নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এক অপরাজিতা। কোন বাঁধাই আমার চলার পথে বাঁধা হয়ে থাকেনা। সব বাঁধা কে অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াই হচ্ছে আমার জীবনের মূলমন্ত্র

শারলিন

শারলিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারী তুমি কার? তোমার না তার?

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:১৩

লিফটে মেয়ে উঠলে লিফটম্যান মেয়েদের একটি কোনা দেখিয়ে বলে- ‘এখানে দাঁড়ান’। কোনায় দাঁড়াতে বলে, কারণ পুরুষেরা যেন মেয়েদের গা ঘেঁষে না দাঁড়ায়। গা ঘেঁষে দাঁড়ালে তারা ফাঁকফোকর আর ঠেলাঠেলির সুযোগ নিয়ে মেয়েদের গায়ে হাত বাড়ায়। কেবল হাতই নয়,তারা আবার চাপ সৃষ্টিও করে। পুরুষের চাপেরও আবার নানা রকম আছে। তারা তাদের হাতের কনুই, বাহু, ঊরু, পায়ের পাতা, বুক, নিতম্ব ঠেসে ধরে মেয়েদের গায়ে। লিফটম্যান পুরুষ, সে ভাল জানে পুরুষের স্বভাবচরিত্র। সাপ যেমন জানে সাপের ফণা কাকে বেশি ছোবল দিতে ভালবাসে।

বাসে উঠলেও একটি একলা মেয়ে দেখলে কনডাক্টর কোনও মেয়ের পাশে মেয়েটিকে বসায়, মেয়ে না পাওয়া গেলে বুড়ো পুরুষের পাশে,বড়জোর বাচ্চা কোনও ছেলের পাশে। কনডাক্টর নিজে পুরুষ, সে জানে পুরুষের স্বভাব। তাই সে অথর্ব বা অপ্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের পাশে মেয়েদের বসিয়ে স্বস্তি পায়।

অবিজ্ঞান মানুষকে ধ্বংস করে, জানি। কিন্তু বিজ্ঞান যাঁরা শেখায়, তাঁরাও আজকাল নতুন প্রজন্মকে ধ্বংস করতে নেমেছে। জগন্নাথ কলেজের কেমেস্ট্রির প্রফেসর নুরুল হক তাঁর ছাত্রছাত্রীদের ধাতুবিদ্যা পড়াতে গিয়ে বলেন—‘বিবাহিত হিন্দু মেয়েরা কপালে সিঁদুর পরে, সিঁদুর হচ্ছে রেড লেড (ট্রাইপ্লামবিক টেট্রোক্সাইড), আর মুসলমান মেয়েরা বিয়ের পর পরে সোনার গয়না। এর কারণ, মেয়েদের শরীর থেকে এক ধরণের বদ গ্যাস বেরোয়, ওই গ্যাস স্বামীর অমঙ্গল করে। লেড এবং গোল্ড এই গ্যাসকে অ্যাবসর্ব ক’রে নেয়, তাই মেয়েদের ও-সব পরতে হয়’। কিন্তু মেয়েদের শরীর থেকে বের হওয়া বদ গ্যাসটির নাম কী? আমি তো শরীর বিদ্যা ঘেঁটে এমন কোন গ্যাসের খোঁজ পাই নি, যে গ্যাস কেবল মেয়েদের শরীর থেকে নির্গত হয়, পুরুষের শরীরের থকে নয়! কেমেস্ট্রির প্রফেসর কি বিজ্ঞানের ফাঁকে ফাঁকে অবিজ্ঞান শিক্ষা দেবার দায়িত্ব নিয়েছেন? তা না হলে স্বামীর মঙ্গলের জন্য মেয়েদের ত্যাগী হওয়ার এই আদিম ও অসভ্য শিক্ষা তিনি বিতরণ করছেন কেন?

