নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে মনে হয় জীবনটা অন্যরকম হবার কথা ছিল!

শেরজা তপন

অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...

শেরজা তপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঙলা সাহিত্যের বহুমুখী অনন্য প্রতিভাধর সাহিত্যিক \' আবদুশ শাকুর\'

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৩৬


আবদুশ শাকুর
প্রথমে ইংরেজী সাহিত্যে মাস্টার্স করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী সাহিত্যের( প্রথমে ঢাকা কলেজ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েঃ ১৯৬৫-৬৭) শিক্ষকতা দিয়ে শুরু পরে পরে সিভিল সার্ভিসে যোগ দিয়ে সচিব হিসেবে অবসর নেন। মাঝে নেদারল্যান্ডসের আই.এস.এস থেকে উন্নয়ন অর্থনীতিতে এম.এস করে।
ইংরেজী সাহিত্যের ছাত্র হয়েও বাঙলা সাহিত্যে যার ছিল দুর্দান্ত দখল। লিখেছেন গল্প, উপন্যাস, নাটক ও প্রবন্ধ। তবে বাংলা রচনাসাহিত্যে তার অবস্থান অবিসংবাদিতভাবেই শীর্ষস্থানীয়।
বঙ্গবাসী কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ড. বিষ্ণু বেরা, কলকাতার মাসিক ‘একুশ শতক’ পত্রিকায় ২০০৫ সালের এক সংখ্যায় আলোচনাকালে আবদুশ শাকুরের রম্যরচনা সম্পর্কে লেখেন : “অসাধারণ পাণ্ডিত্য ও সূক্ষ্ম রসবোধসম্পন্ন কথাশিল্পী শাকুর তাঁর রচনাসাহিত্যে নিজেকে এবং তাঁর প্রিয় বাংলাদেশ ও পরিবর্তমান বাঙালি সমাজকে বিশশতকের উত্তাল বিশ্ব ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে নানা রঙে নানা ভঙ্গিমায় স্থাপন করেছেন। মনন ও অভিজ্ঞতায় এই লেখক প্রকৃত অর্থেই একজন বিশ্বনাগরিক। বাংলাদেশের নাগরিক বৃত্তের উচ্চমহল সম্বন্ধে বিশদ ও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় তাঁর জীবনপাত্র উছলে উঠে এক স্বতন্ত্র মাধুরীর ছবি ফুটিয়ে তুলেছে তাঁর গল্প-উপন্যাসে, বিশেষত রমণীয় রচনার ছোটগল্পরূপ উপস্থাপনায়।

গোলাপ ও আবদুশ শাকুর

তার গোলাপ-বিষয়ক গবেষণামূলক রচনাসমূহ বিশেষত ‘গোলাপসংগ্রহ’ গ্রন্থটি স্বক্ষেত্রে বাংলাভাষায় একক। শুধু পুষ্পরানী সম্পর্কেই নয়, পুস্তকটিতে রয়েছে মৌসুমী, বর্ষজীবী, দ্বিবর্ষজীবী, চিরজীবী পুষ্পবিষয়ক বিবিধ আলোচনাসহ বাংলাদেশের জাতীয় ফুল ও জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের উপর সারগর্ভ পর্যালোচনাও।
তার বাংলোর লনে এবং ছাদের বাগানে ৩৫০ প্রকার গোলাপের ৭৫০টি গুল্ম স্বহস্তে লালন করে তিনি ‘লন রোজ গার্ডেন’-শ্রেণিতে দেশের বছর-সেরা গোলাপবাগান-লালকের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বাংলাদেশ জাতীয় গোলাপ সমিতি’র স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন ১৯৮৯ সালে।

রবীন্দ্রনাথ ও আবদুশ শাকুর

রবীন্দ্রজন্মের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে কলকাতা থেকে ২০১০ সালে প্রকাশিত ‘রবীন্দ্রনাথকে যতটুকু জানি’-শীর্ষক আবদুশ শাকুরের সর্বশেষ গ্রন্থটি সম্পর্কে মাসিক ‘একুশ শতক’ পত্রিকায় আলোচনাকালে পশ্চিমবঙ্গের সুপরিচিত সাংবাদিক ও সাহিত্যিক সৌমিত্র লাহিড়ি বিবেচ্য বিষয়ে লেখকের পর্যবেক্ষণ ও উপস্থাপনের তিক্ষ্নতা ও গভীরতার উদাহরণস্বরূপ নিচের উদ্ধৃতিগুলি ব্যবহার করেছেন : “রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি সবসময়ই আকস্মিক, অণুমিত সম্ভাবনার সকল সীমারই বাইরে। অন্যদের সঙ্গে তাঁর প্রতিভার তুলনার অবকাশই নেই কোনো। কেননা অন্যরা ব্যক্তি, রবীন্দ্রনাথ পরিব্যক্তি। উদ্ভিদবিদ্যায় পরিব্যক্তি হল মিউটেশন-এর পরিভাষা। পুষ্পজগতে প্রকৃতির এমনি খেয়ালী সৃষ্টিকে বলে ‘স্পোর্ট’। যেমন ‘পিস’-নামক ঐতিহাসিক গোলাপটির বংশধারার পরম্পরাচ্যুত এক ব্যতিক্রান্ত নিদর্শনস্বরূপ গোলাপবিশ্বে ‘শিকাগো পিস’-নামক গোলাপটি ফুটেছে প্রকৃতির আকস্মিক খেয়ালে, তেমনি মনুষ্যবিশ্বে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও জন্মেছেন স্রষ্টার আকস্মিক খেয়ালে এবং ডিজাইনারের কপির মতো দ্বিতীয়হীন। অন্যরা প্রতিভার বরপুত্র হলে, রবীন্দ্রনাথ প্রতিভার বিশেষ সংজ্ঞা। নবনবোন্মেষশালিনী প্রজ্ঞার মানুষী মূর্তি তিনি। তাই রবীন্দ্ররহস্যের যেদিকেই তাকাই কেবল এই সত্যই দেখতে পাই যে অনৈসর্গিক এই শিল্পীর সৃজনধর্মী চিত্তবৃত্তি সর্বদাই অন্যথাচারী এবং সর্বকালেই চিত্তহারী। তাই অদ্ভুতকর্মা এই সার্বক্ষণিক শিল্পীকে এক জন্মে নয়, বহু জন্মেও নয়; এক প্রজন্মে নয়, বহু প্রজন্মেও নয়; এক শতকে নয়, বহু শতকেও নয় ; এককথায় রবীন্দ্রনাথকে সম্পূর্ণরূপে জানা হয়তো সম্ভবই নয়। তাই আমাদের কেবল পড়েই যেতে হবে তার সাহিত্য, শুনেই যেতে হবে তার সঙ্গীত, দেখেই যেতে হবে তার চিত্র, নিয়েই যেতে হবে তার শিক্ষা, ভেবেই যেতে হবে তার কথা।
তার ‘মহামহিম রবীন্দ্রনাথ’, ‘পরম্পরাহীন রবীন্দ্রনাথ’ এবং ‘রবীন্দ্রনাথকে যতটুকু জানি’-নামক রবীন্দ্র-গবেষণামূলক গ্রন্থগুলি বোদ্ধা মহলে কবিগুরুর শেষহীন গুরুত্ব অণুধাবনে বিশেষ সহায়ক বলে বিবেচিত।

