নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে মনে হয় জীবনটা অন্যরকম হবার কথা ছিল!

শেরজা তপন

অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...

শেরজা তপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ময়লাপোতার কমলালেবুর কেচ্ছা!! (রম্য)

২১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩


বাংলাদেশের বিশেষ এক বিভাগীয় শহরে ময়লাপোতা, গোবরচাকা, লবনচোরা, মাথাভাঙ্গা, সোনাডাঙ্গার মত চমৎকার সব নামের এলাকায় দারুণ সব সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাস।
আমার এক বন্ধুর আদিনিবাস এমনই এক সম্ভ্রান্ত এলাকায় যার নাম 'ময়লাপোতা'! নাম শুনেই বোঝা যায় কোন এক কালে বাকি শহরের যত সব ময়লা-আবর্জনা ওখানে এনে পোতা হোত। ওই এলাকার মানুষ স্থানের নামে আদি ঐতিহ্য বজায় রেখেছে - এটা অবশ্য একটা ভাল দিক।

মার ওই বন্ধুর পরিবারটি বেশ সৌখিন। তাঁর বাবা খুব নামী-দামী মানুষ, নাম বললেই ব্লগের অর্ধেক মানুষ চিনে ফেলবে; তাই নাম পরিচয় উহ্য থাকুক। তাঁর বাবা আট ভাই-বোনের বড়। যেমন শিক্ষিত তেমন গুনী- এইসা তেজী ও একগুঁয়ে। তাঁর কথায় একরকম পুরো পরিবারের বাঘে-মহিষে একঘাটে জল খায়। ওদের তিনতলা বাড়ি- বাড়ির ছাদে সৌখিন বাগান করা হয়েছে, শুরুটা হয়েছিল সেই বছর বিশেক আগে। তখন সৌখিন বাগান নিয়ে বেশ বড় রকমের একটা উত্তেজনা ছিল। তবে এই ঘটনাটা ১২/১৩ বছর আগের।
চায়না থেকে চায়নিজ কমলা খেয়ে এসে তাঁর বড় ভাই এর গল্প শুনে আমার বন্ধু ঢাকার বৃক্ষ মেলা থেকে একটা চায়নিজ (ম্যান্ডারিন) কমলালেবুর চারা কিনে নিয়ে ময়লাপোতার ছাদে নিয়ে রোপন করল। এই খবর সেদিনই ময়লাপোতা থেকে ঝালকাঠি ওর নানার বাড়ি হয়ে ফ্রাঙ্কফুর্ট আর স্টুর্টগার্ডের অলিগলি হয়ে ভ্যাঙ্কুভার তক এই খবর ফেসবুক আর ম্যাসেঞ্জার মারফর পৌছে গেল! তাদের নানা-দাদা বাড়ির সবাই ছোট বড় খবর নিয়েও রমরমা উত্তেজনা নিয়ে থাকে সবসময়। মানুষ এত আবেগ উত্তেজনা সারাক্ষন ধরে রাখে কেমনে এইটা আমাদের মাথাতেই আসত না কখনো।
কমলা লেবুর গাছ বড় হচ্ছে আর তাঁর নিয়মিত আপডেট চলে যাচ্ছে সবখানে।
প্রথম যখন ফুলের কুড়ি থেকে ফল হল তখন তা দেখে দেশে গিয়ে আমার বন্ধু উত্তেজনায় প্রায় কেঁদেই ফেলল। শতাধিক এঙ্গেল থেকে ছবি আর ভিডিও করে সবাইকে শেয়ার করেও উত্তেজনা যেন প্রশমিত হচ্ছিল না।
এমনিতেই ওর মা বাবা আর ভাবি সকাল বিকাল ওই গাছের বিশেষ যত্ন আত্মি করে প্রতিদিন। ফল আসার পরে সেটা যেন বেড়ে গেল কয়েকগুন! ফল একটু একটু করে বড় হচ্ছে আর চারিদেকে সবার উত্তেজনা বাড়ছে। ঢাকার বাজারে তখনো চায়নার কমলা আসেনি-তাই আশে পাশের কেউ বেড়াতে আসলেই তাঁকে বিশেষভাবে ওই গাছ প্রদর্শন করানো হয়।
প্রতিটা দর্শনার্থীই দারুণ আপ্লুত হয়, অবাক বিস্ময়ে গাছ আর ফল দ্যাখে।
কমলালেবু বড় হয়ে একসময় হলদে রাঙ্গা হয়। প্রতিদিন ময়লাপোতার বাসা থেকে বন্ধুর ভাবি ছবি তুলে আপডেট দিচ্ছে। বন্ধু ঢাকায় বসে ভীষন এক্সাইটেড। সাতটা মাত্র কমলালেবু গাছে আছে- শতাধিক আত্মীয়স্বজনের মাঝে এইগুলো কেমনে ভাগ হবে এই নিয়ে দিনরাত ফোনে আর ম্যাসেঞ্জারে আলোচনা চলে। এছাড়া ওদের বন্ধুবান্ধবও কম নয়। নিজেদের কমলা খাওয়া ভাগ্যে হয় কি না আল্লা জানে- কোন দিকে কে গোস্যা করে বলা মুশকিল। অবস্থা এমন বেগতিক যে, ওর বড় ভাই পরামর্শ দিল; চায়না থেকে দুইমন কমলা এনে বিলিয়ে দিতে।
ওদিকে কমলালেবুর একেবারে কমলা রঙ ধরেছে-দু-চারদিনের মধ্যেই সেটা খাওয়া যাবে মনে হচ্ছে। আমার বন্ধুর উত্তেজনা এমন যেন মঙ্গলগ্রহে প্রথম কমলার ফলন হচ্ছে!
এমন দিনে ফজরের নামাজের পরে ওর মায়ের ফোন। ঘুম চোখে ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে আর্ত কন্ঠে মায়ের চিৎকার, কমলাতো সব চোরে নিয়ে গেছে!!!
এ যেন মৃত্যু সংবাদের থেকেও ভয়াবহ দুঃসংবাদ। সঙ্গে সঙ্গে এই ভয়াবহ দুঃসংবাদ ময়লা পোতা থেকে ঝালকাঠি হয়ে ফ্রাঙ্কফুর্ট আর স্টুর্টগার্ডের অলিগলি হয়ে ভ্যাঙ্কুভার তক ফেসবুক আর ম্যাসেঞ্জার মারফত পৌছে গেল! চারিদিকে শোকের ঢল।

