নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে মনে হয় জীবনটা অন্যরকম হবার কথা ছিল!

শেরজা তপন

অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...

শেরজা তপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বয়ঃসন্ধিকাল-১

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৪৩


বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বা যাদের জানা শোনার অনেক ইচ্ছে তারা ছাড়া আসলে আমরা ক’জন জানি সত্যিকার অর্থে একজন কিশোর বা কিশোরের বয়ঃসন্ধিকালে মনোজগৎ ও দৈহিক ভাবে কি কি পরিবর্তন ঘটে? কি আশ্চর্য অথচ আমরা প্রত্যেকেই সেই বয়ঃসন্ধিকাল পার করে এসেছি। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের অনেকেই এখন এই বয়ঃসন্ধিকাল অতিক্রম করছে।
করোনার পরে ছেলেকে নিয়ে বেশ বড় একটা সমস্যার মুখোমুখি হলাম। স্কুল থেকে অভিযোগ আসছে, কোচিং থেকে আসছে। ক্লাসের বন্ধুদের সাথে নিয়মিত মতের অমিল হচ্ছে যার ফলে বন্ধুদের সাথে তাঁর সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে।এত লক্ষ্মীমন্ত একটা ছেলে কেন বেয়াড়া হয়ে উঠল বুঝতে পারছি না। ওর গলার স্বর ভেঙ্গে যাচ্ছে, নাকের নীচে হালকা গোঁফের রেখা, অল্প কথাতেই রেগে যাওয়া, একা একা বেশীক্ষণ থাকতে চাওয়া, আত্মীয় স্বজনদের সাথে মুখোমুখি সাক্ষাতে বিব্রত-বোধ করা, বাবা মায়ের সাথে বাইরে বের হতে অনীহা প্রকাশ এসবই যে বয়ঃসন্ধির সমস্যা সেটা আমরা আঁচ করতে পেরে আগেই সাবধান হয়েছিলাম।
তাঁর মতামতের মূল্যায়ন যদিও আগের থেকে একটু বেশী করছি- কিন্তু সে যেন বিপথে চলে না যায় সেজন্য নজরদারি বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
পরে জানা গেল এই সমস্যা শুধু একা ওর নয় বাকি সব ছেলেদের এক ও অভিন্ন সমস্যা। যাদের বড় মেয়ে আছে তাদের কথা; ছেলেদের থেকে মেয়েদের মানুষ করা অনেক সহজ। ছেলেকে নিয়ে তো অন্য এক উদ্ভট সমস্যায় পড়েছে- এটা তো ভাবেনি কখনো কেউ।
আমরা চলে যাই আমাদের কিশোর বেলায়! যৌনতা ও যৌন বিষয়গুলো আমাদের পূর্বসূরিরা এমনভাবে চেপে গিয়েছেন যে এটা ভয়ঙ্কর অপরাধমূলক কর্ম হিসেবে আমাদের মনোজগতে এমনভাবে আস্তানা গেড়েছে য, এর ঘোর-টোপ থেকে আজ অব্দি আমরা আর কেউ বের হতে পারছি না।
একবার ভেবে দেখুন, একটা মেয়ে কিশোর বয়সে তাঁর শারীরিক সমস্যার জন্য তাঁর মা বোন মহিলা আত্মীয়ের কাছে পরামর্শ নিতে পারে- কিন্তু একটা ছেলে কিশোর কার কাছে বলবে তাঁর সমস্যার কথা? বাবা-তো দূর গ্রহের মানুষ, মা বোনকে বলা যায় না লজ্জায়(বললেও তারা কি সমাধান দিবে? তারা জানেই বা কি পুরুষদের ব্যাপারে?), বন্ধুদের বললে হাসি-তামাশা করবে। সে এক ভয়ঙ্কর বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা!!! আমাদের পাশ্চাত্যের দেশগুলির এইসকল তথাকথিত রক্ষণশীল সমাজে সত্যিই একটা শিশুর বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছানো মানে অভিশপ্ত ভয়ঙ্কর এক অন্ধকার কূপে ঝাঁপ দেয়া!
কেন সেক্সচুয়ালি আমাদের উপমহাদেশের ছেলেরা এত এগ্রেসিভ? এ বিষয়টা কি গভীরভাবে কেউ ভেবে দেখেছেন? শুধু নারী দেহ দেখলেই চুলবুল করে বলে পুরুষমানুষ মানেই ‘লুচ্চা’ এমন একটা ট্যাগ দিয়ে সবাই খালাস!!
আমরা ক’জনেই ভাবি ; একটা শিশু সন্তান যখন বড় হচ্ছে যৌবন প্রাপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে জীবনের কঠিন-তম ধাপ অতিক্রম করে। আমরা কি ভাবি তখন তাদের হরমোনাল পরিবর্তন, প্র-জননাঙ্গ পরিবর্তন, মস্তিষ্কে পরিবর্তন হচ্ছে, ধীরে ধীরে তাত্ত্বিক দৃষ্টি ও জ্ঞানীয় ক্ষমতা বাড়ছে। কাল্পনিক এবং বিমূর্ত চিন্তা ধীরে ধীরে বাসা বাঁধছে তাঁর মনোজগতে, মেটাকগনিশন, আপেক্ষিক চিন্তা প্রজ্ঞা। ঝুঁকি গ্রহণ সহ শতাধিক মনো-জাগতিক ও শারীরিক পরিবর্তন হচ্ছে।
আমরা আমাদের কৈশোর কাটিয়েছি স্কুল মাঠ আর পড়ার টেবিলে। বাসায় থাকলে বেশীরভাগ সময় গিয়েছে বয়স্কদের ফরমায়েশি খেটে।
বাইরে বন্ধুদের সাথে দেখা হলেই হৈ হুল্লোড় করেছি,মাঠ দাপিয়ে বেড়িয়েছি। কত নতুন নতুন খেলা আবিষ্কার করেছি- সেই কত শত স্মৃতি নিয়ে আমরা জাবর কাটি; ফেসবুকে কখনো লাটিম, ডাংগুলি, শন পাপড়ি ঝুরিভাজার ছবি দিয়ে ক্যাপশন দেই আগে কি সুন্দর দিন কাটাতাম!! আমাদের স্বর্নালী কৈশোর!!!
কিন্তু এর মাঝে একটা ভয়ঙ্কর অসুখে ভুগেছি, ভয়াবহ কাল অতিক্রম করেছি যার ফলে চরম মানসিক বিকৃতি ঘটেছে সে কথা কেউ আমরা বলি না।



~বিস্তারিত যাবার আগে আমরা বয়ঃসন্ধিকালে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন সমূহ এবং তাই নিয়ে বাস্তব জীবন-সম্মত আলোচনা শুরু করি। আগেই সাবধান করে দেয়া হচ্ছে; লেখাটা কিশোরদের নিয়ে হলেও পাঠে কিশোর উপযোগী নয় সম্ভবত। তবে যারা বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তন সমূহের কথা জানেননা বা ভাসা ভাসা জানেন তাদের অবশ্য পাঠ্য। লেখাটা কঠোরভাবে প্রাপ্ত-মনস্কদের জন্য।