ধ্রুপদী সঙ্গীত ও আবদুশ শাকুর

গবেষণামূলক সঙ্গীতলেখক হিসেবে দেশের সঙ্গীত ও সাহিত্যিক সমাজে তিনি অগ্রগণ্য। শুদ্ধসঙ্গীতের স্বর, সুর, কথা, হিন্দুস্তানীসঙ্গীত বনাম কর্ণাটকসঙ্গীত, ধ্বনিমুদ্রণ প্রযুক্তি, ধ্বনিসংস্কৃতি বনাম লিপিসংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়ে গভীরচারী আলোচনার জন্য তার ‘সঙ্গীত সঙ্গীত’, রাগসঙ্গীতচর্চার সোনালী শতক সম্পর্কিত ‘মহান শ্রোতা’ এবং সার্ধশত বর্ষের দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পর্যালোচনা গ্রন্থ ‘বাঙালির মুক্তির গান’ বিশেষজ্ঞমহলে সমাদৃত।
লেখক আবদুশ শাকুর একজন গায়কও। তাই সঙ্গীতজ্ঞ এবং উচ্চমানের সঙ্গীতালোচক তিনি স্বাধিকারবলেই। তাঁর ‘সঙ্গীত সঙ্গীত’-শীর্ষক গ্রন্থের পরিচায়ক-পত্রে প্রসিদ্ধ সঙ্গীততাত্ত্বিক ড. করুণাময় গোস্বামী লিখেছেন : “স্বয়ং গায়ক বলে শাকুর সঙ্গীত বিষয়টিকে একেবারে ভেতর থেকে জানেন ও বোঝেন। ক্রিয়াপরতার চমৎকারিত্ব সম্পর্কে তিনি সম্যক অবহিত। হিন্দুস্তানি ও কর্ণাটকী মিলিয়ে ভারতবর্ষের রাগসংগীতকলার যে বিপুল বিস্তার, এদের বিকাশের যে বিস্ময়কর তরঙ্গভঙ্গ সে বিষয়ে সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে শাকুরের পঠনপাঠন যে গভীর তা তার লেখা থেকেই বোঝা যায়। সেজন্যে সঙ্গীতের ক্ষেত্রে উপমহাদেশের যাবতীয় অর্জনকে তিনি ইতিহাসের পরিপ্রেক্ষিতে বিবেচনা করতে পারেন।
আবদুশ শাকুর রবীন্দ্রনাথ, দ্বিজেন্দ্রলাল, রজনীকান্ত, অতুলপ্রসাদ ও নজরুলের সঙ্গীত রচনার রীতি প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। এঁদের গান নিয়ে আলোচনা যা কিছু হয়েছে তা যে যথেষ্ট নয় সে কথা বলাই বাহুল্য। রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে অনেক সন্দর্ভ রচিত হয়েছে, এর বাইরেও বই লেখা হয়েছে অনেক। মানের বিবেচনায় কিছু কাজ চমৎকার হয়ে উঠেছে। সে তুলনায় নজরুলের গান নিয়ে লেখা হয়েছে অনেক কম, মানের বিবেচনায় উত্তীর্ণ কাজ একেবারেই কম। আবদুশ শাকুর যে নজরুল সঙ্গীতালোচনায় অভিনিবিষ্ট হয়েছেন এতে সঙ্গীতামোদীদের বিশেষ প্রাপ্তিযোগ ঘটবে সন্দেহ নেই। বাংলা গানের বিকাশে নজরুলের অবদান সম্পর্কে শাকুরের বিবেচনা তাদের জন্যে অপরিহার্য পাঠ্য বিষয় হয়ে উঠবে। সাহিত্য রচনায় ও সাহিত্যলোচনায় তার অর্জন অতি উচ্চ মানের।

ভিন্ন ধারার রম্য সাহিত্যিক 'আবদুশ শাকুর'

‘বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বাংলাদেশ’-এর সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ তার ‘স্বনির্বাচিত প্রবন্ধ ও রচনা’-নামক গ্রন্থে ‘আবদুশ শাকুরের রম্যরচনা’-শীর্ষক প্রবন্ধে (পৃ. ১৮০-১৮৮) লিখেছেন : “রম্যরচনার ক্ষেত্রে শাকুর একটি ভিন্ন ধারার প্রবর্তক। প্রতিটি লেখার সবখানে ঘাই-দেওয়া কাঁটাওয়ালা মাছের মতো ক্রূর আঘাতে যা পাঠককে নিরন্তর ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে যায় তা হল তাঁর দ্যুতিময় মননশীলতা। প্রতি পদে তাঁর ক্ষুরধার চিন্তার আঘাত পাঠককে আহত করে, জাগ্রত করে, আলোকিত করে এবং একটি নতুন দীপিত জগৎে তুলে নেয়। একটি রম্যরচনার কাছ থেকে এতখানি প্রাপ্তি সত্যিকার অর্থেই দুর্লভ।
আবদুশ শাকুরের জন্ম ২৫শে ফেব্রুয়ারি ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটায় রাজধানীর ধানমন্ডির নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
(তার স্ত্রী মারা যাবার পরে সুদীর্ঘ ১২টি বছর নিঃসঙ্গতায় কাটে তার জীবন। প্রচন্ড ভালবাসতেন তার সহধর্মীনিকে, কবরও কিনে রেখেছিলেন তাঁর পাশেই। ওনার কবরের কাগজপত্রের উপর লিখে রেখেছিলেন, 'মৃত লায়লা ও জিন্দা শাকুরের কবরের কাগজপত্র'।)
---------------------------------------
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী আবদুশ শাকুরের অতি সুক্ষ রসজ্ঞানের স্বাদ নিতে চাইলে তার ‘সেরা রম্য রচনা’বইখানা অন্তত পড়তেই হবে। বাঙলা সাহিত্যের বিরল প্রতিভাধর এই কথা সাহিত্যিকের রম্যরচনা ’বুদ্ধিজীবী’র খন্ডিত অংশ রম্য সাহিত্যপ্রিয় পাঠকদের সামনে হাজির করছি;

