নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...
কাজী সাহেবের লেখার স্টাইল দেখে আমার মাথা ঘুরে যাবার দশা! তিনি লিখতে গিয়ে বুড়ো আঙ্গুলের ব্যবহার করেন না। তিনি অনামিকা আর মধ্যমার মাঝে কলমটা বিশেষভঙ্গীতে চেপে ধরে কলম খাড়া করে লিখেন। আপনি যখন এক লাইন লিখে শেষ করবেন তখন তাঁর একটা তিন অক্ষরের শব্দ শেষ হবে। তাঁকে ডিক্টেট করা বেজায় মুশকিল।
তাঁর চশমা, কাগজ, কলম, টেবিল চেয়ারের তখন হাত পা গজিয়ে যায়। তারা তখন বেজায় ঝামেলা শুরু করে।
নিবের সাথে কাগজ আটকে যায় কিংবা কালি বেরোয় না, কলম ঝাকাতে গিয়ে দূরে ছিটকে পড়ে , কলম আনতে গিয়ে চেয়ারের সাথে উষ্টা খায়, তাড়াহুড়োয় বসতে গিয়ে টেবিলের সাথে দুম করে গুতো খেয়ে মুখ চোখ কুচকে মনে মনে উঃ আঃ করে। চোখের চশমা বার বার ঘোলা হয়ে যায়।
দশ মিনিটে যেই কাজ হবার কথা সেইটে শেষ আর হতে চায় না - অবশেষে রাগে দুঃখে চুল ছিড়তে ছিড়তে নিজেই লিখে তাঁর হাতে কাজের লিষ্টি ধরিয়ে দিতে হয়।
***
এরপরেও কিন্তু শান্তিতে নিঃশ্বাস ফেলানোর জো নেই। এরপরে শুরু হয় তাঁর প্রশ্নবান। এইটা কি ওইটা কেন? ওই লোকের নম্বর- ওইখানে ক্যামনে যাব? ওইটা দেখতে কেমন -আমি কি চিনব? এইটা কি লিখছেন?
আমার 'ওয়ান ম্যান শো কোম্পানী' কোম্পানীর ছোটবড় প্রায় সব কাজ আমি দেখতাম - সাথে ছিল তুহিন শুধু( ওর কথায় পরে আসছি)। যে কোন কাজের শুরুটা হত (এখনো হয় তবে বেশ কিছুটা ছেড়ে দিয়েছি) আমার হাত দিয়ে। আমার অলক্ষ্যে কিছুই হয় না। সেজন্য প্রত্যেককে কাজ বুঝিয়ে দেবার শুরুটা করতাম ( দশ বছর আগের কথা বলছি)।
যাই হোক, স্বভাবতই প্রথম দিনই জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনি এভাবে লিখেন কেন?
শুরু হল তারা ম্যারাথান উত্তর। বুড়ো আঙ্গুলে কবে কোথায় কিভাবে ব্যথা পেয়েছিল, তাঁর পর কি কি চিকিৎসা করেছিল, কোন কোন কবিরাজ ডাক্তার তাঁকে কি কি পথ্য দিয়েছিল? কত ধরনের ডায়াগোনসিস টেস্ট সে করেছিল? অবশেষে অগত্যা সে বাধ্য হয়েছে এভাবে লিখতে- এই পুরো বয়ান শুনতে শুনতে আমি আমার জরুরী সব কাজের কথা ভুলে গিয়েছিলাম বেমালুম!