কৈশোর বা কৈশোর বা Adolecence হল শৈশব থেকে যৌবনে পদার্পণ করার মধ্যবর্তী সময়কাল। এ সময়কাল জুড়ে বিভিন্ন রকম শারীরিক পরিবর্তন ঘটে ও আকস্মিক হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মানসিক আবেগের তীব্রতার উত্থান পতন ঘটে থাকে, যা বয়ঃসন্ধি নামে পরিচিত। বয়ঃসন্ধিকালের পূর্বে নিষ্ক্রিয় থাকা হাইপোথ্যালামাস* এ সময় হঠাৎ করে সক্রিয় হয়ে ওঠে। সাধারণত ডোপামিন, গ্লুটামেট ও সেরোটোনিন নামক মস্তিষ্ক প্রবাহিত হরমোন এ আবেগীয় পরিবর্তনে প্রধান ভূমিকা রাখে এবং পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত টেস্টোস্টেরন ও ইস্ট্রোজেন হরমোন এবং গ্রোথ হরমোন কৈশোর-কালীন শারীরিক বিকাশ ও যৌন আচরণকে সক্রিয়করণে কাজ করে। ভৌগলিক অবস্থান ভেদে কৈশোরের ব্যাপ্তির তারতম্য দেখা যায়।
বয়ঃসন্ধি হল বেশ কয়েক বছরের সময়কাল যেখানে দ্রুত শারীরিক বৃদ্ধি এবং মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন ঘটে, যা বয়ঃসন্ধিতে পরিণত হয়। বয়ঃসন্ধি শুরুর গড় বয়স মেয়েদের জন্য ১১ এবং ছেলেদের জন্য ১২। প্রতিটি ব্যক্তির স্বতন্ত্র বয়ঃসন্ধির সময়সূচী প্রাথমিকভাবে বংশগতির দ্বারা প্রভাবিত হয়, যদিও খাদ্য এবং ব্যায়ামের মতো পরিবেশগত কারণগুলিরও কিছু প্রভাব রয়েছে। এই কারণগুলি অকাল এবং বিলম্বিত বয়ঃসন্ধিতে অবদান রাখতে পারে।

[ছেলেদের ১২ বছর বয়সকালকে আমরা একেবারে শিশুর পর্যায়ে ট্রিট করি। যদিও পরিবেশ আবহাওয়া খাদ্য ও কিছু জেনেটিক কারনে আমাদের বয়ঃসন্ধিকাল একটু দেরিতে আসতে পারে যার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।]

য়ঃসন্ধিকালীন বিকাশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ উচ্চতা, ওজন, শরীরের গঠন, কার্ডিওভাসকুলার এবং শ্বাসযন্ত্রের বৈশিষ্ট্য-গত শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনের সাথে জড়িত। এই পরিবর্তনগুলি মূলত হরমোনের কার্যকলাপ দ্বারা প্রভাবিত হয়। হরমোন একটি সাংগঠনিক ভূমিকা পালন করে, যা বয়ঃসন্ধি শুরু হওয়ার পরে শরীরকে কিছু নির্দিষ্ট উপায়ে আচরণ করে, এবং বয়ঃসন্ধিকালে হরমোনের পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত একটি সক্রিয় ভূমিকা যা আচরণগত এবং শারীরিক পরিবর্তন ঘটায়।

আমার কথাঃ
[আমাদের কৈশোরে এই আচরণগত পরিবর্তনটা কে নেগেটিভ-লি দেখা হোতো। মুরুব্বীরা এই নিয়ে বিরক্ত বোধ করতেন। অনেকসময় এই আচরণগত পরিবর্তনের জন্য মানসিকতা বটেই এমনকি শারীরিক পীড়নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। আর শারীরিক পরিবর্তনটা ভীষণ লজ্জার ব্যাপার ছিল। সে কথা কাউকে বলা যায় না!!]

য়ঃসন্ধি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ঘটে এবং হরমোন উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে শুরু হয়, যার ফলে একের পর এক দৈহিক পরিবর্তন ঘটে। এটি একটি জীবনের পর্যায় যা যৌন বৈশিষ্ট্যগুলির উত্থান এবং বিকাশের দ্বারা চিহ্নিত করা হয় (যেমন, ছেলেদের মধ্যে একটি গভীর কণ্ঠস্বর এবং অণ্ডকোষের বৃদ্ধি এবং হরমোনের ভারসাম্যের একটি বড় পরিবর্তন। যৌবনে পিটুইটারি গ্রন্থি দ্বারা হরমোনাল এজেন্ট নির্গত হয় ও রক্তের সাথে মিলে যায় যার ফলে একটি চেইন প্রতিক্রিয়া শুরু হয়।) একই সময়ে, পুরুষ এর অণ্ডকোষ সক্রিয় হয়, যা তাদের দ্রুত বৃদ্ধি এবং পরিপূর্ণ বিকাশের দিকে নিয়ে যায়; অণ্ডকোষ তখন ব্যাপক হরমোনের উৎপাদন শুরু করে। অণ্ডকোষ প্রাথমিকভাবে টেস্টোস্টেরন নিঃসরণ করে ও বয়ঃসন্ধিকাল শেষ না হওয়া কিংবা যৌবনপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এই হরমোনের উৎপাদন ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। যৌন হরমোন ভারসাম্যহীনতার জন্য কিছু কিশোরদের স্থূলতার কারণে স্তন ও স্তনবৃন্ত বড় হতে পারে।

আমার কথাঃ
[ ~এই সময়টা ছেলেদের জন্য সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সময়। যখন প্রয়োজন অভিজ্ঞদের পরামর্শ ও গাইডেন্স। আর কি চরম অবহেলা ভরেই না শুধু নিষিদ্ধ আর লজ্জাজনক বলে আমরা এই সময়কালটা কাটিয়ে এসেছি। হঠাৎ গলার স্বর পরিবর্তনের জন্য বেশীরভাগ কিশোরদের এমন টিকা টিপ্পনী বা পরিহাসের সম্মুখীন হতে হয় যে, তারা বাড়িতে যত-সম্ভব কম কথা বলে- পরিবারের সাথে দুরত্ব সৃষ্টি হয়। তখন বন্ধুদের সহচর্য বেশী আকর্ষণীয় মনে হয়। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার জন্য বড় স্তনের জন্য কত ছেলেকেই বিরূপ মন্তব্য নোংরা বা তির্যক দৃষ্টির সম্মুখীন হতে হয়; এইসব ছেলেরা নিজেদেরকে গুটিয়ে নেয়। মেয়েদের মত খালি গায়ে থাকতে লজ্জা পায় এবং ঢিলে ঢালা পোশাক পরে। এখনকার শহুরে বাবা-মায়েরা তা ও সচেতন। আমাদের সময়ে এটাকে শুধু বিকৃত শারীরিক অঙ্গ হিসেবে দেখা হোতো- এবং ভাবা হোতো বয়সের সাথে সাথে ঠিক হয়ে যাবে। ঠিক হয়তো একদিন হয় কিন্তু সেই দীর্ঘ সময় ধরে চলা উপহাস তাদের মানসিকভাবে বিধ্বস্ত করে দেয়।]



পুরুষদের দাড়ি-গোঁফ সাধারণত বয়ঃসন্ধির সময় থেকে ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়। প্রথম মুখের চুল উপরের ঠোঁটের কোণে বৃদ্ধি পেতে থাকে, সাধারণত ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সের মধ্যে। তারপর এটি গোঁফের আকারে ছড়িয়ে পড়ে উপরের ঠোঁটের সমস্ত অংশে। এর পরে গালের উপরের অংশে এবং নীচের ঠোঁটের নীচের অংশে চুলের উপস্থিতি দেখা যায়। চুলগুলি শেষ পর্যন্ত চিবুকের পাশে এবং নীচের সীমানা পর্যন্ত প্রসারিত হয়, সেইসাথে নীচের মুখের বাকি অংশে বিস্তৃত হয়ে পরিপূর্ণ দাড়ি প্রকাশ পায়। বেশিরভাগ মানুষের জৈবিক প্রক্রিয়ার মতো দাড়ি গোঁফের এই গঠন প্রক্রিয়া কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। মুখের লোম প্রায়শই বয়ঃসন্ধিকালের শেষের দিকে, ১৭ বা ১৮ বছর বয়সে দেখা যায়, তবে অনেক পরে দেখা দিতে পারে। কিছু পুরুষের বয়ঃসন্ধির পর ১০ বছর পর্যন্ত মুখের চুল গজায় না। বয়ঃসন্ধিকাল পার হবার পর আরও ২-৪ বছর পর্যন্ত মুখের চুলগুলি মোটা, গাঢ় এবং ঘন হতে থাকে।

