নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া

পৃথিবির প্রতিটি গল্পের শুরু আছে শেষ নাই শুধু। আমার লিখা কবিতার সাথে গল্পের সাথে আমার জিবনের কোন মিল নেই , আমি লিখি লিখিকা হবার জন্য নয় । ভাল লাগে তাই । অনেকই মনে করে আমি ব্যক্তি জীবনে খুব কষ্টে আছি । আসলে সুখ দুঃখ নিয়েই জীবন ।, অন্য ১০ জন মানুষের মতেই আমার জীবন ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধারাবাহিক গল্প -- অ-মানব-- ( ৬ পর্ব)

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১১


---সেলিনা জাহান প্রিয়া------

--- আরে বাবা ভুল কেন । দেখ না কত টাকা ...........................।।
-- ছেলে বলে বাবা আসলেই কি এত টাকা ?
সামছু পুলিশ আজ নিজেই অবাক হল ১৭ লাখ টাকা । সামছু অনেক আগে মায়ের
মুখে গল্প শুনছে যে রাস্তায় পাগলদের মাঝে অনেক আল্লাহর অলি থাকে । সেই সব অলি নাকি মাঝে মাঝে কিছু অতি ভাল মানুষের সাথে দেখা হয় । তাহালে সামছু মনে মনে ভাবে সে হয়ত অতি ভাল মানুষ । কারন জিবনে সে কাউকে জোর করে টাকা নেই নাই । পুলিশের চাকুরি করে মানুষ কত ছয় নয় করে । কিন্তু সামছু কোন দিন করে নাই । সে তাঁর মায়ের কথা মনে করে কোন দিন খারাপ কাজ করতে পারত না। যাই হোক বউয়ের চিকিৎসা তা ভাল হাসপাতালে করাবে । পে - অডার টা হাতে নিয়ে বলে । আল্লাহ্‌ হয়ত তাঁর বান্ধাদের সততার পুরুস্কার এভাবেই দেয় । আলেয়া বেগম বলে তুমি তো আমার সাথে কোন মজা করছ না ।।
--- না মজা করব কেন !
-- কালকেই টাকা তুলে তোমাকে আগে মেডিক্যালে ভর্তি করে দেব । যে হে তু পাগলা
বাবার উছিলায় আল্লাহ্‌ টাকা দিয়েছে । সামছু পুলিশ এখন ঐ পাগল টাকে পাগলা
বাবা ডাকা শুরু করেছে । সামছু পুলিশের স্ত্রীও পাগালা বাবা বলতে শুরু করেছে ।
আসলে মানুষ যদি হটাৎ করে কিছু অস্বাভাবিক কিছু দেখে বা পেয়ে ফেলে তখন
হয়ত কোন ঘটনা কে অনেক রঙ দেয় । সামছু পুলিশ এই পাগল কে- কি রঙ দেয়
এক মাত্র খোদায় জানে ।।
********************
মিলি পাগল কে নিয়ে তারা বাসার ভিতরে গেলে মিলির মা বলে - এত সুন্দর ছেলে কিন্তু মাথা নষ্ট হলে
সেই মানুষের কোন দাম নেই । মিলি লক্ষ করলো জামা কাপড়ে কোন ময়লা নেই । হাত পা খুবেই পরিষ্কার । খালি পায়ে হাটে কিন্ত কোন ময়লা নেই পায়ে । মিলি মা কে বলে-
-- মা আজ একটা চোর ধরা খাইবে ।
-- কোন চোর ধরা খাইবে ।
-- তোমার জামাই বুঝলে ।।
-- হ খেয়ে কোন কাজ নাই । এমন ভাল ছেলে আর কই পাইবি । তোর মত একটা পাগল মেয়ে নিয়ে যে
সংসার করে এতেই বেশী ।
--- আমি পাগল । আর তোমার মেয়ের জামাই হল সাধু মানুষ । তাই না। তোমার মত শাশুড়িদের জন্য
মেয়ে গুলো কষ্ট পায় ।
-- পাগল চুপ করে বসে আছে । আর মা মেয়ের কথা শুনছে । আজিজ মিয়া ঘরে অন্য রুম থেকে পাগল কে দেখে বোকা বনে গেছে। কারন যে রাতে তাকে পুলিশ ধরে ছিল ।ঐ পাগল ঐ দিন থানার লকাপে এক সাথে ছিল । আজিজ মিয়া একটু আগে যে মিলি কে বলল - পাগল দেখ কত কি চাইবে? আসলে সে
এমন পাগল না। পাগলের সামনে এসে এমন অভিনয় শুরু করলো যে তাকে সে প্রথম দেখেছে । পাগল আজিজ মিয়ার দিকে চেয়ে বলল- অভিনয় খুব সুন্দর কিন্তু আমি মিলি না ।
