নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...
প্রথম পর্বঃ ভাষা (বাংলা) তুমি কার?
ভাবছি এরপরের আলোচনাটা আমরা কোত্থেকে শুরু করব? প্রথম পর্বে যেভাবে আমাদের বিজ্ঞ, ঋদ্ধ ও শ্রদ্ধেয় ব্লগারগন দারুণ প্রানবন্ত আলোচনায় সমালোচনায় জমিয়ে তুলেছিলেন, তাতে করে দ্বিতীয় পর্বটা লেখা বেশ জটিল হয়ে যাচ্ছে।
যাই হোক এই পর্বে আমরা বানান ও ব্যাকারণ কিংবা ভাষার দুর্বলতা থেকে সরে আসি। আমরা আসলে কতটুকু জানি 'ইশারার ভাষা' সন্মন্ধে? 'ইশারার ভাষা' যা সহজ ভাষায় বোবা ও কালা ( আরো সহজ ভাষায় বোবা ও বয়রা) আর কেতাবি ভাষায় শ্রবন ও বাক্ প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্যাবহার হয়।
আপনি কি 'বডি ল্যাংগুয়েজ' বা দেহের ভাষাকে ইশারার ভাষা বলবেন? না মোটেও তা নয়- দেহের ভাষা ভিন্ন বিষয়, সেটা নিয়ে আলোচনায় আসছি। আর অন্ধদের যে ভাষা যাকে আমরা 'ব্রেই্লি' বলি সেটা কিন্তু কোন ভাষা নয় সেটা শুধুমাত্র লিখন পদ্ধতি। কিন্তু আমাদের ভাষার বানান ও ব্যাকারণরীতিতে সেটা জানারও প্রয়োজন আছে বলে ওই বিষয়ে ( যদিও আমার জ্ঞান শুন্যের কোঠায়) আমরা কিছু আলোচনা করব।
আপনি কি বোবা-কালা কোন মানুষকে বাংলা উপন্যাস পড়তে দেখেছেন, কিংবা এমন কেউ কি বাংলা কবিতা লিখেছেন? আমি অন্তত দেখিনি, কিংবা দেখলেও হয়তো বুঝিনি। তবে উন্নত বিশ্বের এমনটা অহরহ হচ্ছে। ইউরোপ আমেরিকায় আপনার চোখে পড়বে হয়তো কোথাও জটলা পাকিয়ে একগুচ্ছ ছেলেমেয়ে নিঃশব্দে শুধু হাত নাড়িয়ে অঙ্গভঙ্গী করে দারুণ আড্ডা দিচ্ছ- আপনি হতভম্ভ হয়ে লক্ষ্য করবেন সেই আড্ডার মজা আমাদের মত শ-শাব্দিক আড্ডার থেকে কোন অংশেই কম নয়।
ইশারার ভাষা বা সাইন ল্যাংগুয়েজ- নিয়ে একটু তাত্ত্বিক আলোচনা সেরে নেই আগে;
আমাদের মধ্যে কিছু কিছু মানুষ রয়ে গেছেন যারা শ্রবণ ও বাক্ সীমাবদ্ধতা নিয়ে জন্মেছেন। তারা আমাদের মতো বাচনিক ভাষায় তাদের মনের ভাব প্রকাশ করেন না। তবে তারা ভাষাহীনও নন। তাদেরও আমাদের আমাদের মতো ভাষা রয়েছে। তারা আমাদের মতো বাচনিক ভাষায় তাদের মনের ভাব প্রকাশ না করে বরং সংকেত ভাষায় যোগাযোগ করে থাকে।
সারা বিশ্বে সংকেত ভাষা বহুল ব্যবহৃত একটি ভাষিক যোগাযোগ মাধ্যম। ন্যাশনাল সেনসাস অব দ্য ডিফ পপুলেশন- এনসিডিপির তথ্য মতে, ইংরেজি ছাড়া আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে যে ১৩টি ভাষা সবচেয়ে বেশি প্রচলিত তার মধ্যে স্প্যানিশ ও চীনা ভাষার পরই রয়েছে আমেরিকান সংকেত ভাষা। যেখানে প্রায় দুই মিলিয়ন মানুষ এই ভাষায় পারস্পরিক ভাব বিনিময় করে থাকেন।
ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অফ দ্য ডেফ-এর তথ্য মতে, সারা বিশ্বে প্রায় সাত কোটি বাক্ ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী রয়েছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশেই আছে প্রায় ৩০ লাখ। তবে দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত বাক্ ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ৬৬ হাজার ৩৯৭ জন। যার মধ্যে ১ লাখ ১৮ হাজার ৯০৭ জন বাক প্রতিবন্ধী ও ৪৭ হাজার ৪৯০ জন শ্রবণ প্রতিবন্ধী( জন্ম থেকে শ্রবণ প্রতিবন্ধী হলে সে বাক্ প্রতিবন্ধী হবে)। এই বিশাল বাক্ ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য ১৯৯২ সালে ‘জাতীয় বধির সংস্থা’ ব্রিটিশ সাইন ল্যাঙ্গুয়েজের আলোকে এ দেশে সর্বপ্রথম বাংলা ইশারা ভাষা ও বিধান প্রণয়ন ও প্রকাশ করে।
আসুন আমরা দেখে নিই বাংলা প্রণীত সাইন ল্যাংগুয়েজ;
দেখুন ঠিক সেই বর্ণ-গুলোই আছে যা আমরা চাচ্ছিলাম ?
মোট ৩৬ টি বর্ণ। ৬টি স্বর ও ৩০ টি ব্যঞ্জন-বর্ণ। এখানে দুটো নাসাল ধ্বনি নেই, 'স' একটাই, চন্দ্রবিন্দু নেই। ঙ, নেই, ঞ নেই, দীর্ঘ-ঈ নেই, ঐ নেই ঔ নেই। আমরা সহজ সরল বাংলা ভাষা এমনটাই চাচ্ছিলাম। সাইন ল্যাংগুয়েজ বা ইশারার ভাষা যদি এমন আধুনিক হতে পারে তবে মুল স্রোতে যারা আছেন তাদের লেখ্য বাংলা ভাষা এমন হতে দোষ কি?
