নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এস এম মাসুদ ভুবন।

শামীম মোহাম্মাদ মাসুদ

আমি খুব সাধারন একটা ছেলে বেড়ে উঠা গ্রামে, আর ভালোবাসি বাংলাদেশ। পড়তে খুব পছন্দ করি, মাঝে মাঝে লিখারও চেষ্টা করি।

শামীম মোহাম্মাদ মাসুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অপেক্ষা (১৩তম পর্ব)

১২ ই আগস্ট, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৩



অজান্তাকে বাবার সিদ্ধান্তের কথা জানালাম। বাবাকে আমাদের প্রেমের কথা জানানোর সংবাদে সে ভীষণ খুশী হলো। ফোনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে করতে বলে;
— দেখতে হবে না কার শ্বশুর। আমার শ্বশুর মশাই তো ভারী বুদ্ধিমান মানুষ। তিনি এক ঢিলে দুই পাখি মারবেন। তোমার রেজাল্টও ভালো হতে হবে, প্রেমও হারাতে দিবেন না।

আমি একটু খোঁচা দিয়ে বলি;
—বাবা হচ্ছেন আমার, আর তুমি নিজের শ্বশুর হিসেবে ক্রেডিট নিচ্ছো!

— আমার বুকটা আজকে একটু হালকা লাগছে। আমার ধারণা বাবা আমাদের সম্পর্ক মেনে নিবেন, তুমিও মাস্টার্স পরীক্ষা ভালো করবে।

— আমি নিজেও অনেক টেনশনে ছিলাম। বাবা আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ। তিনি যদি না করতেন তাহলে আমি কি করতাম সেটা চিন্তা করতেই ভয় লাগে। এখন তো একটা আলোর রেখা দেখতে পাচ্ছি।

— শুনো, আজকে থেকে তোমার পড়াশোনা শুরু, ভালো করে প্রস্তুতি নাও। আগামী একমাস আমাকে নিয়ে কোন চিন্তা করতে হবে না। এই লড়াইটা আমাদের জিততেই হবে অমিত।

— তুমি পাশে থাকলে আমি যে কোন লড়াইতে জিতবো। এছাড়া তুমি তো জানোই আমার স্বপ্ন কি। বাবার ব্যবসা কিংবা চাকরি এসবে আমার ইচ্ছা নেই। আমার ইচ্ছা হচ্ছে টিচিং পেশা, লেখালেখি করা, সাহিত্যচর্চা করা। ভার্সিটিতে টিচার হিসেবে জয়েন করতে হলে আমার এখানে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হতেই হবে। নইলে নিয়োগ পাবো না।

— জ্বি কবি মশাই, নিজের স্বপ্নপূরণের জন্য, আমার স্বপ্নপূরণের জন্য এটা লাগবেই৷ তুমি আজকে থেকেই প্লান করো।

— আমি আমার জানপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করবো পাগলী। তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি।

— তোমার আর তোমার বাবার মধ্যে একটা বিষয়ে মিল পেলাম।

— কি?

— দুজনের মধ্যেই জেদ আছে, দুজনেই খুব লক্ষ্য নির্ভর, নিজের লক্ষ্য ঠিক রেখে চলো। নিজে যা চাও, যেভাবে চাও সেভাবে সবকিছু মেইনটেইন করো। এই গুণটা সবার থাকে না।

— ফারুক আংকেল তো আমাকে সবসময় বলে আমি নাকি আমার বাবার চেয়েও জেদি। যে কোন কিছুতে একবার ক্ষেপে গেলে তা পূরণ করেই ছাড়ি।

— হুম, বাপকা বেটা। জানো, বিয়ের পর বাবাকে আমি খুব যত্নে রাখবো। আমি কত স্বপ্ন দেখি আমাদের সংসার নিয়ে। মায়ের অভাব তোমাদের কাউকেই বুঝতে দিবো না। আমি দেখবে সবকিছু সামলে রাখবো।

অজান্তা খুব শান্তভাবে কথাগুলো বললো। কিন্তু প্রত্যেকটা কথায় আবেগ ঝরে পড়েছে। মনে হচ্ছে কত দিন সে স্বপ্ন দেখে দেখে এই আবেগ জমিয়ে রেখেছে...

