নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শামীম আহমেদ

শামীম ক্ষ্যাপা

নিজের বিবেক কে প্রতারিত করে অন্যকে খুশি করারজন্য কথা বলা ও লেখা একটি প্রবঞ্চনা ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না। সবার সাথে প্রবঞ্চনা করা গেলেও নিজের সাথেকখনো প্রবঞ্চনা করা যায় না।

শামীম ক্ষ্যাপা › বিস্তারিত পোস্টঃ

জেগে উঠার গল্প - কাংগালী ফকির।

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৮:২৬


একটু বড় হলাম যখন!!
বলত তখন মায়৷
কাপড়-চোপড় ঠিক করে চল,
নজর পড়বে গায়৷

তখনো ঠিক বুক গজায়নি,
তবু মায়ের ভয়৷
মায়ে বলতো মেয়েরে তোর, সামলে চলতে হয়৷

মায়ের কথা বুঝিনি ঠিক! পাড়ার ছেলের দল৷
গায়ে পড়ে বলতো কথা,
চোখে খেলতো ছল৷

যখন আমার বুক গজালো,
ডাঙ্গর গতর গায়৷
নিষেধ হলো বেড়ে দ্বিগুন, ভয়ে থাকত মায়!!

হাঁটতে পথে পান্ডা ছেলের চোখে খেলত নেশা,
এদিক ওদিক তাকানো যার
নিত্য দিনের পেশা৷

মুখে থাকত লজ্জা আমার,
বুকে থাকত ভয়!!
মায়ের বাড়ন মাইয়া মাইনষের চুপ থাকিতে হয়৷

স্নানের বেলা পুকুর ঘাটে, মারত কত উকি৷
লজ্জা আমার সাড়া গায়ে
লতায় লজ্জামুখি৷

আমার কতো ইচ্ছে হতো
ডানা মেলে উড়ি
ভালবাসার আকাশটাতে ইচ্ছেমত ঘুরি৷

তবু আমি থেমে যেতাম
মায়ের কথা শুনে৷
সমাজ আমায় দেখিয়ে দেয়, থাকতে ঘরের কোনে৷

একদিন যবে স্কুল হতে,
বাড়ী ফিরছি একা৷
সেদিন আমার শরীর নিয়ে
তাদের সাথে দেখা৷

চিৎকার দেব তাও হলনা
কত আহাজারি,
উদয় হলো মায়ের কথা
আমি একটা নারী৷

যে শরীরটা নিয়ে ছিল
মায়ের এত ভয়,
সে শরীরতো হায়নার চোখে
মাংস পিন্ডময়৷

বুকের কাপড় খুলে নিয়ে
বুকে দিল হাত,
হাত নয় সে যে থাবাই দিলো, বসায় দিলো দাঁত৷

যে তল দিয়ে জন্ম ওদের
সেই তলে দেয় শূল,
শরীর নিয়ে লজ্জা মায়ের,
সবই ছিল ভুল৷

সাড়া শরীর চিবে খেল
ফাটিয়ে দিল তল,
রক্ত গেল তানা তানা
বিষিয়ে দিল জল৷

চুষে খেল শরীর খানা
জনের পরে জন,
দাঁড়াবারও শক্তি আমার ছিলনা তখন৷

কাঁদতে কাঁদতে ডেকেছিলাম, ঈশ্বর তুমি কই!!
বাঁচাও আমায় চুপ থেকোনা, মেয়ে যদি হই৷

বাঁচাইনি নির্লজ্জ্য ইশ্বর, তাকিয়েছে শুধু!!
ঈশ্বর তারা যাদের কাছে নারীর শরীর মধু৷

কোনমতে কষ্ট শয়ে
বাড়ি ফেরার পর,
মাতো আমার অর্ধমৃত
একি হলো তোর!?

