![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...
১৯৭১ সালে পাকিস্তানে বন্দী শেখ মুজিব।
আমরা রাও ফরমান আলীর বাকি আলোচনার আগে একটু ' পাকিস্তানের হাতে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হয়েছিলেন নাকি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন করেছিলেন তা নিয়ে ৯৩ বছর বয়সী কলামিস্ট লেখক ইতিহাসবিদ ও শিক্ষক বদরুদ্দীন উমরের একটা সাক্ষাতকারের কিছু অংশ শুনে আসি;
'পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চূড়ান্ত আক্রমণ শুরু হওয়ার পরও তার বাড়িতে থাকার কারণ কী হতে পারে?' এমন প্রশ্নের জবাবে বদরুদ্দিন বলেন, “শেখ মুজিব আত্মসমর্পণ করার জন্য বাড়িতেই ছিলেন। আওয়ামী লীগের লোকেরা এবং তাদের বুদ্ধিজীবীরা বলছেন, শেখ মুজিবকে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং তিনি আত্মসমর্পণ করেননি। কিন্তু আমি বলছি, সে নিজেই আত্মসমর্পণ করেছে।
“তারা (আওয়ামী লীগ) আমার উপর ক্ষুব্ধ কারণ আমি বারবার বিভিন্ন নিবন্ধে উল্লেখ করেছি যে শেখ মুজিব নিজেই আত্মসমর্পণ করেছিলেন,” তিনি আরও বলেন, “শেখ মুজিব সবাইকে পালানোর নির্দেশ দিচ্ছিলেন, এবং তিনি বাড়িতেই ছিলেন, তার মানে তিনি অপেক্ষা করছেন। পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে। সুতরাং, এটি একটি গ্রেপ্তার ছিল না, এটি ইচ্ছাকৃত আত্মসমর্পণ ছিল,” তিনি বলেছিলেন।
“তিনি যুদ্ধের কোনো খবর জানতে পারেননি বা মহান বীর হিসেবে যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কারো সঙ্গে দেখা করেননি। মুক্তিযুদ্ধ কীভাবে হয়েছিল তাও তিনি জানতেন না। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি লন্ডনে যান যেখানে তিনি জানতে পারেন যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে এবং দেশ স্বাধীন হয়েছে।
কিন্তু তার মেয়ে (শেখ হাসিনা) বলতে থাকেন যে তিনি (শেখ মুজিব) মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক ছিলেন, তিনি বলেন, “তারা (আওয়ামী লীগ) শেখ মুজিবের ভাবমূর্তিকে তাদের সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করেছে, এটাই। কিন্তু শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছিলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না।
“পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কিছু নেই। তারা ভারত সরকারের হাতে দেশ স্বাধীন করার দায়িত্ব ছেড়ে দেয়। এ কারণেই ভারতীয়রা বলে যে এটি একটি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ, যা এক অর্থে সত্য। ভারতের দেরাদুনে প্রশিক্ষিত 'মুজিব বাহিনী' যুদ্ধ করেনি,” যোগ করেন তিনি।
বদরউদ্দিন বলেন, “আওয়ামী লীগের কোনো নেতা সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি, বরং তারা কলকাতায় যেখানে স্বাচ্ছন্দ্য ছিল সেখানে অবস্থান করতে পেরেছিলেন। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ সামরিক বাহিনীর সদস্যরা এখানে যুদ্ধ করেছেন। সামরিক বাহিনী যে যুদ্ধ শুরু করেছিল আওয়ামী লীগ তা চায়নি।
দেশের অভ্যন্তরে সাধারণ মানুষের দ্বারা পরিচালিত যুদ্ধের কারণে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বাইরের আক্রমণের প্রভাব কম ছিল, তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে বড় অবদান দেশের জনগণের দ্বারা যুদ্ধ করা হয়েছিল। তাদের জীবন উৎসর্গ করা।" ~ বদরুদ্দীন উমর
****
এবার আসি রাও ফরমান আলীর বাকি আলোচনায়;
আগের পর্বঃ
শত্রুদের চোখে বাংলাদেশের অভ্যুদয়!
মস্কোর সাথে পাকিস্তানের সম্পর্ক উন্নয়েনের চেষ্টা ও ভারতের বাধাঃ
এটা ছিল পাকিস্তানের সেই 'ইতিহাসের স্থান' যা বৃহৎ শক্তিবর্গকে নতুন এই বিষয় ও ঘটনার প্রতি গুরুত্বসহকারে দৃষ্টি ফেরাতে বাধ্য করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন উভয়ই পাকিস্তানকে নিজেদের সান্নিধ্যে নিতে অথবা সম্ভব হলে তৎকালীন ভাষায় ও অর্থে নিজেদের কক্ষপথে নিতে চেয়েছিল। পাশ্চাত্যের উন্নত ও মুক্ত সমাজের নেতা থাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে কোনো জটিলতার বিষয় ছিল না। পাকিস্তান তার নিজের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য উদ্বিগ্ন ছিল এবং সে কারণে আমেরিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার ব্যাপারে তার কোনো বাধা বা অনীহার কারণ ছিল না। প্রকৃত সমস্যা ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন, যেঅর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য উদ্বিগ্ন ছিল এবং সে কারণে আমেরিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার ব্যাপারে তার কোনো বাধা বা অনীহার কারণ ছিল না। প্রকৃত সমস্যা ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন, যে কোনো এক বা অন্য দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার ক্ষেত্রে আদর্শকে প্রধান মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করত। সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান ও ভারত যখন জন্ম নিচ্ছিল, তখনো সে লৌহ যবনিকা ক্রিয়াশীল ছিল।
এই সব আদর্শগত অসুবিধা সত্ত্বেও বিদেশ সফরের আয়োজনকালে প্রধান মন্ত্রী লিয়াকত আলী খান মস্কোকে অগ্রাধিকার দিতে চেয়েচিলেন। মস্কো সফরের বিষয়টি এগিয়ে নিয়েছিলেন রাজা গজনফর আলী খান। কমনওয়েলথ প্রধান মন্ত্রীদের সম্মেলন থেকে প্রত্যাবর্তনকালে লিয়াকত আলী খান তেহরানে যাত্রা বিরতি করেন। তাঁর সম্মানে আয়োজিত ভোজসভায় রাজা গজনফর আলী খান সোভিয়েট চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সকেও আমন্ত্রণ জানান। এখানেই প্রধান মন্ত্রী তাঁর মস্কো সফরের আগ্রহ ব্যক্ত করে ইঙ্গিত দেন যে, একটি আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পেলে তিনি মস্কো যাবেন। এই আমন্ত্রণটি জুন মাসে পাওয়া যায়। তারিখ চূড়ান্ত করা হয় এবং সোভিয়েত সরকারের ব্যক্ত ইচ্ছানুসারে মিঃ শোয়েব কোরেশীকে মস্কোতে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করা হয়। কিন্তু কোথাও কোনো গোলমাল হয়ে যায় এবং তারিখগুলোকে রুশরা পাকাভাবে নিশ্চিত করেনি। ১৯৪৯ সালের অক্টোবরে করাচী ও মস্কোর মধ্যকার যোগাযোগ চ্যানেলকে আকস্মিকভাবে তেহরান থেকে নতুন দিল্লীতে স্থানান্তরিত করা হয়। এবার নতুন দিল্লীস্থ সোভিয়েট দূতাবাস থেকে আরো এক দফা মূলতবির খরব করাচীকে জানানো হয়। এর ফলে এমন সন্দেহের সৃষ্টি হয় যে, লিয়াকত আলী খানের মস্কো সফরের বিষয়টির মধ্যে আরো কোনো পক্ষ নাক গলিয়েছে। সেই অন্য পক্ষটি স্পষ্টত ছিল ভারত। এবারের মুলতবির পর লিয়াকত আলীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে অগ্রসর হতে হয়েছিল। বাগদাদ চুক্তির পরবর্তীকালে যা সেন্টো হয়, তার সদস্যপদ গ্রহণ ছিল এর পরিষ্কার পরিণতি।
সেই থেকে মস্কো পাকিস্তানের প্রতি বৈরীভাবাপন, এমন কি অধিকৃত কাশ্মীরকে সে ভারতের পক্ষ নাক গালয়েছে। এমন কি অধিকৃত কাশ্মীরকে সে ভারতের অংশ হিসেবেও বর্ণনা করেছে। মস্কোর এমন বিরূপভাবের পর লিয়াকত আলীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে অগ্রসর হতে হয়েছিল। বাগদাদ চুক্তির পরবর্তীকালে যা সেন্টো হয়, তার সদস্যপদ গ্রহণ ছিল এর পরিষ্কার পরিণতি।
আইয়ুব খানের চেষ্টায় যদিও এর পরে মস্কোর সাথে সম্প্ররকের বরফ গলতে শুরু করে কিন্তু ভারত মস্কোর সঙ্গে ব্যাপকভিত্তিক সম্পর্ক বজায় রাখতে থাকে যার ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তানকে পরাজিত করার লক্ষ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভারতকে সম্ভাব্য সকল সাহায্য করে। এর কারণ শুধু ভারত ও ইউ এস এস আর-এর পুরনো সম্পর্ক ছিল না, মূল কারণটি ছিল আমেরিকা ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক মধুর করার এবং দুই বৃহৎ শক্তির নতুন পর্যায়ে স্বাভাবিক সম্পর্কে আসার পথ খুলে দেয়ার ব্যাপারে ইয়াহিয়া খানের পালিত অসাধারণ ভূমিকা। এভাবেই ঘটনা প্রবাহ ঘটেছিল।
কেন ৭১-এর যুদ্ধের সময়ে সোভিয়েত ভারতকে সাহায্য করেছিল আর চীন ছিল নিশ্চুপ ও কিভাবে ইয়াহিয়ার চেষ্টায় আমেরিকার সাথে চীনের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটেছিল?