অজান্তা কথা চালিয়ে গেলো;
— তোমার যখন প্রথম বই বের হবে আমি বইমেলায় থাকবো, মোড়ক উন্মোচন করবো। প্রথম কবিতার বই হাতে ছুঁয়ে দেখবো, বুকে জড়াবো। আমার সাথেই তো তোমার প্রথম কবি হয়ে উঠা, তোমার কবিতায় আমার অনুভূতি আছে, আমার ভালোবাসা আছে। আমি তোমার কবিতার প্রথম পাঠক।

আমি কি বলবো ভেবে উঠতে পারিনা। অজান্তার স্বপ্ন, অজান্তার আবেগ আর ভালোবাসার কাছে আমি রোজ হেরে যাই। তাকে নিয়ে আমি যতটা চিন্তা করি সে আমার থেকে অনেক গভীরে ভাবে। আমার জীবন, আমার পরিবার, আমার সংসার সবকিছুই সে ভেবে রেখেছে। কিভাবে আমাদের সময় কাটবে, সংসারে কি কি থাকবে, মা থাকলে কি কি করতো, কিভাবে আমরা বুড়ো হবো, সব ভাবনা। এক জীবনে চলতে গেলে যা যা ঘটে সবকিছুই অজান্তা কল্পনা করে রেখেছে। আমার জীবনটাই যেন ওর কল্পনার খাতা। আমার সাথে সে এক মানসিক সংসারে আবদ্ধ হয়েছে। মনে-মগজে সে আমার পরিবারের সদস্য হয়ে বসে আছে। তাকে সরানোর সাধ্য কার?

এদিকে একটু একটু করে খবর ছড়িয়ে পড়লো অজান্তার পরিবারে। —অজান্তা আর অমিতের সম্পর্কের কথা যেন এক আগুন হয়ে ছড়িয়ে গেল। বাসার কেউই ব্যপারটা পজিটিভলি নেয়নি। অজান্তার ভাই-বোনসহ বাকি পরিবারের লোকজন সবাই অজান্তার দিকে বাঁকা চোখে তাকাতে শুরু করলো। কেউ মুখে কিছু না বললেও চোখের ভাষা বুঝে নেওয়া কঠিন ছিল না তার জন্য। পুরো পরিবার একদিকে রইলো অন্যদিকে একা হয়ে গেল সে। নিরবতায় ডুবে গেল। বাসার কারো সাথেই তার সেরকম কথা হয়না। আগের চঞ্চল, চটপটে অজান্তা একদম মলিন ফ্যাকাসে হয়ে গেলো। সারাক্ষণ রুমেই বন্ধী হয়ে থাকে। প্রেম করে সে মহা অপরাধ করে ফেলেছে। যার শাস্তি নিভৃতে রুমবন্ধী জীবনযাপন।

আমি জানতাম না কিছুই। অজান্তা আমাকে কিছুই বলেনি। আমার ভেতরেও তখন এক ভিন্ন যুদ্ধ চলছে—মাস্টার্স পরীক্ষা সামনে, দিনরাত লাইব্রেরিতে পড়ে থাকি। চোখের নিচে কালি জমে গেছে, মাথা ভার হয়ে থাকে, বইয়ের পাতা ছাড়া যেন কিছু দেখি না। ফোন হাতে নিলেও অনেক সময় ব্যাকলগে পড়ে থাকে তার মেসেজ।

অজান্তার সাথে কথা হয় খুব কম।
অজান্তা ফোনও করে না আর। তবে অভিমান নেই, অভিযোগও নয়—সে আমাকে স্পেস দিচ্ছে। আমার প্রস্তুতির সময়টুকু সে এক বিন্দুও ব্যাহত করতে চায় না। আমার মতো করে তাকেও দেখি না, ভাবিও না।