***
তখন বুঝিনি ইনি গল্পের জাহাজ!পেটের মধ্যে হেন তেন কোটি কোটি আকামের গল্প নিয়ে ঘোরেন - সারাদিন সে গল্প গ্যাসের মত ফুলে ফেঁপে ওঠে! মনের মত মানুষ না পেলেও অন্তত কুলি মজুর চায়ের দোকানদার কিংবা রিক্সাওয়ালাকে অন্তত না বলে হালকা হতে না পারলে উনি পেট ফুলে মারা পরবেন।
তাই আসল কাজ ভুলে উনি সারাদিন গল্প করার লোক খুঁজেন।
বাপ দাদা ঢাকার লোক তিনিও ঢাকার মানুষ তবে কুট্টি নন। খানদানী বংশ। বংশটাই খানদানী 'কাজী' আছে কিন্তু প্রায় চালচুলো বিহীন। বাপের ঢাকায় বহু সম্পত্তি ছিল। তিনি ছেলেদের আরাম আয়েশে মানুষ করেছেন। ছেলেরা 'অমানুষ মুর্খ' হয়নি কিন্তু 'অপদার্থ অকর্মণ্য' হয়েছে। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে সয়ার ছোট ছিল সুবোধ কাজী বাবার সবচেয়ে আদরের সন্তান। কৈশরে কোনদিন একগ্লাস পানি ঢেলে খাননি। বাজার-সদাই তো দুরের কথা; মোড়ের দোকান থেকে এক প্যাকেট বিস্কুট পর্যন্ত নিজের হাতে কিনেননি। স্কুলে যেতেন, তবে পড়াশুনায় ছিলেন লবডঙ্কা- সারাদিন ছিল আড্ডা ঘোরাঘুরি আর বিড়ি খাওয়া। স্কুল ফাঁকির ছিল হাজারো বাহানা। প্রভাবশালী বাপের আসকারায় স্যারেরাও কিছু বলার সাহস পেতেন না। কোনভাবে নমঃ নমঃ করে পাশ করে যেতেন।
বাপ শেষ বয়সে ছিটগ্রস্থ হয়ে যায়। অনেক জমিজমা বিক্রি করে দেন। তিনি মারা যাবার পরপরই সরকার তাদের বেশিরভাগ ভুসম্পত্তি 'টেকনিক্যাল কলেজ' করার জন্য অধিগ্রহন করে নেয়। সে সময়ে সরকারের সাথে কি নিয়ে একটা মামলার জন্য তারা কোন ক্ষতিপুরণ ও পায়নি নাকি।
একগাদা ভাই-বোন প্রায় আকুল পাথারে পরে। সবচেয়ে করুণ দশা হয় সুবোধ কাজীর। বাকি ভাইয়েরা যার যার মত কাজ কর্ম খুঁজে নিলেও সুবোধ সাহেব কিছুই জোটাতে পারলেন না- কেননা তিনি কিছুই জানেন না। তিনি জানেন শুধু চা- বিড়ি খেতে আর গল্প করতে।
গপ্পের গরু গাছে তুলে সেটাতে নানান রঙ চড়ান!
***
সুবোধ কাজী ~ প্রথম পর্বের লিঙ্ক এখানে
০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৪:৫০
শেরজা তপন বলেছেন: হ্যাঁ তাকে ও তার গল্পের গরুকে নিয়ে একসাথে গাছে ক্যামনে উঠব সেই টেনশনে আছি ব্রো - খারাপ বলেননি
২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১১:৪৫
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: "আমাদের সুবোধ কাজী" সত্যি সত্যিই কিভাবে যেন আমাদেরই হয়ে যাচ্ছে, হয়েই গেছে। চরিত্রটিকে আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেবার কাজটি ইতিমধ্যে শতভাগ সফলভাবেই করে ফেলেছেন।
"আমাদের সুবোধ কাজী" নন স্টপ চলতে থাকুক....
০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৮
শেরজা তপন বলেছেন: আপনারা এভাবে আস্কারা দিয়েই আমার মাথাটা খেয়েছেন!!
কাম কাজ বাদ দিয়ে মনে হয় সারাদিন লেখি- সুবোধ কাজীর গল্পের সব জাহাজ এখন আমার কাধে চেপেছে!!
