![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার কাছে অনেক আইডিয়া আছে এবং আমি তা ব্লগে এপ্লাই করি! জানেনই তো, পৃথিবীর সব কিছুর মূলে রয়েছে আইডিয়া!
বাংলাদেশের সংবিধান এমন হওয়া উচিৎ যা একজন অশিক্ষিত বাংলাদেশীও বুঝতে পারবে। বাংলাদেশের স্বাক্ষরতার হার ৭৭.৯%। সেই অনুযায়ী, প্রায় ২২% মানুষ নিরক্ষর। এমন একটি সংবিধান যদি থাকে, যা বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক ১০০% মানুষ বুঝতে পারবে, তাহলে, আর কোন উকিলের দরকার পড়বে না। জীবনযাত্রাও অনেক সহজ হয়ে পড়বে। এরকম একটি সংবিধান আমি এইখানে প্রস্তাব করছি যা মুসলিম-অমুসলিম, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সকলেই বুঝতে পারবে।
========================================================================
প্রস্তাবনা
আমরা বাংলাদেশের মানুষ — মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, অন্যান্য ধর্মের, শিক্ষিত বা অশিক্ষিত, গ্রাম বা শহরের — সবাই মিলে প্রতিজ্ঞা করছি, আমরা একসাথে ন্যায়, সমতা আর শান্তির দেশ গড়ে তুলবো।
========================================================================
মূলনীতি (১০টি)
১. বাংলাদেশ সবার দেশ – মুসলিম, অমুসলিম, ধনী, গরিব, শিক্ষিত, অশিক্ষিত – সবার সমান অধিকার আছে।
২. ন্যায় মানে হলো সবার সঙ্গে সমান ব্যবহার করা, কারও ক্ষতি না করা, কারও প্রাপ্য কেড়ে না নেওয়া, আর সঠিক কাজকে মূল্য দেওয়া।
৩. অন্যায় মানে হলো কারও ক্ষতি করা, কারও অধিকার কেড়ে নেওয়া, মিথ্যা বা প্রতারণা করা, এবং নিজের ক্ষমতা দিয়ে দুর্বলকে চাপ দেওয়া।
৪. সুযোগ মানে হলো সবার জন্য সমানভাবে চেষ্টা করার দরজা খোলা রাখা – যেমন শিক্ষা, কাজ, চিকিৎসা ও উন্নত জীবনের সুযোগ।
৫. আইন সবার জন্য সমান – গরিব-ধনী, ক্ষমতাবান-সাধারণ সবাই একই আইনের অধীনে।
৬. সরকার জনগণের সেবা করবে, জনগণ সরকারের মালিক।
৭. জনগণের ভোটে সরকার গঠিত হবে। ভোট সবার সমান, এক জনের এক ভোট।
৮. দেশের সম্পদ জনগণের কল্যাণে ব্যবহার হবে, কারও ব্যক্তিগত লাভের জন্য নয়।
৯. জনগণ চাইলে শান্তিপূর্ণভাবে সংবিধান পরিবর্তন করতে পারবে। পরিবর্তনের নিয়ম:
• সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যকে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিতে হবে।
• এরপর জনগণের মতামত জানার জন্য গণভোট হবে।
• সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ‘হ্যাঁ’ বললে সংবিধান পরিবর্তন হবে।
১০. বাংলাদেশ সর্বদা শান্তি, বন্ধুত্ব, মানবিকতা এবং সবার কল্যাণের পথে চলবে।
• শান্তি: কারও ক্ষতি না করে, মারামারি-হানাহানি ছাড়া, সবাই মিলেমিশে শান্তভাবে বসবাস করা।
• বন্ধুত্ব: একজন আরেকজনকে সাহায্য করা, কষ্টে পাশে থাকা, আর শত্রুতা না করা।
• মানবিকতা: মানুষের কষ্ট বোঝা, সহানুভূতি দেখানো, অন্যকে দয়া ও সম্মান করা।
• কল্যাণ: সবার ভালো হওয়া, যেমন– শিক্ষা, চিকিৎসা, কাজ, নিরাপত্তা, আর সুখী জীবন নিশ্চিত করা।
========================================================================
অধ্যায় ১: রাষ্ট্র
ক) বাংলাদেশের নাম হবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ।
খ) বাংলাদেশের সব ক্ষমতা জনগণের হাতে। সরকার জনগণের সেবা করবে।
গ) বাংলা হবে রাষ্ট্রভাষা।
ঘ) জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্ব।
অধ্যায় ২: নাগরিকের অধিকার
ক) প্রত্যেক বাংলাদেশী সমান। ধর্ম, জাত, লিঙ্গ, সম্পদ বা মতের ভেদে কাউকে ছোট করা যাবে না।
খ) সবাই নিজের ধর্ম পালন করতে পারবে।
গ) সবাই কথা বলার ও মত প্রকাশের অধিকার রাখবে, তবে অন্যের ক্ষতি করা যাবে না।
