নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...
অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!
গত ২৯ এপ্রিল রাতে লেখাটা পোস্ট করার পরে অনেক ব্লগার বেশ গোস্যা করেছেন। তাদের ধারনা, আমি পুরো বাংলাদেশ নই শুধু পরিবর্তিত ক্ষুদ্র একটা অংশের ছবি এনে পুরো বাংলাদেশকে সেই ছাঁচে ফেলতে চাইছি। আদপে আমি ভয়ঙ্কর দুর্যোগে থাকা একটা দেশ ও দেশের মানুষের সমস্যাকে উপেক্ষা করে সরকারের উন্নয়নের জোয়ারের গুণগান গাইবার চেষ্টা করছি। সেটা আবার যেন-তেন ভাবে নয়; গাও গেরামের ভুখা নাঙ্গা মানুষকে শহরের মানুষের থেকেও উদ্ধত, দাম্ভিক ও বুর্জুয়া হিসেবে জাহির করে।
আপনি কি জানেন গত দশ/ বিশ বছরে বাংলাদেশের মানুষ ভীষনভাবে পাল্টে গেছে-কিভাবে পাল্টে গেছে, কেন পাল্টে গেছে, আসলে কি পাল্টে গেছে? এ কথা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করতে গেলে ব্যাপক পরিসরে আলোচনা করতে হবে।
এ পাল্টে যাওয়াটা প্রথমে আমরা সেভাবে গা করিনি কিন্তু এখন চোখে লাগছে- গা জ্বালা করছে।আগে প্রবাস থেকে কেউ একজন আসলে চারিদিকে শত হুলস্থুল । তাঁর ব্যাগ খুলে কি কি অমুল্য ধন বের হবে তাই দেখার জন্য সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ত। গ্রাম মফঃস্বল মায় শহরের অলি গলিতে; বাইরে থেকে আনা পোশাক পরে কেউ বের হলে সবাই আড়ে ঢাড়ে দেখত। বন্ধুরা তো হামলে পড়ত। প্রবাস থেকে যারা আসত তারা হাত খুলে বাজার করত। দেশের সব কিছুই তাদের কাছে সস্তা মনে হোত। সব কিছুর দাম ডলার-পাউন্ড-দিনার -দিরহামে কনভার্ট করে কর সস্তা হিসাব করে বেশ মজা পেত।
এখন আর সেই দিন নাই। দেশে থাকা মানুষ এখন তাদের সামনে সবচেয়ে বড় মাছ কিনে ভাব নেয়, বলে জানিস এইটার দাম কত; দাম শুনে তারা ভিমড়ি খায়!
এমনি ঢাকা থেকে কেউ গ্রাম বা মফস্বলে গেলে বলত। ঢাকাইয়া মানুষ আসছে। তাদের ভাবও ছিল আলাদা। খানিকটা প্রবাসী মানুষদের মত। আর এখন ঢাকায় থাকা মানূষদের দুই ছটাক দাম দেয় না। কেউকেটা, নেতা, বড় ব্যাবসায়ী হলে একটু হালে পানি পায়- না হলে ভাত নাই।
মানুষ কি আসলে ধনী হয়ে গেছে? দেশ কি উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে? এটা কি আসলেই সরকারের সাফল্য?
মোটেও নয়। গত বিশ বছরে একটা দেশের যা কিছু অর্থনৈতিক ও মানসিক উন্নয়ন ও অবনমনের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিশাল এক ভুমিকা আছে।
বিভিন্ন মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির অর্থনৈতিক কিছু উন্নয়ন হয়েছে সত্য কিন্তু আমরা ভয়াবহ এক অমানবিক জাতিতে পরিনত হচ্ছি।
***
সারা বাংলাদেশ একদিকে আর ঢাকা একদিকে, ঢাকার হাল দেখে আপনি বাইরের শহর গ্রাম কিংবা মফস্বলের অনুমান করতে পারবেন না। এই যে খুব কাছের শহর সাভার বা আশুলিয়ার কথা ধরেন; আমার প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা, কি শীত কি গ্রীষ্ম কি বর্ষা সারা দিনরাত বিদ্যুত যাওয়া আসার উপরে আছে। নব্বুইভাগ দিনে ৮ ঘন্টা কাজের সময়ে ৭ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এমনি এই গ্রীষ্মের ভয়ঙ্কর গরমের দহন তাঁর উপরে পুরোদিন জেনারেটরের শব্দ ( তেলের পয়সার অতিরিক্ত হিসাবের কথা না হয় বাদই দিলাম)। ভয়ানক গরমে ক্লান্ত অবশ্রান্ত শরির আর হ্যাং যাওয়া মগজ নিয়ে বাসায় ফিরি প্রতিদিন।
আজব ব্যাপার কি জানেন; বছরের পর বছর এমন কাণ্ড হচ্ছে কিন্তু একজন মানুষ প্রতিবাদ করছে না। হাজার হাজার ব্যাবসায়ী শত কোটি টাকার তেল পুড়িয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন কিন্তু কারো কিছু বলার সাহস নেই। আমি ওই এলাকার একটা মানুষের মুখেও শুনি নাই 'আর ভাল্লাগে না, এই ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে মুক্তি চাই!'
কেন? ওখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা বলি; বেশ কিছু বছর আগে এরা শাক সব্জী ফসল বুনে আর গবাদী পশু পালন করে কায়-ক্লেশে জীবন যাপন করত। এরা কোনদিন ভাবেনি ডেসিমাইল বা শতাংশে জমি বিক্রি করবে। মিল ফ্যাক্টরি ঢাকা থেকে বাইরের মুখী হওয়ায় আচমকা এদের ভাগ্য ফিরতে শুরু করে। এরপর শুরু হোল শহরের বাইরে প্রকৃতির ছোয়ায় একটুকরো নিজের জমির নামে প্লট বানিজ্য। সেখানেই থেমে রইল না। ধনবান মানুষেরা রিসোর্ট ব্যাবসায় মনোযোগী হলেন। ১০/২০/৫০/১০০ একর জমিতে গড়ে উঠতে থাকল রিসোর্ট। তারপরে প্রবাসী আর উচ্চবিত্তদের বাগানবাড়ির খায়েসে জমির দাম বাড়তে থাকল চক্রবৃদ্ধিহারে। ওদিকে মিল ফ্যাক্টরি যখন হচ্ছে এদের কর্মীদের থাকার জায়গা প্রয়োজন। ফাঁকা সব আবাদী অনাবাদি জমিগুলো ভরে উঠল একটা টিনশেড কিংবা দোতালা তিনতলা মেস আকারে বাড়ি। কোন মতে ঘর করলেই ভাড়া হয়। ওই এলাকার মানুষগুলো উতপাদনমুখী সব কাজ বাদ দিয়ে পায়ের উপর পা তুলে দিয়ে এখন শুধু বসে বসে খাচ্ছে। যুবক ছেলেরা দামী দামী মটর সাইকেল দাবড়াচ্ছে, নেশা করছে রাজনীতি করছে আর মাস্তানি করছে। সাংঘাতিক একেকটা পারিবারিক পদবী নিয়ে চোখ রাঙ্গাচ্ছে সব বাইরের মানুষদের।ছোট মাঝারি ব্যাবসায়ীরা প্রসাশনের সন্ত্রাসী আর ওদের কাছে অসহায়।
~ এভাবে একরের পর একর জমি নিয়ে গড়ে উঠছে সখের বাগানবাড়ি বা রিসোর্ট।
ওইসব এলাকায় ফল-মুল ও বেশিরভাগ শাক সব্জীর দামও ঢাকার থেকে বেশী, কেন জিজ্ঞেস করলে বলে, ঢাকার থেকে এসব আমরা আনি!!!
***
আমার ফ্যাক্টরি থেকে গত দু'বছরে অন্তর জনা বিশেক ছেলে চাকরি ছেড়ে দিয়ে দেশে চলে গিয়েছে। কেন?
বেতনে পোষায় না? হ্যাঁ এটা একটা কারন তো নিশ্চয়ই। কিন্তু স্কিলড একটা ছেলে তাঁর দারুন একতা ভবিষ্যত রেখে এত অল্প বয়সে
হতাশ হয়ে কেন এমন হুট করে চাকরি ছেড়ে দিবে?