১৯৭০ সালের অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন এবং ২৫ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট নিক্সনের সঙ্গে এক ঘণ্টাস্থায়ী একান্ত বৈঠকে মিলিত হন। তিন সপ্তাহ পর ইয়াহিয়ার চীন সফরের কথা ছিল। নিক্সন ইয়াহিয়াকে চীনের নেতৃবৃন্দের কাছে তাঁর চীন সফরের ইচ্ছার কথা পৌঁছে দিতে বলেছিলেন। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ইয়াহিয়া ঢাকায় আসেন এবং একদিন অবস্থান করার পর সেখানে থেকে তিনি বেইজিং যান। বেইজিং এ তিনি চৌ এন-লাই- এর সঙ্গে নিক্সনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন। নিক্সন ও চৌ এন-লাই-এর মধ্যেএই গোপন কূটনীতির ফলাফল বিশ্ব শান্তির অগ্রগতি ঘটানোর ক্ষেত্রে একাট প্রধান অবদান রেখেছিল, কিন্তু পাকিস্তানকে তার ভূমিকার জন্য অব্যবহিত অশুভ ফল ভোগ করতে হয়েছিল। সংবাদটি শোনার পর ভারত ও সোভিয়েট ইউনিয়ন উভয়ই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে, বিশেষ করে সোভিয়েট ইউনিয়ন ক্ষিপ্ত হয় বেশি। অচিরেই মস্কো ও নতুন দিল্লীর মধ্যে সফর বিনিয়ম হতে থাকে। ১৯৭১ সালের আগস্টে ঘোষিত হয় তাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত 'সুদূরপ্রসারী শান্তি ও মৈত্রী চুক্তি'র কথা যাতে ভারতের ওপর আক্রমণের সময় সোভিয়ে্ত ইউনিয়নের জন্য হস্তক্ষেপের সুযোগ যোগানো হয়। এতে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে এমনভাবে সম্প্রসারণ করা হয় যে,
'একজনের ওপর আক্রমণকে। অন্য জনের ওপর আক্রমণ' হিসেবে বিবেচনা করার কথা সংযোজিত হয়। অক্টোবরের শেষদিকে যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রকৃত শত্রুতার শুরু হয় সোভিয়েট ইউনিয়ন তখন পাকিস্তানের অবস্থান নির্ধারণের জন্য স্যাটেলাইট ব্যবহার করার সুযোগসহ ভারতকে সকল প্রকার সামরিক সাহায্যের যোগান দিয়েছিল।
আমেরিকা কি আসলেই পাকিস্তানকে যুদ্ধকালীন সময়ে সাহায্য করেছিল?
আমেরিকা ছিল যথারীতি অনির্ভরযোগ্য। ১৯৬২ সালে সংঘটিত চীন-ভারত যুদ্ধকালে আমেরিকা ভারতকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করেছিল, যদিও প্রেসিডেন্ট আইউব খান এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছিলেন যে, সরবরাহকৃত সমরাস্ত্র পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে। আইউবের প্রতিবাদ সত্ত্বেও আমেরিকা ভারতকে অস্ত্র দিয়েছিল। ১৯৬৫ সালের মাঝামাঝি চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ব্যাপারে আমেরিকা তার অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং বিশ্ব ব্যাংকের কনসোর্টিয়াম বৈঠক স্থগিত করিয়ে দেয়। দু'মাস পর যখন ভারত পাকিস্তানকে আক্রমণ করে তখন আমেরিকা পাকিস্তানে সকল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, এমন কি খুচরো যন্ত্রাংশ বহনকারী জাহাজগুলোকে গভীর সমুদ্র থেকে দিক পরিবর্তন করে সে অন্য দেশে নিয়ে যায়। এ সব কিছুর পরও চীন ও আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার ক্ষেত্রে ইয়াহিয়া ১৯৭০ সালে অবদান রাখেন, কিন্তু তথাপি পাকিস্তানের কাছে অস্ত্র বিক্রি বা হস্তান্তরের ওপর মার্কিন কংগ্রেস নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, এমন কি ১৯৭১ সালেও অন্যান্য উৎসের কাছে সামরিক সরঞ্জামাদি চাইতে আমাদের বাধ্য করা হয়েছিল। কিন্তু মার্কিন সূত্র থেকে সরবরাহ না থাকায়, বিশেষ করে খুচরো যন্ত্রাংশের অভাব পূরণ করা সম্ভব হয়নি। পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর বেশির ভাগ অস্ত্রশস্ত্র ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরী। ফলে যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জামাদির অভাবে সেগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের বন্ধুত্বের সুযোগ কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে তার যোগাযোগ স্থাপনে পাকিস্তানকে সহযোগিতা করতে বলেছিল। ইয়াহিয়া সর্বান্তকরণে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করেছেন। তিনি শুধু বৈঠকই আয়োজন করে দেননি, হেনরি কিসিঞ্জারের পিকিং সফরের জন্য বিমান এবং অন্যান্য সকল সুবিধা যুগিয়েছেন। আমরা আশা করেছিলাম যে, বিনিময়ে অন্তত খুচরো যন্ত্রাংশের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হবে। কিন্তু নিক্সনের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেস অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।
আমাদের অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে যে, যুদ্ধের ব্যাপারে সাধারণত কংগ্রেস সিদ্ধান্ত প্রণেতা হয়ে থাকে, প্রেসিডেন্ট নন। হেনরি কিসিঞ্জারের সাফল্যের প্রতিদানে আমরা কিছুই পেলাম না। অন্য দিকে রাশিয়ার শত্রুতা বৃদ্ধি পেল। ভারতীয়রা পরিস্থিতির সুযোগকে কাজে লাগাল এবং সোভিয়েট ইউনিয়নের সঙ্গে শান্তি, মৈত্রী ও সহযোগিতার চুক্তি সম্পাদন করল। এই চুক্তির মাধ্যমে ভারতীয়রা সম্ভাব্য চীনা আক্রমণের কবল থেকে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিল। পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল এবং পূর্ণ স্বাধীনতাসহ ভারতীয়রা পূর্ব পাকিস্তানে তাদের বাহিনী পাঠিয়েছিল, এমন কি প্রকাশ্যে আক্রমণের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিছুই করেনি, কেবল পাকিস্তানের প্রতি তথাকথিত 'কাত হওয়া' ছাড়া। হেনরি কিসিঞ্জারের গ্রন্থ থেকে এ কথাটিপরিষ্কার হয়েছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বাঙালী জাতীয়তাবাদীদের অনুকূলে একটি রাজনৈতিক সমাধানের পক্ষে ছিল। আমরা যেভাবে আমাদের ধর্মে বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসও ঠিক একইভাবে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। কোনো একনায়কের অধীনে থাকলে যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিক ভারতের বিরুদ্ধে কোনোদিনই পাকিস্তানকে সাহায্য করবে না। একথা পাকিস্তানকে অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে। বাকি সবই স্বপ্নচারিতা। বহুল আলোচিত সপ্তম নৌবহর পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তানকে সাহয্য করতে আসছিল না, এটা অগ্রসর হচ্ছিল পশ্চিম পাকিস্তানকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে।
চীন তার বন্ধু রাষ্ট্র পাকিস্তানকে সাহায্য করলেও পরে কেন সরে গেল?
