নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে মনে হয় জীবনটা অন্যরকম হবার কথা ছিল!

শেরজা তপন

অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...

শেরজা তপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সহজ ভাষায় লিখলে হয় সস্তা-দরের লেখক!

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:২৭


ওপার বাংলার কথাশিল্পী সমরেশ মজুমজারের সাথে হুমায়ূন আহমেদের বেশ খাতির ছিল।তিনি ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন, রবীন্দ্রনাথ ও শরতচন্দ্রের পরে বাংলা ভাষার সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক ‘হুমায়ূন আহমেদ’।
তবে আমার মত ভিন্ন; আমি মনে করি নিজের জীবদ্দশায় জনপ্রিয়তার নিরিখে হুমায়ূন আহমেদের অবস্থান রবীন্দ্রনাথের পরেই।কেউ কেউ এই জনপ্রিয়তার বিষয়টা স্বীকার করে নিলেও তাঁর সাহিত্যমান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
হুমায়ূন আহমেদ কিজন্য এত জনপ্রিয় হলেন- কিংবা তাঁর এই বিপুল জনপ্রিয়তার রহস্য কি?
এর উত্তরঃ সম্ভবত সহজ সাবলীল ভাষা ও কথা এবং মানুষের মন ও মগজে ঢুকে যাওয়া।

বিবিসি থেকে তাঁকে একবার প্রশ্ন করা হয়েছিল ‘হিমু’ নিয়ে- তাঁর উত্তরে উনি কি বলেছেন দেখেন;
হুমায়ূন আহমেদঃ যে হিমু আমি লিখি ঐ হিমু হওয়া খুবই জটিল ব্যাপার তো বটেই। আমি মানুষের অনেক আশা –ইচ্ছা পূরণের ব্যাপার আছে মানুষ অনেক কিছু করতে চায় কিন্তু করতে পারে না। মানুষের যে ইচ্ছাপূরণের যে বিষয়গুলো আছে সেগুলো আমি হিমুর মাধ্যমে ঐ ইচ্ছাপূরণের ব্যাপারগুলো ঘটাই। যে কারণেই আমার ধারণা পাঠক এটাকে এতো পছন্দ করে। এরা হতে চায়। এরা করতে চায়। এরা চায় প্রত্যেকেই যে আমার একটা আধ্যাত্বিক ক্ষমতা থাকবে। মানুষের ভুত-ভবিষ্যত বলে দিতে পারব। সবার ভেতরে এটা একটা গোপণ বাসনা। ওদের গোপন বাসনা আমি পথে ঘাটে হেটে বেড়াবো- কেউ আমাকে কিছু বলবে না। আমাকে চাকরি করতে হবে না। কোন কিছুই করতে হবে না। আমার জীবন চলবে জীবনের মতো। কোন বাড়ির সামনে গিয়ে যদি দাড়াই ওরা আমাকে খাবার দিবে। এই যে গোপন ইচ্ছেগুলো যেগুলো থাকে সেই ইচ্ছেগুলি আমি পূরণ করি হিমু উপন্যাসে।

তিনি এভাবেই সাধারণ মানুষের পালস ধরেছেন। আসলে যে যতই ভাব-ভঙ্গী করি না কেন, পণ্ডিতি ফলাই না কেন- দিন শেষে আমরা ওই সাধারণের কাতারেই পড়ি।
পৃথিবীর অল্প কিছু ভাগ্যবান লেখকদের মধ্যে তিনি একজন যার, সাহিত্যিক হবার জন্য স্ট্রাগল করতে হয়নি। তাঁর প্রথম উপন্যাস ছাপা হয়েছে ছাত্র অবস্থায়। যেটা ছাপার জন্য রাত দিন নিজের কাজ ফেলে উদ্ভ্রান্তের মত ছুটোছুটি করেছেন আহমেদ ছফার মত একজন বিখ্যাত মানুষ।
পি এইচ ডি করে আসার পরে দেশে ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি লেখালেখি ছিল তাঁর নেশা। এ কাজ না করলেও দিব্যি তাঁর জীবন চলে যেত। তিনি চাইলে দেশের বাইরের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরি নিয়ে চলে যেতে পারতেন।
তাঁর লেখা চরিত্র হিমু, শুভ্র, মিসির আলী যেন সারা যব সমজকে একবারে নাড়িয়ে দিয়ে গেছে। তাঁর লেখা ভৌতিক আধি ভৌতিক গল্পগুলো যেন আমরা নিজের অজান্তেই বিশ্বাস করে ফেলেছি। পড়ব না পড়ব না করে খুব তাচ্ছিল্যভরে তাঁর একটা বইয়ের দু’পাতা উলটে পুরো বইটা এক নিঃশ্বাসে শেষ করে দারুণ একটা অসম্ভব সমাপ্তিতে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে অন্য এক ঘোরের জগতে হারিয়ে গিয়ে ফের আড্ডায় গিয়ে ‘হুমায়ূন আহমেদ’ একটা ফালতু লেখক বলে গালি দিয়েছি।
একই গল্প যেন বার বার পড়ছি; তাঁর প্রতিভা শেষ হয়ে গেছে, জাতিকে দেবার আর কিছু নেই। এর থেকে অবসরে যাওয়া উচিৎ , এমন খিস্তি খেউড় করেও পুরো বইটা শেষ করেছি।
হুমায়ূন আহমেদের নাটক সিনেমা কিচ্ছু হয়নি কিচ্ছু হয়নি করেও দু-বার তিনবার দেখেছি। কত গুণীজন হিতোপদেশ দিয়েছেন তাঁর মোটেও এসব লাইনে আসা ঠিক হয়নি; প্রতিভার অপচয় করছেন মাত্র। তাঁর উচিৎ সিরিয়াস লেখালেখিতে মনোযোগ দেয়া।
পলিমার রসায়নের মত কঠিন সাবজেক্টে পি এইচ ডি করা একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যখন সহজিয়া ভাষায় আবজাব গল্প লিখে সাধারণ পাঠকের বুক আর মগজের মধ্যে সেধিয়ে যাচ্ছে তখন ঋদ্ধ পণ্ডিত অতি জ্ঞানীগুণী সাহিত্যজন ভাষা ও শিল্প সাহিত্যের কাণ্ডারিরা ভয়ানক হতাশায় মুষড়ে পড়লেন! তাঁর লেখাকে অখাদ্য কুখাদ্য বলে গালি দেয়া হোল- তাঁকে আখায়িত করা হোল বাজারি লেখক বলে। বহুভাবে নানা দিক থেকে সমালোচনার বানে তাঁকে বিদ্ধ করা হল, বলা হল; তাঁর লেখায় শিক্ষণীয় কিছু নাই। বাংলা সাহিত্য উচ্ছন্নে গেল এবার। বাংলা ভাষা ও শিল্প সাহিত্যের গৌরব ভুলণ্ঠিত হল এবার এই কু-সাহিত্যেকের হাতে।

আমার 'ভাষা তুমি কার'-এর আজকের এই পর্ব আমি উতসর্গ করছি কালজয়ী সাহিত্যিক আপামোর বাঙ্গালী জনগনের জন্য সহজিয়া ভাষার লেখক ‘হুমায়ুন আহমেদকে’।

এই ভদ্রলোক তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলা প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেছেন অতি সাবলীলভাবে। নিজের সন্মন্ধে অতি উচ্চ-ধারনা কোনদিন তাঁর ছিল না। তথাকতিথ বাংলা ভাষার পণ্ডিত শ্রেণী ও শিল্প সাহিত্যের রক্ষকদের একের পর এক সুতীক্ষ্ণ ধারালো প্রশ্নবানে তিনি ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন হয়তোবা কিন্তু মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে অতি বিনয়ের সাথে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেছেন।
(হুমায়ূন আহমেদ আমার সবচেয়ে প্রিয় লেখক নন- কিন্তু স্বাধীনতাত্তোর বাংলা সাহিত্য তাঁকে ছাড়া কল্পনা করা যায় না। এই লেখাটা এক পর্বে হবে না, তাই দুই কিংবা তিন পর্বে দিতে হবে। )
নীচের লেখাগুলো পড়তে থাকুন; আপনার প্রশ্নের অনেক উত্তর পেয়ে যাবেন।

ডগার এলেন পোকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, একজন বড় লেখক হতে হলে কী লাগে?
তিনি জবাব দিলেন, একটা বড় ডাস্টবিন লাগে। লেখা নামক যেসব আবর্জনা তৈরি হবে, তা ফেলে দেওয়ার জন্যে।

লেখকরা ক্রমাগতই আবর্জনা তৈরি করেন। নিজেরা তা বুঝতে পারেন না। একজীবনে আমি কী পরিমাণ আবর্জনা তৈরি করেছি, ভেবেই শঙ্কিত বোধ করছি। যখন যা মনে আসছে লিখে যাচ্ছি। চিন্তা-ভাবনার প্রয়োজন বোধ করছি না। লেখকের চিন্তা-ভাবনাহীন লেখা পাঠক যখন পড়েন, তখন তারাও চিন্তা-ভাবনা করেন না। এই জাতীয় লেখার ভালো আশ্রয় ডাস্টবিন; পত্রিকার পাতা না।~ ফাউন্টেন পেন সিরিজ নিয়ে হুমায়ূন আহমেদ
***হুমায়ূন আহমেদের জবানীতে***
মি যে ফ্ল্যাটে থাকি, তার পাশের ফ্ল্যাটে থাকেন মাজহারুল ইসলাম, অন্যপ্রকাশের মালিক। তিনি হুমায়ূন আহমেদ টাইপ বাজারি লেখকদের বই ছেপে কুখ্যাতি অর্জন করেছেন। তার স্টলের সামনে নাকি ভিড় লেগে থাকে। অপরিপক্ব তরুণ-তরুণীরা মাছির মতো ভিড় করে বাজারি লেখকদের বই কিনতে চায়।
ভালো কথা, বাজারি লেখক বিষয়টি আরো পরিষ্কার করা দরকার। বাজারি লেখক মানে তুচ্ছ লেখক। তেল-সাবান-পেঁয়াজ-কাঁচামরিচ বিক্রেতা টাইপ লেখক। এদের বই বাজারে পাওয়া যায় বলেও বাজারি। যাঁদের বই বাজারে পাওয়া যায় না, তাঁদের বাড়িতে কার্টুন ভর্তি থাকে, তাঁরা মহান লেখক, মুক্তবুদ্ধি লেখক, কমিটেড লেখক, সত্যসন্ধানী লেখক। তাঁদের বেশির ভাগের ধারণা, তাঁরা কালজয় করে ফেলেছেন। এঁরা বাজারি লেখকদের কঠিন আক্রমণ করতে ভালোবাসেন। তাঁদের আক্রমণে শালীনতা থাকে। তাঁরা সরাসরি কখনো আমার নাম নেন না। তবে বুদ্ধিমান পাঠকরা বুঝে ফেলেন কাকে ধরা হচ্ছে। তাঁদের আক্রমণের নমুনা, 'অন্যপ্রকাশের সামনে জনৈক বাজারি লেখকের বইয়ের জন্য তরুণ-তরুণীর সমাবেশ দেখে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলতে হয়। এরা সৎসাহিত্য থেকে বঞ্চিত। কষ্টকল্পিত উদ্ভট চরিত্রের গালগল্পে বিভ্রান্ত। বাজারি লেখক এবং তার প্রকাশকের অর্থ জোগান দেওয়া ছাড়া এই তরুণ-তরুণীরা আর কিছুই করছে না।...'
কালজয়ী এসব মহান লেখকের সঙ্গে মাঝে মাঝে আমার দেখা হয়ে যায়। বেশির ভাগ দেখা হয় দেশের বাইরের বইমেলায়। আমার সঙ্গে দেখা হয়ে গেলে তাঁরা কিছুটা বিচলিত বোধ করেন। কেন করেন তা আমার কাছে স্পষ্ট নয়। এমন একজনের সঙ্গে কথোপকথনের নমুনা;
কালজয়ী : কেমন আছেন?
আমি : জি ভালো।
কালজয়ী : ইদানীং কিছু কি লিখছেন?
আমি : একটা সস্তা প্রেমের উপন্যাস লেখার চেষ্টা করছি। যতটা সস্তা হওয়া দরকার ততটা সস্তা হচ্ছে না বলে অস্বস্তিতে আছি। আপনার দোয়া চাই যেন আরেকটা সস্তা লেখা লিখতে পারি।
কালজয়ী : (গম্ভীর)
আমি : আপনি কি মহান কোন লেখায় হাত দিয়েছেন?
কালজয়ী : আপনার রসবোধ ভালো। আচ্ছা পরে কথা হবে।

