নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...
শুরু করছি গুমনামী বাবাকে লেখা ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী শ্রী ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী'র একটা চিঠি দিয়ে- যে চিঠি সবাইকে চমকে দিয়েছিল!!
জয় যুক্তেষু,
দেশ বিভাগের পর আমি স্থির করিয়াছি, দেশ পরিত্যাগ করিব না। পূর্ব পাকিস্তানেই থাকিব। আমি পূর্ব পাকিস্তানেই আছি।
ব্রহ্মদেশের মান্দালয় জেলে যাহার সহিত একত্র গিয়াছিলাম। জেলে প্রবেশ করার পর যিনি বলিয়াছিলেন ‘মহারাজের সিট আমার পাশে থাকিবে’, আমি যাহার পাশে ছিলাম, একসঙ্গে টেনিস খেলিয়াছি, দুর্গাপূজার জন্য অনশন ধর্মঘট করিয়াছি-আমি তাহার কথা ভুলি নাই, তাহার সঙ্গেই আছি।
দিল্লিতে ১৯৪০ সনে, শঙ্করলালের বাড়িতে যাহার সহিত একত্র ছিলাম, মোটরে ইউ পি ভ্রমণের সময় যাহার পাশে ছিলাম, প্রচণ্ড শীতের রাত্রে আগরার মাঠে রাত্রি ৯টা পর্যন্ত বহু সহস্র লোক যাহার প্রতীক্ষায় ছিল – আমি সাগ্রহে তাহারই প্রতীক্ষায় আছি। পূর্ব পাকিস্তানের নির্যাতিন, নিপীড়িত জনগণ তাহার মুখের দিকে তাকাইয়া আছে।
শ্রী ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী
(ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী (১৮৮৯– ৯ আগস্ট, ১৯৭০) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী।)
~ শ্রী ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী
(চক্রবর্তী, ত্রৈলোক্যনাথ (১৮৮৯-১৯৭০) ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী রাজনীতিক ও লেখক। ময়মনসিংহের কাপাসিয়াটিয়ায় ১৮৮৯ সালে তাঁর জন্ম। মহারাজ নামেও তিনি পরিচিত। কৈশোরেই ব্রিটিশবিরোধী রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে তিনি যুক্ত হন। স্কুলে অধ্যয়নকালে তিনি ১৯০৬ সালে অনুশীলন সমিতিতে যোগ দেন। বিপ্লবী কর্মকান্ডের জন্য ১৯০৮ সালে তিনি গ্রেফতার হন। ফলে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষালাভ সম্ভব হয় নি। ১৯১২ সালে এক হত্যা মামলার আসামি হিসেবে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে যথার্থ প্রমাণের অভাবে পরে তিনি মুক্তি পান। এরপর দু’বছর ধরে রাজশাহী, কুমিল্লা ও মালদহে তিনি গোপন সংগঠন গড়ে তোলেন।
আন্দামান জেল
১৯১৪ সালে পুলিশ তাকে কলকাতায় গ্রেপ্তার করে বরিশাল ষড়যন্ত্র মামলার আসামিরূপে আন্দামানে সেলুলার জেলে পাঠায়। পুলিনবিহারী দাস এবং তিনি উভয়েই ছিলেন অনুশীলন সমিতির প্রথম যুগের নেতা যারা সেলুলার জেলে বন্দি ছিলেন। ত্রৈলোক্যনাথ ১৯২৪ সালে জেল থেকে মুক্তি পান।
মুক্তির পর দেশবন্ধু চিত্ত রঞ্জন দাশের পরামর্শে দক্ষিণ কলকাতা জাতীয় বিদ্যালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯২৭ সালে গ্রেপ্তার হয়ে বার্মার মান্দালয় জেলে প্রেরিত হন। ১৯২৮ সালে তাকে ভারতে এনে নোয়াখালী হাতিয়া দ্বীপে অন্তরীণ করে রাখা হয়। ঐ বছরই মুক্তি পেয়ে উত্তর ভারতে যান এবং চন্দ্রশেখর আজাদ প্রমুখের সংগে হিন্দুস্তান রিপাবলিকান আর্মিতে যোগ দেন। পরে বিপ্লবী দলের আদেশে বার্মার বিপ্লবীদের সংগে যোগাযোগের উদ্দেশ্যে বার্মায় যান। ১৯২৯ সালে লাহোর কংগ্রেসে যোগ দেন। ১৯৩০ সালে গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৩৮ সালে মুক্তি পান।
সুভাষ চন্দ্র বসুর সাথে সংযোগ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
তিনি সেই বছরেই সুভাষ চন্দ্র বসুর সঙ্গে যোগাযোগ করে রামগড় কংগ্রেসে যোগ দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সিপাহি বিদ্রোহ ঘটাবার চেষ্টায় ভারতীয় সৈন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও সুবিধা করতে পারেননি। এ সময়ে চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার হন।
‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনের সময় ১৯৪২ সালে পুনরায় তিনি গ্রেফতার হন। ১৯৪৬ সালে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি নোয়াখালিতে সাংগঠনিক তৎপরতায় লিপ্ত হন। দেশ বিভাগের পর তিনি ঢাকায় প্রকাশ্য রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তিনি পূর্ব বাংলা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি হলে তার রাজনৈতিক এমনকি সামাজিক কার্যকলাপের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়। বাধর্ক্যের শেষ দিনগুলো তিনি গ্রামের বাড়িতে প্রায় স্বেচ্ছা-নির্বাসনে কাটান। তিনি সমকালীন রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে স্মৃতিচারণমূলক দুটি গ্রন্থ জেলে ত্রিশ বছর ও পাকভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম রচনা করেন। তাঁর অপর গ্রন্থ গীতায় স্বরাজ। ১৯৭০ সালে চিকিৎসার জন্য তিনি কলকাতায় যান। সেসময় চাতরায় 'সংগঠনী'র কর্মীদের সঙ্গে কয়েকদিন কলকাতা কাটান, জাতীয় সংবর্ধনার জন্য সেখান থেকে তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়। দিল্লীর ভারতের পার্লামেন্টে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা দেন,যা আজ এক ঐতিহাসিক দলিল। ওই বছর ৯ আগস্ট এই অগ্নিযুগের মহান বিপ্লবী মৃত্যুবরণ করেন। )
***
গুমনামী বাবার মৃত্যুর পর, তাঁর ঘর থেকে পাওয়া অসংখ্য চিঠির মধ্যে থেকে পাওয়া গিয়েছিল এই চিঠিটিও। ১৯৬৩ সালের এপ্রিলে লেখা। প্রসঙ্গত, ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী ছিলেন একজন উল্লেখযোগ্য স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে দীর্ঘ ঘনিষ্ঠতা ছিল তাঁর। কিন্তু এই চিঠি গুমনামী বাবাকে কেন লিখতে গেলেন তিনি?
