নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...
(*কোনভাবেই লেখাটা এর থেকে সংক্ষিপ্তাকারে প্রকাশ করতে পারলাম না। তবে ব্লগারদের অনুরোধ রইল লেখাটায় চোখ বুলানোর। বলা যায় না এই লেখা পড়ে আপনি কিংবা আপনার পরিচিত কেউ হয় পুরনো গাড়ি বিক্রি চক্রের ফাঁদ থেকে বেঁচে যেতে পারেন।)
গতপর্বে লিখেছিলাম ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নে বিড়ম্বনা কথন-এ পর্বে একটা ভিন্ন প্রসঙ্গ! কিন্তু বিষয়টা অতীব জনগুরুত্বপূর্ণ। আপনারা কেউ দালাল বা মিডিয়ার কাছে পুরনো গাড়ি বিক্রি করেছেন? উত্তরা খালপাড় দিয়ে একটু এগিয়ে গেলেই দেখবেন সারি সারি পুরনো গাড়ি কেনা-বেচার দোকান। যাকে ভাব নিয়ে বলা হয় 'শো-রুম'! ঢাকা শহরে আরো অনেকগুলো স্থানে পুরনো গাড়ি বেচা-কেনা হলেও, আমি যতদুর জানি ওটাই সবচেয়ে বড় মার্কেট। খুব সহজ ও স্বাভাবিকভাবে সেখানে গাড়ি কেনা-বেচা হলেও কিছু ক্ষেত্রে অন্য এক খেলা হয়, যেই খপ্পড়ে পরে বিক্রেতা নিজের অজান্তেই ভয়ঙ্কর এক ফাঁদে জড়িয়ে পড়েন বা আচম্বিতে ফেঁসে যান।
আমার হল শুরুঃ
২০১৯ সালের ডিসেম্বর বেশ কিছুদিন ধরেই অনুভব করছিলাম আমার পুরনো গাড়িটা বেঁচে একটু আপ মডেলের গাড়ি কেনার। ওই গাড়িটার দেহ সাস্থ্য ভাল থাকলেও চেহারায় একটা ফকিন্নি ভাব ছিল- সেটাতে চড়ে আমার ইজ্জত বহাল তবিয়তে থাকলেও পাড়া পড়শির নাকি আর ইজ্জত থাকে না। পরিচিত কারো সাথে দেখা হলেই বলে, ভাই এই মাল আর কদ্দিন চালাবেন-এইবার একটু পাল্টান। পুরনো রদ্দি মাল হলেও গাড়িটার প্রতি আমার মায়া ধরে গেছিল। তবুও পরিচিতজন ও প্রতিবেশীর ইজ্জত বাঁচাতে আমি ধানমন্ডি থেকে কালাচাঁদপুর(বারিধারার পুর্বপাশে) দৌড়ে বেড়ালাম পছন্দের এক গাড়ির খোঁজে। পেলাম অবশেষে একখানা।
শো-রুমের মালিক আমাকে গাছ বলদ ঠাউড়ে বিগলিত হাসি হেসে বললেন, ভাইজান এইটাতো অন্যপার্টি এসে মুলামুলি করে গেছে। বিকালে এসে কনফার্ম করার কথা। আপনার পছন্দ হইলে দাম ফাইনাল করে কিছু এডভান্স করে যান, তাহলে 'কাম তামাম হবে'। আমি তাঁর টোপ গিলে রাজী হয়ে মাইঙ্ক্যা চিপায় পড়লাম!
কিছু টাকা নগদ আর বাকিটা আমি আমার গাড়ি বিক্রি করে নেবার অফার দিলে তিনি বললেন, পুরাতন গাড়ি কবে বিক্রি হয় কি না হয় ঠিক নাই। এর থেকে কোন দালাল ধরে জায়গায় কল্লা কেটে দেন।
মিডিয়া খোঁড়া রহমানের জালে যেচেই ধরা দিলামঃ
আমার মনে পড়ল খোঁড়া রহমানের কথা। পাশের বাসার দাড়োয়ান বহু আগে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। খুব আদব লেহাজওয়ালা মানুষ। গাড়ি কেনা বেচার কারবার করে। তাঁকে ফোন দিলাম, সে দুই দিনের মধ্যে পার্টি এনে হাজির। পার্টির কথা বার্তাতেও আমার দিল খুশ। সময়ের অভাবে গাড়িটা প্রায় পানির দরেই ছেড়ে দিলাম। ( যদি পানির দর বলতে কি বোঝায় সেটা আমার মালুম হয় না- কোন কোন দেশে এখন বিয়ারের থেকে পানির দাম বেশী।)
তারা সব কাগজ পত্র রেডি করে সই সাবুদ নিয়ে নগদ টাকা গুনে দিয়ে সব ডকুমেন্ট নিয়ে বিদায় নিল। বিদায় নেবার আগে মুল দালাল বলল, বস আমরাতো এই গাড়ি শো-রুমে নিয়ে বিক্রি করব তা দুই তিনমাস সময়ও লাগতে পারে। সেজন্য নাম পরিবর্তনটা হতে একটু সময় লাগবে। আমি যথাস্তু বলে আমার এতদিনের প্রিয় সাথী গাড়িটার গমন পথের দিকে চেয়ে অতি আবেগে কয়েক ফোটা চোখের জল ফেললাম! আহা কত-শত স্মৃতি এই গাড়িটাকে ঘিরে।
***
করোনায় -চিন্তায় শুধু মৃত্যুভয়, ওদিকে ঘুণে করে সব ক্ষয়ঃ
২০২০ সালের মার্চ মাস! ২৬ শে মার্চ থেকে লকডাউন শুরু। লক ডাউনের বছর সরকার গাড়ির মালিকদের ব্যাফক একটা ছাড় দিল; সেই বছর গাড়ির কাগজপত্র আপডেট না করলেও চলবে। পরের বছর কোন ফাইন ছাড়া একবারে দুবছরের ফি দিয়ে আপডেট করা যাবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০/২১ সাল ছিল সবচেয়ে কম ট্রাফিক সার্জেন্টদের উৎপাতের বছর!
আমি সেই সুযোগ লুফে নিলাম। আমার ট্যাক্স টোকেনের সময় সেপ্টেম্বরে শেষ। তখন ডিজিটাল বাংলাদেশ অনেকদুর এগিয়েছে। অনলাইনে গাড়ির যাবতীয় বকেয়া ফি চেক করা যায়। আমি চেক করতে গিয়ে দেখি আমার এ আই টি ও ট্যাক্স বকেয়া; এক লক্ষ পঞ্চান্ন হাজার। টাকার অঙ্ক দেখে আমার শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা জলের স্রোত বয়ে গেল! যতবার চেক করি টাকার অঙ্ক আর কমে না। পরে ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখি একই কাহিনি।
আমি যতই মাথা চুলকাই আর একে ওঁকে জিজ্ঞেস করি কেউ সদুত্তর দিতে পারে না।
পরে এক দালালের সাথে যোগাযোগ করলে সে বলল, সরকার করোনার ফাঁকে বিশেষ সুযোগ দিয়ে অতি গুফনে কোন প্রজ্ঞাপন না দিয়ে এ আই টি প্রায় দ্বীগুন করে দিয়েছে!!!
আমার একটা জিনিস বুঝে আসে না; প্রাইভেট গাড়ির কেন AIT থাকবে। AIT মানে এডভান্স ইনকাম ট্যাক্স। কেনরে ভাই কি জন্য এই ভয়ঙ্কর নিস্পেষন; কেউ কি সদুত্তর দিতে পারেন?