ন্ধুর বাপের শুরু হোল ব্যাপক হুমকি ধামকি- তিনি ডিসি এসপিকে জড়ো করে ফেললেন। সবাই ফোনে স্যার স্যার বলে ভীষন দুঃখ প্রকাশ করে চারিদিকে খোঁজ দ্যা সার্চ শুরু করে দিল। ওসি তাঁর দল-বল নিয়ে এলাকা রেকি করেও গেল।
অনেক অনুসন্ধান করে পুরো ময়লাপোতায় সেই চায়নিজ কমলা লেবুর খোঁজ আর পাওয়া যায়নি সেদিন।

*** পরদিন ফজরের নামাজের পরে বন্ধুর মা ফের ছাদে উঠেছে অভ্যাস মত একটু মর্নিং ওয়াক আর ছাদ বাগানটা দেখার জন্য। আজ তাঁর মনটা বেজায় খারাপ। ছেলেটা এত সখ করে কমলা লেবুর গাছ লাগালো- কত সপ্ন ছিল, একটা কোয়া লেবুও খেতে পারল না। মন খারাপ করে বাগানে হাটতে হাটতে হঠাত তাঁর নজর গেল ছাদের কার্নিশে বলের মত কি যেন লাইন ধরে সাজিয়ে রাখা। কাছে যেতেই দেখেন, সেই চায়নিজ কমলা একটা খেয়ে ছয়খানা চোরে মায়া করে ফিরিয়ে দিয়ে গেছে। আহারে কি দরদী চোর- খুশীতে তাঁর চোখে জল এসে গেল। কমলাগুলো কুড়িয়ে আনতে গিয়ে দেখেন একটা কমলার নীচে ছোট্ট একটা চিরকুট।

সেই চিরকুটে লেখা ছিল,
"কোন শালার ছাওয়াল এই কমলার গাছ লাগাইছে ..."