আমরা দুজনই যেন জীবনের এক মোড়ে দাঁড়িয়ে, দুদিকে হাঁটছি—তবু মনে হচ্ছে একই পথে। কিন্তু আমি জানতাম না, তার সেই নীরবতার আড়ালে কী চলছে। সে একা লড়ছে, একা কাঁদছে, একা সব সামলাচ্ছে।
আমি জানতাম না, এই সময়েই তাকে তার সবচেয়ে কাছের মানুষেরাও প্রশ্ন করছে, অপমান করছে, ঠাট্টা করছে। জানতাম না, সে নিজেকে কীভাবে বুঝাচ্ছে, কিভাবে ঠেকিয়ে রাখছে ভেতরের কান্না।

আমার ব্যস্ততা, তার নিঃশব্দতা—এই দুইয়ে জমে উঠতে লাগলো এক অদৃশ্য দূরত্ব। আমাদের মাঝে যেন কেউ নেই—তবু কতকিছু এসে দাঁড়ায়।

এই নিঃশব্দ দূরত্বের পেছনে যে এক কঠোর বাস্তবতা কাজ করছিল, সেটা ধীরে ধীরে জানা গেল।

এসবের মূল সূত্রধর—অজান্তার বাবা, সৈয়দ নজরুল ইসলাম। স্কুলশিক্ষক হিসেবে তিনি যতটা নিয়মানুবর্তী, পরিবারের কর্তা হিসেবে তার দ্বিগুণ। একরোখা, রক্ষণশীল, অনমনীয় মানুষটি যেন পরিবারের প্রতিটি সদস্যের ওপর এক ছায়ার মতো ছড়িয়ে আছেন—ভয় আর নিয়ন্ত্রণের ছায়া।

অজান্তার মা, ভাই, বোন—কেউই তাকে সহজ করে কিছু বলতে পারে না। যেন নিজের ঘরেই সবাই স্কুলের ছাত্রছাত্রী হয়ে থাকে। অভিব্যক্তি, আচরণ, এমনকি হাসির শব্দ পর্যন্ত যেন পরিমিত হতে হয়! ছেলেমেয়ের প্রেম, বন্ধুত্ব—এসব শব্দ তার অভিধানে "অপরাধ"। কারো ফোনে ছেলে অথবা মেয়ে কারো নাম দেখলে তিরস্কার অনিবার্য, এমনকি পরিবার থেকেও বের করে দেওয়ার হুমকি নতুন কিছু নয়।

আর সেখানে অজান্তা?
যে কিনা প্রেম করছে, ভবিষ্যতের সংসার পর্যন্ত কল্পনা করছে! তাঁর মতো ব্যক্তির কাছে এটা যে কেবল "অসম্ভব" নয়, বরং "অসহনীয়", সেটা বুঝতে বিশেষ বুদ্ধির দরকার পড়ে না।

অজান্তাদের যৌথ পরিবার। একই ছাদের নিচে থাকে তার ছোট ভাই, অর্থাৎ অজান্তার চাচা সৈয়দ মকবুল ইসলাম, যিনি একজন ইঞ্জিনিয়ার।
মকবুল চাচাকে নিজের সন্তানের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন নজরুল সাহেব। তাকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছেন। ভাইয়ের কথাই তাঁর কাছে শেষ কথা। বিশ্ব উল্টে গেলেও ভাইয়ের মতের বাইরে একচুলও নড়েন না তিনি।

এমন পরিবারের মধ্যে, অজান্তা আসলে এক বিদ্রোহিনী। সে জানতো—বাবা জানলে এই সম্পর্ক মেনে নেবেন না। কিন্তু তখন আমাদের ভালোবাসা তার কাছে ছিলো সত্য, ছিলো জরুরি, ছিলো বাঁচার রশ্মি।
এখন সেই রশ্মিটাই ক্রমশ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে।

আমি এসব জানতাম না তখনো।
অজান্তার জীবনে কী চলছিল, তার আন্দাজও ছিল না। আমার ব্যস্ততার আড়ালে সে একা লড়ছে বাবার চোখরাঙানির সঙ্গে, ভাইয়ের গুম মেজাজের সঙ্গে, মায়ের চাপা কান্নার সঙ্গে।