***এ বিষয় নিয়ে ব্লগার আহমেদ জী এস ভাই দু'বছর আগে চমৎকার একটা পোষ্ট দিয়েছিলেন; কেউ চাইলে লেখাটা পড়ে আসতে পারেনমহাবেকুব জাতক কথন - ছয়
১৬০০ সিসির গাড়ির AIT এক লাফে ৩০ থেকে ৫০ হাজার হয়েছে। আমার গিন্নি একথা শুনে লাফালাফি শুরু করল; তোমারে বলছিলাম ১৬০০ সিসির গাড়ি কিইনো না। তুমি বেশী বুঝলা।
আমি তখন গ্যাঁড়াকলের চিপায়! তবুও হিসাব মিলে না; দুবছরের এ আই টি না হয় ১ লাখ হবে কিন্তু বাকি পঞ্চাশ??
শেষে কোন কুল কিনারা না পেয়ে সরকারের চৌদ্দগুষ্টিরে উদ্ধার করে চোখের জল নাকের জলে এক করে একগাদা টাকা ব্যাঙ্কে জমা দিয়ে এসে অন্ধকারে ভুতের মত বসে রইলাম...
২০২২ সালের জানুয়ারি। NBR থেকে একখান প্রেমপত্র পেলাম। এমন মায়ায় মোড়ানো ভাব ভালবাসার বচন সমৃদ্ধ প্রেমপত্র একমাত্র আপনি এই বাংলাদেশের নাগরিক হলেই পেতে পারেন।
এই প্রেমপত্রখানা নিয়ে আলোচনা করব আরেকদিন। এমনিতেই এই লেখা আনাকোন্ডার মত ধেড়ে আর লম্বা হয়ে যাচ্ছে।
সেই পত্রের মাধ্যমেই জানতে পারলাম- আমি নিন্ম মধ্যবিত্ত থেকে একলাফে বিত্তবানের কাতারে পৌঁছে গেছি। আমার এখন দুই-দুইখানা গাড়ি! আয়করে তেমন কোন স্থাবর সম্পত্তির বয়ান না থাকাতে তাদের সন্দেহ হয়েছে- এবং তারা শতভাগ নিশ্চিত 'এই মালের গ্যাঁড়াকলে ফেলে ভাল মাল কামানো যাবে'।
আমার রাইতের ঘুম হারাম হয়ে গেল! কোন দুশমনে আমাকে আরেকখানা গাড়ি গিফট করল ভেবে ভেবে আমি হয়রান!!
অবশেষে 'দিমাগ কি বাত্তি জ্বালা'। আ রে তাইতো!!আমি ধরলাম খোড়া রহমানকে, সে প্রথমে আকাশ থেকে পড়ল যেন- তাঁরপর থেকে শুধু ধানাই পানাই করে।
কোনভাবেই আমাকে মুল মিডিয়ার খোঁজ দেয় না। ওদিকে আমি বহু আগে ক্যামেরায় তুলে রাখা ডকুমেন্টের ছবি খুঁজতে খুঁজতে পেরেশান।
অবশেষে আর্কাইভে পেলাম যদিও কিন্তু স্ট্যাম্পের প্রথম পাতার ছবি ঝাঁপসা। অনেক কষ্টে সেই দালালের নাম ঠিকানা উদ্ধার করলেম কিন্তু NID'র নম্বর আর উদ্ধার করা গেল না।
অনেক ভয় ডর দেখানোর পরে 'রহমান' দালালের ফোন নম্বর আমাকে দিল।
সেই দালালকে ফোন দিলে সে খুব আদব লেহাজের সাথে কথা কইল- গাড়ি কোথায় বিক্রি করেছে সে নাকি ভুলে গেছে। খোঁজ খবর নিয়ে জানাবে বলল।
এরপর আমি যতবার ফোন দেই, ততবার এক কথা; বস আমি খুজতেছি। খোঁজ পাওয়া মাত্রই আপনাকে জানাব। ওদিকে NBR অধৈর্য। তারা বলল ঝামেলা সেটেল না করলে সামনের বছর থেকে তারা 'আয়কর' যেইটা নির্ধারন করে দিবে সেটাই দিতে হবে।
কোন দেশে আছি মাইরি- কি কয় শালার পুতেরা!!!
ভয়ে-হতাশায় দৌড়ের উপ্রে আমি যখনঃ
অবশেষে উপায় না দেখে আমি আমার এক বাল্য বন্ধু ডিবি কর্মকর্তার সাথে কথা বললাম। সে কয় দোস্ত তুমিতো বড় বাঁচা বাইচ্যা গেছ। আজকেই একজনরে ধইরা আনলাম। উনি এমন পুরনো গাড়ি বেঁচছিল। সেই গাড়ি ড্রাগ ক্যারি করতে গিয়ে ধরা খাইছে। আমরা জানি, মালিকের দোষ না তারপরেও তাঁর নামে তো গাড়ি।
এইরকম বহু কেস হচ্ছে। চোরাচালানী,ছিনতাই, খুন সহ হেন কোন আকাম নাই যা এইসব গাড়ি দিয়ে হচ্ছে না। গাড়ি ধরা পড়লেই মুল মালিক ফাইস্যা যায়। অথচ তারা জানেও না তাদের গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন হয় নাই। করোনার সময় থেকে সরকার ডিজিটালাইড TIN-এ গাড়ির AIT অটো অন্তর্ভুক্ত করাতে সবাই এখন বুঝতে পারছে বিষয়টা। আগেতো ধরা না পড়লে ঘুনাক্ষরেও জানত না কেউ।
তুই তাড়াতাড়ি গাড়ির বিক্রির যা ডকুমেন্ট আছে তাই নিয়ে থানায় একটা জিডি কর। ভয়ে আতঙ্কে আমি তখন শর্টস পরেই থানায় ছুটছিলাম জিডি করব বলে।
আমার ওই বন্ধু বিরাট ঘুষখোর! দেশের নামকরা এক সন্ত্রাসীর গিন্নীর কাছ থেকে ঘুষ খাওয়ার সময়ে ধরা পড়ায় চাকুরিচ্যুত হয়েছিল। দীর্ঘ দশ বারো বছর পরে চাকরি ফেরত পেয়ে মা লক্ষীর 'বর'-এর কৃপায় সার্টিফাইড ঘুষখোর হিসেবে আট হাতে টাকা কামাতে শুরু করে। পয়সা ছাড়া তাঁর কথা বলার সময় কম। তারপরেও আমি তাঁর স্কুলের বন্ধু বলে পাঁচ/সাত দিন হেন-তেন করল। ওই ছেলেক ফোন দিয়ে হুমকি ধামকি দিলে সে আরো বড় হেডাম দেখাইল। তাঁর আপন ভাই নাকি পুলিশের এস পি! লেও ঠ্যালা এখন আমি যাই কোথায়??
এই দালালদের বিশাল চক্র। তাদের হাতে এইরকম ডিবি পুলিশ র্যাব CID বহুত আছে। তবে সে একটু চিপায় পড়ে একবার বলল যে, গাড়ির মালিকের খোঁজ পাইছে। সেইটা এখন ময়মনসিংহ-তে আছে। কিন্তু সমস্যা হইল গাড়িটা এক্সিডেন্ট করায় সেই লোক নাকি গাড়িটা গ্যারেজে ফেলে রাখছে। সেটা নাকি এখন রদ্দি মাল - সের মেপে বিক্রি করা ছাড়া উপায় নাই।
আমি জানি এটা ডাহা মিথ্যে কথা। তাঁর মানে আমি কি সারাজীবন ওই গাড়ির AIT দিয়ে যাব? কি ভয়ঙ্কর কথা।
আমি সেই লোকের ঠিকানা দিতে বললাম। জানালাম আমি নিজে গিয়ে গাড়ির হাল হকিকত দেখে আসব। দিচ্ছি দেব বলে সে ফের ঘোরানো শুরু করল।
ঝামেলা সুরাহা করতে NBR-এ টাকা দিতে হল একগাদা। ওদিকে দুই গাড়ির ফের এক বছরের AIT।( এডভান্স ইনকাম ট্যাক্স)।
মাঝে এক জনের পরামর্শে BRTA-তে যোগাযোগ করলাম গাড়ির নিবন্ধন বন্ধ করে নম্বর মুছে ফেলার জন্য।
তারা জানাল, এটা এখন আর হয় না। TIN-এ যে গাড়ি নিবন্ধন করা আছে সেটা মালিকানা বদলী না হলে নিবন্ধন বাতিল হবে না। তবে আর একটা পদ্ধতি আছে, আপনি পুরাতন গাড়িটা এখানে নিয়ে আসেন- আমরা স্ক্র্যাপ করে নিবন্ধন বাতিল করে দিচ্ছি।
তবে এক দালাল পিছন থেকে চুপি চুপি এসে বলল, বস আমারে পাঁচ হাজার টাকা দেন। আমি নিবন্ধন বন্ধ করে দিচ্ছি- ওই ব্যাটা আর নাম পরিবর্তন করতে পারবে না।
তাইলে আমার লাভ কি? ওই ব্যাটাতো ইহজনমে আর নাম পাল্টাবে না- আর আমার ফি বছর ট্যাক্স গুনতে হবে।
যেখানে দেখিবে ছাই- কুড়াইয়া দেখ তাই, মিলিবেই শুধু ছাই!!