~ ব্যাটারিচালিত রিক্সা এখন সারা দেশের জন্য এক ভয়ঙ্কর মাথাব্যাথার কারন। এর জন্য শুধু বিদ্যুৎ নয় যুবশক্তির ভয়ঙ্কর এক অপচয় হচ্ছে। মিল-ফ্যাক্টরির কর্মী থেকে শুরু করে এখন ক্ষেতের ফসল কাটার মুজুর পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এদের অনেকের বিষয়েই পরে জেনেছি;তারা দেশে গিয়ে অটো রিক্সা চালাচ্ছে। এবং কেউ কেউ নাকি এই দু বছরেই অটো রিক্সা চালিয়ে এক-আধখানা পাকা বাড়িও করে ফেলেছে। (তবে দু'চারজন বিদেশে গিয়েছে সেটা নিশ্চিত- আবার কেউ আদম ব্যাপারির হাতে ধরা খেয়ে সর্বশান্ত হয়েছে! সারা বাংলাদেশেই এখন কত লক্ষ ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা চলাচল করে সেটা বলা মুস্কিল। এদেশে এখন সবচেয়ে বেশী যুবশক্তির অপচয় হচ্ছে এই অটোরিক্সার খাতে এটা নিশ্চিত, তবে ভিক্ষার পরে স্বাধীন পেশা হিসেবে এর জূড়ি মেলা ভার।
এমন স্বাধীন আর ইচ্ছামাফিক ব্যাবসায়িক পেশা আর কমই আছে। সকাল দশটা নাগাদ ঘুমিয়ে-গরম ভাত খেয়ে, অবৈধভাবে চার্জ করা ব্যাটারিচালিত রিক্সা নিয়ে ঘন্টা দুই তিন চালিয়ে বসায় ফিরে, ভাত খেয়ে ঘুমিয়ে আডদা দিয়ে বিকেলে বা রাতে দু-চার ঘন্টা চালিয়ে চমৎকার একটা উপার্জন নিয়ে বাসায় ফিরলাম। নিজের রিক্সা না থাকলে একটু ঝামেলা আছে- আর প্রসাশন ও এলাকার নেতাকে ম্যানেজ করে চলতেই হবে, এইটা আইন। ঢাকা থেকে তেতুলিয়া একই আইন চলছে।
***
ফেসবুক-ইউটিউব টিভি সহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়াঃ
সারা বাংলাদেশের চাষা-ভুষা শিক্ষিত অশিক্ষিত লোক বুঝে গেছে দেশী মাছ মাংস আর নন হাইব্রিড ও তাজা জিনিসের জন্য মানুষ দু'পয়সা নয় অনেক পয়সা বেশী দিতে রাজী। নদীর মাছ, দেশী মুরগী, দেশী মুরগীর ডিম, ক্ষেতের তাজা শাক সব্জী, দেশী কলা মুলো ছাতু গুড় আখ ফল মুল- এগুলোর জন্য শহরের মানুষ মুখিয়ে ছিল এতদিন। হালে এই ট্রেন্ড শুরু হয়েছে গ্রাম বা মফস্বলেও। হালে কোন এক জেলে নদী কিংবা খাল বিল থেকে দেশী কিছু মাছ ধরে টুকরিতে করে নিয়ে যাবার সময়ে এমন ভাব করে যে কোন সোনা- জহরত নিয়ে যাচ্ছে। আপনি যদি তাজা ও দেশী মাছের লোভে তাদের কাছে গিয়ে দাম জিগ্যেস করেন তবে নব্বুই ভাগ ক্ষেত্রে তারা বাজার থেকে দাম অনেক বেশী চাইবে। আগের সেই সহজ সরল মানুষগুলো আর এখন নাই। সবাই খুব বেশী প্রাকটিক্যাল আর প্রফেশনাল হয়ে গেছে।
আগে ধোঁকা বেশীরভাগ শহরের মানুষ দিত। এখন অজ-পাড়াগায়ের মানুষও ভেজাল দেয়া আর ধোঁকা দেয়ায় ওস্তাদ হয়ে যাচ্ছে।
সবাই যে হয়েছে তা নয়। কিন্তু পুরো সমাজটাকে ঘুনে ধরেছে।
~ অর্গানিকের নাম করে কে কি বিক্রি করছে কেউ জানে না কিন্তু বিক্রি হচ্ছে সাধারণ পণ্যের থেকে অনেক বেশী দামে।
টিকটক, রিলে গ্রাম আর শহর কেউ কারো থেকে পিছিয়ে নেই। শহরে কোন পণ্য মুল্যে আগুন ধরে এটা মুহুর্তে ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চলে- সঙ্গে সঙ্গে সেখানেও আগুন জ্বলে ওঠে। তবে পচনশীল দ্রব্যে সেই আগুন উতপাদ্নকারীরা জ্বালিয়ে রাখতে পারেনা বেশীক্ষন। কিন্তু 'রাখী' মালে কেউ কারো থেকে কম নয়। দেশের কোথায় কেমন উৎপাদন যোগান বাইরের দেশের উৎপাদন,আমদানী- ডলারের দাম, আমদানী নিষিদ্ধ ঘোষনা, ভ্যাট শুল্ক ছাড় সহ সব কিছুতেই সবাই খবর রাখে। যেটা একসময় শুধু কিছু ধনবান জোতদার ব্যাবসায়ী ফড়িয়াদের হাতে ছিল সেটা এখন দু চার লাখ টাকা হাতে থাকা মানুষের হাতেও চলে গেছে। নিত্যপণ্যের বাজারে নব্য কর্পোরেটদের বিশাল থাবা ও সব ব্যাবসা কুক্ষিগত করার পায়তারার পাশাপাশি এইটাও একটা বড় কারন পণ্যমুল্য বাড়ার।
এর বাইরে খাঁটি তেল ঘি, নদীর মাছ দেশী মুরগীর তিল তিসি আখের গুরের নাম করে শহরের বাইরে শত শত ছেলেরা অনলাইন ব্যাবসা করছে। এদের বড় একটা অংশ ব্যাবসার নামে করছে জোচ্চুরি- লোক ঠকাচ্ছে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ঠগছে শহর ও শহরকেন্দ্রিক মানুষেরা।
কেউ কেউ ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে শুধু প্যাকিং ও কুরিয়ারের অগ্রীম টাকা নিয়ে মেরে দিচ্ছে। ১০০ টাকার জন্য তেমন আর কেউ উচ্চবাচ্য করছে না কিন্তু এভাবে লক্ষ কোটি টাকা লোপাট হয়ে যাচ্ছে। পুরো দেশের আনাচে কানাচে মানুষ অনলাইন মিডিয়ার বদৌলতে সবধরনের ব্যাবসা থকে শুরু করে ফেরেব্বাজি ফাঁকিবাজি শিখে যাচ্ছে। খুব সহজে মানুষের পকেট থকে টাকা খসানোর বুদ্ধিটা জেনে যাচ্ছে। গ্রাম মফস্বলের মানুষদের সহজ সরল মনে করে এবং তাদের কাছে অথেন্টিক জিনিস আছে ভেবে ধরা খাচ্ছে শহুরে লোক।
~ এমন হাজারো নামে ফেসবুকে প্রতারনার জাল বিছিয়ে রেখেছে শহর থেকে মফঃস্বল হয়ে গ্রামে সবখানের মানুষেরা। এরা লাইক, ফলোয়ার, সাবস্ক্রাইবার থেকে শুরু করে মন্তব্য পর্যন্ত পয়সা দিয়ে কিনে নেয়। বিরূপ মন্তব্য অপছন্দের কোন বিষয় সবকিছুই এইসব পেজে ফিল্টার হয়ে যায়। প্রোডাক্ট হাতে পাওয়ার ছবি সহ চমৎকার সব মন্তব্য সবগুলোই মিথ্যে- হাজার হাজার বেকার বসে থাকা ছেলে মেয়েরা স্মার্ট মোবাইল নিয়ে শত শত ফেসবুক ইউটিউবে মিথ্যে লাইক মন্তব্য দিয়ে পয়সা কামায়।
~ জ্বীনের বাদশার মত এমন বহু পরিচয়ে অনলাইনে প্রতারনার জাল বিছিয়ে কিছু মানুষকে সর্বশান্ত করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত কিছু মানুষ। মুল প্রতারকদের শেকড় মূলত মফঃস্বল ও গ্রামে। ইন্ডিয়াতে 'জামতারা' (সাবকো নাম্বার আয়েগা) নামে নেটফ্লিক্সে সত্য ঘটনা অবল্মবনে একটা সিরিজ আছে; যেখানে দেখানো হয়েছে কিভাবে পুরো একটা গ্রাম জড়িয়ে পড়ে অনলাইন স্ক্যামে।এমনটা কমবেশি আমাদের দেশেও আছে।
