নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে মনে হয় জীবনটা অন্যরকম হবার কথা ছিল!

শেরজা তপন

অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...

শেরজা তপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

গুমনামী বাবা: ~ এই সাধু কি আসলেই \'নেতাজী\' সুভাষ চন্দ্র বোস ছিলেন? (২)

১১ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:০২


গুমনামী বাবা: ~ এই সাধু কি আসলেই 'নেতাজী' সুভাষ চন্দ্র বোস ছিলেন? পর্ব~১
নেতাজি ও গুমনামী বাবা
গুমনামী বাবার কাহিনি আরও নেতাজিকেন্দ্রিক হয়ে ওঠে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে। কয়েকজন মুষ্টিমেয় মানুষ যারা ওই সাধুবাবার জীবদ্দশায় তাকে দেখতে পেয়েছেন, তারা সকলেই বলেছেন, গুমনামি বাবার সঙ্গে নেতাজির চেহারা এবং মুখের নাকি অদ্ভুত মিল রয়েছে। এমনকি তার অভ্যাস, তার কথা বলার ধরণ, তার খাদ্য রসিকতা সবকিছুই একেবারে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আদলেই। গুমনামি বাবা কে? তা জানতে নেতাজির ভাইজি ললিতা বসু ১৯৮৬ এর ফেব্রুয়ারি মাসে এবং বিজেপি নেতা শক্তি সিংহ ২০১০ সালে আদালতের কাছে দুটি পিটিশন দাখিল করেন। এলাহাবাদ হাইকোর্টে এই বিষয়ে মামলাও করা হয়। তাদের বক্তব্য ছিল, "গুমনামি বাবার পরিচয় জানতে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হোক।"
২০১৬ সালে ২৬ জুন, উত্তরপ্রদেশ সরকার এলাহাবাদ হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিষ্ণু সহায়ের নেতৃত্বে গঠন করে একটি তদন্ত কমিশন। তদন্তের পর, সেই তদন্ত কমিটি কমিশনে রিপোর্ট পেশ করে, "অধিকাংশ সাক্ষী জানিয়েছেন গুমনামি বাবাই ছিলেন নেতাজি। জনাকয়েক অবশ্য বলেছেন তিনি নেতাজি ছিলেন না।"
তবে সহায় কমিশনের বিপরীত মতামত ছিল এর আগে গঠিত মুখার্জি কমিশনের। তাদের তদন্তে উঠে এসেছিল, গুমনামি বাবা ছিলেন নেতাজির একজন ভক্ত, তিনি আদতে নেতাজি ছিলেন না
সাংবাদিক বীরেন্দ্র কুমার মিশ্রাও পুলিশের কাছে একটি রিপোর্ট দায়ের করেছিলেন, যেখানে তিনি বলেছিলেন ১৯৮৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর গুমনামি বাবা মারা যান। এবং তার দুদিন পরে অর্থাৎ ১৮ সেপ্টেম্বর তার সমাধি স্থাপন করা হয়। যদি ১৯৪৫ সালের বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজি না মারা গিয়ে থাকেন, এবং এই গুমনামি বাবাই নেতাজি হন তাহলে মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হবার কথা ৮৮ বছর। তবে খুব অদ্ভুত ভাবে, সেই বিশেষ দিনে কোন মৃত্যুর হদিশ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। না রয়েছে কোনো মৃত্যুর প্রমাণপত্র, না রয়েছে মৃতদেহের কোন ছবি অথবা শেষকৃত্যের কোন ছবি। স্থানীয় সংবাদপত্র 'জনমোর্চা' দাবি করেছিল, 'গুমনামি বাবা নেতাজি নন'। ওই সংবাদপত্রের তৎকালীন সম্পাদক শীতলা সিং নেতাজির এককালীন সহায়ক পবিত্র মোহন রায়ের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন কলকাতায় এসে।
রায় তাকে জানান, 'পশ্চিমবঙ্গের শৌলমারী থেকে শুরু করে নাগাল্যান্ডের রাজধানী কোহিমা এমনকি পাঞ্জাব পর্যন্ত আমরা প্রত্যেক সাধুবাবার খোঁজ করেছি নেতাজির ব্যাপারে জানার জন্য। একই ভাবে বাস্তি, ফৈজাবাদ এবং অযোধ্যার মত জায়গাতেও আমরা খোঁজ চালিয়েছি। আমি হলফ করে বলতে পারি, গুমনামি বাবা নেতাজি নন।' উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফ থেকেও নেতাজির গুমনামি বাবা হওয়ার দাবি সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেওয়া হয়।
এমনকী নেতাজি কন্যা অনিতাও এই দাবিকে ভিত্তিহীন বলেই মনে করেন। তাঁর কথায়, "অর্থহীন তত্ত্ব নিয়ে কখনোই এগোনো উচিত নয়। অনেকে বলে থাকেন তিনি নাকি এখনও জীবিত। এটা সবথেকে ভালো বলতে পারবে একমাত্র ঈশ্বর। আর যদি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ওই বিমান দুর্ঘটনায় না মারা গিয়ে থাকেন, তাহলে উনি গুমনামি বাবা সাজতে যাবেন কেন? যে দেশের স্বাধীনতার জন্য এত ত্যাগ করলেন, সেই দেশে নিজের নামে ফিরলেন না কেন? পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেন না কেন? এটা কি আদৌ হতে পারে? এই সমস্ত অর্থহীন বিতর্ক নিয়ে আমি অত্যন্ত বিরক্ত।"
~ অনিতা বসু। সুভাষ চন্দ্র বসুর কন্যা।

তবে উত্তরপ্রদেশের সাধারণ মানুষের কাছে গুমনামি বাবা-ই ছিলেন নেতাজি। ফৈজাবাদ অঞ্চলের এক বাসিন্দা রাম কুমার বলছেন, "আমার বাবা বিশ্বাস করতেন, গুমনামি বাবা আসলে নেতাজি। উনি গুমনামি বাবার সমস্ত ইচ্ছা সম্মান করতেন, এবং কখনও তিনি তার সঙ্গে জোর করে দেখা করতে যাননি। সরকার এই সত্যিটাকে স্বীকার না করলেও গুমনামি বাবা আসলেই ছিলেন।"

গুমনামি বাবার মৃত্যু রহস্য ও কিছু উত্তর না জানা প্রশ্ন
৩৮ বছর হয়ে গেলেও গুমনামি বাবার মৃত্যুর রহস্য নিয়ে ধোঁয়াশা এখনো কাটেনি। এই মৃত্যু রহস্য আমাদের সামনে খাড়া করে দেয় একাধিক প্রশ্ন। কেন গুমনামি বাবা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবারের সদস্যদের ছবি এত যত্ন করে রেখেছেন? তার কাছে আজাদ হিন্দ ফৌজের এত গোপনীয় তথ্য এলই বা কোথা থেকে?
গুমনামি বাবার দাঁতের ডিএনএ এবং বসু পরিবারের কিছু সদস্যের রক্তের ডিএনএ পরীক্ষা করা হলেও তেমন কোনো মিল পাওয়া যায়নি। মুখার্জি কমিশন এর এই ডিএনএ রিপোর্ট পরবর্তীতে এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি খারিজ কেন করে দিয়েছিলেন?

নেতাজির অন্তর্ধানের চার বছর পর কলকাতার গোয়েন্দা অফিসার অনিল ভট্টাচার্য একটি সিক্রেট নোটে একজন সাধুর উল্লেখ করেছিলেন, এই সাধুই কি তাহলে গুমনামি বাবা? গুমনামি বাবার হস্তাক্ষরের সঙ্গে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর হাতের লেখার এত মিল কেন? একজন অজ্ঞাত বোনের কাছ থেকে তিনি নাকি একাধিক বই উপহার পেয়েছিলেন গুমনামি বাবা, কে এই 'বোন'? একজন ভারতীয় সাধু হওয়া সত্বেও তিনি মাংস খেতেন কেন?
মুখার্জি কমিশনের প্রধান জাস্টিস মুখার্জি, অফ ক্যামেরা কেন বলেছিলেন, 'তিনি ১০০ শতাংশ শিওর, গুমনামি বাবাই নেতাজি?'