আমার সেই বন্ধু মারফত জানা গেছে, ওই কমলা যে টক ছিল-দুনিয়াতে নাকি এমন টক লেবুর জন্ম হয় নাই।

মার সেই বন্ধুর বড় ভাই, ওকে ফোন করে বলেছিল-
"এ-ই শোন তুই কিন্তু ভুল কইরেও কইস না যে, তুই এই কমলার চারা আনিছিস। আব্বা সকাল থেকি আমারে কয়েকবার জিজ্ঞেস করিছে। আমি কইছি, চায়নার বাঙ্গাদেশী এম্বাসেডর আমার বন্ধু পাঠাইছিল মনে হয়। সে কিন্তু বিরাট খ্যাপা। তুই আনিছিলি শুনলি তোরে বাড়িতে আসা বন্ধ করি দিবিনে।"
***

ছবিঃ ২০০৮ সালে চায়নার কুনমিং থেকে তোলা।

মন্তব্য ৩৬ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০২

মিরোরডডল বলেছেন:




হা হা হা হা
দারুউউউউউন মজার :)

এটা থেকে একটা কমেডি নাটক হতে পারে।

২১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২০

শেরজা তপন বলেছেন: তাহলে আপনাকে কিন্তু পরিচালনা- প্রযোজনা দুটোই করতে হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশের নাটকের যে হাল তাতে পয়সা উঠে আসার কোন সম্ভাবনা নেই পুরোটাই জলে যাবে :(
বহুদিন বাদে প্রথম মন্তব্য খানা আপনার পেলাম- বড়ই প্রীত ও আনন্দিত হইলাম!!

২| ২১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৭

মিরোরডডল বলেছেন:




ছয়টা ফিরিয়ে দিয়েছে জেনেই অনুমান করা গেছে কি হতে পারে।

লেখার স্টাইলটা মজার ছিলো শেরজা।
এরকম ফান পোষ্ট মাঝে মাঝে দিবে।

কি সব এতো বড় বড় সিরিয়াস পোষ্ট লেখে, যে কারণে জুনাপু ব্লগ ছেড়েছে :)

২১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪

শেরজা তপন বলেছেন: কি বলেন আমার জন্য জুন আপু ব্লগ ছেড়েছেন না দেশ ছেড়েছেন??
এই আন্ডারওয়ার্ল্ডের টপ সিক্রেট খবর আপনি কোত্থেকে পাইলেন?

কত যে এরকম মজার মজার গল্পের ভিতর জমা আছে- কিন্তু ইদানিং জোস পাই না ভিতর থেকে সে ফিলিংস আসে না লেখার। আফসোস :(

৩| ২১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




চমতকার হয়েছে ময়লাপোতার চাইনীজ টক কমলার রম্য কথন ।
সত্যিই এই কমলা খেলে ঐ রকম গালী যে কারো বচনেই চলে আসবে ।

এখানে রেখে গেলাম পুরা গাছ সমেত ডেল্টা ভেল্যেনসিয়া সাউথ আফ্রিকান বীজবিহীন মিষ্টি কমলা ।

কমলাতে মিষ্টি তৈরির জন্য প্রচুর তাপের প্রয়োজন হয়, যা এই কমলাকে সবচেয়ে মিষ্টি করে তোলে।
সম্ভবত গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে সবচেয়ে পরিচিত কমলা হল ভ্যালেন্সিয়া যার মধ্যে সাউথ আফ্রিকার এই
ডেল্টা ভেল্যেনসিয়া কমলা অন্যতম। ১৯৫২ সালে এটি দক্ষিণ আফ্রিকায় আবিষ্কৃত হয়েছিল ।
এই জনপ্রিয় জুসিং কমলাটি গ্রীস্ম অঞ্চলে মার্চ থেকে জুলাই মাসের প্রথম দিকে ফল ধরে। সুন্দর
পাতলা চামড়া, আকার একটি বেসবল এর কাছাকাছি। এই কমলা অন্যান্য ভ্যালেন্সিয়া ক্লোনের
তুলনায় প্রায় ২ সপ্তাহ আগে পরিপক্ক হয় এবং ক্রস-পরাগায়ন ছাড়াই বীজহীন হয়। সিলেটের
ছাতকের কমলা , চাইনীজ কমলা , আসামী কমলা,স্পেনিশ আর আমিরিকান অনেক পদের
কমলাই খেয়ে দেখেছি কিন্তু এর মত স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় মিষ্টি কমলা দ্বিতীয়টি এখনু পাইনি ।
এটি ছাদে কিংবা বাগানে লাগালে কেও আর এটাকে কোন শালার পুতে লাগিয়েছে বলতে
পারবেনা ।