এ নিয়ে আমি আরো খানিক দৌড় ঝাপ করলাম! আমার এক এমপ্লয়ী আছে সে 'বাচ্চা দৈত্য' নামে একটা বাংলা সিনেমায় নামি নাম ভুমিকায় অভিনয় করেছিল। যা হয় হবে ভেবে দালালকে শাসানোর পাঠালাম- কিন্তু তাঁকে গিয়ে আর পায়নি।
একটা বেসরকারি টিভি চ্যানেলে যোগাযোগ করলাম। সেখানকার ক্রাইম রিপোর্টার আমাকে বলল, তপন ভাই এই চক্রটার খবর আমরা জানি, কিন্তু ভুক্তোভুগী কেউ অন ক্যামেরা কথা বলতে চায় না। আপনি যদি আপনার মত আর দু'চারজনকে যোগাড় করতে পারেন যারা কথা বলবে তবে য়ামি পুরো এক পর্বের ক্রাইম রিপোর্ট করব।
আরে ভাই আমি বাকি লোক কই পাব? প্রচন্ড কাজের চাপ- তারপরেও ফাঁকে ফোকড়ে এই কাজে সময় দেই।
অবশেষে আমাকে একটা আশার আলো দেখাল আরেকজন গাড়ির দালাল। যার গ্যারেজে নিয়মিত আমি আমি গাড়ি সার্ভিসিং এ পাঠাই। সে পনের হাজার টাকা চাইল; সার্ভার থেকে পুরা গাড়ির ফাইল গায়েব করার জন্য।
কোন বিকল্প আর নেই আমার হাতে। টাকা পয়াসা কিছু কম করে অবশেষে সেই পথেই হাটলাম।
সে ফোন দিইয়ে বলল, গুরু কাম হয়ে গেছে। মিষ্টি খাওয়ান। কালকে কাউরে ব্যাঙ্কে পাঠাইয়েন ট্যাক্স টোকেনের জন্য। দেখবেন 'ওই নম্বরের গাড়ি খুঁইজাই পাইব না।'
***
মারে আল্লা রাখে কেঃ
দুদিন বাদে আমি দিয়াবাড়ির মেট্রোর নীচ দিয়ে বাঁয়ে মোড় নিলাম -বেড়ি বাঁধ দিয়ে ধৌড় হয়ে আশুলিয়া দিয়ে ফ্যাক্টরি যাব বলে। তুরাগ থানার দিকে মোড় ঘুরতেই দেখি হলুদ পোশাক পড়া দুজন সার্জেন্ট! ওইখানে বিগত দিনে আমি কখনো সার্জেন্ট দেখিনি। আমার গাড়ি দূর থেকে ইশারা করল থামবার জন্য। আমারতো কোন টেনশন নাই। তদাপিও মনের মধ্যে কু ডাকল।
সার্জেন্ট গাড়ির কাগজ পত্র দেখলেন অনেক্ষন খুটিয়ে। সামনে গিয়ে রেজিস্ট্রেশোন নম্বর মেলালেন। গাড়ির বনেট খুলে চেসিস নম্বর চেক করলেন। পয়সা খাবার কোন রাস্তা বের করতে না পেরে সম্ভবত ভদ্রলোকের মুখ গম্ভীর। অবশেষে এ পাশ ঘুরে আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, গাড়ির মালিক কে আপনি?
-জ্বী আমি- কোন সমস্যা?
-আপনি গাড়ি রেজিষ্টেশন করছেন কোথা থেকে?
-কেন মিরপুর বি আর টি এ থেকে। ' আমি তাঁর কথা শুনে ভীষণ আবাক।
সার্জেন্ট চিন্তিত মুখে বলল, মেশিনে আপনার গাড়ির নম্বর খুঁজে পাচ্ছি না!!!
লে ঠেলা - আমি যা ভাবছি তাই হয়তো সত্যি হবে। বরাবর আমার ভাগ্যেই এভাবে কয়লার কালিতে এমন কিছু ব্যতিক্রমী দুর্ভাগ্যজনক গল্প লেখা হয়!!
ফের দ্বিগুণ টাকার শ্রাদ্ধ!!
যা ভেবেছিলাম তাই; গাড়ির ডিটেইলস মুছে ফেলার সময়ে দুটো নিবন্ধন নম্বরে গড়মিল করে ফেলেছে। আমার পুরনো গাড়িটা এখন বহাল তবিয়তেই আমার গলায় ঝুলে আছে আর নয়াটার গর্দান কাটা পড়েছে!!! হায় মাবুদ এ কোন গ্যাঁড়াকলে পড়লাম!
দালাল মহাশয় তাঁর ভুল আর স্বীকার করেন না। ওই ভুলটা নাকি আমিই করেছি। তবে তিনি সিরিয়াসলি উদ্যোগ নিলেন বিষয়টা সুরাহা করার জন্য।
কিন্তু খেলা আছে অন্যখানে; এবার টাকা ( আদপে ঘুষ) দিতে হবে দ্বীগুন! এক অংশ আগের গাড়ির নিবন্ধন বাতিলের জন্য- আর এক অংশ আমার নতুন গাড়ির বাতিলকৃত নিবন্ধন ফিরিয়ে আনার জন্য। তবে দালালেরা কোন খরচ-পাতি নিবে না বলে অঙ্গীকার করল।
BRTA-তে ফেরঃ
ঝামেলা এখানে শেষ নয়। সমস্যাটা আমাকেই সশরিরে গিয়ে বি আর টি এর বড় কর্মকর্তাকে বোঝাতে হবে। তিবি যদি দয়াপরবশত হয়ে রাজী হন তবে হইল- নাইলে না।
নির্ধারিত দিনে মিডিয়া(দালালের আধুনিক নাম) নিয়ে গিয়ে বসাল সেখানকার মাঝারিমানের এক কর্মকর্তার রুমে। ইনার হাতেই মুল কাজ। পরিবর্তনটা ইনিই করেন- তবে উপরের অনুমতি লাগে; তাই বড় কর্মকর্তার মাজাজ মর্জি বুঝে মন ভোলানোও তাঁর কাজ।
সেদিন তাঁর রুমে মোট দুঘন্টা বসে ছিলাম। সেই কর্মকর্তা আমাকে শিখিয়ে দিলেন, বড় স্যার জিজ্ঞেস করলে আমি যেন বলি তিনি আমার ভাই এর বন্ধু। তথাস্তু! তিনি একবার বড় কর্তার রুমে নিয়ে আমাকে কোর্টে নিয়ে যেন এজলাসের দাড় করিয়ে আরেকজনের সাথে তর্ক বিতর্কে লিপ্ত বড় সাহেবের মেজাজ খানিকটা খিঁচরে থাকায় মিনিট দশেক অপেক্ষা করে ফিরে আসলেন।
আমাকে বললেন, এখন বললে উনি হুট করে মানা করে দিতে পারেন। একবার না করলে আপনি ফেঁসে যাবেন।
ব্যাপক এক টেনশনের ধাক্কাঃ
ঘন্টা খেনেক ফের বসে থেকে অধৈর্য হয়ে গেলাম! তবে এই অপেক্ষায় এমন একটা বিষয়ের সাক্ষী হলাম যা কল্পনাতেও ছিল না।
ইনি খুব ব্যাস্ত মানুষ। খানিক ডেস্কে বসে কাজ করেন আর শুধু ব্যস্ত পায়ে ঘর-বাহির করছেন। লাঞ্চের সময়ে সব খালি হয়ে গেল। তিনি আমাকে ইশারা করলেন, চলেন...