আমার কথাঃ
[~দাড়ি-গোঁফ; কিশোর বয়সের একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বয়ঃসন্ধিকালের যেই পরিবর্তনটা চাক্ষুষ উন্মোচিত হয় সেটা হচ্ছে গোঁফ দাড়ি। পরিবার ও মুরুব্বীদের সামনে লজ্জার একটা বিষয়, ছোটদের সামনে ভাবের আর আর বন্ধুদের সামনে প্রতিযোগিতার। যার আগে দাড়িগোঁফ উঠে ক্লাসে বা আড্ডায় একটু ভাবে থাকে আর যার ওঠে দেরিতে সে একটু হীন- মনস্কতায় ভোগে। তাকে বন্ধুরা বাচ্চা পোলাপান বলে ক্ষেপায় আর বড়রা তুচ্ছ করে কিংবা উপহাস করে। এ ব্যাপারে চরম ভুক্তভোগী আমি নিজে। আমার কিছু বন্ধুর যখন মুখ-ভর্তি দাড়িগোঁফের জঙ্গল তখন আমার সবে লোম কালচে হচ্ছে। এই নিয়ে বহুবার বিব্রতকর অবস্থার সম্মুখীন হয়েছি। ক্লাসে বাচ্চা হিসেবে ট্রিট করা, খেলাধুলায় মেয়েলি ধরন বলে সাইড লাইনে বসিয়ে রাখা থেকে শুরু করে সবখানেই একটা ভীষণ চাপের সম্মুখীন হয়েছি। এরপরে উপদেশ-তো আছেই; সব অপরিপক্ব বাচ্চা পোলাপান ভীষণ বিজ্ঞের মত পরামর্শ দিয়ে চলছে অনবরত। এর মধ্যে সবচেয়ে সলিড পরামর্শটা হোল শেভ করা। সে সময়ে শেভিং- সেই সময়ে ওয়ান টাইম রেজর মার্কেটে ছিল না। নাপিতেরা ব্যবহার করত ক্ষুর-আর বাড়িতে ব্লেড। ব্লেড,রেজর, সাবানের ডিব্বা আর বুরুশ মিলে বেশ ব্যাপক একটা আয়োজন ছিল। সিকি বা আধুলি মূল্যের একটা বলাকা ব্লেড তখন মুরুব্বীদের কাছে মহার্ঘ ছিল। দোকানে গিয়ে ব্লেড হয়তো কেনা যায় নখ কাটার কথা বলে শেভিং এর সরঞ্জাম- অসম্ভব!! নাপিতের ঘরে গেলে নাপিত নিজেই যে হাস্য পরিহাস করবে সে কথা ভেবেই সব ইচ্ছা মরে যায়। একমাত্র উপায় হচ্ছে শেভিং কিট চুরি করা। সেটাও না হয় চুরি করা গেল কিন্তু শেভের পরে ঘরে মুখ দেখাব কেমনে??~ সে অন্য এক গল্প! এক জীবনে পুরুষ হবার যন্ত্রণা কম নয়।]



পুরুষদের মধ্যে বয়ঃসন্ধির প্রধান ল্যান্ডমার্ক হল স্পার্মার্চ বা প্রথম বীর্যপাত, যা গড়ে ১৩ বছর বয়সে হয়। বয়ঃসন্ধির সময় গুরুত্বপূর্ণ মানসিক এবং সামাজিক প্রভাব থাকতে পারে। প্রারম্ভিক পরিপক্ব কিশোরেরা তাদের বন্ধুদের চেয়ে লম্বা ও শক্তিশালী হতে থাকে। তারা দৃষ্টি আকর্ষণ করার ও খেলাধুলার জন্য প্রথম নির্বাচিত হওয়ার সুবিধা পেয়ে থাকে। বয়ঃসন্ধিকালীন ছেলেদের প্রায়ই ভাল শারিরিক গড়ন থাকে যা তাদেরকে আরও আত্মবিশ্বাসী করে এবং সুরক্ষিত ও আরো স্বাধীন ভাবনায় প্ররোচিত করে । দেরিতে প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেরা দুর্বল শারীরিক গড়নের কারণে কম আত্মবিশ্বাসী হতে পারে, নিজেদেরকে সমবয়সী যারা লম্বা স্বাস্থ্যবান মজবুত গড়নের, তাদের সাথে তুলনা করে।

আমার কথাঃ
[ আহ!! এটা একটা বিষয় বটে। একেতো অণ্ডকোষ বড় হচ্ছে,পুরুষাঙ্গের আকার বেড়ে যাচ্ছে- কচি পুলাপানগুলো অভাব অনুভব করছে তখন অন্তর্বাসের। এরপরে উটকো ঝামেলা; হয় কথায় নয় কথায় ‘ইরেকশন’- কি এক বিদঘুটে অবস্থা! এর পরে প্রি সেকচুয়াল ফ্লুইড-তো আছেই। কিশোরদের এটা ভয় ধরিয়ে দেয়। স্পামার্চের আগে অনেক কিশোরেরা এই স্বচ্ছ, পিছলে স্রাবটাকে স্পার্ম হিসেবে ভাবে- এবং ভাবে তাঁর অকালে বীর্যপাত হচ্ছে!( তবুও যারা একটু জানে- যারা জানে না কিছুই তাদের কাছে এটা ভয়ঙ্কর রোগ বিশেষ। এই সময়টা নারী দেহের প্রতি দারুণ আকর্ষণবোধ হয়। সব অজানাকে জানার ইচ্ছে আর সব নিষিদ্ধকে ছোঁয়ার ইচ্ছে জন্মে। তবে সবার একরকম নয়। দেরিতে যৌবনপ্রাপ্ত কিশোরদের আগ্রহ কম থাকে- কিন্তু যারা আগেভাগে যৌবনপ্রাপ্ত হয় তারা তাদের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য কিংবা নিজেকে বিরাট কামিল বোঝানোর জন্য ইতিমধ্যে তাদের আবিষ্কৃত যব গোপনীয়তা উন্মোচন করে। নারীদের নিতম্বের দুলুনি, বক্ষ-দ্বয়ের কাঁপুনি। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের সরস ও কামজ বর্ণনা নতুন এক ফ্যন্টাসীর জগতে নিয়ে যায়। সময়মত জানার অভাব দেখার অভাব ছোঁয়ার অভাব এক সময় বিকৃত কামে প্রলুব্ধ করে কিংবা বিকৃত মানসিকতার জন্ম দেয়। নারী দেহ যত বেশী আবডালে থাকবে তত বেশী দেখা আর ছোঁয়ার আগ্রহ বাড়বে আর এই কামনা বাসনা চেপে রাখায় প্রকাশ পাবে বিকৃত, বিকল্প কাম ও আচরণে। ওদিকে যে সমাজে খুব বেশী খোলা মেলা, তারা অতিদ্রুত নারী দেহের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে অন্য কোন বিকৃত উপায়ে তাদের কাম চরিতার্থ করে। বেশীরভাগ পুরুষ সুস্থ স্বাভাবিক উপায়ে তাদের কাম নিবৃত করতে না পারলে ধর্ষণের মত বিকৃত ও নীচ উপায় অবলম্বন করে। সমাজ সংস্কার ধর্মীয় বা পারিবারিক চাপে তাদের এই অবদমিত যৌন আকাঙ্ক্ষা ভিন্ন কোন উপায়ে প্রকাশ পায়। মেয়েরা কখনো ভাবতে পারবে না; আচমকা ওই ইরেকশনের সময়কাল ছেলেদের কি ভয়ানক মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার হয়। তখন বেশীরভাগ পুরুষেরা কিছু বা দীর্ঘ সময়ের জন্য হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। শরীরে বিশেষ হরমোনের অতিরিক্ত নিঃসরণের ফলে; স্বাভাবিক জ্ঞান লোপ পায়। তখন যে কোন উপায়ে নিজেকে হালকা করার জন্য অনেকেই ভয়ঙ্কর কোন পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করে না। প্রকৃতি পুরুষকে নাজেহাল করার নিদারুণ একটা অস্ত্র বেছে নিয়েছে। আজ সারা বিশ্বব্যাপি পুরুষদের নিত্য গালাগাল শুনতে হচ্ছে!!
হস্তমৈথুন, স্বপ্নদোষ সহ আরো কিছু যৌন বিষয় নিয়ে আমি পরে বিস্তারিত আলোচনা করব। কিন্তু একটা বিষয় নিয়ে এই দণ্ডে আলোচনা না করলেই নয়( আলোচনার বিষয়বস্তু সহ আমার এই পুরো নিবন্ধটাই নারী পুরুষ নির্বিশেষে ভীষণভাবে প্রাপ্ত মনস্কদের জন্য)
সন্তান উৎপাদনের জন্য আমাদের শৈশব কৈশোরে ধারনা ছিল এটা ঈশ্বর বা প্রাকৃতিক কর্ম। মানুষের কোন হাত নেই। আর শারীরিক মিলন বা যৌন সম্ভোগটা নিচু স্তরের, পাপী নোংরা ও জঘন্য লোকদের কাজ। একাজে অংশগ্রহণকারী নারী-পুরুষ সবাই সমান অপরাধী। কিন্তু আমাদের বাড়ির কাজের ছেলে খোকন( বছর দু-য়েকের বড় ছিল) যখন বলল যে, সেক্স না করলে বাচ্চা হয়না। তখন আমি ভীষণ হতাশ হয়েছিলাম! সে খারাপ ছেলে হয়ে গেছে ভেবে তাকে ব্রাত্য করে বিষয়টা পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু খোকন আমার পেছনে লেগে ছিল।
বাসর ঘরে দরজা লাগিয়ে ছেলে মেয়ে কি করে? তাঁর প্রতি উত্তরে বলেছিলাম ‘গল্প করে’। সেতো হেসেই খুন!!
সে আর আমি বন্ধুর মত ছিলাম বলে, একদিন একটা প্রায় উদোম এক বিদেশিনীর ভিউ-কার্ড এনে আমার সামনে তাঁর সারা অঙ্গের সরস বর্ণনা করে সেটা রেখে গেল আমার কাছে। প্রথমে দূরে সরিয়ে রেখেছিলাম –পরে আকর্ষিত হলাম। মনে হোল; তাইতো এ এক অন্য ভুবন। শুরু হোল নারী দেহের বিভিন্ন অলি ঘুপচি অনুসন্ধান! মানসিকভাবে আমি বিপর্যস্ত হতাম, পাপবোধ হলেও বিষয়টা ভাল লাগা শুরু হোল।
এর পরে আসে আরেক ধাক্কা! আমি কি পারব –তুই কি পারবি? সেই বয়সে একান্তে বসে যৌন আলোচনা ছাড়া কোন আলোচনাই যেন জমত না। গুরু বন্ধুদের রসময় বর্ণনা যেন এক ভিন জগতের ভ্রমণ ছিল! যৌন সম্ভোগে পটু না হলে বউ টিকবে না সেটা গুরুর দ্ব্যার্থহীন বাণী ছিল। কার মোটা, কার চিকন, কার হেলে পরে কার দুলে পরে, কার ভীষণ শক্ত হয় কার ন্যাতানো থাকে এই নিয়ে বিশেষজ্ঞের ভুরি ভুরি উদাহরণ সহ বিস্তর ভুয়া মতবাদ প্রচার। হস্তমৈথুন আর স্বপ্নদোষ নিয়ে ব্যাপক বাহাস!
কিশোর ছেলেদের তখন বুক কাঁপে! হায় হায় না পারলে বউ কি টিকবে না- এই কয় মিনিট থাকতেই হবে, না হলে-তো আমি শেষ। সেই দুঃচিন্তা অনেক পুরুষের চমৎকার বয়ঃসন্ধিকাল ভয়ঙ্কর তিক্ত এক সময়কাল হিসেবে বিবেচিত হয়। একসময় তারা বিয়ে করতে ভয় পায়- অথবা নিজেকে যাচাই করার জন্য বিপথগামী হয়। আর অতিরিক্ত মানসিক পীড়নে কোন একদিন বাসরঘরে হয় তারা ব্যর্থ পুরুষ!!!!]