‘অগত্যা বলতেই হলো যে তরলতার ওপর বসলেও তার তেমন ক্ষতি নেই—হাজার হোক, বুদ্ধিজীবীর শ্রেষ্ঠতম অঙ্গ তো বটম্ নয়, মগজ। তবু না-ব’সে উনি ফুঁসে উঠলেন :
“কি বললেন ?”
স্মরণ করিয়ে দিলাম :
‘আমি বলি নি, বলেছেন হিচকক্ ; তাও কোনো বুদ্ধিজীবীকে নয়, তাঁর চলচ্চিত্রের এক অভিনেত্রীকে। অভিনেত্রীটির প্রশ্ন ছিল—আমার শ্রেষ্ঠতম দিক কোনটি? হিচককের উত্তর ছিল : প্রিয় আমার! সেটির উপর তুমি ব'সে আছো। তাই বলছিলাম যে বুদ্ধিজীবী তো তাঁর শ্রেষ্ঠতম দিকটির ওপর তো বসতে পারেন না, দাঁড়াতেও পারেন কদাচিৎ ; যদি কখনো যোগবলে শিরাসন করেন। অধমের ঘরে তো আপনাকে শিরাসন করতে বলা অশোভন, তাই বলেছি কেবল পুচ্ছাসন করতে; তাও দয়াপরবশে।
কিঞ্চিৎ কুপিত কণ্ঠে তিনি বললেন : ‘দেখুন আপনাকে আমি মুখ সামলে কথা বলতে বলবো না। কেননা তা লাগাম ছাড়াই নির্মিত, যেজন্য আমরা ওটাকে উপেক্ষা করে বক্তব্য সন্ধানে অভ্যস্ত— এমন কি, তার অন্তর্গত তত্ত্ব লাভেও ব্যর্থ বলবো না। অতএব আপনাকে বলতেই হবে যে এই সব উলঙ্গ
পত্রিকা কিনে কুলাঙ্গারগুলিকে আপনি সমর্থন জোগাচ্ছেন কেন?” ‘এগুলিতে কিছু লিখবো ব'লে ভাবছি, তাই আগে প'ড়ে দেখতে হচ্ছে।'
‘যেসব জঞ্জালের বুকের নৈঋত কোণ থেকে পিঠের ঈশান কোণ পর্যন্ত অপরিচ্ছন্ন গঞ্জনা, অপরিপক্ক চেতনা, অর্ধসিদ্ধ ভাবনা—সে সব খড়কুটো আপনি পড়ছেন? এবং এসব দিগ্ৰসনা পত্রিকায় আপনি লিখবেনও? যে-পত্রিকার প্রচ্ছদ পর্যন্ত থাকে না।” ‘তা কৌপীন-জাতীয় পরিচ্ছদ একটু থাকে বইকি।'
‘ওই বিচ্ছিরি কার্টুন আর ইয়ার্কি-শ্লোগান-কলুষিত বস্তুটিকে আপনি কৌপীন ব'লে ভব্য প্রতিপন্ন করার প্রয়াস পাবেন না—ওটি বড় জোর অসভ্য নেংটি।
● ‘কিন্তু এদেশে সাধারণত নেংটি-পরিহিতগণই কাজ করেন, পরিচ্ছদ-সজ্জিতজন করলেও করেন অকাজ অথবা কুকাজ। তাই পোষাকের প্রতি সন্দেহ আমার ঘনীভূত হতে-হতে এখন বদ্ধমূলই হয়ে গিয়েছে।'
এতক্ষণে সাধারণের স্তরে নেমে এসে মুচকি হেসে একটি ফোড়ন কাটলেন ভদ্রলোক : ‘উঠতিযৌবনে তো আপনি শুধু রূপসীগণেরই পোষাকবিদ্বেষী ছিলেন, পড়তিযৌবনে কি সর্ববিষয়েই নগ্নতাবাদী হয়ে গেলেন নাকি ?’
‘আমি অসচ্ছতার বদলে স্বচ্ছতাবাদী, কপটতার বদলে সরলতাবাদী, শঠতার বদলে সততাবাদী—।'
“কিন্তু বস্ত্রের বিরুদ্ধে বাদী আপনি কি মর্মে?” প্রশ্নটি আমি শুধরে দিলাম :
বস্ত্রের বিরুদ্ধে নয়, পোষাকের বিরুদ্ধে; পোষাক মানুষের নৈতিক অধঃপতনের
বাহক।' অধৈর্য হয়ে বন্ধু বলে উঠলেন :
*কথাটা যে-অর্থে সত্য, সে অর্থে যখন বলছেন না তখন ব'লেই যান; আমিও চলেই যাবো। যেহেতু, হামেশা আপনার মুখই কেবল খারাপ থাকে, আজ দেখছি মুডও ডবল খারাপ।'

“পোষাক সুন্দরকে ঢাকা দিয়ে দর্শককে বঞ্চিত করে, আর অসুন্দরকে চাপা দিয়ে করে প্রবঞ্চিত। উদাহরণ বাংলা সিনেমার তারকাগণ। তাঁরা পোষাক পরে সকলের মনোহরণ করেন, অনেকের চিত্তচাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেন; কারো চরিত্রবৈকল্যের অনাসৃষ্টিও করেন। এবং এ সকলই তারা করতে পারেন কেবল পোষাকের সাহায্যে তাঁদের সর্বাঙ্গীণ অসৌন্দর্যকে দর্শকের বুভুক্ষু চক্ষু থেকে লুকিয়ে রেখে মনের ভেতরে ভ্রান্ত ধারণা ঢুকিয়ে দেয়ার ছলনাটুকুর মাধ্যমে। অথচ এই পত্রিকাগুলির মতো আস্ত অনাবৃতা কেতায় উপস্থাপিতা হলে তাদের বদনগত বিষমতা দেখে দর্শকের স্বপ্নভঙ্গ তো হতোই, যাবতীয় অন্যায় লোভও ন্যায্য কারণেই লোপ পেত; ফলে অনেক নারীঘটিত অপরাধ ঘটতোই - '
বন্ধুর কুতূহলী প্রশ্নটি ছিলো হুলফোটানো :
'আর আপনার মতো প্রচারকের প্রচেষ্টায় এই সভ্য সমাজেই ওই দিগম্বর ধর্মটির পুনরাবির্ভাব ঘটলে সমকালের মহামারীটিরও উপশম হয়ে যেতো না? পরকীয়া প্রেমের ?”
'সে তো বিবসনা কেন, ভিন্নবসনা হলেও অনেকটাই বিতাড়িত হয়ে যেতো—যেহেতু এদেশে পরকীয়া প্রেমের প্রধান উৎসটিই হচ্ছে “সহজিয়া” শাড়ি। এই এক নম্বর আসামীটিকে আমি সনাক্ত করেছি শক্তিশালী খুশবন্ত সিংহের সহায়তায়। তিনি ধ'রে ফেলেছেন যে, শাড়িই একমাত্র পোষাক ; যা নারীর শরীরে দ্বিমুখী শক্তির সঞ্চার করে : এক দিকে তাঁর অসামান্য অনটনগুলিকে মোচন ক'রে ফ্যালে, আরেক দিকে তাঁর সামান্য ধনটুকুকেও বিবর্ধন ক'রে তোলে। অতএব ওই বিভ্রান্তিকর পোষাকটির বদলে এই পত্রিকাগুলির কৌপীন—ধরনের প্রচ্ছদের মতো বিকিনিধর্মী পরিচ্ছদের মোড়কেও যদি ওঁরা সমাজে সঞ্চরমান হতেন, তবুও মানব আর মানবী পরস্পরে অনেক কম ভ্রান্তিপূর্ণ সূত্রে সম্পর্কিত হতে পারতেন। একই যুক্তিতে আমি বলি যে বইপুস্তকও পোষাকের বদলে ন্যূনতম কৌপীন প’রেই পাঠকের আসরে চলে আসুক, কেবল মৌলিক উপাদানটুকু সম্বল ক'রে। যেহেতু বিভ্রান্তি ছাড়া তাদের বহির্বাস-অন্তর্বাসের বাহুল্য অন্য কোনো মূল্য যোগ করতে পারে না, পাঠকের সত্যকার সঞ্চয়ে।
ঘরে ফেরার গরজে তড়িঘড়ি ইতি টানতে চাইলেন অতিথি :
"তাহলে অ-ভব্য খোলস এবং অ-সভ্য মানসের এসমস্ত লিফলেট-প্যালেটের ভিতরে সত্যই আপনি মূল্য খুঁজে পেয়েছেন।'
“অন্তত এটুকু খুঁজে পেয়েছি যে ভব্যসভ্যতার অযথা গরজে এমন কোনো গৌণ আয়োজন-আড়ম্বর এদের নেই যাতে কোনো কিছুর ফাকে কোনো রকম অসারতা আশ্রয় পাবে। গুণে-মানে-পরিমাণে যত অকিঞ্চিৎকরই হোক, এরা কেবল এদের উপলব্ধ সারবান উপাদানটুকু মুঠোয় পুরেই চলে আসে, আপনার হাতের মুঠোয় তুলে দিয়ে হাওয়া হয়ে যেতে—প্রতিদানে শ্রদ্ধা-সম্মান-প্রীতি-ভালবাসার এন্তার প্রত্যাশা না-ক'রে। ফলে আপনার বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে জুটে গিয়ে ঝুলে থাকার মতো অবলম্বনই এদের কোথাও নেই। সুতরাং সেই ঐতিহাসিক জাহাজে হুইলচেয়ার ঠেলে এসে-পড়া অসুস্থ রুজভেল্টের সামনে প'ড়ে গিয়ে নেংটি-পরা অপ্রস্তুত চার্চিল যেমন বলেছিলেন, দেখলে তো! মার্কিনদের কাছে বৃটিশদের লুকোবার কিছুই নেই—এরাও তেমনি বলতে পারে, পাঠকের কাছে তাদের লুকোবার কিছুই নেই, মানে পাঠকের চোখকানকে অন্যত্র ফেরানোর কোনো গরজ তাদের নেই ; অর্থাৎ পাঠকের সঙ্গে সম্পর্ক তাদের খোলাখুলি কোলাকুলির : যা না-মিললেও কিলাকিলির মতো অহং ওদের নেই। আরেক দিকে, কোনো ভড়ং করে সপ্ত সাজার রচঙও তাদের নেই; যেহেতু তেমন কোনো গৌণ ধান্দাই পিঠের বোঝাটি হয়ে ওদের ভোগাচ্ছে না। প্রতিপক্ষে, আপনারা নিতান্ত অসার সংস্কারবশেই এত বেশি পোষাক প'রে ফেলেছেন এবং সেগুলির ওপরকার ইস্তিরিপলিশের রুটিন-রিচুয়েলে এতোই বুঁদ হয়ে রয়েছেন যে, ওগুলির পরতে-পরতে কত পিপীলিকা-ছারপোকার বংশবৃদ্ধি ঘটছে আর অন্তর্গত অঙ্গ জুড়ে কতকাল ধ'রে ময়লা জমছে তার হিসাবটুকুও হারিয়ে বসেছেন।'
বিধুর বুদ্ধিজীবী এবার নিষ্ঠুর বিদ্রূপবাণ হানলেন :
“আপনার স্বেচ্ছাচারিতাকে বকাবকির বোঝা নিয়ে আমাদের দিকে ধাবিত না করে, তাতে সাহিত্যের ঝাঁপি চাপিয়ে এসব নগ্নপত্রের পানেই চালিত করুন। তা আপনার সাহিত্যের স্থানসঙ্কুলান হবে তো ওসমস্ত কুস্থানে ?”