ওমা বড় সাহেবের রুমের সামনে গিয়ে দেখি, রুমের বাইরে থেকে তালা ঝোলানো।
আমার বুকে ছ্যাঁত করে উঠল। আজকে পুরা দিনটা বেকার গেল বলে আঁতকে উঠলাম।
মাঝারি কর্মকর্তা গেটের সামনের দারোয়ানকে যেন, ইশারায় কি জিজ্ঞেস করলেন। সে তাঁর টুল থেকে উঠে গিয়ে অন্য রুম থেকে আরেক জনকে ডেকে নিয়ে আসল। সেই লোক এসে পকেট থেকে চাবি বের করে তালা খুলে দিল। ভিতরে ঢুকে আমার চোখ ছানাবড়া!! বড় কর্তা নিরিবিলিতে কোন এক বড় মাপের কারো সাথে গোপনে শলাপরামর্শ করছেন। একেই মনে হয় বলে সত্যিকারে' রুদ্ধদ্বার বৈঠক'!!
মাঝারি কর্মকর্তা তাঁর কাছে গিয়ে অতি সম্ভ্রমের সাথে আমার ঘটনা সংক্ষেপে জানালেন।
আমি মনে মনে প্রস্তুত হয়ে আছি, যতটা করুণ ও কাঙ্গালভাবে আমার দুরবস্থা বয়ান করা যায় তাঁর সার সংক্ষেপ নিয়ে।
তিনি শুধু আমার দিকে ফিরে বললেন, গাড়ি কি আপনার?
জ্বী বলেই 'বাকি কাহিনী' বলার আগেই তিনি থামিয়ে দিলেন। এরপর কম্পিউটারে খোঁচাখুঁচি করে কি একটা কাগজে লিখে মাঝারি কর্তার হাতে ধরিয়ে দিলেন।
তিনি আমার দিকে চেয়ে মিস্টি হেসে বেরিয়ে যাবার ইশারা করলেন। 'আমার তখন ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল'।
~গল্প আরেও খানিক আছে- সেটুকু থাক নাহয়...
অবশেষে 'নটে গাছটি মুড়াল আমার গল্প (পুরনো গাড়ি বিক্রির অভিশপ্ত আখ্যান) ফুরাল।'
আগের পর্বঃ জন্ম আমার ধন্য হল- আ হা রে!! ১
---------------------------------
১৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:২৩
শেরজা তপন বলেছেন: বড় লেখা পড়তে আপনি বিরক্তিবোধ করেন তাই ইচ্ছে অনিচ্ছাকে সম্মান জানাই। হাজিরা দিয়ে গেছেন এতেই আমি প্রীত।
সুযোগ পেলে পড়বেন না হয়।
২| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২৪
ডার্ক ম্যান বলেছেন: এখন কারো নামে গাড়ি কেনা হলেই সেটা ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্ট এর কাছে খবর পৌঁছে যায়।
বাংলাদেশে থাকতে হলে এগুলো সাথে নিয়েই বাঁচতে হয়। কিছুদিন আগেও আমার নানা বিষয় নিয়ে মন খারাপ হত। এখন আর হয় না।
১৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:২৬
শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক বলেছেন - আমিও এখন যোকোন পরিস্থিতিকে সহজ ও স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নেবার চেষ্টা করছি।
আমাদের সবার ধৈর্য ও সহনশীলতা বেড়ে যাচ্ছে।
৩| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০২
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ভাই কি বলব। পড়তে পড়তে দম বন্ধ করা অনুভূতিতে মনে হয়েছে কোন হরর মুভি পড়ছি আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রক্তচাপ। পড়া শেষে আটকে রাখা শ্বাসটা ছেড়ে দিয়ে শুধু একটাই কথা মনে এসেছে , " বড় বাঁচা বেঁচে গেছিরে ওসমান"।
কারন - অর্ধাংগীনির কথায় এই ঠাট-বাট বজায় রাখার জন্য একবার এ রকম এক রদ্ধিমাল (পুরান গাড়ী) কিনার জন্য মোটামুটি সবকিছু শেষ করার আগে মনে হয়েছে পার্কিং এর জায়গা নেই এবং তা হতে হতে তখন আরো ৩/৪ লাগবে। ততদিন এই রদ্ধিমাল (পুরান গাড়ী) কি করুম। তার পর ভুজং-ভাজং দিয়ে( ঢাকার জ্যাম-রিকশার গুতা-ট্রাকের ঠেলা -ঠেলার ল্যাঠা-তেল চুরি-পুলিশের ঝামেলা এসবের পেরেশানী সামলিয়ে গাড়ী রাখার ঝামেলা কম নয়) দিয়ে আমি সটকে পড়েছি এবং বলেছি যতদিন দুই চাকার গাড়ী (পাও) সচল আছে চার চাকার গাড়ীর নামও নিওনা।
যদিও জীবনের বেশীরভাগ জায়গাতেই আমার সাথে তার মিলেনা তার পরও কেমনে কেমনে যেন আমার এই ভুজং-ভাজং মাইনে লইছে।
আপনার লেখা পড়ে এখন মনে লয় , "আল্লা হাতে ধইরা বাঁচাইছে মোরে"
১৬ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৯:০৩
শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক ঠিক বড় বাঁচা বেঁচে গেছেন ' যেমনে আল্লায় হাতে ধরে আমারে ভয়ঙ্কর এক ফাঁদে ফেলেছিল'
আপনার পড়তে গিয়েই দম বন্ধ হয়ে আসছে -আর ভাবেন আমার দুটা বছর ক্যামনে গেছে। তবুও লেখা ছোট করার জন্য অনেক কাটছাট করেছি।
আপনার আর আমার লেখা শুধু দৈর্ঘ-প্রস্থে বাড়তেই থাকে!