যাইহোক, প্রাথমিক বয়ঃসন্ধি সবসময় ছেলেদের জন্য অনুকূলে থাকবে এমনটা নয়; ছেলেদের প্রারম্ভিক বয়ঃসন্ধি তাদের প্রভাবিত হরমোন একটি ঢেউর কারণে তাদের আক্রমণাত্মক প্রবণতা ও রাগ বৃদ্ধি পেতে পারে। যাদের স্বাস্থ্য ভাল ও শারীরিক গড়ন বেশী তাদের সমবয়সীদের চেয়ে বয়স্ক বলে মনে হয়, বয়ঃসন্ধিকালীন এইসব কিশোরেরা প্রাপ্তবয়স্কদের নিয়ম মেনে চলার জন্য বাড়তি সামাজিক চাপের সম্মুখীন হতে পারে।

পুরুষ হবার যন্ত্রনা ২ঃ Click This Link

মন্তব্য ৪৪ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (৪৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:৫৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: জীবনের প্রথম হস্তমৈথুনের কথা আজীবন মনে থাকবে। ঐ সময় জানতাম না যে আমি আসলে কি করছি এবং বীর্য নির্গত হবে এটাও জানতাম না। আসলে ছেলেদের দেহের ভিতরে যে বীর্য থাকে এবং সেটা বের হয়ে আসে সেটাই জানতাম না। হস্তমৈথুন কি সেটাও জানতাম না। নারী পুরুষের যৌন মিলন সম্পর্কে অস্পষ্ট ধারণা ছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় ঘুমানোর আগে এক রাতে নাড়াচাড়া করতে গিয়ে কিভাবে যেন হয়ে গেল। এত পরিমান নির্গত হয় যে আমি ঘাবড়ে যাই। আরও বিস্তারিত লিখতে লজ্জা লাগছে। আমি তখন ক্লাস এইটে পড়ি।

ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে খুব মুষড়ে পড়তাম। পৃথিবীর সব চেয়ে বড় সমস্যা মনে হত এটাকে। এই ব্যাপারটা তো কাউকে বলা যাবে না। ডাক্তারের কাছেও বলা যাবে না। ভীষণ লজ্জার বিষয়। কিন্তু আমার ছেলেমেয়েদের ওদের মায়ের সামনেই হাসতে হাসতে বলে দিয়েছি যে অবাঞ্ছিত চুল কেটে ফেলতে হবে। না হলে ফাঙ্গাস হতে পারে। ফাঙ্গাস হলে মলম লাগাতে হবে সেটাও বলে দিয়েছি। বড় ছেলের শেভিং কিট ঘটা করে কিনে দিয়েছি। কিভাবে ব্যবহার করতে হয় দেখিয়ে দিয়েছি।

আমার মেয়ের সাথে পিরিয়ডের ব্যাপারে ইজি হয়ে নিয়েছি। নামাজে ডাকলে যখন না আসে তখন জিজ্ঞেস করি পিরিয়ড শুরু হয়েছে কি না। সে ও সঠিক উত্তর দেয়। কিন্তু ওর একটু বড় ভাইটা এগুলি বোঝে না। তাই রোজার মাসে সে তার বোনের উপর ক্ষেপে যায় কেন সবাই রোজা রাখবে কিন্তু তার বোন রাখবে না। তাকেও রাখতেই হবে। বিব্রতকর অবস্থা। নামাজে ডাকলে মেয়ে যদি না আসে ছেলেটা বলে ও ফাঁকি দিচ্ছে ওকে কিছু বলছ না কেন। কিন্তু ছেলেকে তো সব বলতে পাড়ছি না।

আমার বয়সী আমার এক খালাতো ভাই তখন নাইনে পড়ে। তখন মায়া বড়ির বিজ্ঞাপন আসত বিভিন্ন মাধ্যমে। বিজ্ঞাপনে সম্ভবত পরিবার পরিকল্পনার পাশাপাশি বাড়তি কথা বলা হত যে মায়া বড়ি খেলে মেয়েদের মাথা ব্যথা, পেটে ব্যথা, গায়ে ব্যথা এগুলি দূর হয়। সংবেদনশীল বিষয় তাই সব কিছু খোলাসা করে বলা হতো না। আমার খালা তার এই ছেলে সম্পর্কে হাসতে হাসতে একদিন আমার মাকে বলছে, আমি দূর থেকে শুনছি। খালা বলছে যে আমার গায়ে ব্যথা ছিল। সোহেল (ছদ্মনাম - আমার খালাতো ভাই) আমাকে বলছে যে আম্মা তুমি মায়া বড়ি খেলেই তো পার।

