![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কুকুরের কথা শুনলেই আমরা অনেক নাক কুঁচকে ফেলি। শুধু তাই না, রাস্তার কুকুরগুলো যখন ক্ষিধের জ্বালায় আমাদের কাছে একটু অনুনয় জানাতে আসে, আমরা তো তাকে দূর দূর করেই তাড়িয়ে দেই। কিন্তু আজ আপনাদের শোনাবো এক কুকুর আর মানুষের এক অদ্ভুত সম্পর্কের কাহিনী। গল্পের মত হলেও এ সত্যের চেয়েও করুন!
অন্যান্য দিনের মতই বাড়ি ফিরছিলেন জাপানের টোকিও ইউনিভার্সিটির প্রোফেসর হিদেসাবুরো উনো Hidesaburō Ueno। যেতে যেতে পথে হঠাত ছোট্ট একটা কুকুরের বাচ্চাকে অসহায়ের মত হাঁটতে দেখে ভারী মায়া হয় তাঁর। এদিক ওদিক খুঁজেও কোথাও কুকুরের মা বা মালিক কাউকেই দেখতে পান না তিনি। তিনি হাঁটতে গেলেই কুকুরটাও পিছু নেয় তাঁর। অগত্যা বাচ্চাটাকে নিয়েই বাড়ি ফেরেন তিনি। প্রফেসরের স্ত্রী মোটেই সহ্য করেত পারতেন না কুকুর। তাই তিনি কুকুরটাকে লুকিয়ে রাখেন ঘরের বাইরে আরেকটি স্থানে। কিন্তু কিছুদিন পরেই স্ত্রীর হাতে ধরা পড়ে যান তিনি। কিন্তু কুকুরছানাটির প্রতি প্রফেসরের ভালোবাসা দেখে স্ত্রীও মেনে নেন কুকুরটিকে। প্রফেসর কুকুরটির নাম রাখেন “হাচিকো”...জাপানিজ ভাষায় “হাচি” অর্থ আট এবং “কো” অর্থ রাজপুত্র।
প্রফেসরের বিশ্ববিদ্যালয় ছিল শহর থেকে বেশ দূরে। তাই তিনি ভোরে বেরিয়ে যেতেন এবং স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে চেপে যেতেন বাকিটা পথ। হাচিকোও রোজ যেতো তার সাথে আবার রাতে প্রফেসর ফেরার আগেই এক দৌড়ে পৌঁছে যেত স্টেশনে। সেখান থেকে একসাথে তারা বাড়ি ফিরতো। এভাবেই পরিবারের একজন সদস্য হয়ে উঠেছিলো হাচিকো। স্টেশনের সবাই অল্প কিছুদিনেই চিনে ফেলেছিল প্রফেসরের এই ছোট্ট বন্ধুটিকে।
এভাবেই পেরিয়ে গেল একটি বছর। ১৯২৫ সালের মে মাসের এক সকাল। বরাবরের মতই প্রফেসর বেরুচ্ছিলেন ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস করাবেন বলে। কিন্তু সেদিন কেন যেন হাচিকো সকাল থেকেই খুব চিৎকার করছিল। বার বার প্রফেসরের পোষাক দাঁত দিয়ে কামড়ে টেনে ধরছিল, যেন আজ কিছুতেই যেতে দেবে না তাঁকে। স্টেশনে গিয়েও খুব চীৎকার শুরু করে কুকুরটি। প্রফেসর ট্রেনে উঠে যান। আর ফেরা হয়নি তাঁর। সেরিব্রাল হ্যামারেজ অর্থাৎ হঠাৎ মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ হয়ে মারা যান তিনি।
এদিকে অন্যান্য দিনের মতই হাচিকো রাতে স্টেশনে অপেক্ষা করতে থাকে। অন্য পথে প্রফেসরের কফিন মোড়ানো মরদেহ এসে পৌঁছায় তার বাসায়। কিন্তু হাচিকো অপেক্ষা করতেই থাকে। এর কয়েক দিন পর কুকুরটিকে প্রফেসরের পরিবার বাসায় নিয়ে যায়।কিন্তু হাচিকো কিছুতেই থাকতে চাইতো না। সে এসে বসে থাকতো স্টেশনে, তার বিশ্বাস, প্রফেসর ফিরবেনই! একটু দেরী হচ্ছে হয়তো!
