নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রতি বছর অষ্ট্রেলিয়াতে রোজার ঈদের সময় চাদ দেখা নিয়ে বিভক্তি দেখা দেয় , যা এই দেশে বসবাসকারী ২% মুসলমানদের মধ্যকার অনৈক্য প্রকটভাবে প্রকাশ করে । এই পশ্চিমে যেখানে মুসলমানরা এমনিতেই কত চাপে থাকে - রেসিজিম, অবহেলা এবং তুচ্ছ তাচ্ছিল্য তো আছেই - তার মধ্যেও মুসলমানরা এক হতে পারেনা । কত বড় দুঃখ জনক । প্রতিদিন এই দেশের পত্রিকায় ইসলাম নিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিগেটিভ খবর থাকবেই - টিভির খবরের বড় অংশ হলো মধ্যপ্রচ্যের খবর , যেন দুনিয়ার আর কোথাও কিছু হয়না । এই দেশে টুপি পা্ন্জাবী পড়ে বের হলে মানুষজন একটু হলেও বাকা চোখে চেয়ে থাকবে - কারণ প্রতিনিয়ত তারা মিডিয়াতে দেখে মুসলমান মানেই হলো ভয়ংকর এক প্রাণী - যারা মহিলাদের ঘরে আটকে রাখে - নির্যাতন করে - জোর করে হিজাব/বোরখা পড়ায় আর পুরষগুলো হলো রাগী এবং মারামারিতে উস্তাদ ।
এই যখন মুসলমান নিয়ে এখানকার সার্বিক অবস্হা - তখন মুসলমানদের হওয়া উচিত ছিলো এক হওয়া এবং তাদের নিজস্ব মিডিয়া চালু করা , সামাজিক কার্যক্রম বাড়ানো যাতে অমুসলমানদের সেবা দেওয়া যায় , ইসলাম সম্পর্কে বেশী বেশী প্রচার করা এবং মিডিয়ার একপেশে অবস্হান এর বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিকভবে প্রতিবাদ করা । কিন্তু তা তো দূরে থাক আমি এখানে এসে যা দেখছি - সারা দুনিয়ার মতো এখানেও মুসলমানরা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত এবং ফলস্বরূপ দুর্বল । লেবানিজ গ্রুপ ধনী ও প্রতিষ্ঠিত কিন্তু তেমন কোন কার্যক্রম চোখে পড়েনা । আরবরাও নিজেরা নিজেরা এক সাথে থাকে । তার্কিস গ্রুপ নিজেদের মসজিদ ভিত্তিক কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ । পাকিস্তানী ও বাঙালীরা মনে হয় একটু একটিভ কিন্তু তারাও এখানে রাজনৈতিক মতবাদে বিভক্ত ।
এত ভাগে বিভক্ত হলে আর এত নিজেদের কে নিয়ে সীমাবদ্ধ খাকলে নিজেরা কোন দিন একটা শক্তি হিসেবে দাড়াতে পারা যাবেনা আর মার খেতেই থাকবে । একে অপরকে সাহায্য করা তো দূরে থাক - বরং দূরত্ব বাড়ানোতে ব্যস্ত ।
চাদ দেখা নিয়ে যদি আলেম - ওলামারা এক হতে না পারে তাহলে আর কি নিয়ে এক হবে ? হয় এক পক্ষের একটা রোজ কম হচ্ছে, না হয় আরেক পক্ষে ঈদের দিনে রোজ রাখছে । দুইটাই অনেক বড় গুনাহ । কিন্তু গুনাহ নিয়ে কি মাথা ব্যাথা আছে ? মাথা ব্যাথা হলো নিজের কর্মকে জাহির করা যে - আমরা যেটা করেছি সেটাই ঠিক ।
ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠিত হলো কুরআন এবং সুন্নাহ নিয়ে । যা কুরআন এবং সুন্নাহ এর মধ্যে ষ্পষ্ট তা নিয়ে মতভেদ করার কিছু নেই । আর সুন্নাহ কি জিনিষ ? আল্লাহ কুরআনে কি বলেছেন - রাসুলকে অনুসরণ কর এবং অনুকরণ কর । সাহাবীরা কি করেছেন ? উনারা মহানবী (সাঃ) যে যে স্হানে পা ফেলেছেন সে সে স্হানে পা ফেলে হাটতেন । মহানবী (সাঃ) যেখানে বিশ্রাম নিতেন সেখানে বসে বিশ্রাম নিতেন আর বলতেন আমি হুুজর (সাঃ) কে দেখেছি এখানে বসতে । উনারা মহানবী (সাঃ) কুলির পানি কুড়িয়ে নিয়ে গায়ে মাখতেন - পরম ভক্তি সহকারে । চরম শ্রদ্ধার কারণে উনার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারতেন না । আর হায় আজ আমাদের কি অবস্হা ? মহানবী (সাঃ) যেখানে স্পষ্ট বলে গেছেন - চাদ দেখে রোজা রাখ এবং চাদ দেখে রোজ ভাঙ আর মেঘের কারণে চাদ দেখা না গেলে ত্রিশটা পূর্ণ কর । - এই কথার মধ্যে কি কোন ফাক আছে ?