১৯৮৫ সালের ২৫ অক্টোবর, উত্তরপ্রদেশের জনপ্রিয় হিন্দি দৈনিক 'নয়ে লোগ'-এ প্রকাশিত হল একটি শিরোনাম - 'ফইজাদাবাদে অজ্ঞাতবাসে থাকা সুভাষচন্দ্র বোস আর নেই?' মুহূর্তের মধ্যেই যেন সারা ভারতে আলোড়ন ফেলে দিল ওই একটি শিরোনাম। দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ল এই সংবাদ। অযোধ্যার ছোট্ট শহর ফইজাবাদ, হঠাৎ করেই হয়ে উঠল সংবাদের উৎসস্থল। এই শহরেই নাকি লোকচক্ষুর অন্তরালে নিজের শেষ জীবনটুকু কাটিয়েছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু!
তবে এই সংবাদের সূত্রপাত মাসখানেক আগে। ১৯৮৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর, বিকেল বিকেল নাগাদ ভারতের জাতীয় পতাকায় মুড়ে ফইজাবাদের একটি ছোট্ট বাড়ি থেকে বের করে আনা হলো শশ্রুমন্ডিত, বিরলকেশী এক সাধুর মরদেহ। মাত্র ১৩ জন শবযাত্রী নিয়ে সরযূ নদীর তীরে নিয়ে আসা হলো শবযাত্রা। চিতা ততক্ষণে তৈরি। শুরু হলো ওই সাধুবাবার শেষকৃত্য। মাত্র ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে হিন্দু পুরাণের পবিত্র নদী সরযূর জলে মিলিয়ে গেলেন সেই সাধুবাবা, যাকে স্থানীয়রা ডাকতেন 'গুমনামি বাবা' বলে। কিন্তু গুমনামি বাবা আর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর যোগসুত্র কি? তার জন্য আগে জানা দরকার কে এই গুমনামী বাবা?
***
‘গুমনাম’ এর অর্থ হল হারিয়ে যাওয়া লুকিয়ে ফেলা নাম।
নেতাজির (Netaji)অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে এখনও গুঞ্জন রয়েছে বাঙালির মনে। নেতাজির হঠাৎ না থাকাটাকে এখনও মেনে নিতে পারেনি অনেকেই। স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর অবদান ছিল অপরিসীম। কোন কিছুর পরোয়া না করে দেশের জন্য লড়ে গেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর এই হঠাৎ অন্তর্ধানের রহস্য আজও অন্তরালেই রয়ে গেছে।
জাপানে বিমান দুর্ঘটনার পর দেশে চরম সংকটের পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই ঘটনার বেশ কিছুকাল পরে সকলের সামনে আসেন এক সন্ন্যাসী, যিনি ‘গুমনামি’ বাবা নামে পরিচিত। নেতাজির পরিবার না মানলেও অনেকেই তাঁকে নেতাজি বলে মনে করতেন। নেতাজি সুভাস চন্দ্র বোসের সান্নিধ্যে থাকা কিছু মানুষ গুমনামি বাবার কাছে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা বলে বুঝতে পারেন তিনিই সকলের নেতাজি। কিন্তু এই কথা আবার তাঁর বাড়ির কেউই মানতে চান নি।
গুমনামি বাবাই নেতাজি ছিল কিনা, সেই রহস্য আরও একবার দানা বাঁধতে চলেছে। কলকাতার সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির থেকে আসা একটি আরটিআইএর উত্তরে। দিন দিন এই ধারণা আরও প্রবল হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। আরটিআই-এর সায়ক সেন কলকাতার এই ল্যাবিরেটরির কাছ থেকে জানতে চান, যে তাঁদের কাছে গুমনামি বাবার দাঁতের ইলেক্ট্রোফেরোগ্রাম (Electrophherogram) আছে কিনা। তাঁদের কাছে গুমনামি বাবার দাঁতের ইলেক্ট্রোফেরোগ্রাম নেই বলে জানায় তাঁরা। এই ঘটনার জেরেই রহস্য আরও ঘনীভূত হয়ে উঠছে।
কোন ব্যক্তির দাঁতের ইলেক্ট্রোফেরোগ্রামের সঙ্গে কোন পরিবারের লোকজনের ডিএনএ মিলিয়ে দেখা যায় যে উক্ত ব্যক্তি সেই পরিবারের সদস্য কিনা। কিন্তু এক্ষেত্রে এখন দাঁতের ইলেক্ট্রোফেরোগ্রাম না থাকলে, সেটা করা সম্ভব নয়। কিছুদিন আগে নেতাজির মৃত্যু নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে ‘বিষ্ণু সহায় কমিশন’ ওই একই ল্যাবে জানান নেতাজি এবং গুমনামি বাবা দুজন আলাদা ব্যাক্তি। কিন্তু এই ঘটনার পর সেই রিপোর্ট নিয়ে আবার প্রশ্ন উঠছে।
কে আসলে এই গুমনামি বাবা?
৬০ এর দশকের গোড়ার দিকের কথা। উত্তরপ্রদেশের নৈমিষারণ্য (নেমিসার) এলাকার অযোধ্যা বস্তি এলাকায় হঠাৎ একদিন আবির্ভাব হলো এক সাধুবাবার। গেরুয়া বসন, দীর্ঘদেহী সুপুরুষের মতো চেহারা। নেমিসারে একটি ছোট্ট ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করলেন ওই সাধুবাবা। সাধারণ মানুষের মতো সকলের সাথে কথা বলা, মেলামেশা করা নয়, বরং ওই সাধুবাবা থাকতেন সর্বদা পর্দার আড়ালে। কেউ তার দর্শন পেতনা। একান্তই প্রয়োজন হলে কথা বলতে হতো দরজার বাইরে থেকে অথবা পর্দার পিছন থেকে। বাইরে বের হতে হলেও নিজের মুখ ঢেকে রাখতেন সাদা চাদরে। নিজের নাম নিতেন না। কেউ কোনোদিন জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলতেন, তিনি বহুদিন আগেই মৃত। তার কোন নাম নেই।
সামান্য কয়েকজন বিশ্বাসভাজন মানুষ ছাড়া কেউ তার দেখা পেতেন না। তার মধ্যে ছিলেন নেতাজির ঘনিষ্ঠ অনুগামী লীলা রায় এবং কয়েকজন বাঙালি বিপ্লবী এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী। বাড়ির মালিক গুরুবক্স সিং সোধি বার কয়েক তার পরিচয় জানার জন্য তাঁকে সিভিল আদালতের নোটিশ পাঠালেও তা বিফলে যায়। ৬০ এর দশকে উত্তরপ্রদেশের একাধিক জায়গায় ওই সাধু বাবাকে দেখা গিয়েছিল বলেও শোনা যায়। নেমিসার থেকে শুরু করে অযোধ্যা, ফৈজাবাদ, বাস্তি - একাধিক জায়গায় তাকে দেখা গিয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। কখনো মহাকাল, কখনো মহাদেব, এই সমস্ত বলেই দিতেন পরিচয়। যারা তার সঙ্গে কথা বলতে পারতেন তাদের কাছে তিনি ছিলেন ভগবানজি। আর সিংহভাগ মানুষ যারা তার দেখা পেতেন না, তাদের কাছেই এই ভগবানজি হয়ে উঠলেন 'গুমনামি বাবা'।
