নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে মনে হয় জীবনটা অন্যরকম হবার কথা ছিল!

শেরজা তপন

অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...

শেরজা তপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অসমাপ্ত পাণ্ডুলিপি~২

১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৮


সে দৌড়াচ্ছে উর্দ্ধশ্বাসে-বৃষ্টিভেজা পিচ্ছিল জমির আইল বেয়ে ছুটে যাচ্ছে সে। কখনো পা হড়কে কাদামাটিতে গড়াগড়ি খেয়ে আছড়ে পড়ছে কেটে নেয়া ধানের শক্ত ধারালো খড়ের জমির উপর। কোনমতে হাচড়ে পাঁচড়ে উঠেই ফের দৌড়াচ্ছে সে। পায়ের সেন্ডেলজোড়া কাদায় আটকে ছিড়ে গেছে। কচি শরিরের এখানে ওখানে ছড়ে গিয়ে-কাদায় রক্ত মিশে অন্য এক রঙ ধারন করেছে। সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই তার! প্রাণ বাঁচাতে তার এই ছুটে চলা। পিছনে ছুটে আসছে রক্ত মাংসের মানুষরুপী একদল হায়েনা!ছেলেটার বুকের কাছে আঁকড়ে ধরা কিছু একটা- দুর থেকে ঠাহর হয় না। হয়তো ভাঙ্গা একটা তালা- কিংবা বহু পুরনো অচল হয়ে যাওয়া একটা টেবিল ঘড়ি!পিছনের মানুষগুলি পণ করেছে আজকে ওকে মেরেই ফেলবে-ধর ধর বলে ভয়ঙ্কর রব তুলে তারা ছুটছে ওর পিছু পিছু।
তের-চৌদ্দ বছররে কিশোর সেই ছেলেটা মৃত্যু ভয়ে ভীষনভাবে শংকিত!মানুষের নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার সাথে জন্মলগ্ন থেকেই পরিচিত। সে বিস্মিত নয় হতবাক নয়- নিঃশ্বাসে তার আগুনের হলকা-ছোট্ট বুকের ছাতিটা যেন ফেটে যেতে চাইছে।
কোনমতে দৌড়ে সে খাল পাড়ে এসে দাড়ালো। চকিতে পিছন ফিরে একবার দেখে নিল তার দিকে ধেয়ে আসা মৃত্যু পরোয়ানা হাতে সেই মানুষগুলোর দিকে।আর মাত্র কয়েক গজ –ওরা কোন মতে নাগাল পেলেই তার কৃষ ছোট্ট শরিরটাকে তুলে আছড়ে পিটিয়ে কুপিয়ে ভবলীলা সাঙ্গ করে দিবে।
সামনেই ভরা বর্ষার যৌবনবতী খাল। মুল পদ্মার সাথে সংযুক্ত এই খালে যেন পদ্মার-ই আদিম উন্মত্ততা। কি ভীষন স্রোত- সেই স্রোতের শব্দ শোনা যায় বহুদুর অব্দি।কোন কিছু না ভেবে বাঁচার তাড়নায় সে ঝাপিয় পড়ল সেই খালে।
তারপর ... না। সে দক্ষ সাতারু!খালের স্রোত তার হ্যাংলা শরিরটাকে বহুদুর টেনে নিয়ে গেলেও সে ঠিক-ই এপাড়ে এসে পৌছুতে পেরেছিল।আর সেই মানুষগুলোর বিরত্ব সেখানেই শেষ!শুধু পাড় থেকে খিস্তি-খেউড় করে আর ঢিল ছুড়ে তাদের বাকি ক্ষোভ ও আক্রোশটুকু মেটাল।