ঢাকা শহরে যত ধরণের প্রতারক চোর, পকেটমার, মলম পার্টি, বমি পার্টি, অজ্ঞান পার্টি আছে এদের প্রায় সবাই শহরে এসে পার্ট টাইম কুকর্ম করে নিজের বাড়িতে গিয়ে সুফি সেজে আয়েশ করে। (এরা সমাজের অতি ক্ষুদ্র অংশ)
***
সবাই যে বাকা পথে অসৎভাবে আয় রোজগার করছে তা নয় মোটেই। তবে প্রান্তিক মানুষের হাতে টাকা যাচ্ছে সেটা একটা ভাল লক্ষন। শহরের ও সারাজীবন প্রবাসে থেকে ক্লান্ত বিষন্ন একজীবন জন্মভুমি ছেড়ে পরভুমে কাটিয়ে আসা মানুষেরা জীবনের শেষ লগ্নে একটু আত্মার শান্তির খোঁজে ছুটে আসতে চান গ্রামের নিভৃত কোলে। তাদের কত সপ্ন থাকে এক টুকরো গাছ গাছালি ছাওয়া জমি, একটু খামার, একটা পুকুর সাথে একটা বাংলো। সেই সপ্নে বিভোর এখন হাজারো লক্ষ বাঙ্গালী। একদম অজ পাড়াগাঁয়ে আজ জমির দাম বেড়ে যাচ্ছে হু হু করে। সেনেটারি টাইলস এসি মিস্ত্রি খুঁজতে আর শহরে যেতে হয় না। সেই বাঁশ কাঠ ছনে ছাওয়া ঘরগুলো আজ বিলুপ্ত প্রায়। পাকা ছাদ না হলেও রঙ্গীন টিন এসবেস্টর আর টালি তাঁর জায়গা দখল করে নিচ্ছে। পাকা বাথরুম, কমোড, গ্যাসের রান্নাঘর এখন গ্রামে আর কোন সপ্ন নয়।
~ শহরে কি গ্রামে একটুকরো জমিতে নিজের মনের মত বাড়ি করতে আর সেই হ্যাঁপা নেই। কাই-এর মত বহু কর্পোরেট ব্যাবসায়ীরা এখন এগিয়ে এসেছে অল্প পয়সায়- অল্প দিনে যেমন খুশী বাড়ি করে দিবে। এমন একটা বাড়ি বানাতে মাত্র ১৬ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। ( এখন নাকি ৮/১০ লক্ষ টাকায় অনেক কোম্পানী এমন কিংবা ডুপ্লেক্স বাড়ি অফার করছে)
***
ফুটনোটঃ আমি হয়তো এখানে ৬০ ভাগ মানুষের কথা বলছি। বাকি ৪০ভাগ মানুষের কথা আমি জানি না কিংবা তাদের কাছে আমি পৌছাতে পারি নাই। আমার কেন যেন মনে হয় ইদানিং গ্রামের মানুষের থেকে শহরে অভাবীদের সংখ্যা বাড়ছে বেশী; আমি এখানে নিন্ম বা নিন্ম-নিন্মবিত্তদের কথা বলছি না। আমি বলছি যারা মধ্যবিত্ত বা নিন্ম মধ্যবিত্তদের কাতারে ছিল তাদের কথা। কেরানীগিরি বাদ দিলাম স্কুল মাষ্টারি বা কলেজের শিক্ষকতার ( সেটা সরকারী হলেও) মত পেশায় এ শহরে ভদ্র পল্লীতে থেকে জীবন নির্বাহ করা অতীব কঠিন ব্যাপার! ৫০ হাজার টাকা বেতনে ঢাকা শহরে দুই কামরার একটা ভাড়া বাড়িতে থেকে চারজনের ( বাচ্চাদের পড়াশুনা+ চিকিৎসা ব্যয়) সংসার চালানো প্রায় অসম্ভব এখন। কিন্তু একজন সরকারি সহকারি অধ্যাপক সম্ভবতঃ ৩৮ হাজার টাকা বেতন পান। কি ভয়াবহ ব্যাপার!
***
ধনবানদের ক্ষমতাবান হবার খায়েশে গ্রামমুখী রাজনীতিঃ
গতকালের টিআইবি'র রিপোর্ট ছিল 'সম্পদে এমপিদের ছাড়িয়ে চেয়ারম্যানরা'
পাঁচ বছরে অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধিতে সংসদ সদস্যদের ছাড়িয়ে গেছেন উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা।এবার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে কোটিপতির সংখ্যা ১১৭।
শহরে এখন অবৈধ টাকার পাহাড় গড়া মানুষ হাজার হাজার। টাকা হলে মানুষ চায় ক্ষমতা আর ক্ষমতার জন্য সবচেয়ে লোভনীয় হচ্ছে রাজনৈতিক পরিচিতি- তবে সেটা অবশ্যই সরকারদলীয় হতে হবে। মানুষের লোভের শেষ নাই; টাকার জোড়ে গরু ছাগল ধেনো ইদুর সবাই সমাজের মাথা হতে চায়। এমপি হওয়াতো চাট্টিখানি কথা নয়, তাই অনেকের নজর থাকে পৌরসভার মেয়র, উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান না হলে নিদেন পক্ষে ইউপি চেয়ারম্যানের মত জনপ্রতিনিধির দিকে। শুধু শহরের ধনবান পয়সাওয়ালা লোক নয়- বিদেশ ফেরত অর্থবান মানুষেরাও ছুটে আসছে দলীয় পদ পদবী বাগানো বা এইসব জন-প্রতিনিধি হবার লোভে। দেশের এক ধরণের মানুষই আছে ফাঁদ পাতার জন্য; দিন-রাত খোচাতে থাকে। 'আপনি দাড়াইলেই কেল্লা ফতে'- 'আপনার পাশে দাড়ানোর মত আর কোন লদু-ছদু আছে?' 'সারাজীবনতো অনেক কামাইলেন- এখন দেশের মানুষের জন্য কিছু করেন।'
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে এখন কাগজের মত টাকা ওড়ে। প্রার্থীরা দু-চার বছর আগে থেকেই থাকার থলি নিয়ে দৌড়াতে শুরু করে। প্রসাশন, পাতি নেতা,হাতি নেতা, উঠতি নেতা, ময়-মুরুব্বি, বখাটে -ফেরেব্বাজ সব ম্যানেজ করতে হয়। একটা উপজেলা নির্বাচনে ৫ থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ করেন এমন প্রার্থী কয়েক শত।
এদের টাকায় সারা বছর মটর সাইকেল চালিয়ে গুলতানী মারে কত-শত পুলাপান তাঁর হিসাব নেই।
***
শহরের মানুষের ধর্মের প্রতি ঝোঁক বেড়ে যাওয়া ও গ্রামের মানুষের পোয়াবারোঃ
ঢাকা নাকি মসজিদের শহর। এই তালিকায় চাঁটগা সিলেটও পিছিয়ে নেই। গত ত্রিশ বছরে ঢাকায় মসজিদের সংখ্যা যতনা বেড়েছে তাঁর থেকে বহুতল হয়েছে বেশী। এখনো জুম্মাবারে কোন মসজিদেই মুসুল্লী সঙ্কুলান হয় না- শহরের বহু রাস্তা আটকে যায় নামাজীদের জন্য।
আমার দেখা মতে গ্রামের তুলনায় শহরের মানুষ ধার্মিকতা ও নাস্তিকতা দু'দিকেই বহুগুন এগিয়ে আছে বা যাচ্ছে। তবে মানুষের অসুস্থতা অস্থিরতা সামাজিক অবক্ষয় দুর্নীতি লোভ দুর্দমনীয় আকাঙ্খার পাশাপাশি কেন এত ধর্মভীরুতা বাড়ছে সেটা একটা আশ্চর্যজনক ঘটনা বটে। হাজার হাজার শিক্ষিত তরুন তাবলীগ করছে- কেউ কেউ ধর্ম আলোচনায় উচ্চবাচ্য করলেও অনেকে একেবারেই নিশ্চুপ, তারা নিজ মনে নিজের মত করে সব রকম লজিককে পাশ কাটিয়ে ধর্মপালন করে যাচ্ছে।
আমি আমার বাল্যকালে কোন যুবক ছেলে মেয়েকে হজ্জ বা উমরা পালন করতে দেখিনি। কিন্তু এখন প্রতি বছর শত সহস্র যুবক যুবতী হজ্জ বা উমরা পালন করতে মক্কা- মদীনায় যাচ্ছে।
