নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া

পৃথিবির প্রতিটি গল্পের শুরু আছে শেষ নাই শুধু। আমার লিখা কবিতার সাথে গল্পের সাথে আমার জিবনের কোন মিল নেই , আমি লিখি লিখিকা হবার জন্য নয় । ভাল লাগে তাই । অনেকই মনে করে আমি ব্যক্তি জীবনে খুব কষ্টে আছি । আসলে সুখ দুঃখ নিয়েই জীবন ।, অন্য ১০ জন মানুষের মতেই আমার জীবন ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প # অ-মানব । ২৩ পর্ব

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৯



হা মিনা এক রহস্য আপনাদের পারিবারে । শিলার বাবা বলে মিনা কি রহস্য
আমার জানতে হবে ।
পাগল বলে - আপনার চাচার তিন সন্তান মারা যায় । আপনার চাচী আর মা হতে পারবে না। গোপনে আপনার চাচার সাথে মিনার একটা মনের সম্পর্ক সৃষ্টি হয় । আপনার দাদি মারা যাওয়ার সময় মিনার সকল দায়িত্ব আপনার চাচার উপর দিয়ে যায় । আপনার চাচী যখন জানে যে আপনার চাচার সাথে মিনার সম্পর্ক অনেক গভীর তখন মিনা কে অনেক শাসন করে । কিন্তু ততক্ষণে মিনা ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা । আপনার চাচী আপনার চাচা কে বিষয়টি বলে একটা ভয় দেখায় যে সে পঞ্চায়েত ডাকবে । আপনার চাচা বলে মিনা কে সে বিয়ে করেছে । কিন্তু আপনার চাচী বিষয়টা অন্য ভাবে নেয় । আপনার চাচির ভাইয়েরা রাতেই এসে মিনাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় । সকালে স্ত্রী সাথে অভিমান করে সে ফাসি নেয় । মিনা কে খুব অত্যাচার করে আপনার চাচির ভাইয়েরা । আপনার চাচা মারা যাওয়ার জন্য আপনার চাচী মিনাকে দায়ি করে ভয় দেখায় যে তাকে পুলিশে দিবে। মিনা তখন কিছু কাগজে টিপ সহি দেয় । মিনার খবর আর কেউ রাখে না।
আপনার চাচী বাকি জিবন এই বাড়িতে থেকে যায় । আর আপনার চাচার অংশ বিক্রি করে হজ করে আসে । কিন্তু মিনার একটি ছেলে হয় । আপনি কি টা কন দিন জানেন । আপনার এই বাড়ির
এবং আপনার সকল সম্পদের অর্ধেক মালিক । এখন আপনার মনে হতে পারে আমি এই গল্প বানিয়েছি । বা আমি কোন লোভে এই গল্প করছি । কিন্তু আপনি তো মিনাকে দেখলে চিনবেন ।
-- তুমি জা বলেছ আমি তা বিশ্বাস করি । কারন আমার মেয়েকে তুমি ঐ রাতে ফেরেশতার মত এসে রক্ত না দিলে আজ এই পরিবারের কেউ বেচে থাকা না থাকা সমান । আর শিলার মা কোন দিন দ্বিতীয় বার মা হতে পারবে না। আমিও ওকে রেখে বিয়ে করতে পারব না। কিন্তু আমি কোথায় পাব তাঁদের ।
-- পাগল হেসে বলে এই দুনিয়ায় একটা মজার বিষয় হল মানুষ যে লোভের আশায় সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে সেই সব জায়গায় তার পায়ের ছাপ থাকে । যারা ভাল মানুষ
তাঁদের পায়ের ছাপে ফুল ফুটে আর খারাপ মানুষের পায়ের ছাপে তাঁদের পাপের লেপ্ন থাকে ।