ঢাকার জন্য দুই চাকাই উত্তম। কিন্তু আমার উপায়তো নেই।
তয় ভাবি ভালা মানুষ - সব মহিলাকে ভুজং বভাজং দিইয়ে মানানো যায় না। পুরুষদের থেকে তাদের মান ইজ্জতের দাম অনেক বেশী।
চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৪| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: দিন দিন আপনি পরিস্থিতির বিপাকে পড়ে অভিজ্ঞ হয়ে উঠছেন।
সেই অভিজ্ঞতার আঁচ আমরাও কিছু পাচ্ছি। গাড়ি এক যন্ত্রনার নাম। আজ এটা নষ্ট, কাল ওটা সমস্যা। সার্ভিসিং, গাড়ি পরিস্কার করা, সিএনজি করা, ইন্স্যরেন্স ইত্যাদি নানা দিকদারি। এরপর আছে ড্রাইভার আরেক যন্ত্রনা।
ঢাকা শহরে গাড়ি নিয়ে চলাচল করাও অনেক যন্ত্রনার।
যাইহোক, আপনি বিচক্ষন মানুষ কেন পাড়া প্রতিবেশীর কথা শুনবেন? আপনি চলবেন আপনার বুদ্ধিতে।
গাড়ি কেনা সহজ, বিক্রি করতে গেলে নানান দিকদারি।
১৬ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৯:১২
শেরজা তপন বলেছেন: সেটা অবশ্যই ঠিক তবে সেটা কারো কারো জন্য অতীব প্রয়োজনীয়। আমরার ব্যাবসার ধরনটাই এমন যে, নিয়মিত বিভিন্ন কর্পোরেট অফিসে যেতে হয়। ফের ঢাকা থেকে কাঠগড়া ফ্যাক্টরিতে যেতেই হয় প্রায় প্রতিদিন। গাড়ির ডিকি ঠাসা থাকে বিভিন্ন স্যাম্পল আর ডকুমেন্টে।
আমি এর হাজারো ঝামেলা থাকা স্বত্বেও ব্যাবহার করি বাধ্য হয়ে। মাঝে মধ্যে ভীষণ বিরক্ত লাগে। বিশ পঁচিশ বছর নিজেই গাড়ি চালিয়েছি। হাজারো বেতাল চিন্তায় গাড়ি চালানোয় আর মনযোগ দিতে না পেরে বাধ্য হয়ে ড্রাইভার রেখেছি।
পার্থিব কোন স্থাবর অস্থাবর সম্পদে আমার আগ্রহ নেই। একেবারে যৌবন বয়সে আমি গাড়ি ইম্পোর্ট করতাম(৯৫-৯৬ সালে)। তখন হ্যামার,উইসডম, প্রেসিডেন্ট, রয়াল সেলুন সহ হেন কোন দামী গাড়ি নেই যা চালাই নি- ভাব নিয়েছি তখন। এরপরেই গাড়ির প্রতি মোহ চলে গেছে।
আপনার মন্তব্যকে সম্মান জানাচ্ছি। ধন্যবাদ আপনাকে।
৫| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫২
নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: একটা হরর কাহিনী পড়লাম মনে হলো !!!
শেষের কার্টুনটা কী আপনার ??
১৬ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৯:১৪
শেরজা তপন বলেছেন: তাইলে বোঝেন আমি কোন ভুতের গলিতে ছিলাম। আর আপনি হুদাই শুধু হতাশায় ভোগেন!
এতবড় লেখা পড়তে গিয়ে যাতে ক্লান্ত না হয়ে পড়ে কেউ তাই ক্যারিকেচারগুলো দিয়ে বিশ্রাম দিয়েছি।
শেষেরটা সব কাজ ভালয় ভালয় হবার পরে আমার অনুভুতির প্রকাশ।
ধন্যবাদ-ভাল থাকুন।
৬| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৭
শাহ আজিজ বলেছেন: দুর্নীতি আছে নানাবিধ বিষয়ে নানা কিসিমের তবে গাড়ি নিয়ে রচনা এই প্রথম পড়লাম । ডিজিটালএর নামে একটা রাষ্ট্র পর্যন্ত গায়েব করে দিতে পারে এরা ।
মারহাবা !
১৬ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৯:১৮
শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক বলেছেন আমরাতো কোন ছাড়!! আমি এই ফ্যাসাদে না পড়লে কোনদিন হয়তো জানতামও না এমন একটা চক্রের খেলা।
পত্রিকায় পড়ি ' ইয়াবা ফেন্সিডিল সহ প্রাইভেট কার আটক' ছিনতাই করতে গিয়ে গাড়ি সহ ছিনতাইকারীকে পাকড়াও। পড়ে খুশী হই বেশ। কিন্তু কিভাবে কোথায় ভাল মানুষ ফেঁসে যায় ভাবিনি কখনো!!!!
ধন্যবাদ ভাই- ভাল থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।
৭| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:৪৪
প্রামানিক বলেছেন: নতুন কিছু পড়লাম।
১৬ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৮
শেরজা তপন বলেছেন: অনেক অনেক দিন বাদে আমার ব্লগ বাড়িতে আপনাকে পেলাম প্রামানিক ভাই। খুব ভালো লাগছে। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন ব্লগের সাথে থাকুন।
৮| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৩৯
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: নীচ থেকে উপর অবদি সবটাই পড়লাম।
১৬ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৯
শেরজা তপন বলেছেন: বেশ বেশ তাও তো পড়েছেন!! আপনার সবকিছু একটুখানি উল্টাপাল্টা
৯| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:১১
ঢাবিয়ান বলেছেন: আমার এখানে গাড়ির মেয়াদ সর্বোচ্চ দশ বছর। এরপর গাড়ী ফেলে দিতে হয়, কন্ডিশন যতই ভাল হউক না কেন। দেশেতো পুরান গারী ইচ্ছা করলেই বিক্রি করা যায় । এতকাল এটা ভেবে বড়ই কষ্ট পেতাম। কিন্ত আপনার অভিজ্ঞতা পড়ে মনে হল, বিক্রি করতে গিয়ে যদি এত বিপদে পড়তে হয়, তার চেয়ে ফেলে দেয়াই ঢের ভাল
১৬ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৩
শেরজা তপন বলেছেন: তাও আমি অনেক সৌভাগ্যবান যে জেল খাটতে হয়নি। কত মানুষ এভাবে গাড়ি বিক্রি করে বিনা অপরাধে জেল খাটছে- তাদের কথা ভেবেই ভয়ানক আতঙ্কিত হয়ে পড়ি বড় বাঁচা বেঁচে গেছি! আপনার দশ বছর ব্যবহৃত গাড়ি এদেশে আনতে ট্যাক্স দিতে হবে ২০/৫০ লক্ষ টাকা!! সরকার শুধু খাই খাই করছে কোন ভাবেই তার পেট ভরে না।
১০| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:৫০
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সময় নিয়ে আবার আসতে হবে। আপাতত মিডিয়া খোঁড়া রহমানের জালে যেতেই ধরা দিলাম পর্যন্ত এলাম।
১৬ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৮:৫৭
শেরজা তপন বলেছেন: আপনাকে জাদিদ ভাইয়ের সাথে দেকে আমোদিত হইলাম- পাশাপাশি একটু হিংসাও হইল; আপনার সেইরকম আতিথিয়েতা তিনি একা ভোগ করলেন বলে।
আসবেন ফের- পুরো লেখা পড়ে আপনার মন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম।।
১১| ১৬ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৩:০৩
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
লেখাটা পড়লাম।
আমিও আমার পুরান গাড়ি বদলেছিলাম।
আরেকটা পুরান গাড়ি মোটামুটি ভালো মানের কিনেছিলাম। একটা একটা গাড়ি বেচাকেনা ডিলার থেকে। সেই ডিলারের কাছেই বেঁচে দিয়েছি। ঝামেলা হয়নি।
তবে আপনার শিরোনামটা আপত্তিকর।
আপনার নামে আপনার গাড়ি দিয়ে দিলেন একটা কথা হল কেন?
ইন্সুরেন্স বাদে গাড়ি চালিয়ে এক্সিডেন্ট করলে এটা ক্ষতিপুরন কে দেবে? ডাকাতি করলে ডাকাতির দায় আপনি নিবেন?
এত বড় নিজের ভুল করে আপনার জন্মভূমিকে গালাগালি করবেন এটা কেমন কথা?