যাকাত কিভাবে ফাঁকি দেয়া যাবে কিংবা কত কম যাকাত দেয়া যায় তাই নিয়ে আগে ধার্মিক ধনবানদের চেষ্টার কমতি ছিল না। এখনো তেমন মানুষ নেই তা নয়- তবে অনেকেই পরিপূর্ণভাবেই তাঁর নিয়ম পালন করছে বা বেশী বেশী করছে। বহু শত প্রবাসী ও দেশি ধনী মানুষ তাঁর গ্রামে এতিমখানা, লিল্লাহ বোর্ডিং, মসজিদ, স্কুল করে দিচ্ছে। সেখানে টাকা ঢালছে দেদারছে- কিন্তু যাদের মাধ্যমে যাচ্ছে বা যাদের কাছে যাচ্ছে, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সেখানে হচ্ছে নয় ছয়। শহর গ্রাম বা মফস্বলের শত শত পরিবার এখন শুধু তাদের ধনী আত্মীয়স্বজন ( এর মধ্য বহু দূর সম্পর্ক বা -লতায় পাতায় আত্মীয়ও আছে) শুধু এই যাকাতের টাকায় বসে বসে খাচ্ছে। কেউ কেউ ভাঙ্গা বাড়ি মেরামত করবে, দোকান দেবে বল্ ভ্যান গাড়ি, অটো, গরু কিনবে বলে বড় অঙ্কের যাকাতের টাকা নিয়ে পুরো টাকায় ভালমন্দ খেয়ে-দেয়ে কোন অনুশোচনা ছাড়াই দিন কাটিয়ে দেয়।
***
উন্নয়নে অধিগ্রহণঃ অনুর্বর অনাবাদি জমির মালিকরা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছঃ
পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, চট্রগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেন লাইন, গভীর সুমুদ্র বন্দর, থার্ড টার্মিনাল সহ এই সরকারের ছোট বড় হাজারো দৃশ্যমান উন্নয়ন প্রকল্পে মানুষ সুবিধাভোগ করছে সেটা বলার জন্য সরকারের দালাল হতে হয় না। তবে এই সব প্রকল্পে প্রয়োজন জমি অধিগ্রহন। এর পাশাপাশি সারা দেশ জুড়ে হচ্ছে স্পেশাল এক্সপোর্ট ইকোনোমিক জোন বা ইপিজেড। ওদিকে মসজিদ,হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় এগুলোর জন্য জমি অধিগ্রহন একান্ত প্রয়োজন।
ওদিকে এসবে যে ছোট বড় দুর্নীতি হচ্ছে আবার সেটা বোঝার জন্য বিশাল টিআইবির চেয়ারম্যান বা দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের মত অর্থনীতিবিদ হতে হয় না।
কিন্তু দুর্নীতিটা কোথায় কোথায় হচ্ছে সেটা ফাইন্ড আউট করা মুশকিল!
আমার জানা মতে এযাবতকালে জমি অধিগ্রহন নিয়ে সবচেয়ে বেশী দুর্নীতি হয়েছে পদ্মা সেতুতে বিশেষ করে এর রেল প্রকল্পে! এই দুর্নীতির প্যাটার্ণটা একটু ভিন্ন ছিল। এর সাথে সম্ভবত সরকারের উর্ধ্বতন মহল জড়িত নাও থাকতে পারে। তবে স্থানীয় প্রশাসন, ক্ষমতাবান, রাজনীতিবিদ ও প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা জড়িত ছিল এটা মোটামুটি নিশ্চিত।
জমি অধিগ্রহনে খাস জমি, খাদ, পুকুর, খানা-খন্দ, অনাবাদী, এক ফসলী, পুর্ন আবাদী, ভিটা জমির জন্য আলাদা আলদা মুল্য বরাদ্দ থাকে। স্বভাবতইঃ বাড়িঘর সহ ভিটা জমির মুল্য সবচাইতে বেশী থাকবে। কেরানীগঞ্জ থেকে শুরু করে ভাঙ্গা পর্যন্ত- যত জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে তাঁর একটা বড় অংশের নাকি ভিটা জমি হিসেবে মুল্য পরিশোধ করা হয়েছে এমনটাই সংবাদে এসেছে।
কিভাবে? পরিদর্শনের আগেই খবর চলে যেত জমির মালিকের কাছে। রেডি থাকত মোবাইল বাড়ির ব্যাবসায়িরা। তারা পয়সার বিনিময়ে রাতারাতি বাড়িঘর করে গাছপালা লাগিয়ে হাঁস মুরগী ছেড়ে, গরুর গোয়ালঘর বানিয়ে পুরো গেরস্তর ঘর করে দিত। পরদিন প্রকল্পের লোক এসে জমির দাগ খতিয়ান বুঝে নিয়ে ছবি তুলে নিয়ে যেত।
কারসাজির ‘সম্রাট’ হুমায়ুন ~বিস্তারিত জানতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।
সরকারী টাকার বড় অংশ পেয়ে যেত জমির মালিক আর ভাগের টাকা চলে যেত প্রশাসন, চেয়ারম্যান-মেম্বার, নেতা আর প্রকল্পের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কাছে। এভাবে সাধারণ গেরস্ত থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে হাজার মানুষ।
***
মোবাইল কমিউনিকেশন ও ডিজিটাল লেনদেনঃ ঘরে বসে রাজার হাল,এমন অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার আছে, সময় সুযোগ পেলে করব নিশ্চিত। লেখা অনেক বড় হয়ে গেছে। আজ এ পর্যন্তই থাক। তবে আলোচনা সমালোচনা সব ব্যাপারেই হতে পারে। যে কোন যুক্তিযুক্ত মতামত গ্রহণযোগ্য- আমি সব কিছু জেনে বুঝে বসে আছি সেটা মোটেও নয়।
০৭ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৩:২৫
শেরজা তপন বলেছেন: অনেক বড় লেখা -ধৈর্য্য ধরে পড়ার জন্য সবিশেষ ধন্যবাদ।
শুভকামনা নিরন্তর।
২| ০৭ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৩:১৯
শায়মা বলেছেন: বাড়ির কাজের বুয়ারা এসে প্রথমেই বলে ইন্টারনেট কানেকশন লাগায় দেন ফোনে। টিকটকও করে। প্রতি পালা পার্বনে ঈদ ছাড়াও জামা কাপড় চায়। বেতন বেড়েছে অনেক বেশি সাথে জীবন যাত্রা। আমাদের আসমার ছোটবোন এসেছিলো সিনেমার নায়িকাও ফেইল তার সৌন্দয্যের কাছে সে বিউটি পারলার গেলো। আসমা তার বোনকে অর্থ দিয়ে সাহায্য করে কারণ সে নিজে কাজ করে।
মীরা নামে একটা মেয়ে কিছুদিন কাজের জন্য এসেছিলো আমাদের বাসায় সে নাকি সৌদী আরাবেও কাজ করে এসেছে। সেও স্বপ্ন দেখে টিকটক করে টাকা আর্ন করার। দুপুরের পর থেকে তার কাজ ছিলো জামা কাপড় পরে সেজেগুজে ছাদে বাগানে আকাশে বাতাসে টিকটক করে বেড়ানোর।
আমাদের এক ড্রাইভার ছিলো এই বেতনে পোষায় না গ্রামে গিয়ে মাছ চাষ করে আর ফসল ফলিয়ে ব্যবসা শুরু করেছে । বাড়ি বানিয়েছে।
মানুষ আর এখন বোকা গাধা পায়ে বেড়ি বাঁধা ক্রীতদাস নেই। সবারই চোখ খুলেছে বুদ্ধি খুলেছে। হোক সেটা ইতিবাচক বা নেতিবাচক!