গায়ে না মেখে হেসে বললাম :
‘দেখুন, সাহিত্যগুণ বর্তাতে-যে কোনো স্থানেই বাধা থাকে না, সে-সাক্ষ্য তো অর্থনীতির কিংবা আইনশাস্ত্রের পুঁথিবিশেষও দিয়ে থাকে—বাধাটি যদি মেধা প্রতিভার অভাব থেকে না এসে থাকে।”
শোনার শিষ্টাচার আর সম্ভব হল না ব'লে পণ্ডিতপ্রবর এবার উপদেশ দিয়ে তাঁর পেশাগত দায়িত্ব পালনে ব্রতী হলেন :
‘শুনুন, আপনি ঠোঁটকাটা মানুষ, সুতরাং ওটা আমিও বন্ধ করতে পারবো না ; যেহেতু তালাচাবির ব্যবস্থাটা আল্লাতালাই ক'রে দেন নি। তাই ব'লে কানটা কিন্তু বন্ধ করবেন না, আর চটবেনও না; নেহাত কেউকেটা জ্ঞান ক'রেই বলছি : একটি ছত্র পড়লেও বুদ্ধিজীবীদের রচনাই পড়বেন এবং একটি ছত্র লিখলেও সেটার পরিবেশনা মর্যাদাবান পত্রিকাতেই করবেন যাতে বুদ্ধিজীবীগণই পড়েন।'
কথাগুলি ব'লেই বুদ্ধিজীবী বন্ধুটি উঠে পড়লেন, বরং বলা যায় ছিটকেই পড়লেন ; এবং বারান্দায়। ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরে আমি তাকে আকুল আবেদন জানালাম :
“ভাই, পরামর্শ দিলেনই যখন, আনুষঙ্গিক সমস্যাগুলির সামাধানও দিয়েই যান। প্রথমত, বুদ্ধিজীবীর পড়ার জন্য লেখার সমস্যা—যেহেতু লেখা নিজেরটি ছাড়া আর যারই হোক, সেটা তিনি কেবল দেখেন; পড়েন না। আবার সকল লেখকের মতো আমার লেখাও পড়ারই জন্য, দেখার জন্য নয়। দ্বিতীয় সমস্যা—বুদ্ধিজীবীর রচনা আমি সাগ্রহেই পড়ি, কিন্তু তাতে নির্বুদ্ধিতা ছাড়া বুদ্ধিতা প্রায়শই থাকে না—বুদ্ধতা তো নয়ই, থাকে শুধু বুদ্বুতা। এমন অবস্থাতে সন্দেহ থাকে না যে গোড়াতেই আমার গলদ হচ্ছে, অর্থাৎ সংজ্ঞা ভুল। অতএব, একজন বুদ্ধিজীবীর সঠিক সংজ্ঞা না দিয়ে আপনি আজ এখান থেকে চলে যেতে পারবেন না।”
"এক বাক্যে ছুটি পেতে মরিয়া হয়ে তিনি বসে পড়লেন এবং এক বাক্যে বললেন: 'যে মানুষ মস্তিষ্কের অপারেশন করে জীবিকা নির্বাহ করে তাকে বলা হয় বুদ্ধিজীবী—যেমন লেখক, আইনজীবী, শিক্ষক, সাংবাদিক।

ক্ষুরধার বুদ্ধিদীপ্ত মানবিক ও অতি পারিবারিক একজন মানুষ আবদুশ শাকুর;