গাড়ি কিনলে আগামটাক্স নিচ্ছে এটা কোন ভাল সিস্টেম নয় আমিও জানি।
কি করবেন সতের কোটি মানুষের দেশে আয়কর দেয় মাত্র গুটি কয়েক লাখ। তাই যারা গাড়ি বাড়ি কিনছে তাদের অন্তত কিছু টাকা আছে ধরে নিয়ে সরকার একটা ট্যাক্স ধার্য করে। আপনি গাড়ি হাকাবেন কিন্তু সরকারকে দু চার টাকা ট্যাক্স দিবেন না এটা তো হয় না।
১৬ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৮:৫৪
শেরজা তপন বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য হাসান ভাই।
আপনার মন্তব্যগুলো বড্ড বেশী একপেশে হয়। দেশের প্রতি আপনার যে ভাব ভালবাসা অনুরাগ সেটা শুধু মাত্র বিশেষ একটা দলের অন্ধ সাপোর্ট বা আনুগত্য। কাল অন্য একটা দল আসলে আপনার কথার পুরো সুর পালটে যেতে বাধ্য। আমি ওভাবে গাড়ি বিক্রি করে হয়তো ভুল করেছি কিন্তু তারপরের ঘটনাগুলো পুরো সিস্টেমের দোষ বা ফাঁক ফোকরের জন্য ঘটেছে।। আর এই সিস্টেমের ভুলের জন্যই সব গালি দেশের ঘাড়ে গিয়ে চাপে। দেশতো আসলে কারো আগেও নাই পেছনেও নাই- আমাদের শাসকেরাই দেশকে খারাপ বা ভাল হিসেবে রিপ্রেজেন্ট করে- তবে খারাপ হলে পুরো দায়টা এসে চাপে দেশের জনগনের উপরে।
আসুন এখানে দেখি সিস্টেম বা আমাদের সরকারী আইনে কোথায় কোন ফাঁক ফোকর আছে;
১। বি আর টি এর অনুমতি ছাড়া স্ট্যাম্পের মাধ্যমে গাড়ি বেচা কেনা অবৈধ হওয়া উচিৎ। এখানে বি আর টি এর নির্দিষ্ট ফর্মে গাড়ি হস্তান্তর করতে হবে। জমির যেমন সেলস পার্মিশন।
২। আমার গাড়িটা বিনা ফিটনেস রুট পার্মিট ও ইন্সুরেন্স ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে তারা কেমনে চালাচ্ছে? আপনি কি মনে করেন এখানে সিস্টেমের কোন ফাঁক নেই?
৩। আমি আর্জি নিয়ে গেলাম ডিবির কাছে তারা বলল এটা পুলিশের কেস। পুলিশের কাছে গিয়ে জিডি করে বললাম, ব্যাবস্থা নেন। তারা বলল এটা বি আর টি এর কাজ। এই জিডির কপি নিয়ে ওদের দেখান ওরা ব্যাবস্থা নিবে। আমি বিয়ার টি এর ইডি'র কাছে গিয়ে সবিস্তারে বললাম। তিনি বললেন, আমাদের কিছুই করার নাই। করব কেন ট্যাক্সটাতো বছর বছর পাচ্ছি। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কারো গাড়ি যদি চিরতরে হারিয়ে ফেলে তাঁকে কি এইভাবে আজীবন এ আইটি দিয়ে যেতে হবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ দিতে হবে অন্য কোন রাস্তা নেই।
আমি বললাম, যে কোন উপায়ে সেটার নিবন্ধন বাতিল করে দেন।
তিনি বললেন, এমন কোন সিস্টেম নাই। আগে ছিল। অটো এ আই টিতে জেনারেট হবার পরে সেটা বাতিল হয়ে গেছে।
কিন্তু ঠিকই আমি ঘুষ দিইয়ে পুরো কাজটা করে ফেললাম এক দিনে।
আমি সমস্যাটা নিয়ে কোথায় যাইনি, উত্তরার কমিশনাত থেকে বড় আর্মি অফিসার পর্যন্ত। কেউ কিস্যু করতে পারেনি। এটা কি আইনের দুর্বলতা নয়?
৪। এ আই টি অর্থ হল অগ্রীম আয়কর। আমি গাড়ির বাৎসরিক ট্যাক্স দিচ্ছি, ফিটনেস রোড পারমিটের টাকা দিচ্ছি, ইন্সুরেন্স করাচ্ছি ফের অগ্রীম আয়করও দিতে হবে। বাহ হাসান ভাই বাহ।গাড়িতো আমি সখ করে প্রমোদ ভ্রমণের জন্য রেখেছি। সরকার মায়-বাপ। মনে চাইলে আমাকে শুদ্ধ আম্র গাড়ি নিয়ে ইয়ো ইয়ো খেলতে পারে যখন তখন।
এরকম অন্ধভাবে দলীয় সাপোর্ট করে কারো হাসির পাত্র না হয়ে সাধারনের কাতারে আসুন দেখুন। অল্প কিছু ভালোর পাশাপাশি কি ভয়ঙ্কর দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছি আমরা। কিভাবে সরকারী চাকুরিজীবির সার্টিফিকেটধারী সন্ত্রাসীরা দেশের আপামোর মানুষকে লুটেপুটে খাচ্ছে- পিষে মারছে ছাড়পোকা তেলাপোকার মত।
১২| ১৬ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৯:২৭
সোহানী বলেছেন: ও মাই গড!!!!!!!!!!! এ কি অবস্থা আপনার।
নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: একটা হরর কাহিনী পড়লাম মনে হলো !!!
আসলেই হরর কাহিনী। দেশে দালাল চক্রের ধান্ধা সব সময়ই ছিল কিন্তু লিখা পড়ে মনে হচ্ছে এখন দোজক!!!
আপনি এত ঝক্কি ঝামেলা মাথায় নিয়ে এতো সুন্দর সুন্দর লিখা উপহার দিচ্ছেন .................. শেরজা ভাই, আপনি আসলেই জাত লেখক
১৬ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:২৬
শেরজা তপন বলেছেন: এমন চমৎকার মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ আপু। আপনার মন্তব্য পড়ে নিজেকে বড় মাপের কেউকেটা ব্লগার ভাবতে ইচ্ছে করছে
এমন ভয়াবহ দুঃস্বপ্নের মতো দুঃসময় আমার জীবনে বারবার এসেছে কখনো সময় সুযোগ পেলে আমার লিন্কের সিরিজটা পড়বেন।আশা করি তখন মনে হবে সেই সমস্যাগুলোর কাছে এটা কিছুই না;
কাগদা তো-ভ রাশিয়া ( once upon a time in Russia)
১৩| ১৬ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:৪৪
সেতু আমিন বলেছেন: আপনার করুণ কাহিনী পড়ে হাসি থামাতে পারছি না।
১৬ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৪
শেরজা তপন বলেছেন: খুব ভালো হাসতে থাকুন -আপনার মতই এমন বন্ধু ব্লগার প্রয়োজন।
১৪| ১৬ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:০৩
অপু তানভীর বলেছেন: বড়লোকের বড় বড় সমস্যা । আমার দৌড় সাইকেল পর্যন্ত । বড় ভাইয়ের একটা বাইক রয়েছে ।
১৬ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৩
শেরজা তপন বলেছেন: বয়স বাড়িবে আপনিও একদিন আমার মত ব্যাফক বড়লোক হইবেন। তারপরে যাপিত জীবনের গ্যাড়াকলে পড়িয়া এমনধারার সমস্যার মোকাবেলা করিবেন-বুঝবেন ঠ্যালা!!