কালজয়ীরা আবার স্তুতি পছন্দ করেন। তাঁরা নিজেদের গ্রহ মনে করেন বলেই উপগ্রহ নিয়ে ঘোরাফেরা করতে পছন্দ করেন। গ্রহদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ কখনোই থাকে না, কিন্তু উপগ্রহের সঙ্গে থাকে। উপগ্রহরা উপযাজক হয়েই টেলিফোন করেন। তাঁদের টেলিফোন পেলে আতঙ্কিত বোধ করি। কেন আতঙ্কিত বোধ করি তা ব্যাখ্যা করছি_
উপগ্রহের টেলিফোন এসেছে, কণ্ঠ উত্তেজিত। উত্তেজনার ভেতর চাপা আনন্দ।
হুমায়ূন ভাই! আপনাকে তো শুইয়ে ফেলেছে।
কে শুইয়েছেন?
বদরুদ্দীন উমর।
কোথায় শোয়ালেন?
সমকাল পত্রিকার সেকেন্ড এডিটরিয়েলে। উনি বলেছেন, আপনার লেখায় শিক্ষামূলক কিছু নাই।
এটা তো উনি ঠিকই বলেছেন। আমি তো পাঠ্যবই লিখি না। আমার বই শিক্ষামূলক বই হবে কেন? জীবনে একটাই পাঠ্যবই লিখেছিলাম_ কোয়ান্টাম রসায়ন । সম্ভবত ওনার চোখ এড়িয়ে গেছে।
না হুমায়ূন ভাই, আপনি জিনিসটা হালকা দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। একটা বাদানুবাদ হওয়া উচিত। আপনি একটা কাউন্টার লেখা দিন। এটা আমার রিকোয়েস্ট।
আমি টেলিফোনের লাইন কেটে দিলাম। রাতের আড্ডায় আমার সমকাল-এর পাতায় শুয়ে পড়ার ঘটনা বললাম। বন্ধুরা আনন্দ পেল। আমার যেকোনো পতন আমার বন্ধুদের কাছে আনন্দময়।
এখন শিক্ষা বিষয়ে বলি। অতি বিচিত্র কারণে বাংলাদেশের মানুষ সব কিছুতেই শিক্ষা খোঁজে। গল্প-উপন্যাসে শিক্ষা, নাটক-সিনেমায় শিক্ষা। একসময় ঈদে প্রচারিত হাসির নাটকের শুরুতেই আমি লিখে দিতাম_ 'এই নাটকে শিক্ষামূলক কিছু নেই।'
সাধারণ মানুষ এবং অসাধারণ সমালোচকরাই শুধু যে শিক্ষা খোঁজেন তা নয়, দেশের প্রধানরাও শিক্ষা নিয়ে আগ্রহী। তাঁরাও একে অন্যকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য নানান ব্যতিক্রমী কর্মকাণ্ড হাতে নেন।
শিক্ষা নিয়ে এত উদ্বেগের পরও জাতি হিসেবে আমরা ক্রমেই মূর্খ হচ্ছি কেন কে বলবে?
***
তাকে একবার প্রশ্ন করা হয়েছিল অতীতের অনেক তুমুল জনপ্রিয় লেখক কালের গর্ভে হারিয়ে গেছেন। আপনার ব্যাপারে কি মনে হয়?
উত্তরে তিনি বলেছিলেন: মি অত্যন্ত ভাগ্যবান। লেখক হিসেবে আমার আজ প্রায় ৪০ বছর হয়ে গেল। অথবা আরেকটা ব্যাপার হতে পারে, এত দিনে আসলে আর কোনো লেখক তৈরি হয়নি।
আমি নিজেকে মনে করি নতুন লেখকদের জন্য একটা বিভীষিকা। কথাটা বুঝিয়ে বলি। বিভীষিকা এই অর্থে যে, পাঠক বই কেনে লাইব্রেরি থেকে। বইয়ের বিক্রেতারা যেসব বই বিক্রি হবে, সেগুলো সাজিয়ে রাখে। যেগুলো বিক্রি হয় না, সেগুলো রাখে না। তারা তো সাহিত্যসেবা করতে আসেনি। তারা চায় বই বিক্রি করতে। আমার নতুন বই বের হবে, আমি জায়গা দখল করব। দখলকৃত জায়গার পরিমাণ বাড়তেই থাকবে। অন্যদের বই প্রদর্শন করারই সুযোগ নেই। এই অর্থে আমি একটা বিভীষিকা।
আরেকটা ভুল কথা আমার সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে। আমি নাকি বইয়ের পাঠক বাড়িয়েছি। আমি কিন্তু পাঠক বাড়াইনি। পাঠক বাড়ালে তো সবার বই-ই বেশি বেশি বিক্রি হতো। আমি শুধু আমার নিজের পাঠক বাড়িয়েছি। পাঠক যদি বাড়াতাম, তাহলে তো সব বইয়ের বিক্রি বাড়ত।
পড়ার ব্যাপারটা খুবই ব্যক্তিগত একটা বিষয়। যে বইটা তুমি পড়তে চাও না, সেটা তোমাকে বিনা পয়সায় উপহার দিয়ে সঙ্গে ২০০ টাকা দেওয়া হলেও তুমি বইটা পড়বে না। জোর করে আর যা-ই হোক, কখনো বই পড়া হয় না।
***
কজন লেখকের লেখা কারো অপছন্দ হতেই পারে কিন্তু তাঁর লেখা যদি যদি কোন ধর্ম গোষ্ঠী জাতির জন্য অহিতকর না হয় তবে তাঁকে কিংবা তাঁর বই পরিত্যাগ করতে পারেন বা এড়িয়ে চলতে পারেন। ধরুন আপনার লেখা পছন্দ নয় বলে কেউ আপনার সামনাসামনি মৃত্যু কামনা করছে; লেখক হিসেবে আপনার অনুভুতিটা কেমন হবে?

হুমায়ুন আহমেদের জবানীতে এমন একটি ঘটনার কথা শুনুন;
মাদের আশপাশে বিকৃত মানসিকতার মানুষের সংখ্যা কি বাড়ছে? মনে হয় বাড়ছে। একজনের কথা বলি, সে আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য হাস্যকর কাণ্ডকারখানা শুরু করল। একটা পর্যায়ে গেটের সামনে স্ট্রাইক করার মতো অবস্থা। মহা বিরক্ত হয়ে তাকে আসতে বললাম। ২৩-২৪ বছরের যুবক। কঠিন চোখমুখ। আমি বললাম, এখন বলো, আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য এত ব্যস্ত হয়েছ কেন? বিশেষ কিছু কি বলতে চাও?
চাই।
তাহলে বলে ফেলো।
আপনার লেখা আমার জঘন্য লাগে।
এই কথাটা বলার জন্য এত ঝামেলা করেছ?
হ্যাঁ! কারণ সরাসরি এই কথা আপনাকে বলার কারোর সাহস নাই। সবাই আপনার চামচা।
আমি বললাম, আরও কিছু কি বলবে?
হ্যাঁ।
বলে ফেলো।
সে ইংরেজিতে বলল, আই ওয়ান্ট ইউ টু ডাই সুন।
আমি কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থেকে বললাম (ইংরেজিতে), আই হোপ অ্যান্ড প্রে ইউ হ্যাভ আ লং অ্যান্ড মিনিংফুল লাইফ।
***
প্রশ্ন: কাঠপেন্সিল বা বলপয়েন্টে অনেক ঘটনা আপনি লিখেছেন। এর বাইরে বলার মতো কোনো ঘটনা কি এই মুহূর্তে মনে পড়ছে, যেটা লেখা হয়নি?
হুমায়ূন আহমেদ: সেবার চট্টগ্রামে একটা অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। আমাকে খুব আদরযত্ন করে নিয়ে যাওয়া হলো। গিয়ে বুঝলাম, জীবনে যত বোকামি করেছি, তার মধ্যে এটা অন্যতম। একজন বক্তা মঞ্চে গেলেন আমার সম্পর্কে বলতে। ভদ্রলোক যা বললেন তার সারবস্তু হচ্ছে, হুমায়ূন আহমেদের পাঠকদের সবাই ‘পোলাপান’ এবং এই লেখক শুধু মধ্যবিত্তদের নিয়ে লেখেন। উনি মাঝিদের নিয়ে কিছু লেখেননি। খেটে খাওয়া মানুষদের নিয়ে কিছু লেখেননি।
যিনি বলছেন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। একসময় আমার বন্ধুমানুষ ছিলেন। অকস্মাত্ এই কঠিন আক্রমণে আমি যাকে বলে হতবাক। তার চেয়ে বেশি অবাক হলো অনুষ্ঠানে আগত দর্শকেরা। দেখলাম, তারা এই মন্তব্য নিতে পারছে না।
আমি বক্তৃতা দিতে উঠে অতি বিনয়ের সঙ্গে জানালাম—এই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ লেখক যাকে বলা হয় তিনি সারা জীবন রাজা-বাদশা-রাজকন্যা ছাড়া অন্যদের নিয়ে কিছুই লেখেননি। আমি তো তাও মধ্যবিত্ত নিয়ে লিখি। উনি তো রাজা-বাদশার নিচেই নামেননি। তাঁর নাম উইলিয়াম শেক্সপিয়ার। লেখকের যদি ক্ষমতা থাকে তিনি যেকোনো বিষয় নিয়ে ভালো লিখতে পারেন। কোন বিষয় নিয়ে লিখছেন সেটা নয়। লেখকের ক্ষমতা কতটুকু সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। লেখক হতে হলেই শুধু মাঝি-মল্লা গরিব খেটে খাওয়া মানুষদের নিয়ে লিখতে হবে, এই যুক্তি ভুল যুক্তি। মানুষের সম্পর্কটা আসলে গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্ক রাজা-রানির বেলায় যা মধ্যবিত্তদের বেলায়ও তা।
***
আরেকটি সাক্ষাতকারের খণ্ডিত অংশঃ
হু।আ। এখন এক ধরনের সাহিত্যচর্চা শুরু হয়েছে, অর্থহীন কিছু শব্দ_ শব্দের পর শব্দ কয়েক পাতা জুড়ে লেখা হয়। টানা তিন চারপাতা পড়েও তার একবিন্দু অর্থ আমি বুঝি না। এই গল্পহীন শব্দচর্চার কোনো মানে হয় না। অথচ একশ্রেণীর কাগজ আর কিছু লোকজন সেই অর্থহীন প্যাচালকেই মহাসাহিত্য বলছেন। এটা সাহিত্যের জন্যই শেষ পর্যন্ত ক্ষতিকর।
প্রশ্নঃ কিন্তু ওই ধরনের শব্দচর্চা তো জনপ্রিয় হচ্ছে না?
হু।আ। জনপ্রিয় বা অজনপ্রিয় সাহিত্য বলে কোনো ব্যাপার নেই। লেখাটি বোঝা গেল কিনা, লেখক বলতে চাচ্ছে কী_ সেটা একজন পাঠক হিসেবে আমার তো বুঝতে হবে। নাকি নিজেরা লিখলাম, নিজেরা বুঝলাম, আর যারা বুঝলো না; তাদের মেধাহীন বললাম, সেটা কী ধরনের সাহিত্য, আমি বুঝি না।
প্রশ্নঃ এই ধরনের সমালোচকরাই জনপ্রিয় লেখামাত্রই শিল্পমানশূন্য- এমন বলে থাকেন?
হু।আ। লেখা মানেই পাঠকের পড়ার জন্য। নইলে একজন লেখক নিজের লেখাটি লিখে বালিশের নিচে লুকিয়ে রাখতেন। তিনি প্রকাশ করতেন না।
***
ব্লগে সম্ভবত মন্তব্যের বেশ আকাল যাচ্ছে। আমি সেটা নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাচ্ছি না। আমার লেখা আমি লিখে যাচ্ছি, যার ইচ্ছে হয় পড়বেন যার ইচ্ছে না হয় পড়বেন না। মন্তব্য করা না করা ব্লগারদের মর্জি।যারা হুমায়ূন আহমদকে সস্তা দরের বাজারী লেখক কিংবা নিচুমানের সাহিত্যিক মনে করে আত্মতৃপ্তি অনুভব করে নিজেদের সাহিত্য ও ভাষার রক্ষাকর্তা ভাবেন তাদের জন্য এ লেখাটা গত্রদাহের কারন হবে। হলে হবে তাতে কি? তবে আমি ঘুমাতে যাই-শুভরাত্রি সবাইকে।

