নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শ্রেষ্ট হওয়ার জন্য শেষ হচ্ছি।।সেই ছোট থেকেই বেড়ে চলেছি আমি তাও জানি এই বেড়ে উঠার ফলেই এক সময় নিংশ্বেষ হয়ে যাব।আকাশে চাঁদ দেখে অবাক হই না, কিভাবে জুলে আছে ঐ শূন্যে! আমি অবাক হই চাদটাকে কে এত সুন্দর নিয়মে বেধে দিয়েছে।

ব্লগার শান্ত

শ্রেষ্ট হওয়ার জন্য শেষ হচ্ছি

ব্লগার শান্ত › বিস্তারিত পোস্টঃ

"রণাঙ্গন থেকে বলছি"

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:৪৫


.

.
গুটগুটে অন্ধকার . .
পুরো এলাকাটা জনমানব শুন্য । এমনকি ঝিঁঝিঁপোকারাও ভয়ে স্তব্ধ হয়ে গেছে । এক ভয়ংকর নিরবতায় আচ্ছন্ন চারপাশটা । গতকালই মিলিটারিরা এখানে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে । মায়ের সাথে দেখা করতে বাড়ির পথে রওয়ানা দিয়েছিলাম । কতদিন মায়ের মুখটা দেখি না . . ।
কিন্তু এখন মনে হচ্ছে মায়ের সাথে আর কোনদিনই দেখা হবে না । চারপাশে মিলিটারিরা টহল দিচ্ছে । এখান থেকে জান নিয়ে বের হতে পারব বলে মনেহয় না ।
.
আপাতত বাড়ি যাবার চিন্তা আমার মাথায় একদমই নেই । মায়ের সাথে দেখা করার কথাও বেমালুম ভুলে গেছি । মাথায় এখন একটাই চিন্তা , কিভাবে ঐ লাশ তিনটা কবর দেয়া যায় . . ।
.
গতকাল সন্ধ্যায় যখন নদী সাঁতরে এখানে আসি , তখন এই বাড়িতেই উঠেছিলাম । ভেজা লুঙিটা চেন্জ করা জরুরী হয়ে পড়েছিল । কিন্তু উঠোনে পা রাখতেই আমার শরীর যেন বরফ হয়ে গেল ! গত পাঁচ মাসে অনেক নৃশংসতা দেখেছি । কিন্তু এমনটা আগে দেখিনি । তিনটি বিভত্‍স মানবদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে !
.
বৃদ্ধের কংকালসার খোলা বুকে অসংখ্য ছিদ্র , ছিদ্রগুলোর চারপাশে ছোপছোপ জমাটবাঁধা রক্ত ! রক্তাক্ত চোখদুটোকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে কোঠর থেকে বের করে ফেলা হয়েছে !
.
বুড়িমায়ের কপালের বা-পাশে কালো একটা গর্ত ! যেখানে ছোট বেলায় মা আমাকে কাজলের টিপ লাগিয়ে দিত ঠিক সেই জায়গায় । লাল রক্ত শুকিয়ে কালো হয়ে গেছে । বুলেট তাঁর মাথা ভেদ করে পিছনের দিক দিয়ে বেরিয়ে গেছে । বুড়িমায়ের মাথাটা কিছুক্ষনের জন্য কোলে তুলে নিলাম । হঠাত্‍ যেন মনেহল আমার নিজেরই মা ।
একটা বুকফাঁটা চিত্‍কার দিতে ইচ্ছে করছিল . . 'ক্ষমা করে দিস রে মা . . তোর এই অভাগা সন্তান তোকে বাঁচাতে পারলো না . . ।,
.
কিশোরী মেয়েটার গায়ে একটা সুঁতা পর্যন্ত নেই ! পুরো শরীরজুড়ে নখের আঁচড় , কিছুকিছু জায়গায় কামড়ের গভীর দাগ !
দু-পা ওয়ালা জানোয়াররা যে কতটা ভয়ংকর হতে পারে , এই মৃত দেহগুলো তারই জীবন্ত সাক্ষী ।
.
ভেবেছিলাম গতকালই লাশগুলোকে কবর দিয়ে দেব , কিন্তু পারিনি । দুজন মিলিটারী টহল দিতে দিতে এদিকেই আসছিল । তাই বাধ্য হয়েই পাশের এই ইক্ষু ক্ষেতে লুকাতে হয়েছিল ।
.
সেই যে সন্ধ্যায় এখানে ঢুকেছি , আর বেরুতে পারিনি । গোটা রাত থেমে থেমে গুলির শব্দ শুনেছি । আমার ধারনা এই গ্রামে মিলিটারিদের হত্যাযজ্ঞের খবরটা মুক্তিবাহিনীর কানে পৌঁছে গেছে । এতক্ষনে হয়ত কাদের ভাইয়ের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে । আমি জানি এই এলাকাটা কাদের ভাইয়ের আন্ডারে ।