কোনো ভক্ত ছিল না তার, কিন্তু তবুও গুমনামি বাবা অর্থসাহায্য পেতেন কার থেকে? আর তার থেকেও বড়ো কথা যদি তিনি নেতাজিই হন তাহলে গুমনামি বাবার ভেকই বা ধরেছিলেন কেন? তিনি কি সমসাময়িক রাজনীতিকে প্রভাবিত করতে চাননি? তিনি যদি ফিরে আসতেন, তাহলে তাকে ভারতের সর্বময় কর্তা করার দাবি উঠতোই। তিনি কি এই সমস্ত থেকে দূরে যেতে চেয়েছিলেন?
জনমোর্চা সংবাদপত্রের বর্তমান সম্পাদক ডক্টর সুমন গুপ্ত বলেন, 'উত্তরপ্রদেশে এখনো সমসাময়িক বহু মানুষ রয়েছেন যারা এই গুমনামি বাবা মানুষটিকে একবারের জন্যও না দেখলেও কিংবা তার সঙ্গে কথা না বললেও, গুমনামি বাবার উপরে বিশ্বাস রাখতেন। সরকার কোন তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করল তাতে তাদের খুব একটা যায় আসে না। মৃত্যুর ৩৭ বছর পরেও উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে এখনো অনেকের মনেই জীবিত রয়েছেন নেতাজি ওরফে 'গুমনামি বাবা'!"
***
নেতাজীর মৃত্যু রহস্য!
নেতাজীর মৃত্যু সর্বদাই একটা বিতর্ক। তাঁর মৃত্যুর ব্যাপারে কয়েকটি প্রচলিত মত আছে। প্রথমটি সবচেয়ে প্রচলিত। ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট মঞ্চুরিয়া যাওয়ার পথে তাইহোকুতে একটি বিমান দুর্ঘটনায় সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু হয়েছিল বলে সরকারি দলিল-দস্তাবেজে বলা আছে। যদিও এর যথেষ্ট বিরোধিতাও আছে। রেনকোজি মন্দিরে রাখা নেতাজীর চিতাভষ্ম পরীক্ষা করে জানা গেছে, ওই চিতাভস্ম নাকি নেতাজীর নয়।
বিমান দুর্ঘটনায় সুভাষের মৃত্যুর সত্যতা যাচাই করতে একাধিক তদন্ত কমিশন গঠিত হয়েছে। যার মধ্যে শাহনওয়াজ কমিশন, খোসলা কমিশন এবং মুখার্জি কমিশন উল্লেখযোগ্য। প্রথম দুটি কমিশন ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পক্ষেই মতামত দিয়েছে। কিন্তু হাস্যকরভাবে উক্ত কমিশনের কেউই তদন্ত করতে দুর্ঘটনাস্থলে যায়নি।
বিচারপতি মনোজ মুখার্জীর নেতৃত্বাধীন কমিশন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেছিল। তাইহোকু বিমানবন্দরের সব নথি খতিয়ে দেখে তারা মতামত দেয় যে ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট সেখানে কোনও বিমান দুর্ঘটনাই ঘটে নি। যদিও, কোনো কারণ না দেখিয়েই এই তদন্ত রিপোর্ট বাতিল করে দেয় সরকার।
একমাত্র মুখার্জী কমিশন বলেছিল, নেতাজীর মৃত্যুর প্রমাণস্বরূপ কোন ডেথ সার্টিফিকেট নেই। এমনকি বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হননি বলে জানিয়েছেন নেতাজীর গাড়িচালকও।
হাবিবুর রহমান ছিলেন একমাত্র ভারতীয়, যিনি সুভাষ চন্দ্র বসুর সঙ্গী ছিলেন এবং তাই ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট তাইহোকুতে একটি বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যুর সময় একমাত্র ভারতীয় সাক্ষী। রহমানকে মিত্রবাহিনী বন্দী করে এবং অবশেষে ভারতে প্রত্যাবর্তন করেন।
তিনি, তথাকথিতভাবে বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী ছিলেন কিন্তু সেদিনের দুর্ঘটনায় কোনো গুরুতর আঘাত পাননি। নেতাজীর সারা দেহ "গুরুতরভেবে পুড়ে যবার জন্য তিনি মারা যান এবং বলা হয় হাবিবুর নিজেই বোসকে তার শেষ মুহূর্তে সাহায্য করেছিলেন। যদি তাই বিশ্বাস করা হয়, তবে হাবিবুর রহমানের দেহে কোনো পোড়া আঘাতের ক্ষত কিভাবে হলো না?
~ হাবিবুর রহমান
তার দাবী যে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজী নিহত হয়েছেন বলে ব্যাপকভাবে প্রচলিত, সে ঘটনার চার মাস পর তিনি নেতাজীকে মায়ানমার ও থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে নামিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি নিজেকে নেতাজীর আজাদ হিন্দ ফৌজের একজন সদস্য বলে দাবি করেছেন।
নেতাজী যদি জীবিত থাকেন, তাহলে কোথায় গিয়েছিলেন তিনি? অনেকে বলেন, নেতাজী সোভিয়েত রাশিয়ার কাছে বন্দী অবস্থায় ছিলেন। রাশিয়াতে যাওয়ার পর তার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল সে ব্যাপারে তারা আবার ভিন্ন ভিন্ন মত দিয়েছেন।
কারো কারো দাবি, সুভাষ গিয়েছিলেন রাশিয়াতে। রাশিয়ান সৈন্যরা তাঁকে গ্রেফতার করে এবং সেখানকার কারাগারে তিনি তাঁর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কেউ বলেন তাঁর মৃত্যু হয় সার্বিয়াতে।

বোস: দ্য ইন্ডিয়ান সামুরাই- নেতাজী ও আইএনএ সামরিক পরিসংখ্যান - বইটিতেও নেতাজীর রাশিয়ায় যাওয়ার উল্লেখ আছে। এই বইটি ২০১৬ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জি. ডি. বকশি বইয়ে সাফ বলে দিয়েছিলেন, বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজীর মৃত্যু হয়নি। বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুর তত্ত্বটি জাপানের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির দ্বারা ছড়িয়ে পড়েছিল যাতে নেতাজী পালিয়ে যেতে পারেন। টোকিওতে সোভিয়েত রাষ্ট্রদূতের সহায়তায় বোস এই পরিকল্পনাটি করেছিলেন। যখন বসু জাপান থেকে পালিয়ে যান, তখন তিনি সার্বিয়া থেকে তিনটি রেডিও সিরিয়াল সম্প্রচার করেন। সেই সময়ে ব্রিটিশরা জানত যে বসু জীবিত ছিলেন। তার বেঁচে থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে, ব্রিটিশ সরকার সোভিয়েত ইউনিয়নের সরকারের কাছে সুভাষকে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ জানায়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় বসুকে এতটাই নির্যাতন করা হয় যে তিনি মারা যান। যদিও, এই বক্তব্যকে অনেকেই প্রত্যাখ্যান করেন।
(ভারতীয় সরকারের তরফ থেকে গঠন কতা খোসলা কমিশন ধৈর্য সহকারে বোসের নতুন 'দেখা' রেকর্ড করেছে - ১৯৪৬ সালে মার্সেইল বিমানবন্দরে তার সাথে একজন এমপির সাক্ষাৎ-এর সুযোগ হয়েছিল (জেকেসিআই রিপোর্টের অনুচ্ছেদ ৭.৩, ৭.৪); যিনি ছিলেন বোসের একজন চরম ভক্ত। একজন সোভিয়েত সেনা কর্মকর্তা দাবি করেছিলেন যে " সুবেশী বোসকে ২৪ ডিসেম্বর ১৯৫৬ তারিখে উচ্চ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে ক্রেমলিনে প্রকাশ্যে যেতে দেখেছিলেন" এবং অন্য একজন এমপি দাবি করেছেন "বোসকে সাইবেরিয়ার একটি কারাগারে ৪৫ নং কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল "। তখনও অন্যকিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সাক্ষী দিয়েছিলেন যে, বোসকে ১৯৫২ সালে মঙ্গোলিয়ান ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের সাথে পিকিং সফরে দেখা গিয়েছিল এবং একই বছরে, রেঙ্গুনের ইনয়া লেকেও তাঁকে দেখা গেছে। একজন বার্মিজ সন্ন্যাসীর পোশাকে নেতাজির সাথে সমাজতান্ত্রিক পার্টির সদস্যের সাথে দেখা হয়েছিল।)