-- কিন্তু আমি তাঁদের আনতে চাই । তাঁদের হক দিতে চাই ।
-- পাগল হেসে বলে । আপনি সব পাপ মুছে একটা সুন্দর জিবন পেতে চান ।
--- হ্যা পেতে চাই । পাগল বলল একটু অপেখা করুন । পাগলটা হেঁটে শিমুল গাছের কাছে যায় । গাছটায় হাত রেখে বলে বন্ধু তোমাকে বিদায় । নাদিয়া বলে ভাইয়া তুমি গাছ কে কি বলছ । ও কি মানুষের কথা বুঝে । পাগল বলে প্রতিটা প্রানির কথা প্রতিটা প্রানির বুঝতে হয় । যে বুঝে সে হয় মানব আর যে বুঝে না সে হয় মানুষ । আমি একজন মানুষ থেকে মানব হতে চাই তাই তাঁদের সাথে কথা বলি । নাদিয়া বলে তুমি আসলেই একটা পাগল । এই নাও তোমার একটা এস এম এস এসেছে নার্স দিলরুবার নাম্বার থেকে । পাগল মানুষটা এস এম এস টা ভাল করে পড়ে নেয় । শিলার বাবা বলে আমারা যেতে চাই মিনার কাছে । দিলরুবা নাজু নাজ শিলাও যেতে চায় । শিলার বাবা একটা মাইক্রো নিয়ে রওনা দেয় সাগর নাল চা বাগানের দিকে । সিলেট থেকে অনেক দূর সাগর নাল চা বাগান । শিলা পাগল কে গাড়িতে বসে বলে -
--- জিনিয়াস মামা তুমি অনেক কিছু জানো । যা আমরা জানি না। কি করে জান ?
--- জানার খুব ইচ্চা । আমি সব কিছুতেই কারন খুঁজি , যুক্তি খুঁজি ।
--- মামা আমি কি জানতে পারি তুমি কি ভাবে এত সব জানো ?
--- মা মনি মানুষ কে জানার ইচ্ছা থাকতে হবে। মানুষ কে মানুষের মত ভালবাসতে
সব মানুষ কে সত্য বলছে এমন ভাবতে হবে । জিবনে কোন কিছু না দেখে কাউকে
সন্দেহ করা যাবে না।
-- নাদিয়া বলল । ভাইয়া আমি কি আপনাকে তুমি করে বলতে পারি ।
--- নাজ হেসে বলল ভাইয়া কে তুমি করে আমিও বলতে চাই ।
--শিলা বলল মামা তুমি কিন্তু হা বল না।
-- শিলার বাবা বলে নাজু তোমার ভাই তুমি কিছু বল ।
-- নাজু বলল তোমাকে দুলাভাই বললে কি তুমি খুসি হবে ।
-- শ্যালা যদি দুলাভাই না বলে তাহলে কি হয় ।
--- পাগল হেসে বলে সবাই মায়ায় বাঁধনে জারায় । মায়ার দুনিয়া বড় কষ্টের ।
দুলাভাই মায়া আছে বলে দুনিয়া আছে । একটা অবাক করা বিষয় কি জানেন
মানুষ বেশি ভুল এই মায়ার জন্য করে । মায়া বা মমতা জার মধ্যে বেশি সেই
বেশি কষ্ট ভোগ করে । আমি মায়া থেকে অনেক দূরে ।
-- নাজ হেসে বলে তাই রাত জেগে তুমি আকাশ দেখ চেয়ে ।
-- না আমি আকাশ দেখি না আকাশের মাঝে এত তারা কেন তাদের মাঝে কি
এমন সুখ যে রাত জেগে আলো দিয়ে জায় ।
--- শিলা বলে মামা তুমি কি জান আমাদের মত এমন দুনিয়া তারা দেশে আছে ।
--- পাগল বলে তাই বুঝি মা। তাহলে তো একবার যেতে হয় ।
--- মামা তুমি সত্য কি তারার দেশে যেতে পার ।
--- পাগল হেসে বলে হা আজ একটু তারার দেশে যাব ।
গাড়িটা এসে থামে সাগর নাল চা বাগানে । চার দিক তখন ও শীতের কিছু আমেজ রয়ে গেছে । পাগল গাড়ি থেকে নেমে একজন কে জিজ্ঞাসা করে এখানে মিনা নামে
