![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“ নতুন দিনই নতুন চাহিদা ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গির জন্ম দেয়॥ ”
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ আমার লেখাটা শুধু মাত্র প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য,অপ্রাপ্ত বয়স্ক কেও লেখাটা দয়াকরে পড়বেন না। কথাটা বললাম মূল্যবোধ থেকে,যেমনটা বলেছিলেন ভারতীয় বিখ্যাত দৈনিক সানন্দায় এক পসারিণী “আমি দুই হাজার পরুষের সাথে রাত কাটানোর পরও নিজেকে গঙ্গার জলের মতো পবিত্র মনে করি। কারন এটা আমার পেশা যেটা আমি নিজে বেছে নি নাই” আমি জরিনা( ছদ্মনাম)। লোক মুখে শুনা আমার জন্ম টাঙ্গাইল জেলার কান্দাপারাতে। এখান থেকে সভ্য সমাজের সীমারেখা শেষ আর শুরু হয়েছে সমাজের দৃষ্টিতে আপাতত নিষিদ্ধ এই পল্লী। এখানকার মাটিও কিন্তু তথাকতিত সভ্য সমাজের মতোই,সূর্য উঠলে আলো দেয়,ছায়ায় শীতল হয় আবার বর্ষায় সিক্ত করে মাটির উষ্ণ বুক। কিন্তু এখানে যারা বসবাস করে তারা সবাই আমার মতো নিষিদ্ধ।কারন আমাদের জীবিকার পণ্য হচ্ছে শরীর। ভালোবাসাহীন শরীরী প্রকাশ ভঙ্গি হচ্ছে আমাদের বাঁচার একমাত্র অবলম্বন।সস্তা প্রসাধনী আর সাধ্যর মাঝে রঙ্গিন পোশাক আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণের টোপ সাথে আদিমতায় ভরা দেহ নির্ভর প্রকাশ ভঙ্গি।এভাবে খদ্দেরের খোঁজে দিন গড়িয়ে যাই আমাদের কিন্তু গল্প বদলায় না ,শুধু চরিত্র আর নাম বদলায় আমাদের। কথা হল জরিনাদের সাথে জানতে চাইলাম এই অন্ধকার পথে আসার পিছনের সেই বিষাদময় কাব্য। আর যে কারন গুলো উঠে এলো, ক্ষুদা তার মধ্য অন্যতম। তাহলে কি জরিনারাই সঠিক, খুদাই কি সব অপরাধের মূল? সে প্রশ্নের উত্তর না হয় বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকেই জেনে নিবেন। তবে অবহেলা আর ভালোবাসাহীন এই জীবন তাদের একবারেই কাঠ -খুটটা বানিয়ে দিয়েছে। একদম প্রাণহীন প্রায় শুকনো কাঠের মতো।এখানে বসবাস প্রায় ৯০০ যৌন কর্মীর,সবার গল্প প্রায় একই রকম একই রকম বঞ্চনা,একই রকম লাঞ্ছনা আর একই রকম ভালোবাসাহিন সকাল দুপুর তাদের। কিন্তু ভালোবাসা ছাড়া কি বাঁচা যায় ?তাদের জীবনেও প্রেম আছে,আছে পছন্দের মানুষ,যাদের সাথে একটু কথা বলতে পারলে বেঁচে থাকার আশা জাগে,কিন্তু পরোক্ষনেই আতশবাজির মতো হারিয়ে যাই সবকিছু,গঙ্গায় ভেসে যাই তাদের স্বপ্নের বাসার আশার চিতার ছায়।
উপখ্যানের শেষ পৃষ্ঠা এবার পড়ার সময় চলে এসেছে এখানে নেই কিন্তু কনো রোমাঞ্চ,নেই কনো রগরগে বর্ণনা আছে শুধু বিষাদ কাব্য। যে কাব্যটা পড়া শুরু হয়েছিলো ঢাকা থেকে ৯৯ কিমিঃ দূরে অবস্থিত কান্দাপারা থেকে। যেখানে শরীর জীবিকা যোগাচ্ছে,মৃত্যু যেখানে স্বপ্ন আবার সেখান থেকে পূর্ণ জন্ম নিচ্ছে নতুন স্বপ্নের। কিন্তু দু-স্বপ্নের রাত শেষ হয়ে ভোর আসছে না জরিনাদের জীবনে। নারী হয়ে কেউ জন্মায় না তারা ক্রমশয় নারী হয়ে ওঠে,ঠিক তেমনি নিষিদ্ধ সমাজের ঐ জরিনারা ধীরে ধীরে আঁধারের বন্দিনী হয়ে যায়। জরিনারাও হাঁপ ছেঁড়ে বাঁচতে চাই,চাই মুক্ত বাতাসের শ্বাস নিতে। কিন্তু সস্তা প্রসাধনির মতো কিছুক্ষণ বাতাসে গন্ধ ছড়িয়ে বিলীন হয়ে যাই মহাকালের এই সভ্য সমাজে আর এভাবেই জন্ম হয় নতুন জরিনাদের।
©somewhere in net ltd.