ফুটনোটঃ মেজর জেনারেল (ড.) গগনদীপ বক্সী (সেনা পদক, বিশেষ সেবা পদক) একজন অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা এবং লেখক। তিনি 'জি ডি বক্সি' নামে বিখ্যাত। তিনি জম্মু ও কাশ্মীর রাইফেলসে ছিলেন। কার্গিল যুদ্ধে একটি ব্যাটালিয়ন কমান্ড করার জন্য তিনি বিশিষ্ট সেবা পদক লাভ করেন।
তিনি ইংরেজি ভাষায় Bose: An Indian Samurai A Military Assessment Netaji and the INA (BOSE: AN INDIAN SAMURAI (A Military Assessment of Netaji and the INA)
তবে তাঁকে নিয়ে বিতর্ক আছে যে, বিতর্ক বেশ কয়েকবার ভুয়া খবর প্রচার করেছে।
***
১৯৬৬ সালে ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী উজবেকিস্তানের তাসখন্দে গিয়েছিলেন। পাকিস্তানের সাথে তাসখন্দ চুক্তি করার পরই রহস্যজনক ভাবে তার মৃত্যু হয়। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।অথচ তাঁর চিকিত্‍সক আর. এন. চুং দাবি করেন, ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী একদম ফিট ছিলেন। ওই বৈঠকের কিছু ছবিতে এমন এক ব্যক্তির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, যার চেহারা অবিকল সুভাষচন্দ্রের সাথে মিলে যায়। অনেক ফরেনসিক এক্সপার্টরাও ওই ব্যক্তিকে সুভাষ বলে দাবি করেছিলেন।
সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যুর ব্যাপারে তৃতীয় মতটি হল ফয়জাবাদের 'ভগবানজি' ওরফে গুমনামি বাবাই হলেন নেতাজী। ১৯৮৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। চেহারায় কিছুটা মিল আছে বটে, তবে এমন দাবীর পক্ষে কোনো অকাট্য প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।


মুল রিপোর্টঃ
১৯৬৬-র ইন্দো-পাক শান্তি বৈঠকে যোগ দিতে তাসখন্দ গিয়েছিলেন সেই সময় প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। সেই সফরে লাল বাহাদুরের একটি ছবির পেছন থেকে মধ্যবয়সী এক ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে। নেতাজির ছবির সঙ্গে ওই ব্যক্তির মুখে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য সাদৃশ্য রয়েছে বলে তাঁর ৬২ পাতার রিপোর্টে বলেছেন ফেস ম্যাপিং এক্সপার্ট নেইল মিলার। মুখের ধরণ, কান, চোখ, কপাল, নাক, ঠোঁট এবং চিবুক সর্বত্রই দুটি মুখের মধ্যে মিল যথেষ্ট বেশি।
~ এখানে মিলটা বেশ ভালই বোঝা যায় না কি বলেন?

নেইল মিলার এই সামঞ্জস্য থেকে দু-জন একই ব্যক্তি, এই সিদ্ধান্তে আসা যায় বলে জানিয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ হাইকোর্ট ও আন্তর্জাতিক আদালতে বিভিন্ন মামলায় একাধিকবার বিশেষজ্ঞের মতামত দেওয়া মিলার এক বছর এই ছবিটি নিয়ে কাজ করেছেন। তবে চুল উঠে মাথার সামনেটা ফাঁকা হয়ে যাওয়া নেতাজির যে ছবি দেখে আমরা অভ্যস্ত, তার সঙ্গে কিছুটা অমিল রয়েছে চুলে ঢাকা এই ব্যক্তির। তবে ছদ্মবেশ ধারণের জন্য তা পরচুল হতেই পারে বলে জানানো হয়েছে।
মিশন নেতাজির প্রাক্তন সদস্য ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডাচ নাগরিক সিদ্ধার্থ -এর নির্দেশেই এই ফেস ম্যাপিং-এর কাজ করা হয়। ৩৬ বছরের এই সফটওয়্যার প্রফেশনালকে আরও কয়েকজন নেতাজি গবেষক ও কলকাতায় নেতাজি অনুগামীরা মিলারের পারিশ্রমিকের অর্থ চাঁদা করে তুলে দেন। প্রথমে একজন ভারতীয় বিশেষজ্ঞকে দিয়েই এই কাজ করানো হবে বলে ঠিক করা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার জন্য কোনও ভারতীয় ফেস ম্যাপিং বিশেষজ্ঞ এই কাজে রাজি হন না। শেষে ইংল্যান্ডের নেইল মিলারকেই এই কাজের ভার দেওয়া হয়। নেইল মিলারের রিপোর্ট কোনওরকম রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা না থাকায়, সেই রিপোর্ট আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে আশা করেন নেতাজি গবেষকরা।
*****
আমার কথাঃ
"নেতাজী বিমান দুর্ঘটনায় (দুপুর ২টায় জাপানের নিয়ন্ত্রিত তাইওয়ানের তাইহোকু এয়ারপোর্টে) মারাত্মক আহত হওয়ার পরে 'নানমোন' হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যে ডাক্তার তাঁকে প্রথম চিকিৎসা দেন (তায়োশি সুরুতা), তিনি সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে মারা যান।
তাঁর 'থার্ড ডিগ্রি' বার্ন হয়েছিল—যে নার্স তাঁর পোড়া ক্ষতে অলিভ অয়েল লাগিয়েছিলেন তিনি বলেছেন, বোসের শরীরের ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ দগ্ধ হয়েছিল। পুরোপুরি পুড়ে যাওয়ায় তাঁর চেহারা চেনা সম্ভব ছিল না। তিনি বলেছেন; বোস রাত ১১টার দিকে মারা যান।

বোসকে সনাক্ত করেন একজন জাপানিজ দোভাষী, তা-ও শুধু তাঁর কণ্ঠ শুনে। আহত বোসের ভাষা বোঝার জন্য একজন দোভাষীকে আনা হয়, সেই ভদ্রলোক বলেন তিনি এর আগেও বোসের দোভাষী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি কণ্ঠ শুনেই বুঝতে পারেন ইনি বোস।

এর মাঝে একজন লেফটেন্যান্ট পদমর্যাদার অফিসার এসে ডাক্তার তায়োশিকে বলেছিলেন, 'ইনি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ মানুষ—ইনাকে যে কোনো মূল্যে বাঁচাতে হবে।'

এই হল বোসের পরিচয়!!!

তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য, হাতঘড়ি চশমা থেকে শুরু করে কিছুই সংরক্ষণ করা হয়নি। ডিএনএ টেস্টের জন্য দেহের কোনো টিস্যু এমনকি দাঁত পর্যন্ত সংরক্ষণ করা হয়নি। তিনি মারা যাওয়ার পরে তাড়াহুড়া করে তাঁকে দাহ করা হয় (কোন ধর্মমতে সেটা নিশ্চিত নয়)। তাঁর দেহভস্ম টোকিওতে নিয়ে যাওয়ার পরে মুখার্জী কমিশনের আগে কেউ কোনোদিনও সেটা ফরেনসিক টেস্টের জন্য আবেদন করেনি। জানা যায় যে সৈনিক নেতাজীর তথাকথিত দেহভস্ম নিয়ে টোকিও যাচ্ছিল সে কোনোদিন আর টোকিওতে পৌঁছায়নি।

ভারত সরকার ১৯৫৬ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত যতগুলো কমিশন গঠন করেছিল, তাঁর মধ্যে একমাত্র শেষের মুখার্জী কমিশন কি রিপোর্ট দিয়েছিল দেখুন।"
Mukherjee Commission 2005
Findings:
This commission said that Bose’s death could not be proved. It also said that the ashes which are claimed to be Bose’s belong to another Japanese soldier. This report was submitted to the Parliament in 2006. It was rejected by the government.
• মুখার্জি কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, রেনকোজি মন্দিরের ছাই তার নয়। তাইপে সরকারের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে ১৯৪৫ সালের ১৮ই আগস্ট কোনো বিমান দুর্ঘটনা ঘটেনি।



*আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রধান কর্মকর্তা নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুকে ১৯৯৯ সালে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল কেন? যদি তিনি ১৯৪৫ সালে মারা যেতেন তাহলে ১৯৯৯ সালে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিশ্বাস করা একটা সন্দেহ সৃষ্টি করে।

**১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার চুক্তি এবং গোপন নথি ইনা নং পৃষ্ঠা নং ১০। এই পৃষ্ঠা ২৭৯-এর গবেষণা দেখায় যে ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট নেতাজীর বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়নি।

***নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর কথিত মৃত্যুর ঘোষণা পরে প্রধানমন্ত্রী নেহেরু এবং ইন্দিরা গান্ধী ১৯৫৬ সালে শাহ নেওয়াজ কমিটি এবং ১৯৭০ সালে খোসলা কমিশন তদন্ত করেছিলেন। তারা দুইটি প্রতিবেদনে বসুকে মৃত ঘোষণা করেছিলেন, কিন্তু ১৯৭৮ সালে মোরারজি দেশাই এই প্রতিবেদনগুলো বাতিল করেন। এনডিএ সরকার মুখার্জী কমিশন গঠন করে পুনরায় তদন্তের চেষ্টা করে। কিন্তু মুখার্জী কমিশন রিপোর্ট বর্তমান কংগ্রেস সরকার স্বীকার করেনি। জাপান সরকার তদন্তে জানিয়েছে ১৮ আগস্ট ১৯৪৫ থেকে শুরু করে বিমান দুর্ঘটনা সত্য নয়, যা সন্দেহ সৃষ্টি করে যে নেতাজী ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট মারা যাননি।

****১৯৪৮ সালে, বিজয় লক্ষ্মী রাশিয়া থেকে ফিরে এসে মুম্বাই অ্যাম্বাসেডর শাঁটক্রুজ বিমানবন্দরে নামার পর সাংবাদিকদের সামনে বলেছিলেন, 'আমি ভারতবাসীকে এমন একটি সুসংবাদ দিতে চাই যা ভারতের স্বাধীনতার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হবে, কিন্তু নেহেরু জি জনসাধারণ এবং সংবাদ মাধ্যমকে সেই খবর দিতে নিষেধ করেছিলেন। কারণ তিনি সন্দেহ করেছিলেন নেতাজী রাশিয়ায় ছিলেন।

*****ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট ১৯৯৭ সালের ৪ আগস্ট রায় দিয়েছে যে 'নেতাজীর নাম মরণোত্তর বাতিল করা হয়েছে।' এটি প্রমাণ করে না যে নেতাজীর মৃত্যু হয়েছিল।

******২৮ মে ১৯৬৪ সালে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর মৃত্যুর সময় প্রকাশিত একটি দস্তাবেজমন্ত্রে ফিল্ম 'লাস্ট চ্যাপ্টার' ফিল্ম নং ৮১৬ বি তে নেতাজীকে সন্ন্যাসী বেশে দেখা গেছে।
***
ই পোস্ট নিয়ে গঠনমূলক যে কোন আলোচনা সমালোচনা গ্রহণযোগ্য হবে। যেহেতু এটা একটা স্পর্শ কাতর ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক বিষয় সেহেতু্ তথ্যগত যেকোন ত্রুটি বিচ্যুতি নজরে আসলে অবশ্যই জানানোর সবিশেষ অনুরোধ রইল।

২য় পর্ব শেষ।।

মন্তব্য ৩৮ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (৩৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:১৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: ''লাইক আর মন্তব্য'' উদ্বোধন কইরা গেলাম। পরে আসতেছি!!!!!!!!! :P

১১ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৬

শেরজা তপন বলেছেন: আপনি না পড়ে লাইক/টাইক দিয়ে যান এইটাতো ঠিক না। পরে দেখবেন লেখা আবজাব হৈসে- তখন লাইক ফিরায় নেওনের উপায় কি? যাউগ্‌গা পুরা লাভ আমার তো :)

২| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। অর্ধেকের বেশি পড়েছি। নেতাজী সম্পর্কে আমার জানার আগ্রহ সব সময়। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। লেখাটি প্রিয়তে নিয়ে গেলাম।

১১ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:৪০

শেরজা তপন বলেছেন: জেনে দারুন আপ্লুত হলাম। সবিশেষ ধন্যবাদ।
পুরোটা পড়ে মন্তব্য করার অনুরোধ রইলো। কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব মতামত বা প্রশ্ন থাকলে নির্দিষ্ট জানাবেন।
শুভকামনা রইল।

৩| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: খুবই ইন্টারেস্টিং বিষয়। আগের পর্বের চাইতে এ পর্বটাই আমার কাছে বেশি রহস্যময় ও ইন্টারেস্টিং মনে হলো।

আমার স্থির সিদ্ধান্ত, গুমনামী বাবা নেতাজি ছিলেন না।

আগের পর্বে এক জায়গায় ছিল, নেতাজি রাশিয়ায় যাওয়ার জন্য প্ল্যান করছেন। এটা বাস্তবায়ন করার জন্যই নেতাজির পরিকল্পনায় বিমান দুর্ঘটনার কাহিনি প্রচার করা হয়।

আমার ধারণা, তিনি রাশিয়ায় যাওয়ার পর সেখানে বন্দি হোন। কারাগারে তার মৃত্যু হয়।

বিভিন্ন জায়গায় তার ছবি কিংবা তার চেহারার মতো ছবি দেখার ঘটনাগুলো হলো অনুমান। তিনি জীবিত থাকলে স্যুট-টাই পরে অন্যান্য দেশে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াবেন কেন? প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে পারলে তো নিজের দেশেই চলে আসতেন।

গান্ধীজির সাথে বোধহয় তার চরম বিরোধ ছিল, উইকি'র একটা লাইন পড়ে আমার তা মনে হয়। সেই বিরোধের জের ধরেই নিজের দেশে না এসে রাশিয়ায় যাওয়ার কথা ভেবে থাকতে পারেন।

নেতাজির মেয়ে ব্লগার অনিতা আপুর বক্তব্য ভালো লেগেছে। গুমনামী বাবা তার বাবা হতে যাবে কেন?

জানি না, নেতাজির মৃত্যু বা অন্তর্ধান নিয়ে এত জট পাকানোর কারণ কী, এত মতবাদ ও মতভেদেরই বা কারণ কী? সরকারের ইচ্ছায় যদি এটা হয়ে থাকে, তাতে সরকারের লাভ কী?