এবার অন্য প্রসঙ্গ যাদের জন্য বর্ণ তারা আসলে কতটু বোঝে?
তাঁর আগে আসুন এই 'ইশারার ভাষা' সন্মন্ধে ভাষা বিজ্ঞানীরা কি বলে দেখে নিই;
একটি সাধারণ ভুল ধারণা আছে যে, সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ কোনো না কোনোভাবে কথ্য ভাষার উপর নির্ভরশীল: যে এগুলি লক্ষণে প্রকাশ করা একটি কথ্য ভাষা, অথবা সেগুলি মানুষের কথা শুনে উদ্ভাবিত হয়েছে। স্বাক্ষরিত (আমি 'লেখ্য' ভাষা হিসেবে উল্লেখ করব) এবং কথ্য ভাষার মধ্যে মস্তিষ্কে ভাষা প্রক্রিয়াকরণের সাদৃশ্য এই ভুল ধারণাটিকে আরও স্থায়ী করেছে। বধিরদের জন্য স্কুলে শ্রবণকারী শিক্ষক, যেমন চার্লস-মিকেল ডি ল'পে বা 'থমাস হপকিন্স গ্যালাউডেট'কে প্রায়ই ভুলভাবে ইশারা ভাষার "আবিষ্কারক" হিসাবে বর্ণনা করা হয়। পরিবর্তে, সাংকেতিক ভাষাগুলি, সমস্ত প্রাকৃতিক ভাষার মতো, যারা তাদের ব্যবহার করে তাদের দ্বারা বিকশিত হয়, এই ক্ষেত্রে বধির লোকেরা, যাদের একটি কথ্য ভাষার সামান্য বা কোন জ্ঞান থাকতে পারে না ও পারে।
কি বুঝলেন? আপনি কীভাবে একজন বধিরকে বোঝাবেন ‘এ’ ‘ও’ ‘আ’ –এর মত স্বর-বর্ণ বা ক-খ এর মত ব্যঞ্জনবর্ণ। এগুলো শুধু বিমূর্তভাবে ধারনা করতে পারবে সে। বাংলা যুক্তাক্ষর,বর্ণের সাঙ্কেতিক চিহ্ন অদ্ভুত সব ব্যাকারণের মারপ্যাঁচ বোঝা ভাষায় বোঝানো অসাধ্য তাঁর কাছে। আমরা বাংলার মত ভাষায় বধির মানুষের কথ্য ভাষার আলোচনা করতে পারি- কিন্তু স্বভাবিকভাবে লেখা পড়া করবে কীভাবে?
( শুধু এটুকু দেখুন- বাকিগুলো নিয়ে পরে ভাবুন; ওষ্ঠ পঠন (ঠোট পড়া): এই পদ্ধতিতে বক্তার ঠোট এবং মুখাবয়বের নড়াচড়া দেখে বক্তব্য অনুধাবন করতে হয়। এই পদ্ধতির প্রবর্তক হলেন জয়ন পাবলো বুনেট (Juan Pablo Bonet)। যে শিক্ষার্থী ওষ্ঠ পঠন ক্ষমতা ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারে সে যে গতিতে কোন বিষয় মনে মনে পড়তে পারে, প্রায় একই গতিতে সে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় প্রকাশ করতে পারে। কিছু ওষ্ঠবর্ণ আছে যেমন— প, ফ, ব, য ইত্যাদি। বর্ণগুলি সরাসরি ওষ্ঠের উপর নির্ভর করে উচ্চারণ হয়। ফলে এই বর্ণগুলি সে সহজেই আত্মস্থ করতে পারে। আবার ক, খ, গ ইত্যাদি বর্ণমালা উচ্চারণের সময় সরাসরি ওষ্ঠের উপর নির্ভর করে না, সেগুলো বুঝতে পারা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাহলে স, শ, আর ষ এর কি হবে?)
(প্রকৃত অর্থে, বাংলা ইশারা ভাষা প্রমিতকরণে ভাষা বৈজ্ঞানিক ব্যাপক গবেষণার মাধ্যমে এর বৈশিষ্ট্য, গঠনরীতি ও ব্যাকরণ আবিষ্কার করা প্রয়োজন—যা এখনও করা হয়নি। ভাষা পরিকল্পনার মাধ্যমে বাংলা সংকেত ভাষা ব্যবহারবিধি উন্নয়ন, এ ভাষার বিভিন্ন উপাদান সংকলন ও মুদ্রণ এবং সর্বত্র এ ভাষার প্রচার ও প্রসারের ব্যবস্থা করাও আবশ্যক। যেহেতু ইশারাভাষীদের নিজস্ব সংস্কৃতি থেকে এ ভাষার উদ্ভব, তাই এ বিষয়েও যথেষ্ট গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।~প্রথম আলো। ২০২৪ সালে এসেও গবেষনার প্রয়োজন আছে!!! )
এ বিষয়ে পুরোটা জানতে চাইলে লিঙ্কে ক্লিক করুন;
বাংলা ইশারা ভাষা প্রমিতকরণ কেন জরুরী
আপনি নেট খুঁজে দেখুন ইংরেজী ভাষাভাষীর মত আধুনিক অনেক ভাষার বধির মানুষ কঠিন কঠিন বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রীধারী হচ্ছে- ড্রাইভিং লাইসেন্স পর্যন্ত পাচ্ছে। অথচ আমাদের দেশে দেখুন; ১৬৬০০০ শ্রবণ ও বাক্ প্রতিবন্ধী মানুষের জন্মই যেন আজন্ম পাপ। আপনার জানা মতে এমন কেউ কি এ ভাষায় উচ্চপর্যায়ে যেতে পেরেছে?
শুধু দেখুন জটিল বর্ণ ব্যবস্থা কিভাবে হাজার হাজার মানুষের জীবনকে সাধারণ জীবন-ধারার মুলস্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে, শুধু এই ভাষাভাষি হয়ে জন্মানোর জন্য এতবড় দায় চুকাতে হচ্ছে তাদের?