ঘ) শিক্ষা, চিকিৎসা, কাজ ও নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার আছে।
ঙ) কারো বাড়ি, জমি বা সম্পদ অন্যায়ভাবে কেড়ে নেওয়া যাবে না।
অধ্যায় ৩: নাগরিকের দায়িত্ব
ক) রাষ্ট্রকে ভালোবাসতে হবে, কর দিতে হবে, আইন মানতে হবে।
খ) দুর্নীতি, অন্যায় ও অপরাধের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।
গ) সবাইকে সাহায্য করতে হবে—দরিদ্র, প্রতিবন্ধী, অসহায়কে।
ঘ) পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষা করতে হবে।
অধ্যায় ৪: সরকার ব্যবস্থা
ক) জনগণ ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করবে।
খ) প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ দেশ চালাবে।
গ) আদালত ন্যায়বিচার করবে, কারো প্রতি পক্ষপাত করবে না।
ঘ) সেনাবাহিনী, পুলিশ ও প্রশাসন জনগণের সেবা করবে।
অধ্যায় ৫: বিশেষ নির্দেশনা
ক) নারী-পুরুষ সমান অধিকার ভোগ করবে।
খ) শিশুদের শিক্ষা, খাবার, স্বাস্থ্য সবার আগে নিশ্চিত করতে হবে।
গ) বৃদ্ধ, অসুস্থ, গরিব ও শ্রমজীবী মানুষের জন্য রাষ্ট্র বিশেষ ব্যবস্থা নেবে।
ঘ) মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও শহীদদের সম্মান সর্বদা রক্ষা করা হবে।
অধ্যায় ৬: পরিবর্তন
জনগণ চাইলে শান্তিপূর্ণ ও ন্যায়সঙ্গত উপায়ে এই সংবিধান সংশোধন করতে পারবে।
অধ্যায় ৭ঃ সংবিধানে দেওয়া শব্দের ব্যখ্যা
ন্যায় বলতে কী বোঝায়?
ন্যায় মানে হলো—
• কাউকে অন্যায়ভাবে ছোট না করা, শাস্তি না দেওয়া বা সুযোগ থেকে বঞ্চিত না করা।
• সবার অধিকার সমানভাবে রক্ষা করা।
• অন্যায়ের বিচার করা এবং অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া।
• দুর্বল, গরিব বা অসহায়কে সহায়তা দেওয়া, যেন তারা সমান সুযোগ পায়।
সমান অধিকার বলতে কী বোঝায়?
সমান অধিকার মানে হলো—
• নারী-পুরুষ, ধনী-গরিব, গ্রাম-শহর, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সবার জন্য একই সুযোগ থাকবে।
• কাজ, শিক্ষা, চিকিৎসা, ভোটাধিকার ও আইনের বিচার সবার জন্য এক রকম হবে।
• কাউকে কেবল তার ধর্ম, জাত, লিঙ্গ, ভাষা বা সম্পদের কারণে সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
স্বাধীনতা বলতে কী বোঝায়?
স্বাধীনতা মানে হলো—
• মানুষ তার মতামত বলতে পারবে, ধর্ম পালন করতে পারবে, এবং জীবিকা বেছে নিতে পারবে।
• নিজের অধিকার ভোগ করতে পারবে, তবে অন্যের অধিকার নষ্ট করা যাবে না।
• রাষ্ট্র ও সমাজ কাউকে অন্যায়ভাবে আটকাতে বা কণ্ঠ রোধ করতে পারবে না।
অন্যায় বলতে কি বুঝায়?
অন্যায় মানে হলো—
• কারো অধিকার কেড়ে নেওয়া।
• কাউকে মিথ্যা অভিযোগে শাস্তি দেওয়া।
• ঘুষ, দুর্নীতি, প্রতারণা, চুরি, জোর করে দখল করা বা কাউকে কষ্ট দেওয়া।
• আইন ভেঙে নিজের লাভ করা।
সুযোগ বলতে কি বোঝায়?
সুযোগ মানে হলো—
• শিক্ষা, চিকিৎসা, কাজ, ব্যবসা ও জীবনের উন্নতির রাস্তা খোলা থাকা।
• যার সামর্থ্য আছে সে যেন চেষ্টা করতে পারে, আর যার সামর্থ্য কম তাকে সহায়তা দেওয়া হয়।
• সবাই যেন সমানভাবে এগোনোর সুযোগ পায়।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে কি বুঝায়?
মুক্তিযুদ্ধে চেতনা হলো-
• অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো।
• স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রক্ষা করা।
• সবাইকে সমান চোখে দেখা – ধনী-গরিব, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে।
• শোষণ, দমন-পীড়ন ও বৈষম্যের বিরোধিতা করা।
• দেশ ও মানুষের স্বাধীনতা, মর্যাদা ও কল্যাণের জন্য একসাথে কাজ করা।
©somewhere in net ltd.