***
যাকে নিয়ে এই গল্প সেই কিশরের জন্মটা হয়েছিল খানিক অবহেলায়। স্বাধীনতার অল্প ক’দিন পরেই সে তার মায়ের গর্ভে আসে। তখন তাদের ভেঙ্গে যাওয়া ব্যবসা আর পুড়ে যাওয়া বাড়ির সাথে পুরোপুরি নতুন করে সংসার গোছানোর পালা। কপর্দকশুন্য দিশেহারা বাবার তার মেজাজ সারাক্ষন সপ্তমে চড়ে থাকে। এটা ওটা বেচে,এদিক ওদিক থেকে ধার করে কোনমতে সে সংসার আর ব্যবসায় জোড়াতালি দেবার চেষ্টা চালাচ্ছে। মায়ের তখন সামান্যক্ষন অবসর নেবার সময় নেই-ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা সব উচ্ছন্নে গেছে। লুট হয়ে গেছে তার অতি যত্নে গুছিয়ে রাখা সামান্য সম্বল আর গয়নাগাটি।ঘটি নেই বাটি নেই গেলাস থালা কিচ্ছু নেই-নতুন করে ঘর সে গোছাবে ক্যামন?
দুর্বল শরিরে কাজ করতে গিয়ে হাঁপিয়ে ওঠে সে- পেটের সন্তানটাকে অভিসম্পাত দেয় সে তখন। কেন যে এই দুঃসময়ে পেটে এসেছিল!এটা কোনমতে পেট থেকে বের হলেই সে বাঁচে। গর্ভপাত হলে কিংবা ভ্রুনটা নষ্ট হয় গেলে তিনি হয়তো অখুশী হতেন না।
দো-চালা স্যাতস্যাতে বাঁশের বেড়ায় ছাওয়া ঘরে তার জন্ম। সময়ের আগে যথারীতি অপুষ্ট সন্তান তার।তবুও ছোট্ট এতটুকুন ন্যাকড়ায় জড়ানো সেই কচি ছেলেটার চাঁদমুখ দেখে তার মায়ের মন তৃপ্ত হয়।
তারপর চল্লিশ দিনের আতুড়ঘর!মায়ের সময় নেই সেই আতুড়ঘরে সন্তানের যত্ন-আত্মির।বারো আর নয় বছরের কিশোরী দুটো বোন তাদের অপটু হাতে সারাক্ষন তাকে আগলে আগলে রাখার চেষ্টা করে।বড় তিনটে ভাইয়ের একজনের বয়স ছ’বছর হলেও এখনো সে হাটতে পারেনা। সারাক্ষন সে হামাগুড়ি দিয় চলে আর বড় বড় চোখ তুলে অসহায়ের মত তাকিয়ে থাক সবার দিকে একটু আদর আর ভালবাসার আশায়।আর একজনের বয়স মাত্র তিন। সদ্য সমাপ্ত যুদ্ধ যদিও তার বয়স বাড়িয়ে দিয়েছে খানিকটা তবুও সে মায়ের কোলের কাছে ঘুর ঘুর করে তার একটু সান্নধ্যি পাবার আশায়।
সদ্য সমাপ্ত এক যুদ্ধ ভীষন ভাবে পাল্টে দিয়ে গেছে পুরো এই দেশটাকে। ধ্বংস স্তুপ থেকে ফের মাথা তুলে উঠে দাড়াবার চেষ্টা করছে পুরো বাংলাদেশ নামের ছোট্ট ভুখন্ডের মানুষগুলো।কোনমতে শোক কাটিয়ে এখন তকরা ছুটছে জীবন জীবিকার তাগিদে উদ্ধ‍‌শ্বাসে! চাকুরি নেই-বসতবাড়ি পুড়ে গেছে লুট হয়েছে , ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিঃশ্চিহ্ন! কারো ভাইয়ের শোক কারো সন্তানের কারো মা-বাবার কিংবা কারো পুরো পরিবারের। কেউবা কিচ্ছু হারায়নি কিন্তু পুরো নিঃস্ব রিক্ত হয়ে গেছে। আপনজনের মৃত্যুর ধকল কাটিয়ে রমণীরা ব্যাস্ত নতুন করে সংসার গোছানোর কাছে- আর পুরুষেরা জীবিকার তাগিদে।
মানুষ খানিকটা নিঃস্বংশ হয়ে গেছে, হয়ে গেছে আত্ম কেন্দ্রিক স্বার্থপর। মানবিকতা লোপ পেয়েছে অনেকখানি। একটি নিরিহ, আত্মজ বন্ধু আর অতিথি অন্তপ্রান জাতি মাত্র বছরখানেকের ব্যাবধানে কতটা পাল্টে যেতে পারে সেটা সচক্ষে না দেখলে অনুধাবন করা অসম্ভব!

