নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্ত্রীর ভরণ-পোষণ ও যাবতীয় প্রয়োজন পূরণ করা স্বামীর জন্য ওয়াজিব । স্ত্রীর জন্য পৃথক বাসস্হানের ব্যবস্হা করা তার অনিবার্য প্রয়োজন সমূহের একটি প্রধান অংশ । অনেকে স্ত্রীকে পৃথক বাসস্হানের ব্যবস্হা করে দেয়া নিজের দায়িত্ব মনে করেন না । স্ত্রীকে মা-বাবা, আত্নীয়-স্বজন ও আপনজনের সাথে রাখতেই অধিক পছন্দ করেন । অথচ শরীয়তের নির্দেশ হলো- স্ত্রী যদি সকলের সাথে থাকতে সম্মত হয়, তাহলে ভালো । অন্যথায় তার জন্য পৃথক ব্যবস্হা করা স্বামীর উপর ওয়াজিব । সম্মত হওয়ার অর্থ হলো পূর্ণ আন্তরিকতার ও স্বতঃস্ফূর্ততার সাথে রাজী হওয়া । স্বামী যদি আকার-ইঙ্গিত দ্বারা বুঝতে পারে যে, স্ত্রী পৃথক থাকতে চায়; কিন্তু মুখে ব্যক্ত করতে পারছে না, তাহলেও তাকে সকলের সঙ্গে এক সাথে রাখা জায়েজ হবে না ।
অনেকে স্ত্রীকে মা-বাবার বাধ্যগত ও অধীনস্ত বানিয়ে রেখে এটাকে নিজের জন্য বিরা সৌভাগ্যের বিষয় মনে করে । ফলে স্ত্রী বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হতে থাকে । স্বরণ রাখা উচিত, শ্বশুর-শাশুড়ীর খেদমত করা স্ত্রীর দায়িত্ব নয় । মা-বাবার খেদমতের মাধ্যমে সৌভাগ্য লাভ করতে চাইলে নিজে খেদমত করবে কিংবা খিদমতের জন্য চাকর-চাকরাণী নিয়োগ করবে ।
হযরত থানবী (র) বলেন, আমার আব্বাজান আমার বিয়ের সাথে সাথেই আমাকে পৃথক করে দিয়েছিলেন । আমাদের এলাকায় অধিকাংশ পরিবারে এ নিয়ম ছিলো যে, ছেলে বড় হওয়ার সাথে সাথে তাকে তার যাবতীয় খরচ ও বাসস্হানের জায়গাসহ পৃথক করে দিতো । এটা আমার কাছে আত্নমর্যাদা হানিকর মনে হলো । তাই নিজে চাকরি করে উপার্জন করার সিদ্ধান্ত নিলাম । আলহামদুলিল্লাহ ! চাকরি পেয়ে গেলাম । পচিশ রূপী বেতন ধার্য হলো । আমি চিন্তুায় পড়ে গেলাম, পচিশ রূপী কি কাজে ব্যয় করব । আমার তো ধারণা ছিলো, দশ-বিশ রুপীই আমার জন্য যথেষ্ট । কিছুদিন আমি একাকী থাকলাম । অতঃপর আমাকে কানপুর আসতে হলো । তখন বাস্তব অভিজ্ঞতায় বুঝতে পারলাম, পচিশ রুপী আমার জন্য প্রয়োজনের চেয়ে অধিক নয় । কারণ, সবই খরচ হয়ে যেতো ।
ঘরে স্ত্রী আমাকে সর্বদা পৃথক বাসস্হানের জন্য একটি ঘর বানাতে বলতো । আমি তাকে এ বলে বুঝ দিতাম, অস্হায়ী জীবনের জন্য ঘরের আবার কি প্রয়োজন ?
আমি যখন হজ্বের উদ্দেশ্যে মক্কায় গেলাম এবং পরবর্তীতে আমার স্ত্রী সেখানে গিয়ে পৌছল, তখন সে সেখানে হযরত হাজী ইমদাদুল্লাহ মহাজিরে মাক্কীর কাছে অভিযোগ করল যে, "আমি সর্বদা আলাদা ঘর বানানোর কথা বলি; অথচ উনি তা করতে রাজী নন ।" হযরত আমাকে বললেন- "তোমার স্ত্রী পৃথক ঘর তৈরী করার কথা বলছে । অসুবিধা কি ? এটা তো উত্তম ব্যবস্হা । নিজস্ব আলাদা ঘরে থাকলে অনেক আরাম ও শান্তি পাওয়া যায় । " আমি মনে মনে বললাম, চমৎকার ! আমার হাতে ঘর বানিয়ে নেয়ার বড় সুন্দর কৌশল সে বের করে নিলো । আমি আরজ করলাম, "হযরত! অনেক সুন্দর ঘর হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ ।" হজ্জ্ব আদায় শেষে দেশে ফিরে আসার পর ঘর তৈরী হয়ে গেলো । আমি হযরতকে এ সংবাদ লিখে জানালাম । তিনি উত্তরে লিখলেন- তোমার ঘর বরকত পূর্ণ হোক । হযরত থানবী (র) বলেন, ঘর তৈরী করে তাতে অবস্হান শুরু করার পর বুঝতে পারলাম, পৃথক ঘর ব্যতীত আরাম ও শান্তি পাওয়া যেতে পারেনা । তবে যদি কেউ অসচ্ছলতার কারণে পৃথক ঘর করতে অসমর্থ হয়, তাহলে ভিন্ন কথা ।
সূত্রঃ কুরআন ও হাদীসে আলোকে পারিবারিক জীবন । মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (র)
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:১৩
অতৃপ্ত রবি বলেছেন: ভালো লাগলো