০৭ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৩:২৬
শেরজা তপন বলেছেন: কঠিন অবস্থা! কত নতুন তথ্য জানা গেল আপনার কাছ থেকে
সবারই চোখ খুলেছে বুদ্ধি খুলেছে। হোক সেটা ইতিবাচক বা নেতিবাচক!
কিন্তু মানুষ সেটা বুঝতে চায় না। অনেকেই ভাবে গ্রামের মানুষ এখনো সেই সামন্ত যুগে পড়ে আছে!
৩| ০৭ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮
বাউন্ডেলে বলেছেন: লেখায় বাস্তবতা বিদ্যমান। বর্তমানে পুরো দুণিয়ার প্রায় এরকমই চিত্র। নৈতিকতা মানব সমাজে এখন অতি ক্ষীনধারায় বহমান। যে টুকু দৃশ্যমান করলেই নয়। প্রগতি, প্রযুক্তির মতোই সবকিছুই গ্লোবালাইজ হচ্ছে। নৈতিকতার সংজ্ঞা পাল্টে ফেলে অগ্রগতিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে । এটা সার্বিক বিপর্যয়ের পুর্ব লক্ষন। প্রকৃতি তার চেয়ে অধিক গতিময়তাকে পছন্দ করে না।
০৭ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২
শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক-ঠাক অনুধাবন করেছেন। বাংলাদেশের একেবারে অজ পাড়াগাঁয়ের মানুষও প্রযুক্তিগত দিক থকে শহুরে মানুষ থেকে কোন অংশে পিছিয়ে নেই বরং কিছু ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে- সেই সাথে বরং শহুরে মানুষের সরলতার সুযোগে তারা কিছু ফায়দা নিচ্ছে, সেটা অনেকেই বুঝতে চায় না।
নৈতিকতার সংজ্ঞা পাল্টে ফেলে অগ্রগতিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে । এটা সার্বিক বিপর্যয়ের পুর্ব লক্ষন। প্রকৃতি তার চেয়ে অধিক গতিময়তাকে পছন্দ করে না। ~ আপনার সাথে সহমত।
৪| ০৭ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮
শায়মা বলেছেন: হ্যাঁ আসলে যারা সেটা মনে করে তারাই পড়ে আছে মানে প্রাচীনপন্থী। আপডেট হবে না একই বুলি আউড়াবে ভেন ভেন করবে।
তোমার পোস্ট কিন্তু এক্সসেলেন্ট হয়েছে। আমি প্রিয়তে রাখছি। আরও ভালোভাবে অনুধাবন করার জন্য!
০৭ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৫
শেরজা তপন বলেছেন: ওরে বাপরে! এটাতো বিরাট বড় পাওনা- আমিতো শুনে আকাশে উড়ছি
হ্যাঁ আসলে যারা সেটা মনে করে তারাই পড়ে আছে মানে প্রাচীনপন্থী। আপডেট হবে না একই বুলি আউড়াবে ভেন ভেন করবে। ~ অনেকেই দেশের সাথে কানেক্টেট নেই দীর্ঘদিন- কিংবা দু-চারদিনের জন্য গেষ্ট হিসেবে আসে, তাদের চোখে এত বড় পরিবর্তন গভীরভাবে ধরা না পড়ারই কথা। আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ফের মন্তব্যে আসার জন্য।
৫| ০৭ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:০৬
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: এসব বিবরণে হা-হুতাশ করা ছাড়া আপাতত কিছু করতে পারছি না।
০৭ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৫
শেরজা তপন বলেছেন: আপনিতো গ্রামের খবর ভাল রাখেন বলে জানি- হা হুতাশ করবেন কেন? বলেন কিছু, ডিবেট হোক!
৬| ০৭ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৩
কামাল১৮ বলেছেন: মানুষ অসৎ হয়ে গেছে,তাই মসজিদ বাড়ছে।পাপ মোচনের এর থেকে ভালো যায়গা আর নাই।জুম্মার নামাজ পড়লে গত সপ্তাহের পাপ মাপ।হাদিসে তার প্রমান আছে।
উন্নয়ন জনগনের সন্মিলিত কাজের ফল।সরকারের কিছু লোক সেই ফল বেশি ভোগ করছে।
১০ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৩
শেরজা তপন বলেছেন: আপনি শুধু ধর্মেরটুকু পড়লেন নাকি? ধার্মিকেরা অধার্মিক হয়েছে আর অধার্মিকেরা হয়েছে ধার্মিক! ফের দুই গ্রুপে মিলে সমাজের গোঁড়া থেকে ঘুনে পোকার মত কুট কুট করে কাটছে।
সরকারের লোক তো আমরাই। আমরাই আওয়ামিলীগ বিএনপি জামাত - যেখানে যাই সেখানকার সুবিধা ভোগ করি, আর না পাইলে চিৎকার চেঁচামেচি!
৭| ০৭ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২১
অর্ক বলেছেন: যতদূর পড়লাম ভাই, খুব সত্য। আমারও একই অভিজ্ঞতা। নিঃসন্দেহে গত পনেরো বিশ বছরে অনেক ভালো করেছে বাংলাদেশ। সবক্ষেত্রেই। এই সত্য অস্বীকার করা বিরাট মিথ্যাচার হবে। শেখ হাসিনা তার এ সময়কালে সারা দেশে নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উন্নয়ন করেছে। গ্রামেগঞ্জেও এর মাঝে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। গ্রাম আদৌ আর গ্রাম নেই, শহর হয়ে গেছে। সাভার আশুলিয়ার বিদ্যুৎ সমস্যার হয়তো বিশেষ কোনও কারণ আছে। কিন্তু এর মধ্যে আমি যতো জায়গা গিয়েছি, সবখানে প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে অনেক। এটা ওটা আলাদা করে বলার কিছু নেই আসলে। সবক্ষেত্রেই ভালো করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মডেল, মানবসম্পদের উন্নয়ন আজ বিশ্বের তুলনামূলক দরিদ্র দেশগুলোর জন্য আদর্শ। শেখ হাসিনা এই সময়কালে দেশকে যতোটা এগিয়ে নিয়ে গেছে, তার জন্য তাঁর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা, ধন্যবাদ জানাই। আরও এগিয়ে যাক বাংলাদেশ। তবে দুঃখ যে, মানুষের মাঝে নীতিনৈতিকতার স্খলনও লক্ষ্যণীয়। যা দুর্ভাগ্যজনক। সমাজের সর্বত্র দূর্নীতি, অনিয়ম, অসাধুতা, লুটপাট একেবারে জেঁকে বসেছে। নতুন প্রজন্মের নৈতিক চরিত্রের পতন হয়েছে বেশ। দেশের শিক্ষার মান একেবারে যা তা। স্কুলের বাংলা বই পড়ে আমি হতাশ। আবোলতাবোল লেখা বেশি। আসলে সমস্যা আছেই, যেমন ছিলো, আগামীতেও থাকবে নিঃসন্দেহে। এর মাঝেই এ সময়ে দারুণ ভালো করেছে বাংলাদেশ। ধনী গরীব বৈষম্য কমেছে। দারিদ্র্যতাও কমেছে ঢের। আগের বছর শীতের রাতে দেখলাম, আওয়ামী লীগের একজন নারী নেত্রী মাইক্রোতে দলবল নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলো শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্দেশ্যে। কিন্তু এদিক সেদিক সদলবলে কিছুক্ষণ ঘুরে কোনও গরীব পেলো না শীতবস্ত্র বিতরণের। অনেক খেটেখুটে অবশেষে দেখলাম এক মুরুব্বিকে অনেকটা জোর করেই কম্বল দিলো। মুরুব্বি তো কিছুতেই নেবে না। বারবার বললো, লাগবো না। বাসায় আছে। চা খাইতে বাইরাইছি। অনেক সাধাসাধির পর নিতে বাধ্য হলো যেন। নেত্রী একদম জড়াজড়ি করে কম্বল পরিয়ে দিলো প্রায়। এ বাস্তবতা অস্বীকার করা যাবে না, ভাই।
আপনার জন্য হার্দিক শুভেচ্ছা। (আগের মন্তব্যে কিছু ভুল আছে। ডিলিট প্লিজ।)
১০ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩০
শেরজা তপন বলেছেন: প্রথমেই আপনার আইডির ছবি দেখে নামের সাথে মেলাতে পারছিলাম না। তাছাড়া আমার পোস্টে এই মন্তব্য কেন যে হজম করতে কষ্ট হচ্ছিল! আপনি ভাই শারিরিকভাবে সুস্থ আছেন তো?