আমাদের বন্ধুদের দুই এক জনের দাড়ি গোঁফ একটু আগে গজিয়ে ছিল। তখন আমাদের মধ্যে টেনশন শুরু হয়ে যায়। যাদের মুখে দাড়ির চিহ্ন তখনও দেখা যায় নাই তারাও সকাল বিকাল গালে ব্লেড ঘোষতে ঘোষতে চামড়া ছিলে ফেলার অবস্থা। পরবর্তী সময়েও দুই একজনের দাড়ি খুব কম ছিল।

আমার ছেলেমেয়েদের কয়েক বছর আগেই ড্রাগ সম্পর্কে বিস্তারিত বলে দিয়েছি। ড্রাগের আকৃতি হতে পারে কঠিন, তরল, বায়বীয় বলে দিয়েছি। এটা ক্ষতিকর দিক বলে দিয়েছি। অনেক বন্ধু ড্রাগ নিতে উৎসাহিত করতে পারে সেটাও বলেছি। এদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব রাখতে বলেছি। আমাদের বন্ধুদের অনেকে ছিল জাতে মাতাল তালে ঠিক। অনেকে প্রকৌশলে পড়েছে এদিকে ফিন্সিডিল খাচ্ছে। সামরিক বাহিনীতে থাকা অবস্থায় প্রকৌশল পড়ছে আবার ফাঁকে ডাইল খাচ্ছে, গাঁজা খাচ্ছে। কিন্তু এরা জাতে মাতাল তালে ঠিক। কতটুক খেতে হবে এরা জানে। বোকা তারাই যারা নেশায় আক্রান্ত হয় এবং ছাড়তে পারে না।

আমাদের বন্ধুদের অনেকে দল বেঁধে লিঙ্গের দৈর্ঘ্য মাপত, কারটা বড়।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:০৬

শেরজা তপন বলেছেন: আমরা বড় হয়েছি কিন্তু মানসিকভাবে এখনো বাসতে পারিনি দেখেন এখন আমরা এসব ব্যাপার বলতে লজ্জা পাই খুব বেশি লজ্জা পাই! পুরুষদের নাকি লজ্জা শরম নাই কিন্তু আমরা প্রত্যেকেই আমাদের কৈশরকালে ভয়ংকর একটা সময় পার করে এসেছি লজ্জায় মুখ ফুটে বলতে পারিনি কাউকে। অনেকেরই মনে আছে ভাবছে আরে তাইতো কিন্তু কেউ এখানে এসে বলার সাহস পাচ্ছে না লজ্জা পাচ্ছে বা বলতে পারছে না ব্যক্তিত্ব অবনমনের ভয় :)
আপনি ব্যতিক্রমী এক বাবা খুব সহজে সন্তানদেরকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন বয়সন্ধিকালে কি সমস্যা গুলো হতে পারে এবং কিভাবে সেই সময়টা অতিক্রম করবে।

আপনার এই চমৎকার মানসিকতা স্যালুট আশা করি আমার এই লেখার সাথে আরো কিছু যুক্ত হবে সবার নিজস্ব অনুভূতি দিয়ে। সেখানে আপনি থাকবেন অবশ্যই।
সময় নিয়ে এতবড় একটা মন্তব্য করে অনুপ্রাণিত করার জন্য সবিশেষ ধন্যবাদ। সবাই আপনার মত বাবা হোক এই কামনা করি ভবিষ্যতের ছেলেদের বয়ঃসন্ধিকাল যেন আমাদের মত তেমনতর দুঃসময়ের না হয়।

২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:০৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মেয়েরা আছে মহা সুখে। ওনাদের সমস্যা নিয়ে বলার মানুষের অভাব নাই। কিন্তু ছেলেদের সমস্যা নিয়ে বলার মানুষ খুব কম। এই কারণে আপনাকে ধন্যবাদ না জানিয়ে পাড়ছি না।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:১৪

শেরজা তপন বলেছেন: ওদের কাছে শুনেন ওদের দুঃখ কষ্টের অভাব নাই :) সব সমস্যা বলবে শুধু তাদেরই আমাদের কোন সমস্যা নাই :(

৩| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:১৯

ঢাবিয়ান বলেছেন: বয়ঃসন্ধিকাল নিয়েই রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘তেরো-চৌদ্দ বৎসরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নাই। শোভাও নাই, কোনো কাজেও লাগে না। স্নেহও উদ্রেক করে না, তাহার সঙ্গসুখও বিশেষ প্রার্থনীয় নহে। তাহার মুখে আধো-আধো কথাও ন্যাকামি, পাকা কথাও জ্যাঠামি এবং কথামাত্রই প্রগল্ভতা। ...শৈশব এবং যৌবনের অনেক দোষ মাপ করা যায়, কিন্তু এই সময়ের কোনো স্বাভাবিক অনিবার্য ত্র“টিও যেন অসহ্য বোধ হয়।’

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৫৩

শেরজা তপন বলেছেন: কবিগুরু গুরুর মতো একদম খাঁটি কথা বলেছেন- শতভাগ ঠিক :)
চমৎকার অংশটুকু কোট করেছেন আগে জানা ছিল না।

৪| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৩৪

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- বয়ঃসন্ধিকালের এই বিশেষ সময়টাতে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় একটু ভালো সাপোর্ট পায়। এটি আপনি সঠিক বলেছেন।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৫৭

শেরজা তপন বলেছেন: আপনি তো মহা সুখি মানুষ। সৌভাগ্য আপনার ছেলে নাই বেঁচে গেছেন :)
পরের পর্বে এ বিষয়ে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে আছে। ধন্যবাদ মন্তব্যে আসার জন্য।

৫| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৫০

পবিত্র হোসাইন বলেছেন: সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো বয়ঃসন্ধিকালে বাচ্চারা তাদের সমস্যা গুলো বাবা মায়ের কাছে শেয়ার না করতে পেরে বন্ধুদের কাছে দ্বারস্থ হয় এবং উল্টাপাল্টা সাজেশন পায়।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৫৯

শেরজা তপন বলেছেন: উল্টাপাল্টা সাজেশন শুধু নয় একেবারে আউলা ঝাউলা সাজেশন।:( যার ফলে সমস্যার সমাধান তো হয়ই না উল্টো আরো জট পাকিয়ে যায়! এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার দরকার সর্বপ্রথমে বাবার তারপরে ক্লাস শিক্ষকদের।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য ভালো থাকুন।

৬| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:০৪

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:



আমার ব্যাপারটা ছিলো 'দাড়ি/গোফ যখন গজাচ্ছিল তখন আমি খুবই খুশি ছিলাম কারণ আমার বন্ধুদের তুলনায় আমি একটু এগিয়ে ছিলাম।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:১১

শেরজা তপন বলেছেন: একাধারে আপনি সৌভাগ্যবান আবার দুর্ভাগ্যবান! আগেভাগে যৌবনপ্রাপ্তির জন্য সমবয়সী অন্য কিশোরদের তুলনায় আপনি কিছু সুবিধা পেয়েছিলেন। আবার আপনার সমস্যার সমাধানে গাইড এর অভাব ছিল।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

৭| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৩২

নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: আমার প্রথম দাড়ি ওঠা শুরু করে সেই ১১ বছর বয়সে । সে সময় সবাই দেখলে বলত আমার নাকি বংস বেশি ক্লাস সেভেন পড়ার সময় একলোক বলেই বসলেন আমি নিশ্চিত ফেল মারা ছাত্র না হলে এত বয়স হয়ে গেল এখনও কেন সেভেনে পড়ি । এদিকে আমার ২১ বছর বয়সে মাথার চুল পড়ে যায় তাতেও সমস্যা সবাই এখন ভাবছে আমার বয়স ৪০ এর অধিক । পুরুষ হওয়ার যন্ত্রণাই আলাদা !!


আর বয়ঃসন্ধির সেই সময়টাকে আমি বলব আমার জীবনের সবচেয়ে জঘন্য সময় । আবার সেই সময়ে আমি গিটারের প্রেমে পড়েছিলাম , বুঝতে শিখেছিলাম প্রকৃতিতেও নারীর মত আকর্ষণীয় কিছু একটা আছে ্ তবুও সেই সময়টা আমার কাছে নারকীয় পা থেকে চুন খসলেই " ছেলে অধঃপতেন গেছে " !

