নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

O___o

Not always a stand-out in the crowd.

শাওণ_পাগলা

নরমাল মানুষের রেঞ্জেই পড়ি। সময়ে অসময়ে পাগলামি করি। পাগলামি করতে ভালো লাগে। সবাই পাগলামি করতে জানেনা।

শাওণ_পাগলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনুগল্পঃ পথদন্ড

১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:৪৮

তরুন উশখু-খুশকু চুল নিয়ে বসে আছে। কোন কারণ ছাড়াই সে একটু পর মাথার এখানে সেখানে চুলকাচ্ছে। বসে থাকার বিন্দু মাত্র তার ইচ্ছা নেই । তার হেটে বহুদূর যেতে হবে। কতদূর সে নিজেও জানেনা। সে চিন্তা করলো অনেক কিছু না জানলেও তেমন কিছু আসে যায় না।



হঠাৎ তার যাত্রাবিরতির কারণ হলো জীবন। জীবন তাকে আজকে এখানে আসতে বলেছে কিছু কথা বলার জন্যে। কথা না বরং বোঝা-পড়া। শেষ বোঝা-পড়া। আজকেই বোঝা-পড়া হয়ে যাবে বলেই তরুনের বিশ্বাস।



জীবন তাকে জিজ্ঞেস করলো, “তোমার উদ্দেশ্য কি?”

তরুন উত্তর দিলো, “উদ্দেশ্য অনেক সময়ই ঠিক করা থাকেনা। করা থাকলেও মনে থাকেনা। এখন উদ্দেশ্য হয়তো মনে পড়ছেনা অথবা আমি উদ্দেশ্য জানিনা।”

“উদ্দেশ্যবিহীন বলতে চাচ্ছো?”

নিতান্তই অনিচ্ছার সাথে বললো “হুম।” তরুনের এইসব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার ইচ্ছা নেই। কিন্তু সবসময়ই জীবনকে সে উত্তর দিয়ে গিয়েছে।

জীবনের সাথে তরুনের অনেক কিছুতেই অমিল। জীবন তাকে প্রায়ই জিজ্ঞেস করে “তরুন, তুমি হেঁটে কী মজা পাও?”

তরুন অনেকসময়ই মুখে হাসি ধরে রেখে বলে, “মজা পাওয়ার জন্যে তো হাঁটি না। হাঁটতে ভালো লাগে তাই হাঁটি। হাঁটার মাঝ থেকে চাওয়া পাওয়া নেই। তবে ভালো লাগা, মন্দ লাগা, কষ্ট লাগা এসব হাঁটতে গেলেই পাই। এদিকে সেদিকে ছড়িয়ে আছে। আবার এগুলোর থেকে দূরে সরে যাওয়ার জন্যেও হাঁটি কখনো।”





জীবন জানে তরুনের কথার কোন মানে নেই। তারপরও জীবন তাকে অনেক সময়ই কিছু বলেনা। তরুন আর জীবন বয়সে সমান হলেও, জীবন জানে সে কিছুটা বাস্তববাদী আর তরুন কল্পনাপ্রবন। তাই সে কিছুটা অধিকার নিয়ে হলেও মাঝে মাঝে তরুণকে বাস্তবতা শেখানোর চেষ্টা করে। লাভ তেমন একটা হয়না। তরুনের সাথে কথায় জীবন আবার পেরে উঠেনা। তখন জীবনকে বাধ্য হয়ে তরুনের বিলাসী কথা শুনতে হয়। কথাগুলো প্রায়ই এলোমেলো থাকে। এর একটা কারণ হলো, কথা বলার সময় তরুন আনন্দের আতিশয্যে খেই হারিয়ে ফেলে । চোখ ঝলমল করে তরুনের কথা বলার সময়। ঠোঁটের কোণে হাল্কা একটু হাসি ঝুলিয়ে রেখে হাত নেড়ে নেড়ে তরুন স্বপ্নের কথা বলে। জীবন শোনে তরুন যা বলতে চায়। কিন্তু এখন তরুনের বোঝা উচিৎ কিছুটা হলেও, ও যা বলছে বা বলে আসছে এতোদিন পর্যন্ত তার অনেক সময়ই মানে নেই। জীবন তরুনের পাগলামি ভরা কথা পাত্তা দিতোনা। কিন্তু তরুন এখন বড় হচ্ছে তরুন এর বাস্তবজ্ঞান থাকা উচিৎ তার নিজের জন্যে আরে জীবনের জন্যেও কারণ জীবনের স্বার্থও এখানে জড়িয়ে আছে। কিছু ব্যাপারে জীবনকে তরুনের কাছে আসতে হয়। তাই জীবন চায় তরুন যাতে সবকিছু বুঝে এখন বা বোঝার চেষ্টা করে।