দেখনা মা তোর লাজুক মেয়ের একি হল হাল!!
তোর কাছে মা তলোয়ারের
থাকতে হবে ঢাল৷

কাপড়ের পর কাপড় দিয়ে
শরীর ঢাকা যায়৷
লজ্জা ঢাকবি কি দিয়ে মা কলঙ্কিনির গায়৷

যত পারিস কাপড় দে মা
লজ্জা যদি ঢাকে,
নরপশুর লজ্জা যদি
এই কাপড়ে থাকে৷

তুইতো জানিস তোর মেয়েটা
তোর অবাধ্য নয়৷
কেন তবে এমন হবে?
এমন কেন হয়!?

তোর সমাজের কথা শুনে
রাখলি ঘরের কোনে
তোর মেয়েকে চিবিয়ে খেল
সেই সমাজের জনে৷

স্বামি-স্ত্রীর মিলন শেষে শরীর নাপাক হয়৷
স্নানে আনে পবিত্রতা
তোর ধর্ম তাই কয়৷

তবে মাগো জল ঢেলে দে
করে দেমা পাক,
কলঙ্ক মা শরীর থেকে
ধুয়ে মুছে যাক৷

আর কতদিন এভাবে মা
আড়াল হবি বল!?
কত মেয়ের আর্তনাদে
চোখে ফেলবি জল৷

উড়ার সময় তোরা মাগো
ভেঙ্গে দিবি ডানা৷ প্রতিবাদের কোন ভাষায়
নেই কি তোদের জানা?

এই ভাবেই কি বেঁচে থেকে, নারীর জীবন যাবে?
আমার ছোট্ট বোনটি ও কি
এমন সাজায় পাবে?

এভাবে আর কত মাগো
মুছে দিবি হাসি,
আমরা হব ধর্ষিতা মা
তুই মা হবি দাসী৷

মরতে গিয়ে পারিনি মা
মরবো কেন বল?
মরলে আমি পশ্রয় পাবে
ঐ কুকুরের দল!!

চিৎকার করে সমাজটাকে দেখিয়ে দি মা আয়, নির্যাতনকে লাতি মেরে পিষিয়ে দেবো পায়৷

বাঁচতে হলে আয় মা এবার বাঁচার মতই বাঁচি৷
লুকানো মা মরার সমান, বুঝিয়ে দে আছি৷

জাগুক জাতি নারী সমাজ
জাগুক যত বোন৷
আগে বাড়ো নারী তুমি
ছাড়ো ঘরের কোন৷

ফকির বলে- সালাম নারী
গুছে তুলো পাপ৷
তালা ভেঙ্গে দাও সে তোমার দাঁতভাঙ্গা জবাব....

নিজেকে আজ ধিক্কার দিয়ে একটা কথায় বলব
এটা কোন কবিতা নয়
জেগে উঠার গল্প...

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৮:৪৬

হাফিজ রাহমান বলেছেন: কবি সাহেব ! নারীরা তবে ঘরের কোণ থেকে বেরিয়ে এলেই ধর্ষণের ইতি হবে ? নারীরা নাকি এখনো জাগে নি। তাতেই সমাজের কি দশা। নারীরা সম্পূর্ণ জেগে গেলে সমাজ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা কি উপলব্ধি করতে পারছি আমরা ? আসলে নারীদের জেগে ওঠা বলতে আপনি কি বুঝাতে চান ? আপনি কাব্য-গল্পে ধর্ষণের যে বিবরণ দিলেন সেটা তো ঘটলো ঘরের কোণ থেকে বের হওয়ার কারণে। তবে ধর্ষণের প্রতিরোধ কিভাবে করবেন ? আশা করি পরিস্কার করে বলবেন। ধন্যবাদ।

২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:২০

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন:
খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন বাস্তব দৃশ্য। ধন্যবাদ।