ষাটের দশকের পরে তেমন ভাবে ওই সাধুবাবার দেখা না মিললেও ১৯৮২ সালে পুনরায় আবির্ভাব ঘটে গুমনামী বাবার। আর আবির্ভাব আবারও উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে। সেখানেই সিংহ পরিবারের একটি ছোট একতলা বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন গুমনামি বাবা। জানা যায়, মৃত্যু পর্যন্ত নাকি এই বাড়িতেই বসবাস করতেন তিনি।
গুমনামি বাবার অদ্ভুত সংগ্রহ
ওই সাধুটি আচার-আচরণের দিক থেকেও যেমন ছিলেন অদ্ভুত, তেমনি সাধু বাবার সংগ্রহও ছিল বড় অদ্ভুত। প্রায় ২০০০ এর ওপরে আর্টিকেল এবং ২৫টি স্টিলের ট্রাঙ্ক ছিল ওই গুমনামি বাবার সংগ্রহে, যা সাধারণ সাধুবাবা সুলভ তো একেবারেই নয়।
~ গুমনামী বাবার অদ্ভুত সংগ্রহ। যা একজন সাধুর কাছে থাকার কথা নয় মোটেও। এর বেশীরভাগ জিনিস সুভাষ বোসের ব্যক্তিগত ব্যবহার্য জিনিসের সাথে হুবুহু মিলে যায়।
যে সিংহ পরিবারের বাড়িতে গুমনামি বাবা ভাড়া থাকতেন, সেই পরিবারের সদস্য ছিলেন বিজেপি সাংসদ শক্তি সিংহ, যিনি গুমনামি বাবা রহস্য উন্মোচনে প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন। ১৯৮৫ সালে গুমনামি বাবার মৃত্যুর পর অজ্ঞাতবাসে থাকা ওই গুমনামি বাবার কাহিনি তিনিই সামনে নিয়ে আসেন। শক্তি সিংহ জানাচ্ছেন, তিনি জীবনে কখনো ওই বাবার মুখ দেখতে পাননি। বাবা সবসময় পর্দার আড়ালে থেকেছেন। খুব কম সংখ্যক মানুষের প্রবেশাধিকার ছিল তার ঘরে। তিনি আরো বলছেন, বাবা নাকি একেবারেই একজন সাধুবাবা সুলভ ছিলেন না। তিনি রোলেক্স ঘড়ি পছন্দ করতেন, দামী সিগারেট খেতেন, এমনকী তার কাছে আনকোরা নোট ছিল, মাটন কিমা এবং বাঙালিরর প্রিয় শুক্তো ছিল তার সবথেকে পছন্দের খাবার। তবে, গুমনামি বাবা যে নেতাজি, এই বিষয়টা তিনি যে সম্পূর্ণ সমর্থন করতেন সে রকম নয়। তিনি অবশ্য জানিয়েছেন, নেতাজির পরিবারের সঙ্গে ওই সাধুবাবার বিশেষ যোগাযোগ ছিল।
নেতাজির ভাইঝি ললিতা বসু ওই সাধু বাবার মৃত্যুর পর দাবি করেছিলেন, সাধুবাবা ছিলেন আদতে নেতাজি। ১৯৮৬ সালে তিনি সুভাষচন্দ্র বসু বিচারমঞ্চকে সঙ্গে নিয়ে আদালতের নির্দেশে কাকার ব্যবহৃত জিনিসপত্র দেখতে ফৈজাবাদের সেই বাড়িতেও এসে পৌঁছেছিলেন। ওই সংগ্রহ দেখে তিনি দাবি করেছিলেন, ওই সমস্ত সংগ্রহ তার কাকা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুরই। ১৯৯৯ সালে আদালতের নির্দেশে যখন নেতাজির মৃত্যু রহস্য নিয়ে মুখার্জি কমিশন বসলো, তখনই ফৈজাবাদের ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল ওই ২৫টি ট্রাঙ্ক। কিন্তু সব থেকে বড় প্রশ্ন কী ছিল ওই ট্রাঙ্কে?
সেই ট্রাঙ্কে কী ছিল?
জেলা ট্রেজারি অফিসাররা বলেন, ওই টিনের বাক্সগুলি খুলে তারা সকলেই রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন। এযাবতকালে যত সাধু বাবার হদিশ এবং দর্শন তারা পেয়েছেন তাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ছিলেন ওই গুমনামি বাবা। মৃত্যুর আগে বা পরে মানুষটির একটাও ছবি নেই, কিন্তু তাঁর সংগ্রহে ছিল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবার এবং নেতাজির ব্যক্তিগত বেশ কিছু ছবি। সবথেকে উল্লেখযোগ্য ছবিটি ছিল নেতাজির পিতা জানকীনাথ বসু এবং মাতা প্রভাবতীর, যেটি ছিল একেবারে বাঁধাই করা। এছাড়াও, সেই ট্রাংক থেকে উদ্ধার হয়েছিল ছোটবেলায় নেতাজির বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি। 'হাফ বেন্ট ডাবলিন' ধূমপানের পাইপ থেকে শুরু করে বিদেশি সিগারেট, গোল ফ্রেমের চশমা থেকে রোলেক্স ঘড়ি, বাইনোকুলার, এমনকি একটি টাইপরাইটার এবং একটি ক্যাসেট রেকর্ডার। কি না ছিল গুমনামি বাবার সংগ্রহে। এছাড়াও মিলেছিল সুভাষচন্দ্রের জীবনীমূলক বেশ কিছু বই, এবং বেশ কিছু সংবাদপত্রের কাটিং। এছাড়াও ছিল প্রচুর চিঠিপত্র এবং নথি, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল আজাদ হিন্দ ফৌজ বাহিনীর পরিচিতদের একটি দীর্ঘ তালিকা, যা সাধারণ কোনো সাধুবাবার কাছে কোনভাবেই থাকতে পারে না। এমনকি অনেকে বলেন, ওই সাধু বাবার হাতের লেখার সঙ্গে নাকি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর হাতের লেখার দারুণ মিল ছিল। এই বাক্সের অন্যান্য জিনিসগুলিকে দেখে প্রথমে অনেকে মনে করেছিলেন সাধুবাবা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ভক্ত। কিন্তু আজাদ হিন্দ ফৌজের তালিকাটি সমস্ত হিসাব এলোমেলো করে দেয়।
~ গুমনামী বাবার ট্রাঙ্কে পাওয়া দুটো ছবি এই রহস্যকে আরো ঘনীভূত করেছে; একটা নেতাজীর পারিবারিক ছবি আরেকটা তাঁর বাবা ও মায়ের ছবি।
রহস্য আরও ঘনীভূত হয় একটি চিঠির আবির্ভাবে। আর এই চিঠি লিখেছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের দ্বিতীয় প্রধান এম এস গোলওয়াকার। ১৯৭২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর গুমনামি বাবাকে লেখা একটি চিঠিতে গোলওয়াকার সাহেব বলছেন, "আপনার ২৫ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে লেখা চিঠি আমি ৬ সেপ্টেম্বর পেয়েছি। আমি আপনার নির্দেশিত এই তিনটি জায়গা সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি। তবে, আপনি যদি জায়গাগুলোর ব্যাপারে একটু ভালোভাবে উল্লেখ করে দিতেন তাহলে একটু সুবিধা হত।" প্রশ্ন উঠছে, গোলওয়াকারের মত একজন ব্যক্তিত্ব একজন সাধারন সাধুবাবাকে চিঠি লিখবেন কেন? আর চিঠিতে তিনি তাকে পরমপূজ্যপাদ বলে সম্বোধনই বা করলেন কেন?
