![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হাত বাড়িয়ে চাঁদের দিকে আমি একা দাঁড়িয়ে ছিলাম জোস্ন্যায়, খোলা মাঠে
এক যুগ পার হয়ে যায়, আমি চাঁদের আসা আর যাওয়া দেখি
এক যুগ পার হয়, আমি অন্ধকার আর আলোয়, বৃষ্টি আর রোদে দাঁড়িয়ে থাকি একা।
এরপর প্রায় উচ্ছন্নে যাওয়া একটা ছেলে একদিন আমার কাছে এলো
আমার বাড়ানো হাত, জোস্ন্যা রাত দেখে পাশের একটা পাথরে বসলো।
স্বগতোক্তির মতো করে বললো - আমার একটা নদী ছিল
আমরা নিজেদের অনেক বেশি ভালোবাসতাম।
নদীর পানিতে পা ডুবায় বসে থাকতাম রাত-দুপুর-দিন।
কিন্তু আমি সাঁতার পারতাম না।
ভাবতাম সাঁতার জানলে বুঝি অনেক বেশি সুখী হবো আমরা, থাকতে পারবো নদীর আরো কাছে।
একদিন তাই বের হলাম সাঁতার শিখবো বলে,
আমার সাঁতার শিখতে লাগলো পুরো দুইটা বছর
কিন্তু ততদিনে আমার নদী আর আমার নাই।
সাঁতার শেখাই যেন ডুবায় মারলো আমাদের ভালোবাসা।
আমি ছেলেটার পাশে বসি, আমরা নিজেদের অনেক কথা বলি,
ছেলেটার ব্যথাগুলো নীল, মনের ভিতরে কেবলই অবসাদ।
আমার কোনো চেষ্টাই তাকে টেনে আনতে পারে নি ওই নীল ব্যথার দুনিয়া থেকে।
ছেলেটা একদিন চলে যায়।
আমি আবারো ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকি হাত বাড়িয়ে চাঁদের দিকে।
আমার জানা হয়ে গেছে, চাঁদ যদি ধরাও দেয়, আমিই তাকে রাখতে পারবো না ধরে আজীবন।
এক যুগ পার হয়ে যায়, একটা মেয়ে আসে ঐ মাঠে।
দূর থেকে আমাকে দেখে অনেক অনেক দিন।
একদিন কাছে আসে, মেয়েটা আমার কাছে ভালোবাসা চায়।
শীতের নরম রোদ যেন মেয়েটা।
আমি ওর হাতটা ধরি। সে আমাকে তার গল্প বলে।
কবে কোথায় ও নিজের একটা সত্তা হারায় ফেলে।
এখন সে তার প্রিয় অরণ্যের সাথে সুখেই থাকে,
কিন্তু হারানো সেই সত্তার জন্যে তার মনটা দিশেহারা।
অদ্ভুত আরেক নীল বেদনার গল্প। সব থেকেও কী যেন নাই তার।
আমি তার নরম রোদের ওমে
আর সে আমার বন্যতায়, আমরা সেই মাঠে শুয়ে থাকি অনেকদিন।
আমি জানি মেয়েটার নিজের একটা বন আছে, মেয়েটা জানে আমি চাঁদের অপেক্ষায় থাকি -
আমরা কেউই কারো নই, তবু আমরা নিজেদের নিয়ে থাকি কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই।
এক যুগ পরে আমি আবারো চাঁদের দিকে হাতটা বাড়ায় দাঁড়িয়ে থাকি।
এখন মনে হয় চাঁদটাও যেন খুঁজে কিছু।
কি খোঁজে ওই চাঁদ?
জানলে হয়তো মহাবিশ্বের কোনো এক অচেনা কোনায় গিয়ে
চাঁদের জন্য এনে দিতাম তাই।
আমার জানা নাই।
আমি তাই খোলা মাঠে দাঁড়িয়ে থাকি জোস্ন্যায়, হাত বাড়িয়ে চাঁদের দিকে - একা।
©somewhere in net ltd.