কিছুক্ষন ধরেই কথা কাটাকাটি চলছে জীবন আর তরুন এর মধ্যে।

জীবনের ধৈর্য ফুরানোর পালা। একটু একটু করে ওর গলা চড়তে থাকলো। “তরুন তুমি কি সত্যি কিছু চাওনা? তুমি না চাইলেই তো হবেনা। অনেক কিছুই তোমার উপর নির্ভরশীল।”





তরুন নির্ভরশীলতা, দায়িত্ব এসবের কথা শুনতে চাচ্ছেনা।এসবের চেয়ে দূরে সরে যাওয়ার জন্যেই সে বেড়িয়ে পড়েছে। দূর থেকে দূরে চলে যেতে চায় মায়া, হতাশা, ক্ষোভ থেকে। এতো কিছু জীবনকে বুঝানো যাবেনা। জীবন বুঝতেও চাইবেনা। জীবনের কাছে এগুলো স্বাভাবিক, সহজেই এসব সে মেনে নিতে পারে। তরুন পারেনা। এর আগেই চেষ্টা করে দেখেছে সহজভাবে নিতে পারেনি। পাগলের মত লাগে নিজেকে। তাই তরুন পথে বেড়িয়ে পড়েছে। পথের একমাথায় সে হয়তো সব ক্ষোভ হতাশাকে পেছনে ফেলতে পারবে, এগুলো তাকে আর ধরতে পারবেনা, মায়া তাকে বেঁধে ফেলতে পারবেনা।

জীবন বললো, “এসব কিছু আলাদা করা যায়না। এসবের বাইরে তুমি যেতে পারবেনা”

“দেখি। চেষ্টা করে দেখতে দোষ কোথায়?”

“যা নেই তার জন্যে চেষ্টা করে কি লাভ?”

“কোন এক পথের শেষে হয়তো আমি এসবের ধরাছোঁয়ার বাইরে যেতে পারবো।”

জীবন উপহাস করলো, “তরুন, পথ দেখেছো, পথের শেষ দেখোনি, পথের শেষ বলতে কিছু নেই। এটাও কি তুমি জানোনা? শুধুই কল্পনা করে গেলে তুমি তরুন? সব কল্পনাই বাস্তবতা থেকে তৈরি হয়।”

তরুন জীবনের কথায় চমকে উঠলো।জীবন তাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে কিনা বোঝার চেষ্টা করলো। জীবন তার দিকে চুপ করে তাকিয়ে আছে। তরুনের চারপাশ অন্ধকার হয়ে উঠতে লাগলো। শেষে তরুন ভাবলো, পথের শেষের দেখা যখন মিলবেনা তাহলে এ জীবন রেখে কি লাভ?











পরিশেষে জীবনকে হত্যার দায়ে তরুণকে পথদন্ড দেয়া হলো। পথদন্ড হলো এমন এক শাস্তি যার আওতায় দন্ডপ্রাপ্ত আসামী অনন্তকাল অনন্তহীন পথ ধরে হেঁটে যেতে থাকবে। আর পথের সব দুঃখ, হতাশা, ক্ষোভ দেখতে দেখতে হাঁটতে থাকবে।



(ফেবু তে এক বড় ভাইয়ের স্ট্যাটাস থেকে অনুপ্রানিত হয়ে গল্পটি লেখা)

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:৫৪

খেয়া ঘাট বলেছেন: গল্পের থীমটা খুব ভালো লেগেছে

১০ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৩৫

শাওণ_পাগলা বলেছেন: ধণ্যবাদ! :)

২| ১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:১৮

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: ভাল লাগলো

১০ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৩৬

শাওণ_পাগলা বলেছেন: ভালো লাগার জন্যে ধণ্যবাদ :)

৩| ১০ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৭:১৩

দেহঘড়ির মিস্তিরি বলেছেন: ভাল লিখেছেন :)
থিমটা চমৎকার :)

১০ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৩৭

শাওণ_পাগলা বলেছেন: এইতো ভাই লিখার চেষ্টা করি! ভালো লেগেছে শুনে আনন্দিত হলাম!

৪| ১০ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:২০

হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার থিম এবং উপস্থাপনা। পথদন্ডের কনসেপ্টটা একদমই আনকোরা।

১০ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৭

শাওণ_পাগলা বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান মাহবুব ভাই। :) কেমন আছেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.