|  |  | 
| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস | 
 সত্যপথিক শাইয়্যান
সত্যপথিক শাইয়্যান
	আমার কাছে অনেক আইডিয়া আছে এবং আমি তা ব্লগে এপ্লাই করি! জানেনই তো, পৃথিবীর সব কিছুর মূলে রয়েছে আইডিয়া!
 
 
 
৪৯তম বেঙ্গলিস ছিলো ব্রিটিশ ভারতের প্রথম বাঙালী আর্মি রেজিমেন্ট। এই রেজিমেন্টের সদস্য হয়েই প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাহিত্য ব্যক্তিত্ব মাহবুব উল হক, ঢাকার তৎকালীন নবাব খাজা হাবিবুল্লাহ-সহ আরো অনেকে।
১৯১৪ সাল। তখন পুরো বিশ্ব জুড়ে যুদ্ধের ঘনঘটা। এই সময়ে ব্রিটিশ শাসকেরা অনুভব করলেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে লড়াই করার জন্যে অনেক সৈন্যের প্রয়োজন। ব্রিটিশ রাজের দখল করা কলোনিগুলো থেকে তখন সৈন্য সংগ্রহ শুরু করা হলো। এরই ধারাবাহিকতায় বাঙালীদের জন্যে সৈন্যবাহিনীতে যোগদানের একটি সুযোগ এলো । এর আগে পর্যন্ত সুকৌশলে পুরো বাঙালী জাতিকে যুদ্ধ সংক্রান্ত সকল বিষয় থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হতো।  
বাঙালীদের সবার আগে নিরস্ত্র সৈন্য হিসেবে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী'র মেডিকেল বিভাগে রিক্রুট করা হয়। এই ইউনিটের নামকরণ করা হয় 'বেঙ্গলি এম্বুলেন্স কর্পস (বি,এ,সি)'। এই বি,এ,সি তৎকালীন মেসোপোটেমিয়া-তে ১৯১৫ সালের জুন থকে ১৯১৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খুব সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে। তাঁদের এই সুনাম আর সেই সাথে তৎকালীন বাঙালী নেতাদের প্রভাবে ব্রিটিশ সরকার একটি বাঙ্গালী রেজিমেন্ট গঠন করতে রাজি হয়। 
শেষ পর্যন্ত, ১৯১৬ সালের ৭ আগস্ট, বহু আরাধ্য এক ইতিহাস জন্ম নেয়। ব্রিটিশ রাজ এই দিনে একটি পূর্ণাঙ্গ রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠা করার ঘোষনা দেন। এই রেজিমেন্ট-ই বেঙ্গলি পল্টন নামে সমোধিক পরিচিত ছিলো।  ছবিঃ ফোর্ট উইলিয়ামের বাইরে অপেক্ষারত আর্মিতে ভর্তি উৎসাহী বাঙালীগণ
ছবিঃ ফোর্ট উইলিয়ামের বাইরে অপেক্ষারত আর্মিতে ভর্তি উৎসাহী বাঙালীগণ
'বাঙ্গালী রেজিমেন্ট কমিটি' গঠনঃ
বেঙ্গলি পল্টনের আকার ছিলো একটি সেনা কোম্পানির চেয়ে বড়, কিন্তু এক ব্যাটালিয়নের চেয়ে ছোট। এই রেজিমেন্টে ছিলো দুইজন ব্রিটিশ এবং ৬ জন ভারতীয় অফিসার, ২১৮জন সৈন্য এবং কিছু অনুসারী। একই সময় সৈন্যবাহিনীতে যোগদানের জন্যে বাঙালীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি আর যুদ্ধের জন্যে তহবিল সংগ্রহের জন্যে সিভিলিয়ানদের নিয়ে 'বাঙ্গালী রেজিমেন্ট কমিটি' নামের একটি সংগঠন গঠন করা হয়। নিম্নের নামকরা বাঙ্গালী ব্যক্তিত্বরা এই কমিটিতে অংশগ্রহণ করেন-
ক) বর্ধমানের মহারাজাধিরাজ বিজয় চাঁদ মাহতাব
খ) সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি
গ) নবাব নওয়াব আলী
ঘ) শ্রীমতি সরলা দেবী
ঘ) এ কে ফজলুল হক
ঙ) ডাঃ এস, কে, মল্লিক এবং প্রমুখ
  ছবিঃ ঢাকায় একটি ইভিনিং পার্টিতে বেঙ্গলিজ রেজিমেন্টের সদস্যরা
ছবিঃ ঢাকায় একটি ইভিনিং পার্টিতে বেঙ্গলিজ রেজিমেন্টের সদস্যরা