তবে আপনার চমৎকার মন্তব্য এই পোস্টটাকে অনেক বেশী সমৃদ্ধ করেছে নিঃসন্দেহে। তবে মন্তব্যের শেষের অংশটুকু পড়ে অনেকের শরিরে আগুন ধরে যাবে নিশ্চিত।
কিন্তু এত ভালো'র পরেরো কেন যেন মনে হয়; আমরা এক কঠিন চক্রের মধ্যে বাধা পড়ে গেছি!! সরকার নামক যন্ত্র আমাদের নিয়ে ভয়ঙ্কর এক খেলায় মেতে উঠেছে। যেমন খুশী এক্সপেরিমেন্ট করছে- কারো কিচ্ছু বলার নেই। সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্র বা একনায়কতন্ত্রের একটা ব্যাপার থাকে যে, জনগন আগে থেকেই ভেবে নেয় তাঁর কোন বাক স্বাধীনতা থাকবে না, কিন্তু গনতন্ত্রে এটা মেনে নেয়া ভীষন কষ্টের।
৮| ০৭ ই জুন, ২০২৪ রাত ৮:২৫
মেঠোপথ২৩ বলেছেন: মধ্যবিত্ত শ্রেনীটা এখন নিম্নবিত্তে পরিনত হয়েছে। যাদের ঢাকা শহড়ে নিজের বাড়ী আছে , তারা কিছুটা ভাল আছে। ভাড়াটিয়াদের অবস্থা কাহিল। যাদের অবস্থা কাহিল তাদের কথা আমরা জানতে পারছি না কারন তারা ফেসবুকে নাই।
১০ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩২
শেরজা তপন বলেছেন: একটা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চারজনের একটা সংসারে দেড় লক্ষ টাকা আয় হলে তাদেরকে মধ্যবিত্তের কাতারে ফেলা যায়; তাঁর মানে আগেকার সময়ের মধ্যবিত্তেরা এখন নিন্ম মধ্যবিত্তের কাতারেও নেই। আপনি ঠিক বলেছেন এরা এখন নিন্মবিত্তের কাতারে এসে ঠেকেছে। ঢাকার মত মেগেসিটির ছা পোষা মানুষেরা ভয়াবহ যন্ত্রনার মধ্যে দিন পার করছেন।
৯| ০৭ ই জুন, ২০২৪ রাত ১০:৪০
করুণাধারা বলেছেন: বিশাল পোস্ট। পুরোটাই পড়লাম। অনেক কিছুই জানা হলো। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না, এত স্বাচ্ছন্দ্য ছেড়ে এদেশের যুবকেরা ধারদেনা করে বিদেশের কষ্টকর জীবন বেছে নেয় কেন! কেন এত বাংলাদেশী ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরে।
১০ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯
শেরজা তপন বলেছেন: আমার এক চাচাত শ্যালক। মফস্বলে তাঁর ভাই প্রায় শিল্পপতি ও বড় নেতা। সে সেখানে রাজার হালে থাকে। দেড় বছরের এক বাচ্চা । ভাই এর অবর্তমানে সবকিছু তাকেই সামলাতে হয়। আচমকা মাথায় ভুত চেপেছে ইতালিতে যাবে। বিদেশে না গেলে নাকি জীবন বৃথা। কেউ তাঁকে কোনমতেই বুঝিয়ে রাখতে পারছে না।
ফুড়ডপান্ডায় সার্চ দেন ' হামজা চটপটি'। বেশ চাল্লু ব্যাবসা। দুই যুগ ধরে মালিককে চিনি। এখন তাঁর প্রতিদিন নিট আয় ১০ হাজার কমপক্ষে। কয়েকদিন আগে শুনলাম ইতালিতে যাবার জন্য নাকি তাঁর এক আত্মীয়কে ৩৬ লাখ টাকা দিয়েছে।
আমি তারে জিগাইলাম; এইটা কি করলা?
সে আমারে সে বুঝ দিল, তাতে আমি নিজেরে নিজে দশবার বেকুব কইলাম। ভাবছি; কেন আরো আগে ইতালিতে গেলাম না!!!!
এখন আপনি বলেন আপা, এই দেশের মানুষের কেন এই ঘোড়া রোগ ধরল???
১০| ০৮ ই জুন, ২০২৪ রাত ১:৫২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: গত ৩০ বছরে মানুষের আয় তুলনামুলকভাবে অনেক বেড়েছে এটা সত্যি। ৭০ দশক বা ৮০ র দশকের কথা আমাদের মনে আছে। সেটার সাথে তুলনা করে বললাম। তবে বহু মানুষ এখনও অনেক কষ্টে আছে। এখন থেকে ৪০ বছর পরে অভাবী মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাবে। সরকার কিছু না করলেও মানুষের চোখ এখন খুলে গেছে। তারা রাস্তা বের করে নিচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকে অবশ্য অবৈধ পথে ধরেছে। তবে ৮০র দশক থেকে প্রবাসী বৃদ্ধির সাথে সাথে মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তের অভাব দূর হচ্ছে। আমাদের দেশের মানুষ প্রতিবাদী না। আবার যখন প্রতিবাদ করে তখন নিয়ম না মেনে বাড়াবাড়ি করে। তাই বর্তমান সময়ের বিভিন্ন কষ্ট তারা মুখ বুজে সহ্য করে যাচ্ছে। হিরক রাজার দেশের শ্রমিকদের মত অবস্থা আমাদের। সামান্য যা পায় সেটাকেই বিরাট প্রাপ্তি মনে করে। ১০০% গ্রামে নাকি বিদ্যুৎ আছে। কিন্তু গ্রামে বিদ্যুৎ গেলে আসতে চায় না। আমাদের গ্রামে গত ঘরের পরে ১৪ দিন পরে বিদ্যুৎ এসেছে। প্রতিবাদ করার কেউ নাই।
বিভিন্ন কারণে ঢাকার কাছাকাছি এলাকাগুলিতে জমির দাম বেড়ে গেছে। ফলে অনেক নিম্ন বা মধ্যবিত্ত মানুষ আজ এখন বিত্তশালী। হঠাৎ বড় লোক হওয়ার কারণে এদের মধ্যে অহংকার বেশী। উত্তরায় অনেকে ৮/১০ টা করে প্লট পেয়েছে কারণ তারা এখানকার আদি বাসিন্দা ছিল। আগে আর্থিক অবস্থা ভালো ছিলা না। এখন এতো বেশী টাকা হয়েছে যে কোন কাজ করা লাগে না। এদের পরবর্তী প্রজন্মের অনেকে এই কারণে গোল্লায় গিয়েছে। কেউ নেশা করে কারও আরও খারাপ অভ্যাস আছে।
উত্তরা আশুলিয়ার বেরি বাঁধের এক জায়গায় রাস্তার পাশে মাছ বিক্রি করতো। এখন করে কি না জানি না। এখানে মাছের দাম অনেক বেশী। কারণ এই পথে বিত্তশালী এবং শিল্পপতিরা নিয়মিত যাতায়াত করে। যারা মাছে বেচে এরা প্রচুর টাকা বানাচ্ছে।
ব্যাটারি চালিত রিকসার ব্যাপারে আপনার নেতিবাচক ভাবনা আছে। আমি কিন্তু মনে করি ব্যাটারি চালিত রিকসা পরিবেশ বান্ধব। এছাড়া সহজেই মানুষের আয়ের জোগান হচ্ছে। যে পেশাতে বেশী আয় মানুষ সেই পেশাতেই যাবে। কলকারখানায় আসলে বেশী বছর চাকরী করা যায় না। এক সময় মানুষ ক্লান্ত হয়ে যায়। কল কারখানায় স্বাধীনতাও কম। অনেক নারী কর্মী একটু বয়স বাড়লে চাকরী আর করে না। কারখানাগুলিও বেশী পুরানো লোক রাখতে চায় না বেতন বেড়ে যায় বলে। আসলে কল কারখানায় আমাদের দেশে শ্রমিকদের সাথে অনেক অমানবিক আচরন করা হয়। এই শ্রেণীর মানুষেরা স্বাধীনচেতা হয়। যার কারণে তারা ঝুকি নিয়ে কোন স্বাধীন পেশায় যেতে চায়। অনেক আগে আমি বনানীর এক রিকশাওয়ালার কাছে শুনেছিলাম যে সে ১৫ দিন রিকসা চালায় আর ১৫ দিন ময়মনসিংহে দেশের বাড়ি গিয়ে আরাম করে। বনানিতে ভাড়া বেশী ফলে ১৫ দিনের আয়ে সে বাকি ১৫ দিন ভালো সময় কাটাতে পারে। এটা তার ব্যক্তিগত পছন্দ।