পাকিস্তান যখন সিয়্যাটো-র সদস্য ছিল তখনও চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের সময় চীন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে সাহায্য করেছিল। চীন তার ট্রুপসকে ভারতীয় সীমান্তে পাঠিয়েছে এবং ভারতীয়দের উদ্দেশ্যে এক ধরনের চরমপত্র জারি করেছে। পাকিস্তানও চীনের সমর্থনে ভূমিকা রেখেছে- প্রথমবার আইউবের শাসনকালে, যিনি ১৯৬১ সালে আমেরিকা সফরকালে প্রকাশে চীনের পক্ষে ওকালতি করেছিলেন। তারপর ইয়াহিয়া খান চীন ও আমেরিকার মধ্যে সেতু বন্ধন হিসেবে ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৯৭০-৭১ সালে দু'টি কারণে চীনের মনোভাব সতর্ক ছিল। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ এতে জড়িত ছিল এবং তাদের মতামত ও অনুভূতিকে চীনারা উপেক্ষা করতে পারেনি। পূর্ব পাকিস্তানে ইয়াহিয়া অভ্যন্তরীণ নীতির প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থনের ফলে ঐ প্রদেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ চীনের দিক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ত। ভারতের পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ব্যাপারে নিজেদের সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যের প্রেক্ষিতে চীনারা ঐ অঞ্চলের জনগণের সঙ্গে অবন্ধুসুলভ সম্পর্ক ও মনোভাব সৃষ্টি করতে চায়নি। দ্বিতীয় কারণটি ছিল চীন ও ভারতের প্রতি রাশিয়ার মনোভাব। ভারতের সঙ্গে মৈত্রীর সামরিক চুক্তি সম্পাদনের পর চীন সীমান্তে চল্লিশ ডিভিশন সৈন্যের বিশাল সমাবেশ ঘটানোর মাধ্যমে রুশরা চীনের নিরপেক্ষতাকে নিশ্চিত করেছিল। চীন যদি ভারতের বিরুদ্ধে ট্রপস পাঠাতো তাহলে রুশরা চীনকে আক্রমণ করত। অমন একটি নিশ্চিত নিশ্চয়তার পরই কেবল ভারতীয়রা ভারতীয়রা পূর্ব পাকিস্তানকে আক্রমণ করতে পেরেছিল।
জনাব ভুট্টো ও অন্যরা, অবশ্য অস্পষ্ট ও পরোক্ষভাবে, বলে আসছিলেন যে, চীনারা সাহায্য করবে। যদিও তার প্রতিনিধিদলের সফরকালে চীনারা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছিল যে, রুশ হুমকির সুস্পষ্ট কারণে তাদের পক্ষে আমাদেরকে সাহায্য করা সম্ভব নয়।
পাকিস্তানের উচ্চপর্যায়ের কিছু সামরিক কর্মকর্তা ভুট্টোর সঙ্গে চীন গিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁদের সকলেই এ ধারণাটি দিয়েছেন যে, চীনা প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জাতিকে সত্য কথাটি বলা হয়নি। চীনারা ইতিমধ্যেই ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে সাহায্য করার অপারগতার কথা জানিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু জনাব ভুট্টো এই ধারণাই দিয়েছিলেন যে, অমন একটি সাহায্য পাওয়া যাবে। ইয়াহিয়াকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে ৪ নভেম্বর তিনি (ভুট্টো) বলেছিলেন যে, ভারত যদি আক্রমণ চালায় তাহলে গঙ্গার পানির রং পাল্টে যাবে। সামগ্রিক রাজনৈতিক, মনস্তাত্ত্বিক ও সামরিক পরিস্থিতি কিন্তু অমন একটি আশাবাদী বিশ্লেষণের কোনো কারণ উপস্থিত করেনি। এর একমাত্র কারণটি হতে পারে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের শুরুকে নিশ্চিত করা। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর জি এইচ কিউ সম্ভাব্য চীনা হস্তক্ষেপের মিথ্যা তথ্য দিয়ে ঢাকাকে আশ্বস্ত রাখতে চেয়েছে। গভর্নর তাঁর টেলেক্স বার্তায় বলেছিলেন, "যদি কোনো বন্ধুর সাহায্যের আশা থেকে থাকে তাহলে তার অ্যাকশন আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। অন্যথায় শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে আলাপ- আলোচনা শুরু করা উচিত...।" এর জবাবে হাই কম্যান্ড গভর্নরকে আশ্বাস দিয়েছিল যে, 'চীনাদের তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে।
১৪ ডিসেম্বর জেনারেল হেডকোয়ার্টার্স থেকে টেলিফোনে নিয়াজী এই মর্মে একটি বার্তা পেয়েছিলেন যে, উত্তর দিক থেকে হলদেরা (চীনারা) এবং দক্ষিণ দিক থেকে শাদারা (আমেরিকান) আসছে। এই বার্তায় অনুপ্রাণিত হয়েই নিয়াজী এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, এমন কি ট্যাংকও যদি তার শরীরের ওপর দিয়ে যায়, তাহলে তিনি সে ট্যাংকগুলোকেও থামিয়ে দেবেন। বিস্তারিত জানার জন্য এবং সমন্বয় আয়োজনের উদ্দেশ্যে আমি চীনের কনসাল জেনারেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলাম কনসাল জেনারেল এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। তিনি পিকিং থেকে কোনো বার্তাই পাননি, যদিও তাঁদের সঙ্গে তিনি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছিলেন। অন্যদিকে বারবার তিনি আমাকে বলে চলছিলেন, "জনগণকে আপনাদের পক্ষে আনুন, জনগণকে আপনাদের পক্ষে আনুন।" আমি তাঁকে বলতে পারিনি যে, সেটাই ছিল প্রধান সমস্যা এবং পুর্ব পাকিস্তানের সব জনগণই ছিল আমাদের বিরুদ্ধে।। ...চলবে
মুল লেখাঃ মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী খান ( 'How Pakistan Got Divided ' গ্রন্থ)
ভূমিকাঃ মুনতাসীর মামুন
(সার সংক্ষেপ ও অনুলিখনঃ শেরজা তপন)
অনুবাদকের কথাঃ
'একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অপমানজনক পরাজয় বরণ করার জন্যে পাকিস্তানী জনগণের কাঠগড়ায় তখনকার জেনারেলদের অপরাধী সাব্যস্ত করা হয়েছে। সেই অপরাধ ও অপরাধবোধ থেকে নিষ্কৃতি পেতে অনেক জেনারেলই আত্মজীবনীতে একাত্তরের যুদ্ধে নিজেদের দোষ ও ভুল-ত্রুটিগুলাে ঢাকতে এবং সাফাই গাইতে চেষ্টা করেছেন। রাও ফরমান আলীও তার ব্যতিক্রম নন। এসব লেখায় তাই মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অনেক ঘটনাই এসেছে এবং জেনারেলরা নিজেদের সুবিধামতাে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন এবং যে সব কারণে পাকিস্তান হেরেছিল, সেসব অনেক ভুল ও দোষ পরস্পরের ঘাড়ে চাপিয়েছেন। জেনারেল রাও ফরমান আলীর How Pakistan Got Divided বইটি রচনাশৈলী বিন্যাসের দিক থেকে অন্য জেনারেলদের চাইতে অনেক উন্নত। বইটি তিনি কেন লিখেছেন এ সম্পর্কে রাও ফরমান আলী খানের ভাষ্য, “অন্য অনেকে যা দেখেছেন বা দেখতে পেয়েছেন, আমি তার চেয়ে অনেক বেশী দেখেছি।” কী দেখেছেন রাও ফরমান আলী খান? বইটিতে তিনি যা বলতে চেয়েছেন তা কতখানি সত্য? রাও ফরমান আলীর ভাষ্য অনেক সময় অনেক ক্ষেত্রে বিশ্বাসভাজন মনে হবে।'
