরোনাম - "শিল্পাঞ্চলে ৫১ শতাংশের বেশি কারখানায় মার্চের বেতন হয়নি"। এই রিপোর্টের খবর যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে বলতে হয় যে, আমাদের শিল্প কারখানাগুলো ক্লায়েন্ট ম্যানেজমেন্ট যারা করেন, তারা খুবই বাজে লিডার।
.
কয়েকটি কারণে সময় মতো বেতন দেওয়া সম্ভব হয় না। সেগুলোর মাঝে অন্যতম দু'টি হচ্ছে-
১) কারখানায় তৈরী পণ্যগুলো বিক্রি কম হয়েছে।
২) ক্লায়েন্ট সময় মতো পণ্যের দাম পরিশোধ করছে না।
.
১ম কারণটি সত্যি হয়ে থাকলেঃ
যদি ১মটি হয়, অর্থাৎ, কারখানায় তৈরী পণ্যগুলো বিক্রি কম হওয়ায় শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা যাচ্ছে না, তাহলে জিজ্ঞাসা করতেই হয় - সেলস টার্গেট কি ঠিক মতো করা হয় নাই? ফলে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য বাজারে রয়ে গিয়েছে যা বিক্রি হয় নাই?.....উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, এই সেলস টার্গেট কারা করেছিলেন তা খুঁজে বের করা দরকার। কারণ, সেলস টার্গেট ঠিক করার পরে যে পণ্য তৈরী হয়েছিলো, তা সঠিক প্রজেকশন ছাড়া বাজারে যাওয়ার ফলেই পণ্য বিক্রি হয় নাই। ভোক্তার চাহিদা কি তা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিলো সেলস ডিপার্টমেন্ট।
.
অথবা এমনও হতে পারে, 'পুশ মেথড' প্রয়োগ করে, বাজার যাচাই না করে পণ্য তৈরী করা হয়েছিলো। যার ফলে অনেক পণ্য বাজারে অবিক্রীত থেকে যায়। ফলে, শ্রমিকের বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
.
দুটি ক্ষেত্রেই উত্তর হচ্ছে, সঠিক প্ল্যানের অভাবে বাজারে অতিরিক্ত পণ্য ঢ়য়ে গিয়েছে। যার ফলে, শ্রমিকদের বেতন পণ্য বিক্রি থেকে উঠে আসেনি। তাই, প্রশ্ন রাখতেই হচ্ছে - সঠিক প্ল্যান করতে পারলো না কেন ম্যানেজমেন্ট? কেন রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো পণ্য তৈরীর আগে যাচাই করে দেখা হলো না? কেন ব্যাংক বা ফাইন্যানশিয়াল ইন্সটিটিউশনগুলোর সাথে আগে থেকেই যোগাযোগ করে শ্রমিকদের বেতনের জন্যে লোন নেওয়া হলো না?
এর একটাই উত্তর হত্যে পারে, তা হচ্ছে, উইক ম্যানেজমেন্ট। অর্থাৎ, অদক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণেই এমনটা হচ্ছে।
.
২য় কারণটি সত্যি হয়ে থাকলেঃ
২য়টি অর্থাৎ ক্লায়েন্ট সময় মতো পণ্যের দাম পরিশোধ করছে না এমনও হয়ে থাকতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বাকিতে পণ্য বিক্রি করে। আবার, অনেক সময়ে দেখা যায়, বাকিতে নেওয়া এই পণ্যগুলো সঠিক সময়ে বিক্রি হয় না। ফলে, ক্লায়েন্ট বা কাস্টমার সময় মতো পণ্যের দাম পরিশোধ করতে পারেন না। এছাড়াও, আমাদের শিল্প কারখানাগুলো বিদেশী ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে অর্ডার বাতিলের মতো সমস্যায় পরে যায়। ফলে, পণ্য যারা তৈরী করেন, অর্থাৎ, শ্রমিকদের বেতন সময় মতো দেওয়া সম্ভব হয় না।
.
এক্ষেত্রে বলতে হয়, ক্লায়েন্ট ম্যানেজ করেন যে ব্যবস্থাপকরা, তারা ঠিক মতো ক্লায়েন্টদের সাথে চুক্তি করেন না। তাঁদের এই ব্যর্থতার ফলে, পণ্য সময় মতো বিক্রি হোয় না। অনেক সময়ে, প্রডাকশন মূল্যের চেয়ে কম দামে পণ্য বিক্রি করতে হয়। ফলে, শ্রমিকদের পারিশ্রমিক সময় মতো দিতে ব্যর্থ হোন মালিকপক্ষ।
এসবের কারণও দূর্বল ব্যবস্থাপনা। যার ফলে, সঠিক পরিকল্পনা করতে ব্যর্থ হোন হায়ার ম্যানেজমেন্ট।
.
উপরের আলোচনা থেকে বুঝা যাচ্ছে, আমাদের দেশের ব্যবস্থাপকরা হয় পরিকল্পনায় কাঁচা, নাহয়, তারা পরিকল্পনার ধার ধারেন না। দুটি ক্ষেত্রেই বলতে হবে, ব্যবসায়িক ও মানবিক মনমানসিকতার বিচারে আমাদের এইসব শিল্প কারাখানার মালিকপক্ষরা অনেক পিছিয়ে রয়েছেন। সবাই হয়তো এরকম নন। কিছু কিছু শিল্প কারাখানার মালিকরা হয়তো ব্যতিক্রম। যারা ব্যতিক্রম, অর্থাৎ যারা সময় মতো শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করে যাচ্ছেন, তাঁদের কাছ থেকে কি দূর্বল শিল্প মালিকপক্ষগণ কি কিছু শিখতে পারবেন না?
.
যতো তাড়াতাড়ি এইসব দূর্বল শিল্প কারখানা মালিকপক্ষ শিখতে পারবেন, ততো দেশের জন্যে মঙ্গল। সর্বোশেষে, সকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন দেওয়ার দাবী জানিয়ে দূর্বল শিল্প কারখানা মালিকপক্ষকে যথাযথ ট্রেনিং নিয়ে ব্যবসায় হাত দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
.
লেখকঃ মোহাম্মদ ফাছিহ-উল ইসলাম শাইয়্যান,
আই,টি উদ্যোক্তা।
[email protected]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:০১