***
Piano Man | by Billy Joel

It's nine o'clock on a Saturday
The regular crowd shuffles in
There's an old man sittin' next to me
Makin' love to his tonic and gin
He says, "Son can you play me a memory?
I'm not really sure how it goes
But it's sad and it's sweet and I knew it complete
When I wore a younger man's clothes"

Sing us a song you're the piano man
Sing us a song tonight
Well we're all in the mood for a melody
And you've got us feeling alright

He says, "Bill, I believe this is killing me"
As a smile ran away from his face
"Well, I'm sure that I could be a movie star
If I could get out of this place"

And the waitress is practicing politics
As the businessmen slowly get stoned
Yes they're sharing a drink they call loneliness
But it's better than drinking alone…

For his departed soul - This single song he most listened in his abroad life.

অসমাপ্ত পাণ্ডুলিপি ~১

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৩

ঢাবিয়ান বলেছেন: এখনো কত মা ও শিশুরা এভাবে ধুকছে সারা পৃৃঠীবি জুড়ে। জীবন বড় নির্মম

১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৯

শেরজা তপন বলেছেন: প্রথম মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ!
(আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে এটা আমার ভবিষ্যতে লেখার ইচ্ছে থাকা উপন্যাসের একটা খণ্ডিত অংশমাত্র। যদি লিখে যাবার সময় না পাই আর তাই এইকটুখানি স্মৃতিকথা রেখে যেতে চাইছি তাদের। মুলত এই নিয়ে আমার ওসমাপ্ত পাণ্ডুলিপি সিরিজ।)
সহমত আপনার সাথে। ভাল থাকুন।

২| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ৮:২১

হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: আর যারা তীরে উঠতে না পারা কেউ কেউ সেই খালের তীব্র স্রোতে ভেসে গেলো তাঁদের কথাও আসবে কি?

১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ৮:২৮

শেরজা তপন বলেছেন: এ কাহিনী সত্য ঘটনা অবলম্বনে! এখানে গল্প বানানোর কোন সুযোগ নেই।
এই মানুষটার জীবনে চরম উত্থান পতন জড়িত ছিল। মাঝ যৌবনে সে বিশ্বের অন্যতম উন্নত দেশে সে কপর্দক শুণ্য হয়ে মৃত্যুবরন করে।

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ৮:৪৭

শায়মা বলেছেন: কি কষ্ট সে সব জীবনে।

আর অল্প কষ্টে আমরা কাতর হই।

আসলে কষ্ট এক এক রূপে আসে এক এক জীবনে। :(

১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৮:২৭

শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক বলেছেন আমরা অল্প কষ্টতেই কেঁদে কেটে অস্থির হয়ে যাই।
মনের হয় আমার মত এমন কষ্ট দুনিয়াতে আর কেউ পায় নাই। :(

এক জীবনেরই কত রূপ- আর বহুজনের বহুরূপে জীবনতো ধরা দিবেই।
সবাই ভাল থাকুক। শুভকামনা আপনাকে

৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ৯:১০

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:


তের-চৌদ্দ বছররে কিশোর সেই ছেলেটা মৃত্যু ভয়ে ভীষনভাবে শংকিত!মানুষের নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার সাথে জন্মলগ্ন থেকেই পরিচিত
দারিদ্র্যের মধ্যে জন্ম নেয়া এরপর
ধাওয়া থেকে বেঁচে যাওয়া কিশোর সেই ছেলেটা বর্ননা সুন্দর হয়েছে।
উপন্যাস বই টির কাহিনী জমে উঠেছে। লিখুন।
সত্য ঘটনা বলছেন, আপনার বা আপনার পরিবারের কেউ?

১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৮:৩১

শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক ধরেছেন আমার খুব কাছের কেউ। না হলে এধরনের উপন্যাস লেখার আগ্রহই থাকত না। তাঁকে আমি একান্ত কাছে থেকে দেখেছি, শৈশব আর কৈশরে বেড়া ওঠা আর যৌবনের মাঝপথে আচমকা সব ছেড়ে চলে যাওয়া। সেজন্যই পুঙ্খানিপুঙ্খভাবে বয়ান করতে সমস্যা হবে না। তবে বড় অভাগা মানুষ ছিল সে।
আপনার আন্তরিক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই। ভাল থাকুন।