মেঘের কারণে চাদ না দেখা গেলেও এখন ঈদ পালন করতে হবে - কারণ গণনায় বলে চাদ উঠে গেছে ।
কুরআনে আল্লাহ কি বলেছেন -
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর-যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম। (সুরা নিসা -৫৯)
ইসলাম হলো প্রথমে আল্লাহর হুকুম , তারপর নবীর হুকুম ও সুন্নত তারপর আলেম-ওলামাগণ । আজ আমারা আলেম-ওলামাগণের কারণে নবীর সুন্নতে ছেড়ে দিয়েছি । অথচ সাহাবীরা কখনই তা করতেন না । ইসলামের চার খলীফাগণ/ চার মাযহাবের ইমামগণ - এই কথা বলতেন যে - তোমরা যদি আমার মধ্যে এমন কোন কিছু পাও যা হাদীসের বিপরীত তাহলে তোমরা আমার মতকে না প্রাধান্য দিয়ে সুন্নাতকে প্রাধান্য দিবে । আমরা আজ কি সেটা করছি ?
(এখানে একটা কথা না বলে পারছিনা - খ্রিষ্টানরা তাদের বাইবলে পড়েনা, ইতিহাস পড়েনা - জানার চেষ্টাও করেনা । তাদের প্রিষ্টরা যা বলে - তাই মেনে নেয় । যার ফলে বাইবেলে না থাকলেও প্রিষ্টদের কথা মত তিন খোদা মানে । কুরআনে আল্লাহ বলেছেন - তারা তাদের পন্ডিত ও সংসার-বিরাগীদিগকে তাদের পালনকর্তারূপে গ্রহণ করেছে আল্লাহ ব্যতীত এবং মরিয়মের পুত্রকেও। অথচ তারা আদিষ্ট ছিল একমাত্র মাবুদের এবাদতের জন্য। তিনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই, তারা তাঁর শরীক সাব্যস্ত করে, তার থেকে তিনি পবিত্র। (৯ঃ৩১)। আজ আমাদেরও একই অবস্হা । আমরা আলেম ওলামারা যা বলছেন - যাচাই - বাচাই না করে - সুন্নতকে দুর সরিয়ে দিয়ে তাদের নির্দেশ পালন করছি । )
হাশররে ময়দানে মহানবী (সাঃ) তার উম্মতকে হাউজে কায়সারের পানি পান করাবেন । তিনি উনার উম্মতদের কে চিনতে পারবেন এবং তাদেরকে নিজ হাতে পানি পাান করাবেন । কিন্তু কিছু কিছু লোকদেরকে ফেরেশ্তারা উনার কাছে ঘেষতে দিবেনা । মহানবী (সাঃ) এর কারণ জানতে চাইলে ফেরেশ্তারা বলবেন - তারা আপনার সুন্নতকে অনুসরণ করেনি এবং দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু উদ্ভাবন করেছিলো । তখন মহানবী (সাঃ) ও তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন ।
কুরআন ও হাদীস হলো ইসলামের মূল । কোন বিষয় যখন কুরআন ও হাদীসে স্পষ্ট তা নিয়ে মতভেদ করার কিছু নেই । মহানবী (সাঃ) এর অন্ধ অনুকরণই মুসলমানদের কাম্য । আমারা সুন্নতকে অনুসরণ করতে গিয়ে বিজ্ঞানকে সামনে আনিনা । আমরা বলিনা যে মহানবী (সা) লম্বা কাপড় পড়তেন - এখন তার দরকার নেই । আমরা বলিনা তিনি গাছের ডাল দিয়ে মিছওয়াক করতেন এখন তার দরকার নেই । তিনি হাত দিয়ে খেতেনে এখন চামচ দিয়ে খেলেও হবে । সুন্নত পালন করতে পারছিনা নিজেদে ঈমানের দুর্বলতার কারণে - এটা এক বিষয় - তার জন্য মনে কষ্ট থাকবে কিন্তু তা অমান্য করা বা তা পালন করার প্রয়োজন নাই মনে করা - এটা কি এক ধরণের ঐদ্ধত্য প্রকাশ হয়ে গেলনা ? আমরা কি এরকম করে হাশরের ময়দানে মহানবী (সাঃ) এর সামনে দাড়াতে পারব ? ফেরেশ্তারা কি আমাদের উনার সামনে যেতে দিবে ? ওই সময় কি আমাদের খুব ভালো লাগবে ? যে প্রিয় নবীকে এত ভালোবাসি - তিনি যদি দুরে সরিয়ে দেন - তখন আল্লাহ কি আমাদের ভালো ভাসবেন ?
আবারো আসি কুরআনের কথায় - যা ষ্পষ্টঃ
"........তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর-যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম।" (সুরা নিসা -৫৯)
২| ১৬ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:৫৬
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: সহমত!
৩| ১৬ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:০০
নিজাম বলেছেন: আল্লাহ সকল প্রবাসীদের উপর রহমত দান করুন। একমত হওয়ার তৌফিক দান করুন।
৪| ১৬ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:১৬
মামু১৩ বলেছেন: অনৈক্য মুসলমানদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। যারা 'সিরিয়াস' মুসলীম, তারা আরো একটিভ--ছোটখাট বিষয় নিয়ে দাঙ্গা হাঙ্গামা খুন পযর্ন্ত করতে পিছপা হয় না।
৫| ১৬ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫২
মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: মেঘের কারণে চাদ না দেখা গেলেও এখন ঈদ পালন করতে হবে - কারণ গণনায় বলে চাদ উঠে গেছে ।
এটা কারা বলছেন? আমিতো জানি আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আলেমগণ চাদ দেখেই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
২২ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৭
েশখসাদী বলেছেন: আছে কিছু লোক ...যারা সেটেলাইট গণনায় বিশ্বাসী । কত রকম যে কথা বলে - মহানবী (সাঃ) এর সময় প্রযুক্তি এত উন্নত ছিলোনা - সুন্নত পালন এত জরুরী কিছু না ইত্যাদি ইত্যাদি । এরা নিজেরাও জানেনা এরা কি বলে ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৮:৪৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
ওখানে চাঁদ কয়টা?