শুভেচ্ছা রইল

২১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৭

শেরজা তপন বলেছেন: চমৎকার তথ্য ছবি চায়নাতে আমি প্রচুর খেয়েছে কমলা সত্যিকারের সুমিষ্ট ও সুস্বাদু।
একবারে এক বসায় দুই চার কেজি কমলা খেয়ে ফেলতাম :)
আমি চেয়েছিলাম যে এলাকার কথা বলেছি সেখানকার দু চারজনের বক্তব্য হলে ভালো হতো জমত বেশ!

*আপনার আগের মন্তব্যের উত্তর জমে আছে সময় করে আসছি। আপনি এত ব্যস্ততার মধ্যে শারীরিক অসুস্থতার মধ্যেও যে মন্তব্য করছেন লেখা পড়ছেন এজন্য সবিশেষ ধন্যবাদ! শুভকামনা রইল ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

৪| ২১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৩

মিরোরডডল বলেছেন:




লেখক বলেছেন: তাহলে আপনাকে কিন্তু পরিচালনা- প্রযোজনা দুটোই করতে হবে।

তাহলে প্রধান চরিত্র বন্ধুর রোল টা শেরজা করবে।
নাটকের নাম হবে দে মাইর!!
টক ফল গাছ লাগানোর জন্য মাইর দিয়ে শেষ দৃশ্যটা হবে।
কি? মাইর খেতে রাজি?

বর্তমানে বাংলাদেশের নাটকের যে হাল তাতে পয়সা উঠে আসার কোন সম্ভাবনা নেই পুরোটাই জলে যাবে :(

নট ফর প্রফিট, বিনোদনের জন্য চ্যারিটি মনে করে করতে হবে।

২১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৪

শেরজা তপন বলেছেন: আমারে মাইর খাওয়ানোর আপনার এত হাউশ ক্যান বুঝলাম না?
তাও পাবলিকের হাতে আবার পুরা দেশের জনগণকে দেখাতে চাচ্ছেন!!
আমি কি আপনার এত বড় ক্ষতি করলাম??
নট ফর প্রফিট, বিনোদনের জন্য চ্যারিটি মনে করে করতে হবে।
বুঝলাম টাকা-পয়সা খরচ করার জায়গা পাচ্ছেন না!


৫| ২১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ছোডোবেলায় আম খাওয়ার পর যেটা চারা লাগাবো, সেই আমের আঁটি কখনো চাটতাম না। একটা বদ্ধের মূল ধারণা ছিল যে, ঐ আঁটি থেকে গাছ হলে সেই আম হবে পানসে :)

আপনার যদি মনে থেকে থাকে, বাংলাদেশে প্রথম দিকে যারা শখ করে আঙুর বা কমলা বা মালটার গাছ লাগাতো, সেগুলো হতো জন্মের টক। এই বন্ধুর চারা থেকে পাওয়া ফলও যে টক হবে, তা অবশ্য আগেই অনুমান করছিলাম।

গল্প পড়তে পড়তে টুইস্টের জায়গার আসার জন্য তড় সইছিল না। অবশেষে সেই ভয়াবহ চুরির সংবাদ পাওয়া গেল। যদ্দুর মনে পড়ে, এই বিষাদময় সংবাদ পৃথিবীর বড়ো বড়ো চ্যানেল্পগুলো, যেমন, বিবিসি, সিএনএন, সিএনএনবিসি, আলজাজিরা, বিটিভি, সময়টিভি-তে লাইভ দেখানো হচ্ছিল। আমাদের জনৈক ফটোগ্রাফার ভিডিওগ্রাফার ব্লগারও এটার লাইভ টেলিকাস্ট করেছিলেন। দুঃখের বিষয়, আমি তখন ঘুমাচ্ছিলাম, তবে, ঘুমের মধ্যেও স্বপ্নে লাইভ টেলিকাস্ট মিস করি নাই।