( যুক্তাক্ষর দিয়ে একটা বাংলা সাইন ল্যাঙ্গুয়েজের উপন্যাস করতে গেলে সেটা কেমন দেখতে হবে আমার ধারনা নেই, তবে সেটা যে কলেবরে মুল বই এর আট-দশগুন বেশি হবে সেটা আন্দাজ করা যায়।) * বোবা-বধিরদের জন্য আসলে কোন সাইন ল্যাংগুয়েজ উপন্যাস করা সম্ভব নয়। এটা শুধু ধারনা মাত্র, বোবা-বধিরেরা স্বাভাবিকভাবেই প্রথাগত ভাষায় লেখা বই-প্রত্র পড়বে ও লিখবে। সাইন ল্যাংগুয়েজ শুধুমাত্র বর্ণ-ভাষা ও শব্দ শেখার জন্য।
সাইন ল্যাংগুয়েজ কেন সার্বজনীন হল না? সাইন ল্যাংগুয়েজ বা ইশারার ভাষা আধুনিক মানুষের সৃষ্টি- একজন বোবা কালা মানুষের কাছে মাতৃ-ভাষাই কি আর বিজাতীয় ভাষাই বা কি? শব্দ সুর ধ্বনি সেটা যত সু-মধুরই হোক না কেন তার কিছু আসে যায় না।
পৃথিবীর অন্যতম কঠিন ভাষা চৈনিক-সেটা কে না জানে। চায়না শুধু জ্ঞান-বিজ্ঞানেই প্রভূত উন্নতি সাধন করেনি, সময়মতো জায়গামতো নিজেদেরকে ঠিকঠাক পাল্টে নিয়েছে, তাদের নিজেদের স্বার্থে -ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থে জাতীয়তাবাদের গোড়ামীকে ছুড়ে ফেলেছে।
যেহেতু বিশাল দেশ, দেড়শ মিলিয়নের উপরে মানুষের বাস-সেখানে বোবা কালা মানুষ দু-এক কোটি থাকবে সেটা স্বাভাবিক! এত বিশাল জনগোষ্ঠীকে মুল স্রোতে না এনে অথর্ব বানিয়ে রাখবে সেটা হয় কেমনে? যেখানে আমরা 'ডেফ' মানুষের জন্য ইশারায় ভাষা উন্নয়নের জন্য উদ্যোগ নিয়েছি ১৯৯২ সালে( যা মুখ থুবড়ে পড়েছে-জ্ঞানী গুণী পণ্ডিতেরা কেউ আর ভেবে পাচ্ছে না কেমনে সামনে আগাবে?) সেখানে চায়নিজরা প্রথম ইশারা ভাষা স্কুল করে ১৮৮৭ সালে। নিজেদের ভাষায় 'সাইনে' আনা অসম্ভব দেখে তারা প্রথমে ফরাসী(LSF) ও পরবর্তীতে ইংরেজী(ASL) ভাষার সাহায্য নেয়। আবার ইংরেজী এসেছে ফ্রেঞ্ঝ ও স্প্যানিশ থেকে।
দেখুন;
চাইনিজ 'ইশারা ভাষার' দুটি প্রধান উপভাষা রয়েছে: দক্ষিণ সিএসএল (সাংহাই কেন্দ্রিক এবং ফরাসি সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ দ্বারা প্রভাবিত) এবং উত্তর সিএসএল (শেফু স্কুল অফ ডেফ থেকে উদ্ভূত এবং আমেরিকান সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ দ্বারা প্রভাবিত) (এএসএল -আমেরিকান সাইন ল্যাংগুয়েজ)
অন্যান্য 'ইশারা ভাষা'র মতো, চীনা 'ইশারা ভাষা'র প্রাথমিকভাবে মুখের অভিব্যক্তির সাথে যুক্ত আকার এবং নড়াচড়ার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। CSL-এর একটি বর্ণানুক্রমিক বানান পদ্ধতি পিনইনের মতোই রয়েছে। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৬৩ সালের ডিসেম্বরে "চীনা বানান স্কিম" হিসাবে গৃহীত হয়েছিল (সরলীকৃত চীনা: 汉语手指字母方案; ঐতিহ্যগত চীনা: 漢語手指字母方案; পিনয়িন: Hànyǔnǐngǔngǔngǐì)। এটি একটি এক-হাতে ম্যানুয়াল বর্ণমালা, যা ফ্রাঙ্কোসাইন পরিবারের ভাষা যেমন ফরাসি এবং আমেরিকান ম্যানুয়াল বর্ণমালার মতো। আঙ্গুলের বানানের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল পিনয়িন ZH, CH, SH et NGকে একক বানান চিহ্ন হিসাবে ব্যবহার করা, দুই-অক্ষরের চিহ্নের অনুক্রমের পরিবর্তে, পিনয়িন থেকে আশা করা যেতে পারে; এটি স্ট্যান্ডার্ড চীনা ধ্বনিবিদ্যায় এই মৌখিক শব্দগুলির ধ্বনিগত অবস্থা প্রতিফলিত করে।
চীনা সংস্কৃতি এবং ভাষা দৃঢ়ভাবে CSL লক্ষণ প্রভাবিত করে। উদাহরণস্বরূপ, CSL-এ "ভাই" এর জন্য কোন সাধারণ শব্দ নেই, শুধুমাত্র দুটি স্বতন্ত্র চিহ্ন, একটি "বড় ভাই" এবং একটি "ছোট ভাই" এর জন্য। এটি চাইনিজের মতো, যা শুধুমাত্র "ভাই" এর পরিবর্তে "বড় ভাই" বা "ছোট ভাই" উল্লেখ করে। একইভাবে, "খাওয়া" চিহ্নটি ASL-এর মতো হাত ব্যবহার না করে চপস্টিকের একটি সচিত্র উপস্থাপনাকে অন্তর্ভুক্ত করে।
***************
এইবার কয়-লাইন একটু 'ব্রেইল' নিয়ে আলোচনা;
~ এগুলো ছাড়াও কিছু আছে নিউমেরিক, যতিচিহ্ন,সাঙ্কেতিক চিহ্ন ও 'স্মল লেটার' বোঝানোর জন্য।