মন্তব্য ৮১ টি রেটিং +১৫/-০

মন্তব্য (৮১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

রানার ব্লগ বলেছেন: আজ বই মেলায় এমন এক পাগলের স্বাক্ষাতকার শুনলাম। সে দম্ভের সাতে বলছে যে বই মেলা সব মান হীন লেখকে ভরে গেছে, মানহীন লেখকদের বই সাত আট সংস্করন বের হচ্ছে। এর পর তিনি তার প্রকাশিত বই থেকে এক পাতা পড়লেন। ডিকশেনারির সমস্ত কঠিন শব্দ দিয়ে ভরা সেই এক পাতা, যা বোঝার সাধ্য খোদ ডঃ মোহাম্মাদ শহীদুল্লাহ এর ও বোধ হয় নাই।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:১৩

শেরজা তপন বলেছেন: ভাষা অতীব সহজ করলে পণ্ডিতের পান্ডীত্য হুমকির মুখে পড়ে কিংবা এটা এলিটভুক্ত না হবের ভয়েই হয়তো এত বেশী জটিল হয়েছে।
এটা আমার কথা নয় 'মুজতবা আলীর' বইয়ের থেকে কোট।
সেই অতি আর্য পন্ডিত 'পানিনি'র ভুত এখনো নব্য পণ্ডিতদের মাথা থেকে নামেনি। এদের মধ্যে চরম অহংবোধ কাজ করে, এরা ভাবে যে, এদের দুর্বোধ্য ভাষা শুধু পণ্ডিত শ্রেণীদের জন্য- সাধারণ মানুষ বুঝলেই জাত হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা :)

২| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:১৭

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: শেরজা ভাই বিশ্বাস করেন আমি কঠিন শব্দ ইউজ করা কোন পোস্ট /কবিতা পর্যন্ত পড়িনা।
সহজ সরল বোধগম্য ভাষার প্রয়োগই সুন্দর।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:১৪

শেরজা তপন বলেছেন: আমি ব্যাবহার করি মাঝে-মধ্যে, করতে হয়। নিজেকে কিছু সময়ের জন্য পণ্ডিতশ্রেণী ভাবতে ভাল লাগে :)

৩| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৩৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

বড়ই সৌন্দর্য।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:১৫

শেরজা তপন বলেছেন: কি আচানক- আপনার এইটা তো ব্লগের হিট ডায়লগ!!!

৪| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৩৭

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:

ভালো লিখেছেন।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

শেরজা তপন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভাল মন্দ লিখেছি কি না জানিনা। তবে নিজেকে নিয়ে এমন আত্মবিশ্বাস থাকা উচিৎ সব লেখকের।
কারো দ্বারা প্ররোচিত হওয়া উচিৎ নয়। অনন্য ও ন্যাচারাল থাকা উচিৎ।

৫| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৫৩

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: আপনি যতবেশী দুর্বোধ্য টাইপের কোবতে লিখতে পারবেন আপনি ততো বড়ো কবি, এই দুনিয়াডা আসলে খুবই গোলেমালে।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:২০

শেরজা তপন বলেছেন: একদম ঠিক- কবিতা পড়তে পড়তে যদি বার বার ডিকশোনারি না-ই উল্টালাম তবে কিসের সে কবিতা হে??
আগে কবিতার অন্তর্নিহিত ভাব বোঝার জন্য মানুষ ঘোরের জগতে যাইত আর এখন প্রতিটা শব্দের মানে বোঝার জন্য ঘোরের মধ্যে চলে গিয়ে গিট্টু লাগিয়ে ফেলে।

৬| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:১৬

মিরোরডডল বলেছেন:





হুমায়ূনকে যারা মানহীন লেখক বলে, তারা হুমায়ুনের মতো একটা লেখা লিখে দেখাক।

সহজ সাবলীল ভাষা ও কথা এবং মানুষের মন ও মগজে ঢুকে যাওয়া।

শুধু তাই না, এই লেখার যাদুকর একই লেখায় মানুষকে হাসায় এবং কাঁদায়।
তার অনেক অনেক লেখা আছে হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
হুমায়ুন আহমেদ এক কথায় জিনিয়াস!

তার সব লেখা পড়া হয়ে গেছে, নতুন লেখা মিস করি।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩১

শেরজা তপন বলেছেন: এ লেখককে বাংলা ভাষাভাষি মানুষ অনাদিকাল মিস করবে। এমন সহজিয়া ভাষায় ম্যাজিকের মত করে কেউ কারো মনে মগজে শিরায়-উপশিরায় ঢুকে যেতে পারে নি।
ঠিক বলেছেন তিনি একজন যাদুকর লেখক ছিলেন। এভাবে কেউ আর একটা জাতিকে সম্মোহিত করতে পেরেছে বলে মনে হয় না।
সব লেখা কি পড়েছেন? মনে হয় না- আরো অনেক টুকরো লেখা আছে, সম্ভবত আপনার পড়া হয় নি।

৭| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:৪২

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আমার কিশোর বেলায় এক পাঠক আমাকে হুমায়ুন স্যারকে পড়তে দেখে একটা বই এনে দিলেন (সেই সময়) আর বললেন এসব পড়। সাহিত্যে কাকে বলে বুঝবে। আমি তখন জবাবে বলেছিলাম হাতে আরো দুটো রয়েছে স্যারেরগুলো শেষ হলে এটাও পড়বো। আগামী মাসে বইটা রিটার্ন করে দিব। আজ আপনার লেখনীটি একটু ব্যাস্ততার মাঝেও মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়েছি। হুমায়ুন স্যার আমার অনেক প্রিয় একজন লেখক।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৪

শেরজা তপন বলেছেন: হুমায়ুন আহ্মেদের বই এর মধ্যে এক রকমের যাদু আছে কিন্তু বেশীরভাগ লেখকের মধ্যে প্রচুর সাহিত্যগুন থাকার পরেও যেই যাদুটা অনুপস্থিত। বাংলা সাহিত্যে তাঁর পরে অনেকেই চেষ্টা করেছে তাঁর মত করে লিখতে কিন্তু আর হয়ে ওঠেনি- হুমায়ূন আহমেদ একজনই হয়, একবারই আসে। ভাল লাগল আপনার মন্তব্য। ভাল থাকুন।

৮| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ২:২৯

আরেফিন৩৩৬ বলেছেন: আপনি যত কথাই বলেন, যেভাবেই বলেন, হুমায়ুন আহমেদ বাজারী লেখকই, তবে উনি টেলিভিশন নাটকে অসাধারণ। উনার দেয়াল ; একটা জায়গায় ভালো। উনার পাকচক্র আছে, জনসমর্থন পাওয়া ভালো। এটা একটা জনপ্রিয়তার মানদন্ড। সেই-ই প্রকৃত সাহিত্যিক যিনি নিজের পাঠককে অন্যের লিখার পাঠ পড়তে কানে ধরে নিয়ে যায়। হুমায়ুন সেখানে ব্যর্থ। চপনি আমাকে কি মনে করবেন সেটি আপনার ব্যাপার। বাংলাদেশের লেখার মান একদম ফেলে দিছে হুমায়ুন আহমেদ।
সেটি আবার কারো তুলতে হবে, এমন কি মানুষকে কৌশলে রাজনীতি বিমুখও করেছে উনি। এগুলো আবার পুনর্গঠন করতে হবে। একটা কাপুরষ, ভীত এবং হোদাই প্রজন্ম তৈরি করেছেন। যারা মরতে জানে না, রক্ত দিতে জানে না। হুমায়ুন সাহিত্যের সবচেয়ে নষ্ট দায় এখানেই। একটা বীর জাতিকে হলুদ পাঞ্জাবি পড়িয়ে লুলা বানিয়ে দিয়েছে, যার কোন রাষ্ট্র নাই, যাকে ফ্যাসিবাদীরা পিষে দিলো। এগুলো চিন্তা করতে শেখেন।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:০৪