আপনার সঙ্গে আমি অনেকটাই একমত।
দেখেন, জন্মের পর থেকেই আমরা মেয়েগুলোকে আমরা ভিতু, আবলা বলে বলে তাদেরকে এই অবস্থায় নিয়ে এসেছি। আমরা তাদের প্রথম খেলনাটাও দিয়ে থাকি পুতুল কনের ব্যাগ আর ছেলে হাতের দিয়ে থাকি খেলনার বন্দুক। এভাবে মেয়েদের চিন্তাকে দুর্বল আর
ছেলেদের চিন্তাকে সাহসী করে তুলি। আমরা বাবারা তাদেরকে মারাত্মক মগজ ধোলাই দিয়ে সমাজে দুর্বল করে রেখেছি। আর তাই আমি মনে করি এসবের জন্য প্রধানত আমরা পুরুষরাই দায়ী। আমরা সবসময় চাই আমার স্ত্রী, মা, বোন, মেয়ে সবাই আমার অধিনস্থ থাকুক। চরপম লজ্জার বিষয় কী জানেন, আমাদের সমাজের বর্তমানে যে মেয়েগুলোকে উচ্ছ শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে তার মধ্যকার অধিকাংশের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিয়ের বাজারে মেয়েকে ভাল জামাইয়ের হাতে সমর্পণ করা। খুবই কম বাবা-মামারা নিজের মেয়েকে দিয়ে সমাজ পরিবর্তনের চিন্তা করেন। শুভ কামনা থাকলো তাদের জন্য, যারা প্রকৃতার্থে সমাজ পরিবর্তনের কাজে শিক্ষার্জন করছে। আর সবসময় দু'আ করি, যেন পুরুষ জাতীর পূর্বান্ধতা দূর হয়।

৩| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:৫৩

জীবন সাগর বলেছেন: খুব সুন্দর কাব্য, ভালো লাগলো

২নং মন্তব্যে বলে যাওয়া তাজুল ভাইয়ের কথাগুলো পড়েও মুগ্ধ হলাম।

৪| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:৩২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সামাজিক অবক্ষযেরর সমসাময়িক চিত্র ফুটে উঠেছে আপনার কাব্যে।
এই ভাবেই কি বেঁচে থেকে, নারীর জীবন যাবে?
আমার ছোট্ট বোনটি ও কি
এমন সাজায় পাবে?

কত অসহায় হলে এমন
কথা বেরিয়ে আসে একজন নির্যাতিতার মুখে।

৫| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:১২

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: আপনা মাংসে হরিণা বৈরি!

৬| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:০৫

মুহাম্মদ তারেক্ব আব্দুল্লাহ বলেছেন: লেখক বলেছেন-
"যে তল দিয়ে জন্ম ওদের
সেই তলে দেয় শূল,
শরীর নিয়ে লজ্জা মায়ের,
সবই ছিল ভুল৷"

কথাটি যথার্থই হয়েছে।

লেখক বলেছেন-
"বাঁচাইনি নির্লজ্জ্য ইশ্বর, তাকিয়েছে শুধু!!
ঈশ্বর তারা যাদের কাছে নারীর শরীর মধু৷

ইশ্বর মানে আমরা বুঝি আমাদের সৃষ্টিকর্তা, সৃষ্টিকর্তাকে "নির্লজ্জ্য" উপাধি দেয়া আমার কাছে ভালো লাগেনি, ভাগ্য বলে আমাদের জীবনে একটা শব্দ আছে ভাগ্যের মধ্যে ভালো-খারাপ দুটো দিকই থাকে। আমাদের সাথে ভালো কিছু হলে ইশ্বরকে ভালো বলা আর খারাপ কিছু হলে কটু শব্দ ব্যবহার করা এটা নিতান্তই স্বার্থপরের পরিচয় বহন করে। সবসময় আমাদের সাথে ভালো কিছুই হবে তা তো না, ভালো খারাপ দুটো মিলিয়েই তো জীবন। তবে সবসময় আমাদের সচেতনতার সাথে চলাফেরা করতে হবে, বেপরোয়া চলাফেরা করার দ্বারা দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রবল থাকে।

যাইহোক লিখনী ভালো ছিল। শুভকামনা রইলো আপনার প্রতি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.