কাগজের ওপর ;ছয়টি বিন্দু'কে ফুটিয়ে তুলে লিখবার একটি পদ্ধতি। দৃষ্টিহীন ব্যক্তিরা এই উন্নীত বা উত্তল বিন্দুগুলোর ওপর আঙ্গুল বুলিয়ে ছয়টি বিন্দুর নকশা অনুযায়ী কোনটি কোন্ অক্ষর তা’ অনুধাবন করতে সক্ষম হয় এবং লেখার অর্থ বুঝতে পারে। ছয়টি বিন্দুর কোনোটিকে উত্তল করে আর কোনটিকে সমতল করে ৬৩টি নকশা তৈরী করা যায়। এক-একটি নকশা দিয়ে এক-একটি অক্ষর, সংখ্যা বা যতিচিহ্ন বোঝানো হয়। ৬টি বিন্দু বাম ও ডান দুটি 'উল্লম্ব স্তম্ভে' সজ্জিত থাকে। অর্থাৎ প্রতি আনুভূমিক সারিতে থাকে দুটি বিন্দু। বিন্দুগুলোর পরস্পরের আকার ও অন্তবর্তী দূরত্ব থাকে অভিন্ন। যেমন, যদি কেবল বাম স্তম্ভের ওপরের বিন্দুটি উত্তল থাকে আর বাকী ৫টি থাকে সমতল, তবে এ নকশাটি দ্বারা ইংরেজি বর্ণমালার 'a' অক্ষর বোঝায়। ছিদ্র যুক্ত বা উঁচু নিচু ধাতব পাত ব্যবহার করে বা ডট দিয়ে বিশেষ ধরনের কাগজের ওপর ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখা যায়। বিকল্পে একটি বিশেষায়িত টাইপ-রাইটার ব্যবহার করা হয়।
সহজ সুন্দর বিষয়; কিন্তু এটা ইংরেজীতে যতটা সহজ মনে হচ্ছে আমাদের ভাষায় কিন্তু তেমন নয়। বাংলায় 'ব্রেইল' মোটেই এত নিরীহ দেখতে নয়। ভেবে দেখুন শুধু সাধারণ বর্ণ নয়- ছয়টি ডট দিয়ে ভয়ঙ্কর সব 'যুক্তাক্ষর' বিবিধ বিধান, মাত্রা, সাঙ্কেতিক চিহ্ন, ধ্বনি, ফলা, ঋ-এর পদ, হসন্ত, রেফ কেমনে পড়েন লিখেন অন্ধ মানুষেরা? আমরা কি একবারও ভেবে দেখেছি? ( ভেবে দেখুন; ৬ টি ডট দিয়ে শুধু ৬৩ টি নকশা করা যাবে, এর বেশী নয় কিন্তু।)
তবে অনেক অন্ধ মানুষ এদেশে পড়াশুনা করে এগিয়ে গেছে- যদিও তেমন বিখ্যাত কারো নাম জানি না। হুমায়ূন আহমেদের লেখায় পড়েছি, ঢাকা ভার্সিটিতে নাকি বেশ কিছু অন্ধ ছাত্র সাধারণ ছাত্রদের সাথে পড়াশুনা করে। নর্থ ডাকোটাতে 'কোয়ান্টাম মেকানিক্সে' তাঁর ক্লাসের সবচেয়ে ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট ছিল নাকি একজন কৃষ্ণাঙ্গ অন্ধ। তবে বাংলা লেখন পদ্ধতি যতটা জটিল ব্রেইল লেখন পদ্ধতিতে অন্ধদের খুব বেশীদুর এগিয়ে যাবার সভাবনা নেই বলে আমার ধারনা।
নীচের এই রিপোর্ট-টা দেখলে আপনি চমকে উঠবেন;
A study reported that approximately 40,000 children in Bangladesh are living with blindness each year. ~ আগের প্রজন্মের কথা বাদ দিলাম-এদের কি হবে?
শুধু কি তাই; বাংলাদেশে প্রতি বছর জন্ম নেওয়া এক লাখেরও বেশি শিশু অন্ধত্বের ঝুঁকিতে থাকে এবং সময়মতো তাদের চোখ পরীক্ষা করা না হলে এবং যথাযথ চিকিৎসা না পেলে তারা জীবনের জন্য দৃষ্টি শক্তি হারাতে পারে।
আপনি কি ভেবেছেন কখনো এদের কথা? বাংলা ভাষা তো এদেরও ভাষা- তাই নয় কি? আমরা শুধু আমাদের নিয়েই আছি। যে মানুষটা জন্ম থেকে পৃথিবীর কোন রূপ রঙ সৌন্দর্য দেখতে পায়নি- ভাষার কাঠিন্যে আমরা তাকে বিমূর্ত ধারনা দিতেও অপারগ! আমরা তো চোখে দেখি- তাদের দুর্ভাগ্য নিয়ে ভাববার বোধ আমাদের নেই। পৃথিবীর এত রূপ রস গন্ধ নিয়েও আমাদের শান্তি নেই - এমন চির বঞ্চিতদের নিয়ে ভাববার সময় কোথায় আমাদের???
~ বাংলা ব্রেইল( শুধু স্বর ও ব্যাঞ্জন-বর্ণ)
~ ইংলিশ গ্রেড-২ ব্রেইলি, যেখনে যুক্ত-অক্ষর শেখানো হয়।
***
* যে বিষয়গুলো নিয়ে আমি লিখেছি সে বিষয় নিয়ে আমি নিয়মিত ভাবি কিন্তু জানি খুব কম। সে জন্য তথ্যগত ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে প্রচুর। কেউ শুধরে দিলে উপকৃত হব। তবে আমি যা বলতে চেয়েছি সেটা আশা করি পরিষ্কার-ভাবে বুঝতে পারবেন। সময়ের অভাবে লেখা কিছুটা এলোমেলো খাপছাড়া হতে পারে, ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।
*গতকাল লেখাটা দিতে গিয়েও ফের ড্রাফটে নিয়েগিয়েছিলাম। ব্লগমাতা জানা আপুর অসুস্থতার খবরে মনটা ভীষন ভারাক্রান্ত! বাংলা ভাষার প্রতি তার অদম্য টান ও ভালবাসা চিরকাল এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তার মত মানুষ জন্মেছে বলেই আজ আমরা মন খুলে নিজের ভাষায় মনের কথা কইতে পারছি। ভাষা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক ঝগড়া-বিবাদ খুঁনসুটি যাই করি না কেন এর পেছনে এই মানুষটার একক অবদান বিশাল। সারা বিশ্বের বাংলা ভাষা।-ভাষির কাছে অনন্তকাল তিনি চরম শ্রদ্ধা ও ভালবাসার পাত্র হয়ে থাকবেন। আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে কামনা থাকবে তিনি সব রোগ শোক কাটিয়ে উঠে নব-উদ্যোমে ফিরে আসুন আমাদের মাঝে খুব শীঘ্রই- প্রতিক্ষায় রইলাম .।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:০৮
শেরজা তপন বলেছেন: পুরো ময়দান তো খালি -কোন দিকে বসলেন দেখা তো যায় না ?
২| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:০৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: মিয়া ভাই খেলতে গেলে তো পড়াশোনা করা চাই। আগে পড়াশোনা করে শক্তি সঞ্চয় করে আবার আসছি।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:২৭
শেরজা তপন বলেছেন: ভাইরে ভাই এই নিয়ে এই কয়দিনে পড়াশোনা যা করার আমি করছি আপনার কিছু করতে হবে না আপাতত। আপনি শুধু পড়েন আর মন্তব্য করেন।
৩| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:০৬
রানার ব্লগ বলেছেন: কয়েক বার পড়তে হবে । এক পড়ায় বুঝতে বেশ সমস্যা হচ্ছে ।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৩০
শেরজা তপন বলেছেন: হ্যাঁরে ভাই সহজ করতে গিয়ে ব্যাকরণ আর বর্ণের থেকে বেশি কঠিন হয়ে গেছে
বিষয়বস্তু কঠিন তাছাড়া লেখায় কিছু জটিলতা রয়ে গেছে। আমি সহ বাসার সবাই অসুস্থ সেজন্য খুব বেশি মনোযোগ দিতে পারিনি আরো কয়েকবার রিভাইস করে একটু সহজ করে দিব।
৪| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:১৮
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এত বড় কেন
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:২৬
শেরজা তপন বলেছেন: ছবি টবি দিয়ে অনেক বড় হয়ে গেছে তাছাড়া অনেক ত্যানা পেঁচানো কথাবার্তাও আছে
বাক প্রতিবন্ধী আর দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ভাষা নিয়ে লেখা একটু কঠিন তো হবেই।
একবার পড়তে শুরু করেন এত বড় মনে হবে না।
৫| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:০৯
আফলাতুন হায়দার চৌধুরী বলেছেন: সময় নিয়ে ধীর সুস্থ্যে পড়লাম। বরবরের মতই গবেষণাধর্মী, বিষদ অথচ প্রাঞ্জল লেখনী। অনেক কিছু জানলাম, অসংখ্য ধন্যবাদ।
সাইন ল্যাঙ্গুয়েজের প্রতি প্রচন্ড রকমের ফ্যানিসেশন এসেছিলো অনেক অনেক দিন আগে, ব্রিজবেন (অষ্ট্রেলিয়ার) পপ ডুও 'স্যাভেজ গার্ডেন'-এর মিউজিক ভিডিও "ক্র্যাশ এ্যান্ড বার্ণ" দেখে। সময়ের আবর্তনে সব হারিয়ে গেছে। ব্রেইলীর ব্যাবহার অবশ্য ফার্স্ট ওয়ার্ল্ডের যত্রতত্র হয়। আমি যেখানে থাকি সেখানে প্রায় বিকেলে চার পাঁচটা ছেলে মেয়ে আড্ডা দেয়, হাসিতে লুটিয়ে পড়ে। পুরোটা সাইন ল্যাঙ্গুয়েজে, নিঃশব্দে। বলে বোঝাতে পারবো না কি যে সুন্দর, কি যে মায়া লাগে।
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:২৯
শেরজা তপন বলেছেন: আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্যের জন্য সুপ্রিয় ব্লগার আফলাতুন হায়দার চৌধুরী।
সম্ভবত আপনিই প্রথম পুরো লেখাটা পড়ে মন্তব্য করলেন
ক্র্যাশ এ্যান্ড বার্ণ আমার দেখা হয়নি, দেখে নিব অবশ্যই।
আমিও প্রথম যখন সাই ল্যাঙ্গুয়েজের ব্যভার দেখি রাশিয়াতে ভাবতেই পারিনি এরা কথা বলতে পারে না। কি দারন ভাবেই না আড্ডা দিচ্ছিল ছেলে মেয়েগুলো- দুর্ভাগ্য, আমাদের দেশে এমনটা এখনো চোখেই পড়ে না। ভাষার কাঠিন্য আমাদের কত দিকে ভোগায়।
ভাল থাকুন নিরন্তর।
৬| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:১৮
ঢাবিয়ান বলেছেন: বিদেশের লিফটে ব্রেইল এর ডট দিয়ে নাম্বার লেখা থাকে । চীনা অধ্যূষিত দেশে থাকি। চীনা ইশারা ভাষার কথা কোনদিন শুনি নাই।চীনাদের মুখ বরং অভিব্যক্তিহীন
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩২
শেরজা তপন বলেছেন: আধুনিক প্রায় সব লিফটে ব্রেইল সাইন থাকে। এমনকি ফুটপাথে পর্যন্ত যে আড়া খাঁড়া নকশার টাইলসগুলো থাকে সেগুলোও নাকি অন্ধদের পথ চলায় সাহায্য করে। যেটা আমাদের বাংলাদেশেও শুদু করেছিল মেয়ল আনিসুল হক।
চীনা মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে বেশী কাঠ-খোট্টা মনে হয়।
৭| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৩৯
কামাল১৮ বলেছেন: পড়লাম এবং জানলাম।কিন্তু লাভ কি হবে বুঝতে পারছি না।
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪
শেরজা তপন বলেছেন: জন্মেও লাভ নেই বেঁচে থেকেও লাভ নেই মরেও লাভ নেই- পুরাটাই ফালতু, আব-জাব বিষয়
পড়েছেন সেজন্য ধন্যবাদ।
৮| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:০৫
শায়মা বলেছেন: ইশারার ভাষায় কি করে যে কথা বলে অনেক ভেবেছি। এটাও বুঝার ট্রাই করেছি। জানা আপুর জন্য অন্তর থেকে দোয়া রইলো।
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫
শেরজা তপন বলেছেন: আপনিতো বাচ্চাদের শিক্ষিকা তাঁর উপরে নাচুনি, আপনার ভাল বোঝার কথা। আপনি যখন বোঝেন নাই- তাহলে আমাদের বোঝার প্রশ্নই আসে না।
৯| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:১৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: শেরজা তপন,
বেশ দুরূহ মনে হলো পড়তে গিয়ে। তবে ঔৎসুক্য জেগে উঠলো, কথা বলতে না পারা মানুষদের সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ নিয়ে। সাথে সাথেই ইউটিউব ঘেঁটে
নীচের বাংলা ভিডিওটি পেলুম। ভাবলুম, অনেকেই হয়তো পছন্দ করবেন তাই লিংক দেয়ার চেষ্টা করছি----
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩৭
শেরজা তপন বলেছেন: চেষ্টার কমতি ছিল না সহল করে লেখার। মনোযোগ ধরে রাখা মুশকিল- শারিরিক মানসিক দুটো চাপ একসাথে নিয়ে এত কঠিন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা কষ্টকর! তবুও কেন যে করলাম জানি না
পরের ভিডিও দেখছি...