~ গুমনামী বাবা ও নেতাজীর মৃত্যু রহস্যের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে সত্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা নিয়ে সৃজিতের আলোচিত ছবির পোস্টার।
ফুটনোটঃ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)ভারতের একটি ডানপন্থী হিন্দুত্ববাদী, আধাসামরিক ও বেসরকারী স্বেচ্ছা-সেবক সংগঠন। আরএসএস সংঘ পরিবার নামে হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর একটি অংশ।
মাধব সদাশিবরাও গোলওয়ালকর (১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯০৬ - ৫ জুন ১৯৭৩), গুরুজি নামে পরিচিত ছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) দ্বিতীয় সরসঙ্ঘচালক ("প্রধান)। গোলওয়ালকরকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের মধ্যে অন্যতম প্রভাবশালী এবং বিশিষ্ট ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি "হিন্দু রাষ্ট্র" নামক একটি সাংস্কৃতিক জাতির ধারণাকে সামনে রেখেছিলেন যা "অখন্ড ভারত তত্ত্ব", ভারতীয়দের জন্য ঐক্যবদ্ধ জাতিগুলির ধারণায় বিকশিত হয়েছে বলে মনে করা হয়। গোলওয়ালকর ছিলেন ভারতের প্রথম দিকের হিন্দু জাতীয়তাবাদী চিন্তাবিদদের একজন।
***
প্রথম পর্ব সমাপ্ত।
০৯ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৩
শেরজা তপন বলেছেন: হিন্দীটাও দেখেছি আমি। রাজকুমার রাও দুর্দান্ত অভিনেতা।
হ্যাঁ সৃজিতের গুমনামী- আসলেই সেই মানের ছবি।
২| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:০৬
ভুয়া মফিজ বলেছেন: একজন আজন্মের নেতা আর রহস্য পুরুষ হলেন এই নেতাজি। উনি যদি জীবিতই ছিলেন, কেন যে আবার রাজনীতিতে আসলেন না, কেনই বা অজ্ঞাতবাসে চলে গেলেন, কে জানে?
নেতাজীর হিন্দু জাতীয়তাবাদী চিন্তাবিদদের একজনের সাথে এতো ঘনিষ্ঠতা কেমন যেন লাগে না? কারন উগ্র হিন্দুত্ববাদের চাইতে লিবারেল কম্যিউনিজম ধ্যান-ধারনা নেতাজীর পছন্দ ছিল বলেই জানতাম।
লেখাটা পছন্দ হয়েছে। আমার উপরের মন্তব্যকে পরের পর্বে যদি আরো খানিকটা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতে পারেন, তবে শান্তি পাইতাম। পরের পর্বের অপেক্ষায়।
১১ ই জুলাই, ২০২৪ সকাল ১১:০৩
শেরজা তপন বলেছেন: এই প্রশ্নগুলো শুধু আপনি নয় বহুজনের। ভারত সরকারের গঠিত অনেকগুলো কমিশনের মধ্যে সর্বশেষ মুখার্জী কমিশন এই নিয়ে বিশেষভাবে তদন্ত করেছিল।এর পাশাপাশি দেশী বিদেশী সাংবাদিক, রাজনীতি বিশ্লেষক অনেকেই এই প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করেছেন; কিছু সন্তোষজনক উত্তর অবশ্যই আছে।
আমি আমার মত চেষ্টা করেছি কিছু সুত্র ধরে। আশা করি আপনি আপনার উত্তর পাবেন।
অনেকদিন বাদে এককথায় আমার কোন লেখা পছন্দ করলেন। ভাল লাগল।অনুসন্ধানমূলক ইতিহাসভিত্তিক লেখায় অনে্ক খাটুনি।
আপনার এত ব্যাস্ততার মাঝে লেখা পড়ে মন্তব্য করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
৩| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:০৮
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: এই বিষয়টি আসলেই খুব ইন্টারেস্টিং, এতবছর পরেও। স্বাভাবিক বয়সের হিসেবেও নেতাজী'র বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে বর্তমান সময়ে; কিন্তু তা নিয়ে আলোচনা কিন্তু চলছেই যুগ যুগ ধরে। সৃজিতের সিনেমাটি দেখেছিলাম, আপনার পুরো পোস্টটা সময় নিয়ে আবার পড়বো। ভালো একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। +++
০৯ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:৪২
শেরজা তপন বলেছেন: গুমনামী নামের সাধুবাবার মৃত্যুসাল ১৯৮৫! সেই হিসেবে অই বয়স পর্যন্ত খুব স্বাভাবিকভাবেই নেতাজী বেঁচে থাকতে পারেন।
মোট তিনটে বিষয়ে আমি মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছি তিনিই ছিলেন নেতাজী। যে যা-ই বলুক না কেন, যেভাবেই গাজাখুরি বলে উড়িয়ে দিক না কেন, কিছু যুক্তি আছে তা কোনভাবেই খণ্ডন কর সম্ভব নয়।
আপনাকে পেয়ে ভাল লাগল- সাথে থাকবেন। অনেক ধন্যবাদ।
৪| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৭
রবিন.হুড বলেছেন: ঘটনা সত্য স্বাক্ষী দূর্বল।
০৯ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৪:০৩
শেরজা তপন বলেছেন: কথা ঠিক। তাঁকে ভারতীয় সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের গোয়েন্দা সংস্থা ( এর সাথে আঁতাত আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থাও ছিল) এভাবে পর্দার আড়ালে রেখেছিল যে, তাঁর মৃত্যুর আগে সারা বিশ্বের কোন মিডিয়া তাঁর ব্যাপারে কিছু জানতে পারেনি। যেখানে সন্দেহ হয়েছে- সেখান থেকেই তিনি সরে গেছেন। এমনকি কয়েক বছর তিনি একটানা আজ্ঞাতবাসে ছিলেন- কেউ জানতেও পারেনি তিনি কোথায় আছেন।
মৃত্যুর পরে তাঁর হিন্দু ধর্মমতে অতি কৌশলে দ্রুত তাঁর দেহ পোড়ানোর ফলে ও ঘর তল্লাশী করে অতি সংবেদনশীল অনেক কিছুই ভারতীয় ইন্টেলিজেন্স জব্দ করে নিয়ে যায় এবং চিরিদিনের জন্য সেগুলো গুম করে ফেলে। এসব কিছু কারনেই সম্ভবত সাক্ষী দুর্বল ছিল।
৫| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৪:১৩
মনিরা সুলতানা বলেছেন: চমকপ্রদ কাহিনী !