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের উত্তর দিতে হলে অনেক সময় ও ধৈর্য্যের প্রয়োজন। এই মূহুর্তে আমি দুঃখিত এতটা সময় দিতে পারছি না বলে।
তবে একটা কথা বলি; লেখকদের কোন দায়বদ্ধতা নেই সমাজের প্রতি। জনপ্রিয় হলে সমাজ অযথাই তাদের উপরে কিছু দায় চাপিয়ে দেয়, আর ব্যর্থ হলে তাঁকে আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করে, ভুলেও কেউ তাঁর কথা জিগায় না।
ও আর একটা কথা এই বাংলা ভাষা বাংলা ভাষা আর এর ঐতিহ্য বলে আমরা এত ফাঁকা বুলি দিই না- ভাল করে ইতিহাস ঘেটে দেখুন, বঙ্কিমের আগে লিখিত বাংলা ভাষার কোন পোষাকই ছিল না, পুরো ন্যাংটা ছিল। দু-চারজন বিদেশী এর ব্যাকারণের হাল না ধরলে এর গতিপথ কোনদিকে যেত ইশ্বর জানেন।

৯| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ভোর ৪:৪১

শ্রাবণধারা বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদ তার নিজের গুনে, তার সৃষ্টিশীলতা দিয়ে, জনপ্রিয়তায় অনন্য। কিন্তু তাকে রবীন্দ্রনাথের পাশে দাড় করালে ব্যাপারটা অস্বাভাবিক ঠেকে।

এর মানে হল আমরা আসলে রবীন্দ্রনাথ কে ভালো করে পড়িনি। আবার রবীন্দ্রনাথকে মোটামুটি ভালো কে পড়ার জন্যও অনেক পড়ালেখার পাশাপশি শুধু তার লেখা পড়ার জন্য ১০-১৫ বছর প্র‌য়োজন। একমাত্র অতি পড়ুয়া, এবং অতি ভাদাইম্যা ছাড়া এখনকার দিনে সংসারী লোকের পক্ষে রবীন্দ্রনাথ কে বুঝে ওঠা কঠিন। এই জন্য মানুষ হয় নোবেল পুরস্কার দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে মূল্যায়ন করে অথবা দেবতা জ্ঞানে পূজা করে । এতে দারুন একটা সুবিধা, কষ্ট করে বরীন্দ্রনাথের বড় বড় প্রবন্ধগুলো পড়ার এবং তার গভীর চিন্তাগুলোকে বোঝার দরকার পড়েনা।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩

শেরজা তপন বলেছেন: সাহিত্যের মানদন্ডে তাঁকে মোটেও রবীন্দ্রনাথের পাশে দাড় করানো হয়নি। এটা করা হয়েছে জনপ্রিয়তার নিরিখে।
আমাকে একটা ব্যাপার বলুন; রবীন্দ্রনাথ কোন বাংলায় সাহিত্য রচনা করেছেন, কাদের কথ্য বাংলায়?
তিনি তো এলোমেলো নবীশ একটা ভাষাকে ( কথ্য ভাষার অ-বোধ্য লিখিত রূপ) গড়েছেন ভেঙ্গেছেন জোড়াতালি দিয়ে সাফসুরোত
করে ভদ্রলোক বানানোর চেষ্টা করেছেন। তাঁকে সে সুযোগ দেয়া হয়েছিল- তাঁর সে স্পর্ধা ছিল। হুমায়ূন আহমেদের সেই স্পর্ধা বা
সুযোগ ছিল না- তাঁর সহজ ভাষায় লেখার চেষ্টাতেই যে গালি গালাজ শুনতে হয়েছে রবীন্দ্রনাথের মত হলে দেশ ছেড়ে পালাতে
হোতো।
আপনার শেষের কথাগুলো আসলে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যের প্রশংসা করে না বদনাম করে সেটা স্পষ্ট হয়েও হল না :)
যা হোক ভাল বলেছেন। ভাল লাগল মন্তব্য।

১০| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ভোর ৬:৪৯

কামাল১৮ বলেছেন: কবিদের মধ্যে সবথেকে দুর্বোদ্ধ কবিতা লিখতেন বিষ্ণু দে আর সহজ কবিতা লিখতেন জসীমউদ্দীন।দুই জনের কবিতাই ছাত্র থাকাকালীন সময়ে পড়া।লেখা পড়া ছেড়েছি সত্তুরের দশকের শেষের দিকে।তার পর বহু বছর ২০১৯ পর্যন্ত এক লাইন বালা কখনো লেখি নি।সামুতে যোগদিয়ে দুই এক লাইন করে লিখছি।সাহিত্যের উপর খুব একটা পড়াশোনাও তেমন নাই।দেশ,চতুরঙ্গ ,সমকাল,কালিকলম সাহিত্য পত্রিকা একসময় পড়তান।তাও গল্প কবিতার চেয়ে প্রবন্ধই বেশি পড়তাম।আর পড়তাম বামপন্থী সব রাজনৈতিক লেখা।
হুমায়ুনের প্রথম দুটি উপন্যাস ভাল লেগেছে।মধ্যাহ্ন ও বাদশা নামদার পড়েও অজানা অনেক কিছু জেনেছি।আপনার লেখা পড়েও অনেক কিছু জানা যায়।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৯

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার এই মন্তব্য পড়ে আমি অভিভুত হলাম কামাল ভাই! এত বড় মন্তব্য আপনি কম করেন । মধ্যাহ্ণ আর বাদশা নামদারের মত দুটো বই পড়েছেন জেনে আমি অভিভুত হলাম! হুমায়ুন আহমেদ বাদশা নামদার পড়ার জন্য যতটুকু খাটাখাটুনি করেছে সম্ভবত তাঁর থিসিস করার সময়েও এত খাটেনি সে (রূপকার্থে)।
আমি যতুকু জানি যা জানি তা সবাইকে জানানোর চেষ্টা করি- বাবা কইতেন, জ্ঞান বাটলে বাড়ে, আমি সেই কাজ করে যাচ্ছি। নিজের মধ্যে আটকে রেখে লাভ কি- কবরে নিয়ে গিয়ে কি করব?

১১| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৭:১৩

কামাল১৮ বলেছেন: “হুমায়ূনকে যারা মানহীন লেখক বলে, তারা হুমায়ুনের মতো একটা লেখা লিখে দেখাক“
মিররের এই যুক্তিটা মানতে পারলাম না।কেন যেন অন্যের মনে হয়।তার সাথে মানায় না।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫১

শেরজা তপন বলেছেন: কেউ কারো মতে হতে পারবে না - পৃথিবীর প্রতিটা মানুষই অনন্য, সেটা ঠিক।

১২| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৭:৫১

আহমেদ জী এস বলেছেন: শেরজা তপন ,




হুমায়ূন আহমেদ ঠিকই বলেছেন যে, মানুষের অনেক আশা –ইচ্ছা পূরণের ব্যাপার আছে, অনেক গোপণ বাসনাও আছে। মানুষ অনেক কিছু করতে চায় কিন্তু করতে পারে না।
মানুষের ইচ্ছাপূরণের সেই বিষয়গুলো তিনি তার লেখা চরিত্রগুলোর মধ্যে দিয়ে চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, সে কারনেই তিনি তার বিশাল একটা নিজস্ব পাঠককূল তৈরী করতে পেরেছেন।

যদিও আমি হুমায়ূন আহমেদ এর বই বেশী পড়িনি তবুও তার বিপুল জনপ্রিয়তার কারন বুঝতে পারি; তার সৃষ্ট চরিত্রের মধ্যে দিয়ে তিনি সাধারণ মানুষের বাসনাগুলোকেই নিখুঁত ভাবে তুলে ধরেতে পেরেছেন।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৬

শেরজা তপন বলেছেন: বেশী দরকার নেই শুধু কাঠ পেন্সিল, বল পয়েন্ট, ফাউন্টেন পেন, নিউয়র্কের আকাশে ঝকঝকে রোদ পড়লেই একজন হুমায়নকে জানার জন্য যথেষ্ঠ।
তাঁর দেখার দৃষ্টি বলার ভঙ্গী ভাবনাগুলো একটু ভিন্ন ছিল বৈকি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, হুমায়ূন আদ্দায় যেসব কথা বলে সেগুলো রেকর্ড করে রাখা উচিৎ তাঁর লেখার থেকে সেগুলো অনেক উচ্চমার্গের আলোচনা। একটা মানুষ কঠিন বিষয়ে পড়াশুনা করে - কঠিন ভাবনা ভেবে , কঠিন কঠিন সব আলোচনা করে অতি সহজভাবে সেটা প্রকাশ করে এটা যা-তা ব্যাপার নয়।
আপনার প্রায় নিঃসঙ্গ প্রবাস দিনগুলো কেমন যাচ্ছে? লেখালেখি কমে যাচ্ছে কেন?

১৩| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:০৪

কামাল১৮ বলেছেন: দুঃখিত,সত্তুরের দশক হবে না, হবে ষাটের দশকের শেষের দিকে।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৭

শেরজা তপন বলেছেন: এত বেশী বুড়া না হলেও চলবে- থাকেন না একটু যুবক।

১৪| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৪৯

অপু তানভীর বলেছেন: একজন লেখকের সব বই যে কালজয়ী হবে ভাল হবে সেটা মোটেই না। ভাল মন্দ মিলিয়ে থাকবে। হুমায়ূন আহমেদের বেলাতেও তাই।
জগতে সবাই সবার লেখা পছন্দ করবে না। এটাই স্বাভাবিক। তবে এখানে একটা ব্যাপার বিশেষ ভাবে লক্ষ্যনীয় । হুয়ায়ূন আহমেদকে অপছন্দ করা শুরু করেছে মূলত সেই সময়ের কিছু লেখকরা এই ঈর্ষা থেকে যে তাদের বই কেউ ছুয়েও দেখতে অথচ হুয়ামূন আহমেদের বই লাখলাখ কপি বিক্রি হচ্ছে। এটা তাদের সহ্য হচ্ছিল না। আরে যে পাঠক শ্রেণী আছে যারা তাকে অপছন্দ করে তাদের মূল একটা অংশই হচ্ছে এটা দেখানোর জন্য, দেখো আমি কত বড় পাঠক আমি কত বড় বড় বই পড়ি কত কঠিন বই পড়ে দুনিয়া উদ্ধার করছি, এই টাইপের । নিজেকে পশ প্রমানে হুমায়ূন সাহিত্যকে বাজারী তো বলতেই হবে!