তবে বিবাহ না করিয়া সন্যাস গ্রহণ করিলে ঝামেলা নাই। উর্ধাঙ্গে ছাই মাখিয়া নেংটি পরিয়া খোশ খুশাল মে জীবন কাটিবে
১৫| ১৬ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম।
কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।
১৬ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৪:৩০
শেরজা তপন বলেছেন: ট্রিপিক্যাল রাজিব নুর স্টাইল।
১৬| ১৬ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৪:২৪
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমিও বেশ আগে গাড়ি বিক্রির পরে চিন্তায় ছিলাম ক্রেতা যদি তার নামে গাড়ির মালিকানা বদল না করে আমি বিপদে পড়তে পারি বিভিন্ন। কারণে তবে সেই ক্রেতা দেরী করেনি। আপনার ভালোই ভোগান্তি হয়েছে দেখা যাচ্ছে।
একজন গাড়ি ব্যবসায়ী বললেন যে অনেক গাড়ির নামে চোরাকারবারীর মামলা থাকে। নতুন ক্রেতা বিপদে পড়ে যায় গাড়ি কেনার পরে। তাই কোন সূত্র ছাড়া গাড়ি কিনতে গেলেও ঝুকি আছে।
১৬ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৪:৩২
শেরজা তপন বলেছেন: আপনি ঠিকই বলেছেন অনেক গাড়ির নামই বিভিন্ন ধরনের মামলা থাকে। তারা কোন কিছু না বলে গাড়ি বিক্রি করে দিয়ে পরের মালিককে ফাসিয়ে দেয়।
সরাসরি ক্রেতার কাছে গাড়ি বিক্রি করলে এই ঝামেলা হয় না কিন্তু দালালের কাছে বিক্রি করলে এরকম সমস্যায় পড়তে হয়। যাই হোক আপনার ভাগ্য সুপ্রসন্ন।
মন্তব্যে আসার জন্য ধন্যবাদ।
১৭| ১৬ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৩
করুণাধারা বলেছেন: এই দুঃখের কাহিনী পড়ে কখনো হাসিও পেয়েছে, যেমন "রুদ্ধদ্বার বৈঠকের" বাস্তব উদাহরণ, দালালকে মিডিয়া বলার চল ইত্যাদি। লেখার স্টাইল এমন হাসি খুশি না হলে এতো বড় লেখা পড়ে শেষ করতে পারতাম কিনা জানিনা!!
এডভান্স ইনকাম ট্যাক্স নিয়ে আরেকটু বলতে পারতেন... এর খপ্পরে পড়ে অন্তত দুটি পরিবারকে তাদের পুরনো গাড়ি বিক্রি করে দিতে দেখেছি। অন্তত আমাদের ঢাকা শহরে গাড়ি কোন বিলাসপন্য না, এখানে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এত ঝুঁকিপূর্ণ এবং দুর্লভ যে অনেকেই সংসারের অন্যান্য খরচ কাটছাঁট করে একটি গাড়ি রেখেছিল নিতান্তই প্রয়োজনে। যেমন একটি গাড়ির অধিকারী ছিলেন বয়স জনিত রোগে আক্রান্ত দুজন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা যাদের জন্য গাড়ি অতি প্রয়োজনীয় ছিল। আরেকটি গাড়িও অতি প্রয়োজনীয় হওয়ায় রেখে দেয়া ছিল... দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বাড়ি ভাড়া ইত্যাদিতে নাভিশ্বাস ওঠা পরিবার দুটি অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্সের চাপে পড়ে অবশেষে গাড়ি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে এবং অনেক অসুবিধার মধ্যে পড়েছে।
আমার একটা জিনিস বুঝে আসে না; প্রাইভেটগাড়ির কেন AIT থাকবে। AIT মানে অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স। কেনরে ভাই কি জন্য এই ভয়ংকর নিষ্পেষণ; কেউ কি সদুত্তর দিতে পারেন?
ভালো প্রশ্ন করেছেন। হাসান কালবৈশাখী নিশ্চয়ই সদুত্তর দিতে পারেন!! অপেক্ষায় রইলাম তার উত্তর পাবার।
এই নিয়ে আহমেদ জী এস পোস্ট দিয়েছিলেন আগে।
আপনার পোস্ট আমার জন্য বেশ উপকারী হয়েছে। একজন সম্ভাব্য গাড়ি বিক্রেতাকে আমি আপনার অভিজ্ঞতা বলে গাড়ি বিক্রি করার সময় সাবধান হতে বলায় তিনি বললেন, "এই দেশে যে এমনভাবে গাড়ি
বিক্রি করে, সেতো খুব সরলপ্রান বলে মনে হয়।" আসল বাক্যটা অবশ্য আমি রিফ্রেজ করে লিখলাম।
১৭ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:০৪
শেরজা তপন বলেছেন: আমি বুঝেছি আপু উনি কি বলেছেন । আমি আসলেই একটা ..দাই। মানুষকে সরলপ্রাণে বিশ্বাস করে বারবার ঠকেছি। কিছু মানুষতো আসলে ম্যাজিক মায়াজাল এক্সপ্রেশন ও চতুরতায় মানুষকে ..দাই বানাতে চায়। আর আমাদের মত মানুষ সজেই তাদের জালে ধরা দেয়।
তবে এখানে একটা লাভ হচ্ছে; ভয়ঙ্কর কিছু ঘটনার সম্মুখীন হতে অভিজ্ঞতার ঝুলি ভরছে। এমন ঘটনার সম্মুখীন না হলে আপনাদের সাথে ইন্টার্যাকশন এভাবে হোতনা।
আমার মনে হয় একসময় আমি খুব বেশী সরল ও বোকা টাইপের মানুষ ছিলাম। বাইরের লোকতো বটেই- আমার ক্লায়েন্ট থেকে কর্মচারীরা বিভিন্ন অজুহাতে আমাকে বোকা বানাতো। ধীরে ধীরে আমি মানুষকে অবিশ্বাস করা শুরু করলাম। ইচ্ছের বিরুদ্ধেও নিঃশ্বংস হতে শুরু করলাম। সেকারনে অনেকেই এখন আমাকে অপছন্দ করে। তারপরেও ভুল করছি প্রতিনিয়ত ভুল হচ্ছে আর ধরা খাচ্ছি।
AIT একটা ভয়ঙ্কর ফাঁদ। রাষ্ট্র কিভাবে অযথাই তাঁর নাগরিকদের চুষে খাচ্ছে এর বড় একটা উদাহরণ গাড়ির বাৎসরিক AIT. এমনিতেই ভারতে যা গাড়ি বিক্রি হয় ৮ লক্ষ টাকায় সরকার তাঁর ট্যাক্স নেয় ২৫ লক্ষ টাকা। রাস্তা দিতে পারবে না, সড়কের নিরাপত্তা দিতে পারবে না কিন্তু ফি বছর ট্যাক্স বাড়াবে।অথচ সারা দেশের অলি গলি রাজপথ দাবড়ে বেড়াচ্ছে অটো রিক্সা আর করিমন নছিমন- যাদের কাছ থেকে সরকারী কোষাগারে চার আনা পয়সাও যোগ হয় না। ওই যে বলে না 'ভাত দেবার মুরোদ নেই কিল মারার গোঁসাই
এই নিয়ে কিছু বলতে গেলেই সবাই বলে, গাড়ি চালায় বড়লোকেরা তারা টাকা দেবেনা দেবে কারা। ভাব যে মানুষ বড়লোক হয় সরকারের দয়া দাক্ষিন্য নিয়ে- তথাকতিথ গাড়ির মালিক বড়লোকদের চুষলে কোন দোষ নেই!! সবধরনের ব্যাবসায়িক লাইসেন্স থেকে ভ্যাট ট্যাক্স সর্বত্র! কাউকে কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। ব্যাবসায়িরা ভয়ঙ্করভাবে শোষিত হচ্ছে। এই গোলকধাঁধা আর নিষ্পেষনে নতুন কোন সৃষ্টিশীল এন্টারপ্রেইনার সৃষ্টি হচ্ছে না।
কালবৈশাখী মন্তব্য করেছেন। এভাবে AIT নেয়ায় উনি বেশ খুশী সম্ভবত।
অনেক ধন্যবাদ আপু আপয়ার সুদীর্ঘ চমৎকার মন্তব্যের জন্য। আপনার কথা মাথায় রেখে AIT নিয়ে লিখব একদিন।
১৮| ১৬ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪২
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: ভাইরে ভাই! কি কঠিন অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গিয়েছেন আপনি!
সত্যিই দেশটা এখনো ভালো মানুষের দেশ হয়ে উঠতে পারেনি।
আপনার লেখাটা অনেককে সতর্ক হতে সহায়তা করবে।
আমরা যারা নতুন মোবাইল কেনার পর পুরাতন মোবাইল সেট বিক্রি করে দেই কিংবা সেট হারিয়ে গেলেও কিন্তু অনেক ঝক্কি হতে পারে।
১৭ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:১৯
শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক বলেছেন- পুরাতন মোবাইল সেট বিক্রি করে কিংবা কিনলেও অনেক ঝক্কি হতে পারা। আমার এক পরিচিত এমন একটা মোবাইল সেট কিনে জেল খাটছে। মোবাইলটি ছিল ছিনতাই এর, যার মোবাইল তিনি আবার ছিনতাইয়ের সময়ে ছুরিকাহত হয়ে খুন হয়েছিলেন। বুঝেন ঠ্যালা!!
