![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বপ্ন দেখি, মিশে গেছি এই বাংলার এই সংস্কৃতিতে! স্বর্গ মোহে ধরে না আমায়।
আজ শুভ রথ যাত্রা।
রথ যাত্রা নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত,
আজ রথ যাত্রার কাহিনী এবং কখন পালিত হয় তা জানাব।
কৃষ্ণ তাঁর ভক্ত রাজা ইন্দ্রদ্যন্মুর
সম্মুখে আবিভূর্ত হয়ে পুরীর সমুদ্রতটে
ভেসে আসা একটি কাষ্ঠখণ্ড দিয়ে তাঁর মূর্তি
নির্মাণের আদেশ দেন। মূর্তিনির্মাণের
জন্য রাজা একজন উপযুক্ত কাষ্ঠশিল্পীর
সন্ধান করতে থাকেন। তখন এক রহস্যময়
বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ কাষ্ঠশিল্পী তাঁর সম্মুখে
উপস্থিত হন এবং মূর্তি নির্মাণের জন্য
কয়েকদিন সময় চেয়ে নেন। সেই
কাষ্ঠশিল্পী রাজাকে জানিয়ে দেন মূর্তি
নির্মাণকালে কেউ যেন তাঁর কাজে বাধা না
দেন। বন্ধ দরজার আড়ালে শুরু হয় কাজ।
রাজা ও রানি সহ সকলেই নির্মাণকাজের
ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
প্রতিদিন তাঁরা বন্ধ দরজার কাছে যেতেন এবং
শুনতে পেতেন ভিতর থেকে খোদাইয়ের
আওয়াজ ভেসে আসছে। ৬-৭ দিন বাদে
যখন রাজা বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন এমন সময়
আওয়াজ বন্ধ হয়ে যায়। অত্যুৎসাহী রানি
কৌতুহল সংবরণ করতে না পেরে দরজা খুলে
ভিতরে প্রবেশ করেন। দেখেন মূর্তি
তখনও অর্ধসমাপ্ত এবং কাষ্ঠশিল্পী
অন্তর্ধিত। এই রহস্যময় কাষ্ঠশিল্পী ছিলেন
দেবশিল্পী দিশ্বকর্মা। মূর্তির হস্তপদ
নির্মিত হয়নি বলে রাজা বিমর্ষ হয়ে পড়েন।
কাজে বাধাদানের জন্য অনুতাপ করতে
থাকেন। তখন দেবর্ষি নারদ তাঁর সম্মুখে
আবির্ভূত হন। নারদ রাজাকে সান্ত্বনা দিয়ে
বলেন এই অর্ধসমাপ্ত মূর্তি পরমেশ্বরের
এক স্বীকৃত স্বরূপ।
রথযাত্রা হিন্দুদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এতে রথের ওপর দেবতাদের
মূর্তি স্থাপন করে রথ চালানো হয়। বিভিন্ন পুরাণে বিভিন্ন দেবদেবীর রথযাত্রার
উল্লেখ আছে, যেমন: ভবিষ্যপুরাণে সূর্যদেবের রথযাত্রা, দেবীপুরাণে মহাদেবীর
রথযাত্রা, পদ্মপুরাণ, স্কন্দপুরাণ ও ভবিষ্যোত্তরপুরাণে বিষ্ণুর রথাযাত্রা বর্ণিত
হয়েছে। বিভিন্ন দেবদেবীর রথযাত্রার সময়কালও বিভিন্ন; কোথাও বৈশাখ মাসে,
কোথাও আষাঢ় মাসে, আবার কোথাও কার্তিক মাসে রথযাত্রার অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।
এই অনুষ্ঠান হয় আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে, আর একাদশী তিথিতে হয়
প্রত্যাবর্তন বা ফিরতি রথ। অর্থাৎ রথটি প্রথম দিন যেখান থেকে টেনে নিয়ে যাওয়া
হয়, আটদিন পরে আবার সেখানেই এনে রাখা হয়। একেই বলে উল্টা রথ।
পুরীর রথ যাত্রা-
প্রতি বছর রথযাত্রার উদ্বোধন
করেন সেখানকার রাজা। রাজত্ব না থাকলেও বংশ পরম্পরাক্রমে পুরীর রাজপরিবার আজও আছে। ওই
রাজপরিবারের নিয়ম অনুসারে যিনি রাজা উপাধি প্রাপ্ত হন, তিনি অর্থাৎ পুরীর রাজা জগন্নাথ, বলভদ্র ও
সুভদ্রাদেবীর পর পর তিনটি রথের সামনে এসে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান ও সোনার ঝাড়ু দিয়ে রথের
সম্মুখভাগ ঝাঁট দেওয়ার পরই পুরীর রথের রশিতে টান পড়ে। শুরু হয় জগন্নাথদেবের রথযাত্রা।
তিনটি আলাদা আলাদা রথে যাত্রা করেন জগন্নাথ,
বলরাম, শুভদ্রা। জগন্নাথের রথের নাম
নন্দীঘোষ,পতাকায় কপিরাজ হনুমানের মূর্তি আঁকা
রয়েছে তাই এই রথের আর একটি নাম কপিধ্বজ ।
৪৪.২ ফুট উচ্চ রথে থাকে ১৬টি চাকা।
বলরামের রথের নাম তলধ্বজা। ৪৩.৩ ফুট উচ্চ রথে