( এই লেখাটুকু নেয়া হয়েছে’ আবদুশ শাকুরে’র পুত্রবধু দিলরুবা আহমেদের ‘আমার দেখা আবদুশ শাকুর’ থেকে)
আমার সব ব্যর্থতাকে ঢেকে দিতেন ওনার উদারতায়। আমার সব ক্ষুদ্রতাকে ভরিয়ে দিতেন ওনার বিশালতায়। বাংলাদেশের আর দশটা বিয়ের মতন আমার বিয়েতেও নানা মুনীর নানা মত। কিন্তু বাবা অনড়। পুত্রবধু হবে দিলরুবাই। ওনার মতে দুটোই ক্লাসিক নাম, এরকম মিল আর পাওয়া যাবে না। অনেকে বললো, রং অত পরিষ্কার না। বাবা বললেন, আসল হীরেতো সাদা হয় না। ও হলো ডায়মন্ড। আমি তো লজ্জায় মরি। কেউ বললো চেহারা অত ভাল না। বাবা হেসে বললেন, চাঁদেরও দাগ আছে। আমি চাঁদ নই তারপরও উনি আমাকে দিলেন বিশাল এক আকাশ, আমার আবাস, নিবাস, ঠিকানা, আশ্বাস আর ভালবাসার বন্ধন।
ধানমন্ডীর ২ নম্বর রোডের ১২ নম্বর বাসায় উঠে এলাম বাবা-মা আর স্বামীর সংসারে। বাবা তখন সচিব। আমি বুয়েটে পড়ছি। আমার স্বামী ছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রীর A.P.S। তাকে অফিসে আনতে নিতে সরকারের গাড়ি আসতো। কিন্তু সে খুব নারাজ আমাকে সরকারি গাড়িতে বুয়েটে নামাতে। বাবা আমাকে সাথে নিতেন। নামিয়ে দিতেন। প্রায়ই তিনি ফ্যাকাল্টির সামনে অপেক্ষা করতেন। আমার ক্লাস শেষ হওয়ার জন্য। আমার সহপাঠীরা অবাক হয়ে ভাবতো এত ভাল শ্বশুর আমি পেলাম কেমন করে!!! আমিও আকুলি বিকুলি করে খুঁজে বেড়াতাম কবে কার জন্য এত করেছিলাম যে এত সোয়াব আমার হয়েছে এমন একজন শ্বশুর পাওয়ার! আমার সৌভাগ্যে আমি নিজেই বিমোহিত।
চাকুরিতে যখন ঢুকলাম, অফিসের কাজে ঢাকার বাইরে গেলেই বাবা এসে অপেক্ষা করতেন ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আমাকে ট্রেন বা বাস স্টেশন থেকে। দেরী হলে বলতেন, একজন সচিবকে তুমি দুইঘণ্টা বসিয়ে রেখেছো, তোমার সম্ভবত দেশের প্রধামন্ত্রী হবার কথা ছিল! ওনার কষ্ট হয়েছে ভেবে কষ্ট পেতাম কিন্তু অবাক হতাম ভেবে এত ভাল কেন আমার বাবা।
ওনার ফুলের বাগানের সব ক'টা গোলাপের সাথে আমার পরিচয় করিয়েছিলেন। নিসর্গপ্রিয় এই মানুষটি যেন প্রতিটি গোলাপের ছিল বড় আপনজন। নিমগ্র ছিলেন গোলাপের সৌরভে, জানতেন না হয়তোবা উনি যে তিনি নিজেই এতোটাই বা ততোধিক সুরভিত। গোলাপের পাতায় উনি পেতেন চা'পাতার সুগন্ধ, আমি ওনাতে পেতাম গোলাপের সুবাস।
প্রতি সন্ধ্যায় উনি গাইতে বসতেন। আপনমনে। নিজের মতন করে নিজের জন্য গাইতেন। সুরের সে মুর্ছনায় কি যে আমেজ বয়ে আসতো ঘরময়!! অনেক রাত পর্যন্ত কানে আসতো বাবার দরদী কণ্ঠ। কী উদাত্ত সম্মোহনী এক মায়াবী সন্ধ্যা আর রাত আসতো আমাদের জীবনে। আমাদের বাসার কাজের ছেলে মেয়েগুলোও আস্তে আস্তে হয়ে উঠতে লাগলো গায়ক তানসেন যেন।
কাজের লোকজনের প্রতি তার ভালবাসা ছিল অসম্ভব প্রগাঢ়। আমার শ্বাশুড়ি ছিলেন তার প্রাণপ্রিয় অথচ তার সাথে একটি বিষয়েই বিবাদ ছিল তা হচ্ছে কাজের মানুষদের জীবন যাপন পদ্ধতি। বাবা চাইতেন অতি পরিমার্জিত জীবন যাপন ব্যবস্থা তাদের জন্য। গৃহভৃত্য নয়, তারা বাসার পরিচালক। গৃহকে পরিচালনা করে। একদিন অফিস থেকে এসে দেখলাম ডিম ভাজা হচ্ছে ক্রমাগত। অবাক হয়ে কারণটি জানলাম, একটা ডিম ভেজে তিনজন 'গৃহসেবক' নাস্তা করেছে। উনি এটা চুড়ান্ত অপছন্দ করেছেন। তাই এই ব্যবস্থা। যতক্ষণ পর্যন্ত না মন ভরে ততক্ষণ পর্যন্ত ওরা সবাই বিভিন্ন ফর্মে ডিম খাবে। আসতে যেতে ড্রাইভার, চাপরাশি, দারোয়ান, মালী, বাবুর্চি সুইপার, বেল বয় সবাই ডিম খেতে লাগলো। আমিও তাজ্জব হয়ে টেবিলে বসে ভেবে কুল পাচ্ছিলাম না ডিমের কোন ধরনের মামলেট-ওমলেট খাব। এত ধরনের আয়োজন টেবিল জুড়ে।
ভোজনরসিক অবশ্যই বাবা ছিলেন না কোন কালেই। তবে আমি যখনই কিছু রাধতাম বাবা সাথে সাথেই ঘোষণা দিতেন ওটাই সবচেয়ে ভাল হয়েছে। অথচ হয়তোবা লবন হয়নি, মরিচও না, তারপরও বাবা ভাবতেন তার রুবার রান্নাই সবচেয়ে মজার। ওনার ভাল লাগাতে আমার সব খারাপ ঢাকা পরে যেত।
একবার বেশ আগে, তখন সবেমাত্র ঢাকায় মাইক্রোওয়েভ এসেছে, আমার সৌখিন বাবাও সাথে সাথে তা কিনে আনলেন। আর আমিও কাজের লোকজনদের নতুন জিনিসটা ধরতে না দিয়ে নিজেই খাবার গরম করতে গিয়ে দিলাম আমার শ্বশুড়ির খুব প্রিয় হলুদ রংয়ের একটা নেদারল্যান্ড থেকে আনা কনটেইনারের ঢাকনা বাকা করে। বাবা সাথে সাথে বললেন এটা খুবই ভাল একটা কাজ হয়েছে। এতদিনের পুরাতন জিনিসটা থেকে পরিত্রাণ পেলাম। তবে তোমার শ্বাশুড়ি দেখার আগেই ফেলে দাও। কিন্তু ততক্ষণে আম্মা চলে এসেছেন। বাবা খাবার টেবিলে বসে থাকা আমার নিরাপরাধী স্বামীকে দেখিয়ে বললেন, এটা ইমতিয়াজের কাজ। ওকে কে বলেছে মাইক্রোওয়েভ ধরতে। আম্মা অগ্নিদৃষ্টি মেলে ছেলেকে জিজ্ঞেস করলেন, তুই আমার এই জিনিসটা নষ্ট করলি!
ছেলেও সাথে সাথে বললো, দেখতে চাচ্ছিলাম ঢাকনা কিভাবে বাকানো যায়। দেখা হয়ে গেছে। এবার ফেলে দেয়া যেতে পারে কনটেইনারটাকে।
...শেষ কথা;
আমিও তাই বহুবারে জন্মাতে চেয়েছি ওনারই পুত্রবধু হয়ে, উনিও তাই একবারেই বহুবারের আমেজ আমায় দিয়ে গেছেন। স্রষ্টার এই অবিশ্বাস্য সুন্দর সৃষ্টি প্রতিনিয়ত যেমন মুগ্ধ করেছে আমাদেরকে, প্রার্থনা করি স্রষ্টাও যেন তেমনি নিজের সৃষ্টিতে নিজেই মুগ্ধ হয়ে তাঁকে বেহেস্ত নসীব করেন।