.
কাদের ভাই সম্পর্কে আর কি বলব . . উনি সবসময় মাথায় কাফনের কাপড় পড়ে থাকতেন । ভয়াবহ যুদ্ধের ভিতরেও তিনি এক ওয়াক্ত নামাজ মিস দিতেন না । যুদ্ধের ময়দানে দাড়িয়ে উনি নামাজ পড়েছেন , এরকম বহু ঘটনার কথা আমি শুনেছি ।
তোরা কাদের ভাইরে চিনতে পারিস নাই ! একবার যদি কাদের ভাইয়ের সামনে পড়তি , জামা-কাপড় সব নষ্ট করে ফেলতি ! মনে রাখিস ! একটাও জান নিয়ে ফিরতে পারবি না ! কাদের ভাই সবকটারে কাঁচা খেয়ে ফেলবে !
.
বিপদ যখন আসে সব দিক দিয়েই আসে । যদি রাইফেলটা হাতে থাকতো এখন . . একটানে সবকটারে আমি নিজেই ফেলে দিতাম । নদী পার হবার সময় কোন ফাঁকে যে জিনিসটা পড়ে গেছে টেরই পাইনি ।
.
রাত যত শেষের দিকে যাচ্ছে , গোলাগুলির আওয়াজ ততই বেড়ে চলেছে । বুঝতে পারলাম ফাইনাল খেলা শুরু হয়ে গেছে । কাদের ভাই তার দলবল নিয়া ঝাপিয়ে পড়েছে । এদিকে আমার হাতে চুলকানি শুরু হয়ে গেছে , কেন যে জিনিসটা নদীতে ফেলে আসলাম ! সবাই ঐদিকে জান-প্রান দিয়ে লড়ছে , আর আমি এখানে বসে বসে কান-সুখ করছি !
নিজের বোকামির জন্য এখন নিজের কপালেই গুলি করতে ইচ্ছে করছে !
.
হঠাত্‍ করেই লাশগুলোর কথা মনে পড়ল ! কবর দেয়ার কথা বেমালুম ভুলে গেছি !
না , এভাবে চোরের মত এখানে লুকিয়ে থাকলে চলবে না । গতকাল বুড়িমায়ের মাথা ছুঁয়ে কথা দিয়ে এসেছি । যে করেই হোক লাশগুলোকে কবর দিতে হবে । অন্তত একটা গর্ত করে মাটিচাপা দিতে পারলেও হবে ।
আমি কিছুতেই আমার মা-বোনের লাশ শিয়ালের মুখে তুলে দিতে পারি না ! আমার বাবার লাশ নিয়ে কুকুরের দল টানাটানি করবে . . এটা আমি কিছুতেই হতে দেব না । যা হবার হবে !
.
চুপিচুপি ক্ষেত থেকে বেরিয়ে এলাম । এদিকে এখন কেউ আছে বলে মনেহয় না । সব শালারা কাদের ভাইদের ঠেকাতে ব্যাস্ত ।
.
ঘরের এককোনে কোঁদালটা রাখা ছিল , গতকাল দেখেছিলাম । তাই ওটা খুঁজে নিতে খুব একটা কষ্ট হয় নি । বারবার চারপাশে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হচ্ছিল , কোন দিক থেকে বিপদ আসে বলা মুশকিল । কিছুক্ষনের ভিতর কিভাবে যেন একটা বড় সাইজের গর্ত খুড়ে ফেললাম । তারপর একসাথে ওদেরকে শুইয়ে দিলাম । বুড়ো-বুড়ি দুইপাশে , আর মাঝখানে মেয়েটি ।
.
মেয়েটির গায়ে জড়ানো আমার চাদরটির মায়া ছাড়তে খুব কষ্ট হচ্ছিল । কারন চাদরটি মা নিজের হাতে আমাকে পড়িয়ে দিয়েছিলেন , একটি দিনের জন্যও আমি ওটা গা থেকে খুলিনি । চাদরটা গায়ে জড়ালেই কেমন একটা প্রশান্তি অনুভব করি । যেন 'মা ' আমাকে জড়িয়ে রেখেছেন পরম মমতায় . .
মা যদি জানতে পারেন 'তার ছে

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:২১

ঘূর্নী বলেছেন: ... অসমাপ্ত কাহিনী ....

২| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:০৪

ব্লগার শান্ত বলেছেন: হুম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.