ব্লগে কাম নাই কাজ নাই বক বক করে যাচ্ছি।
যাই হোক ধন্য বাদ প্রিয় ব্লগার
৩| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ২:৫৮
নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: মনে হচ্ছে গল্পের পাতা থেকে উঠে আসা সব চরিত্রগুলো আপনার আশেপাশে এসেই ভিড়ছে । সুবোধ কাজী তার মধ্যে একজন । আশারাখি আরও কয়েকটা অদ্ভুতকিছিমের মানুষদের সাথে আপনি আমাদের পরিচয় করিয়ে দেবেন !
০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৫:১৯
শেরজা তপন বলেছেন: আপনার আশেপাশেও এমন চরিত্র আছে বা সবে একদিন অপেক্ষা করুন আর চোখ কান খোলা রাখুন।ওদিকে আপনার কলমের যে ধার তাতে আমি আগে জন্মে ভাল করেছি এসব সেকেলএ গল্প দিয়ে তখন হালে আর পানি পেতাম না
সুবোধ কজীর সাথে সদ্য পরিচয় পর্ব চলছে। অনেক ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য। দৌড়ের উপ্রে মন্তব্য করছি।
৪| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৪:৪৬
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সরকারের জবরদস্তি জমি অধিগ্রহণ এভাবে কতশত সুবোধ কাজির জীবনে যে প্রহেলিকা বয়ে আনে কে জানে। প্রথম পর্বে এক সুবোধ কাজিকে পেয়েছিলাম। কিন্তু এই পর্বে এসে বেচারা সুবোধ কাজির জন্য করুণা হচ্ছে।কি আর করার। অন্ধ অপত্য স্নেহের বশীভূত হয়ে অনেক বাবা-মা বহু সন্তানকে এমন সুবোধ করে তোলে। কিন্তু পরে সমস্যা জর্জরিত জীবনে তারা একপ্রকার অকুলপাথরে পরে। যাইহোক কোনো না কোনো সুহৃদ তাদেরকে দিশা দেখায়।
পোস্টে লাইক।
শুভেচ্ছা আপনাকে।
০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৫:২২
শেরজা তপন বলেছেন: কারো প্রতি মমত্ত্ববোধ ভাল কিন্তু ভুলেও এই মানুষটার প্রতি বেশী দরদ দেখাতে যাবেন না।
টমের প্রতি জেরি যতবার ভালবাসা দেখাতে গিয়েছে ততবার ধরা খেয়েছে ইনিও তেমনি।
আদর করে কোন কিছু জিজ্ঞেস করলেই কাম সেরেছে। আপনার আগের পর্বেও মন্তব্য দেখেছি- কাজ সেরে প্রতিউত্তরে পরে আসছি।
ভাল থাকবেন প্রিয় ভাই।
৫| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৮:৩২
আমি সাজিদ বলেছেন: ক্যারেকটার একটা!
০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১০:৫২
শেরজা তপন বলেছেন: শুরু হল সবে। কোথায় ছিলেন সারা দিন- বৃষ্টিতে ভিজেছেন নাকি?
ঝুম বৃষ্টিতে আজ রাতে যা একটা জম্পেশ আড্ডা হয়েছে!
৬| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:০২
জটিল ভাই বলেছেন:
প্রথমেই আগের পর্বে ভুলে গাজী সাহেবকে কাজী বলে সম্বোধনের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
আসলে, সমস্যাটা ঊনার নয়। সমস্যাটা আপনার আমার। নয়তো ঊনি এসব কর্ম (আপনার ভাষ্যে অকর্ম) সম্পাদন করে সময় পান না। আর আপনি-আমি নিজেদের কর্ম সম্পাদনের পরও আবার এনার কর্ম নিয়ে আলোচনা করার সময় পাচ্ছি! সেই হিসেবে আমরা বুড়ো আঙুল কাজে লাগিয়ে সময় বাঁচিয়ে আদৌ কি লাভবান হচ্ছি?
০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:০১
শেরজা তপন বলেছেন: আপনি দেখি ওইটার সাথে এইটার ফের এইটার সাথে ওইটার জটিল গিট্টু লাগাচ্ছেন!!
আমারে ক্যাচালে প্যাচায় ফেলবেন নাকি?