বাসে উঠলেও একটি একলা মেয়ে দেখলে কনডাক্টর কোনও মেয়ের পাশে মেয়েটিকে বসায়, মেয়ে না পাওয়া গেলে বুড়ো পুরুষের পাশে,বড়জোর বাচ্চা কোনও ছেলের পাশে। কনডাক্টর নিজে পুরুষ, সে জানে পুরুষের স্বভাব। তাই সে অথর্ব বা অপ্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের পাশে মেয়েদের বসিয়ে স্বস্তি পায়।

এই সব বদ শিক্ষকেরা বদ গ্যাসের প্রচার করে ছাত্রছাত্রীদের বদ বানাবার চেষ্টায় রত। অলৌকিক অমঙ্গল টেনে তাঁরা লৌ্ককি মঙ্গলকে কায়দা করে দূরে সরিয়ে রাখেন আর একটু-একটু করে বিষ ঢুকিয়ে দেন নতুন প্রজন্মের মস্তিষ্কে।

মোটর সাইকেলের পিছনের আসনে মেয়েরা একপাশে পা ঝুলিয়ে বসে। দু’দিকে পা রেখে বসলে কিছু কি ক্ষতি হয়? নিশ্চয়ই নয়, বরং যে-কোনও দুর্ঘটনা থেকে তাঁরা বাঁচে বই কী? কিন্তু দু’পা জড়ো করে রাখবার এই নিয়ম কোত্থেকে এল? এও কি আমাদের বেখাপ্পা সমাজ থেকে, যে সমাজে মেয়েদের জড়সড় হয়ে থাকতে হয়, দু’পা-দু’হাত-দু’বাহু প্রসারিত করতে মানা তাদের! যে সমাজে মেয়েরা যত বেশি সিঁটিয়ে থাকবে, তত বাহবা জুটবে তাদের। তাই বুঝি এই বাহবা পাওয়ার লোভে একটি আধুনিক যান ব্যবহার করেও তাকে এই জড়সড় ভঙ্গিটি বজায় রাখতে হয়!
এক যুবকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে। পরিচয়ের তিন দিনের দিন প্রচার হয়ে গেল তার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়ে গেছে, পাঁচ দিনের দিন প্রচার হল একটি বাচ্চাও হয়েছে আমাদের। লোকের ভাবনার ইলাস্টিসিটি দেখে আমি মুগ্ধ হই। সম্ভবত স্ত্রী এবং পতিতার বাইরে কোনও মেয়ে দেখলে পুরুষের চোখের জুলজুল দৃষ্টি আর সরে না। তারা বাঁধভাঙা লোভে মেয়েদের নিয়ে কাহিনি বানায়, যে কাহিনি চায়ের টেবিলে তাদের হাসির জোগান দেয়। মেয়েদের নিয়ে যত রস-রসিকতা ছেলেরা করে, মেয়েরা কি সহস্র ভাগের একভাগ করে?

বাজারে পাকিস্তানি বোরখার এখন কদর বেশ। মেয়েদের সারা শরীর ঢেকে রাখবার ব্যবস্থা হচ্ছে। এদিকে সিনেমা হলের বিলবোর্ডে মেয়েদের যে পীনোন্নত বুকের শরীর এঁকে পথচারীদের ইন্ধন জোগানো হয় ছবিঘরে যাবার জন্য, সে-সব দেখে ধর্মপ্রাণ মানুষ কেন রুখে দাঁড়ান না, অন্তত যাঁরা মেয়েদের শ্লীলতা রক্ষা করবার জন্য জীবনপাত করছেন! এ-বিষয়ে বিলবোর্ডের দিকে শায়খুল হাদিসই বা কেন এখনও লং মার্চ করছেন না?

রিকশার হুড তুলে একটি ছেলে চলতে পারে, মেয়ে নয়। একা একটি মেয়ে রিকশার হুড তুললে নাকি দৃশ্যটি শোভন হয় না। এও মেয়েদের ওপর আরেক ধরনের পর্দাপ্রথা। ঢাকা শহরে হঠাৎ হঠাৎ কিছু মেয়েকে দেখা যায় পর্দা ফেলতে, মফস্বলে সম্ভব নয়। মেয়েদের গায়ে তো পর্দা চড়াতেই হয়, ক্লীবলিঙ্গ যানবাহন ও পর্দার ঊর্ধ্বে নয়, যানের পর্দা তার মাথায় তুলতে হয়। বাসেও আলাদা করে বসবার জায়গা থাকে মেয়েদের জন্য। কেবল যানবাহনের নয়, রেস্তোরাঁয় পর্দাঘেরা কেবিন থাকে- কেবিনগুলোর ওপর লেখা থাকে—মহিলা। মেয়েদের ঢেকে রাখবার আয়োজন সমাজের সর্বত্র। খাবার জিনিস যেমন ঢেকে রাখতে হয়, ধুলো যেন না পড়ে, মাছি যেন না বসে, মেয়েদের গায়েও তেমনি ধুলো পড়তে, মাছি বসতে দিতে চায় না কেউ। বাসি হতে দিতে চায় না, ঢেকে রাখে, ফ্রিজে রাখে, উনুনে চড়ায়, তারপর পরিবেশন করে।