১১ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৮

শেরজা তপন বলেছেন: গতপর্বে করে সবাই ভেবেছিল আমি গুমনামী বাবাকে নেতাজী হিসেবে একেবারে পুরোপুরি মেনে নিয়েছি, তাই এর স্বপক্ষেই শুধু যুক্তি দিয়ে যাব :)
এ পর্বে আমি যথাসম্ভব নিরপেক্ষভাবে সবার মতামত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
অনেকেই বলেন যে, সোভিয়েত সরকার তাকে সাইবেরিয়া আটক করে রাখা হয় সেখানেই তার মৃত্যু হয়। যদি সেটাও সত্যি হয় তাহলে বিমান দুর্ঘটনাটা ছিল পুরোপুরি সাজানো। তবে গুমনামী বাবা নেতাজি হোক না হোক আসল কথা হচ্ছে নেতাজির মৃত্যু বিমান দুর্ঘটনার কারণে ঘটেনি।
অনিতা বসু একজন বীরের মেয়ের মতই কথা বলেছেন ঠিক তবুও অনেক যদি কিন্তু থেকে যায়।
আরেকটা কথা সামনের পর্বগুলোতে গুমনামী বাবার এমন কিছু তথ্য নিয়ে আসবো সামনে যাতে এক সময় আপনার মনে হতে বাধ্য ইনি নেতাজি হলেও হতে পারেন অসম্ভব নয়।
আপনার গঠনমূলক ও চমৎকার মন্তব্যের জন্য ফের অনেক অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো।

৪| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:৪২

ডার্ক ম্যান বলেছেন: নেতাজি প্লেন দুর্ঘটনায় মারা না গেলেও আমি নিশ্চিত তিনি কখনো আর ভারতে ফিরেন নি ।
তিনি হয়তো কোন দেশের গোয়েন্দা সংস্থার নিয়ন্ত্রণে ছিলেন । বিভিন্ন সময়ে তাঁর বেশভূষায় যাদের দেখা যায় , এসব লোক হয়তো উনার ভক্ত ।
গুমনামি বাবা ভারতীয় গোয়েন্দা "র" এর সাজানো নাটক ছাড়া আর কিছুই না।

১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:২২

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার কথার যুক্তি আছে একেবারে ফেলে দেবার মত নয়।
ব্লগারদের মতামত এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
অনেক তথ্যগত ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে আর আমার একার বুঝাই তো সব কিছু নয়।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। সাথে থাকবেন পরের পর্বে আশা করি ফের কথা হব।

৫| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৯

কামাল১৮ বলেছেন: যে লোকটি স্বাধীনতার জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছে, সে স্বাধীনতার পর স্বাধীন দেশে আসবে না।কোন যুক্তিতেই এটা মেনে নেয়া যায় না।যুদ্ধকরে দেশ স্বাধীন করতে হবে এটা সে একা চায়নি আরো অনেক দল চেয়েছে।স্বাধীনতার পর তারা দেশেই ছিলো।

১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:২৩

শেরজা তপন বলেছেন: আপনি একজন মুক্তিযোদ্ধা সে হিসেবে আপনার মতামত কে অবশ্যই গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ন করতে হবে।
মন্তব্যের জন্য সবিশেষ ধন্যবাদ সাথে থাকবেন।

৬| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৯

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া পোস্ট পড়ার পর একটা কথাই মনে হলো।

কত অজানারে.....

১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:২৬

শেরজা তপন বলেছেন: পোস্ট লেখার সময় আসলে আমারও তাই-ই মনে হয়েছে। :)
কত অজানা বিষয় জানা যে হল মাথা খারাপ হওয়ার দশা!
পরে পর্বে আপনার মূল্যবান মতামতের অপেক্ষায় থাকবো...

৭| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৪

করুণাধারা বলেছেন: পুরো পোস্ট পড়েছি। পড়ার পর আমার ধারনা, গুমনামী বাবা আর নেতাজী আলাদা মানুষ।

দেখি এ বিষয়ে কি ভাবছেন। পোষ্টের মন্তব্যের দিকে চোখ রাখছি।

১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:৪০

শেরজা তপন বলেছেন: আসলে বিষয়টা খুবই কনফিউজিং! এরপরে পড়বে গুমনামী বাবার খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে যাওয়া একজনের এমন একটা সাক্ষাৎকার উঠিয়ে আনবো তখন মনে হবে যে, গুমনামী বাবা নিশ্চিত হবে নেতাজি ছিলেন :)
আবার কোন প্রবলেম মনে হবে যে না এটা হতেই পারে না অসম্ভব!
ব্লগারদের মন্তব্য এখানে একটা বিশাল ব্যাপার- তাদের আলোচনায় অনেক নতুন বিষয় উঠে আসবে নতুন চিন্তার ঘোরার যোগাবে।
শুভকামনা রইল।

৮| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:২৫

মনিরা সুলতানা বলেছেন: গুমনামি বাবার দাঁতের ডিএনএ এবং বসু পরিবারের কিছু সদস্যের রক্তের ডিএনএ পরীক্ষা করা হলেও তেমন কোনো মিল পাওয়া যায়নি।
আমার কাছে এইটা শক্ত এভিডেন্স মনে হয়েছে। সাথে নেতাজীর কন্যার বক্তব্য। দেখা যাক পরের পর্বে কি নিয়ে উপস্থিত হন লেখক।

১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:৪৩

শেরজা তপন বলেছেন: ওই দাঁতটা আসলে উনার ঘরে পাওয়া গিয়েছিল ওনার মৃত্যুর পরে।
সত্যিকার অর্থে সেটা কি গুমনামী বাবার-ই দাঁত কি না সে সম্বন্ধে কেউ নিশ্চিত হতে পারেনি!! ডিএনএ টেস্ট নিয়েও অনেক ঘাপলা আছে।
আমার পোস্টগুলোতে আপনাকে নিয়মিত পেয়ে বেশ ভালোই লাগছে :)
লেখার অনুপ্রেরণা পাচ্ছি।

৯| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৬

শায়মা বলেছেন: এ বিষয়ে অন্যখান থেকে তথ্য পেয়েছি অলরেডি। আমার গিয়ানী ভাইয়া থেকে যে গুমনামীই ছিলেন নেতাজী আর তিনি মোস্ট ওয়ান্টেড ছিলেন। দেখিবামাত্র গুলি করে দেবার জন্য ব্রিটিশ সরকারের নির্দেশ ছিলো তাই আত্মগোপনে থাকতেন।

১২ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১২:২৯

শেরজা তপন বলেছেন: হায় হায় হাট করে খুলে দিলেন তো আমার গোপন ভান্ডারের দরওয়াজা!!!

এরপরেও বিষয়টা প্রমাণিত সত্য নয়। অনেক যোগ বিয়োগ আছে।

১০| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১২:০৯

জটিল ভাই বলেছেন:
প্রিয় ভাই,
আসলেই জানার কোনো শেষ নাই!
জানার প্রচেষ্টা বৃথা তাই! :(
তারপরও জটিলবাদ জানাই :)

১২ ই জুলাই, ২০২৪ সকাল ১১:৫৫

শেরজা তপন বলেছেন: অনেকে আবার জানতে জানতে জানোয়ার-ও হয়ে যায় :) যাউজ্ঞা বাদ দেন, আমরা কম জেনে শুনে মানুষের কাতারেই থাকি।
অত জটিলতার দরকার কি।

১১| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১২:২৬

কাছের-মানুষ বলেছেন: নেতাজিকে যখন থেকে জেনেছিলাম তখন থেকেই তার ব্যক্তিত্ব এবং আজাদ হিন্দ নিয়ে আগ্রহবোধ করেছি, এরকম স্বাধীনচেতা মানুষ সত্যিই বিরল। এক সময় তাকে নিয়ে, বিশেষ করে তার অন্তর্ধান নিয়ে, প্রচুর ঘাটাঘাটি করেছি, পড়েছি, এবং অনেক ভিডিও দেখে বোঝার চেষ্টা করেছি।