থাকে ১৪টি চাকা।
তৃতীয় রথের নাম দেবদলনা।১২ চাকার এই রথের
উচ্চতা হয় ৪২.৩ ফুট।
প্রতিটি রথে থাকে ৯ জন করে পার্শ্বদেবতা। চারটি
করে ঘোড়া এবং সারথি।।
বলরামের রথের চারটি ঘোড়ার রংহয় কালো , এদের
নাম যথাক্রমে তীব্র ,ঘোড়া ,দীর্ঘশর্মা এবং
স্বর্ণনভা । সারথির নাম মাতলি। যে দড়িটি ধরে টানা হয়
তার নাম বাসুকি ।রথের আবরণের রঙ নীল।
জগন্নাথের রথে থাকে চারটি সাদা রংয়ের ঘোড়া ।
এদের নাম যথাক্রমে শঙ্খ, বহ্লক, শ্বেত,
হরিদাশ্ব। সারথির নাম দারুক । টানা দড়ির নাম শঙ্খচূড় ।
রথটির আবরণের রঙ হলুদ।
শুভদ্রার রথে থাকে চারটি লাল ঘোড়া ।নাম রচিকা ,মচিকা
,জিতা ,অপরাজিতা । সারথির নাম অর্জুন । টানা দড়ির নাম
স্বর্ণচূড়া ।রথের আবরণের রঙ লাল।
এখন তিনটি রথ ব্যবহৃত হলেও আজ থেকে সাতশো
বছর আগে রথযাত্রার যাত্রাপথ দুটিভাগে বিভক্ত ছিল।
আর সেই দুটি ভাগে তিনটি-তিনটি করে মোট ছটি রথ
ব্যবহৃত হত। কেননা সে সময় জগন্নাথ মন্দির
থেকে গুণ্ডিচা আসার পথটির মাঝখান দিয়ে বয়ে যেত
এক প্রশস্ত নালা। নাম ছিল বলাগুণ্ডি নালা। তাই
জগন্নাথ মন্দির থেকে তিনটি রথ বলাগুণ্ডি নালার পার
পর্যন্ত এলে পরে জগন্নাথ, বলভদ্র ও শুভদ্রার
মূর্তি রথ থেকে নামিয়ে নালা পার করে অপর পারে
অপেক্ষমাণ অন্য তিনটি রথে বসিয়ে ফের যাত্রা শুরু
হত। ১২৮২ খ্রিস্টাব্দে রাজা কেশরী নরসিংহ পুরীর
রাজ্যভার গ্রহণের পর তাঁর রাজত্বকালের কোনও
এক সময়ে এই বলাগুণ্ডি নালা বুজিয়ে দেন। সেই
থেকে পুরীর রথযাত্রায় তিনটি রথ।
এই পুরী জগন্নাথ মন্দিরের কিছু
উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট আছে। যা অবিশ্বাস্য,
অভাবনীয় তবে প্রচলিত।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের কিছু অজানা তথ্য(প্রচলিত)
জেনে নিন -
১ঃ মন্দিরের চূড়ায় যে পতাকাটি লাগানো রয়েছে তা
সবসময় হাওয়ার বিপরীত দিকে ওড়ে।
২ঃ পুরীর যে কোনও জায়গা থেকে তাকালে
মন্দিরের চুড়ার সুদর্শন চক্র আপনার সম্মুখীন
থাকবে।
৩ঃ কোনও পাখি বা বিমান পুরী মন্দিরের উপর দিয়ে
উড়তে পারে না।
৪ঃ মন্দিরের সবচেয়ে বড় প্রাসাদটির ছায়া দিনের
যে কোনও সময় অদৃশ্য থাকে।
৫ঃ পুরী মন্দিরের সবচেয়ে অবিশ্বাস্য বৈশিষ্ট হল
প্রসাদ। সারা বছর ধরেই সমপরিমান প্রসাদ রান্না
করা হয়। কিন্তু ওই একই পরিমান প্রসাদ দিয়ে
কয়েক হাজার মানুষ হোক বা ২০ লক্ষ মানুষকে
খাওয়ানো হোক তবু প্রসাদ কখনও নষ্ট হয় না
বা কখনও কম পড়ে না।
দেশবিদেশে রথযাত্রা -
১৯৬৮ সাল থেকে ইসকন হরে কৃষ্ণ আন্দোলনের
ফলশ্রুতিতে সারা বিশ্বের বিভিন্ন শহরে রথযাত্রা শুরু
হয়। এই সংঘের নেতা এ সি ভক্তিবেদান্ত স্বামী
প্রভুপাদ লন্ডন , মন্ট্রিঅল , প্যারিস, বার্মিংহাম, নিউ
ইয়র্ক সিটি, টরোন্টো, সিঙ্গাপুর , সিডনি , পার্থ ,
ভেনিস প্রভৃতি শহরে রথযাত্রা উৎসবের জনপ্রিয়তা
বৃদ্ধি করতে সক্ষম হন। [১] ঢাকা ইস্কন রথযাত্রা,
স্বামীবাগ (৯দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান ও লক্ষাধিক ভক্তের
সমাগম) [২] ধামরাই রথযাত্রা বাংলাদেশের সর্বাধিক
গুরুত্বপূর্ণ রথ উৎসব।
২| ২৫ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৫
জাহিদ হাসান বলেছেন: ভালো লাগল।
৩| ২৫ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৫
শান্ত মজুমদার বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয়
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৯:৫০
ঋতো আহমেদ বলেছেন: Nice post.