১০| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:২৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: শেরজা তপন,
এই যাহ.... হয়নি! আবার চেষ্টা করছি--
বাংলা সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ
আর একটা ---
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৪০
শেরজা তপন বলেছেন: চমৎকার -ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য। শিখে নিলাম চট করে কিছু।
১১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৭:০৪
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
অনেক মুল্যবান কথামালা সমৃদ্ধ খুবই প্রয়োজনীয় বিষয়ে একটি পোষ্ট ।
বিবিধ কারণে খুবই ব্যস্ততার মাঝ দিয়ে যাচ্ছি । প্রিয়তে তুলে রাখলাম ।
সময় সুযোগ করে আলোচনায় ফিরে আসব ইনসাল্লাহ ।
শুভেচ্চা রইল
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮
শেরজা তপন বলেছেন: কোন সমস্যা নেই- অন্য অনেকেই মনে হয় ব্যস্ত আছে আপনার মত।
সময় নিয়ে ফিরে আসবেন সেই প্রতীক্ষায় রইলাম...
১২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:০৬
শ্রাবণধারা বলেছেন: সাইন ল্যাংগুয়েজ সম্পর্কে কোন ধারনাই ছিলো না। ভাষা সম্পর্কে অলোচনা করতে গিয়ে আপনি যে সাইন ল্যাংগুয়েজ নিয়ে লিখবেন এটা ভাবিনি। আপনার পোস্ট পড়ে সাইন ল্যাংগুয়েজ সম্পর্কে কিছুটা জানতে পারলাম।
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৫০
শেরজা তপন বলেছেন: চোখের ভাষা, শরিরের ভাষা সহ আরো অনেক ভাষা নিয়েও খানিকটা লিখে ছিলাম, দৈর্ঘ্যে শুধু বেড়েই যাচ্ছিল লেখা; পাঠকদের বিরক্তির কারন হবে দেখে বেশ খানিকটা কেটে ছেঁটে দিয়েছি। সাইন ল্যাংগুয়েজ নিয়ে আমার ধারনা ছিল ভাসা ভাসা- এ বিষয়ে লিখতে গিয়ে আমিও পড়াশুনা করে অনেক কিছু জেনেছি।
১৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:০০
কাছের-মানুষ বলেছেন: বেশ তথ্য সমৃদ্ধ পোষ্ট। সাইন ল্যাংগুয়েজ সম্বন্ধে আমার তেমন জানাশুনা ছিল না! আর বাংলাদেশে এত সংখ্যক বাক এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী আছে তাও জানতাম না।
ধন্যবাদ আপনাকে কষ্টসাধ্য পোষ্টের জন্য। +++
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:১১
শেরজা তপন বলেছেন: কষ্ট করতে আরাম লাগে যখন কেউ উপকৃত হয় মজা পায় বা আনন্দিত হয় কিংবা নিজের আত্ম তৃপ্তির জন্যও সেটা তুচ্ছ মনে হয়।
এই বিষয়ে লিখতে গিয়ে আমি অনেক অজানা বিষয়ে জেনেছি। শুধু ধারনা ছিল, ভাষার দুর্বোধ্যতার জন্য ওরা পিছিয়ে আছে। একটা সহজ সাবলীল আধুনিক ভাষা একটা পুরো জাতিকে যে কিভাবে এগিয়ে দেয় ইংরেজী ভাষা তাঁর অন্যতম প্রমাণ। চীন ও ভারত যদি ভাষায় আরো উন্নত সহজ আধুনিক না হয় তাহলে তারা এগিয়ে গিয়েও বার বার পিছিয়ে পড়বে ভাষার জন্য। কোরীয়- জাপানীদের আরো বহুদুর এগিয়ে যাবার কথা ছিল। ভাষা হতে হবে সার্বজনীন। যার যার মত খুটি গেড়ে গো ধরে আমরি ভাষা বললে চলবে না। সিমপ্লিফাইড ভাষা লাগবেই।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
১৪| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: মনের ভাব প্রকাশ করতে পারলেই আরাম। সেটা ভাষা দিয়ে হোক বা ইশারায়। যারা মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে না, তাদের অনেক কষ্ট। যেমন ধরুন প্রতিবন্ধীদের। অসুস্থ মানূষেরা। ছোট অবুঝ শিশুরা।
অনেক কিছু লিখেছেন। অর্থ্যাত পোষ্ট টা তৈরি করতে অনেক সময় লেগেছে। অনেক পড়তে হয়েছে।
একটা ধন্যাব্দ আপনি পেতেই পারেন।
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:২০
শেরজা তপন বলেছেন: আমি তো সেইটাই কই- তারপরেও আমরা ভুলে যাই, অন্যের ভুল ধরে আরাম পাই
আমি আপনি সবাই। বানান ব্যাকারন শব্দ কথা গল্প নিজের মত না হলে চেপে রাখতে পারি না; অনেক সময় মুখ ফসকে বলে ফেলি।