এত নামডাকওয়ালা বাড়ির ছাদ থেকে কম্লা কীভাবে চুরি হইল, আই মিন, চোরের বুকের পাটা এত বড়ো হইল কীভাবে? মম মনে এটা এক বিরাট প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

লাইভ জোক খুব মজার হয়েছে বলাই বাহুল্য।

তবে, শখের কোনো মূল্য হয় না, ঐ পরিবার বুঝিয়ে দিয়েছে।


২২ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

শেরজা তপন বলেছেন: ছোট বেলায় এই ব্যাপারটা মাদের মধ্যেও ছিল। আসলে ছোট বেলায় অঞ্চলভেদে কুসংস্কারগুলো অনেককিছুই অনেকটা একইরকম ছিল।
গল্প পড়তে পড়তে টুইস্টের জায়গার আসার জন্য তড় সইছিল না। অবশেষে সেই ভয়াবহ চুরির সংবাদ পাওয়া গেল। যদ্দুর মনে পড়ে, এই বিষাদময় সংবাদ পৃথিবীর বড়ো বড়ো চ্যানেল্পগুলো, যেমন, বিবিসি, সিএনএন, সিএনএনবিসি, আলজাজিরা, বিটিভি, সময়টিভি-তে লাইভ দেখানো হচ্ছিল। আমাদের জনৈক ফটোগ্রাফার ভিডিওগ্রাফার ব্লগারও এটার লাইভ টেলিকাস্ট করেছিলেন। দুঃখের বিষয়, আমি তখন ঘুমাচ্ছিলাম, তবে, ঘুমের মধ্যেও স্বপ্নে লাইভ টেলিকাস্ট মিস করি নাই।

~আপনার এইটাও চরম হৈসে ব্রাদার। :)
এলাকার পুলাপান নিছে। ওরা শিক্ষিত প্রতিবেশী। আমাদের কিশোরবেলার চুরির মত- অনেক আগে থেকে প্লান করে, চুলচেরা হিসেব করে, চেনাজানা লোকদের চুরি।

একদম ঠিক কথা কইছেন।

৬| ২১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৩

করুণাধারা বলেছেন: বড় আধুনিক শিক্ষিত চোর! চুরি করলেও পকেটে কাগজ কলম নিয়ে ঘোরে, তারপর চুরি করা জিনিস সম্পর্কে জানানোর জন্য চিরকুট লিখে রেখে যায়...

মজার কাহিনী! :)

২২ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১

শেরজা তপন বলেছেন: এরা প্রফেশনাল চোর নয় তা সহজেই অনুমেয়। মহল্লার ইচড়েপাকা পোলাপানের কাজ। সখের চোর- আমরাও এমন চুরি কত করেছি। :)

৭| ২১ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:০৬

ঢাবিয়ান বলেছেন: বেশিরভাগ চাইনিজদের বাসার সামনে টবে কমলাগাছ থাকে। ছোট ছোট কমলা ধরে তাতে। দেখতেই সুন্দর লাগে । খাওয়ার উপযোগী নয় এসব কমলা। মনে হয় এই জাতের চারা কিনেছিল আপনার বন্ধু।

২২ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৪

শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক বলেছেন। টবের কমলা আজ পর্যন্ত আমি ভাল পাইনি। আমার তোলা ছবিটার কমলাও ঐ জাতের কিনা কে জানে? তবে ওটার উচ্চতা আমার মাথা সমান ছিল- কুনমিং এ যে বাসায় ছিলাম, তার সামনেই এমন কমলালেবু গাছের সারি ছিল।

৮| ২১ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:১২

কামাল১৮ বলেছেন: আপনার বন্ধুর পরিবারটির চিন্তা চেতনা খুবই নিম্ন মানের।অর্থ সম্পদেই সুধু বড় হয়েছে।