পরের পর্ব আছে দেখছি, অপেক্ষায় রইলাম।
০৯ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৯
শেরজা তপন বলেছেন: হুম আপনাকে পেয়ে ভাল লাগল। ইতিহাসভিত্তিক সাহিত্যে বরাবর আপনার আগ্রহ আছে জানি।
সাথে থাকার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল।
৬| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৪:২৪
নতুন বলেছেন: যদি ঘটনা সত্যি হয়ে থাকে তবে বিষয়টা ধামাচাপা দিতে গোয়েন্দা সংস্থা ততপর থাকবে।
আর যদি ওদের উতসাহ কম থাকে তবে ঐ বাবা হয়তো তার ফ্যান ছিলেন।
কিন্তু মায়ের ছবি একটা প্রমান।
০৯ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৬
শেরজা তপন বলেছেন: যতদুর জানা যায় গান্ধী -নেহেরু থেকে শুরু করে সবাই জানতেন ব্যাপারটা। এটা একটা রাষ্ট্রের টপ সিক্রেট ইস্যু ছিল! কেন ছিল এবং কেন তিনি নামহীন অবস্থায় আত্মগোপনে ছিলেন বা তাঁকে এমন অবস্থায় থাকতে বাধ্য করা হয়েছিলেন, সেটা নিয়ে আলোচনা করব।
গুমনামী বাবা এত ভাল বাঙলা ও দুর্দান্ত ইংরেজী জানতেন তা শুনে যারা তাঁর কাছাকাছি আসতে পেরেছিলেন তারা বিস্মিত হয়ে যেতেন। বাঙলা খাবার ও বাঙলা গান, ভজন কীর্তন তাঁর ভীষন প্রিয় ছিল- বিশেষ করে নজরুল গীতি।
এসব বিষয় তাঁর বায়োগ্রাফি বা সিনেমায় আসেনি।
৭| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১
শায়মা বলেছেন: ভাইয়া পুরাই ভাওয়াল সন্যাসীর কাহিনী দেখছি।
আগের দিনে লুকায় থাকা কত সহজ ছিলো কিন্তু এখনকার দিনে সোশ্যাল মিডিয়র কল্যানের হাড়ির খবর বেরিয়ে আসে।
০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:০২
শেরজা তপন বলেছেন: তিনি মারা গিয়েছেন ৩৯ বছর আগে- তাই মিডিয়াতে ভীষন তোলপাড় তুলেছিল। আর এখন এমন ঘটনা ঘটলে খবর ছিল- ফেসবুকীয়রা যে গল্পের গরু কোন গাছে তুলত কে জানে!!
ভাওয়াল সন্ন্যাসী একসময় তাঁর আত্মপরিচয়ের জন্য লড়াই করেছিলেন কিন্তু গুমনামী বাবা সহজে পর্দার আড়াল ছেড়ে কারো সাথে সাক্ষাৎ দিতেন না। তাঁর পরিচয় প্রকাশ হয়ে যাবার নুন্যতম সম্ভাবনা থাকলেই তিনি অন্যখানে পাততাড়ি গোটাতেন!
৮| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:২১
করুণাধারা বলেছেন: প্রথম যে ছবি দিয়েছেন, ডানে নেতাজী কিন্তু বামে কে? গুমনামী বাবা?
নেতাজীকে নিয়ে আমার খুব আগ্রহ, আমার ছোটবেলায় দেব সাহিত্য কুটিদের বই পড়তাম, প্রায় প্রতিটি পূজা বার্ষিকীতে নেতাজিকে নিয়ে লেখা থাকতো। একটা গল্প মনে পড়ছে নেতাজীর লুক এলাইককে সবাই কিভাবে নেতাজী বলে ভাবে।
নেতাজির বিমান দুর্ঘটনা হয়েছিল ১৯৪৫ সালে। তারপর থেকেই আর কেউ তাকে দেখেনি। গুমনামী বাবা মারা যান ১৯৮৫ সালে এই ৪০ বছর তিনি কেন নিজেকে আড়াল করে রাখলেন!! খুবই রহস্যময়। যে সমস্ত জিনিসপত্রের উল্লেখ করেছেন, সেগুলো গুমনামী বাবার কাছে এলো কি করে!! কারণ সুভাষ বসু বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে থাকলেও তার সাথে কোন জিনিস থাকার কথা নয়।
আশা করি পরের পর্বে সমস্ত রহস্যের অবসান হবে।
০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:১৪
শেরজা তপন বলেছেন: বাম দিকেরটা শিল্পীর কল্পিত ছবি- মানে, গুমনামী বাবার একান্ত ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য পাবার সুযোগ যে অল্প ক'জনের হয়েছে তাদের কাছে বর্ণনা শুনে স্কেচ।
এটা একটা বিরাট রহস্য; আদৌ কি সেদিন জাপানে কোন বিমান দুর্ঘটনায় পড়েছিল নাকি এটা একটা সাজানো নাটক মাত্র?
এই নিয়ে একপর্বে আলোচনা আছে।
তাঁকে জানার আমারও অদম্য আগ্রহ! একজন আপাদমস্তক বীর ও নেতা ছিলেন তিনি।
ধন্যবাদ আপু বরাবরের মত সাথে থাকার জন্য।
৯| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:৩০
জুন বলেছেন: আমি শৈলেশ দে'র "আমি সুভাষ বলছি " বইটা পড়ে গায়ে কাটা দিয়ে উঠেছিল। এখনো তার দেশপ্রেম আমাকে ভাবায়। আমি বিশাখাপটনমের সাবমেরিন কুরুসুয়ায় উঠে প্রথমেই সুভাষ বসুর কথা ভেবেছি যিনি সাবমেরিন করে জার্মানি থেকে জাপান গিয়েছিলেন যা ছিল ভয়ংকর বিপদশঙ্কুল যাত্রা। কেন যে উনি ফিরে আসলেন না এটাই ভাবি মাঝে মাঝে মনে পরলে। আপনার লেখাটি ভালো লাগলো শেরজা। +
০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:১৮
শেরজা তপন বলেছেন: তাঁর সেই সাবমেরিন যাত্রার কাহিনী আমিও পড়েছি। আসলেই গায়ে কাঁটা দেবার মত সে যাত্রা।
গুমনামী বাবার ব্যাপারটা অনেকেই ভুয়া বলে এককথায় উড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু পুরোটা জানলে বিষয়টা এককথায় উড়িয়ে দেবাব মত না। না হলে ভারত সরকার পর পর দুটো কমিশন বসিয়ে তদন্ত করে না।
অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইল। আপনার ভ্রমণ কি শেষ হয়েছে?