কামাল সাহেবের মন্তব্য দেখে খুব পুলকিত হইলাম । কালাম সাহেব সাধারণত পোস্ট না পড়েই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মন্তব্য করে থাকেন। আমার পোস্টে মন্তব্যে বেশ কয়েকবারই সেটা ধরা খেয়েছিল । সেই সময়ে সে বলেছিল যে বাংলা সাহিত্যের সব কিছু তার পড়া শেষ তাই এখন পড়ার আগ্রহ কম । আর আজকে সে বলতেছে বাংলা সাহিত্যের বেশি কিছু পড়া হয় নি ! ব্লগে চাপা মারা সহজ কিন্তু সেই চাপা ধরে রাখা একটু কষ্টের ! =p~ =p~

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৩

শেরজা তপন বলেছেন: আরে যে পাঠক শ্রেণী আছে যারা তাকে অপছন্দ করে তাদের মূল একটা অংশই হচ্ছে এটা দেখানোর জন্য, দেখো আমি কত বড় পাঠক আমি কত বড় বড় বই পড়ি কত কঠিন বই পড়ে দুনিয়া উদ্ধার করছি, এই টাইপের ~ এ কথার সত্যতা নিয়ে আমি মোটেও সন্দিহান নই :)

কামাল ভাই কিন্তু (সম্ভবত) বরাবর আমাকে বলেছে, বর্তমান সাহিত্যিকদের সাহিত্য তাঁর বেশী পড়া হয়নি।
* এ বিষয়ে আমি আলোচনা উহ্য রাখছি।

* এত ভাল একটা বই বের করলেন কোন আও ভাও নাই যে- কাহিনী কি?

১৫| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৫১

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


বইমেলাটা বাঁচিয়ে রেখেছিলো হুমায়ন।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৫

শেরজা তপন বলেছেন: অথচ বাংলা একাডেমির ডিজি তাঁকে বের হয়ে যেতে বলেছিলেন- তাঁর জন্য নাকি বইমেলায় বিশৃঙ্খলা হচ্ছে এই যুক্তিতে। তিনি শেষদিকে বেশিরভাগ সময় মেলায় না যেতে পেরে মনে কষ্ট নিয়ে বাসায় বসে থাকতেন।

১৬| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৫৪

দীপংকর চক্রবর্ত্তী বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদ যেদিন মারা গিয়েছিলেন অনেক কান্না করেছিলাম সেদিন।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৭

শেরজা তপন বলেছেন: আমি অত ইমোশনাল নই- তবে ভীষন কষ্ট পেয়েছিলাম। যেমন; গতকাল পঙ্কজ উদাসের প্রয়ানে অনেক কষ্ট পেয়েছি। এভাবে আমাদের কৈশোরের যৌবনের সুন্দর সপ্নের স্মৃতিতে মুড়ে দেয়া মানুষগুলো একে একে হারিয়ে যাচ্ছে। :(

১৭| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৪০

মিরোরডডল বলেছেন:




কামাল১৮ বলেছেন: “হুমায়ূনকে যারা মানহীন লেখক বলে, তারা হুমায়ুনের মতো একটা লেখা লিখে দেখাক“
মিররের এই যুক্তিটা মানতে পারলাম না।কেন যেন অন্যের মনে হয়।তার সাথে মানায় না।



আমার মাঝে অন্যকেউ ভর করেছে কামাল :)

আসলে এই কথাটা আমি তাদের জন্য বলেছি, যারা একটা স্টেটমেন্ট দিয়ে হুমায়ূনকে মানহীন লেখক বলে।
অন্য কারো সাথে হুমায়ূনকে তুলনা করিনি, আবার হুমায়ূনের সব লেখার ঢালাও প্রশংসাও করিনি।

কিছু নাটক বা লেখা আছে হালকা যার মাঝে গভীরতা নেই, কিন্তু সেগুলোর সংখ্যা কম।
ভালো লেখা সংখ্যায় বেশি। সেই লেখককে এক শব্দে মানহীন লেখক বলে ট্যাগ দেয়া একেবারেই ঠিক না।

তাই যারা ওকে এভাবে একতরফাভাবে জাজ করে, তাদের কাছ থেকে নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, কোথাও কেউ নেই এরকম লেখা চাইতেই পারি।

থ্যাংকস কামাল।


২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:৪৩

শেরজা তপন বলেছেন: মানহীন হয়েছে তো কি হয়েছে- যার যেটা ভাল লাগে পড়বে যার যেটা ভাল না লাগে পড়বে না। এটা তো দয়া দাক্ষিন্য বা দান ছত্রের ব্যাপার না। কেউ বিখ্যাত হলে কেন তাঁর উপরে আমরা দায় চাপিয়ে দেই- আমরা, সমাজ বা রাষ্ট্র দায় চাপিয়ে দেবার কি যোগ্যতা রাখে? সে যদি বিখ্যাত না-ই হোত কে তাঁকে নিয়ে তাঁর লেখা নিয়ে মাথা ঘামাত?
মানুষ বিখ্যাত হয় নিজের প্রচেষ্টায়- যোগ্যতায়, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, ভয়ঙ্কর সংগ্রাম করে। যখন সে একবার উঠে দাঁড়ায়; তখুনি সবাই হামলে পড়ে বলে, আপনার কাছে সমাজের এই দাবী, রাষ্টের এই দাবী, ভাষার এই দাবী, যুব সমাজের এই দাবী।
তোর দাবীর মাইরে বাপ! না খেয়ে থাকলে কেউ জিগায় না।

১৮| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৪৫

মিরোরডডল বলেছেন:




শেরজার আগের পোষ্টে কিন্তু কমেন্ট রেখে আসছি।
শেরজাটা ভালোই বোকা, তা না হলে গানে দেয়া ছবির কথা বলে!

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৫৯

শেরজা তপন বলেছেন: হাঃ হাঃ আমি অতি গোপনে চোরা চাহনীতে দেখে এসেছি :)
পুরুষ মানুষ একটু বোকা থাকলেই ভাল-ঠিক কি না বলেন?

১৯| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:০৭

মিরোরডডল বলেছেন:




ওহ দেখেছে বলবেতো!
দেখা হয়ে গেছে, এখন ডিলিট করে দিচ্ছি।

অতি গোপনে চোরা চাহনীতে কেনো??
আমিতো শেরজার জন্যই দিয়েছি :)


২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:১৩

শেরজা তপন বলেছেন: বেশ মানসিক অস্থিরতায় আছি। সবকিছুতে মনঃসনযোগ করতে পারছি না ঠিকঠাক।

২০| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:২৪

মিরোরডডল বলেছেন:




কবে সুস্থির ছিলো শেরজা #:-S
শেরজাকে সবসময়ই অস্থির অশান্ত মনে হয়।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৪

শেরজা তপন বলেছেন: এক কাপ ঔষধী চা( চা-পাতা নেই) আর ছোটত এক বাটি চানাচুর মুড়ি মাখিয়ে নিয়ে বসলাম মন্তব্যের উত্তর দিতে।
কথা সত্যঃ মানসিকভাবে আমি খুবই অশান্ত প্রকৃতির একজন মানুষ। ইদানিং সব ঠিক ঠাক থাকার পরেও চারপাশের পৃথিবীটাকে খুব বিরক্তিকর মনে হয়।

২১| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৫০

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ওনার লেখা পড়ে যেমন আনন্দ পাওয়া যেত তেমনি অনেক ছোট ছোট খুটি নাটি বিষয় শিকা যেত। +++

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৮

শেরজা তপন বলেছেন: লেখা পড়ে শেখার পাশাপাশি মানসিক পরিতৃপ্তি ও আনন্দ একটা বড় ব্যাপার। এইটা অনেকে বুঝতে চায় না।

২২| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৫০

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে আমার সবচেয়ে বড় অবজারবেশন হচ্ছে, বাংলা সাহিত্যে আমি হুমায়ূন আহমেদের মতন এত সহজ ভাষায়, অল্প কথায়, জটিল অনুভূতিগুলোর প্রকাশ কেউ করতে পারেনি। আমি তার কিছু লেখা পড়ে বারবার ভেবেছি, যে কথা এই এক লাইনে বোঝানো যায়, তা প্রকাশে কেনো অন্য লেখকেরা এত শব্দ ব্যয় করেন?

হুমায়ূন আহমেদের হিমু সম্পর্কে আমার কিছুটা অভিযোগ আছে। তিনি জনপ্রিয়তা বা বিক্রির জন্য যে পরিমাণ হিমু লিখেছেন, সে সময় তিনি মিসির আলি বা সিরিজ ব্যতীত জীবনধর্মী বা ঐতিহাসিক যেসব লেখা তিনি বাংলা সাহিত্যে দিয়ে গিয়েছেন তার পিছনে ব্যয় করলে হয়ত আমরা অসাধরণ কিছু লেখা পেতাম।

হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে অনেকে বলেন, তিনি প্রেমের উপন্যাস লিখে ভরিয়ে ফেলেছেন। অথচ তার বিশুদ্ধ কোনো প্রেমের উপন্যাস আমি পড়িনি।

হুমায়ূন আহমেদকে বাংলা সাহিত্যে অন্য এক জায়গায় অন্যন্য ভাবতেই হবে, তার অতিপ্রাকৃত কিংবা ভৌতিক লেখাগুলো খুবই আন্ডাররেটেড, অথচ তার মানের অতিপ্রাকৃত বা ভৌতিক লেখা কেউ লিখেছে বলে আমার চোখে পড়েনি৷ ইংরেজি সাহিত্যের স্টিফেন কিং লেভেলের লেখা ছিল সেগুলো।

হুমায়ূন আহমেদ আমার জীবনে অনেক বড় একটা প্রভাব ফেলেছিলেন ঠিক এভাবে, আমি কিশোর পেরুনো বয়সে পশ্চিম বাংলার বই পড়ে মনে হতো, এ লেখা ঠিক আমাদের লেখা না৷ হুমায়ূন আহমেদ সেখান থেকে বের করে শিখিয়েছিলেন, এই নাও আমাদের লেখা, আমাদের চারপাশের সাধারণ মানুষের কথা।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২

শেরজা তপন বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে আমার সবচেয়ে বড় অবজারবেশন হচ্ছে, বাংলা সাহিত্যে আমি হুমায়ূন আহমেদের মতন এত সহজ ভাষায়, অল্প কথায়, জটিল অনুভূতিগুলোর প্রকাশ কেউ করতে পারেনি। আমি তার কিছু লেখা পড়ে বারবার ভেবেছি, যে কথা এই এক লাইনে বোঝানো যায়, তা প্রকাশে কেনো অন্য লেখকেরা এত শব্দ ব্যয় করেন? ~ একেবারে সঠিক অব্জারভেশন। আমিও এভাবেই ভাবি- কিন্তু বলেছি অন্যভাবে।
যা তিনি করেছেন সে-ই বা কম কিসে। এই যে মরে গেছেন তিনি। আর কি দাবি আছে তাঁর কাছে? এতগুলো বছর বেঁচে থাকলে তিনি অন্তত ১০ খানা অন্যরকম সাহিত্য-তো উপাহার দিতে পারতেন। একজন হিমু, শুভ্র আর মিসির আলীর মত চরত্র বাংলা সাহিত্যে তৈরি করে গেছেন এই বা কম কিসে। কই আর তো কেউ তেমন কোন চরিত্র সৃষ্টি করতে পারল না এতদিনে- শুধু ডায়লগবাজি করে গেল।
এখন সবাই বলে; লোক যায় বই মেলায় ঘোরে আড্ডা দেয় খায় বই কেনে না। একসময় হুমায়ূন আহমেদের বই কিনতে গিয়ে মেলায় স্টল ভেঙ্গে যেত। মানুষ কি এমনি এমনি ভক্ত ছিল তাঁর?