আমার লেখা পড়ে দু'চারজনও যদি সতর্ক হয় তবেই কষ্টের খানিকটা সার্থকতা মিলবে।
ধন্যবাদ সুপ্রিয় ব্লগার। ভাল থাকবেন।
১৯| ১৬ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৬
শায়মা বলেছেন: হা হা রে আহারে!!
আমাদের লাল একটা স্টারলেট বিক্রির ১০ বছর পর যেই বেটা গাড়িটা কিনেছিলো সেই বেটা নাম পরিবর্তন করতে আসলো। কারণ তিনি আর সেই গাড়ি বিক্রি করতে পারছেন না। ১০ বছর ধরে ভাগ্যক্রমে সেই গাড়ি দিয়ে ডাকাতি হ্যাইজাকিং হয়নি। তবে জেনেছিলাম কারণ নাম পরিবর্তনের সময় পুরান মালিকের সাইন লাগে।
আরেকবার একটা গাড়ি নিজেই হাইজ্যাক হয়ে গেছিলো। সেই গাড়ির হদিস জন্মে আর পাইনি।
পুরানো গাড়ি কেনা এবং বেঁচা দুই ই ভয়ংকর ইন বাংলাদেশ।
বাড়িরও একই ঝামেলা।
১৭ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:২২
শেরজা তপন বলেছেন: কি বললেন দশ বছর পরে আসছে!! ওই ব্যাটারে বাইধ্যা পেটানো দরকার ছিল। ভাগ্যিস তখন আপনার ডিজিটাল TIN ছিল না। না হলে দশ বছরের AIT দিয়ে আরেকখানা স্টারলেট কেনা যেত।
ফের হাইজ্যাক হয়ে আরেকখানা!! আপনারও দেখি গাড়ি নিয়ে ঝক্কি কম হয়নি।।
বাংলাদেশে কোনটা ভয়ঙ্কর নয় সেটা উদ্ধার করা কষ্ট। সবখানেই আপনি ফেঁসে যেতে পারেন।
২০| ১৭ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৪৯
আহমেদ জী এস বলেছেন: শেরজা তপন,
জব্বর অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন। আসলে গাড়ী পালা আর হাতী পালা সমান কথা।
আমিও বুঝিনা, প্রাইভেট গাড়ির কেন অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স থাকবে !!!!! সহ ব্লগার করুণাধারা ঠিকই বলেছেন, অন্তত আমাদের ঢাকা শহরে গাড়ি কোন বিলাসপন্য নয়, এখানে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এত ঝুঁকিপূর্ণ এবং দুর্লভ যে প্রাইভেট গাড়ীর কোনও বিকল্প নেই ।
এমন কথা আমিও লিখেছিলুম, লিখেছিলুম আপনার "অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স" নিয়েও আমার এই পোস্টে ---মহাবেকুব জাতক কথন - ছয়
লেখাটি আপনার পোস্টের সম্পুরক হতে পারে বলে বিশ্বাস।
১৭ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:৪২
শেরজা তপন বলেছেন: আমি ওখানে একবার মন্তব্য করেছিলাম। তবুও ফের পড়লাম। নিশ্চিতভাবে এটা আমার লেখার সম্পুরক লেখা হতে পারে।
আয়কর দাতাকে ধরতে পারছে না বলে গাড়ি থেকে অগ্রীম আয়কর নিচ্ছে, বেশ ওদিকে ভ্যাটদাতাদের ধরতে পারছে না দেখে উৎপাদনকারীর থেকে অগ্রীম ১৫% ভ্যাট নিচ্ছে- বলা হয় আপনি যেসব কাচামাল কিনেছেন সেগুলোর ভ্যাটের রশিদ দেখান তবে ভ্যাট রেয়াত পাবেন। এপেক্সের মত ট্যানারি চামড়া কিনলে ভ্যাটের রশিদ দেয় না, তাহলে যদু মদু কেমনে দিবে?? কারো কাছে ভ্যাটের রশিদ চাইলে কয় ফুটেন, আপনার কেনা লাগবে না।
শুধু ভ্যাট অফিসারেরা যে পরিমান ঘুষ নেয় সেটা পুরো বাজেটের বিশ ভাগের কম নয়!!!!
কি এক ভয়ঙ্কর রাষ্টীয় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চলছে দেশ জুড়ে- আমাদের প্রতিবাদের ভাষা নেই, বলার কোন জায়গা নেই।
এ দেশের নিন্মমধ্যবিত্ত একজন নাগরিক শুধু একান্ত প্রয়োজনে একটা গাড়ি চালাতে গেলেও বছরে ৫০ হাজার টাকা সরকারকে দিতে হবে, হোক সেটা এক লাখ টাকার গাড়ি!!!!
এ বছর ফের রোড ট্যাক্স আর ফিটনেসের টাকা বাড়িয়েছে। আহা কি মধুর কথা।
* অনুমতি না নিয়ে আপনার লেখাটা সম্পুরক হিসেবে যোগ করে দিলাম।
২১| ১৮ ই জুলাই, ২০২৩ ভোর ৫:৫৪
সোহানী বলেছেন: পড়েছি সবগুলো এক সাথে। আর ভাষাহারা হলাম...................।
মন্তব্য রেখে এসেছি শেষ পর্বে।
১৮ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৭:৪৪
শেরজা তপন বলেছেন: ওটা শেষ পর্ব নয় আপু। রাশিয়ায় আমার দুর্ভাগ্যের খন্ডচিত্র নীতির। পরের পর্বগুলোর লিংক শেয়ার করা হয়নি। আমি প্রতি মন্তব্য করেছি। দেখবেন।
২২| ১৯ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১:২১
মুক্তা নীল বলেছেন:
আপনার পোস্টটা পড়ে একটা কথা না বললেই নয় এবং সেটা হচ্ছে আপনার অভিজ্ঞতার সমব্যথী একজন আছেন যিনি হচ্ছেন আমার বাবা । তিনিও যথেষ্ট ভুক্তভোগী হয়েছেন আপনার মতোই । তিনিও দালালের দ্বারাই উদ্ধার হয়েছিলেন । আসলে দালালরা মাঝেমধ্যে আমাদের জীবনে আশীর্বাদ হয়ে আসে কিছু কিছু ক্ষেত্রে।
১৯ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ৯:১৯
শেরজা তপন বলেছেন: যাক একজনকে অন্তত পাওয়া গেল অবশেষে যে আমার মত বোকামি করে ভয়াবহ এক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে অবশেষে উদ্ধার পেয়েছেন!
এদেশের প্রেক্ষাপটে কিছু দালাল অবশ্যই আমাদের জন্য আশির্বাদ হয়ে আসে। ভাল বলেছেন।
মন্তব্যের জন্য ধন্য্যবাদ- ভাল থাকুন সুপ্রিয় বগার।
২৩| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৫৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: শেরজা তপন,
কৃতজ্ঞতা জানুন, আমার লেখাটির লিংক আপনার মূল লেখাতে যুক্ত করার জন্যে।
২১ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:০১
শেরজা তপন বলেছেন: আপনার একটা লেখার লিঙ্ক আমার লেখার সাথে যুক্ত করে নিজের লেখার ওজন বাড়িয়েছি বেশ অনেকখানি।
আমি কৃতার্থ যে, আপনি সানন্দে মেনে নিয়েছেন সেজন্য।
অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১৫
কামাল১৮ বলেছেন: এসে ছিলাম রেখে গেলাম চিহ্ন।