নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হযরত রাবি ইবনে খুফফাইন (রহঃ) একজন মস্ত বড় বুযুর্গ ছিলেন । তার কালের কিছু লোক তাবে ভানি হিংসা করত । সেকালে এক ব্যাভিচারী নারী ছিলো । রূপে গুণে ছিলো প্রবাদতুল্য । হিংসুকরা তাকে এক হাজার দিরহামের বিনিময়ে রাজি করালো সে হযরত রাবি (রহঃ) কে পথভ্রষ্ট করে ছাড়বে । মানবতার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ফিতনার সূচনা হয়েছিলো নারী থেকে । বিশেষকরে নারী ও পুরষরা যখন স্বাধীনভাবে মেলামেশা করে তখন শয়তান ফেতনা উস্কে দেয় । তাছাড়া ধন-সম্পদও মানুষকে অন্ধ করে ফেলে । যেমনটি আজকের সমাজের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাব । অতঃপর ব্যাভিচারীণি তার সবচেয়ে সুন্দর পোশাকটি পরিধান করল । খুব ভালোভাবে সাজগোজ করলো । শরীরে সুগন্ধি মাখলো । অতঃপর হযরত রাবী ইবনে খুফফাইন (রহঃ) যখন রাতের বেলা যখন নামায পড়ে মসজিদ থেকে বের হলেন তখন সে রূপসী নারী তার সামনে এসে দাড়ালো । তুলে দিলো মুখের পর্দা । তার উপর হযরত রাবি (রহঃ) এর দৃষ্টি পড়তেই তিনি সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টি নামিয়ে নিলেন এবং বললেন, শোন বোন ! যে সৌন্দর্য নিয়ে তোমার এত অহংকার , যে রূপের ভরসায় তুমি আমাকে পথহারা করতে এসেছো, তুমি একবার সেই দিনের কথা স্সরণ কর- যেদিন আল্লাহতায়ালা তোমাকে কোন অসুস্হতায় আক্রান্ত করবেন । বলো সেদিন তোমার চেহারার সে ঊজ্বল্য কোথায় যাবে ? তোমার শরীরের হাড়গুলো যখন কংকালের মত বেরিয়ে আসবে - বলো সেদিন তোমার রূপ যাবে কোথায় ? তুমি বলো যখন তোমাকে কবরে রাখা হবে , যখন তোমার আলোকউজ্জ্বল মুখের উপর মাটি ছড়িয়ে দেয়া হবে , যখন তোমার শরীরে উপর কবরের পোকা-মাকড় ঘুবে বেড়াবে , তোমার চোখগুলো খেয়ে ফেলবে , তোমার চুলগুলো টেনে উপড়ে ফেলবে , তোমাড় হাড়গুলো শরীর থেকে নিথর আলাদা হয়ে পড়বে - তখন তো তুমি হবে একটি নিথর কংকাল । তুমি একবার সেই দিনের কথা ভেবে দেখ - যেদিন তোমাকে মুনকার - নাকীর তুলে বসাবে । অতঃপর তোমাকে তোমার কৃতকর্ম সম্পর্কে প্রশ্ন করবে । বলো, তুমি কি রূপ নিয়ে আজ তুমি বড়াই করছো - তোমার এই রূপ সৈান্দর্য তো কালই পোকা-মাকড়ের খোড়াক হবে ।
হৃদয়ের দরদ ও ব্যাথা জনিত একেকটি বাণী ব্যাভিচারী নারীর হৃদয়ে থেকে থেকে আঘাত করছিলো এবং তার কথা শেষ হবার আগেই পথহারা করতে আসা নারী নিজেই বেহুশ হয়ে পড়ে পথের উপর । তারপর যখন সে হুশ ফিরে পায় , তখন সঙ্গে সঙ্গে তওবা করে বাড়ী ফিরে যায় ।
------
আমরা তো দুনিয়ার ফাদে এমনভাবে আটকে পড়েছি , আমাদের যে একটা পরকাল আছে সেটা ভুলেই গেছি । আরো ভুলে গেছি যে পরকালে আমাদেরক আল্লাহর সামনে দাড়াতে হবে । ভুলে গেছি হাশরের মাঠের সে ভয়াবহ অবস্হা , যেখানে আপন বলতে কেউ থাকবেনা । কুরআনে আল্লাহ সেদিনকার ভয়াবহ অবস্হার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন -
"সেদিন মানুষ তার ভাই, মা, বাবা , স্ত্রী ও সন্তানদের থেকে পালিয়ে বেড়াবে । সেদিন তাদের প্রত্যেকেরই এমন গুরুতর অবস্হা হবে, যা তাকে সম্পূর্ণরূপে ব্যস্ত করে রাখবে । (সুরা আবাসা- ৩৪-৩৭)
হিসাবের মুখোমুখি হতে হবে সবাইকে - আমাকে আপনাকে সকলকেই । কৃতকর্ম সম্পকে স্বয়ং প্রশ্ন করবেন আল্লাহ পাক । জবাব দিবে দুর্বল অসহায় বান্দা-বান্দী । মেয়েদের অন্তর তো এমনিতেই দুর্বল । এই দুর্বল নারীকেই যখন আল্লাহতায়ালা সরাসরি নাম নিয়ে ডাকবেন এবং জিজ্ঞেস করবেন --
তোমাকে যা দিয়েছিলাম তা কোথায় ? তোমাকে যা পরিয়েছিলাম তা কোথায় ? যে সম্পদ, রিযিক ও আকল তোমাকে দান করেছিলাম তা কোথায় ?
তখন প্রতিটি মানুষ গাছের পাতার ন্যায় কাপতে থাকবে । সেদিনে সেই পরিস্হিতি হবে খুবই ভয়াবহ । ডানদিকে তাকালে নিজের আমল নজরে পড়বে , বাম দিকে তাকালে নজরে পড়বে আমল । সামনের দিক থেকে ভেসে আসবে জাহান্নামের ভয়াবহ চিৎকার ।
"এটা অনুচিত। যখন পৃথিবী চুর্ণ-বিচুর্ণ হবে । এবং আপনার পালনকর্তা ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে উপস্থিত হবেন, এবং সেদিন জাহান্নামকে আনা হবে, সেদিন মানুষ স্মরণ করবে, কিন্তু এই স্মরণ তার কি কাজে আসবে? সে বলবেঃ হায়, এ জীবনের জন্যে আমি যদি কিছু অগ্রে প্রেরণ করতাম! " (সূরা ফজরঃ ২১-২৪)
"জালেম সেদিন আপন হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি রসূলের সাথে পথ অবলম্বন করতাম। হায় আমার দূর্ভাগ্য, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। (সূরা ফোরকান -২৭-২৮)
©somewhere in net ltd.