***
সংক্ষিপ্ত জীবনী
রাও ফরমান আলী খান ১৯২৩ সালে পূর্ব পাঞ্জাবের রোহতকে এক রাজপুত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন (সোনারগাঁও এর ঈশা খাঁ ছিলেন একজন মুসলিম রাজপুত। ধর্মীয় ভিন্নতা থাকলেও যখনই রাজপুতদের অভিন্ন গৌরবের প্রশ্নে হিন্দু ও মুসলিম উভয় রাজপুত গোষ্ঠী বহুবার একত্রিত হয়ে বহি:শত্রুর মোকাবেলা করেছে।) যা তখন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে ছিল।
১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর আর্টিলারি রেজিমেন্টে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত বিভাগের পর, তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন।
৪ জুলাই ১৯৭১ থেকে ৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ পর্যন্ত তিনি মেজর জেনারেল (রাজনৈতিক বিষয়ক) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরবর্তী তারিখ থেকে ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ পর্যন্ত তিনি পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন।
হামিদুর রহমান কমিশন যদিও গণহত্যার জন্য তাকে দায়ী করে পরে অব্যাহতি দিয়েছিল, এই বলে যে তার অবস্থানের প্রকৃতির কারণে তিনি সরাসরি কোনও সামরিক অভিযানে জড়িত ছিলেন না, যা মূলত প্রশাসনিক ছিল।
( যদিও আমাদের বুদ্ধিজীবী হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী হিসেবে তাকে দায়ী করা হয়। গভর্নর হাউসে ও তার কার্যালয়ে কিছু দস্তাবেজ ও নোটবুক এমনই সাক্ষ্য দেয়। )
৭১-এর যুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে তার সহকর্মী ও সিনিয়র কর্মকর্তাদের কাছে তিনি একজন বিতর্কিত ব্যক্তিতে পরিণত হন। যুদ্ধের পর তাকে সামরিক বাহিনী থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং তার সকল ব্যাজ ফিরিয়ে নেয়া হয়।
১৯৭৪ সালে তাকে ফৌজি ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক নিযুক্ত করা হয়,তিনি ফৌজি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা ও রাসায়নিক সার তৈরিতে অবদান রাখেন -১৯৭৮ সালে ফৌজি সার কোম্পানির প্রথম পরিচালক ছিলেন।১৯৮৫ সালে, তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়া-উল-হকের প্রশাসনে পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রী এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিযুক্ত হন, এই পদে তিনি ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত অধিষ্ঠিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি জিয়া-উল-হকের আকস্মিক মৃত্যুর পর, ফরমান আলী আত্মগোপনে চলে যান এবং পেনশনের টাকায় রাওয়ালপিন্ডিতে খুব শান্ত জীবনযাপন করেন বলে জানা গেছে।
২০০৪ সালের ২০ জানুয়ারী, ফরমান আলী মারা যান এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডিতে ওয়েস্ট্রিজ কবরস্থানে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় তাকে সমাহিত করা হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তার অবদানের জন্য;
Burma Star
War Medal 1939-1945
Queen Elizabeth II Coronation Medal পদকপ্রাপ্ত হন।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫
শেরজা তপন বলেছেন: সীমাহীন ব্যস্ততা আর মানসিক ও শারিরিক পীড়নের কারনে মন্তব্যের উত্তর সময় মতো দিতে পারিনি বলে আন্তরিক ক্ষমাপ্রার্থী।
২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:১৩
ঢাবিয়ান বলেছেন: হাসিনার মতোই ২৫ মার্চ নেতা কর্মীদের ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন শেখ মুজিব: শারমিন আহমদ
আওয়ামিলীগ ডে- ওয়ান থেকেই মিথ্যাচার করে আসছে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে।
রাও ফরমান আলীর বক্তব্যে একটা জিনিষ পরিষ্কার যে , তারা কখনই আমাদের নিজেদের দেশের মানুষ বলে মনে করেনি। ৯ মাসব্যপী নিজ দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অনৈতিক যুদ্ধে জড়ানোর কোন সাফাই পর্যন্ত দেয়নি । দায়মুক্তির চেষ্টাই করেনি। এই চরম নিষ্ঠুর লোকের শেষ বয়সে স্বাভাবিক শান্তিপুর্ন জীবনের কথা জেনে ভাল লাগল না। এর প্রাপ্য ছিল করুন পরিনতি।
৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:২০
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: তাজউদ্দীন সাহেবের মেয়ের বইয়ে আছে যে ২৫ মার্চ ১৯৭১ তারিখ রাতে বেগম মুজিব বঙ্গবন্ধুর জন্য সুটকেস গুছাচ্ছিলেন। শেখ সাহেব তাজউদ্দীন সাহেবকে বলেছিলেন যে বাসায় গিয়ে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাও, ২৭ তারিখ হরতাল ডেকেছি। কিন্তু কোন নির্দেশনা উনি আওয়ামীলীগ নেতাদের দেননি। যদিও আগের নির্দেশনা ছিল যে শেখ সাহেব সহ সবাই ভারতে চলে যাবে। সেটা উনি নিজেই মানেননি এবং কোন নতুন নির্দেশনাও দেননি। এই কারণে ভারতে গিয়ে ছাত্রনেতাদের সাথে তাজউদ্দীন সাহেবের তর্ক হয়। ছাত্র নেতারা বলে যে বঙ্গবন্ধু তাজউদ্দীনকে সরকার গঠন করতে বলেননি। তাই প্রথমে তারা তাজউদ্দিনের সরকার গঠনকে সমর্থন দিতে চায়নি। আর্মির লোকেরা মার্চ মাসে কয়েকবার তার কাছ থেকে নির্দেশনা চেয়েছিল এবং বলেছিল যে এখন বিদ্রোহ করলে সহজে পাকিদের পরাজিত করা যাবে। কিন্ত উনি বলেছিলেন যে 'আমি আরেকটা ইয়াহিয়া চাই না'। কর্নেল অলির কাছ থেকে এই কথা শোনা যায়। তিনি জানতেন তাকে গ্রেফতার করা হবে কিন্তু সময় থাকা সত্ত্বেও কোন দিক নির্দেশনা তিনি দলকে দেননি।
১৯৭১ সালে সেক্টর কমান্ডার এবং অনেক অফিসারই ভারতের ভবিষ্যৎ দুরভিসন্ধি আঁচ করতে পেড়েছিলেন। মেজর ডালিম বলেছেন যে তারা তৎকালীন মেজর জিয়াকে কোরআন ছুঁইয়েয়ে শপথ করিয়েছিলেন তাদের সাথে থাকার ব্যাপারে। তারা ভারতের দুরভিসন্ধি বুঝতে পেরে গোপনে দলবদ্ধ হচ্ছিলেন এবং মেজর জিয়া ছিল তাদের নেতা। কিছুদিন আগে মেজর ডালিমের সাক্ষাৎকারে উনি এই দাবি করেছেন।
আওয়ামীলীগের কোন নেতা যুদ্ধ করেছে কি না এটা নিয়ে অনেক সন্দেহ আছে। মুজিব বাহিনী যুদ্ধ করতো মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যারা ছিল বামপন্থি। এই ধরণের কয়েকটা সংঘর্ষের কথা জানা যায়।