ভাল থাকুন সাথে থাকুন।
১০| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০০
কামাল১৮ বলেছেন: ত্রৈলোক্যন মহারাজ নামেই তিনি অধিক পরিছিত।তিনি তিরিশ বছর জেল খেটেছেন।তার লেখা বই জেলে ত্রিশ বছর আমি গুলিস্তানে থাকা(এখন নাই) ভারতিয় লাইব্রেরীতে পড়েছি।
০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:২৯
শেরজা তপন বলেছেন: দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার কোন লেখা বই আমার পড়া হয়নি। হ্যাঁ তার জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে জেলে।
তার এই বইয়ের রেফারেন্সের জন্য ধন্যবাদ কখনো সময় সুযোগ পেলে পড়বো।
১১| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:১১
কামাল১৮ বলেছেন: ধর্মীয় অনেক কাহিনীর মতো এটাও তেমন একটি কাহিনী।বাস্তব থেকে অনেক দুরে।
০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:৩১
শেরজা তপন বলেছেন: আপনার মতামতকে শ্রদ্ধা জানাই। পুরো লেখাটা পড়ে দেখবেন এবং অনলাইনে তাকে নিয়ে বাস্তবধর্মী অনেক নিউজ আছে সেগুলো দেখে যদি মনে করেন সেটা ভুল মিথ্যা এবং গুজব তাহলে তাই।
১২| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:৩৭
রানার ব্লগ বলেছেন: আপনার ভাষায় ভদ্রলোম একজন আপাদমস্তক বীর ও নেতা, তা হলে তিনি লুকিয়ে কেনো গেলেন।
০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:৩৩
শেরজা তপন বলেছেন: এর পেছনে যে যৌক্তিক কাহিনী আছে তা জানার জন্য কয়েক পর্ব অপেক্ষা করতে হবে
এখন বললে তো বাকি লেখা পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।
১৩| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:০৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: শেরজা তপন,
একটা লেখার মতো লেখা হয়েছে। নেতাজীকে নিয়ে অনেকেরই আগ্রহের শেষ নেই। আমিও তাদের একজন।
আপনার এ লেখায় তার অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে আবারও আগ্রহ বাড়লো।
এই পর্বে যা বললেন তাতে গুমনাম বাবাই যে নেতাজী তা সন্দেহের বাইরে থাকছেনা, পারিপার্শ্বিক আলামত সেটাই বলে, অন্তত আপনার দেয়া তথ্য মতে।
তবে কেন নেতাজীকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে ভারত সরকারের দিক থেকে সেটা আজও বুঝে উঠতে পারিনি। যে দেশের স্বাধীনতার জন্যে নেতাজী ছিলেন মরিয়া প্রায় সেই স্বাধীন দেশে তাকে লুকিয়ে থাকতে হবে কেন ? তার তো বীরদর্পে জনপদে ঘুরে বেড়ানোর কথা! এটা কি নেতাজীর আত্মাভিমান না অন্য কিছু?
পরের পর্বে এই প্রশ্নের উত্তর খানিকটা হলেও মিলবে কি ?
০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:৪৮
শেরজা তপন বলেছেন: নেতাজি যে স্বাধীন দেশ চেয়েছিলেন যেভাবে স্বাধীনতা চেয়েছিলেন সেটা সেভাবে হয়নি এ ব্যাপারে তো আপনি নিশ্চিত - না কি? ইনি যদি তিনি হয়ে থাকেন তাহলে আত্মভিমান থাকাটা অস্বাভাবিক নয়।
তবে কিছু ব্যাপারে সম্ভবত তিনি বাধ্য হয়েছিলেন নিজেকে একেবারে লুকিয়ে ফেলতে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তিনি কাদের পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন এবং কাদের সাথে মিশেছিলেন ও সাহায্য নিয়ে ব্রিটিশদের হটিয়ে ভারতবর্ষ স্বাধীন করতে চেয়েছিলেন সে ব্যাপারটা একটু ভেবে দেখেন? মিত্রবাহিনীর 'যুদ্ধাপরাধীর' লিস্টের প্রথম সারিতে ছিল তার নাম।~ বাকিটা পরে বলছি।
দারুন প্রশংসায় আপ্লুত হলাম। এমনি করে পরের পর্বগুলোতে আপনাকে পাশে পাব বলে আশা রাখতে পারি।
১৪| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:৫৪
মাজহার পিন্টু বলেছেন: পরের পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:৫০
শেরজা তপন বলেছেন: লেখা পড়ে মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সাথে থাকবেন ভালো থাকবেন। পরের পর্বে আপনার মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকবো...
১৫| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:৩৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কে আমার তেমন অধ্যয়ন নেই। দুপুরে একবার আপনার পোস্ট পড়া শুরু করলাম। কিছুক্ষণ পর পোস্টটা মনে হয় গুম করে ফেলেছিলেন
এই ফাঁকে একটু উইকি ঘাঁটলাম। তার মৃত্যুর সময়েই তার মৃত্যু নিয়ে অনেকে সন্দেহ করেছিল। আবার বিভিন্ন রিপোর্টে, যেমন ফিগেস রিপোর্ট, তার মৃত্যুর ব্যাপারটা নিশ্চিত করা হয়।
এক জায়গায় পেলাম, সিঙ্গাপুরে থাকা অবস্থায় তিনি বেতারে গান্ধীর বিরুদ্ধে অনেক নিন্দাপ্রকাশ করছিলেন। তার সাথে গান্ধী, নেহেরো, জিন্নাহ, বা অন্যান্য শীর্ষনেতাদের সম্পর্ক কেমন ছিল?
তথ্যপ্রমাণাদি যাই বলুক না কেন, মৃত্যুটা রহস্যময়, তবু মনে হয়, গুমনামী ঘটনাটা একটা কিচ্ছা ছাড়া আর কিছু না। বিমান দুর্ঘটনা কোনো ছোটো ব্যাপার না। ওটা যে ঘটে নাই, তা প্রমাণ করা খুব কঠিন না। ঐ বিমানে আরো যাত্রী ছিল, যাত্রীতালিকা ছিল। যাত্রীতালিকায় সুভাষচন্দ্র বসু নামে এক যাত্রীও ছিল বলে জানা যায়। প্রায় ৪০ বছর আত্মগোপন করে থাকা সম্ভব না। ১৯৪৫ থেকে ১৯৮৫ - বিজ্ঞানের অনেক অগ্রযাত্রা হয়েছে ততদিনে। তিনি যদি জীবিত থাকতেন, বেরিয়ে পড়তেন ততদিন। আমার এ কথা হলো সাধারণ অনুমান ভিত্তিক।
গুমনামী বাবার কাছে যা পাওয়া গেল, এগুলো এ বাবা নিজের আগ্রহেই সংগ্রহ করেছিলেন সময়ে সময়ে। সুভাষচন্দ্র বেঁচে থাকলে (যদি বিমান যাত্রায় না যেয়ে থাকেন, কিংবা যদি ধরে নিই বিমান দুর্ঘটনা ঘটে নাই, তিনি গোপনে দেশে ফিরে এসেছিলেন) এ জিনিসগুলো তার নিজের বাড়ি থেকেই আনতেন, যার ফলে বাড়ির মানুষের কাছেই তিনি ধরা পড়ে যেতেন।
এগুলো আবার গুমনামী সিনেমার কাহিনি না তো?