শুরু হলো ট্রেইনিংঃ 
বাঙ্গালি রেজিমেন্ট গঠনের পর এর সদস্যদের ট্রেইনিং দেওয়ার ভার অর্পণ করা হয় ১৬তম রাজপুত, ১০৬তম হাজারা পাইওনিয়ার আর ১১৬তম মারাঠা'র উপর। বাঙ্গালীদের দক্ষতা দেখে  ১৯১৭ সালের মার্চ মাসে এই রেজিমেন্টকে ব্যাটালিয়নে উন্নিত করা হয়, যার নামকরণ করা হয় ৪৯তম বেঙ্গলি ইনফেন্ট্রি রেজিমেন্ট। এি রেজিমেন্টের সদস্যরা ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে বেঙ্গলি নামে পরিচিত ছিলেন। লেফট্যানেন্ট কর্নেল এ, এল, ব্যারেট-কে এই বাহিনী'র কমান্ডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। 
সম্মুখ সমরে বেঙ্গলি পল্টনঃ 
১৯১৭ সালে যখন ব্রিটিশ সেনারা বাগদাদের কাছাকাছি পৌঁছে যায়, তখন তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা রক্ষা আর মেসোপোটেইয়াতে সম্মুখ সমরের জন্যে আরো সৈন্যের দরকার হয়ে পড়ে। ব্রিটিশ সেনা হেডকোয়ার্টার সিদ্ধান্ত নেয় বেঙ্গলি পল্টনকে ডেকে পাঠানোর। এভাবেই সুদূর ইরাকে পাড়ি জমায় এই রেজিমেন্ট। যদিও ট্রেইনিং শেষ না হওয়ার কারণে তখনো বাঙালী সৈন্যরা সম্মুখ যুদ্ধের জন্যে প্রস্তুত ছিলেন না। যেহেতু হেডকোয়ার্টারের সিদ্ধান্ত, সেহেতু ১৯১৭ সালের জুলাই মাসে বাঙ্গালী ব্যাটালিয়নের একাংশকে মেসোপোটেমিয়ার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়। এই বাহিনী দীর্ঘ তিন মাস সমুদ্র পাড়ি দিয়ে বাগদাদে পোঁছে সেপ্টেম্বর মাসে। 
কিন্তু বিধি বামঃ 
বাগদাদে পৌছতে না পছতেই,  দূরন্ত মরু হাওয়ায় সাথে যুঝতে না পেরে ১৯১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে এই বাহিনী'র অধিকাংশ সেনা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদেরকে ব্রিটিশ সেনাবিহিনীর পিছনের সারী যা আজিজাহ-তে ছিলো, সেইখানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যের ক্রম-অবনতির ফলে বেঙ্গলি পল্টনকে এক সময় কুট-আল-অমরে অবস্থিত  ব্রিটিশ বাহিনী'র  আরো পিছনের সারিতে সরিয়ে নেওয়া হয়। এই সময়ে এক সমীক্ষায় দেখা যায়, এই বাহিনী'র ৪১.০২% সেনা অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিলেন। 
একটি মজার ঘটনাঃ
ব্রিটিশ বাহিনী'র কমান্ডার জেনারেল স্যার উইলিয়াম মার্শাল একদিন সিদ্ধান্ত নিলেন এই ইউনিটকে দেখতে যাবেন। যখন সারিবদ্ধ সৈন্যদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন ৪৯ বেঙলিজের কমান্ডার লেঃ কর্নেল ব্যারেট বাঙালী সৈন্যদের একেকটি সারীকে এভাবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন- এই হলো 'হুপিং কাশি স্কোয়াড', এই হলো 'স্কার্লেট ফিভার স্কোয়াড', এটা হচ্ছে 'হাম স্কোয়াড'। এভাবেই তিনি বিভিন্ন সারীকে তারা যে অসুখে আক্রান্ত, সেই নাম ধরে ডাক দিচ্ছিলেন। নিজের জীবনীতে লিখেছেন যে, তিনি মাত্র ৬৩জন সৈন্যকে পেয়েছিলেন যারা কোন অসুখে আক্রান্ত হোননি যাদের মাঝে মাত্র একজনের সাথে তাঁর দেখা হয়েছিলো। এই সৈন্যদের সম্মানে ১৯২৪ সালে কলকাতা কলেজ স্কোয়ারে একটি স্মৃতি সৌধ বানানো হয়। 
  ছবিঃ বাঙ্গালী পল্টনের অফিসারগণ