প্রেম প্রেমই। এর আগে-পরে ‘পরকীয়া’ বা ‘আপনকীয়া’ শব্দ ব্যবহার করলে প্রেমের মহিমাই নষ্ট হয়। ম্যাজিস্ট্রেট শাহিদা পরকীয়া প্রেম করত এবং সন্তানটি তার স্বামীর ঔরসজাত নয়, এ-নিয়ে প্রেস এখন মুখর। প্রেম সে করতেই পারে, স্বামীর যদি স্পার্ম না থাকে অথবা সে উত্থানরহিত হয়, স্ত্রী তার প্রেমিকের সন্তান গর্ভে নিতেই পারে, মানুষ তার মনে এবং শরীরে কাকে বহন করবে বা না করবে সে একান্তই তার ব্যাপার। শাহিদার প্রেম নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা মানে তার ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা। অবশ্য জীবিত মেয়েদেরই যেখানে স্বাধীনতা নেই, সেখানে মৃত মেয়ের আবার স্বাধীনতা কী!’

একালে কি অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়েছে? হলেও অতি সামান্যই। নারীকে যতদিন ভোগ্যপণ্য ভাবা হবে, ততদিন পর্যন্ত, যত যুগই পেরোক না কেন, অবস্থার কোনও পরিবর্তন হবে না।


লেখাটা পড়ে ভাল লাগল তাই শেয়ার করলাম
সংগৃহীত
সুত্রঃ http://www.radiopadma.com/?p=31496

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:২১

অমিত অমি বলেছেন: লেখাটা অসম্ভব ভালো লাগলো।আপনাকে ধন্যবাদ এমন একটি লেখা উপহার দেওয়ার জন্য।

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:২৩

শারলিন বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ

২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৫০

একে৪৭ বলেছেন: আপু, বনে গিয়ে বাঘ বা সিংহের শিকার করা দেখেন নি হয়তো, আমিও দেখিনি! তবে ডিসকভারি বা জিওগ্রাফি চ্যানেলের বদৌলতে দেখেছি, কিভাবে হিংস্র বাঘ দুর্বল, নিরীহ, সুন্দর হরীনগুলোকে হত্যা করে! কি পাশন্ড! কত্ত খারাপ!

আচ্ছা! এমন কেন হয় না- যেন হরীন বাঘটাকে শিকার করলো? কেন সেটা একতরফা ঘটে?
এখানে মিনিমাম দুইটা বিষয় জড়িত, এক. বাঘের ইন্টারেস্ট, যেহেতু তাকে খেতে হবে। দুই. বাঘের শ্‌ক্তি হরীনের চাইতে বেশী।

সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় হোক, আর প্রকৃতির খামখেয়ালিতে হোক, পুরুষের শক্তি নারী'র চেয়ে বেশী, এবং তারা নারী দেহের প্রতি ইন্টারেস্টেড, কেউ একজনকে নিয়েই হ্যাপি থাকে, কারও পেট সহজে ভরে না! রেজাল্ট? সময় সুযোগে কোন নিরীহ নারী'র উপর আক্রমন! এখন যদি আক্রমন কেন করলো, কেন করলো বলে চিৎকার করতে থাকেন, তাহলে ঐ পুরুষের ইন্টারেস্টে কোন চেঞ্জ আসবে না। আর ন্যায় অন্যায়ের যুক্তি দিয়ে পুরুষদের সোজা হতে বলেও কোন লাভ নেই! কারন কেউতো আর আইন মেনে ধর্ষন করে না!