৫| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ৯:২৪

কামাল১৮ বলেছেন: এটাতো স্বাধীনতার পরের সারা দেশের গল্প।স্বাধীনতা যুদ্ধের নয়মাস মানুষ ছিলো মানবিক,একের দুঃখে অন্যের প্রান কাঁদতো।সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতো।
তারপর ভোজবাজির মতো সব পাল্টে গেলো।দিন যত গড়ায় মানুষ হতে থাকে স্বার্থপর।এ সবই হয়েছে ভোগবাদের স্বার্থে।মানুষকে মানুষ হতে দেয়না পুঁজিবাদ।তাঁদেরকেও করে ফেলে পন্য।সারা বিশ্ব এখন পুঁজিবাদের হাতে বন্দী।

১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৮:৩৫

শেরজা তপন বলেছেন: এমন একটা গল্প আসলে আপনাদের লেখার কথা- যারা যুদ্ধটাকে কাছে থেকে দেখেছে। জীবন হাতে নিয়ে দেশ মাতৃকার উদ্ধারের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মৃত্যুভয় ছাপিয়ে।
দেশ স্বাধীনের পরে সব ভোজবাজীর মত পালটে যেতেই সব সপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে গেল নিমিষে। কি দেশ চেয়েছিলেন আর কি পেলান!!! আজো নিশ্চিত সে দুঃখবোধ যায়নি। আমি তখন সবে শিশুমাত্র। স্মৃতি থেকে লেখা সম্ভব নয়। শুরুটা আত্মীয় পরিজনের কাছ থেকে শোনা গল্প থেকে। ভুল ভ্রান্তি থাকলে ঠিক করে দিবেন।
ভাল থাকুন।

৬| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ৯:৩৬

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: লেখাটার চমৎকার শুরুটার প্রশংসা না করে পারছি না। এই দুর্দান্ত গল্পটি যদি আরো বড় আকারে হয় নিশ্চয় চরিত্রগুলোর পরিচর্চা আরো ভালো হবে তখন একটি গল্প হবে পাঠক সমাদৃত। শুভ কামনা সবসময়ের।

১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৮:৪৫

শেরজা তপন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সুপ্রিয় ব্লগার মাহমুদুর রহমান সুজন চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
এটা আস্ত একটা উপন্যাসের শুরু মাত্র- এ কাহিনীর প্লট ৪৩ বছর ব্যাপী বিস্তৃত! অবহেলা অনাদর পারিপার্শ্বিক পরিবেশ মানুষের নির্মমতা নিষ্ঠুরতার কারনে মোটামুটি রক্ষনশীল পরিবারের একটা ছেলের বখে যাবার গল্প। সেখানে উঠে আসবে তাঁর সমাজের তথাকতিথ ভালমানুষ হবার আকুতি, দারুণ একটা শৈল্পিক মন, ভালোবাসা পাবার আকুতি, উদারতা, প্রখর বুদ্ধিমত্ত্বা, দুর্দান্ত রসবোধ সব নিয়েই এই উপন্যাসটা লেখার ইচ্ছে আছে। যদিওবা সে ইচ্ছেটা ইচ্ছেতেই থেকে যাবার সম্ভাবনা বেশী।
যাইহোক ভাল থাকবেন আপনি- শুভকামনা রইল।

৭| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ৯:৫৭

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



যুদ্ধ আমাদের জীবন সত্যি সত্যি পাল্টে দিয়েছিলো। আমাদের গড়ে ১০-১৫ বছর বয়স বেড়ে গিয়েছিলো শুধুমাত্র যুদ্ধের কারণে। জীবন সম্পর্কে এমন কঠিন শিক্ষা হয়তো যুদ্ধ ছাড়া আর একটি বিষয়ে সম্ভব। আর তা হচ্ছে অভাব অনটন দুর্ভিক্ষ তাও আমরা নিজে অনুধাবন করেছি। তারপর দেখেছি মহামারী।

মাত্র গত কয়েক বছর আগের করোনার কথাও যদি বলতে হয় - যা দেখেছি তা লিখতে গেলে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। আর অতীতের মহামারী ও দুর্ভিক্ষ নিয়ে লিখতে গেলে বিপদ।

গল্পের ছেলেটির সুন্দর জীবন কামনা করছি।

১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৮:৫৪

শেরজা তপন বলেছেন: ব্যাপক অভিজ্ঞ মানুষ আপনি। এক জীবনে একটা দেশ জাতির অনেক চড়াই উৎরাই পেরুনো থেকে শুরু করে তাদের লোভ হিংসা ঘৃনা দ্রোহ থেকে শুরু করে দেশটাকে নিজেদের বাপ দাদার সম্পত্তি বলে দাবি করা, আত্মধ্বংস, চরম চৌর্যবৃত্তি,দুর্নীতি সবই পর্যবেক্ষন করেছেন নিবিড়ভাবে।
আপনার মত ঋদ্ধ মানুষের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে জানার আছে।