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৫১

শেরজা তপন বলেছেন: আহা আপনি বয়সন্ধিকালে কঠিন একটা সময় পার করে এসেছেন এবং যৌবনের শুরুতেও বেশ ভালো যুদ্ধ করেছেন। আসলেই পুরুষ মানুষের অনেক যন্ত্রনা কেউ বোঝেনা। আশা করি সে সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠেছেন এখন খানিকটা ভালো আছেন!
তবে পুরুষ তো এই যন্ত্রণার কোন শেষ নাই একটার পর একটা আসতেই থাকবে:(

৮| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৫৮

জুল ভার্ন বলেছেন: মানব জীবনে বয়ঃসন্ধিকাল, খুব কঠিন একটা সময়ের কথা অত্যন্ত সাবলীলভাবে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ। বংশের ধারাবাহিকতায় বয়সের চাইতে আমার ফিজিক্যাল গ্রোথ ছিলো খুব বেশী.... ১৩/১৪ বছর বয়সেই আমি শারীরিক ভাবে ১৮/২০ বছর বয়সীদের মতো হয়ে যাই, কিন্তু আমার মেন্টাল গ্রোথ ১৩/১৪ বছরের মধ্যেই আটকে থাকে....আমি আমার সমস্যাগুলো কাউকে লজ্জায় বলতে পারতাম না। এক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছিলেন আমার ছোট চাচা। তিনি আমাকে গাইড করে দুশ্চিন্তা মুক্ত করেছিলেন।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৫৩

শেরজা তপন বলেছেন: এক্ষেত্রে আপনি বেশ ভাগ্যবান কারণ আপনার গাইড করার মত এবং বড় মনের প্রাপ্ত মনস্ক একজন চাচা ছিল সবার ভাগ্যে এরকম হয় না।
বরাবরের মতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ ভালো থাকুন।

৯| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:০২

রাজীব নুর বলেছেন: গুরুত্বপূর্ন একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন।
আপনার পোষ্ট পড়ে আমি আমার কিশোর কালের কথা মনে করতে চেষ্টা করলাম।

আমি যখন টিনএজ ছিলাম- আমার দুনিয়া ছিলো খেলাময়। ফুটবল খেলতে আমি খুব পছন্দ করতাম। প্রতিদিন দুইবেলা ফুটবল খেলতাম। স্ট্যাম্প জমাতাম। সাইকেলে করে ঘুরে বেড়াতাম।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৫৫

শেরজা তপন বলেছেন: আপনি কি বসে ভাগ্যবান কিশোর ছিলেন কোন সমস্যাই টের পাননি -নাকি পেয়েছেন সেগুলো নিয়ে আলোচনা করতে চান না ভাই?
এই উপমহাদেশের জন্ম হলে যন্ত্রণা কম বেশি একটু একটু ভোগ করতেই হবে। মন্তব্যে অনুপ্রাণিত করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

১০| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৮

ইসিয়াক বলেছেন: বয়ঃসন্ধিকালে আমি কয়েকবার ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হই।যে ঘটনাগুলো আমার জীবনকে তছনছ করে দেয়।আমার শিক্ষা মানুষের সাথে মেলামেশায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।ঢাকা স্বনামধন্য একটা স্কুলে এমন ঘটনা এখনও কারো সাথে ঘটে বা ঘটেছে কি-না আমি জানি না।আমি এ বিষয়ে অনেক আগে পোস্ট রেডি করেছিলাম। কিন্তু পরে পিছিয়ে আসি।আমি হয়তো অতটা সাহসী নই।তবে আমি অন্যভাবে অর্থাৎ আমার লেখার মাধ্যমে সেই সব দুঃস্বপ্নগুলো প্রকাশ করলেও করতে পারি।তবে প্রত্যেক পরিবারের উচিত সন্তানকে এ সময় সঙ্গ দেওয়া।অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনায় জড়িয়ে যাচ্ছে কি-না খেয়াল রাখা। পরের পোস্টের অপেক্ষায়।শুভকামনা।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৫৮

শেরজা তপন বলেছেন: এখানে সবাই বেশ বিজ্ঞ অভজ্ঞ ও বয়স্ক( ম্যাচিউরড)। আমার মনে হয় আটপৌড়ে লজ্জা পাওয়ার বয়স আমরা অতিক্রম করে এসেছি। এই কথাগুলো লজ্জাজনক বলে আর কতদিন বুকের মধ্যে লুকিয়ে রাখব। আমিও একবার আমার সাথে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর এক ঘটনার বর্ণনা করেছিলাম অনে একজনের বয়ানে। আপনি বলুন আপনার কথা; সবার জানা উচিৎ-সতর্ক হওয়া উচিৎ। আমি মনে করি দূর আত্মীয় অনাত্মীয় কোন পুরুষের সাথে কিশোর সন্তানকে বিছানা শেয়ার না করানোই উত্তম!
লজ্জা সঙ্কোচ ঝেড়ে ফেলে কিশোর সন্তানের সাথে বাবাদের সব ব্যাপারেই সহজ হওয়া প্রয়োজন- যদিও আমি নিজে এখনো পারিনি সাড়ে চুয়াত্তর এর মত।
মন্তন্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। সাথে থাকুন- ভাল থাকুন।

১১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:১৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: শেরজা তপন,




চমৎকার এবং সমৃদ্ধ একটি পোস্ট লিখেছেন।
বয়ঃসন্ধিকালের এই চরিত্র এবং তার সমস্যাগুলি আমাদের কার কাজে লাগবে জানিনে তবে ব্লগার যারা এখন্ও সন্তানের পিতা হননি তাদের জন্যে লেখাটি একটি শিক্ষামূলক আর অনুধাবন যোগ্য 'নোট' হয়ে থাকবে।

পোস্টের বিষয়বস্তুর যথাযথ বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক বিশ্লেষনে +++++++++

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:০৩

শেরজা তপন বলেছেন: এলিয়েনদের নিয়ে আলোচনা করতে করতে নিজেকে এলিয়েন মনে হচ্ছিল। সেই পরিস্থিতি থেকে কিছুদিনের জন্য বের হতে চাচ্ছি।
আপনার অনুপ্রেরণা আমাকে দারুণভাবে উদ্ভুদ্ধ করল ফের।
এমন কিছু পোষ্ট আসা উচিৎ নিয়মিত ব্লগে। সবার বুকের ভেতরে লজ্জা কষ্টে লুকিয়ে রাখা কিছু গল্প অবলীলায় সবার কাছে বলে হালকা হওয়া উচিৎ। যারা এসব নিয়ে লিখবে- ব্লগারদের প্রতি অনুরোধ থাকবে তাদের অনুপ্রাণিত করার, যেভাবে আপনি এবং অন্য ব্লগারেরা আমাকে করেছে।
আন্তরিক ধন্যবাদ ফের ভাই- ভাল থাকবেন।

১২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৩৭

অপ্‌সরা বলেছেন: বয়ঃসন্ধিকাল নিয়ে আগে ছেলেমেয়েরা যতটা ঝামেলায় পড়তো এখন মনে হয় ততটা নেই।

১। ইন্টারনেটের কল্যানে নিজেই উত্তর খুঁজে পাওয়া
২। আগের দিনে চাইতে মা বাবারা অনেক সচেতন হয়েছেন
৩। স্কুলেও এ ব্যপারে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:০৭

শেরজা তপন বলেছেন: যদিও একজন সচেতন অভিভাবক ও শিক্ষক হিসেবে আপনি ভাল জানবেন আমার থেকে। মেয়েদের হয়তো তেমনটা নেই তবে ছেলেদের এখনো আছে - আমি আমার চারপাশের সবকিছু দেখে শুনেই এ মন্তব্য করছি। মায়েরা ছেলেদের সমস্যাগুলো বোঝেনা-বাবারাও ভুলে যায় কৈশোরের দুঃসহ স্মৃতির কথা- নিজের সন্তানের সাথে সহজ হতে পারে না- শেষমেষ মা কেই সামনে এগিয়ে দেয়, শিক্ষকেরা এড়িয়ে চলে। ইন্টারনেটেও ছেলেদের থেকে মেয়েদের সমস্যা নিয়ে সোচ্চার বেশী। তারপরেও আগের থেকে এখন অবস্থার যে অনেক উন্নতি হয়েছে সেটা অনস্বীকার্য।
মন্তব্যে আসার জন্য আপনার প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