আসলে জানাটাই সমস্যা। মানুষ যতবেশী জানে তত অসুখী আর নিঃসঙ্গ হয়।
আমি চেষ্টা করি অনেক পড়াশুনা করতে -কিন্তু গুছিয়ে লিখতে গিয়ে এলোমেলো হয়ে যায়। কাটছাট করে একটা কিম্ভুত আঁকার নেয়।
আপনি অনেক জটিল বিষয় শিশুতোষ বিষয়ের মত করে লিখেন, সেদিন যেমন টেসলাকে নিয়ে লিখলেন। কিন্তু আমি চেষ্টা করেও পারি না, জটিল থেকে জটিলতর হয়
১৫| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:০৯
রানার ব্লগ বলেছেন: কিছুদিন ধরে সলিমুল্লাহ নামে হয়তো এক লোক দুনিয়ার বিখ্যাত লোকের বদনাম করে বেড়াচ্ছে । ভাব খানা এরা সব চোর বদমাশ উনি মহান । আর একে হাত তালি দেবার মতন অজস্র লোক আছে, এদের বেশিরভাগ অশিক্ষিত, দেশ বিরোধী ও তাদের সন্তান এবং কুশিক্ষিত ।
তো এমন কিছু লোক সমাজে আছে যারা অন্যের ভুল ধড়ে মজা পায় এবং এটা প্রকাশ করে সিনা টান করে চলে । এদেরো ফ্যান ফলোয়ার আছে । এদের উপর রাগ দেখিয়ে লাভ নাই । এরা মানুষিক বিকারের শিকার ।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৫৮
শেরজা তপন বলেছেন: নিজের শত দোষ-ত্রুটি উহ্য রেখে অন্যের পুন্দে আঙ্গুল দেয়া আমাদের জেনেটিক সমস্যা।
ভুল ধরা ভাল- এতে অনেক সময় ভাল কিছু হয়। তবে সেটা মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে বিপদ।
১৬| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৫১
এমজেডএফ বলেছেন: ভাষা নিয়ে লেখা ২য় পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। ভাষা, বর্ণ ও ধ্বনি একটি অপরটির সাথে অতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই ভাষা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করতে হলে সবদিক দিয়ে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। সেটা আমার নেই। তারপরেও আমার সীমিত জ্ঞান দিয়ে যা জানি ও বুঝেছি তা এখানে শেয়ার করলাম।
যারা চোখে দেখে কিন্তু ভাষা বুঝতে বা বলতে সমস্যা হয় তাদের জন্য ইশারার ভাষা বা সাইন ল্যংগুয়েজ ব্যবহার করা হয়। এই সাইন ব্রেইল পদ্ধতির মতো শুধু বর্ণের চিহ্ন নয়। এই সাইন দিয়ে সাধারণত বিশেষ্য, বিশেষণ বা ক্রিয়াও প্রকাশ করা হয়। বিশেষ করে অটিস্টিক শিশুদের সাথে কথা বলার সময় তাদের বুঝার সুবিধার্থে মুখে বাক্যটি বলার সাথে হাতের ইশারায়ও বিশেষ্য, বিশেষণ বা ক্রিয়া প্রকাশ করা হয়। এভাবে একসময় অটিস্টিক শিশুরাও ইশারার ভাষাটি শিখে যায়।
উদাহরণ:
বাংলা যুক্তাক্ষর নিয়ে স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছিল এবং কিছু নব্যলেখক নিজেরা পন্ডিতি করে যুক্তাক্ষর বাদ দিয়ে বাংলা লেখা শুরু করেছিল! যেমন: পাকিস্তান → পাকিসতান। অনেকে একে উচ্চারণ করতো পাকি শতান ! যাই-হোক, ভাষাবিদ ও ধ্বণিতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের যুক্তি ও সিদ্ধান্তে সবাই আবার যুক্তাক্ষরে ফিরে আসে।
উল্লেখ্য ৩৫ কোটি মানুষের মাতৃভাষা হিন্দী বর্ণমালার উৎসও দেবনাগরী অর্থাৎ বাংলার মতো আ-কার, ই-কার এবং যুক্তাক্ষর সেখানেও আছে। তাদের তো অসুবিধা হচ্ছে না।
[img|https://pbs.twimg.com/media/EFvb297X0AUAh3d?format=jpg&name=90
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬
শেরজা তপন বলেছেন: আপনার সুদীর্ঘ ও গুরুত্বপূর্ন মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
আলোচনা সমালোচনা এভাবে জমে উঠলে ভাল লাগে। আমরা সবাইতো সবকিছু জানি না - জানার কথাও না, সেটা সম্ভব ও না।
ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা দিয়ে চেষ্টা যে করে যাচ্ছি সেটাই বা কম কিসে।
ভাষা নিয়ে আলোচনা অনাদিকাল ধরে চলে আসছে -এভাবেই চলবে, মানুষ চাইবে আরো সহজ থেকে সহজতরভাবে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে, এইটেই স্বাভাবিক।
পৃথিবীর সব মানুষের জন্য একটা ভাষা হলে কতই না ভাল হোতো।
আচ্ছা পৃ্থিবীর সব কুকুর কি একে অপরের ভাষা বুঝতে পারে? আপনার কি মনে হয়?
