নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এক অপরাজিতা। কোন বাঁধাই আমার চলার পথে বাঁধা হয়ে থাকেনা। সব বাঁধা কে অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াই হচ্ছে আমার জীবনের মূলমন্ত্র

শারলিন

শারলিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সীমায় যে অসীম

২২ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৯:০৭

হিমেল(ছদ্দ নাম) নামে একটি ছেলের গল্প বলব যে কিনা জীবনের দীপশিখা বেশিদিন জ্বলবে না জেনেও জীবনের সবটুকু সময় কে আলোকিত করে রাখার লড়াই করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। বাবা মায়ের কোল আলো করে ৩২ বছর আগে পৃথিবীতে এসেছিলো হিমেল। কিন্তু সেই আলোর রশ্মিতে ১৩ দিন বয়সে একটা ছেদ পড়ল। আর তা হল হিমেলের শরীরে অজানা কোন এক অসুখ আছে যার কারনে তার শরীর থেকে একটু একটু করে রক্ত পায়ু পথ থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। বাবা মা হাল ছাড়ার পাত্র নন। শুরু হল চিকিৎসা। কিন্তু কোন কিছুতেই কোন কিছু হচ্ছিল না। ডাক্তার কবিরাজ কেউ রক্ত যাওয়ার কারন আবিস্কার করতে না পারলেও সবাই সবার মত করে এক্সপারিমেন্ট চালাতে লাগলেন। এভাবেই দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়, হিমেলও আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। বয়স যত বাড়ে, রক্ত যাওয়ার পরিমাণও তত বাড়ে। বয়স তখন ৬/৭ ডাক্তার তখন পরামর্শ দিলেন রক্ত কমে গেলে শরীরে রক্ত নিয়ে নিতে। এভাবেই রক্ত নিয়ে নিয়ে বড় হতে থাকেন হিমেল। বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন এক্সপ্রিমেন্টাল চিকিৎসার ফলে এর ই মধ্যে হিমেলের একটি পা নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিবন্ধী হিসেবে মিলে নামের সাথে নতুন এক বিশেষণ। পাশাপাশি এতদিনে বিশেষজ্ঞরা হিমেলের রোগের একটা নাম বের করেছেন। আর তা হল ভেরী কুজ ভেইন। এভাবে বয়স যত বাড়ে রক্ত নেয়ার frequency ও তত বাড়ে। প্রথমে ছয় মাস এক ব্যাগ লাগলেও বর্তমানে মাসে দুই থেকে তিন ব্যাগ রক্ত নিতে হয়। এক বুক আশা নিয়ে ২০১০ সালে হিমেলের চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডের Bumrungrad International Hospital গেলে সব চেয়ে নিরাশার বানী শুনান ওখানকার বিশেষজ্ঞরা। ওরা বলেন হিমেল এমন এক রোগে আক্রান্ত যে রোগের রুগী সংখ্যা সারা বিশ্বে ৫০০ এর মত। এটাকে ওরা নাম দিয়েছেন Klippel trenaunay syndrome ।
এই রোগের কোন চিকিৎসা ওদের জনা নেই। এই রোগের মানুষের আয়ুকাল ৩৫ থেকে ৪০ বছরের বেশি হয় না। যেভাবে রক্ত নিয়ে আসছিলেন সেভাবেই চলতে বললেন যত দিন পারেন।
জীবনের এরকম অবস্থায় এসে অনেকেই হয়ত হাল ছেড়ে দেন কিন্তু হিমেল হাল ছাড়েন নি। সাফাল্যের সাথে শিক্ষা জীবনের সর্বোচ্চ ধাপ শেষ করে যোগ দিয়েছেন ADD(Action Aid on Disability) নামে একটা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে। এখানে সাফাল্যের সাথে ৩ বছর কাজ করার পর যুক্ত হয়েছেন icddr,b নামে আর একটা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে। এখানে বর্তমানে একজন গবেষণা অফিসার হিসাবে কর্মরত আছেন। এখানেই শেষ নয় ২০১০ সালে হিমেল তার জীবনে আর এক অধ্যায় শুরু করে তা হল তার ভালবাসার জীবন। হ্যাঁ সে ভালবাসায় আবদ্ধ হয় একজন মেয়ের সাথে। না এ তেমন কোন সাধারন মেয়ে নয়। এ একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। দীর্ঘ ২ বছর ভালবাসার জীবন কাটিয়ে ২০১২ সালে তারা সংসার জীবন শুরু করে। যে জীবনে শুধু আনন্দ আর ভালবাসা। হিমেলের ভালোবাসার মানুষটির মনের ঝোড় ও কম নয়। কারন সে তার ভালোবাসার মানুষটির অনিশ্চিত যাত্রার কথা জেনেও ভালবাসার মানুষটির হাত ছাড়েন নি বরং আরও শক্ত করে ধরেছেন। বলেছেন আমি আছি তোমার সাথে............
জীবনের নানা প্রতিবন্ধকতা হিমেল কে আটকাতে পারেনি। হিমেল আলাহর দেয়া সমস্যার সমাধান করতে না পারলেও তার ব্যাক্তি জীবন, কর্ম জীবন সব জায়গায় স্বীয় গুণের মাধ্যমে নিজেকে মেলে ধরেছেন। যদিও হিমেল বা তার পরিবার জানেন তাদের আর কিছু করার নেই। তারপরও তারা আশা ছাড়েন নি এই ভরসায়। যদি উপরওয়ালা কোন মিরাক্কেল ঘটান। কারন তিনি চাইলে সব কিছু হতে পারে। যদি মিরাক্কেল ঘটে বেশ হয়, না হলেও আফসোস নেই কারন জীবনে যে টুকু সময় পেয়েছে তার সবটুকুই উপভোগ করেছেন তিনি............

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৯:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


ভালো

২| ২২ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৯:৩১

ডার্ক ম্যান বলেছেন: মানুষের অসাধ্য বলে কিছু নাই। লড়াই চলতে থাকুক এই অসীম সাহসী মানুষের

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.