জানি প্রতিবন্ধকতা আছে- তবুও লিখুন কিছু কিছু।
সেই ছেলেটি সুন্দর জীবন পায়নি। পৃথিবীর অন্যতম সভ্য দেশে গিয়ে সে সম্পুর্ণ নতুনভাবে নিজেকে ঢেলে সাজাতে গিয়েও ভাগ্যার নির্মম পরিহাসে এক ভয়ানক নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করেছে। দেশে ফেরার আকুতিতে পরিবার সায় দেয়নি। এমনকি বেড়াতে আসতে চাইলেও তাঁকে নিরাশ করা হয়েছে।

যাই হোক আমার অসমাত পাণ্ডুলিপির উপন্যাসগুলোতে হাত দিলে আশা করি আপনাদের উপদেশ ও সহচর্চ পাব।

৮| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১০:২৩

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
অসমাপ্ত পান্ডুলিপির সমাপ্ত চাই। বুঝাই যাচ্ছে সুন্দর একটা উপন্যাস হতে যাচ্ছে। লেগে থাকুন। কোন ভাবেই পিছপা হবেননা। ++++

১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:২৪

শেরজা তপন বলেছেন: অসমাপ্ত পাণ্ডুলিপির এইসকল উপন্যাস লিখতে মানসিক প্রশান্তি ও নিরবিচ্ছিন্ন অবসর প্রয়োজন।
আর এর ব্যাপ্তি এত বিশদ হবে যে আপনারা পড়তে পড়ে বিরক্ত হয়ে যাবেন। এটুকুই থাক আপাতত।
আপনার আন্তরিক আগ্রহের জন্য ধন্যবাদ -ভাল থাকুন

৯| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১১:১৩

কলাবাগান১ বলেছেন: " একটি নিরিহ, আত্মজ বন্ধু আর অতিথি অন্তপ্রান জাতি মাত্র বছরখানেকের ব্যাবধানে কতটা পাল্টে যেতে পারে সেটা সচক্ষে না দেখলে অনুধাবন করা অসম্ভব!"
পরাজিত দলের লোকদের প্রতিহিংসা বাস্তবায়ন করার প্রচেস্টা ও কিছুটা দায়ী
বিলি জোয়েল এর গানের প্রথম অংশের লিরিকটা বাদ পড়ে গেছে, সেই অংশটা ও আমার খুব প্রিয়....। Saturday night.....regular folks shuffle in.....

১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:২৭

শেরজা তপন বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় কলাবাগান১ ভুলটা ধরিয়ে দেবার জন্য।
ওই অংশটুকু যোগ করে দিয়েছি।

পরাজিত দলের লোকদের প্রতিহিংসা বাস্তবায়ন করার প্রচেস্টা ও কিছুটা দায়ী ~ বড় একটা কারণ তো এটা ছিল নিশ্চিতভাবে।

মন্তব্যে জন্য সবিশেষ ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

১০| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ২:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: ছোট্র একটা স্বপ্নের কথা বলি।
প্রতিদিন আমরা কত স্বপ্ন দেখি- কিন্তু কিছুই মনে থাকে না। তবে আজকের স্বপ্নটার কথা খুব মনে আছে।
আমি একটা নদীতে নামছি একটু একটু করে। প্রথমে হাঁটু পর্যন্ত। তারপর কোমর পর্যন্ত। পরে একেবারে বুক পর্যন্ত। পানি কি ঠান্ডা! গভীর রাত। চারিদিকে ফকফকা জোছনা। তীব্র জোছনায় নদীর পানি ঝকমক করছে। নদীর পাড় ঘেঁষে বিশাল বিশাল পাহাড়। সাঁতার কাটার বদলে আমি একটু একটু করে ডুবে যাচ্ছি।

১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:২৯

শেরজা তপন বলেছেন: হুম
আমি সপ্ন দেখি নিয়মিত কিন্তু দুঃসপ্ন দেখি কম।
আমার বিস্ময়কর একটা সপ্ন ছিল যেটা তিন খন্ডে দেখেছিলাম। আগের সপ্ন যেখান থেকে শুরু হয়েছিল পরেরটুকু সেখান থেকেই শুরু হয়েছে।
সুখসপ্ন ছিল পুরোটাই। মজা নিয়ে দেখেছি :)