লেখা সুত্রঃ
সেরা রম্য রচনা- আবদুশ শাকুর
উইকি
বিডি নিউজ ২৪ সহ অন্যান্য অনলাইন মিডিয়া

২০১৩ সালের ১৫ই জানুয়ারি ব্লগার 'রেজা ঘটক' এই সাহিত্যিকের মৃত্যুদিনে একটা পোস্ট দিয়েছিলেন। সেখান থেকে তার সন্মন্ধে আরো কিছু জানতে পারবেন;
Click This Link

মন্তব্য ৩৪ টি রেটিং +১৫/-০

মন্তব্য (৩৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৪৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: উনার লেখা কিছুই পড়া হয়নি আমার। আমার পড়ার দৌড় খুব বেশীনা অবশ্য।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৩৯

শেরজা তপন বলেছেন: ভাষা বেশ কঠিন! রস আস্বাদন করতে একটু কষ্ট হয় বৈ কি!
সময় করে পড়ে নিবেন। আপনিতো ফুল ভালবাসেন- গোলাপ নিয়ে তার লেখাটা পড়বেন।
আমার কাছে তার ব্যাক্তিগত ও পারিবারিক জীবন বেশ আকর্ষণীয় মনে হয়।

২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:০৭

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: আপনার মাধ্যমে ওনার সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। ধন্যবাদ তথ্যবহুল পোস্টের জন্য।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৪১

শেরজা তপন বলেছেন: অনেক বড় লেখা! লিখতে গিয়ে শুধু আকারেই বাড়ে-সময় নিয়ে পড়েছেন জেনে দারুন প্রীত হলাম।
এত বড় একজন গুণী মানুষকে নিয়ে কোথাও আলোচনা হয়না বিশেষ!
ধন্যবাদ আপনাকে -ভাল থাকুন।

৩| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৫৮

কামাল৮০ বলেছেন: বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই আবদুশ শাকুর।ইংরেজি সাহিত্যর ছাত্ররাই বেশীর ভাগ ভালো সাহিত্যিক।সাহিত্য সম্পর্কে তাদের গভীর জ্ঞান।
উন্নত মানের সাহিত্য ইংরেজিতেই রচিত।অনুবাদ পড়ে কতোটুকু আর বুঝা যায়।উন্নত মানের অনুবাদ খুব কম।
আমি কিছু কঠিন বই ইংরেজি এবং বাংলা অনুবাদ দুটিই পড়েছি, ইংরেজি তবু কিছুটা বুজেছি বাংলায় কিছুই বুঝি নাই।বাংলা শব্দ গুলো এতই খটমটে যে,শব্দের অর্থই বুঝা যায় না।অনেক গুলি বইয়ের মধ্যে একটা ছিলো,বস্তুবাদ ও দ্বন্দ্ব তত্ব।
সরদার ফজলুল করিমের অনুবাদ করা কিছু দর্শনের বই পড়েও একই অবস্থা।তখন কেবল আফছুস হতো ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে কেন পড়লাম না।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৪৭

শেরজা তপন বলেছেন: বস্তুবাদ ও দ্বন্দ্ব তত্ত্ব, বিবর্তনবাদ, দর্শন সহ সায়েন্টিফিক বই বাংলায় অনুবাদ করা বেশ দুরূহ! যারা ইংরেজী ভাল জানে তারা বাঙলা বুঝে কম আবার যারা বাঙলা ভাষায় দক্ষ তাদের ইংরেজীতে ঝামেলা আছে। দুটো মিলিয়ে ভাল সাহিত্যিক পাওয়া দুস্কর- আবার যারা দুটো ভাষাতেই দক্ষ তারা আবার অনুবাদে হয়তো আগ্রহী নয়।
আমার দুটো ভাষাতেই দক্ষতা কম। তারপরেও সামনে একটা ইংরেজী বই এর ভাষান্তর নিয়ে হাজির হচ্ছি- আশা করি আপনাদের কাছ থেকে সহযোগীতা ও সঠিক সমালোচনা পাব।
যেমন আছেন ভাল আছেন -এত কিছু জেনে কি ছাই হবে।

৪| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২৫

মনিরা সুলতানা বলেছেন: চমৎকার নৈবদ্য একজন গুনী লেখকের প্রতি অন্য একজন লেখকের। পুত্রবধুঁর লেখা অংশটুকু ও মনছুঁয়ে গেলো।
ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্যে।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:৩১

শেরজা তপন বলেছেন: বেশ অনেকদিন বাদে আসলেন আমার ব্লগবাড়িতে।
অনেক ধন্যবাদ এতবড় একটা লেখা মনযোগ দিয়ে পড়বার জন্য।
পুত্রবধুর পুরো লেখাটা নিয়ে আলাদা একটা পোস্ট দেয়া যেত -চমৎকার লিখেছেন তিনি। মন ছুঁয়ে যাবার মত তার লেখা- আমারই চোখে জল এসে গেছে।
সুযোগ পেলে পুরোটা বিডি নিউজ ২৪ থেকে পড়ে নিবেন।
ভাল থাকুন।

৫| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:২৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: চমৎকার পোস্ট। চমৎকার উদ্ধৃতি ও কালেকশন। পুত্রবধূর অংশ পড়ে আমিও বিমোহিত। আব্দুশ শাকুরের কিছুই পড়া হয় নি, তার নাম জানতাম শুধু ভালো সাহিত্যিক হিসাবে। এ পোস্টে তার রম্য পড়ে তো আমি অস্থির। খুবই তীর্যক ও তীক্ষ্ণ শব্দ প্রয়োগ ও বাক্য রচনায় তিনি খুবই শক্তিশালী, এ থেকে বোঝা গেল। তবে, তার লেখা সাধারণ পাঠকের বোধগম্যতার বাইরে, এটাও বুঝলাম।

অসাধারণ এ পোস্টে প্লাস। শুভেচ্ছা আপনার জন্য শেরজা তপন ভাই।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:৪২

শেরজা তপন বলেছেন: এই মাপের একজন সাহিত্যককে নিয়ে লিখতে গিয়ে নিজের ভাষাজ্ঞানকে অতি তুচ্ছ মনে হচ্ছিল!
তার রম্য সাহিত্যের রস আস্বাদন করতে কোন কোন প্যারা আমার বার তিনেক পড়তে হয়েছে! লেখালেখিতে হয়তো উঁনার প্রফেশন ও সামাজিক বাধ্যবাধকতার কারনে সাধারনের কাতারে মিশতে পারেননি। লিখতেও পারেননি তাদের জন্য- সে কারনেই অমিতপ্রতিভাধর এই লেখককে মানুষ ভাল করে চেনেই না কিংবা জানেই না!
তার স্ত্রীর ধারনা ছিল তার ঘাড়ে জ্বীন আছে :) না হলে একটা মানুষ এত কিছু জানে কেমনে কিংবা এত খটমট শব্দে লিখে কিভাবে!!
আপনার মন্তব্য আমাকে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করে আরো ভাল কিছু লিখার জন্য। ভাল থাকবেন প্রিয় কবি, গীতিকার, সুরকার, কথাসাহিত্যিক সোনাবীজ ভাই।