প্রফেসরের মৃত্যুর ৭ বছর পর তাঁর এক ছাত্র জানতে পারে প্রফেসরের এই কুকুরটির এখনো অপেক্ষা করে থাকার কথা। সে শিবুয়া স্টেশনে কুকুরটিকে দেখতে আসে ও আশপাশের লোকজন ও প্রফেসরের বাগানের পুরোনো মালীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে “Tokyo Asahi Shimbun” নামক পত্রিকায় প্রকাশ করে। এর পরপরেই হাচিকোর কাহিনী জাতীয়ভাবে সবার নজরে আসে। এবং সে হয়ে ওঠে বিশ্বস্ততার এক জাতীয় প্রতীকে।
এভাবেই কেটে যায় ৯ টি বছর! নিঃসঙ্গ কুকুরটি একা একাই স্টেশনে বসে অর্ধাহারে, অনাহারে কাটিয়ে দেয় তার জীবনের শেষ দিনগুলিও তার প্রভুর প্রতীক্ষায়।
১৯৩৫ সালের ৮ ই মার্চ হাচিকোকে সেই রেলস্টেশনেই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ক্যান্সার ও কৃমিতে আক্রান্ত হয়ে কুকুরটি মারা যায়।
হাচিকোর স্মরনে শিবুয়া রেলস্টেশনে নির্মাণ করা হয় তার ব্রোঞ্জের ভাস্কর্য। প্রতি বছর ৮ এপ্রিল সেখানে পালন করা হয় শোক দিবস। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে কুকুরপ্রেমীরা জড়ো হন সেখানে।
এছাড়াও এই সত্যি কাহিনীর অবলম্বণে নির্মিত হয়েছে অনেক সিনেমা, যেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, রিচার্ড গিয়ার অভিনীত Hachi: A Dog's Tale (অগাস্ট ২০০৯) ও Seijirō Kōyama পরিচালিত Hachi-kō (Hachikō Monogatari, 1987)।
এছাড়া Natural History Museum এ গেলেও দেখতে পাবেন হাচিকোর সংরক্ষিত মমি।
আজকের আধুনিক পৃথিবীতে মানুষ মানুষকে ভুলে যায় বড় জলদি, বড় জলদি আবছা হয়ে যায় আমাদের ভালোবাসার জ্বলজ্বলে স্মৃতি। হাচিকোর গল্প শুধু একবার অভিমানী আঙ্গুল তোলে আমাদের দিকে, কতদূর যেতে পারে, কতটা পথ পাড়ি দিতে পারে কাউকে ভালোবাসার ক্ষমতা?
১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:২৬
সাহারিয়ার বলেছেন: ধ্যনবাদ
২| ১৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৩৫
অনন্ত জীবন বলেছেন: বিশ্বাস করবেন না সাথে সাথে মনে পড়ল ছোটবেলায় পোষা বিড়ালের কথা।
আমি যখন স্কুলে যেতাম পিছু পিছু যেত কতদূর। আবার যখন স্কুল থেকে ফিরতাম ঠিক ঐ পর্যন্ত গিয়ে দাড়িয়ে থাকত, আমাকে দেখলেই লাফ দিয়ে কোলে উঠত।
ও ফড়িং খেতে পছন্দ করত। পাঠকাঠির মাথায় আটা লাগিয়ে ফড়িং ধরতাম ওর জন্য। একদিন একজন একটা পাখির বাচ্চা ধরে এনে দিল পোষার জন্য। সেই সোনাপাখি আবার ভাত খায় না, ফড়িং খায়। সেদিন পাখিটাকে ফড়িং ধরে খাওয়াচ্ছিলাম আর দূর থেকে জুলজুল করে তাকিয়ে দেখছিল বিড়ালটা। হঠাৎ কি হল দৌড়ে এসে আমার হাত থেকে কামড় দিয়ে নিয়ে গেল পাখিটাকে। পাখি অতক্ষণে পটল তুলেছে। বিড়ালটাকে একটা চড় মারলাম। কি যে কান্না পাচ্ছিল। ছোটবেলায় তো অনেক কেদেছি নানা জেদে, সেদিন প্রথম মনে হল এই কান্না অন্যরকম। বুকটা ফেটে বের হতে চায় আর কি আশ্চর্য সেদিনই হারিয়ে গেল বিড়ালটা আর কোনদিন ফিরে আসে নি। ভালবাসার ভাগাভাগি বুঝি কেউই সহ্য করতে পারে না
১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:২৩
সাহারিয়ার বলেছেন: সত্যি তাই........ভালবাসার ভাগাভাগি কেউই সহ্য করতে পারে না
৩| ১৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:২৫
মিনহাজুল হক অনিক বলেছেন: Just have started Downloading!
Here is the torren download link: Click This Link -৫৫০ মেগাবাইট।
৪| ১৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:২৭
মিনহাজুল হক অনিক বলেছেন: Nice one! @ অনন্ত জীবন
৫| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:৩২
বটের ফল বলেছেন: পুরোনো কিছু স্মৃতি মনে পড়ে গেল ভাই। ভালো লাগলো।
একগুচ্ছ প্লাস।
++++++
৬| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০৩
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: এই মুভির কথা খুব শুনেছি। হাচিকোর গল্পটা সত্যিই হৃদয়স্পর্শী।
৭| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০৯
খেয়া ঘাট বলেছেন: লিখাটা পড়ে একেবারে স্তব্দ হয়ে গেলাম।
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
একগুচ্ছ প্লাস।
৮| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:২১
আরমিন বলেছেন: আমি ব্যাক্তিগত ভাবে কুকুর পছন্দ করতাম না । কিন্তু রিচার্ড গিয়ার অভিনীত Hachi: A Dog's Tale দেখার পর থেকে আমারও খুব ইচ্ছে করে হাচিকোর মত একটি কুকুর পালতে।
পোস্টে ৫ম প্লাস।
৯| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪১
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: Hachi: A Dog's Tale, এটা আমার খুব প্রিয় একটা ম্যুভি। প্রথমবার চোখে পানি এসে গিয়েছিল
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:১০
core needle007 বলেছেন: Pore khub balo laglo..thanx