হুমায়ূন আহমেদকে বাংলা সাহিত্যে অন্য এক জায়গায় অন্যন্য ভাবতেই হবে, তার অতিপ্রাকৃত কিংবা ভৌতিক লেখাগুলো খুবই আন্ডাররেটেড, অথচ তার মানের অতিপ্রাকৃত বা ভৌতিক লেখা কেউ লিখেছে বলে আমার চোখে পড়েনি৷ ইংরেজি সাহিত্যের স্টিফেন কিং লেভেলের লেখা ছিল সেগুলো।
~ এই ব্যাপারে তিনি সেরার সেরা। এখনো খুব কম চলচ্চিত্রে পরিচালক আছে তাঁর অতিপ্রাকৃতিক/ ভৌতিক গল্প চলচ্চিত্র তৈরি করার সাহস দেখাতে পারে।


চমৎকার সুদীর্ঘ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আরো অনেক কথা আছে পরে হবে।

২৩| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: পুরো বাংলাদেশ গর্ব করতে পারে, হুমায়ূন আহমেদ এমন একজন লেখক।
তার সমতুল্য বর্তমানে কেউ নেই।
তিনি একজন গ্রেট লেখক। আমি আপনাকে অনুরোধ করবো- হুমায়ূন আহমেদের 'জনম জনম' বইটা পড়তে। সেই সাথে 'তেতুল বনে জোছনা' বইটাও পড়বেন। আরেকটা বইয়ের নাম বলি- 'আজ আমি কোথাওয আবো না'।

হুমায়ূন আহমদের ছোট গল্প গুলো অবশ্যই পড়বেন।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৩

শেরজা তপন বলেছেন: ব্রাদার, হুমায়ূন আহমেদের ছোট বড় গল্প না পড়েতো আর এমনি এমনি এই লেখা লিখিনি। এখনো আমি তাঁর ছোট গল্প পেলে গোগ্রাসে গিলি। আপনি তাঁর মহা ভক্ত সেটা তো জানি।
অবশ্যই বাঙ্গালী জাতি তাঁকে নিয়ে গর্ব করতে পারে।

২৪| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: হুমায়ূন স্যারের চমৎকার স্মৃতিচারণ, সাথে আপনার সহজ সরল লেখা। একটানে পড়া শেষ করলাম তপন দা...

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৪

শেরজা তপন বলেছেন: জেনে প্রীত হলাম -অন্তরিক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল।

২৫| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪২

ঢাবিয়ান বলেছেন: জনপ্রিয়তার নিরিখে বাংলাদেশে সর্বকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক অবস্যই হুমায়ুন আহমেদ। এ ব্যপারে তাকে টেক্কা দেয়ার কেউই আমাদের দেশে নাই। তবে সুনীল জনপ্রিয়তার নিরিখে রবীন্দনাথ ও শরৎচন্দ্রের পরে হুমায়ুন আহমেদ এর নাম বলেছে কি না যথেষ্ঠ সন্দেহ আছে। বলে থাকলেও মনে হয় ড্রিংক করা অবস্থায় বলেছে। হুমায়ুন আহমেদের জনপ্রিয়তা মুলত আমাদের দেশেই। ওপার বাংলায় তার সমসসাময়িক সুনীল, সমরেশ, বুদ্ধদেব, শংকর, শীর্ষেন্দু ইত্যাদি লেখকদের তুমুল জনপ্রিয়তা দুই বাংলা জুরেই। হুমায়ুন আহমেদ এর কোন তুলনাই হয় না ওপারের লেখকদের সাথে। সাহিত্যের মান্দন্ডেতো নয়ই , জনপ্রিয়তার নিরিখেও নয়।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:৫৪

শেরজা তপন বলেছেন: ওটা সুনীল বলেনি, সমরেশ বলেছে। তিনি কথা খারাপ বলেননি।
ওপারের বিখ্যাত লেখকদের কথা বলেছিলেন; একটা বই মেলায় মেরে কেটে তাদের ২/৩ হাজার বই বিক্রি হয়। আর হুমায়ুনের এক মেলাতেই কয়েক লাখ বই বিক্রি হয় শুধু বাংলাদেশেই। তিনি শেষদিকে কলকাতায় হিমু নিয়ে বেশ জনপ্রিয় হয়েছিলেন। শুধু বাংলাদেশ ও দেশের বাইরের বই বিক্রির হিসেব করলে তিনি নিশ্চিতভাবে সবাইকে ছাড়িয়ে যাবেন।
সুনীল-সমরেশ-শীর্ষেন্দু এদের উচ্চমার্গের সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ ভীষন শ্রদ্ধা করতেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের কয়জন লোক বাংলা বই পড়ে বলুন। ওরাতো ওই হিসেব করে বাংলাদেশেই বেশি জনপ্রিয় - বই যা বিক্রি বাট্টা হয় বাংলাদেশেই। ভাবে ওরা বাঙ্গালী বেশি আমরা কামে বেশী।

২৬| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০১

এম ডি মুসা বলেছেন: সহজ ভাষায় ভালো আমার কাছে

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:২২

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার মত প্রায় ৯৫ ভাগ মানুষের কাছে সহজ ভাষায় কবিতা গল্প উপন্যাস ভাল লাগে।
অনেক শিক্ষিত মানুষ লজ্জায় সহজ লেখা পড়ে না কিংবা নিজ লাইব্রেরিতে এইসব সস্তা দরের লেখা রাখে না ইজ্জত যাবে বলে।- মানুষ ভাববে তাঁর সাহিত্য রুচী অতি নিন্ম মানের। কিন্তু তাঁর সাজিয়ে রাখা সেই উঁচু মানের সাহিত্যের দু'পাতা সে পড়ে দেখে না কোন দিন।

২৭| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:০০

শায়মা বলেছেন: সহজ কথা যায় না বলা সহজে!!!

কিছু মূর্খ সেটা বুঝবে না। :)

একটা গল্প পড়েছিলাম বাঙ্গালীর হাসির গল্প বইটাতে- অনস্বরং দিলং যদি সংস্কৃতং হয় তবে কেনো ছোট জামাই খাঁটের তলে রয়!!!

কিছু মূর্খের ডিম গায়ে মানে না আপনি মোড়ল ভাবে অনস্বরং দিলেই লেখার মান বাড়ে নয়ত নীচু মান আজে বাজে লেখা। সবচাইতে হাস্যকর তাদের নিজেদের লেখাই নর্দমার কীট স্টাইল। :)

যাইহোক গল্পটা জানোতো নইলে আমি এসে লিংক দিয়ে যাবো না হয়! :)

এই ছোটজামাই এর ভূত কিছু মূর্খদের ঘাড়ে আজীবন রয়ে যায়। :)

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:২৬

শেরজা তপন বলেছেন: না গো আপু গল্পটা জানিনা, একটু শুনিয়ে গেলে ভাল হয়।

সেটা তো বটেই দাঁত ভাংলেই বা কি মগজ গলে নাক দিয়ে পড়লেই কি, ডিকশনারি দেখতে দেখতে চোখে ছ্যাতা পড়ে যাক তবু মাইরি কঠিনিয়া উপন্যাস পড়তে হবে। ওদিকে মানুষের সামনে নিজে যে জ্ঞানী মানুষ সেটা বোঝাবার একটা দায় তো থেকে যায় :)

২৮| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:০১

ঢাবিয়ান বলেছেন: একটা বই মেলায় মেরে কেটে তাদের ২/৩ হাজার বই বিক্রি হয়।

এই হিসেবটা আপনি কিসের ভিত্তিতে দিলেন ঠিক বোধগম্য হল না। কোন রেফারেন্স আছে কি? ওপার বাংলার মানুষ গল্পের বই তেমন পড়ে না , এই বাক্যটার সাথেও একমত নই। ওপারের লেখকদের বই এর বাজার বিশাল এবং তা বইমেলা কেন্দ্রিক না। এদের বই সারাবছরব্যপী বিক্রি হয় দুই বাংলার সর্বত্র। । তাই আপনার লেখার রবীন্দ্রনাথ ও শরৎচন্দ্রের পরেই হুমায়ুন আহমেদ জনপ্রিয় এই অংশটুকুর সাথে একেবারেই একমত নই। বাংলাদেশ ও দেশের বাইরের বই বিক্রির হিসেব করলে তিনি নিশ্চিতভাবে সবাইকে ছাড়িয়ে যাবেন।
এটাও একান্তই আপনার নিজস্ব সমীকরন।

হুমায়ুন আহমেদ আমারো একসময়কার অসম্ভব প্রিয় লেখক ছিল। তার ইয়ং বয়সের লেখা উপন্যাসগুলো তারুন্যে দারুন প্রভাব বিস্তার করে কারন প্রেম , ভালবাসাই হচ্ছে সেইসব উপন্যাসের মুল প্রতিপাদ্য। আর তাই , মধ্যবয়সে সেই একই বই পড়তে গিয়ে আর সেই আগের মত অনুভুতি হয়নি। যেই হিমুকে একটা বয়সে দারুন একটা ক্যরেকটার বলে মনে হত , পরবর্তীতে রাস্তা ঘাটে হলুদ পাঞ্জাবী গায়ে ভ্যগাবন্ডের মত ঘুরে বেড়ানো তরুনদের দেখে মনে হয়েছে যে এমন একটা ভ্যগাবন্ড , লক্ষহীন ক্যরেকটার হুমায়ুন আহমেদ এর সৃষ্টি করাই উচিত হয়নি। মিসির আলীকে নিয়ে তার আরো বই লেখা উচিত ছিল।


বাংলা একাডেমির ডিজি তাঁকে বের হয়ে যেতে বলেছিলেন- তাঁর জন্য নাকি বইমেলায় বিশৃঙ্খলা হচ্ছে এই যুক্তিতে ।তিনি শেষদিকে বেশিরভাগ সময় মেলায় না যেতে পেরে মনে কষ্ট নিয়ে বাসায় বসে থাকতেন।

এই তথ্যটাও জানা ছিল না। খুব সুম্ভবত শাওনকে বিয়ে করার পরের সময়ে এটা হয়েছে। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, হুমায়ুন আহমেদ তার সারা জীবনের সকল অর্জন ও সম্মান নিজে হাতে নষ্ট করেছেন শাওনকে বিয়ে করে। তবে ভাবছি বাংলা একাডেমির সেই ডিজি সাহেব এখন কোথায় যখন বইমেলা ভেসে যায় মানহীন সব বইয়ে বা বইমেলায় কুখ্যাত মুস্কাক তিশারা বিশৃংখলা তৈরী করে ?