৬| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ২:৪৬

কামাল৮০ বলেছেন: - এতো কিছু জেনে কি ছাই হবে।
একদম ঠিক বলেছেন।এক সময় কমিউনিষ্ট পার্টির সদস্য ছিলাম।স্বপ্নছিল, হাতি ঘোড়া মেরে দেশ ও জনগনের সেবা করবো।কাজের কাজ কিছুই হলো না।এখন না ঘরকা না ঘাটকা।তবে হতাশ না।পরবর্তী প্রজন্মের অপেক্ষায় দিন গুনছি।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:৫৮

শেরজা তপন বলেছেন: জ্বী ভাই এক প্রজন্ম সপ্ন দেখে তাদের অধরা কাজগুলো পরের প্রজন্ম সম্পুর্ন করবে। কিন্তু পরের প্রজন্মের সপ্নগুলো পালটে যায়-তারা ভাবে অন্যভাবে! এভাবেই দারুন কিছু সপ্নের মাঝপথেই মৃত্যু হয় :)
কমিউনিজমের প্রতি ভালবাসা আপনাকে গতানুগতিক ধারা থেকে ভিন্নভাবে কিছু ভাবতে শিখিয়েছে। যখন যেভাবে জীবন চলে সেইটেই ভাল। এক জীবনে আর এত আফসুস করে কি হবে!

৭| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৭:১৭

সোহানী বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো আবদুশ শাকুর নিয়ে লিখা। অনেক কিছুই জানতাম না। তবে লিখাটা দুই পর্বে হলে ভালো হতো।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:১৮

শেরজা তপন বলেছেন: তা ঠিক লিখাটা বেশী বড় হয়ে গেছে! ইদানিং সব লিখাই বড় হয়ে যায় -অল্প কথা সারতে পারি না :)
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য প্রিয় সোহানী আপু।

৮| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:১৬

জুল ভার্ন বলেছেন: আবদুস শাকুর সম্পর্কে বেশ ভালো পোস্ট। +

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:০৬

শেরজা তপন বলেছেন: বরাবরের মত অনুপ্রাণিত করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাই
ভাল থাকবেন

৯| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৪৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: শেরজা তপন ভাই লিখেছেন : ভাল থাকবেন প্রিয় কবি, গীতিকার, সুরকার, কথাসাহিত্যিক সোনাবীজ ভাই।

একের ভিতরে এত গুণের অধিকারী হইয়া এখন নিজেই অস্থির- কবে আমি এতসব কৃতিত্ব অর্জন করিলাম। নিজের প্রতিভায় মুগ্ধ হইতে হইতে আমার এখন পাগল হইবার দশা :)

=p~ =p~ =p~ =p~ =p~

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০৮

শেরজা তপন বলেছেন: আমি একটুও বাড়িয়ে বলিনি- বরং কমিয়েই বলেছি মনে হচ্ছে!

আপনার যেমন গুণ আছে তেমনি গুণের ভার বইবার ক্ষমতা আছে - বেশী টেনশন নিয়েন না, আগায় যান :)

১০| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:২৩

ভুয়া মফিজ বলেছেন: বাঙলা সাহিত্যের বহুমুখী প্রতিভাধর সাহিত্যিক আবদুশ শাকুর সম্মন্ধে আগে কিছুটা জানতাম। আপনার লেখা পড়ে বিস্তারিত জানলাম। বিশেষকরে উনার সূক্ষ রসবোধের বিষয়টা অজানাই ছিল।

আমাদের দেশের বহুমুখী প্রতিভাধরদের কেউ মৃত্যুবরণ করেন (যেমন, মরহুম আবদুশ শাকুর), কেউ দেশান্তরী হন (যেমন, ভুয়া মফিজ)...........কিন্তু শুন্যস্থান পূরণ হয় না। এই ব্যাপারে আপনের বক্তব্য কি? :-B

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৩

শেরজা তপন বলেছেন: মরহুম আবদুশ শাকুরের শু্ন্যস্থান হয়তো কোনদিন পুরণ হইতে পারে কিন্তু দেশান্তরী খ্যাতিমান ব্লগার 'ভুয়া মফিজে'র মত প্রতিভাধরের শুন্যস্থান কখনোই পুরণ হইবার নহে।

এমন আরেকখান প্রতিভাবান ব্যাক্তির জন্ম একমাত্র আপনার ঔরসে সম্ভব! :)

১১| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৫

অপ্‌সরা বলেছেন: এত কিছু জানা হলো তার থেকেও বেশি জানা হলো পুত্রবঁধুর লেখা থেকে .......

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৩

শেরজা তপন বলেছেন: হ্যা পুরা মাঠে বল নিয়ে দৌড়াদৌড়ির পরে ওইখানে এসে গোল হইল :)

আসলেই উঁনার পুত্রবঁধু দিলরুবা আহমেদের স্মৃতিচারণ যে কাউকে মুগ্ধ করবে- ব্যক্তি আবদুশ শাকুরের প্রতি শ্রদ্ধা ভালবাসায় মাথা নুয়ে আসবে।

১২| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৯

অপ্‌সরা বলেছেন: দিলরুবার আসল রুবা বুঝা যেত উনি শ্বাশুড়ি আম্মার স্মৃতি চারণ করলে.......
তিনি মনে হয় না বিশেষ সুবিধার ছিলেন........

ঢাকনা বাঁকানোর কথা যেভাবে ছেলে আর বাবা মিলে বাঁকিয়ে দিলেন।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৮:২৪

শেরজা তপন বলেছেন: নাহ না তার শ্বাশুরীর সাথেও সম্পর্ক ছিল দারুন!
শ্বশুরের সাথে ঝগড়া হলে সে সবসময়ই শ্বাশুরীর পক্ষ নিত- এবং শ্বশুর সে কারণে আরো বেশী ভালবাসত তাকে।
দিলরুবা বুয়েটিয়ান মেয়ে- ঘরে বাইরে দুইখানেই স্মার্ট ছিলেন বা আছেন!

১৩| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৮:২৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আব্দুশ শাকুর সাহেব বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন বলে মনে হচ্ছে। উনি গোলাপ বিশেষজ্ঞ। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের উপর বই লিখেছেন কয়েকটা। উনি একজন গায়কও। তিনি রম্য লেখক হিসাবে সমাদৃত। আলফ্রেড হিচককের নায়িকার শ্রেষ্ঠাংশ নিয়ে কৌতুক এবং সেই সুত্রে আব্দুশ শাকুরের পুচ্ছাসন সংক্রান্ত অনুরুপ কৌতুকটির দ্বারা আমোদিত হলাম। এক সময় বিটিভিতে হিচককের সিনেমা/ রহস্য কাহিনী দেখাতো। পুরোপুরি না বুঝলেও ভালো লাগতো। অত্যন্ত মেধাবী একজন চিত্র পরিচালক ছিলেন নিঃসন্দেহে। রহস্য কাহিনীকার হিসাবে ওনার মত মানুষ কম আছে।

শাকুর সাহেব নারীদের পোশাক নিয়ে বেশ সূক্ষ্ম কৌতুক করেছেন দেখা যাচ্ছে।

খুশবন্ত সিং শাড়ি নিয়েও কিছু লিখেছেন মনে হয়।

কাজের লোকদের ডিম খাওয়ানো দেখে বোঝা যায় উনি অনেক বড় মনের মানুষ ছিলেন।

ওনার বৌমাকে কখনও ছোট হতে দেননি। বৌমার দোষ ছেলের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। এগুলির দ্বারা ওনার উদার মনের পরিচয় পাওয়া যায়। ছেলেও কম উদার না। দোষ নিজের ঘাড়ে নিয়ে নিল।