চিন এবং অ্যামেরিকার মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরির প্রয়াস সম্পর্কে জানা ছিল না। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান শেষ মুহূর্তে অনেক আশায় ছিল যে চিন তাদের সামরিক সাহায্য দিবে। কিন্তু চীন কঠিন মৌনতা অবলম্বন করে। ইয়াহিয়া খান চীন এবং অ্যামেরিকার মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরিতে সাহায্য করলেও পাকিস্তানের জন্য এই কূটনীতি কোন কাজে লাগেনি ১৯৭১ সালে। পাকিস্তানের এই কূটনীতিতে চীন এবং অ্যামেরিকা উভয়েই লাভবান হয়েছে কিন্তু পরবর্তীতে পাকিস্তানকে পূর্ব পাকিস্তান হারাতে হয়। সবই সম্ভবত পাকিস্তানের মোটা বুদ্ধির কারণে ঘটেছিল। আমার ধারণা ভুট্টো সাহেব সেনাবাহিনীকে চিনের ব্যাপারে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিল। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের মূল একজন হোতা হল এই ভুট্টো। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে তার দহরম মহরম সম্পর্ক ছিল। সম্ভবত জেনারেলদের সে-ই আক্রমনে উস্কানি দিয়েছিল। বেশী চালাকি করতে গিয়ে পরবর্তীতে জেনারেলদের কারণেই ফাসিতে ঝুলেছিলেন।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:১৭
শেরজা তপন বলেছেন: চমৎকার মন্তব্য- আগেই পড়েছিলাম। কিন্তু কোনকিছু লিখতে আর উত্তর দিতে ভাল লাগছে না- কিছু মনে করবেন না, আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৫
জাদিদ বলেছেন: তপন ভাই, আপনার পোস্টের একটা দেখে হাসি পেলো। উক্ত কমেন্টটি হাস্যকর এবং গৎবাঁধা মনোভাবের। আমার মনে হয়, এই ধরনের পোস্টের কারনে জামাত শিবির হিসাবে ট্যাগ খাবার কোন যৌক্তিক কারন থাকতে পারে না। এইগুলো হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় কমেন্ট করে গুরুত্ব পাবার স্বস্তা চেষ্টা যার মাধ্যমে অনেকে কিছুটা গুরুত্ব অর্জন করার চেষ্টা করে। ট্যাগ তখনই খারাপ যখন উক্ত ট্যাগের মধ্যে নেতিবাচক কিছু থাকে। জামাত শিবির তো একটি রাজনৈতিক দল – ফলে কেউ যদি এই রাজনৈতিক দল সমর্থন করে সেখানে ট্যাগ দেয়ার কিছু নেই। সমস্যা হচ্ছে কেউ কোন আদর্শ সমর্থন করেও সেটা স্বীকার না করে ধানাই পানাই বক্তব্য দেয়া। মজার ব্যাপার হচ্ছে জামাত শিবির যে কারনে গালি খায় বা জামাত শিবির সমর্থন করা যে কারনে বিতর্কিত সেই কারন নিয়ে এহেন মানুষদের কাছ থেকে কখনও কোন যৌক্তিক আলোচনা দেখার সুযোগ নেই। দুই একজন চেষ্টা চালালেও, এই ক্ষেত্রে সেই আশা পুরাই নিস্ফল।
যাইহোক, ইন্টারেস্টিং একটা টপিক নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন। বিষয়টি ইতিহাসের আলোকে কিছুটা বিতর্কিত হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশে নির্মোহ গবেষক বা ইতিহাসবিদ বা দলীয় প্রভাবমুক্ত ইতিহাস বিদ খুজে পাওয়া মুসকিল। ধরুন আমি নিজেও যদি কখনও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে গবেষনা করি সম্ভবত কিছু কিছু বিষয়ে নির্মোহ থাকতে পারবো না। তাই শুধুমাত্র একক রেফারেন্স অনেক সময় বিপদজনকও হয়ে উঠতে পারে।
এর সাথে যুক্ত হয়েছে জাতীয় ও দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর একক ক্রেডিট নেয়ার প্রবল অপরাধমুলক বাসনা ফলে ফলে মুক্তিযুদ্ধের মত একটি বিষয়ে তারা ছাড় দিবে এটা ভাবা যায় না। ১৯৭১ সালে দল হিসাবে শুধু আওয়ামী লীগ থাকায় তাদের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বা চেতনা ব্যবসায়ীতে পরিনত হওয়াটা অনেক সহজ হয়েছে। ব্যবসায়ী হবার পর তারা ইতিহাসে এমন অনেক অপ্রয়োজনীয় মিথ্যে আলাপ যুক্ত করেছে যার কোন প্রয়োজন ছিলো না।
আমি যেদিন দেখেছি শেখ মুজিবর রহমানকে লেজারের মাধ্যমে মিথ্যে ও হাস্যকর প্রতিকৃতি সৃষ্টি করে বিমান থেকে নামিয়ে সবাই কি দিয়ে একটা কমেডি শো করাচ্ছে সেদিনই আমি বুঝেছি এই আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনার হাতে এই দেশ নিরাপদ নয়। কারন যে কন্যা তার নিজ পিতার সম্মানকে এইভাবে ভুলন্ঠিত করতে পারে, সেই কন্য আর যাই হোক এই দেশকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারে না। ফলে আওয়ামী বয়ানে বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবকে যাচাই করতে গেলে সেটা মুলত তাঁকেই অপমান করা হয় এবং সেটার সুযোগও নেই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধুকে তার নিজের দল ও কন্যা যেভাবে অপদস্ত করেছেন, অসম্মান করেছেন ভবিষ্যতে, সেটা আর অন্য কেউ করতে পারে নাই আর পারবেও না। স্বাধীণতা বিরোধীদের অপমান অনেকটা কচু গাছের পাতায় পানির মত – দেশের বড় একটা অংশের কাছে তার কোন দাম নাই।
এবার পোস্টের কিছু প্রাসঙ্গিক আলাপে আসি। আব্বার কাছে শুনেছিলাম, ৭ ই মার্চের ভাষনের পর পুরো জাতি কিছুটা অস্থির সময় পার করছিলো। কারন সেখানে স্বাধীনতা ঘোষনার ব্যাপারে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা যেমন ছিলো না তেমনি স্বাধীনতা ঘোষনার ব্যাপারে কোন আলোচনাও হয় নাই বা কোন ইন্ডিকেশন হয় নাই তেমনটাও বলা যাবে না। কারন বঙ্গবন্ধু সেই ভাষনে বলেছিলেন – তোমাদের যা কিছু আছে তা-ই দিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সব কিছু–আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে।
যেহেতু এখানে হুকুম দেবার নাও পারি কথাটা ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ আছে সেহেতু এটা অবশ্যই ভাবার অবকাশ রাখে যে এটা কেন বলা হয়েছিলো। ফলে এটা প্রমানিত হয় যে ৭ই মার্চের ভাষনে অনেক কিছু স্পষ্ট হবার কথা থাকলেও তা স্পষ্ট হয় নাই।
আপনি যার সাক্ষাতকারের একটা অংশ প্রকাশ করেছেন তিনি অর্থাৎ বদরুদ্দিন উমর ১৯৯৫ সালের জুলাই মাসের ৭ তারিখে প্রকাশিত দৈনিক ভোরের কাগজে একটি সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, ‘শেখ মুজিবের আত্মসমর্পণের আসল কারণ ছিল সংসদীয় রাজনীতিতে অভ্যস্ত এবং কোনো ধরনের সশস্ত্র সংগ্রামের চিন্তা করতে অনভ্যস্ত (যদিও তার শিষ্য সাগরেদ ও মতলববাজরা তার সমস্ত সংগ্রামের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি সম্পর্কে গাঁজাখুরি গল্প এখন তৈরি করছে) থাকায় হঠাৎ করে যুদ্ধে যাওয়া তাঁর পক্ষে অসম্ভব ছিল।’