চাচার চুপচাপ উপস্থিতিও যেন বোঝাচ্ছে—এই মেয়েটার আর জায়গা নেই। তবু সে আমাকে কিছু বলেনি। কোনো অভিযোগ করেনি।
কোনো কান্না শোনায়নি। কোনোদিন ফোনে বলেনি, "আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।"

সে শুধু আমাকে সময় দিয়েছে, সুযোগ দিয়েছে। আমার স্বপ্ন পূরণের রাস্তাটা পরিষ্কার রাখতে চেয়েছে।
কিন্তু আমি এখন জানি না—এই নিঃশব্দ ত্যাগ, এই নীরব আত্মোৎসর্গ… সে কতদিন আর টানতে পারবে?

যে ঘরটা আজ অজান্তার কাছে এক যুদ্ধক্ষেত্র, সেই ঘরেই ছিল একমাত্র আশ্রয়, একটুকরো শান্তির ছায়া-
তার মা। একমাত্র অজান্তার মা কেন যেন আমাকে মেনে নিয়েছিলেন। আমাকে ভীষণ পছন্দ করেছিলেন।

সবাই যখন অজান্তাকে নিয়ে মুখে মুখে কথা বলছে, কেউ চোখের সামনে, কেউ পেছনে ফিসফিস করে; যখন বাবার কঠিন মুখ, ভাইয়ের রুঢ় দৃষ্টি, বোনের দূরত্ব—সব মিলিয়ে ঘরটা হয়ে উঠছে শ্বাসরুদ্ধকর; তখন একমাত্র ব্যতিক্রম হয়ে দাঁড়ান তার মা।
অজান্তার মা যেন এক নিঃশব্দ আশ্রয়।

অদ্ভুত এক মমতায় ভরা মানুষটি।
সবার মধ্যেই ভয় ছড়ালেও তিনি যেন বুঝতে পেরেছিলেন মেয়ের মনের দহন। তিনি জানতেন—এই সম্পর্ক, এই ভালোবাসা—স্রেফ বাল্যহঠতা নয়।
এই ছেলেটি তার মেয়েকে বোঝে, তাকে সম্মান করে, তার পাশে থাকতে চায়। আর এই ছেলেটিকে তিনি চিনতেন আগেও। সেই ছোটবেলার স্মৃতি থেকে।

আমার মায়ের সাথে তার কখনো যোগাযোগ ছিল। সম্ভবত আত্মীয়তার সূত্রে, তিনি একসময় আমার মায়ের স্নেহভাজন ছিলেন। মায়ের মৃত্যু তার মনে দাগ কেটেছিল। আমি যখন মাতৃহীন হলাম, তখন হয়তো সেই অনুভব থেকেই আমার প্রতি তার ভিতরের কোন এক জায়গায় স্নেহ জন্মেছিল।

অথবা… হয়তো নিজের মেয়ের চোখে আমি যে ভালবাসা দেখে ফেলেছি, সেটা তিনি দেখেছিলেন অনেক আগেই।

পরীক্ষা শুরু হলো আমার। লম্বা প্রস্তুতির পর, ভেতরে একরকম চাপা উত্তেজনা। নিজেকে সবদিক থেকে গুছিয়ে এনেছি। দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে পরীক্ষার হল আর লাইব্রেরির মাঝে। মোবাইলটা থাকে সাইলেন্টে, মন পড়ে থাকে প্রশ্নের ভেতর, উত্তর খোঁজার চিন্তায়।

এমন এক ব্যস্ততম সময়ে, যেখানে আমি নিজেকেই হারিয়ে ফেলেছি, সেখানে সে—অজান্তা—রোজ একটা আশার প্রদীপ হয়ে আসে। প্রতিদিন পরীক্ষা শেষে ফোনটা হাতে নিতেই দেখি, অজান্তার মেসেজ:
"কি খবর কবি মশাই? আজকের পরীক্ষা কেমন হলো?"