২২ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৯

শেরজা তপন বলেছেন: কি ভেবে আপনার এমন ধারনা হল? এরা খুবই আন্তরিক বন্ধু বৎসল ও সজ্জন প্রকৃতির। ওদের পরিবারিক দারুণ বন্ধন দেখে হতবাক হয়ে যাই। আত্মীয়স্বজনের যে কোন ছোট সমস্যায় ওরা সবাই মিলে নিজের আপনজনের মত ঝাপিয়ে পড়ে। ওদের শিক্ষাগত যোগতা ও সামাজিক অবস্থানের কথা শুনলে আপনি যে কথা বলেছেন তাঁর জন্য আপনি লজ্জা পাবেন।

৯| ২১ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৩৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: শেরজা তপন,




তপনীয় লেখা। তপনের ( সূর্যের) মতোই হাস্যোজ্বল, ভানু ( তপন) বন্দোপাধ্যায়ের রম্যের মতোই রসে জমজমাট। :P

তবে "ময়লাপোতার" কমলা মিষ্টি আর হইবে ক্যামনে ? টক যে হইছে হেইডাই বেশি !!!!!!! দ্যাখতে ময়লার মতো হয় নাই হেতেই আপনার বন্ধুর শোকর-গোজারী করা উচিৎ। ঠিক কিনা ????????? :#)

২২ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

শেরজা তপন বলেছেন: আপনি যদি ময়লাপোতা বা গোবরচাকার কোন মানুষের সাথে কথা বলেন, তবে সে স্থানের নাম সন্মন্ধে আপনার ধারনা পাল্টে যাবে।
তারা এত দরদ আর ভালোবাসা নিয়ে তাদের এলাকার নাম উচ্চারণ করে এবং সে্টা তাঁর জন্মস্থান বলে এতটা গর্ববোধ করে যা, আপনি ভাববেন, "আপনার জন্ম কেন গোবরচাকা বা ময়লাপোতা হোল না"!! :)
খুলনা অঞ্চলের মানুষ অতীব বন্ধু বৎসল ও আন্তরিক স্বভাবের। তবে গালি দেয় বেশী- যদিও গালির মধ্যে মধু ঢেলে দেয় :)
এদের হোম সিকনেস সাংঘাতিক।
আমার সেই বন্ধুর পুরো পরিবার আবার ভোজন রসিক! কমলা এমন টক হওয়ায় সবাই শোকে ভেঙ্গে পড়েছিল।

১০| ২১ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৯

শাহিন-৯৯ বলেছেন:

উল্ল্যেখিত নামগুলো হচ্ছে আমার প্রিয় শহর খুলনার!!! খুলনা বিভাগীয় শহর হলেও খুব বেশি শহর নয়. এখন কিছুটা বড় হচ্ছে। খুলনার কেন্দ্রীয় বাস স্ট্যন্ড থেকে দক্ষিনে কিছুদূর গেলেই এখনো ধান খেত দেখা মেলে!!

লেখাটি চমৎকার হয়েছে।

২২ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৮

শেরজা তপন বলেছেন: যাক অবশেষে খুলনোর মানুষকে পেলাম। আমিতো আপনাদের আঞ্চলিক ভাষায় একটুখানি কথপোকথনের চেষ্টা করেছি; ভুল-ভ্রান্তি থাকলে ঠিক করে দিয়েন।
খুলনা আমার প্রিয় শহর, আশির দশক থেকে বহুবার গিয়েছি সেখানে।

১১| ২১ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৪

শ্রাবণধারা বলেছেন: রম্য ভালো হয়েছে। কোথায় যেন শুনেছিলাম যশোর খুলনার চোর-মাস্তানরাও ব্যবহারে অতি ভদ্র এবং ভাষায় মার্জিত। তাই হয়তো এই ফল-চোর ভাইটি কমলা খেয়ে তার প্রতিক্রিয়া চিরকুটে লিখে গিয়েছিলেন।

খুলনার ময়লাপোতা জায়গাটি আমার পরিচিত। খুলনার নিউমার্কেট ছাড়া যে দুচারটি জায়গার কথা মনে আছে তার মধ্যে বিদঘুটে নামের এই পাড়াটি আছে। ২৫-২৬ বছর আগে এখানে দু-একবার গিয়েছিলাম।