ওনার পুত্রবধূর লেখাটাও চমৎকার হয়েছে।

আপনাকে ধন্যবাদ এই বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মানুষটার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য। ধন্যবাদ।

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:৪৬

শেরজা তপন বলেছেন: আব্দুশ শাকুর সাহেব বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন বলে মনে হচ্ছে। উনি গোলাপ বিশেষজ্ঞ। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের উপর বই লিখেছেন কয়েকটা। উনি একজন গায়কও। তিনি রম্য লেখক হিসাবে সমাদৃত। আলফ্রেড হিচককের নায়িকার শ্রেষ্ঠাংশ নিয়ে কৌতুক এবং সেই সুত্রে আব্দুশ শাকুরের পুচ্ছাসন সংক্রান্ত অনুরুপ কৌতুকটির দ্বারা আমোদিত হলাম। ~ দারুন বলেছেন।

এক সময় বিটিভিতে হিচককের সিনেমা/ রহস্য কাহিনী দেখাতো। পুরোপুরি না বুঝলেও ভালো লাগতো।~ কত সালের কথা বলছেন?মনে পড়ছে না- দেখিনি মনে হয়! :(
বেশী জ্ঞানী মানুষেরা সাধারণত পারিবারিক জীবনে অসুখী হয়। তিনি সত্যিই অনন্য ছিলেন। বুদ্ধিমান ফিটিফাট একজন সুখী মানুষ।
তার গিন্নী বলত তার ঘাড়ে নাকি 'জ্বীন' আছে :)

অনেক ধন্যবাদ ভাই চমৎকার এই মন্তব্যের জন্য। ভাল থাকুন

১৪| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪১

খায়রুল আহসান বলেছেন: টিভিতে ওনার গোলাপ নিয়ে আলোচনাগুলো শুনতাম আর অবাক হ'তাম, একটা মানুষ কী করে গোলাপ নিয়ে এত কিছু জানতে পারেন, তা ভেবে। ওনার সাহিত্য কর্মের সাথে তেমন পরিচিতি ঘটেনি, আর শাস্ত্রীয় সংগীতের উপর তার এমন অগাধ পাণ্ডিত্যের কথাও এই প্রথম জানলাম। আপনার এই গবেষণাধর্মী পোস্ট পড়ে অনেক সমৃদ্ধ হলাম।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:২১

শেরজা তপন বলেছেন: দুঃখিত মন্তব্যের উত্তর দিতে দেওয়ার জন্য ? আপনি যে অনুষ্ঠানের কথা বলছেন সেটা কত সালের কথা? আমার কখনো দেখা হয়নি। বড় করি আমি রম্ব সাহিত্যের ভক্ত বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র থেকে উঁনার প্রকাশিত একটা রম্য রচনা থেকে তার সাথে পরিচয়। তাঁকে দিন দিন যত জেনেছি তত বেশি অবাক হয়েছি এই অগাধ বহুমুখী পাণ্ডিত্য ছিল তার।
লেখায় অনুপ্রাণিত করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।

১৫| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৫২

খায়রুল আহসান বলেছেন: ওনাকে নিয়ে ওনার পুত্রবধূ দিলরুবা আহমেদ এর স্মৃতিচারণের অংশটুকু খুব ভালো লেগেছে।

কামাল৮০, ভুয়া মফিজ এবং সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই এর মন্তব্যগুলোও ভালো লেগেছে। আপনার প্রায় প্রতিটি প্রতিমন্তব্যই ভালো লেগেছে।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:২৩

শেরজা তপন বলেছেন: কখনো সুযোগ পেলে বিডি নিউজ ২৪ থেকে উনার পুরো লেখাটা পড়ে নিবেন। ফের মন্তব্যে আসার জন্য ধন্যবাদ।
তাদের প্রত্যেককেই আবার নতুন করে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।

১৬| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৩২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় তপন ভাই,

ওনার সাথে আপনার সৌজন্যে আজকে পরিচিত হলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় তপন ভাই আপনাকে।এক বাংলা সাহিত্যের কত দিকপালকে আমরা জানি না।কত ছোট্ট গন্ডি আমাদের!
ওনার সাহিত্যকর্মের যেটুকু অংশ তুলে ধরলেন রীতিমতো জ্যোতিষ প্রভা। পাশাপাশি পুত্রবধূর যে অভিব্যক্তির শ্বশুর মহাশয় সম্পর্কে ফুটে উঠেছে তা থেকে উনার অতি উচ্চদরের মানুষ, একজন বাবা এবং একজন দায়িত্বশীল আমলার পরিচয় পেলাম।

সুন্দর পোস্টটিতে ভালোলাগা রইলো।

শুভেচ্ছা আপনাকে।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:৩৬

শেরজা তপন বলেছেন: আপনি ঠিক বলেছেন ভাই এবং কত বহুমুখী প্রতিভার পন্ডিত ব্যক্তি নিরবে নিভৃতে এসে চলে গেছেন আমরা তার খবরই রাখিনি।
অথচ নিজেদের জানার বহর ও ক্ষুদ্র পাণ্ডিত্য নিয়ে কতই না গর্ববোধ করি!!!
উনাকে নিয়ে ভবিষ্যতে আরো বিস্তারিত কিছু লিখার ইচ্ছা রইলো। আপনার চমৎকার এই ভালোবাসা ও আন্তরিকতা পূর্ণ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ভালো থাকবেন ভাই।

অফটপিক :তমোময়ী কি শেষ হয়ে গেল?

১৭| ০১ লা অক্টোবর, ২০২২ রাত ৮:৩৪

আখেনাটেন বলেছেন: উনার লেখার সাথে সেই কলেজ লাইফ থেকেই পরিচিত ছিলেম। বিশেষ করে রম্য লেখা। আমার ফেবারিট জায়গা। :D

যদিও আমলাদের বই পাঠ করে আমার খুব একটা সুখকর অভিজ্ঞতা নেই...বেশির ভাগের লেখাই অখাদ্য....

কিছু ব্যতিক্রমের মতো আবদুশ শাকুর ছিলেন অনন্য..

আমি মনে করি, যত দিন যাবে উনাকে বাঙালী পাঠকেরা ততই আরো বেশি করে জানতে পারবে যেমনটা আহমদ ছফাকে চিনছে।

দুর্দান্ত লেখাটির জন্য আপনাকেও এক ডালি শুভেচ্ছা....প্রিয় একজন লেখককে অসাধারণভাবে তুলে ধরার জন্য... B-)

০২ রা অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৯:৫৩

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার মন্তব্যে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হলাম।
আমার মনে হয় তিনি একটু প্রচার বিমুখ ছিলেন বা তার প্রফেশনের কারনে সাধারনের সাথে মিশতে পারেননি। সেজন্য তাকে ব্যাপকভাবে পাঠকেরা জানতে পারেননি। গতানুগতিকধারার লেখক তিনি ছিলেননা। অর্থকড়ির অভাব না থাকায়- নিজের মত করে উত্তম সাহিত্য রচনায় মননিবেশ করতে পেরেছেন।
আমলাদের ব্যপারে যা বলেছেন তা সঠিক :)
চমৎকার এই মন্তব্যে আপনাকে ধন্যবাদ ও ভালবাসা। ভাল থাকুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.