ছবিঃ বাঙ্গালী পল্টনের অফিসারগণ
একটি দুঃখজনক ঘটনাঃ
মেসোপোটেমিয়া থাকাকালীন এক মর্মান্তিক ঘটনা বেঙ্গলি রেজিমেন্টকে সম্মুখ সমরে যাওয়ার সকল রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এক রাতে দুইজন সিপাহী গার্ডদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে অস্ত্রসহ ভারতীয় সৈন্যদের তাবুতে ঢুকে গুলি চালায়। এতে করে একজন সুবেদার মেজর গুরুত্র আহত এবং অন্য আরেকজন বাঙ্গালী অফিসার মারা যান। 
যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাঁকেঃ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পর যখন ভারতবর্ষে এই বাহিনী ফিরত আসে, এরপর খুব তাড়াতাড়িই বেঙ্গলি পল্টনকে ভেঙ্গে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। এভাবে ১৯২০ সালের ৩১ আগস্ট ৪৯ বেঙ্গলিজ পুরোপুরি লুপ্ত হয়। এখানে বলে নেওয়া উচিৎ, যুদ্ধের সময় দু বছরে প্রায় ৬০০০ বাঙ্গালী সেনাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিলো। 
======৩য় প্রকাশ============
তথ্য ও ছবি সুত্রঃ
১) 49 Bengalis- Lt. Col Muhammad Lutful Haq (Retd)
২) Bangali Paltan- http://en.banglapedia.org
 ৮ টি
    	৮ টি    	 +২/-০
    	+২/-০  ০৯ ই অক্টোবর, ২০২৫  সন্ধ্যা  ৬:০৯
০৯ ই অক্টোবর, ২০২৫  সন্ধ্যা  ৬:০৯
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: 
বাঙ্গালীদের পক্ষে বিশ্বহয় যুদ্ধ দিয়ে সম্ভব কি? 
ধন্যবাদ।
২|  ০৮ ই অক্টোবর, ২০২৫  সন্ধ্যা  ৭:২৩
০৮ ই অক্টোবর, ২০২৫  সন্ধ্যা  ৭:২৩
আবেদি১২৩ বলেছেন: স্যার , মেটেরিয়াল ভালো। চালিয়ে যান। স্যার "জনারণ্যে একজন" উনাকে কি পেয়েছেন ? আর তো কোনো আপডেট জানালেন না। আমি তো এই ব্যাপার তা নিয়ে খুবই চিন্তায় আছি। ভালো থাকবেন স্যার , শুভেচ্ছা নিরন্তন
  ০৯ ই অক্টোবর, ২০২৫  সন্ধ্যা  ৬:১১
০৯ ই অক্টোবর, ২০২৫  সন্ধ্যা  ৬:১১
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: 
ধন্যবাদ। আমার প্রিয় মেটারিয়াল। 
বাংলাদেশের পক্ষে কি আজ জয়ী হওয়া সম্ভব? ফুটবলে? 
শুভেচ্ছা।
৩|  ০৮ ই অক্টোবর, ২০২৫  সন্ধ্যা  ৭:৪৭
০৮ ই অক্টোবর, ২০২৫  সন্ধ্যা  ৭:৪৭
বিজন রয় বলেছেন: মানুষ শুধু ভুলে যায়।
  ০৯ ই অক্টোবর, ২০২৫  সন্ধ্যা  ৬:১২
০৯ ই অক্টোবর, ২০২৫  সন্ধ্যা  ৬:১২
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: 
ভুলশীল মানুষ। 
ভুলে যাওয়া আর ভুল করা - দুটি তার কাজ। 
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
৪|  ০৯ ই অক্টোবর, ২০২৫  সকাল ১০:৩৩
০৯ ই অক্টোবর, ২০২৫  সকাল ১০:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন।
  ০৯ ই অক্টোবর, ২০২৫  সন্ধ্যা  ৬:১৩
০৯ ই অক্টোবর, ২০২৫  সন্ধ্যা  ৬:১৩
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: 
বাঙ্গালীরা কখনো বিশ্বজয় করে নাই। বেরও হয় নাই!!! 
শুভেচ্ছা নিরন্তর। 
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই অক্টোবর, ২০২৫  বিকাল ৫:৩০
০৮ ই অক্টোবর, ২০২৫  বিকাল ৫:৩০
গোবিন্দলগোবেচারা বলেছেন: ভালো লাগলো।