কি কেউ থাকে । একজন বলে কোন মিনা , একজন কালা মিনা অন্য জন দলা মিনা ।
পাগল ঐ মানুষটার চোখের দিকে তাকিয়ে বলে দলা মিনার কি একটি ছেলে ।
লোকটি বলে হা দলা মিনার একটি ছেলে । পাগল বলল - হা ঐ মিনা কে দরকার ।
লোকটা বলল সামনে গিয়ে ডানে বাঙালি বস্তি আছে ঐ খানে যান । পাগল গাড়ি নিয়ে
বাঙালি বস্তীর কাছে আসে । আবার জিজ্ঞাসা করে একজন কে - দেখিয়ে দেয় মিনার
ঘর । শিলা বাবা দেখেই চিনে যায় তার মিনা ফুফু কে । মিনা প্রথমে কিছুটা ভয় পায় । শিলার বাবা বলে ফুফু আমি তোমাকে নিতে আসেছি তোমার বাড়িতে । শিলার বাবার মুখটা হাতিয়ে বলে তোমার মুখে ফুফু ডাক শুনে আমি সব দুঃখ ভুলে গেছি । কিন্তু আমার ছেলের তো বাবার পরিচয় নেই । শিলার বাবা বলে আমার চাচার ছেলে আমার ভাই । ফুফু তুমি চল তোমার ঘর বাড়ি তোমার সম্পদ তুমি বুঝে নাও । আমি
এই পাগল শ্যালা কে যে কথা দিয়েছি । তোমার হক আর সম্মান আল্লাহর একটা উসিলায় দিয়েছে । শিলার বাবা অবাক হয়ে দেখে তার চাচার ছেলের মুখটা একদম তার চাচার মত । মিনা সবার জন্য চা বানায় । শিলা কে কাছে ডেকে নেয় । শিলা বলে তুমি আব্বুর ফুফু তাহলে আমাদের দাদি । সবাই কথা বলায় ব্যস্ত । মিনার তার চোখের পানি মুছে । আশপাশের সকল মানুষ খুব খুশি । সবাই ভীর করে থাকে মিনার চার পাশে । সবাই গাড়িতে উঠতে থাকে মিনা ও তার ছেলেও গাড়িতে উঠে । শিলা বলে জিনিয়াস মামা কোথায় । কিন্তু সেই পাগল মানুষটা তাদের না বলে তাদের রেখে বাগানের ভিতরে চলে যায় । রাত ১০ টা পর্যন্ত দেখে পাগলটা বাগানের কোথাও নেই । নাদিয়ার মোবাইল এ আবার এস এম এস আসে । তাতে লিখা শিলা মা মনি তোমার মামা এখন তারার দেশে যাচ্ছে । ভাল থেক নাদিয়া । যে দিন" ল" পাস করবে তোমার
জন্য আমি পদ্ম ফুল নিয়ে আসব । সাগরনাল চা বাগান থেকে সবাই মিলে বাড়িতে চলে আসে । শিলার খুব মন খারাপ । নাদিয়া পুকুর পারের সেই জানালাটায় দাড়িয়ে
পুকুরের দিকে চেয়ে আছে । সকালে নাদিয়া তার বাড়ির সামনে ঝাড়ু দিতে যেয়ে অবাক । তার চার পাসের বাড়ির সামনে কোন ময়লা নেই । ঘরে এসে পাগলটার জন্য কাদতে থাকে । নাজ এসে বলে আপু ভাইয়ার জন্য আমার অনেক মায়া লাগছে ।
নাজু আপা এসে বলে অনেক মন দিয়ে পড় , দেখিস ও সত্যিই একদিন আসবে । আর ওকে দেখতে চাইলে তোকে দুইটা বিষয় পাস করতে হবে । একটা বি , এ অন্য টা ল ।
নাদিয়া কেদে বলে আমি পদ্ম ফুলের অপেক্ষায় আছি ভাইয়া ।
-----------------------------------------------
পাগল মানুষ টা চা বাগান থেকে বের হয়ে একটা পাকা রাস্তা পায় । পাকা রাস্তা দিয়ে