নেতাজি কি গুমনামী বাবা? এটি নিয়ে প্রচুর বিতর্ক আছে; এর পক্ষে এবং বিপক্ষেও অনেক মত। দুজন গবেষককে দেখেছি, যারা নেতাজির পরিবারকে সাথে নিয়ে, তার ব্যাপারে যেই ক্লাসিফাইড ডকুমেন্ট ছিল ইন্ডিয়ান গভমেন্টের কাছে, সেগুলো ডি-ক্লাসিফাইড করেছে এবং সেগুলো এখন পাবলিকের জন্য উন্মুক্ত! এই দুজন বইও লিখেছে যে গুমনামী বাবাই নেতাজি (আমি এদুজনের অনেকগুলো সাক্ষাৎকার দেখেছি অনেক আগে!)। তবে, নেতাজির পরিবার এটি মেনে নেয়নি; বরং এদের দুজনকে ধান্দাবাজ এবং লোভী বলে আখ্যায়িত করেছে (মূলত বই বিক্রি করার দিকে ইশারা করে লোভি বলেছেন!)। নেতাজির পরিবারের সাথে সৃজিত মুখার্জীরও একটি বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল, যখন মুখার্জী গুমনামী বাবা নামের সিনেমা বানিয়েছিলেন (সেসময় নেতাজীর পরিবার এবং সৃজিতের বিতর্কের ভিডিও দেখেছিলাম! )।

গুমনামী বাবার সাথে যারা সাক্ষাৎ করেছিলেন, এরকম মানুষের সাক্ষাৎকার দেখেছিলাম। অনেকেই তাকে নেতাজি বলে আখ্যায়িত করেছে। গুমনামী বাবাই নেতাজি, এটা বিশ্বাস করার অনেক প্রমাণ আছে; তার কাছে নেতাজির অনেক চিঠি, হাতে লেখা, ছবি, আজাদ ফৌজের অনেক তথ্য। তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো, এই গুমনামী বাবা হয়তো আজাদ ফৌজের সদস্য ছিলেন, নেতাজির ভক্ত হতে পারেন, নেতাজী হয়তবা তার জিনিপত্র তাকে দিয়েছিলেন, এটা অস্বাভাবিক কিছু না!

আমি যতদূর পড়াশোনা করে নেতাজির ব্যাপারে জেনেছি, তার মতো এরকম বিশাল ব্যক্তিত্বের এবং সাহসী মানুষ, যিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ করেছেন, যিনি জানতেন দেশ স্বাধীন না হলে তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে সবার আগে, যিনি শিক্ষিত এবং ভালো টাকা-পয়সার চাকরি ছেড়ে শুধু স্বাধীনতার জন্য জীবনে এত ত্যাগ স্বীকার করেছেন, সেই ব্যক্তি কখনও এরকম কাপুরুষের মতো পালিয়ে থাকতেন না!! গান্ধীজির সাথে তার আদর্শগত মতপার্থক্য ছিল; গান্ধীজি গৌতম বুদ্ধের ন্যায় শান্তির পথে ব্রিটিশদের সাথে দেনদরবার করে দেশ স্বাধীন করার পক্ষে ছিলেন, অন্যদিকে নেতাজির বিশ্বাস ছিল কঠিন পথ ছাড়া ব্রিটিশদের এখান থেকে তাড়ানো যাবে না।

যাইহোক, আমার মনে হয় নেতাজি কলকাতায় যতটা সম্মানিত, সেরকম সারা ভারতবর্ষে তিনি তেমন মূল্যায়ন পাননি! স্বাধীনতার জন্য তার অবদান কম নয়!

১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:০০

শেরজা তপন বলেছেন: এই লেখাতো আপনার লেখা দরকার ছিল- আপনি কিছু ক্ষেত্রে আমার থেকেও বেশী জানেন নিশ্চিত।
এক মন্তব্যেই মোটামুটি আমার পুরো আর্টিকেলের সারকথা তুলে এনেছেন।
তবে আপনার শেষ কথার সাথে আমি একমত নই। তাঁকে পুরো ভারতবর্ষেই বেশ ভালভাবেই মুল্যায়ন করা হয়েছে। তিনি আপামোর সাধারণ মানুষের মনের মধ্যে ঠাই করে নিয়েছেন।
আমার বাকি পর্বগুলো আশা করি পড়ে আপনার সুচিন্তিত মতামত জানাবেন। ভাল থাকবেন।

১২| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১:৫৬

শায়মা বলেছেন: আমি খুলিনি আমার অজ্ঞানতা দেখে ফেসবুকে আমার পণ্ডিত ভাইয়া বলে দিলো তো!! আজীবন আমার সাথে কিছু পণ্ডিত মন্ত্রী বাস করে।

১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:০২

শেরজা তপন বলেছেন: হাঃ হাঃ ভাল তো বাকি লেখা আর কষ্ট করে পড়তে হবে না :)
(*তারপরেও পড়তে হবে- আপনি না পড়লে আমার এত কষ্ট জলে যাবে যে!!)

১৩| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: দুইটা পর্বই পড়েছি। আমি চেহারার কোন মিল খুঁজে পাইনি। সত্যিই নেতাজী হলে ওনার মেয়ে অন্তত চিনতেন। এগুলি অতিরঞ্জিতও কাহিনী মনে হচ্ছে। নেতাজী লুকিয়ে থাকার মত লোক ছিলেন বলে মনে হয় না। নেতাজির কোন ভক্ত ছিলেন হয়তো। আর এস এসের নেতার সাথে ওনার যোগাযোগের কারণ কি ছিল এটাও বুঝলাম না।

১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:৫২

শেরজা তপন বলেছেন: এই সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়ার কাজ মূলত ফেস ম্যাপিং এক্সপার্টদের। ২০২২ সালে এডভান্স টেকনোলজির মাধ্যমেও নিশ্চিত হওয়া গেছে সেই চেহারার সাথে নেতাজীর চেহারার মিল ছিল। একজন মানুষ যতভাবেই নিজের চেহারা পরিবর্তিন করুক না কেন আমার আপনার চোখে হয়তো তাঁকে একেবারে অন্য কেউ মনে হবে কিন্তু এক্সপার্টরা ঠিকই ধরে ফেলবে।
গুমনামী বাবার মৃত্যুর সাথে সাথে অনেক রহস্যের অগ্নিহুতি হয়েছে। সে রহস্য আসলে কোনদিনও উন্মোচিত হবে না - শুধু ডালপালাই মেলবে।
শুধু আর এস নেতা নয় আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথেই তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল-যেটা একজন সাধুর সাথে থাকবার কথা নয়।
ধন্যবাদ সাথে থাকবার জন্য। পরের পর্বে দেখা হচ্ছে।

১৪| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪

আরইউ বলেছেন:



শেরজা,

মনে হচ্ছে আমি আপনি যতই প্রমান হাজির করি কোন পক্ষকে তাদের মাতমত থেকে সরানো যাবেনা -- যে যার ধারণা নিয়েই থাকবে। এমন একটি বিষয় রহস্য হয়ে থাকাই বুঝি শ্রেয়। নেতাজী-র মেয়ের কথা আমার ভালো লেগেছে, যৌক্তিক মনে হয়েছে। যতদিন ১০০ভাগ নিশ্চিত প্রমান না পাওয়া যাবে, নেতাজীর সবচেয়ে কাছের আপন মানুষ যা বলবে আমি ব্যক্তগতভাবে সেই মতটিকেই সমর্থন করবো।

পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম...

ভালো থাকুন!