এই সম্পর্কে আরো বলা হয় ভুট্টো এবং ইয়াহিয়া তাকে প্রায় কনভিন্স করেছিলো যে, ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে তারা একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্তে পৌছাবেন।
আমার আব্বার কাছে শুনেছি (তখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন) শেখ মুজিব রহমান ভোটে নির্বাচিত পাকিস্তানের জনপ্রতিনিধি। তিনি তখনও মনে করতেন না যে পাকিস্তান ভেঙ্গে যাবে, তিনি ভেবেছিলেন, পুর্ব পাকিস্থানীদের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানীদের যে বৈষম্য তা হয়ত তিনি ক্ষমতায় গেলে কমিয়ে আনতে পারবেন এবং দেশের উন্নয়নের জন্য কিছু পদক্ষেপ নিবেন। সম্ভবত এই কারনে তিনি চেয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রীয় কাঠামো বজায় রেখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে। ২৫ মার্চ এই দেশে পাকিস্তানীরা এইভাবে আক্রমন করবে সেই বিষয়ে সম্ভবত তিনি ধারনা করেন নি বা মনে করেন নাই মিলিটারী এ্যাকশন হলেও তা এটটা ভয়াবহ হবে, কেননা সেই মিলিটারীতে বাঙালি অফিসার ও সৈনিকরাও ছিলো। ফলে বদরুদ্দিন উমরের বক্তব্যটির গ্রহনযোগ্যতা পাওয়া যায়।
তবে মুক্তিযুদ্ধের শেখ মুজিবের কোন অবদান ছিলো না – এটা ঠিক গ্রহনযোগ্য নয়। এটা তার নিজস্ব চিন্তাভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি। যদি আপনি সরাসরি যুদ্ধের কথা বলেন – তাহলে সেটা তিনি করেন নি কিন্তু সাধারন মানুষ তার কথা ভেবেই অনুপ্রাণিত হয়ে যুদ্ধে গেছে। তার এই বক্তব্য মিথ্যে হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্লোগান ও কর্মকান্ডের মাধ্যমে। এর সবচেয়ে বড় প্রমান হচ্ছে যেড ফোর্সের অধিনায়ক হিসাবে মেজর জিয়াউর রহমান যখন স্বাধীনতা ঘোষনা দেন তখন তিনি তার ভাষনে শেখ মুজিবের নাম ব্যবহার করেছিলেন। আসলে ইতিহাসে কাউকে ছোট করে বা বড় করে কোন ফায়দা হয় না ইতিহাস তার সত্য একটা সময় না সময় খুজে নেয়ই এবং ইতিহাস অবশ্যই অন্যায়ের প্রতিশোধ নেয়। এটা সম্ভবত প্রকৃতির নিয়ম
আমাদের আরেকজন স্বীকৃত বুদ্ধিজীবি ফরহাদ মাজহার অবশ্য শেখ মুজিবের এই ধরা দেয়াকে ইতিবাচকভাবে দেখেছেন। তিনি মনে করেন বাংলাদেশের স্বাধীন হবার পেছনে যে প্রেসার পাকিস্তানের উপরে ছিলো, সেটা ছিলো পাকবাহিনীর হাতে শেখ মুজিবের আত্মসম্পর্ন করা। আরেকজন সাংবাদিক সম্ভবত বিবিসিতে কর্মরত ছিলেন একসময় –জনাব সিরাজুল ইসলাম তিনি ২০০০ সালের ৪ঠা নভেম্বরে যায় যায় দিন পত্রিকায় এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন – পাকিস্তানীরা শেখ কে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে নিয়ে যায়, তাকে গ্রেফতার করে ক্যান্টেন্টমেন্ট রাখা নিরাপদ মনে করে নাই। যতো দূর প্রমাণ পাওয়া যায় ২৫ মার্চ রাতেই পাকিস্তানিরা তাকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে গিয়েছিল। যদিও মুজিব সে রাতেও আশা করেছিলেন যে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সঙ্গে একটি সমঝোতা হবে, তিনি সারা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হবেন। তিনি বিশ্বাস করতে চান নি যে পাক মিলিটারি বাঙালি নিধনের কার্যক্রম পাক মিলিটারী শুরু করবে।
অনেকে সাংবাদিক সিরাজুল ইসলামের এই তথ্যের সাথে ১৯৭২ সালে ডেভিড ফ্রস্ট নামক একজন ব্রিটিশ সাংবাদিককে দেয়া শেখ মুজিবের একটি সাক্ষাতকারের সংযোগ ঘটনা। শেখ মুজিব বলেন যে প্রবল চাপ থাকা স্বত্তেও তিনি ৭ মার্চ রেসকোর্সে স্বাধীন বাংলাদেশের ঘোষনা দেন নি। কারন এটা হলে বাংলাদেশ আক্রমন করার জন্য পাকিস্তান যৌক্তিক কারন পেয়ে যেত। তিনি চেয়েছিলেন পাকিরা আগে আক্রমন করুক। একই কারনে তাজউদ্দীন সাহেব ২৫ মার্চ রাতে স্বাধীনতা ঘোষণাপত্র দিলেও তিনি তা টেপ রেকর্ডারে রেকর্ড করেন নি।
আমি জানি না কে কিভাবে এই ব্যাপারগুলোকে কিভাবে দেখবে। এটা যার যার অবস্থান আর দেখার চোখের স্বাধীনতা। তবে আমার মনে এই নিষ্ক্রিয়তা এক ধরনের কাজ দিয়েছে। বাংলাদেশ যদি ঐ মুহুর্তে স্বাধীনতার ডাক দিতো, তাহলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাহায্য পাওয়া বা জনমত তৈরী করা একটু কঠিন হতো। বিশ্ববাসী যখন দেখল এক নিরিহ, অস্ত্রহীন দরিদ্র আর অসহায় জনগোষ্ঠীর উপর জেনোসাইড চালানো হচ্ছে তখোন বিশ্ব বিবেক নড়েচড়ে বসেছেন । পাকিস্তানের আভ্যন্তরীন বিষয় বলে এড়িয়ে যেতে পারেননি কেউই, শুধুমাত্র চিহ্নিত কয়েকটি দেশ বাদে । জর্জ হ্যারিসন কি গানটাই গেয়েছিলেন বাংলাদেশের পক্ষ হয়ে।
আসলে স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কারো একক কৃতীত্ব নয়। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা হচ্ছে এই মহান মুক্তিযুদ্ধ। বদরুদ্দিন সাহেব বলেছিলেন –মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবের কোন অবদান ছিলো না মজার ব্যাপার হচ্ছে সত্যিকার দ্বিতীয় স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলো এই মুজিবই। আপনি যদি বাংলাদেশের স্বাধীণতার যুদ্ধে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করা জেনারেল জ্যাকবের লেখা ‘সারেন্ডার অ্যাট ঢাকা- বার্থ অব এ নেশন’ বইয়ের ‘আফটারম্যাথ অব ওয়ার’ অধ্যায়ে পড়েন তাহলে দেখবেন যে বাংলাদেশকে প্রশাসনিকভাবে সাহায্য করার জন্য বা নামে ভারত একটা সেল গঠন করেছিলো ফোর্ট উইলিয়ামে, সেখানে সব ঝানু আইএএস অফিসার সহ সিলিভ প্রশাসনের অনেক লোক যুক্ত ছিলো।
১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত সফরে গিয়ে ইন্দিরা গান্ধীকে অপ্রস্তুত করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বললেন - আমার দেশ থেকে আপনার সেনাবাহিনী ফিরিয়ে আনতে হবে। কবে আনবেন বলুন? শেখ মুজিব এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এত সহজভাবে তুলতে পারেন, ভাবতেও পারেননি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। তার এই অপ্রস্তুত অবস্থার সুযোগ নিয়ে শেখ মুজিব নিজের কথার পুনরাবৃত্তি করে বললেন, ‘এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর আদেশই যথেষ্ট।’ অস্বস্তিকর অবস্থা কাটাতে ইন্দিরা গান্ধীকে রাজি হতে হয় এবং (তিনি) জেনারেল মানেকশকে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের দিনক্ষণ নির্ধারণের নির্দেশ দেন। (সুত্র ১০.১.২০২৩ দৈনিক বাংলা) দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয় বাংলাদেশ। নইলে এতদিন আমাদেরকে হয়ত ভারতের আরেকটি অঙ্গরাজ্য হিসাবেই থাকতে হতো।