গ্রামের মানুষের হাতে এখন আয়ের অনেক উৎস তৈরি হয়েছে অনলাইনের কারণে। টাকার লোভে পড়ে এদের অনেকের নৈতিক চরিত্র দুর্বল হয়ে গেছে। তথ্যপ্রযুক্তি নাগালে আসার কারণে ব্যবসা বোঝা সহজ হয়ে গেছে। চাহিদা এবং সরবরাহ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা গ্রামে বসেও পাওয়া যাচ্ছে। আগে মজুতদারি হাতে গোনা কিছু লোক করতো। এখন সুযোগ বুঝে অনেকেই করছে।
নব্য কর্পোরেট এই দেশের খামার নির্ভর ব্যবসার জন্য ভয়ানক একটা বিপদ। এই ব্যাপারে আমার কিছু জানা আছে। কিভাবে এরা খামারিদের জিম্মি করে সেটা আমি কিছুটা দেখেছি। পুরো ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে এরা। প্রতিবেশী দেশ এবং চিন এবং থাইল্যান্ডের কিছু কোম্পানিও এই সুযোগ নিচ্ছে। থাইল্যান্ডের একটা কোম্পানি এই দেশে ঘুসের সাহায্য নিয়ে ট্যাক্স এবং ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে। ওরাও বুঝে গেছে এই দেশে লুটপাট করা যাবে।
তবে সবাইকে একভাবে দেখলে চলবে না। প্রতারণা করছে গ্রামের কিছু লোক। সবাই করছে না। প্রতারণার জন্য আমরাও দায়ী। আমরা হুজুকে জাতি। ফলে সহজে লোভে পড়ি এবং প্রতারিত হই।
এই সবের মূল কারণ হল আমাদের দেশে শিল্পায়ন হয় নাই। শিক্ষার মান কম। এগুলি নিয়ে কাজ করার কথা সরকারের। কিন্তু সরকার ব্যবসায়ীদের রাজনীতি শিখিয়ে সহজে টাকা কামানো শিখিয়েছে। শিক্ষার মান সরকারের বিভিন্ন সময়ের শিক্ষা নীতির কারণে দিন দিন নিম্ন মুখী। দুর্নীতিতে আমরা অনেক এগিয়ে বিশ্বের মধ্যে। একটা জাতির সমৃদ্ধি আসে যদি সেই জাতি শিক্ষা, প্রযুক্তি, জ্ঞান, সততা, নৈতিক শিক্ষায় এগিয়ে থাকে। ভারত কোন ধনী বা উন্নত দেশ না। কিন্তু সেই ভারতেও বহু বছর ধরে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে। কিন্তু ৫৩ বছরেও সেটা পারলাম না। সঠিক নেতা নির্বাচন না করা গেলে দেশের আগাতে সমস্যা হয়। ছাত্র রাজনীতিকে এখনও আমাদের দেশের অনেক শিক্ষিত মানুষ সমর্থন করে। আমাদের শিক্ষিত সমাজের সিংহ ভাগ আসলে শিক্ষিত না। এদের সামান্য কিছু পুঁথিগত বিদ্যা আছে। নৈতিকতা শেখানো হয় না আমাদের দেশের কোথাও। ফলে জাতির এই অবস্থা। এই দেশের জন্য প্রয়োজন ছিল সিংগাপুর বা মালয়েশিয়ার মত কোন নেতা।
১৫ ই জুন, ২০২৪ সকাল ৯:০০
শেরজা তপন বলেছেন: যেই সাইজের পোস্ট সেই সাইজের মন্তব্য
আমি দু'বার আপনার মন্তব্য পড়েছি কিন্তু বিবিধ কারনে মন্তব্যের উত্তর দিতে দেরি হবার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। এখনো একতু তাড়াহুড়ো করেই মন্তব্যের উত্তর দিচ্ছি, তাই যা বলতে চাচ্ছিলাম তা ঠিক গুছিয়ে বলতে পারছি না।
কথিত; সুভাষ বসুর কাছে নাকি তাঁর এক ভক্ত প্রশ্ন করেছিল; আপনার কি মনে এত শত বছর বিদেশী শাসকদের দ্বারা শাসিত হয়ে ভারতবর্ষের নাগরিকেরা সুষ্ঠভাবে নিজেদের শাসন করতে পারবে?
সুভাষ বসু স্মিত হেসে উত্তর দিয়েছিলেন। না খুব শীঘ্রই এমন হবার সম্ভাবনা নেই। এদেশে বিদেশী শাসকেরা দুটো জাতি তৈরি করেছে। চাকর ও চাটুকার। এই চাকর ও চাটুকার থেকে সত্যিকারে শাসক হতে বহুসময়ের প্রয়োজন।
১১| ০৮ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ২:২৫
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন।
১৫ ই জুন, ২০২৪ সকাল ৯:০২
শেরজা তপন বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইল সুপ্রিয় ব্লগার।
অনেকদিন পরে সম্ভবতঃ আপনার দেখা পেলাম। ভাল আছেন আপনি? দেরিতে মন্তব্যের উত্তর দেবার জন্য দুঃখিত!
১২| ০৯ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ১:০৫
মোগল সম্রাট বলেছেন:
৮০ বা ৯০ এর দশকের মধ্যবিত্ত আর এখনকার মধ্যবিত্তের মধ্যে এখন বিস্তর ফারাক আছে। আগেরকার মধ্যবিত্তের একটা কমন প্রিন্সিপাল ছিলো - ডাল-ভাত খেয়ে হলেও মান ইজ্জতের সাথে সমাজে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সত্যিকারের চেষ্টা। কিন্ত এখনকার মধ্যবিত্তের মধ্যে দেখি একটা ভন্ডামি প্রকট আকারে । এরা এখন মুখে মুখে মান-সম্মানের কথা বললেও অন্তরে আমার কাড়ি কাড়ি টাকা চাই সেটা জায়েজ নাজায়েজের থোড়াই কেয়ার। তাদের নীতি নৈতিকতা কর্পুরের মতো উড়ে গেছে বিগত ১৫/২০ বছর ধরে ধারাবাহিক ভাবে।
নিম্নবিত্ত বলতে যা বর্তমান আছে তারা সুপার অলস একটা শ্রেনিতে রুপান্তর হয়ে গেছে গত এক দশকে। তাদের মগজেও শর্ট
কার্টে দাও মারার প্রবনতা ছড়িয়েছে মহামারির মতো।
মাঝে মাঝে ভাবি সোস্যাল মিডিয়া কি তাহলে আমাদের দেশে ঠগবাজিকে প্রোমট করে প্রো লেভেলে নিয়ে যাচ্ছে নাকি? সেটা ভাবার কারন আপনি আমার চাইতে ভালো বর্ননা করেছেন আপনার লেখায়। বহুকাল আগে যে ঠগবাজি ম্যানুয়ালি ছিলো তা এখন তা সোস্যাল মিডিয়ায় নতুন মাত্রা পাচ্ছে দিনকে দিন।
আপনার লেখাটা সময় নিয়ে পড়লাম এবং দেশের অনেক বাস্তবতা ফুটিয়ে তুলেছেন অতি সহজে। আপনি কেমন আছেন?