১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:০০

শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক- এটা নিয়ে অনেক জল ঘোলা হয়েছে। যে যার অবস্থানে ঘাড় ত্যাড়া করে আছে। সরকার কমিশন গঠন করেছে কিন্তু কমিশনের রিপোর্ট তাদের ছকের বাইরে গেলে সেটা আবার প্রত্যাখ্যান করছে!!!
নেতাজীর পরিবার কোনদিনও মানতে চাইছে না তিনি প্লেন ক্রাশে মারা গেছেন কিন্তু তারাই আবার গুমনামী বাবাকে কোন মতেই নেতাজী হিসেবে মানতে চাইছেন না!
সৃজিতের তৈরি সিনেমা দেখলে মনে হবে এটা কোন সাধারণ ফিল্ম নয় এটা একটা ডকুমেন্টারি। সৃজিত ও তাঁর টিম ও কিছু সত্যান্বেষী সাংবাদিক প্রচুর গবেষণা করেছেন এই বিষয়ের উপরে। শুধু ফালতু একটা রিউমারের উপরে ফিল্ম করেননি। কিন্তু একশ্রেণির মানুষ এটাকে ধাপ্পাবাজী বা পয়সা কামানোর ধান্ধা বলে পরিত্যাগ করেছে।
নেতাজীর ভাইয়ের ছেলে যিনি সম্ভবত কংগ্রেসের একজন নেতা- তাঁকে বেশ জটিল ও কৌশলী মনে হয়েছে। তিনি নেতাজীকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়তে চেয়ে অনেক বিতর্কে জড়িয়েছেন এই ইস্যুতে।

যাই হোক অনেক ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্যের জন্য- দেখা হবে পরের পর্বে। ভাল থাকুন।

১৫| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:১৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: একটু প্রশংসা করার জন্য আবার এলাম। কাছের-মানুষ-এর কমেন্টটা খুব ভালো লেগেছে, আপনার পোস্টের সারমর্মই বলা যায় তার কমেন্টটি। সেই সাথে আরইউ'র এই কথাটাও খুবই বাস্তবসম্মত - আমি আপনি যতই প্রমান হাজির করি কোন পক্ষকে তাদের মাতমত থেকে সরানো যাবেনা -- যে যার ধারণা নিয়েই থাকবে। এমন একটি বিষয় রহস্য হয়ে থাকাই বুঝি শ্রেয়।

কিন্তু ব্রিটিশদের কাছে 'মোস্ট ওয়ান্টেড' হওয়ায় তিনি 'গুমনামী' হিসাবে আত্মগোপনে যাবেন, এটা একটু চটুল বা হালকা যুক্তি মনে হয়, যদিও আপনি পরের পর্বে তা খোলসা করবেন। তার মতো বীর ক্ষুদিরামসহ আরো অনেকের মতোই বুক ফুলিয়ে ফাঁসির মঞ্চে যাবেন, কখনো গুমনামী বাবা হবেন না। আর ভারত-পাকিস্তান স্বাধীন হয় ১৯৪৭-এ, (ব্রিটিশরা ছিল সে পর্যন্ত), তারপর তিনি আত্মগোপনে থাকবেন কেন? এ ছাড়া, তার যখন রাশিয়া, জাপান, সার্বিয়া, বার্মাসহ পৃথিবীর নানা দেশে যাওয়ার ক্ষমতা বা সুযোগ ছিল, তখন তিনি নিজ দেশে প্রাণ হাতে নিয়ে আত্মগোপনে থাকবেন কেন? এমনও কোনো তথ্য পেলাম না যে, আত্মগোপনে থেকে তিনি কোনো বিপ্লব পরিচালনা করেছেন। যাই হোক, রইলাম পরের পর্বের জন্য।

আর দয়া করিয়া যাহা রহস্য তাহা রহস্য হিসাবেই থাকিতে দিন। রহস্য উন্মোচিত হইয়া গেলে সমস্ত মজাটাই যায় পানসে হইয়া :)

১৩ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:৫৭

শেরজা তপন বলেছেন: একটা বিষয় সংশোধন করছি;
বিষয়টা শুধু ব্রিটিশের নয় বিষয়টা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যুদ্ধাপরাধীর! এর বিচার এখনো চলমান- মিত্র বাহিনীর বিপক্ষে যারা যুদ্ধে করেছে তাদের মধ্যে মোস্ট ওয়ান্টেড কাউকে এখনো জীবিত পাওয়া গেলে বিচার হবে।

ফের আসার জন্য ধন্যবাদ। এটা অবশেষে রহস্য হিসেবেই থাকবে :)

১৬| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:৫২

মেঘনা বলেছেন: ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে নেতাজি ছিলেন অখন্ড ভারতবর্ষের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং শক্তিশালী নেতা। অনেক ঐতিহাসিক তাকে এশিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেতা মনে করেন। বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের হাত থেকে ভারত বর্ষকে স্বাধীন করার জন্য তিনি প্রথমে রাশিয়া সাহায্য চেয়েছিলেন। কিন্তু রাশিয়া ও ব্রিটিশ উভয়ে মিত্রশক্তি জোটে থাকায় সেটা সম্ভব ছিল না। বাধ্য হয়ে নেতাজি কে অক্ষশক্তিতে যোগ দিতে হয়। জার্মান ও জাপান নেতাজির আজাদ হিন্দ বাহিনীকে সহযোগিতা করে। ফলে যুদ্ধের সময় বা যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে নেতাজি ছিলেন রাশিয়ার শত্রু ফলে তিনি রাশিয়াতে যাবেন এ ধারণা ভুল মনে হয়।

ভারতের স্বাধীনতা সময়কালীন অনেক রাজনীতিবিদদের ভাষ্যমতে নেতাজি দেশে ফিরে আসলে জওহরলাল নয় তিনিই হতেন দেশের প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট এবং ভারত ভাগ হতো না। অর্থাৎ ১৯৪৫ পরবর্তী সময়ে ব্রিটিশ, রাশিয়া নেহেরু,জিন্না সহ অনেকেই নেতাজি শত্রু ছিলেন। ফলে খুব সম্ভবত তিনি মিত্রশক্তির হাতে বন্দি হয়েছিলেন এবং ভারত পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্ব সেটা জানতে।


১৩ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:০১

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার অনুমাননির্ভর হলেও বাস্তবধর্মী ইতিহাসভিত্তিক চমৎকার মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
সেইসাথে এই পর্বেও সরব উপস্থিতির জন্য কৃতজ্ঞতা।

'ভারতের স্বাধীনতা সময়কালীন অনেক রাজনীতিবিদদের ভাষ্যমতে নেতাজি দেশে ফিরে আসলে জওহরলাল নয় তিনিই হতেন দেশের প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট এবং ভারত ভাগ হতো না। অর্থাৎ ১৯৪৫ পরবর্তী সময়ে ব্রিটিশ, রাশিয়া নেহেরু,জিন্না সহ অনেকেই নেতাজি শত্রু ছিলেন। ফলে খুব সম্ভবত তিনি মিত্রশক্তির হাতে বন্দি হয়েছিলেন এবং ভারত পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্ব সেটা জানতে।' ~ এই ধারনাটা অনেক ইতিহাসবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক করে থাকেন। এমনটা সম্ভব।

১৭| ১২ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:৫৪

রানার ব্লগ বলেছেন: সুভাস বাবুর সন্তান গুমনামী বাবা কে অস্বিকার করেছেন তার পিতা হিসেবে। খুব স্বাভাবিক, যে লোক কে অন্তর্ধনে রাখার জন্য বিমান দুর্ঘটনা, আস্ত সৈনিক গুম এর মতো ঘটনা ঘটেছে তো সেই ভদ্রলোকের সন্তানদের উপর কি পরিমানে চাপ থাকতে পারে বা এখনো আছে ভাবুন। আস্ত সুভাস বাবু এসে হাজির হলেও সন্তানেরা স্বিকার করবে না।

গুমনামী বাবা কে নিয়ে এতো জল যখন ঘোলাই হচ্ছে জল মে কুচ হ্যায়। ভারতের বা বিশ্বের গোয়েন্দা সংস্থাদের হাতে এতো বাড়তি সময় থাকে না যে একজন বহুরুপির রুপ নিয়ে তারা বিবশ থাকবে। নিশ্চিত গুম বাবার মধ্যে ভ্যাজাল আছে।

গুম বাবা যে সব প্রমান ট্রংক ভর্তি করে রেখে গেছে মনে হয় না উনি সাপ লুডু খেলার জন্য রেখেছেন। ভারতেই তিনি নিরপদ ছিলেন না। একজন বাবা টাইপ মানুষ এমন কি করতেন যার জন্য র এর মাথায় ঘা হয়ে গেলো?