উদ্দেশ্য হীন ভাবে হাঁটতে থাকে । কোথায় যাচ্ছে সে নিজেও জানে না। কিছু দূর হাটার পর দেখে একটা খালি ট্র্যাক । মনে হয় চালক গাড়ি বন্ধ করে ঘুমিয়ে আছে । কিন্তু পাগল টা চালকের কাছে যাওয়ার পর বলছে ভাই আমাকে একটু ধর । পাগল দেখল লোকটা শরীরে অনেক জ্বর । তাপে তার শরীর পুরে যাচ্ছে । পাগল তারা তারি গাড়ি থেকে একটা বালতি নিয়ে চার দিক দেখে ।অনেক দূরে আলো দেখে সে বালতি নিয়ে দোর দেয় । আলোর কাছে এসে দেখে অনেক কয়টা বাসা । চাপ কল থেকে পানি নিয়ে চালকের মাথায় দিতে থাকে । পানি আনে আর দেয় । সাত বালতি পানি দেয়ার পর লোকটার হুস আসে । যে বাড়ি থেকে পানি এনেছে কল চাপের বার বার শব্দ পেয়ে পাগলের পিছনে দু জন মানুষ আসে । সবাই ধরা ধরি করে চালককে নিয়ে ঐ বাড়িতে মুছা মিয়ার ঘরে যায় । চালক কে চকিতে শুইয়ে দেয় । মুছা মিয়া কে নিয়ে পাগল গ্রামের ডাক্তারের কাছে যায় । রাতেই কিছু ঔষধ নিয়ে চালক কে খাওয়ায় । ভোর বেলায় চালকের শরীর ঘাম দিয়ে জ্বর ছেরে দেয় । পাগল মানুষটা রাতে আরও দুই বার শরীর মুছে দেয় । চালকের ঘুম থেকে জেগে উঠে পাগলের হাত জরিয়ে বলে
ভাই আপনি আজ না আসলে এই পথে আমার যে কি হত । পাগল হেসে বলে যে বাচবে
তাকে বাচানে ওয়ালা যে কোন উসিলায় বাঁচাবে । হয়ত আপনার জিবনে আপনি কাউকে কোন ভাবে কোন ভাল উপকার করেছেন স্বার্থহীন ভাবে আর তাই আপনি ও উপকার পেলেন স্বার্থহীন ভাবে । এই দুনিয়ার নিয়ম তুমি ভাল করলে টা ভাল ভাবেই কোন না কোন ভাবে ফিরে আসবে । মুছা মিয়া তাদের জন্য কিছু নাস্তা নিয়ে আসে ।
মুছা মিয়ার একটা বিধবা মেয়ে তাদের জন্য গরম চা বানিয়ে দেয় । মুছা মিয়া একজন দিন মজুর মানুষ । বিধবা মেয়েটা বিয়ে হয়েছিল এক দিন মজুরের কাছে । গাছ থেকে পড়ে লোকটা মারা যায় । কথায় কথায় মুছা মিয়া অনেক কথা পাগলের সাথে বলে । পাগল মেয়েটা কে বলে ও খুব পর্দা শীল মেয়ে । কি নাম চাচা - মুছা মিয়া
বলে ও খুব দুখী আমি সখ করে ওকে বেদেনা বলে ডাকি । ছোট বেলায় ওর বেদেনা খুব পছন্দ ছিল । আমি ঢাকা সদর ঘাঁট ফলের আরতে তখন কাজ করতাম । বেদেনা ছাড়া আমার মেয়ে অন্য কোন ফল খেত না। তার পর থেকে ওর মা আর আমি ওকে বেদেনা বলে ডাকি । ট্র্যাক চালক বলল গাড়িটা রাস্তায় রাখা কি অবস্তা । মুছা মিয়া বলল আমি দেখে এসেছি ভাল অবস্তায় আছে । চালক তার মাকে ফোন করে জাফলং ।
ছেলের কথা শুনে চালকের মা তাড়াতাড়ি চালকের ঠিকানায় রওনা দেয় । পাগল চেয়ে দেখে মুছা মিয়ার মেয়ে তাদের বেড়ার ফাক দিয়ে দেখছে ।।

চলমান----

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০৫

প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল।

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

A+ পোস্ট!

৩| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এবার নতুন পথে অ-মানব....

চলুন দেখা যাক

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.