যাই হোক, পোস্ট খুব ভালো লেগেছে শেরজা তপন ভাই। বরাবরের মতোই নতুন প্লট বা বিষয়।
১১ ই জুলাই, ২০২৪ সকাল ১১:০১
শেরজা তপন বলেছেন: "হ্যাঁ, একবার গুম করেছিলাম - কিছু ভুল নজরে পড়েছিল বলে। জাপানে বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে ভারতের সরকারের করা শেষ কমিশন পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করেছিল। সেখানে তথ্যগত বিচ্যুতি ও ফাঁক পেয়েছিল। উইকির লেখা ইতিহাস যেভাবে লেখা হয়, সেভাবেই - কোনো ইতিহাস যতক্ষণ পর্যন্ত আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত ইতিহাস ভুল হলেও উইকির কোনো দায় নেই।
গুমনামী বাবাকে নিয়ে তদন্ত তখন হয়েছে যখন তিনি পরপারে চলে গেছেন, এমনকি তাঁর কোনো দেহাবশেষ ছিল না। এমনকি জাপানে যেখানে দুর্ঘটনা হয়েছিল এবং তাঁর অন্তেষ্টিক্রিয়া করা হয়েছিল, সেখানেও তাঁর কোনো দেহাবশেষ সংরক্ষণ করা হয়েছে ব্ললে দীর্ঘদিন ধোঁয়াশার মধ্যে রাখা হয়েছিল। তাঁকে একেবারে ভ্যানিশ করে ফেলা হয়েছে - যা অবিশ্বাস্য!
আপনি হয়তো বিশ্বাস করবেন না, জাপানের ঐ বিমান বন্দরে( মূলত সেটা ছিল জাপানের অধিনস্ত তাইওয়ানের ভুমি) সেদিন কোনো দুর্ঘটনা তো দূরের কথা - বন্দরের এয়ারলগবুকে সেদিন কোনো বিমান উড়ার রেকর্ড পর্যন্ত নেই।
তাঁর কাছের অনেক মানুষ তাঁর সাথে গোপনে দেখা করতেন, খাবার ও টাকা দিতেন, চিঠিপত্র আদান প্রদান করতেন - এর প্রমাণ আছে।"
বরাবরের মত চমৎকার ও সূদীর্ঘ মন্তব্য করার জন্য সবিশেষ ধন্যবাদ। শারিরিক সুস্থতা কামনা করছি আপনার-শুভকামনা রইল
১৬| ১০ ই জুলাই, ২০২৪ ভোর ৬:২৪
কোলড বলেছেন: I didn't expect this from you! This is a 3rd rate conspiracy theory.
Subhas Bose got kicked out of Congress by Gandhi. Politically he was dead by the time he fled India to form INA. He escaped justice by that plane crash. He should have been shot or hanged along with other traitors from INA.
১০ ই জুলাই, ২০২৪ সকাল ৯:৫২
শেরজা তপন বলেছেন: আমি আপনার মতামতকে শ্রদ্ধা জানাই।
কিন্তু এই তথাকথিত' তৃতীয় শ্রেনীর তত্ত্ব' -এর বিষয়টা নিয়ে কিন্তু সারা ভারতবর্ষের রথী-মহারথীরা মেতেছেন আর ামিতো অতি নাদান মানুষ। ভেবে দেখুন; ভারত সরকার এই এই তৃতীয় শ্রেনীর তত্ত্ব নিয়ে ভীষণ মাথা ঘামিয়ে তিন-তিনটে তদন্ত কমিশন কিন্তু গঠন করেছিলেন। ( আসলে কমিশন গঠন করা হয়েছিল তিনের অধিক এর মধ্য উল্লেখযোগ্য ছিল খোসলা, শাহনেওয়াজ ও মূখার্জী কমিশন)
দ্বীতিয় কমিশনের প্রধান অফিসিয়ালি স্বীকার না করলেও আনফিসিয়ালি স্পষ্টভাবে সত্যতা স্বীকার করেছিলেন। এ বিষয়ে পরে আসছি- বিশ্বাস না হয়; আপনি তৎকালীন প্রথম সারির ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর দেখতে পারেন।
মেনে নিচ্ছি এটা সম্পুর্ন ভুল; তারপরেওতো এর মাধ্যমে আমরা ইতিহাসের আরো কিছু তথ্য জানতে পারছি, আপনাদের মত ব্লগারদের সাথে মতবিনিময় হচ্ছে।
আপনি যেভাবে বলেছেন যে, নেতাজীকে কংরেস থেকে 'kicked out' করা হয়েছে। শব্দটা নেতাজীর মত ব্যক্তিত্ত্বের সাথে খুবই অবমাননাকর অসম্মাঞ্জনক। যারা নেতাজীকে ঘনিষ্ঠভাবে জানে বা তাঁর জীবনী পড়েছে বা গান্ধীজীর তথ্যমতে গান্ধীজী স্বরাজের অহিংস ধারনাকে নেতাজী কখনোই সমর্থন জানাননি ঠিক তেমনি গান্ধীজি নেতাজীর সহিংস আন্দোলনের। এই বিরোধের জের ধরেই শেষমেশ নেতাজী স্বেচ্ছায় কিংবা বাধ্য হয়ে কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেন। kicked out শব্দটা বলে নেহেরু জিন্নাহ'হের মত মহা স্বার্থপার মানুষেরা।
আশা করি শেষ পর্যন্ত সাথে থাকবেন।
১৭| ১০ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২১
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আমার মনে হয় যখন আপনি কোন কিছু সিদ্ধান্ত আগে মেনে নিয়ে সেটার সত্যতা প্রমাণ এর চেষ্টা করবেন, তখন সবকিছুই আপনার কাছে যৌক্তিক মনে হবে যদি তা আপনার সিদ্ধান্তের স্বপক্ষে যায়। নেতাজী'র হারিয়ে যাওয়ার আগের জীবন এবং নীতি, ধারণা, বিশ্বাস এগুলোর কোনটার সাথে গুমনামি বাবার জীবনাচার বা অন্যান্য ঘটনা কোন মতেই কি সামঞ্জস্যপূর্ণ? নেতাজীর লেভেলের একটা মানুষ দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও এক দুই দিন নয়, চল্লিশটি বছর এরকম অন্তঃপুরবাসী হয়ে আত্মগোপনে থাকবেন এটা কি যৌক্তিকতা নিরিখে সম্ভব? কট্টর ডানপন্থিদের সাথে তার এরকম যোগাযোগ! আমার কাছে মনে হয় একটা মিথকে বিশ্বাসে পরিবর্তিত করা হয়েছে, এবং সেখানে সরকারী মদদ ছিলো। সরকারী মদদে এরকম চরিত্র গড়ে তোলা অসম্ভব কিছু নয়। নেতাজী জীবনির সাথে কোনভাবেই গুমনামি বাবার জীবন মিলাতে পারা যায় কি? একটা মানুষ নিজেকে কতটুকু পরিবর্তন করতে পারে এবং সেই পরিবর্তন কি কারণে করবে তা বড় প্রশ্ন? চল্লিশ বছর অন্তর্ধানে থাকার একটা লক্ষ্য তো থাকবে, যে লক্ষ্যের বিষয়ে কোন কিছু জানা গেল না।
দেখা যাক, দ্বিতীয় পর্বে আপনি এসকল প্রশ্নের উত্তরে কি বলেন, সেই অপেক্ষায় রইলাম।
১১ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫
শেরজা তপন বলেছেন: যৌক্তিক ও গঠনমূলক সমালোচনের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ঠিকঠাক সময় করে উঠতে পারিনি সেজন্য আপনার মন্তব্যের উত্তর দিতে একটু দেরি হয়ে গেল।
আপনার যেভাবে ধারণা হয়েছে যে আমি আমার বক্তব্যটাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছি আসলে এটা ঠিক তেমন নয়। অনেক ফিল্ম ও ডকুমেন্টারি দেখে শত শত নিবন্ধ ও নিউজ পড়ে আমার কিছু ধারণা হয়েছে যে গুমনামী বাবা নেতাজি হলেও হতে পারেন। যেহেতু বিষয়টা প্রাতিষ্ঠানিক কোন স্বীকৃতি পায়নি সেহেতু আমার ধারণায় কিছু যায় আসে না। বিষয়টাকে অস্বীকার করাই উত্তম!