একজন পুরুষের সাইকোলোজি হয়তো আপনি বা আপনারা বুঝবেন না। উন্মুক্ত নারী দেহ দেখে উত্তেজিত হয় না এমন পুরুষ হয় অসুস্থ, না হয় সে অতি সুফি পুত পবিত্র! তবে ব্যাপারটা যখন লার্জ নাম্বারে নিয়ে আসবেন, সবাইতো আর ওরকম হয় না!
সত্যি বলতে ঐ উত্তেজনাটা না থাকলে হয়তো আপনার বা আমার জন্মই হতো না! শুনতে খারাপ লাগলেও সত্যি, বাবা'দের অনিচ্ছায় আমাদের জন্মই হতো না! কাকে দোষ দিবেন? আমরা যে ওভাবেই তৈরী! ডমিনেট করতে না পারলে, মনে ভয় নিয়ে যে কোনভাবেই স্পার্ম রিলিজ হবে না! সেটা আসতে পারে একটা পথেই! আর সেই একই ব্যাপার একটা পুরুষকে বিপথগামী করে!
বলতে চাইছি এটা আমাদের একটা অংশ, প্রকৃতির ইচ্ছারই একটা অংশ! কেউ তা কন্ট্রোল করতে পারে, কেউ পারে না। কেউ নিয়ন্ত্রনে রাখে, কেউ তার অপব্যাবহার করে।

উত্তেজনার কথা বললে, একজন পুরুষের তা হুট করেই আসে, যেখানে একজন নারী'র আসে অনেক দেরী করে। এখন এর মধ্যে যদি কোনরুপ উত্তেজক উপাদান সামনে এনে নাচানো হয়, সেটা সিনেমার বিলবোর্ড বলেন, আর ধনী পাড়ার কথিত আধুনিক নারী বলেন, দুটোই কিন্ত ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। তবে ভিকটিমটা হয় অন্য কোন নিরীহ নারী বা বাচ্চা! দোষটা কি শুধুই ওই পশুটার? যারা বিলবোর্ড টানালো, ছোট ছোট ছোট কাপড় পড়ে কারও উত্তেজনাকে শুরশুরি দিয়ে দিলো, তাদের কোন দোষ নেই??? প্রতিবাদ শুধু মাওলানাদের করতে হবে কেন! আপনার কোন দ্বায়িত্ব নেই?

পুর্ণ সলিউশন হয়তো কোনভাবেই নেই, না পর্দা করাতে আছে, না নারী'র খোলামেলা চলাতে। তবে ওয়েস্টার্ন খোলামেলা কালচারে'র খোজ নিয়ে দেখেন, সেখানে শারিরীকভাবে অপদস্থ করার হার ঢেকে রাখা সমাজের চেয়ে অনেক বেশী। তবে ঢেকে রেখে যদি এটাকে কমানো যায়, ঢেকে রেখেই যদি আরেকটু বেশী নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়, তাতে মন্দ কি?
আর যারা বিজনেসের স্বার্থে খোলামেলা বিলবোর্ড বানায়, আর ওইসব বিলবোর্ডে যারা খোলামেলা দাড়ায়, তারা কেউই কারও চেয়ে কম না। আপনি আমি সাধারন, ভিকটিম আমরা হই, আমার বোনরা হয়, সাবধান আমাদেরকেই থাকতে হবে, প্রতিবাদও আমারেই করতে হবে।

ওয়ান লাস্ট থিং! স্বধীনতা মানেই যার ইচ্ছা তার স্পার্ম নেয়া না, বা যার ইচ্ছা তার ভেতরই স্পার্ম ঢুকিয়ে দেয়া না, দুটোই অপরাধ! জঘন্যতম অপরাধ।

ও! যাওয়ার আগে আরেকটা কথা, "Black widow spider". এদের মধ্যে পুরুষের চাইতে নারী মাকড়সার শক্তি অনেক বেশী! এরা কি করে জানেন? মিলনের পর বা সময় নারী'টি পুরুষটিকে হত্যা করে, খেয়েও ফেলে!
শক্তির বড়াই সব যায়গাতেই থাকে! নারী পুরুষ বলে নয়!

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:১৫

শারলিন বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.