এমনিতেই কাজী সাহেবের জটিল প্যাঁচে আছি সারাদিন। আজকে উনি বাইরে গেছেন সাথে ছাতা নেননি। বললাম একটা ছাতা কিনে নেন।
উনি বললেন না বস , দরকার নাই, বৃষ্টি থেমে থেমে হচ্ছে- আমিও থেমে থেমেই যাচ্ছি। খবর নিলাম খানেক আগে এখনো নাকি বাসায় ফেরেন নি।
উনি কি করেছেন জানেন? যতবার বৃষ্টির কবলে পড়েছেন ততবার চায়ের দোকানে বসে আরামসে চা-বিড়ি ফুকেছেন আর গল্প করেছেন।
মিথ্যে কথা তিনি বলেন না কখনো।
শনিবারে তিনি সর্দি জ্বরের জন্য অফিস কামাই করবেন নির্ঘাৎ!
৭| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:৪৯
জনারণ্যে একজন বলেছেন: শেরজা, এই পর্বটা মনে হয় একটু তাড়াহুড়ো করে লিখেছেন।
পড়তে পড়তে মনে হলো ফরমায়েশি লেখা লিখছেন - যেকোনো প্রকারেই হোক, আজকেই লেখাটা পাবলিশ করতে হবে, কিংবা পর্বটা লিখে শেষ করতে হবে।
প্রথম পর্বটা পড়ে যেমন ভালো লেগেছে, এটা পড়ে তেমন লাগেনি।
আশাকরি কিছু মনে করছেন না এগুলি লেখাতে? আপনার কাছে (লেখক হিসেবে) প্রত্যাশা অনেক, সেই জায়গা থেকেই বলা কথা গুলি।
০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১০:৫১
শেরজা তপন বলেছেন: আমাকে ছিল্যা কাইট্যা লবন লাগায় দিলেও আমি অন্তত লেখালেখির ব্যাপারে মাইন্ড করি না।
প্রতিটা গঠনমূলক সমালোচনা আমাকে দারুণভাবে উজ্জীবিত করে। এরপরে আপনি আপনার ভালবাসার জায়গা থেকে অধিকারের জায়গা থেকে কথাগুলো বলেছেন, সেখানে কষ্ট পাবার প্রশ্নই আসে না।
ধারাবাহিক লেখার একটা সমস্যা হচ্ছে( মুলত পর্ব আকারে যখন আসে) কোন কোন পর্ব আপনার প্রত্যাশার ধারে কাছ দিয়ে যাবে না, কোন কোন পর্ব আপনার প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যাবে কোনটা গৎবাঁধা অতি আটপৌরে ধাঁচের হবে। এই পর্বে আমি তাঁকে আসলে পরিচয় করিয়েছি। শেষ দিকে তাঁকে নিয়ে চটুল একটা ঘটনা লিখতে গিয়েও আটকে গিয়েছি।
আপনার কথা স্মরণে থাকবে- এেপর থেকে এই লেখায় আরেকটু যত্মবান হব।
আন্তরিক ধন্যবাদ ও ভালবাসা ও শুভকামনা রইল
৮| ০৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১:৪৭
আমি সাজিদ বলেছেন: কাজ, ঘুম এটা ওটা ভাবতে ভাবতেই দিন চলে গেল! এখানেও বৃষ্টি হয়েছে।
০৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:১৪
শেরজা তপন বলেছেন: বৃষ্টি সম্ভবত সারা বাংলাদেশে সবখানেই হচ্ছে।
ইলিশ খিচুরি খেয়েছেন নাকি?
৯| ০৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ১:১৪
আফলাতুন হায়দার চৌধুরী বলেছেন: গল্পের সাথে আমিও এগিয়ে যাচ্ছি. . .
০৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ১:২০
শেরজা তপন বলেছেন: আমিও আছি আপনার সাথে -অনেক অনেক ধন্যবাদ সাথে থাকবার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:২১
অরণি বলেছেন: গল্পের গরু সুবোধ কাজীকে গাছে ওঠানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।