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৩৫

শেরজা তপন বলেছেন: সমরেশ অনেকটা এভাবে লিখেছিলেন, ওপার বাংলায় একজন কোন জনপ্রিয় লেখকের বইমেলায় মেরেকেটে হাজার খানেক বই বিক্রি হলে তাঁকে ভাল বিক্রি বলা যায়।
আর বাংলাদেশে হুমায়ুনের কোন কোন বই বিক্রি লাখের উপর ছাড়িয়ে যায়। একজন লেখক বইয়ের পাণ্ডুলিপির জন্য অগ্রীম ৫০ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা পেতে পারেন সেটা আমাদের ধারনার ও বাইরে।
নিঃসন্দেহে রবীন্দনাথ ও শরতচন্দ্রের পরে হুমায়ূন এখানকার সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক।
~ বাকিটা আমার ভেবে লেখা। দেশের বাইরের অনেক মেলাতেও তাঁর বই বিক্রি হোত সর্বাধিক।

শাওনকে বিয়ে করার বছর তিনেক আগে থেকেই তিনি নানাবিধ মানসিক যন্ত্রনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। দখিনা হাওয়ায় একাকী স্ত্রী সন্তানহীন নিঃসঙ্গ জীবন কাটান। পরে শাওন ফের আসে - সম্ভবত গুলতেকিনের সাথে আর কোন বোঝাপড়া না হওয়ায় তিনি শাওনকেই বিয়ে করেন। এ সময় ঘরে বাইরে সবখানে তাঁকে ভীষনভাবে অপদস্থ হতে হয়েছে।

২৯| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৪২

করুণাধারা বলেছেন: সহজ ভাষায় লিখলে হয় সস্তা দরের লেখক! তা কেন! বরং সহজ ভাষায় লিখলে তা হৃদয়ঙ্গম করা যায় সহজে, তাই লেখকের স্থান হয় হৃদয়ে। তাই হুমায়ূন আহমেদের পাঠক সংখ্যা বিপুল, এই পাঠক সংখ্যা যদি জনপ্রিয়তার নির্ণায়ক হয়ে থাকে, তবে নিঃসন্দেহে হুমায়ূন আহমেদ সর্বাধিক জনপ্রিয় লেখক।

হুমায়ূন আহমেদ লিখে গেছেন সব রকম মানুষকে নিয়ে, কাজের বুয়া সফুরা থেকে তীক্ষ্মধী মিসির আলির মতো মানুষের চরিত্র ছোট ছোট বাক্যে ফুটিয়ে তুলেছেন। তাই তার বইয়ে যখন আমরা আমাদের পরিচিত ভুবনের মানুষদের দেখি, সহজেই রিলেট করতে পারি। এটাই তার জনপ্রিয়তার কারণ।

কিন্তু তার পাঠক কেবল তারাই, যারা আশির দশক থেকে বাংলা বই পড়া শুরু করেছে। এক শ্রেণীর পাঠক তৈরি হয়েছে যারা কেবল হুমায়ুনের বই পড়েছে। বাংলা সাহিত্যের পাঠকেরা যারা পঞ্চাশ, ষাট কিংবা সত্তর দশকের লেখকদের বই পড়েছেন, এমন কাউকে আমি হুমায়ূন আহমেদের লেখার ভক্ত হতে দেখিনি। একটা দুটো বই পড়ার পর তারা কখনোই হুমায়ূন আহমেদের বই আর পড়েননি।

আপনার লেখার প্রথম বাক্যটা পড়ে খুব অবাক হলাম। যতদূর জানি, সমরেশ মজুমদার নয়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সাথে হুমায়ূন আহমেদের খাতির ছিল, এবং এই উক্তি সুনীলের, যা অতিশয়োক্তি বলে আমার মনে হয়। আমার আরও মনে হয়, লেখার মান বাদই দিলাম, জনপ্রিয়তার হিসেবেও হুমায়ূন নিজেকে কখনও রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তুলনা করতে যেতেন না। তিনি নিজে ছিলেন পরম রবীন্দ্র ভক্ত, তার অনেক বইয়ের শিরোনাম নিয়েছেন রবীন্দ্রনাথের লেখা থেকে, নাটকের মধ্যে রবীন্দ্র সংগীত দিয়েছেন। এইসব দিনরাত্রিতে প্রযোজককে আগে থেকে বলে রেখেছিলেন কোন কোন গান থাকবে, এবং গানগুলো রেজোওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে দিয়ে গাওয়াবার জন্য।‌

রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি কী বিপুল, কী বৈচিত্র্যময়! তার সাহিত্য রচনা কেবল গল্প- উপন্যাস- নাটকে সীমাবদ্ধ ছিলেন না, লিখেছেন গান- গল্প- নাটক- উপন্যাস- ভ্রমণ- কাহিনী- প্রবন্ধ- পত্রাবলী আর কবিতা যার আবেদন স্থান কালের গন্ডিতে আবদ্ধ থাকে নি। তাই তার মৃত্যুর প্রায় আশি বছর পার হলেও এখনো পৃথিবীর নানা প্রান্তে রবীন্দ্রনাথের অনেক অনুরাগী আছেন, তার সাহিত্য নিয়ে পৃথিবীর নানা দেশে আজও গবেষণা হয়, পৃথিবীর নানা দেশে এত বছর পরেও ট্যাগোর ফেস্টিভ্যাল হয়। আমেরিকার আরবানা শহরে প্রতি বছর অক্টোবরে যে ফেস্টিভ্যাল হয় তাতে এশিয়া আফ্রিকা ইউরোপ আমেরিকার মানুষেরা সেসব দেশ থেকে আসেন।

রবীন্দ্র সাহিত্য আমার কাছে এক আকাশের মতো, যার পুরোটা দেখার সাধ্য এ জীবনে হলো না... হুমায়ূন আমার কাছে বড়জোর বিলের জলে বিম্বিত আকাশ, সীমাবদ্ধ...

রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর প্রায় পঞ্চাশ বছর পর হুমায়ূন আহমেদের শুরু। এর মাঝখানে কিন্তু বাংলা সাহিত্যে অনেক লেখক এসেছেন (অধিকাংশই পশ্চিম বঙ্গের)। বিমল মিত্র, শঙ্কর, বিভূতি ভূষণ, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর, সমরেশ বসু, বুদ্ধদেব বসু, অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুবোধ ঘোষ, বুদ্ধদেব গুহ, সমরেশ মজুমদার, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়... এদের লেখার মান এবং পাঠকের মনন এক ধরণের, আবার একই সময়ের লেখক নীহার রঞ্জন গুপ্ত কিংবা নিমাই ভট্টাচার্যর লেখার মান এবং পাঠকের মনন অন্য ধরণের।‌ নীহার রঞ্জন গুপ্ত এবং নিমাই ভট্টাচার্যের পাঠক বেশি।

যারা হুমায়ূন আহমেদের লেখার ভক্ত, তাদের কখনোই তপন রায়চৌধুরীর লেখা ভালো লাগবে না এবং ভাইস ভারসা!

লিখতে লিখতে অনেক লিখে ফেললাম। মনে হচ্ছে বিরক্ত হয়ে গেছেন পড়তে পড়তে! এবার তাহলে গান শুনুন।view this link

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৫৩

শেরজা তপন বলেছেন: প্রথমেই গানের লিঙ্কের জন্য সবিশেষ ধন্যবাদ। গানটা এর আগে শোনা হয়নি।
হুমায়ূন আহমেদের সাথে কোনভাবেই রবীন্দনাথের তুলনা করা হয়নি। সাহিত্যের মান ও জনপ্রিয়তা কিংবা পাঠকপ্রিয়তা ভিন্ন জিনিস।
রবীন্দ্রনাথ এই ব্যাপারে একক ও অনন্য। তাঁর ধারে কাছে চাপতে পারে এমন কেউ জন্মেনি আজ অব্দি- আসবেও না কোন্দিন।
হুমায়ুনেরও ধ্যান জ্ঞান সর ছিল রবি ঠাকুর। সেজন্যি তাঁর বেশীর ভাগ বইয়ের নাম করন করেছেন রবীন্দ্রনাথের চরন দিয়ে- আপনিও সেটা বললেন। তিনি বার বার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে তাঁর ঋনের কথা স্বীকার করেছেন।
সমরেশের সাথেও হুমায়ূন আহমেদের বেশ ভাল একটা সম্পর্ক ছিল। আমি আগের লিঙ্কটি পাইনি, আরেকটা লিঙ্ক দিচ্ছি যেখানে সমরেশ কিছু কথা বলেছেন তাঁর সন্মন্ধে;



সুদীর্ঘ মন্তব্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। রাত একটু বেশী হয়ে গেছে। অন্যদিন কথা হবে। ভাল থাকবেন

৩০| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২৯

আরাফআহনাফ বলেছেন: হুমায়ুন আহমেদ সাধারন মানুষকে বেশ ভালো বুঝতে পারতেন - সেটা তাঁর লেখনীতে বলে গেছেন।
শুধু লেখা দিয়ে একটা বিশাল সমাজকে ব্যাপকভাবে দীর্ঘসময় ধরে প্রভাবিত করে রাখা - চাট্টিখানি কথা নয় - তিনি তা সফলভাবে করে দেখিয়েছেন। - আমার দৃঢ় বিশ্বাস, তিনি বেঁচে থাকলে আজকের এ মোবাইল/টিকটক জাতিকে বেশ ভালোভাব বইয়ে ধরে রাখতে পারতেন।

তাঁর মৃত্যুদিনে ভেবেছিলাম রাস্ট্রীয় শোক/ছুটি ঘোষনা করা হবে কিন্তু তেমন কিছু হয়নি - আফসোস!!

০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

শেরজা তপন বলেছেন: শুধু লেখা দিয়ে একটা বিশাল সমাজকে ব্যাপকভাবে দীর্ঘসময় ধরে প্রভাবিত করে রাখা - চাট্টিখানি কথা নয় - তিনি তা সফলভাবে করে দেখিয়েছেন। - আমার দৃঢ় বিশ্বাস, তিনি বেঁচে থাকলে আজকের এ মোবাইল/টিকটক জাতিকে বেশ ভালোভাব বইয়ে ধরে রাখতে পারতেন। ~ ঠিক বলেছেন। তিনি যেন মন্ত্র দিয়ে সাপ বশ করতে পারতেন। কিভাবে যেন তরুনদের পালস ধরতে পারতেন -এখনো খুব সহজেই এরা তাঁর বশে থাকতেন।

আমরা সৌদি আর কাতারের বাদশার মৃত্যুতে শোক দিবস পালন করি- সেটা চাটুকারিতার জন্য দরকার :)

৩১| ০১ লা মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:০৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: হুমায়ুন আহমেদ নিজের লেখা নিয়ে নিজেই মশকরা করতেন। কেউ যখন তার লেখার সমালোচনা করতেন, নিজেও বাহাস করতে নেমে যেতেন। বলতে গেলে উনি শখের লেখক ছিলেন। কারও সমালোচনায় বিব্রত হতেন না।