পোস্টে শেষের খুলনার আঞ্চলিক ভাষায় ভাইয়ের ফোনের কথাটিও আমার সেই খুলনা ময়লাপোতার স্মৃতিকে উজ্জীবিত করলো।

২৪ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৭

শেরজা তপন বলেছেন: তা ঠিক বলেছেন ওরা রুচিবান শিক্ষিত ও মার্জিত :)
( এলাকার পুলাপান এমনই হয়)
আমার বেশ কিছু বন্ধু আছে খুলনা এলাকার- তাদের সাথে নিয়মিত আড্ডা হয়- ওদের মুখের ভাষা শুনেই ওদের আঞ্চলিক লেখার চেষ্টা!
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য। ভাল থাকবেন।

১২| ২২ শে মে, ২০২৪ ভোর ৫:০০

জুন বলেছেন: হা হা হা দারুন শেরজা তপন, হাসতে হাসতে যে শেষ তা ইমু দেখলেই বুঝতে পারবেন =p~
তবে আমি ধারণা করেছিলাম বানরের কাজ। তবে যেই রকম টক বলছেন, মনে হয় বানরও একটা খাইয়া ছয়টা রাইখা যাইতো :P
অনেক অনেক ভালোলাগা রইলো।
+

২৪ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:১০

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার কাকুর দেশে বেড়ানোর কি হইল?? আর কোন গপ্‌ সপ্‌ নাই ক্যান?
আবহাওয়ার অবস্থা কি- ঠান্ডা কি এখনো আছে?

মিরোর আপু যে বদনাম দিল তাতে আপনার হাসিতো আমার কাছে মেকি মনে হচ্ছে :(
ওই এলাকার নব্বুইভাগ পুলাপান বান্দর টাইপের- কথা খারাপ কন নাই। :)

১৩| ২২ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মজার কাহিনী বটে। খুলনার ময়লাপোতার নাম ছোটকালে শুনেছিলাম। ছোটকালে আমার এক আত্মীয় দুই ঝুড়ি কমলা পাঠিয়েছিলেন সিলেট থেকে। উনি সিলেট থাকতেন তখন। আমরা বেশ কিছুদিন কমলা খেয়েছিলাম বেহিসাবে।

২৪ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:১১

শেরজা তপন বলেছেন: আহারে ছোট বেলার কমলার কথা মনে করিয়ে দিলেন!!
ঢাকা থেকে কালে-ভদ্রে কেউ কমলা নিয়ে গেলে, একটা করে কোয়া চুষে চুষে খাইতাম!!!

১৪| ২২ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮

ভুয়া মফিজ বলেছেন: রম্য বইলা দেওয়াতে মজা পাইলাম! :-B

২৪ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:১২

শেরজা তপন বলেছেন: রম্য না কইলে কি কষ্ট পাইতেন??
আমার কেন যেন মনে হচ্ছে এমন টাইপের বিষাদের চুরির ইতিহাসের সাথে আপনি জড়িত ছিলেন!!

১৫| ২২ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮

জুন বলেছেন: মিরর আপনি ঠিকই বলেছেন এই শেরজা আমার দেশ ত্যাগী, বিবাগী/ বৈরাগী হওয়ার জন্য দায়ী :P তবে শীঘ্রই আমার দেশে প্রত্যাবর্তন ঘটিবেক তা সে যত বড় রসকষহীন লেখাই সামুর পাতায় প্রকাশ করুক না ক্যানো #:-S
মু হা হা :-P

২৪ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

শেরজা তপন বলেছেন: তাহলে আমার কঠিন কাষ্ঠ লেখাগুলো কি আপনি দেশে আসা অব্দি ড্রাফটেই থাকিবে?
এমন হাজার বছরের সেরা প্রতিভাবান মানুষের প্রতিভাকে যদি এভাবে গলা চিপে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করা হয় তবে এইবার কেয়ামত অত্যাসন্ন! নারীরা যদিও যুগে যুগে এই কর্ম করিয়া আসিয়াছে। :(
আমি না হয় না-ই লিখলাম আপনি অন্তত দেশে ফিরে আসেন।