-- অভিনয় মানে
-- দেখুন সে দিন রাতে কিন্তু আপনি যা যা করেছেন আমার সব মনে আছে । আপনি যেই যেই ফোন নাম্বারে পুলিশের ফোন থেকে কথা বলেছেন আমার কিন্তু সব নাম্বার মনে আছে ।
--- আজিজ মিয়া মিলির দিকে সরল একটা চাহনি দিয়ে সব গুলো দাত বের করে এমন এক হাসি দিল যেন পাগল যা বলছে তা সবেই পাগলামি । আজিজ বলতে লাগলো মিলি ওকে খাবার দাও । খুব ভুল পাগল মনে হয় । পাগলে কত কই বলে । পাগলের কথা পাগলেই ভাল জানে । না পাগল ভাই মনের মত করে খবার খাও । পাগল বলল মিলি খালা তোমার আচার থেকে আমাকে একটু মিষ্টি জলপাই আচার দাও । মিলি তো অবাক । কারন জলপাইয়ের আচার এবার সব চাইতে ভাল হয়েছে । এটা সে কাউকে দেয় নাই । মাঝে মাঝে গভীর রাতে একটু একটু খাঁয় । মিলি এবার বলল তুমি আমার আচারের কথা কি করে জানো । আর আমাকে তুমি খালা বলছ কেন ?
-- পাগল মনে হয় আজ প্রথম হাসল । মিলি খালা এই নামে তোমাকে খুব সুন্দর লাগে ।
-- মিলির মা বলল পাগলেও মানুষ চেনে ।
-- পাগল এবার বলল আমি যদি মানুষেই চিনতাম । তাহলে নিজেকে মানুষ বলে ভাবতাম । এই যে মিলি খালা । আমার দিকে একটু দেখেন । আপনি আমাকে চিনেন না । জানেন না। শুধু একবার শুনছেন , রাস্তার মোরে একটা লোক সকাল থেকে আকাশ দেখছে । আর ভাবতে লাগলেন আমি পাগল । ঠিক আছে আমি পাগল কিন্তু আমার জন্য এই আশপাশের কেউ খাবার নিয়ে এলো না। কিন্তু আপনি এলেন ।
--- হ্যা আসব না । আমার এলাকায় একটা মানুষ না খেয়ে থাকবে আর আমি তাকে দেখব না।
--- তাহালে মিলি খালা । এই এলাকায় আপনিই মানুষ আর সব নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত । ঐ যে পশু পাখির মত নিজের খাবার জন্য । দেখেন না পশুরা খাবার ঘুম আর জন্ম দেয়া ছারা কোন কাজ আছে । ঐ পশু গুলোই অন্য পশুর কোন কাজে আসে না।
-- মিলির মা বোকার মত পাগলের কথা গুলো শুনতে লাগলো ।।মিলির স্বামী পাগল কে বলল - তুমি
যদি মিলি কে খালা বল তাহালে আমি তোমার খালু । কি বল? পাগল বলল খালু না ডেকে মামা
ডাকি কি বলেন ?
-- হ্যা ডাক । মিলি একটু রাগ করে বলল - বাবা পাগল একটা কথা সত্য করে বলল তো । মিলির স্বামী বলল আরে পাগলের কথা শুনে কি লাভ ? পাগল বলল - মামা আপনি মিথ্যা বলছেন । আমি যে পাগল তা আপনি কি করে জানেন ? আমাকে কি চিনেন ?
-- আজিজ মিয়া বলল -না তোমাকে চিনি না। তবে তোমার কোন মতলব আছে ।
-- আমার না আপনার তা বের করা উচিৎ ।।
মিলির মা বলল -মিলি পাগলে খাবার শেষ হলে বিদায় দে । কোন কথা থেকে কোন কথা বলে । পড়ে লাগবে একটা ঝামেলা ।
--- মা ঝামেলা হলে আমার হবে কিন্তু পাগল মিথ্যা বলে না।
-- পাগল মিলি খালা কে বলল , খালা তোমার আচার গুলো ছাদ থেকে নিয়ে এসো । সন্ধ্যা হয়ে গেল যে ।
মিলি তো আচারের কথা ভুলেই গিয়েছিল । আচার মানেই তাঁর সব কিছু ।
-- তাই তো । মা তুমি ওকে চা দাও । আমি আচার আনি । রাতে ও আমাদের সাথে খাবে । মিলি
স্বামী পকেট থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে বলল - পাগল মামু এই নাও টাকা । বিদায় হও । এটা পাবনা
না ।