আপনি রাওফরমান আলির বই বা বিট্রায়াল অব ইস্ট পাকিস্তান সহ পাকিস্তানি আরো অনেক লেখকদের বই পড়লে দেখবেন তারা এই দেশের মানুষ হত্যাকে খুব একটা পাত্তা দেয় না, তারা মনে করে তারা শুধু বিদ্রোহকারী হত্যা করেছে। এই দেশে তাদের যারা দোসর ছিলো তাদের ব্যাপারেও তাদের বই থেকে জানা যায়। তখন রক্ত ঠান্ডা থাকে না। এটাই আফসোস।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:২০
শেরজা তপন বলেছেন: আমার কিছু আর না বললেও চলবে- আপনার মন্তব্যে লাইক দেখলেই বোঝা যায় মন্তব্যটা কত চমৎকার হয়েছে!
প্রতিউত্তরে আমি অনেক কিছু লিখতে চেয়েছিলাম কিন্তু প্রথম ও দ্বিতীয় মন্তব্যের উত্তরে যা লিখেছি সেই কারনেই আর উত্তর দেয়া হয়ে উঠল না। অসভ্যতা হয় বলে সামান্য কথায় উত্তর দিলাম। ভাল থাকুন।
৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৯
জুল ভার্ন বলেছেন: শত্রুদের চোখে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস, পরাজিত বাহিনী প্রধানের লেখা একপেশে হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে একই ইতিহাস লিখেছেন এদেশের কতিপয় নিরপেক্ষ নাহলেও কিছুটা সৎ ব্যক্তিত্ব এবং দেশের মানুষেরও অজানা নয় প্রকৃত ইতিহাস। ইতিহাসের বিকৃতি ঘটানোর অঘটন পটিয়সী আওয়ামী চেতনায় পেইড ইতিহাসবিদদের ফ্যাক্টরি মেড ইতিহাস লেখকদের বেলায়ই সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢাকার অপপ্রয়াস।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:২১
শেরজা তপন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাই। ভাল আছেন নিশ্চয়ই?
আপনার বই বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে সেটা জানলাম- ইচ্ছে আছে সংগ্রহ করার।
৬| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩০
Md Abidur Rahman বলেছেন: কথা সত্য। আওয়ামী বয়ানবাজ চাটুকারেরা নিজেদের প্রাধাণ্য বজায় রাখতে গিয়েই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কিছুটা পাল্টেছে একথা সত্য। আজ তারা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্তও হয়েছে। আর শেখ মুজিবকে অসম্মানিত তার মেয়ে শেখ হাসিনাই করেছে।
কিন্তু আমি আশাকরি, আমি সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা এবং শেখ মুজিবকেও যেভাবে সম্মান করি, শহীদ জিয়াউর রহমান, ভাসানী তাদেরকেও সম্মান করি। এক মুজিবের জিকির করতে আমি প্রস্তুত নই।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:২২
শেরজা তপন বলেছেন: েক অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। সময় মতো প্রতিউত্তর দিতে না পারার জন্য আন্তরিক ক্ষমাপ্রার্থী
ভাল থাকুন সবসময়। কথা হবে অন্য কোন দিন।
৭| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:১৪
অঙ্গনা বলেছেন: ছাত্ররা ৭ তারিখে একটা সুস্পষ্ট একটা নির্দেশনা চেয়েছিলেন।
আর আত্মসমর্পণের ব্যাপারটা না থাকলে - মুজিব পরিবারের জন্য মাসিক ভাতা আর পরিবারের নিরাপত্তার জন্য পাকিস্থান সেনাবাহিনীর পাহারা এই ব্যাপার গুলো কোথা থেকে আসে?
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:২৫
শেরজা তপন বলেছেন: অনেক দেরিতে মন্তব্যের উত্তর দেবার জন্য দুঃখিত। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। সবার মনেই সেই একই প্রশ্ন, উত্তর দিলে অনেকের মন খারাপ হবে।
ভাল থাকবেন।
৮| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:১৭
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: উচ্চু মর্গীয় পোস্টটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। তবে জাদিদ ভাইয়ের কমেন্টটিও যথাযত মনে হলো। আমার বাবা, চাচারা বেশ কয়েকজন মুক্তি যুদ্ধাছিল। যাদের সাথে কথা হয়েছে তারা এমনি কিছু বলতে শুনেছি; শেখ সাহেব নেতা ছিলেন যুদ্ধ করেছেনে তাঁকে নেতা মেনেই। আর যারা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে নিজেদের বীরত্বে এই দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছি তাদের সবাইকে শ্রদ্ধা জানাতে কৃপণতা না করি।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:২৭
শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক বলেছেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য। দেরিতে উত্তর দেবার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
৯| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:৩৫
কামাল১৮ বলেছেন: রেসকোর্সের জনসভায় আমি মঞ্চের কাছাকাছিই ছিলাম।ছাত্র নেতারা পিরাপিরি করছিলো স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার জন্য।মুজিবের পিছনে মহিউদ্দিন পাহাড়ের মতো দাড়িয়ে ছিলো ছাত্রনেতারা যাতে তার কাছাকাছি যেতে না পারে।বক্তব্যের শেষ বাক্যটি ছিলো এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, সাথে সাথেই ঘোষণা করেন এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগাম।স্বাধীনতা শব্দটি একটু আস্তে ছিলো মুক্তি শব্দটি যথেষ্ট জোরে ছিলো।
জনগনের হাতে ছিলো হাজার হাজার বাঁশের লাঠি।
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:০৮
শেরজা তপন বলেছেন: চমৎকার স্মৃতিচারণ! আপনিতো একটা ইতিহাসের অংশ হয়ে আছেন। আপনার কথাগুলো লিখে যাওয়া উচিৎ
১০| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:৫৪
কামাল১৮ বলেছেন:
বদরুদ্দীন ওমররা স্বাধীনতা চায় নি।ঐ সময়ের বেশির ভাগ বামপন্থী দলগুলি স্বাধীনতা চায় নি।তারা চেয়েছিলো শ্রেনী সংগ্রাম সেটা হবে পাকিস্তান ভিত্তিক।
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:০৯
শেরজা তপন বলেছেন: আমিও তেমনটাই জানি কিন্তু পরবর্তীতে জাসদ যারা করেছে তাড়াতও বেশীরভাগই বামধারার মুক্তিযোদ্ধা নাকি?