তবে না না করে অনেক আলোচনা থেকে যায় অনেক প্রশ্ন রয়ে যায় মনের মধ্যে কেন একজন মানুষ নেতাজির মতই হবে তার মতই কথা বলবেন তার মত লিখবেন তার মত পড়াশোনা করবেন তার মতই পোশাক আশাক পড়বেন, সাধু হয়ে বাঙালিয়ানা খাবার বাংলা গান পছন্দ করবেন কেন তিনি তার ট্রান্কে অতি যত্নে নেতাজির শুধু দুর্লভ ছবি সযতনে রেখে দিবেন??? কেন তিনি নিজেকে এভাবে আড়ালে রেখেছিলেন কেনই বা বিখ্যাত সব ব্যক্তিরা তাকে চিঠি লিখেছিল? এরকম অনেক প্রশ্নই থেকে যায় অনেক যদি কিন্তু অনেক কিছুই থাকে।
দ্বিতীয় পর্ব দিয়েছি আশা করি কিছু কিছু উত্তর এখানে পাবেন পরের। পর্বগুলোতে আপনার প্রশ্নগুলোর সন্তোষজনক উত্তর দেবার চেষ্টা করব।
১৮| ১০ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৪
মেঘনা বলেছেন: ছোটবেলা থেকেই নেতাজি আমার কাছে হিরো। তার সম্পর্কিত অনেক লেখা তার মৃত্যুর রহস্য নিয়ে লেখা পড়েছি। গুমনামী বাবা কাহিনীটা শুনেছি সিনেমাটাও দেখেছি সিনেমাটা চমৎকার।
অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন নেতাজির মতো এত বড় মাপের নেতা স্বাধীনতার পর লুকিয়ে থাকবেন কেন? এর যৌক্তিক কারণ আছে। আপনি সেটা পরের পর্বে আলোচনা করবেন সম্ভবত তাই সে প্রসঙ্গে যাচ্ছি না।
আপনার লেখাটি এবং মন্তব্য গুলি পড়তে পড়তে একটা ভাবনা মাথায় এলো এটা আগে কখনো আসেনি। তা হল গুমনামি বাবা এমন কোন ব্যক্তি যিনি নেতাজির খুবই ঘনিষ্ঠ এবং তার সমবয়সী, শেষ সময় তিনি হয়তো নেতাজির কাছাকাছি ছিলেন এবং জানতেন যে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজি মারা যাননি। স্বাধীন ভারতবর্ষের তারো হয়তো লুকিয়ে থাকার প্রয়োজন ছিল, এবং ছদ্মবেশ নিয়ে তিনি হয়তো নেতাজিকেই খুঁজছিলেন।
১১ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:৫১
শেরজা তপন বলেছেন: এই ধরনের ধারণা শুধু আপনার নয় যারা নেতাজিকে চিনেন জানেন তাঁকে ভালোবাসেন নেতাজি কে অনুসরণ করেন তাদের অনেকেই একই রকম ধারণা পোষণ করেন।
গুমনামি ছবিটা দেখলে এর অনেক উত্তর পাওয়া যায়। সেখানে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সবকিছু তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
এর বাইরে ও আমি কি আরো কিছু তত্ত্ব তথ্য সংবাদ সাক্ষাৎকার ও ইতিহাস ভিত্তিক আলোচনা এই লেখায় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি এবং যথাসম্ভব নিরপেক্ষভাবে আমার পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয়েছে যাতে কেউ না মনে করেন যে আমি গুমনামী বাবাকে নেতাজি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছি।
আপনার মন্তব্যে দারুন অনুপ্রাণিত হলাম। ব্লগে আপনার সাথে সাক্ষাৎ কম হয়েছে বলে মনে হয় এর আগে মনে পড়ছে না আপনার কোন মন্তব্য আমি পেয়েছি।
যাহোক আন্তরিক শুভকামনা রইল পরের পর্ব দিয়েছি; লেখা পাঠ মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকবো...
১৯| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:৪২
আরইউ বলেছেন:
শেরজা,
অফলাইনে পোস্ট আগেই পড়েছি। লেখা ভালো লেগেছে। পরের পর্বের জন্য আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।
ধন্যবাদ। ভালো থাকুন!
১১ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:৫২
শেরজা তপন বলেছেন: আমি সব সময় খানিকটা অপেক্ষা করি আপনার মন্তব্যের।
আপনাকে পেয়ে খুব ভালো লাগে পরের পর্বটা দিয়েছি আশা করি পড়বেন ও যৌক্তিক মন্তব্য করবেন।
মনের মধ্যে কোন প্রশ্ন থাকলে সেটা তুলে ধরবেন আমি সন্তোষজনক উত্তর দেবার চেষ্টা করব।
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:৪৪
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- গুমনামী সিনেমাটি দেখেছি আমি , বেশ ভালো ছিলো। শেষ পর্যন্ত আকৃষ্ট করে রাখতে পরেছিলো। সকলের অভিনয়ও ছিলো চমৎকার।
Rajkummar Rao এর Bose: Dead/Alive দেখে ছিলাম। মনে হয়েছে আরো ভালো হতে পারতো।