![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অমানিশাতেই যাচ্ছে জীবন, কাটতেছে দিন-রাত; কোথায়-কখন-কবে শেষ হবে, দেখব সুপ্রভাত।
১৯৮০ সালের ১৩ই আগস্ট। সেদিন ছিলো ঈদুল ফিতরের দিন। ভারতের উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ ঈদগাহ ময়দানে নিরাপত্তার জন্য সেখানে ছিল ভারতীয় পুলিশবাহিনী। প্রকৃতপক্ষে নিরাপত্তা দেয়ার নাম করে ভারতীয় হিন্দু পুলিশরা ভেতরে ভেতরে স্থানীয় হিন্দুদের সাথে সলাপরামর্শ করে দাঙ্গা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে। ঈদগাহ ময়দানে নামায চলাকালীন সময়ে হিন্দুরা তাদের বস্তি থেকে একটি গৃহপালিত শূকর এনে ছেড়ে দেয় মুছল্লীগণ উনাদের মাঝে। নামায চলাকালীন সময়ে পুলিশি পাহারা সত্ত্বেও এরকম একটি ঘটনা ঘটায় স্বাভাবিকভাবেই মুসলমানগণ উত্তেজিত হয়ে পড়েন, আর এটাকেই উসিলা করে হিন্দু পুলিশবাহিনী মুসলমানদের উপর শুরু করে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ । ঈদগাহ ময়দানে সেদিন পঞ্চাশ হাজার মুসলমান উপস্থিত ছিলেন, অনেকের সাথে ছিল তাদের শিশুসন্তান।
পাঠকরা বুঝতেই পারছেন, কি পরিমাণ রক্ত ঝরেছিল সেদিন মোরাদাবাদে?
আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রতিদিনই কমপক্ষে একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়ে থাকে, যার পেছনে মূল ভূমিকা পালন করে থাকে সেখানকার পুলিশবাহিনীর সদস্যরা। পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে উগ্র হিন্দুরা মুসলমানদের জান-মাল-ইজ্জতের উপর হামলা তো চালায়ই, তাছাড়া প্রায়শই দেখা যায় হিন্দু পুলিশরা ভারতের অসহায় মুসলমানদের উপর নির্মম গণহত্যা চালিয়ে থাকে। আমাদের দেশের লোকজন যদিও ভারতের এসব সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সম্পর্কে কমবেশি জানে, কিন্তু তাতে পুলিশবাহিনীর সহযোগিতা সম্পর্কে অধিকাংশ লোকই কিছু জানে না।
১৯৯০’র হাসিমপুরা গণহত্যা, উত্তরপ্রদেশের পি.এ.সি. তথা সশস্ত্র পুলিশবাহিনীর হিন্দু সদস্যরা পঞ্চাশজন মুসলিম যুবককে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলিবর্ষণ করে। খালের পানিতে ফেলে দেয়া সেসব লাশগুলো পরবর্তীতে ভেসে ওঠে।
১৯৮৯ সালে ভাগলপুরের দাঙ্গায় পুলিশের এক এ.এস.আই. এর নেতৃত্বে লোগিয়ান গ্রামে ১০৮ জন মুসলমান শহীদ করা হয়, যাদের মৃতদেহ গুম করতে সেগুলো মাটিতে পুঁতে তার উপর রাতারাতি ফুলকপি ক্ষেত তৈরি করা হয়। (তথ্যসূত্র: গোলাম আহমাদ মোর্তজা রচিত ইতিহাসের এক বিস্ময়কর অধ্যায়, বিশ্ববঙ্গীয় প্রকাশন, কলকাতা, পৃষ্ঠা ২৬-২৮)
ভারতে যেভাবে হিন্দু পুলিশদের কারণে দাঙ্গা সংঘটিত হয়, ঠিক সেভাবে মুসলিম পুলিশ নিয়োগ করে দাঙ্গা থামানোর উদাহরণও সেখানে রয়েছে। সিদ্ধার্থ শংকর রায় যখন কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী ছিল তখন কলকাতার পার্ক সার্কাস এলাকায় লেগে গেল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। দাঙ্গা বৃদ্ধিতে যেহেতু হিন্দু পুলিশের ভূমিকা অনস্বীকার্য, সেহেতু সাথে সাথে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিল যেন পার্ক সার্কাস এলাকায় শীঘ্র একজন মুসলিম পুলিশ ওসি নিয়োগ দেয়া হয়। তখন পুলিশ কমিশনার জানাল, গোটা কলকাতার কোন থানাতেই মুসলিম ওসি নেই । সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিল, যেন সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেক থানাতেই কিছু কিছু মুসলিম অফিসার ও পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দেয়া হয়। (সূত্র: উপরোক্ত গ্রন্থের ১১৫ পৃষ্ঠা)
আমাদের দেশে পুলিশবাহিনীতে গণহারে হিন্দু নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, যা রীতিমতো উদ্বেগজনক । সম্প্রতি ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে পুলিশের এসআই পদে নিয়োগকৃত ১৫২০ জনের মধ্যে হিন্দু ছিল ৩৩৪ জন, শতকরা হিসাবে যা ২১.৯৭ শতাংশ!
মাত্র ২ শতাংশ হিন্দুদের মধ্যে থেকে এতবেশি হিন্দু নিয়োগ দেয়ার উদ্দেশ্য কি? সরকার কি এদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করতে চায়?
মুসলমানরা সরকারের এহেন কর্মকাণ্ডে দেশবাসী ক্ষুব্ধ ও আতঙ্কিত। এদেশের শান্তিপ্রিয় মুসলমান স্বাধীনতার পর থেকে কখনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় জড়ায়নি। কিন্তু তাদের পিঠ যদি দেয়ালে ঠেকে যায় তার পরিণতি যে ভালো হবে না তা প্রকাশ করার অবকাশ রাখে না।
অতীত ইতিহাস প্রমাণ করছে, বাঙালি মুসলমান উনাদের সাথে লাগতে আসার ফলাফল শাসকগোষ্ঠীর ভাগ্যে সর্বদাই চরম বিপর্যয় ডেকে আনে।
©somewhere in net ltd.