১১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:১৬
আলামিন১০৪ বলেছেন: মুজিবকে অনেকে স্বাধীনতার স্থপতি মনে করে, তারা কি জানে যে, সে বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায় নাই? সে পাকিস্থানের প্রধানমণ্ত্রী হতে চেয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ চুড়ান্ত সংগ্রামের দিকে নিয়ে যাওয়ার পিছনে বামপন্থীদের অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:১১
শেরজা তপন বলেছেন: ওদের অন্তরে মোহর মেরে কানে সীসা ঢেলে দেয়া হয়েছে- এক হাসিনা আর মুজিবের জীবন ওদের কাছে ২০ কোটি বাংলাদেশীর জীবনের থেকেও দামি।
১২| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: আমি কিছু বলব না। বললে আপনিসহ অনেকের গাত্রদাহ হবে। তাই চুপ থাকলাম। বোবার কোনো শত্রু নাই।
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:১২
শেরজা তপন বলেছেন: এটাতো আমার লেখা না রে ভাই, আমি শুধু কোট করেছি। এখানে আমার গাত্রদায় শুরু হবার কিছুই না। ভিন্ন মত থাকবেই।
১৩| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:২৬
নতুন বলেছেন: জাদিদ ভাইয়ের মতামতের সাথে সহমত।
দেশের স্বাধিনতার যত ভার্ষন পড়েছি তাতে আমার মতেও এই আসল ঘটনা এইরকমের হবে বলেই ধারনা।
বঙ্গবন্ধু রাজনিতিক নেতা। উনি চাইলেই যুদ্ধ শুরু করার মতন ভাবনা করতে পারবেন না তার সেই অভিঙ্গতা নাই। তাই তিনি রাজনিতিক সমাধানই চাইছিলেন।
২৫শে মার্চে পাকিস্তানীদের হামলাটাই তাদের ভুল ছিলো যেটাই পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। সেই রাতের হামলাটাই ছিলো বাংলাদেশের স্বাধিনতার ঘোষনা।
আমার বাবার বন্ধু পল্টু খান ১৯৭১ এ আর্মির ক্যাপ্টেন ছিলেন, তিনিও বলেছিলেন যে তারা ৭ই মার্চে স্বাধীনতার ঘোষনার জন্য অপেক্ষা করছিলেন, আর্মির মাঝেও চাইছিলো যে ঘোষনা দিক তাহলে বাঙ্গালীরা দেশের দখল করতে পারবে। কারন সেই সময়েও তাদের কাছে অস্র ছিলো, অস্রাগারে বাংলাদেশীরা ডিউটি করতো।
মেজর জিয়াও মুক্তিযুদ্ধের ঘোষনা দিয়েছে বঙ্গবন্ধুর নামে, তার প্রাপ্য সন্মান তাকে দিতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধারা জয় বাংলা বলেই যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন সেটা নিয়েও কোন সন্দেহ নাই।
যদি আয়ামীলীগ আর বিএনপি মুক্তিযুদ্ধকে নিজেদের সম্পত্তি বানাতে চেস্টা না করতো তাহলে এতো বিতর্ক হতো না।
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:১৬
শেরজা তপন বলেছেন: চমৎকার সুদীর্ঘ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ নতুন ভাই।
মেজর জিয়াও মুক্তিযুদ্ধের ঘোষনা দিয়েছে বঙ্গবন্ধুর নামে, তার প্রাপ্য সন্মান তাকে দিতে হবে।
( যার যার প্রাপ্য সম্মান তাকে দিতেই হবে।)
মুক্তিযোদ্ধারা জয় বাংলা বলেই যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন সেটা নিয়েও কোন সন্দেহ নাই।
( এটাতে কোন সন্দেহ নাই- কিন্তু একটা দল এই শ্লোগানটাকে তাদের জাতীয় শ্লোগান বানিয়ে ফেলেছে। আর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই শ্লোগান হওয়া উচিৎ জয় বাংলাদেশ। জয় বাংলা মুল শ্লোগান দেশভাগের আগে হওয়া উচিৎ ছিল)
যদি আয়ামীলীগ আর বিএনপি মুক্তিযুদ্ধকে নিজেদের সম্পত্তি বানাতে চেস্টা না করতো তাহলে এতো বিতর্ক হতো না।
( বি এন পি চেষ্টা করেও পারে নাই- আওয়ামীলীগ সফল। মূলত মুজীবের পরবর্তী প্রজন্ম তাদের পারিবারিক সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছে, বাকি সব ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা।)
১৪| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:২৬
নীল আকাশ বলেছেন: পুরো মুক্তিযুদ্ধকে আওয়ামী লীগের বাপের সম্পত্তিতে পরিনত করা হয়েছিল যার ফল দেশের মানুষ পাচ্ছে। এইসব দ্বিধা আর দ্বন্দ্ব কোনোদিনও পুরোপুরি কাটবে না। তবে শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধ চাননি উনি। পুরো পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। এর পক্ষ অনেক অনেক প্রমান আছে। লেখা ভালো হয়েছে।
১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত সফরে গিয়ে ইন্দিরা গান্ধীকে শেখ মুজিব যেটা বলেছিল সেটা কোন বই বা সূত্র থেকে পেয়েছেন জানতে পারলে ভালো হতো। আশা করছি জাদিদ ভাই এটার সূত্র দেবেন। এভাবে শেখ মুজিব এই টোনে দাবী করেছেন এটা বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। প্রভু আর ভৃত্যের কথপোকথোন এভাবে হওয়ার কথা না।
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:১৭
শেরজা তপন বলেছেন: এটা আওয়ামীলীগ নয় শুধু হাসিনা ও তার গুষ্টির সম্পত্তি। তারা ছাড়া বাকি জনগণ ধইঞ্চ্যা পাতা।
জাদিদ ভাই তার উত্তর দিয়েছেন।
১৫| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১:৪৮
জাদিদ বলেছেন: @নীল আকাশঃ
শেখ মুজিব ভারতকে তার প্রভু মানতেন - এমন কথা আমি কোন ইতিহাসের বইতে শুনিনি, ব্যক্তিগতভাবে তো আমরা অনেক কিছুই মনে করতে পারি সেই ক্ষেত্রে তো আসলে আমার কিছু বলার নেই। আমি তো রেফারেন্স দিয়েছি কমেন্টেই। আপনি নেটে একটু কস্ট করে ঘাটলে অনেক রেফারেন্স পাবেন।
বর্তমান সময়ে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় কঠোর সমালোচকদের মধ্যে একজন হচ্ছে এবি পার্টির ব্যারিষ্টার ফুয়াদ।
তার একটি বক্তব্যের লিংক দিচ্ছি। সেটাও আপনি চাইলে দেখতে পারেন। আশা করি সেটা আপনার জন্য একটা গ্রহনযোগ্য রেফারেন্স হিসাবে বিবেচিত হবে।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীণতা।
১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:১৮
শেরজা তপন বলেছেন: রেফারেন্সের জন্য ধন্যবাদ ভাই।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:৩৭
ঢাবিয়ান বলেছেন: আওয়ামিলীগের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যবসায় এক্কেবারে লালবাত্তি জ্বালিয়ে দিলেন। যাক এই পোস্ট এই ব্লগে অন্য আর কেউ দিলে জামাত শিবির ট্যগিং এর সাথে বোনাস কিছু চ বর্গীয় গালি খেয়ে যেত। এমনকি ব্যানও খেয়ে যেতে পারত।