আমি ক্লান্ত গলায় উত্তর দিই:
— চলবে, উত্তরগুলো ভেবেছি ভালোই দিয়েছি।

— জানি, তুমি পারবে।
তারপর একটু হাসিমাখা মুখে বলে,

— তুমি পাস করলে মনে করো আমি পাস করলাম।

সে আমার সঙ্গে রোজ কথা বলে।
তাও দু–চার মিনিট মাত্র। হয়তো তার সুযোগ নেই, সময় নেই, আর মনও অনেক ভার। তবু সে আমার মুখে ক্লান্তি দেখতে চায় না। হাসিমুখে কথা বলে। ভান করে সবকিছু ঠিক আছে।
সে যেন আমার কাছে নিজেকে দৃঢ় রাখতে চায়। আমার পরীক্ষার দিনে তার মুখেই যেন সাহস খুঁজি আমি।

কতবার যে বলেছি,
— অজান্তা, তুমি আমার কথা ভেবো না এত, নিজের খেয়াল রাখো।

সে কেবল হাসে।
— আমি না থাকলে কার সঙ্গে ঝগড়া করবে তুমি? আমার এই ঝগড়াইট্টা-জংলীটাকেই যে আমি সারাজীবন জ্বালাতে চাই।

এই ছেলেমানুষি কথাগুলোই আমার দিনটাকে হালকা করে দেয়। আমি ধীরে ধীরে বুঝতে শুরু করি, সে শুধু ভালোবাসে না, সে আমাকে আগলে রাখে। একটা ছায়ার মতো পাশে থাকে—অদৃশ্য, অথচ গভীর। এটাই বুঝি ভালোবাসার আসল রূপ, সব হারিয়ে ফেলেও প্রিয়জনকে তার স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যেতে দেয়া।

সে হাসিমুখে আমার পাশে থাকে।
চাপা কষ্টের ভিতর থেকে আলো হয়ে উঠে আসে শুধু আমার জন্য। আমি বুঝি, সে আমার থেকে অনেক বেশি সাহসী, অনেক বেশি ধৈর্যশীল।

কিন্তু যতটা না সে নিজের পরিবারে যুদ্ধ করলো, তার চেয়েও বেশি সে আমার উপরে নির্ভর করলো। আমার কথা, আমার সিদ্ধান্ত—তাতে সে নিজের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে রাখলো।
এই প্রতিকূলতার মাঝেও, অজান্তার সমস্ত আশা আর ভরসার জায়গা হয়ে উঠলাম আমি...আর আমার বাবা।

সে জানে, এই দুইজনই তার আশ্রয়।
পরিবার তাকে ভুল বুঝুক, তিরস্কার করুক, দূরে ঠেলে দিক—তাতে তার কিছু আসে-যায় না। সে শুধু চায়, আমার বাবার মুখ থেকে একটা “হ্যাঁ”।

কারণ, অজান্তা জানে আমি আমার বাবার সিদ্ধান্তের বাইরে যাবো না।
সে জানে, আমার জীবন জুড়ে যে মানুষটি সবচেয়ে প্রিয়, তার কথাই আমার শেষ কথা। আর আমার বাবা যদি রাজি হন তাহলে তিনি যেভাবেই হোক অজান্তার পরিবারকে রাজি করাবেন, এই বিশ্বাস অজান্তা করেছিলো, এই বিশ্বাস নিয়েই অজান্তা অপেক্ষা করছিলো। এটাই আমার অজান্তার ভালোবাসা, নিঃশর্ত, নির্ভরশীল, এবং অবিশ্বাস্য রকমের দৃঢ়।

(অপেক্ষা- ১৩তম পর্ব © শামীম মোহাম্মদ মাসুদ)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫০

বিজন রয় বলেছেন: অপেক্ষা (১৩তম পর্ব)................. এই আগের ১২ পর্ব কি এই ব্লগে পোস্ট করেছনে?
তাহলে ১৪তম পর্ব পোস্ট দেওয়ার সময় সবগুলো পর্ব সংকলণ করে দিয়েন।

১২ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৮:০১

শামীম মোহাম্মাদ মাসুদ বলেছেন: দাদা সবগুলো পর্ব আমার ওয়ালে পাবেন। পড়তে পারেন। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.