১৩ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:০৫

শেরজা তপন বলেছেন: হতে পারত এরকম আবার না-ও হতে পারত। অনিতা বসুর চাচা ও চাচাত ভাইরা কিন্তু বিশ্বাস করতেন যে নেতাজী বেঁচে আছেন, ষাটের দশকে তারা একবার বলেছিলেন যে, নেতাজীর কাছ থেকে সিগ্ন্যাল পেয়েছেন -উনি অমুক দিন আসবেন।

যাহোক তেমন কিছু ঘটেনি- কিন্তু কিসের ভিত্তিতে তারা এমন একটা সিরিয়াস কথা বলেছিলেন সেটাও বিবেচ্য।

'গুম বাবা যে সব প্রমান ট্রংক ভর্তি করে রেখে গেছে মনে হয় না উনি সাপ লুডু খেলার জন্য রেখেছেন। ভারতেই তিনি নিরপদ ছিলেন না। একজন বাবা টাইপ মানুষ এমন কি করতেন যার জন্য র এর মাথায় ঘা হয়ে গেলো?' ~ মুল রহস্যটাই এখানে। কেন তাঁকে নিয়ে এত তোলপাড় হোল?

সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। পরের পর্বে আপনার মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকব।

১৮| ১৩ ই জুলাই, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮

জুন বলেছেন: শেরজা আমি একটা কথা বলি সেটা হলো আজ কিছুদিন ধরে যেভাবে অনেকে ব্লগ বন্ধ হলো বা হবে হচ্ছে করছে তাতে মৃত্যু মুহুর্তে সিরিয়াস বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা না করে গেছো দাদার মত কিছু রম্য হয়ে যাক। আমরা হাসিখুশি ভাবে মরতে চাই।
আপনি প্রমথ নাথ বিশীর "নিকৃষ্ট গল্প" নামে বইটি পড়েন নাই শেরজা? সেখানে একটা গল্প ছিল যে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে আগামী একটি নির্ধারিত দিনে। সবাই বাড়ি ঘর জমি জমা বেচে মিষ্টি কিনে খাচ্ছে আর বিলাচ্ছে। বেচেই যদি না থাকবো আর বাড়ি ঘর দিয়ে কি হবে :'( ময়রার দুটো পয়সা হচ্ছে দেখে কেউ খোচা দিলে ময়রা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলছে " বাবু আর কয়দিন "! তো আমাদেরও আর কয়দিন বলে আমিও একটা দীজ্ঞশোয়াষ ছাড়লাম /:) আর ভাবছি কিছু রম্য লিখবো নাকি :>

১৫ ই জুলাই, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫

শেরজা তপন বলেছেন: স্যরি আপু আমি প্রমথ নাথ বিশীর "নিকৃষ্ট গল্প" নামে বইটি পড়ি নাই- রেফারেন্স পেলাম, ইন্টারেন্টিং হবে। পড়ব।
তা আপনি রম্য লিখেন না কেন? আপনার রম্য তেমন উৎকৃষ্ট ও খাস্তা হবে সেটা নিশ্চিত!
ব্লগ এখন ' তুমি আমি রাজাকার নিয়ে উত্তাল'~ কি যে আছে সামনের দিনগুলোতে মাবুদ জানেন।

আচ্ছা, বাংলাদেশে কোন 'নারী রাজাকার' ছিল? প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে সবসময় অন্দরমহলের নারীরা এগিয়ে ছিল। ঘসেটি বেগমের মত চরিত্র-এর রমণী পৃথিবীতে যুগে যুগে এসেছে কিন্তু একজনও মিরজাফরের মত বেঈমান বা কুখ্যাত হয়নি কেন?
ধর্মীয় কারনে অনেকেই পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছে। আমাদের দেশে নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশী ধার্মিক ( আমি ব্লগে একজনও সিরিয়াস নারী নাস্তিকবাদি দেখিনি-আপনি কি দেখেছেন?) তাহলে কেন দায়টা শুধু পুরুষদের ঘাড়ে চাপল?

১৯| ১৪ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: নেতাজী আত্মগোপনে থাকলেও তিনি গুমনামী বাবা নন, এটা আমার বিশ্বাস। গুমনামী বাবার ইস্যুটি সে জীবিত থাকাকালে মিমাংসা কেন করা হয় নাই। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর থেকে প্রায় চল্লিশ বছর কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিলো, তখন তাদের চ্যালেঞ্জ করার মত অন্য কোন দ্বিতীয় পক্ষই ছিলো না। সেই সময়ে কল্পিত নেতাজীকে বাঁচিয়ে রাখতে হয়তো সরকারী সদিচ্ছা ছিলো, নইলে যে নেতাজীকে বিভিন্ন সময় দেখা গেল, দেশে এবং প্রবাসে, ভারতীয় সরকার এবং তার প্রসিদ্ধ গোয়েন্দা বাহিনী তখন তাকে নিয়ে তৎপর হলো না কেন? তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম, পরে বিষয়টি সামনে আসে, তারপরে কেন সেখানে গোয়েন্দা নজরদারি করা হলো না? গুমনামী বাবা দীর্ঘ সময় উত্তরপ্রদেশে বসবাস করেছেন, তখন কেন সরকারী গোয়েন্দা কর্তৃক তার পরিচয় উন্মোচিত হলো না। এই উপমহাদেশীয় রাজনীতি'তে কত রকমের জালিয়াতি এবং নোংরামি হয়, তা আমরা নিকট অতীত ইতিহাসে দৃষ্টিপাত করলেই দেখতে পাবো। তাই আমার ব্যক্তিগত অভিমত, পুরো ব্যাপারটার পেছনে রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত ছিলো, নেতাজীকে জীবিত হিসেবে তুলে ধরার পেছনে। নেতাজী'র মত ব্যক্তিগত এভাবে বেঁচে থাকার চাইতে মৃত্যু আলিঙ্গন করতে বেশি পছন্দ করতেন বলে মনে হয়।

আপনাকে ধন্যবাদ, এমন একটি বিষয় ব্লগে হাজির করার জন্য। জানা-অজানা অনেক তথ্য নতুন করে সামনে এলো। লেখাগুলো সময় নিয়ে একাধিকবার পড়ার পর মন্তব্য করতে হয়েছে। এতে করে এই ব্যাপারে কিছুটা হলেও জানা হলো।

ভালো থাকুন প্রিয় ব্লগার, শুভকামনা সতত।

১৫ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:০১

শেরজা তপন বলেছেন: আপনি খুব সিরিয়াস পাঠক আমি নিশ্চিত সেজন্যই এর পরের পর্বে নেতাজীর নাতনীর একটা সাক্ষাতকার একটু মন দিয়ে পুরোটা শুনে গঠনমূলক মন্তব্য করবেন।
তাঁর ভাষ্যমতে, ১৯৫৭ সালে নেহেরু স্বয়ং এসেছিলেন কলকাতায় 'নেতাজী ভবনে' নেতাজীর পরিবারের সবাইকে এক করে প্লেন ক্রাশে যে নেতাজীর মৃত্যু হয়েছে সেটা নিশ্চিত করে সবার সই সাবুদ নিতে। কিন্তু নেতাজীর পরিবারের কেউ সেদিন সই করেননি। নেহেরু পোড়া বেল্ট সহ একটা ঘড়ি দিয়েছিলেন নেতাজীর বাবাকে যে, এটা বিমান দুর্ঘটনার সময় নেতাজীর কব্জিতে ছিল। নেতাজীর বাবা খুব তাচ্ছিল্যভরে সেই ঘড়িটি ফিরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, আমার ছেলে কখনোই এই ধরণের ঘড়ি ব্যাবহার করে না।
সামনের পর্ব মানে শেষ পর্ব পড়ার অনুরোধ রইল- সাথে থাকবেন, আরো বহু রহস্য উন্মোচিত হবে।
পুরো ব্যাপারটা খুব গোলমেলে- কেউ কেউ বিশ্বাস করে কেউ কেউ একেবারেই তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয়। আপনি যে পক্ষেই থাকুন না কেন , সমস্যা নেই। আমরা সবাই সবার কাছ থেকে এমন গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্পর্শকাতর কিছু বিষয় নতুন করে জানছি যে, এইটেই বা কম কিসে। ভাল থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.