-- পাগল বলল আমি কি পুলিশ নাকি ? ঐ রাতের মতো টাকা দিয়ে কিনে নিবেন । দেখুন ঐ মহিলার ঠিকানা আমি শুনেছি ।।
মিলি তো তাদের কথা শুনে আচার আনা এবার ভুলে গেল । আজিজ মিয়া কি পাগলের মত ক্তহা বলছ । এই বাসা থেকে বের হও । মিলি বলল - আমার বাসা কে থাকবে কে বের হবে এটা বলার মালিক আমি ।
--- তাহালে স্বামী হিসাবে আমার কোন দাম নাই ।
--- থাকবে কি ভাবে । একজন পাগলের সাথে কি ভাবে কথা বলতে হয় । তুমি ভুলে গেছ । মিলির
মা বলল - আমি আগেই বলেছি একটা সমস্যা হবে । মিলি বলল আমি আগে পাগলের কথা শুনব ।
উ সত্য বলছে । আর সত্য শুনতে মানুষ ভয় পায় । পাগল বলল খালা এটাই সত্য । আমরা সত্য
শুনতে ভয় পাই । মিলির স্বামী বলল তুমি পাগল নিয়েই থাক আমি যাই । পাগল বিদায় করে আমাকে ফোন কর । দেখি কে থাকে বলে হন হন করে চলে গেল বাসা থেকে বের হয়ে । মিলির মা বলল - তোরা ঝগড়া না করে আর পারলি না । পাগল বলল মিলি খালা চল তোমার আচার নিয়ে আসি । আর তোমার জন্য একটা খুশির সংবাদ আছে । যা তোমার জিবনের সব আশা পুন্য হয়ে যাবে । মিলি কে নিয়ে পাগল আচার আনতে ছাদে যায় । মিলি বলে আরে পাগল তোমার খালু একটু পরেই আসবে কিন্তু তাকে পুলিশ ধরেছে কেন । খালা কাল কে বলি ।
--- হা তাই বল কিন্তু তুমি এই ছাদের ঘরে থাকবে ,। আমি হিমু খালা কে বলছি তোমার জন্য এই চিলেকোঠা । এখন আকাশ দেখ তুমি আমি তোমার জন্য কিছু খাবার আর কাপড় পাঠাই । মিলি তাঁর প্রিয় আচার গুলো নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে যায় । পাগল মানুষটা ছাদের এক কোনে যেয়ে আকাশের দিকে অপলক চোখে চেয়ে হাত দুটি দু পাশে মেলে দেয় ।

চলমান ------------------------

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.