০১ লা মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৫০

শেরজা তপন বলেছেন: একজন লেখকের সবচেয়ে বড় গুন হচ্ছে নিজেকে নিয়ে মশকরা করার যোগ্যতা- যেটার ব্যাপারে সর্বসেরা ছিলেন আমাদের সৈয়দ মুজতবা আলী। হুমায়ূন আহমেদ কিছুটা উনার পদাঙ্ক অনুসরন করেছিলেন।
বড় যদি হতে চাও ছোট হও আগে- এই তত্ত্বটা উনি কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছিলেন। যদিও মাঝেমধ্যে উনি উদ্ধত আচরন করেছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত সব ধরণের অপপ্রচারের দারুণ সব উত্তর দিয়েছেন।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

৩২| ০৩ রা মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৮

মোগল সম্রাট বলেছেন:



ভাই, আমি তো সহজ ভাষায ২/১ খান পোষ্টাই । সব সময় ডরের উপ্রে থাহি।


B-)

০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:২৯

শেরজা তপন বলেছেন: হুদাই আপনি ডরান না আমিও ডরাই :)

৩৩| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৬

নতুন বলেছেন: হুমায়ুন আহমেদ যেদিন মারা গিয়েছিলেন সেদিন মনে হয়েছিলো কাছে একজন আত্নীয়কে হারিয়েছি।

একজন লেখক হিসেবে সাধারন মানুষের হৃদয়ে এতোটা স্থান পাওয়াই তার সার্থকতা।

অনেক লেখকের অনেক বই ভালো লেগেছে। অনেক লাইক এখনো কোট করি।

কিন্তু হুমায়ুন আহমেদ বাংলাদেশী কয়েকটা জেনারেসনের হৃদয়ে স্থান করেনিয়েছিলো। সেটা বিশ্বের কত লেখক করতে পেরেছিলো জানিনা। তবে সংখ্যাটা বেশি হবেনা।

০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৩

শেরজা তপন বলেছেন: সেরাতের কথা লেখা আছে ডায়েরিতে। চ্যানেল আই-এর পর ভীষন ক্ষেপেছিলাম। মনে হচ্ছিল ওরা একটু বেশী সিরিয়াসলি; হুমায়ূন আহমেদের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন, এমন টাইপের নিউজ খুব বেশী করে প্রচার করছিল।
হায় কে জানত, ততক্ষনে তিনি পরপারে পারি জমিয়েছেন।
উনার সাথে আমার বেশ কয়েকবার মুখোমুখি দেখা হয়েছে কিন্তু কথা হয়নি বেশী। জাহিদ হাসানের আমন্ত্রনে উনার সাথে একবার দারুণ এক আড্ডার সুযোগ ভাব নিয়ে মিস করেছিলাম; তা নিয়ে এখন আফসোস করি।

কিন্তু হুমায়ুন আহমেদ বাংলাদেশী কয়েকটা জেনারেসনের হৃদয়ে স্থান করেনিয়েছিলো। সেটা বিশ্বের কত লেখক করতে পেরেছিলো জানিনা। তবে সংখ্যাটা বেশি হবেনা।
~আর কেউ এমন আসবে না সেটা নিশ্চিত থাকেন।

৩৪| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৩

মিরোরডডল বলেছেন:





নতুন বলেছেন: হুমায়ুন আহমেদ যেদিন মারা গিয়েছিলেন সেদিন মনে হয়েছিলো কাছে একজন আত্নীয়কে হারিয়েছি।

সেইম হিয়ার।
হুমায়ূন আহমেদ আর জগজিৎ সিং, এই দুজন মানুষের মৃত্যুতে আমার মনে হয়েছে কাছের মানুষ হারালাম, নিজের খুব আপন কেউ।

আমার কিশোর বেলা থেকে এখন পর্যন্ত আমি জগজিতের গজলে ডুবে থাকি।
কি যে এক নেশা, এর থেকে বের হওয়া কঠিন।

০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬

শেরজা তপন বলেছেন: জগজিতের কথা শুনে উদাস হয়ে গেলাম!
আহা কত আপনজন মনে হত তাঁকে। আপনার মত আমারও মনে হয়েছিল কোন প্রিয়জনকে হারালাম।

পঙ্কজ উদাসের মত শিল্পীরাও কৈশর ও যৌবনের অনেকটা জায়গা দখল করে আছে। এদের একজনের চিরপ্রস্থান বড় হৃদয়ে বাজে।

৩৫| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০

মিরোরডডল বলেছেন:




করুণাধারা বলেছেন: যারা হুমায়ূন আহমেদের লেখার ভক্ত, তাদের কখনোই তপন রায়চৌধুরীর লেখা ভালো লাগবে না এবং ভাইস ভারসা!

ধারাপু, তপন রায়চৌধুরীর লেখা পড়িনি।
আমি হুমায়ুনের ভীষণ ভক্ত।
কিন্তু একই সাথে সমরেশ মজুমদার, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব গুহ, শীর্ষেন্দু, বিমল মিত্র, শঙ্কর, বিভূতি ভূষণ, সুবোধ ঘোষ, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, সমরেশ বসু, বুদ্ধদেব বসু, নীহাররঞ্জন এদের লেখা পড়েছি।

হুমায়ুনের মতো সমরেশ, সুনীল, বুদ্ধদেব, শীর্ষেন্দু এদেরও খুব ভীষণ পছন্দ করি। পার্থিব, কালবেলা, কালপুরুষ, উত্তরাধিকার, সেই সময়, একা এবং কয়েকজন, পূর্ব পশ্চিম, মাধুকরী, গর্ভধারিণী রাতের পর রাত জেগে এই অসাধারণ লেখাগুলো পড়েছি। তুলনা করিনা কিন্তু এটা বলতেই হয় এদের মতো লেখা হুমায়ূন লেখেনি। হুমায়ুনের টাইপ ভিন্ন।
প্রত্যেকে যার যার জায়গা থেকে ইউনিক।


০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪১

শেরজা তপন বলেছেন: বড় দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, আমিও তপন রায় চৌধুরীর লেখা পড়িনি।
মিরোরাপুর সাথে এ জায়গায় আমার মিল আছে।
হুমায়ূন আহমেদ যাদুকরী লেখক- মনে হয় সব ফাঁকি কিন্তু মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়ে যায় মানুষ।

৩৬| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০

নতুন বলেছেন: @মিরোর জগজিৎ সিং এর গজল লাইফ কোন কনসাটে শুনবো সেটা আমার বাকেট লিস্টে ছিলো।

এই ইচ্ছা আর পুরন হবার না।

৩৭| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭

মিরোরডডল বলেছেন:




নতুন বলেছেন: @মিরোর জগজিৎ সিং এর গজল লাইফ কোন কনসাটে শুনবো সেটা আমার বাকেট লিস্টে ছিলো।
এই ইচ্ছা আর পুরন হবার না।


এ থেকে কি শিখলাম? বাকেট লিস্টে আর যা আছে, বেশি সময় না নিয়ে পূরণ করে ফেলতে হবে :)
কখন আবার বিদায়ের ঘণ্টা বাজে!

০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৮

শেরজা তপন বলেছেন: এইটা কি নিজের বিদায়ের ঘন্টা বাজার কথা বলছেন? ভয় লাগাইয়েন না B:-)

৩৮| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:১২

মিরোরডডল বলেছেন:




লেখক বলেছেন: বড় দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, আমিও তপন রায় চৌধুরীর লেখা পড়িনি।

তপন রায় চৌধুরীর লেখা না পড়লেও শেরজা তপনের লেখা পড়েছি কিন্তু :)

০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৬

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার সাথে আমিও পড়েছি :)

৩৯| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৪০

করুণাধারা বলেছেন: যাক, শেরজা তপন ফিরেছেন!! আমি তো অপরাধবোধে ভুগতে শুরু করেছিলাম, মন্তব্য হয়তো এতটা নেতিবাচক করে করেছি যে শেরজা তপন আর পোস্টই দিচ্ছেন না!

তপন রায়চৌধুরী আসলে তেমন লেখক নন যে তার নাম সবাই জানবে। তিনি একজন ইতিহাসবিদ এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি একাডেমিক বই লিখেছেন বেশ কয়েকটি কিন্তু স্মৃতিচারণমূলক বই লিখেছেন মাত্র দুটি। এরমধ্যে বাঙালনামা আমার কাছে অনবদ্য মনে হয়েছে, কয়েকবার পড়েছি! ব্লগার জুল ভার্ন এনাকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনতেন জেনে আমার খুব হিংসা হয়েছিল। এনার বাড়ি বরিশাল। তপন রায় চৌধুরী

মনে হয় তপন নামের লেখকেরা ভালো লেখার মেধা নিয়ে জন্মান। B-)

০৪ ঠা মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

শেরজা তপন বলেছেন: কি বলেন এমন মান সম্পন্ন নেতিবাচক মন্তব্যে আমি কখনোই মন খারাপ করিনা বা নেগেটিভলি নেই না। বিশেষ করে আপনার মত
হিতাকাঙ্খী- শুভাকাঙ্খী মন্তব্যকারীদের কাছ থেকে যখন হবে তখনতো নয়-ই।
ব্লগ কেমন যেন নেতিয়ে আছে- এই ফাঁকে আমি একটু পড়াশুনা করে কঠিন গদ্য সহজিয়া ভঙ্গীতে লেখার চেষ্টা করছি। সেটা অবশ্যই বেশ ক্যাচালময় হবে ও আমার মুর্খতা চমৎকারভাবে প্রকাশ পাবে।

তপন রায়চৌধুরীর লেখা পড়ার চেষ্টা করব।
খুব তো কইলেন- তপন নামের আর কয়জন লেখককে চেনেন? :)

৪০| ০৫ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৪৭

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সহজবোধ্য লেখাই সেরা লেখা । তবে সময়ের প্রয়োজনে ভাষা দুর্বোধ্য হয়ে ওঠেতে পারে । হায়ারোগ্লিফিক্স মার্কা ভাষার আদান প্রদান শুধু দুই পক্ষ বুঝবে ।


হুমায়ূন আহমেদ শরৎ চন্দ্রের পরে অপরাজেয় কথা শিল্পী । আমার বিবেচনায় তাঁর কলমের শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলা অবান্তর ।

০৫ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:০৬

শেরজা তপন বলেছেন: আপনি কবি মানুষ- ভাষা নিয়ে খেলা আপনার মানায়। অল্প কথায় অনেক কিছু বোঝানোর বিষয় থাকে।
গদ্য লেখকের অত কারিকুরির দরকার কি? সহজ সরল ভাবে পাঠককে বোঝালে অসুবিধা কোথায়- আর পাঠক যা পড়তে চায় তা লিখলে সমস্যা কি?
নামী সাহিত্যকের কাছে পাঠকের হুদাই অনেক কিছু দাবী থাকে।
আপনার কথায় সহমত না হয়ে উপায় নেই।

৪১| ১৭ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: এ্যাট এ গ্লান্স দেখলাম দারুন একটা বিষয়++ আসছি পরে।

২০ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:০৫

শেরজা তপন বলেছেন: আপনি দেখি রোবটের মত চোখ বুলিয়ে গেছেন!!! :)
তবে এইটুকুতেই অনেক ধন্যবাদ- ক'জনেই বা এতটুকু ভালবেসে পুরনো লেখায় চোখ বোলাতে আসে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.