নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শ্রেষ্ট হওয়ার জন্য শেষ হচ্ছি।।সেই ছোট থেকেই বেড়ে চলেছি আমি তাও জানি এই বেড়ে উঠার ফলেই এক সময় নিংশ্বেষ হয়ে যাব।আকাশে চাঁদ দেখে অবাক হই না, কিভাবে জুলে আছে ঐ শূন্যে! আমি অবাক হই চাদটাকে কে এত সুন্দর নিয়মে বেধে দিয়েছে।

ব্লগার শান্ত

শ্রেষ্ট হওয়ার জন্য শেষ হচ্ছি

ব্লগার শান্ত › বিস্তারিত পোস্টঃ

কথা দিলাম…………

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:২১

আজ সকালের ঘুম হঠাৎ করে ভেংগে গেল। বুঝলাম না কেন ঘুম ভাঙ্গলো? ঘুম ভাঙ্গলেও
উঠতে ইচ্ছে করছে না। আজ প্রতিদিনের মতো রাত করে ঘুমিয়েছি। কিন্তু আজ ভোরে শারীরিক ও
মানসিক ধকলও কম যায় নি। তাই উঠতে ইচ্ছে করছে না, আবার ঘুমাতে ইচ্ছে করছে।
নাহ্ বাহিরে লোকজনের কথার বেশ আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে,অবশ্য আজ পাবারো কথা। ফ্রেশ
হয়ে এসে এককাপ চা নিয়ে বারান্দায় যাবার পথে মা বলে উঠলো।
মা : জানিস? ঐ ফ্লাটের অল্প নাকি আত্মহত্যা করেছে।
আমি ইচ্ছে করে অভ্যাসমত বললাম কোন অল্প?
মা বিরক্তির সুরে বলল :আরে ছয়তলায় থাকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ে না? সারাদিন মটরসাইকেল
নিয়ে ঘুরে লম্বা ফর্সা করে ছেলেটা।
আমি অনাগ্রহের সাথে বললাম :ও আচ্ছা।
আম্মু আমার স্বভাব জানেন তাই আগ্রহ হারিয়ে আর কথা বাড়ালেই না।
আমি দেখলাম লোকজনের ভীর হালকা হয়ে আসছে। শুনলাম
লাশটাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে পোস্টমর্টেম এর জন্য।
বারান্দায় আর ভাল লাগছিল না। ঘরে এসে শুয়ে থেকে ফেসবুকে লগ ইন করলাম।
বার্থডে নোটিফিকেশন এসেছে একটা। জানি কার তবুও উইশ করলাম না। শুধু চেয়ে রইলাম ছবিটার
চোখের দিকে।
যেমনটি রয়েছিলাম প্রতিটি ক্লাশে স্যারের চোখকে ফাঁকি দিয়ে। মোড়ের দোকানে সবার
অলক্ষ্যে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে। বাসার দোতলার গ্রিল ধরে তোমার
চোখে তাকানো ব্যর্থ চেস্টা করে। হয়তোবা কোচিং এর ক্লাশের শেষ বেঞ্চে বসে।
কতদিন স্কুলের পড়া ভুলে গেছি,চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে জীভ পুড়িয়ে ফেলেছি,কতদিন ভোরে ঘুম
থেকে উঠেছি,কতদিন কোচিং এর পড়া দিতে পারিনি তোমাকে দেখব বলে তার হিসাব
যে এখনো অসীম।
নাহ্ আমিতো শুধু তাকিয়ে থেকেছি। তোমায় স্পর্শ করিনি। তোমার সাথে কথাও বলিনি।
আমি কেমন যেন ঘোরের মধ্য থাকতাম। জানি না তোমাকে ছাড়া সবকিছু রংহীন,
আনন্দহীন ,অর্থহীন লাগতো।
নাহ্ আমি সেদিনও কিছু বলেনি যেদিন তুমি অল্পের বাইকে করে কোচিং এ এসেছিলে। সেদিনও
কিছু বলেনিযেদিন তুমি অল্পের সাথে পার্কে এসেছিলে। আমি সেদিনও ছিলাম নির্বাক যেদিন
তোমার আর অল্পের সাথে আমাদের বাসায় সিঁড়িতে দেখা হয়ে ছিল আমার সাথে।
আমি তাকিয়ে ছিলাম তোমার হাঁসি মাখা মুখের সুখী ঐ দুটি চোখের দিকে।
তুমি যখন অল্পের ফ্লাটের দরজার আড়ালে গেলে তখন সবকিছু ঝাপসা লাগছিল কেন জানি না।
জানো মা আমাকে খুব বকলে ঐরকম সবকিছু ঝাপসা লাগতো। কিন্তু সেদিন তো আমাকে কেউ
বকে নি। কেউ কেউই বকে নি। তবু ঝাপসা লাগছিল।
তারপর,মোড়ের মামার কাছে যখন প্রথম সিগারেট চেয়েছিলাম কেমন জানি অবাক হয়েছিলেন
জানি না কেন?
তারপর থেকে তুমি স্কুলে আসনা। সকালে হাঁটতে বের হও না,কোচিং এও আসনা কেন? তোমার
আম্মু কি তোমায় বকেছিল?
জানো সেদিন অল্পের বাইকের পিছনে নিহাকে দেখলাম।পার্কেও দেখলাম ওদেরকে সেদিন।আচ্ছ
তুমি কি চেন নিহাকে?
জান তোমার অনুপস্থিতিতে আমার সিগারেটের মাত্তাও বারিয়ে দিয়েছে। আজকে না মা খুব
বকেছে। আমাকে আর হাত খরচ দিবে না। আমি নাকি শুধু সিগারেট খাই। আচ্ছা সিগারেট
খেতে যে আমার ভাল লাগে আম্মু কেন বোঝে না?
জানো সেবার তোমার জন্মদিনে তোমাকে প্রপোজ করবো ভেবেছিলাম। কিন্তু জানতাম
না কিভাবে প্রপোজ করবো শুধু টিভিতে দেখেছিলাম। জান সেবার আমি আম্মুর কাছ
থেকে হাজার টাকাও নিয়েছিলাম ফুল কিনব বলে।
জানো সেদিন দোকান থেকে খুঁজে বড় বড় লাল গোলাপ নিয়েছিলাম। দোকানদার আঙ্কেল না খুব
বিরক্ত হয়েছিল। আচ্ছা সেদিন না তোমার বাসায় খুব ভীড় ছিল। আঙ্কেল, আন্টিও খুব কাঁদছিল।
আমিও খুব কেঁদেছি তুমি কি দেখতে পেয়েছিলে?
সবাই বলছিল তুমি নাকি আত্মহত্যা করেছ। কিন্তু কেন করেছিলে? জানো মা বলছিল তোমার
পেটে নাকি বাবু ছিল? আর এজন্য নাকি তুমি নাকি মারা গেছ। আচ্ছা তুমি আত্মহত্যা করলে কেন
আমার খুব ইচ্ছে ছিল তোমার বাবুকে আদর করার। আমি না বাবুকে খুব চকলেট কিনে দিতাম,
ঘুরতে নিয়ে যেতাম, খেলা করতাম।
জানো আজ না অল্পও মারা গেছে। সবাই জানে অল্প আত্মহত্যা করেছে। শুধু আমি জানি সত্যিটা।
নাহ্ সত্যিটা আমি কাউকে বলব না। সত্যি বলছি কাউকে বলব না। গড প্রমিজ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.