বিষাদ সময় বলেছেন: আপনার উল্লেখিত কারণ দুটিকে একাডেমিক কারণ বলা যায় তার বাইরেও কিছু কারণে বেতন পরিশোধ করা যায় না বা করা হয় না।
আমাদের দু-চারজন ক্লায়েন্ট আছেন যারা গার্মেন্টস মালিক। তাদেরকে শ্রমিকদের বেতন বাকি রাখা সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলাম। তাদের উত্তর ছিল - গার্মেন্টস কারখানার বেশিরভাগ শ্রমিক ভাসমান তারা আজ এখানে তো কাল ওখানে। যদি বেতন বাকি না রাখা হয় তবে দেখা যায় গার্মেন্টস এর প্রোডাকশনের পিক সময়ে বা ঈদ বা বড় ছুটির পর তারা কারখানাকে কিছু না জানিয়ে অন্যত্র কাজে যোাগ দেন। ফলে অনেক সময় মালিকরা সময় মতো পণ্য সাপ্লাই দিতে না পারায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হন। এ কারণেই তারা শ্রমিকদের দু এক মাসের বেতন বকেয়া রেখে দেন।
হয়তো এটা শ্রমিকদের শোষণের জন্য মালিকদের এক ধরণের কু যুক্তি তবে যুক্তিটির বাস্তবতা আছে।

১১ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৫৫

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:


ধন্যবাদ। ইদ মোবারক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.