১৩| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৪৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি মন নিয়ে বয়ঃসন্ধিকাল অতিক্রমরত বালক ও কিশোরদের সমস্যাগুলো শনাক্ত করেছেন এবং বিচক্ষণতার সাথে সেসব বিশ্লেষণ করেছেন। এটি একটি মহৎ কাজ হয়েছে। যেসব বাবাদের ঘরে ঐ বয়সের ছেলে রয়েছে, তাদের জন্য এ পোস্ট অবশ্যপাঠ্য।
পোস্টে প্লাস। + +

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:১৩

শেরজা তপন বলেছেন: কি দারুণভাবেই না বললেন আপনি!!
লেখাটা দেবার আগে আমি বেশ ভয়ে ভয়ে ছিলাম- ব্লগারদের রিয়্যাকশন নিয়ে। কিন্তু অনেকের কাছ থেকেই দারুণ সাড়া পেলাম। আর আপনিতো সবাইকে ছাড়িয়ে গেলেন।
এখন আর সংকোচ নেই দ্বীধাকে ঝেড়ে ফেললাম। এসব কথা বলতে হবে। আমাদের পরের প্রজন্ম যেন আমাদের মত ভয়াবহ ট্রমার মধ্য দিয়ে সারাজীবন না যেতে হয় সেজন্য আমাদের কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমার লেখার মধ্য দিয়ে অন্তত একটা কিশোরের জীবনও যদি পালটে যায় তবে আমার লেখা সার্থক হবে।
আন্তরিক ভালবাসা রইল ভাল থাকুন।

১৪| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১০:১৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রতিটা পয়েন্টে "আমার কথা" উপশিরোনামে নিজের দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা অকপটে লিখেছেন, এজন্য আপনাকে সাধুবাদ। এসব অভিজ্ঞতা কমবেশি আমাদের সবারই আছে। আমার অভিজ্ঞতার কথা তো এখনও বলতে লজ্জাবোধ করবো। কিন্তু আপনি সেসব বলে এ পোস্টকে পাঠকের কাছে (পুরুষ ছাড়াও) বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছেন। পোস্টে আপনার এবং মন্তব্যের ঘরে পাঠকদের নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা এ পোস্টকে একটি ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। কিশোরীরা সহজেই তাদের নানী-দাদী কিংবা মা-খালা-বোনদের কাছ থেকে এ বিষয়ে পারিবারিক পরামর্শ পেয়ে থাকে। কিন্তু ঐ বয়সেে পরিস্থিতির কারণে 'মুখচোরা' হয়ে যাওয়া কিশোর বালকেরা বয়ঃসন্ধিকাল অতিক্রম না করা পর্যন্ত এ দুরবস্থা থেকে রেহাই পায় না। আমার জন্য এটা আজও একটা অস্বস্তির কারণ যে আমিও আমার ছেলেদেরকে ঐ বয়সে প্রয়োজনীয় পরামর্শটুকু দেই নি।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২৫

শেরজা তপন বলেছেন: আমি চারিদিকে পুরুষদের শুধু বদনাম শুনি- অনেকক্ষেত্রে দুনিয়াসুদ্ধ পুরুষেরা তাদের স্বজাতিকে গালিগালাজ করা চারিত্রিক ও মানসিক স্খলনের জন্য। কিন্তু কিছু পুরুষ কেন এমন?? এর পেছনের খবর ভেতরের খবর আমাদের জানতে হবে- এ রোগ উপশমের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করতে হবে।
হ্যা আমাদের বাবারা ভুল করেছেন- শাসন আর ধমক দিয়ে তাদের কর্তব্যটুকু সেরেছেন। মা বোনেরা করেছে নালিশ আর অভিযোগ। কিশোরেরা যখন বড়দের কাতারে আসতে চেয়েছে পদে পদে তারা অপমানিত হয়েছে নিগৃহীত হয়েছে। মেয়েরা ঠিকই মিশে গেছে মা বোন দাদীদের সাথে- তাদের সাদর অভ্যার্থনা জানানো হয়েছে। ছেলেরা হয়ে গেছে নিঃসঙ্গ একাকী মুখচোরা-বিশেষক্ষেত্রে কেউ পারভার্ট।
আমার সন্তান বয়ঃসন্ধিকাল অতিক্রম করছে এখন। আমি তাঁর পরিবর্তনগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। দেখছি কিছু ক্ষেত্রে সে কত অসহায়। আমি কিছু জিজ্ঞেস করলে বলছে না- বার বার ছুটে যাচ্ছে মায়ের কাছে। আমি তাঁর পাশে আমার কৈশরবেলাকে দাড় করাচ্ছি। তখন আমাদের মায়েরাও পাশে ছিলনা। কত গোপন রোগ শোক যৌবনের প্রারম্ভিক আঘাতগুলো নিজে নিজে সহ্য করেছি। আহা ভাবলে বড় কষ্ট হয় মায়া হয়। :(

১৫| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার আরেকটি পোস্টে আমার একটি মন্তব্য ছিল, যা হয়তো আপনি দেখেন নি। একটু দেখে নিবেন আশাকরি।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৩১

শেরজা তপন বলেছেন: দেখেছি দেখেছি- কয়েকবার ভেবেছি উত্তর দিব। আমি দুঃখিত দেরি হবার জন্য। কালকে ব্যস্ততা কম আশা করি উত্তর পাবেন।

১৬| ০৬ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১২:২৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: লেখা ও সব মন্তব্য পড়ে ভাবছি আমিও পুরুষ। :D

০৬ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৩৯

শেরজা তপন বলেছেন: কি বলেন সেটা জানতেন না বুঝি!! আপনিতো আসল পুরুষ ভাই :)
বয়ঃসন্ধিকালের যন্ত্রণা কি কিছুটা ভোগ করেছেন ভাই?

১৭| ০৬ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১:০০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হাজির স্যার।

পোস্ট পড়ি নাই। ১ম কমেন্টের দেড় লাইন বা দুই লাইন পড়েছি। বুঝেছি, এ পোস্ট কী নিয়া।

কাল এসে আমার বিশেষ-অজ্ঞ মতামত দিয়ে যাব।

০৬ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৪১

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার মন্তব্য না পাইলে পুরাই লস!!!!
তাড়াতাড়ি ফিরে এসে মন্তব্য করুন-অপেক্ষায় রইলাম...

১৮| ০৬ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৭:২১

সোহানী বলেছেন: শেরজা ভাই, আমি একজন বয়:সন্ধিকালীন ছেলের মা হয়েও এরকমভাবে কখনই চিন্তা করিনি। অসম্ভব প্রয়োজনীয় একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন।

যদিও উন্নত বিশ্বে থাকি বলে এ বিষয়টার দায়িত্ব অনেকাংশেই স্কুলে, যেমনটা শায়মা বলেছে।

তারপরও অনেক বিষয় বাবা-মাদের জানা উচিত। বিশেষকরে মা'দের কারন আমরা ছেলেদেরটা এরকমভাবে বুঝি না। আর বাবাদের কাছে ছেলেরা তেমন করে বড় হয় না। যদিও আমি এ বিষয়গুলো নিয়ে সরাসরিই ছেলের সাথে কথা বলেছি, ওকে উৎসাহ দিয়েছি অন্য কারো সাথে আলাপ করতে।

তবে এটা পড়ে এ বুঝলাম যে সে তুলনায় মেয়েরা কম যন্ত্রনা ভোগ করে।

পুরুষ হবার যন্ত্রনা পড়ে সত্যিই পুরুষদের প্রতি সহানুভূতিশীল ;)