১৬| ২৩ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪

মনিরা সুলতানা বলেছেন: যতযাই বলেন না ক্যান , রম্য হিসেবে লিখেন না ক্যান আমার কিন্তু উনাদের পারিবারিক বন্ধন খুব পছন্দ হইছে। এই যে মুহ্রমুহ প্রতিটি ধাপের আপডেট সবার একসাথে শোক পালন। সাথে এই যে দেখেন ছোট ভাই কে বিপদ থেকে সাবধান করে দেয়া।
চমৎকার শেয়ার।

২৪ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৪

শেরজা তপন বলেছেন: তাদের যে পারিবারিক মেলবন্ধন তা এককথায় অবিশ্বাস্য! এবার তাদের পুরনো আমলের দাদাবাড়ি ভেঙ্গে একাংশ ডেভলপারের দিবে বলে সেই নিয়ে দাদাবাড়ির পুরনো ভিটায় একটা শেষ অনুষ্ঠান হল। আমেরিকা জার্মানি কানাডা যুক্তরাজ্য থেকে সব ছেলে বুড়োরা এসেছিল শুধু সেই অনুষ্ঠানের জন্য। তিনদিনব্যাপী সেখানে খোশ-গল্প স্মৃতি রোমন্থন খাওয়া-দাওয়া হৈ-হুল্লোর আর আবেগে রোমন্থন! সে এক অসাধারন ব্যাপার।
কারো কোন ক্ষোভ নেই কষ্ট নেই, আমার ওই বন্ধুর বাবা (বয়স ৯৩) যেভাবে যা বলেছে তাই সবাই মেনে নিয়েছে ( ভাই-বোনেরা সব চাকরি থেকে অবসর নিয়েছে বহু আগে- কি দারুণ ফ্যামিলির কার্টেসি)।

১৭| ২৩ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৯

আরাফআহনাফ বলেছেন: হাহালুখুগে ..........শেরজাজী, দারুন লিখেছেন -
কমলালেবু চোরের পুনরায় ফিরে আসা আর চিরকুট রেখে যাওয়া অনেকদিন হাসির কারন হয়ে থাকবে। :#) :#)
ধন্যবাদ।

২৪ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৬

শেরজা তপন বলেছেন: আপনি নিয়মিত লুঙ্গী পরেন?
একজীবনে কত মজার ও কষ্টের গল্প জমা রয়ে গেল! তাঁর কিছু বলা হল, কিছু ভুলে গেলাম-কিছু আর বলাই হবে না।
আপনাকে এভাবে হাসাতে পেরে আমিও দারুণ তৃপ্ত হলাম- ভ্রাতা।

১৮| ০৭ ই জুন, ২০২৪ সকাল ৯:১৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: চিরকুটের ভাষাটাই কমলালেবুর গুণ প্রকাশের জন্য যথেষ্ট ছিল; পরের লাইনটার প্রয়োজন ছিল না! :)

"তবে, শখের কোনো মূল্য হয় না, ঐ পরিবার বুঝিয়ে দিয়েছে" (৫ নং মন্তব্য) - সেটাই!

"তবে আমি ধারণা করেছিলাম বানরের কাজ" - জুন এর মত আমিও সেরকমই ভেবেছিলাম।

"তবে যেই রকম টক বলছেন, মনে হয় বানরও একটা খাইয়া ছয়টা রাইখা যাইতো" - এ কথাটা দারুণ বলেছেন জুন।

"রম্য বইলা দেওয়াতে মজা পাইলাম!" - :) আমিও মজা পাইলাম এ কথাটাতে! :)


০৭ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৪

শেরজা তপন বলেছেন: চমৎকার একটা পরিবার- এদের সবকিছুই মজার। কত যে, গল্প আছে আমার এই বন্ধুর পরিবারের।
কাহিনীর মুল ট্যুইস্ট-টাই ওই চিঠির ভাষায় লুকিয়ে আছে :)
আমার এই বন্ধু এখন এক নামি ব্যাঙ্কের ডি এম ডি- কিন্তু এখনো সে ব্যস্ত রাস্তার অন্যপাড়ে কোন বন্ধুকে দেখলে চোখ বন্ধ করে দৌড়িয়ে রাস্তা পার হয়!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.