আপনার মত অভিজ্ঞ লোকের সাথে আলোচনায় অনেক কিছু জানা যায়। এভাবে সাথে থাকবেন। ধন্যবাদ- শুভকামনা রইল।
১৭| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১২
এমজেডএফ বলেছেন:
টেকনিক্যাল ভুলের কারণে পুরো অংশ আগের মন্তব্যে আসেনি তাই বাকী অংশ এখানে যোগ করলাম:
উল্লেখ্য ৩৫ কোটি মানুষের মাতৃভাষা হিন্দী বর্ণমালার উৎসও দেবনাগরী অর্থাৎ বাংলার মতো আ-কার, ই-কার এবং যুক্তাক্ষর সেখানেও আছে। তাদের তো অসুবিধা হচ্ছে না।
বাংলা ব্রেইলে যুক্তাক্ষর প্রকাশ করা কোনো সমস্যা নয়। ইংরেজি বর্ণের মাত্র ২৬টি কী দিয়ে আমরা যেভাবে এখন বাংলা লিখি সেভাবেই বিভিন্ন কী কম্বিনেশনের মাধ্যমে বাংলা সব বর্ণ, যুক্তবর্ণ ও চিহ্ন প্রকাশ করা সম্ভব। যেমন ব্রেইল লেখায় যুক্তাক্ষর প্রকাশের জন্য দুটি বর্ণের মাঝখানে প্লাস চিহ্ন থাকলেই দৃষ্টিহীন ব্যক্তি বুঝতে পারবে যে এটি যুক্তাক্ষর।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের বাংলা ভাষা লেখা ও পড়ার সুবিধার্তে বাংলাদেশেও কাজ হচ্ছে। আমরা নেতিবাচক বাঙালিরা সব সময় বিদেশের ভালোটা দেখি, আর দেশের খারাপটা দেখি। আর নিজের দেশ নিয়ে খারাপ কোনো লেখা দেখলেই পিঠ চাপড়িয়ে বাহবা দিই।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের দুঃসহ, দুর্বিসহ, যন্ত্রণাদায়ক বাস্তবতার সমগ্রতাকে বুকে ধারণ করেছে বাংলাদেশ সরকার। প্রতিষ্ঠা করেছে ৬৪ জেলায় ৬৪টি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়। সেটি সমাজ সাধারণের কাছে অন্ধ স্কুল নামে সমাধিক পরিচিত।
পজিটিভ সংবাদের কিছু লিঙ্ক:
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরাও এখন বাংলা লিখবেন
দৃষ্টি জয়ীদের মাঝে বইয়ের আলো ছড়াতে গ্রন্থমেলায় ব্রেইল স্টল
দৃষ্টিহীনদের চোখে আলো জ্বালছে যেসব বই
আপনি উল্লেখ করেছেন যে বাংলা ব্রেইল চিহ্নে কিছু বর্ণ বাদ দেওয়া হয়েছে! কথাটা সঠিক নয়। নিচের লিঙ্কে দেখুন সব বর্ণ ও চিহ্ন আছে।
বাংলা ব্রেইল - উইকিপিডিয়া
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৫১
শেরজা তপন বলেছেন: এখানে আপনার একটু ভুল হচ্ছে; ব্রেইল ল্যাংগুয়েজ নিয়ে আপনি উইকি'র যেই লিঙ্কটি শেয়ার করেছেন আমিও সেইটাই শেয়ার করেছি। ব্রেইলিতে যে ব্যাঞ্জন বর্ণ কম আছে সে কথা আমি কোথাও বলিনি।
দেবনাগরী থেকে যতগুলো ভাষার উৎপত্তি সবগুলোতেই যুক্তাক্ষর আছে। পৃথিবীর কঠিনতম ভাষার মধ্যে সপ্তম অবস্থানে আছে দেবনাগরী ভাষা থেকে উদ্ভূত ভাষাগুলো। এই নিয়ে আমি এক পর্বে লিখব। । দেবনাগরী ভাষা থেকে মূলত এসেছে সিলোটি নাগরী।
বাংলা লিপির মুল উৎস বলা হয় ব্রাহ্মী লিপি থেকে।
হিন্দীর যুক্তাক্ষর নিয়ে সমস্যা নেই সেটা আমি আপনিতো জানি না। ওদের ব্যাকারণের সমস্যা নিয়ে ওরা ভুগছে- ইশারা ভাষা ও ব্রেইলিতে দেভনাগরী থেকে সৃষ্ট কোন ভাষাতেই বেশীদুর এগুতে পারেনি বর্ণমালা ও ব্যাকারণের কাঠিন্যতার কারনে।
১৮| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৪০
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ইংরেজি ভাষা সার্বজনীন ও সহজ হবার পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ হয়ত এর সহজ, সরল ব্যাপারগুলো। বাংলা ভাষা যথেষ্ট জটিল বলেই, আমার মনে হয় ৯০% ভাগ মানুষ বাংলা ভাষা শুদ্ধভাবে লিখতে পারে না। এছাড়া প্রতি নিয়ত বানানরীতির পরিবর্তনের যন্ত্রণা তো আছেই।
কথা বলে প্রকাশ ঠিকভাবে করতে পারলেই হলো, আমরা তা পারি। এখন লেখার ক্ষেত্রে জটিল ভাষা হিসাবে, কিছু নিয়ম কানুন জেনে লেখা ভালো। না জানলে মনে হয় না, খুব একটা ক্ষতি আছে। মানুষকে মনের ভাব ঠিকঠাক বুঝাতে পারছি কিনা সেটাই মুখ্য।
ভাষা নিয়ে আপনার এই দ্বিতীয় পোস্টটাও উপভোগ করলাম। আমার ব্লগে বড় লেখা পছন্দ। এখন সবাই কেনো যেন ছোটো লেখা পড়তে চায়। তবে বড় লেখা পড়ে আমি আরাম পাই। যথেষ্ট কাজ করেছেন, তথ্য সংগ্রহ করেছেন, এই লেখার জন্য। যথেষ্ট কষ্টসাধ্য কাজ করেছেন। সেটার ফল আমরা ভোগ করেছি। গোছানো তথ্য একসাথে পেয়ে গিয়েছি। আপনাকে ধন্যবাদ।
ইশারার ভাষা নিয়ে আমার বেশ আগ্রহ ও শেখার ইচ্ছা আছে। আপনার শেয়ার কথা ইশারা ল্যাংগুয়েজের ছবিটা সেভ করে রেখেছি। সময় বুঝে প্র্যাকটিস করব। কথা বলতে না পারা, চোখে না দেখা, কানে না শোনা মানুষদের নিয়ে আসলেই ভাবা উচিত। বিশেষ করে অন্ধ মানুষের সংখ্যা দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে, সেদিন এক রিপোর্টে পড়লাম।
পোস্ট প্রিয়তে নিলাম।
২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৫৯
শেরজা তপন বলেছেন: ভাষা নিয়ে দুই পর্ব লিখে বাকি পর্বগুলো লেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছিলাম।
আপনার এই মন্তব্য পড়ে মনে হল আর কিছু পর্ব লেখা উচিৎ।
চমৎকার মন্তব্যে অনুপ্রাণিত করার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৮
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপাতত প্রথমেই জায়গা দখল করলাম