১১| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: অসমাপ্ত রাখলে সেটা পড়ে মজা পাওয়া যাবে না। তাই সমাপ্ত করবেন আশা করি।

১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:৩১

শেরজা তপন বলেছেন: কত লেখা যে জমে আছে কোনটা রেখে কোনটা লেখি।
একটা কিছু খুব নিশ্চিত হয়ে লিখতে বসে অন্য কিছু লিখে ফেলি। সমসাময়িক বিষয়গুলো বেশী চলে আসে লেখায়- যেগুলো ইগনোর করার উপায় থাকে না।
আপনার অনুপ্রেরণার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

১২| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১১:৩৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: শেরজা তপন,




আপনার "ছোটকা"কে নিয়ে লেখা যেহেতু অসমাপ্ত পাণ্ডুলিপি~১য়ে আপনার ছোটকাকে নিয়েই লিখেছিলেন।
একটা বক্তব্য দিতে চেয়েছেন, মানুষের "অবান্ধব" হয়ে যাওয়া নিয়ে। এতে কষ্ট পাবার অনেক কিছু আছে হয়তো কিন্তু খুব দ্রুত পাল্টে যাওয়া এই পৃথিবীতে এটাই এখন রূঢ় বাস্তবতা। এই বস্তুবাদী জগতে অন্যের দুঃখে দুঃখি হবার জায়গা এখন আর নেই। আমাদের কে এমনই একটা অবান্ধব-অদরদী-অমানবিক সমাজেই বাস করতে হবে শেষ দিনটি পর্য্যন্ত, আমাদের ইচ্ছের বিরূদ্ধেও!

তবে যেহেতু পর্ব করে লিখছেন তাই ভালো হয়, পর্বগুলি গ্যাপ না দিয়ে পরপর পোস্ট করলে। নইলে আগের পর্বগুলির গল্প/ঘটনা মন থেকে হারিয়ে যায় এবং খেই হারিয়ে পেছনে ফিরে আবার নতুন করে পর্বগুলো দেখতে হয় ।
শুভেচ্ছান্তে।

১৫ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৮:৩৩

শেরজা তপন বলেছেন: এই বস্তুবাদী জগতে অন্যের দুঃখে দুঃখি হবার জায়গা এখন আর নেই। আমাদের কে এমনই একটা অবান্ধব-অদরদী-অমানবিক সমাজেই বাস করতে হবে শেষ দিনটি পর্য্যন্ত, আমাদের ইচ্ছের বিরূদ্ধেও! ~ বাস্তবিক আরবানাইজড লাইফস্টাইলে একথার সাথে দ্বীমত করার উপায় নেই। তবুও কারো কষ্টে দুঃখ না পেয়েও আমার দুঃখিত হবার ভান করি। কারো আনন্দে উদ্বলিত হবার ভান করি। এতটুকু ভান বা ভন্ডামি আরেকজনের ঔষধ হিসেবে কাজে লাগতে পারে- এই ভন্ডামিটাও মন্দ নয়। তবুও পৃথিবীতে এখনো কিছু মানুষ অন্যের কষ্টে কাঁদে -নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করে ছুটে বেড়ায় পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে অন্যপানে কিছু অনাত্মীয়, ভিন্ন ভাষা ধর্ম বর্ণের ভিন্ন জাতীয়তাবাদী মানুষদের কষ্ট লাঘব করার জন্য। কেউবা পরিবেশকে বাঁচানোর জন্য বন্যপ্রাণী বাঁচানোর জন্য নিজের জীবন তুচ্ছ করে দেয়- কখনো নগ্ন হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করে।

আমি বরাবর কোন সিরিজ ধারাবাহিকভাবে দিতে চাই কিন্তু, পাঠকের পুরো রিয়্যাকশন জানা ছাড়া পরের পর্বগুলো লেখার আগ্রহ পাই না। ফাঁকে এমন কিছু প্রাসঙ্গিক কিংবা অপ্রাসঙ্গিক বিষয় এসে পড়ে যেগুলো এভয়েড করতে পারিনা।
কেউ কেউ ভুলে গেলে সমস্যা নেই আপনার মত দু'চারজন এটুকু মনে রাখলেই হবে কুড়িয়াএ পাওয়া চৌদ্দ আনা। :)
ধন্যবাদ ভাই মন্তব্যের জন্য।

১৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১২:১০

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



আমার বিস্ময়কর একটা সপ্ন ছিল যেটা তিন খন্ডে দেখেছিলাম। আগের সপ্ন যেখান থেকে শুরু হয়েছিল পরেরটুকু সেখান থেকেই শুরু হয়েছে। - এই বিষয়ে সম্ভব হলে লিখবেন। এটি আমার সাথেও হয়েছে অনেকবার।

আমি এমনও স্বপ্ন দেখেছি যা পরে বাস্তবে রূপান্তর হয়েছে।

১৫ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৮:৩৬

শেরজা তপন বলেছেন: আমি এমনও স্বপ্ন দেখেছি যা পরে বাস্তবে রূপান্তর হয়েছে।
আরেব্বাস তাই নাকি!! এতো বিস্ময়কর ব্যাপার। যদি সমস্যা না থাকে আপনার কাছে সে গল্প শুনতে চাই।
আমারটা একটু হেব্বি রোমান্টিক তাই তেমন কোন প্রেক্ষাপট এলে বলব :)
আপনার আগ্রহের জন্য ধন্যবাদ।

১৪| ১৫ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১১:৪৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: শেরজা তপন,



প্রতিমন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।
তবুও পৃথিবীতে এখনো কিছু মানুষ অন্যের কষ্টে কাঁদে -নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করে ছুটে বেড়ায় পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে অন্যপানে কিছু অনাত্মীয়, ভিন্ন ভাষা ধর্ম বর্ণের ভিন্ন জাতীয়তাবাদী মানুষদের কষ্ট লাঘব করার জন্য। কেউবা পরিবেশকে বাঁচানোর জন্য বন্যপ্রাণী বাঁচানোর জন্য নিজের জীবন তুচ্ছ করে দেয়-
এই অল্প কিছু মানুষের জন্যেই পৃথিবীটা এখনও পৃথিবী হয়ে আছে। জীবনটাই তখন সুন্দর বলে মনে হয়।
কিন্তু সব ধরণের পার্থিব আর মানবিক বিষয়গুলোর প্রতি বেশীর ভাগ মানুষের অবান্ধব-অদরদী-অমানবিক আচরণের কারনেই কষ্ট-বেদনাগুলি দানা বেঁধে ওঠে।

পাঠকের প্রতিক্রিয়া অনুকূল না হলে কি আপনার লেখক সত্তা, লেখার আগ্রহ কি উবে যাওয়ার জিনিষ ? এটা মনে হয় ঠিক নয়। প্রানের গহীন থেকে তুলে আনা অনুধাবনগুলো লিখবেন হাত খুলে, এই যেমন এটা লিখেছেন।
আর মনে তো হয়না, আপনার লেখায় পাঠকের প্রতিক্রিয়া একটুও প্রতিকূল। ব্লগে আপনার ঘর পাঠকের আনাগোনায় তো হামেশাই সরগরম।

১৫ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ৮:০২

শেরজা তপন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ফের মন্তব্যে আসার জন্য।
আমি আসলে ঠিকভাবে বোঝাতে পারিনি। আমি হাত খুলেই লেখবার চেষ্টা করি, যখন যা মনে আসে তাই লিখি। কিন্তু দীর্ঘ ধারাবাহিক একটা লেখায় পাঠকদের অংশগ্রহন জরুরী। যে কজন ধারাবাহিক লেখায় মন্তব্য করেন তাদের সে লেখাটার প্রতি আন্তরিকতা, কাহিনীর প্লটের প্রতি আকর্ষন, ভুল-ভ্রান্তি দুর্বলতার দিকে একটু নজর দিতে হয়। পাঠকের মতামত অনেক গুরুত্বপূর্ণ- বিশেষ করে আমার কাছে। শুধু নিজের ভাললাগার লেখাগুলো নিজের কাছেই থাকা উচিৎ বা পার্সোনাল ব্লগে লেখা উচিৎ। কমিউনিটি ব্লগে লেখা প্রচার করলে সব ধরনের লেখক পাঠকের মতামতকে মূল্যায়ন করা উচিৎ বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।
দুর্দান্ত লেখার সাথে সাথে পাঠকের পালস আমার থেকে আপনি ভাল বোঝেন। আপনার লেখা আসলেই সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়েন। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.