০৬ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৫৫

শেরজা তপন বলেছেন: ।প্রিয় আপু
আপনাকে পেয়ে বড় শান্তি লাগছে। ব্লগের এইটাই হোল সৌন্দর্য- যেকোন আলোচনায় সম্মিলিতভাবে সবাই অংশগ্রহণ করে।
আমি জানি এমন একটাপোষ্টে অনেক পুরূষ ও নিজের কথা বলতে দ্বীধা করেন, সঙ্কোচ করেন- সেখানে একটা মেয়ের জন্য এ বিষয় নিয়ে আলোচনা অনেক বেশী বিব্রতকর।
কিন্তু আপনি কত সহজেই কতাগুলো বললেন- ছেলেদের মধ্য যেমন বলেছেন সাড়ে চুয়াত্তর।
আসলে যার কিশোর বয়সের ছেলে আছে সে-ই উপলব্ধি করতে পারবে এর গুরুত্ব! ছেলে সন্তানের জন্য পৃথিবী খুব কঠিন জায়গা।
~তবে এটা পড়ে এ বুঝলাম যে সে তুলনায় মেয়েরা কম যন্ত্রনা ভোগ করে।
পুরুষ হবার যন্ত্রনা পড়ে সত্যিই পুরুষদের প্রতি সহানুভূতিশীল ;)


ঠিক বলেছেন-অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকুন।

১৯| ০৬ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৪০

বিটপি বলেছেন: এখনকার মায়েরা আগেকার দিনের মত নয়। তারা বিনা সংকোচে কিশোর সন্তানের সঙ্গে বয়সন্ধি ব্যাপারে খোলামেলা আলাপ করে। আমার ফ্ল্যাটের তিনতলায় যে ভদ্রমহিলা বাস করেন, তার স্বামী করোনায় মারা গেছেন। তার ১৫ বছর বয়েসের একটি ছেলে এবং চার বছরের একটি মেয়ে আছে। তিনি একদিন কথায় কথায় আমাদেরকে বলেছিলেন, এই বয়েসে ছেলেটির ঘাড়ে অনেক দায়িত্ব এসে পড়েছে, তাই অন্য কিছু নিয়ে যাতে টেনশনে না থাকে, তাই ছেলের সাথে খোলামেলা সবকিছু আলোচনা করেছেন। তার ছেলেও যে কোন রকম শারীরিক সমস্যায় পড়লে তাকে জানায়। আর একজন আদর্শ বড় ভাইয়ের মত তার বোনের টেক কেয়ার করে। এতে সুবিধা হয়েছে এই যে, এই ছেলেটি জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানের জন্য বন্ধু বান্ধবের দ্বারস্থ না হয়ে অতি আপনজনের উপরই নির্ভর করতে পারছে - তাই এই ব্যাপারগুলো তাকে বেশি ব্যস্ত রাখতে পারছেনা।

এরকম অনেককেই আমি দেখেছি।

০৬ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:০৭

শেরজা তপন বলেছেন: হ্যা হ্যা তাতো বটেই। এজন্য আপনি সোহানী আপুর মন্তব্যটা পড়তে পারেন।
পুরুষদের সব ব্যাপার স্যাপার পুরুষেরাই বোঝে। মায়ের বুঝটা সবসময় সঠিক হয় না। আমার কিশোর ছেলে এসব নিয়ে আমার সাথে কোন আলাপ করতে চায় না- সবকিছু তাঁর মাকে বলবে। ওর মা বেশীরভাগ ক্ষেতেই সহযোগীতার ইচ্ছে থাকলেও অসহায় বোধ করে। সবকিছু সে বোঝে না - তাঁর বোঝার কথা ও নয়। স্কুল শিক্ষাটা এজন্য খুব প্রয়োজন।

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

২০| ০৬ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৩৯

নতুন বলেছেন: সম্ভবত সময়ের সাথে বর্তমানের বাবা মায়েরা বিষয়টা নিয়ে কথা বলা শুরু করেছে। আমার দুই ভাগিনাকে ওর বাবাই রেজর কিড কিনে দিয়েছে। স্কুলে থাকার সময়েই আন্ডারওয়ার কিনে দিয়েছে।

আমি বইয়ের পোকা ছিলাম, সম্ববত বয়সন্ধির আগেই গোয়েন্দা কাহিনি ক্যাপটেন রাজ এর বইয়ে নায়কের শারিকির প্রেমের লেখা পড়ে ছিলাম। তারপরে বাসায়ই কিছু ম্যাগাজিন পেয়েছিলাম যেটা হয়তো চাচাতো ভাই/চাচা রা বাস বা ট্রেনে কিনেছিলো।

সেখান থেকে আরো জানার ইচ্ছা। যদিও খুব বড় কোন অঘটন ঘটে নাই। কিন্তু এসএইচসির রেজাল্ট খারাপের পেছনে হয়তো এই সব বিষয়ের কিছু প্রভাব ছিলো।

উপরের সাচু ভাইয়ের মতনই হস্তমিঠুন আবিস্কার এবয়। B-))

আন্ডারওয়ার কিনেছিলাম সম্ভবত বেশ ক্লাস ১০ পাস করার পরে ঢাকার ফুটপাত থেকে।

আমার মনে হয় বর্তমানে যেহেতু ছেলে মেয়েরা সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করে, তাই এই বিষয়ের উপরে ভালো একটা অনলাইন কোর্সের মাধ্যমে ছেলে মেয়েদের সঠিক তথ্য সেখানো যাবে।

আরেকটা জিনিস বাবা মায়ের সচেতন থাকা উচিত এই বয়সে বাচ্চারা যেন এবিউজের স্বীকার না হয়।

০৭ ই নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৪

শেরজা তপন বলেছেন: সংক্ষেপে অনেক কিছু বললেন। আসলে আমরা পুরুষেরা বাইরে যতই ডেয়ারিং ভাব নিই না কেন ভেতরে ভেতরে আমরা সবাই বেশ বোকা বোকা লাজুক।
বয়স বেড়ে বুড়ো হয়ে গেলেও আমরা অনেক কথা ভেতরেই পুষে রাখি- বলতে গেলে সঙ্কোচ দ্বীধা ভয়।
আপনার কথায় অনুপ্রাণিত হলাম ভেবে যে, দু'চারজন তাও বলেছে কিছু দেখে।
ভাল থাকুন- পুরুষের যন্ত্রনার সাথে থাকুন :)

২১| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:৪৯

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: এই পোস্টটা যে কতটা প্রয়োজনীয় তা ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ বুঝবেনা।

০৭ ই নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৬

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার মন্তব্যে দারুণভাবে অণুপ্রানিত হলাম।
হয়তো সত্যি আমি ভাবি এটা আমার জন্যও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
ভাল থাকুন।

২২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:১৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: আমাদের সময় ১৯৯৯ কিংবা ২০০০ সালে যখন নবম দশম শ্রেণীতে তখন পরিবার তো দূরের কথা পরিচিত কোন আত্মীয়ের সাথে এ ব্যাপারে আলোচনা করা বা প্রশ্ন করা হতো না । বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকেই বেশিরভাগ জানা হতো, কথা হতো। তারা উল্টাপাল্টা কত রকম কত কথা যে বলতো ,শুনে লজ্জায় গাল লাল হয়ে যেত। বিভিন্ন ম্যাগাজিন পড়েই প্রেম-ভালোবাসা শারীরিক সম্পর্ক বিষয়ে গুলো সম্পর্কে জেনেছি।
প্রথম সেভ করি যখন ইন্টারে পড়ি। একজন বলেছিল সেভ করার পর আমাকে সুন্দর লাগছে সেটা যেন বিরাট এক লজ্জা।

এখনকার বাবা মায়েরা সচেতন কিন্তু এ ব্যাপারে আরও সচেতন হতে হবে। ধন্যবাদ সুন্দর বিষয়ে শেয়ার করার জন্য।

১০ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৪৩

শেরজা তপন বলেছেন: :) এখন ভাবতে মজা লাগে কিন্তু সেই বয়সে ছিল ভীষন বিব্রতকর!!
বন্ধুদের কেউ কেই জ্ঞানের জাহাজ ছিল তারা কিছু জানত আর বাকি সবটুকু বানিয়ে বানিয়ে বলর। সেই বয়সে তারাতো আমাদের গুরু ছিল :)

অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভাল থাকুন নিরন্তর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.