শুভকামনা জানবেন।
১৫ ই জুন, ২০২৪ সকাল ৯:০৬
শেরজা তপন বলেছেন: এই বিষয় নিয়ে বরাবরই আপনার পর্যবেক্ষণ বেশ ভাল। আপনার লেখাগুলো পড়ে আমার তেমনই ধারনা হয়েছে।
কিন্ত এখনকার মধ্যবিত্তের মধ্যে দেখি একটা ভন্ডামি প্রকট আকারে । এরা এখন মুখে মুখে মান-সম্মানের কথা বললেও অন্তরে আমার কাড়ি কাড়ি টাকা চাই সেটা জায়েজ নাজায়েজের থোড়াই কেয়ার। তাদের নীতি নৈতিকতা কর্পুরের মতো উড়ে গেছে বিগত ১৫/২০ বছর ধরে ধারাবাহিক ভাবে।
নিম্নবিত্ত বলতে যা বর্তমান আছে তারা সুপার অলস একটা শ্রেনিতে রুপান্তর হয়ে গেছে গত এক দশকে। তাদের মগজেও শর্ট
কার্টে দাও মারার প্রবনতা ছড়িয়েছে মহামারির মতো। ~ একদম ঠিক বলেছেন।
সবাই শর্টকার্ট পথে বড়লোক হতে চাইছে। এমন যে, কেয়ামত সন্নিকটে- তাড়াতাড়ি টাকা পয়সা কামাই করে ফুর্তি কইর্যা যাই।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। সময়ের অভাবে ব্লগেও আসা হচ্ছে না- সবার লেখা পড়ে মন্তব্যও করা হচ্ছে না।
১৩| ১০ ই জুন, ২০২৪ রাত ১০:২৭
আহমেদ জী এস বলেছেন: শেরজা তপন,
এই "কি এবং কেন?"র কোনও সঠিক জবাব নেই।
মানুষ এক অদ্ভুত জীব। সে যে কি করে আর কেনই বা তা করে, ঠিকঠাক ভাবে তার জবাব দেয়া তার পক্ষেও সম্ভব নয়! অন্যকে ষোল আনা না হলেও চৌদ্দ আনা সন্তুষ্ট করার মতো যুক্তিযুক্ত জবাব তার কাছে থাকেনা।
প্রয়োজন মানুষকে এমন কি প্রকৃতিকেও পাল্টায় আবার এই প্রয়োজনটা কি এবং কেনর ভিত্তিতে আসে সেটাও বুঝে ওঠা বেশ দুরূহ!
যাই হোক, অপ্রিয় বাস্তব নিয়ে লেখা। আপনিই বা এটা কি লিখলেন ? কেন লিখলেন ?
১৫ ই জুন, ২০২৪ সকাল ৯:১৩
শেরজা তপন বলেছেন: মানুষ এক অদ্ভুত জীব। সে যে কি করে আর কেনই বা তা করে, ঠিকঠাক ভাবে তার জবাব দেয়া তার পক্ষেও সম্ভব নয়!
এক্কেবারে ঠিক কতা কইছেন ভ্রাতা। আমাদের সব কাজই এক্কেরে আজাইর্যা- ফাও প্যাঁচাইয়া জীবনডা কাটায় দেই। নিজের কামের ঠিক নাই -মাইনষ্যার কাম নিয়ে হুদাই প্যাচাই!
আমি লেখালেখির প্রথম থেকেই ভাবিত; কেন লিখি আমি? বিশ্ব সংসারের কি চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করছি আমি? মানবজাতির আমার লেখালেখিতে কি এমন উপকার হবে? এই থেকে দুইটা তেলাপোকা বা মশা কম মারলেও প্রকৃতির কিছু লাভ হইত।
আপনি বুদ্ধিমান মানুষ সেইমতে মন্তব্য করেছেন। শুভকামনা ও অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা রইল।
১৪| ১৪ ই জুন, ২০২৪ রাত ১২:৩১
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এই সুলিখিত "কি এবং কেন?" পোস্ট পাঠ করে অন্ততঃ কিছু পাঠকের মনে এ নিয়ে ভাবনার উদ্রেক হবে বলে আশা করি। সমাজের বিভিন্ন স্তরে পরিবর্তন আসছে, মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্তের স্তরে সেটা বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দুঃখের বিষয় এই যে, গ্রামীন জনপদে এই পরিবর্তনগুলো আসছে নেতিবাচক পথে বেশি।
এই পোস্টের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ, যার সাথে আমি ঐকমত্য পোষণ করিঃ
"ইদানিং গ্রামের মানুষের চেয়ে শহরে অভাবীদের সংখ্যা বাড়ছে বেশি" - সঠিক।
"টাকার জোরে গরু ছাগল ধেনো ইঁদুর সবাই সমাজের মাথা হতে চায়" -
"গ্রামের তুলনায় শহরের মানুষ ধার্মিকতা ও নাস্তিকতা দু'দিকেই বহুগুণ এগিয়ে আছে বা যাচ্ছে" - অত্যন্ত সূক্ষ্ম একটি পর্যবেক্ষণ।
পাঠকদের কিছু মন্তব্যও ভালো লেগেছে, তাই আলাদাভাবে আমার মন্তব্যেও তা উল্লেখ করে তাদের সমনোযোগ পাঠ কে সম্মান জানাচ্ছিঃ
বাউন্ডেলে বলেছেন: "প্রকৃতি তার চেয়ে অধিক গতিময়তাকে পছন্দ করে না।"
মেঠোপথ২৩ বলেছেন: "যাদের অবস্থা কাহিল তাদের কথা আমরা জানতে পারছি না কারন তারা ফেসবুকে নাই।" -
করুণাধারা বলেছেন: "আমি বুঝতে পারছি না, এত স্বাচ্ছন্দ্য ছেড়ে এদেশের যুবকেরা ধারদেনা করে বিদেশের কষ্টকর জীবন বেছে নেয় কেন! কেন এত বাংলাদেশী ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরে।"
পোস্টে দ্বাদশ প্লাস। + +
১৫ ই জুন, ২০২৪ সকাল ৯:১৮
শেরজা তপন বলেছেন: * প্রথমেই বলে নিচ্ছি, আমি যতই ব্যস্ত থাকি- ব্লগের কোন ভ্রমণ কাহিনী বিশেষ করে আপনার হলে তো মিস করি না। মন্তব্য না করলেও মনে রাখবেন পড়েছি।
আপনি এত গুছিয়ে খুটিয়ে খুটিয়ে মন্তব্য করেন যে, দেখে মন ভরে যায়। উত্তর দিতে দেরি হলে ভীষন মনঃকষ্টে ভুগি। । আমার আবার সময় থাকলেও মাঝে মধ্যে লেখায় বিরক্তি আসে- এক অক্ষরও লিখতে ইচ্ছে করা না। সারাদিন হেটে বেড়াই কিন্তু কি-বোর্ডের ধারে কাছে যাই না। এমন চলছে ক'দিন। তবুও আজ জোর করে বসেছি।
ভাল থাকবেন। আপনার ভ্রমন সুন্দর হোক- সুস্থ থাকুন।
১৫| ১৫ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১১:০২
খায়রুল আহসান বলেছেন: "মন্তব্য না করলেও মনে রাখবেন পড়েছি" - আচ্ছা, ঠিক আছে। জেনে প্রীত হ'লাম।
আপনার মত ওরকম অবস্থা বোধকরি মাঝে মধ্যে সব লেখকদেরই হয়। আবার কিছুদিন পর ঠিকও হয়ে যায়। সুতরাং, No worries!
শুভকামনার জন্য ধন্যবাদ।
০৬ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০২
শেরজা তপন বলেছেন: ঠিকই বলেছেন। এর আগেও এমন হয়েছে। একাধারে পাঁচ বছর লিখিনি তাঁর রেকর্ড আছে।
১৬| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:০৪
আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: এখন এই দেশে দরকার একটা যুদ্ধ। কার গায়ে কত চর্বি জমেছে সব বের হয়ে যাবে। সব লাইনে চলে আসবে।
০৬ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০২
শেরজা তপন বলেছেন: কে কার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে ভাই? সবার গায়েই তো ছুঁচো মারার গন্ধ!
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ২:০২
বিষাদ সময় বলেছেন: চমৎকার অনুধাবন। +